একই দিনের মধ্যে অন্তত পাঁচবার কেঁপে ওঠে সিলেট। তাও আবার দুই ঘণ্টার মধ্যে। এই অঞ্চল তো বটেই, উৎকণ্ঠা, আতঙ্ক সারা দেশেই।
তিন প্লেটের সংযোগস্থল হওয়ায় বাংলাদেশ ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। বাংলাদেশের ডাউকি ফল্ট ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের ভূত্বকে জমে থাকা হাজার বছরের সঞ্চিত শক্তি রূপ নেয় ভূমিকম্পে। এই শক্তি একবারে বের হলে ৮ মাত্রার ভূমিকম্প সৃষ্টি হতে পারে- এমন কথা বিশেষজ্ঞরা বহুবার বলেছেন।
তবে আবহাওয়ার পূর্বাভাসের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের অগ্রগতি অভাবনীয়ই বলা যায়। ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত আগাম তথ্য দেয়ার পদ্ধতি আবিষ্কার হয়নি। আর বড় ধরনের ভূমিকম্পের যে ক্ষয়ক্ষতি, সেটি সব সময়ই মাথায় রাখতে হয়।
সময় না দিয়ে সিলেটের বারবার এই কেঁপে ওঠার পর বলাবলি হচ্ছে, এটি ভয়ানক কোনো পরিণতির পূর্বাভাস কি না।
তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক হুমায়ুন আখতার মনে করেন, ভূ-অভ্যন্তরে সঞ্চিত শক্তি সামান্য একটু একটু করে বের হয়ে আসা কিছুটা হলেও স্বস্তির। তিনি বলেন, ‘যে পরিমাণ শক্তি সঞ্চিত হয়েছে, এই শক্তি যদি একবারে বের হয়ে আসে, তাহলে বাংলাদেশের বিশেষ করে জনবহুল ঢাকার জন্য খুবই বিপজ্জনক অবস্থা সৃষ্টি করবে।’
তিনি জানান, ভূতাত্ত্বিক কাঠামো অনুযায়ী বাংলাদেশে ভূমিকম্প প্রবণ এলাকায় অবস্থান করছে। ইন্ডিয়া এবং বার্মা প্লেটের সংযোগস্থল বাংলাদেশের নিচ দিয়ে গেছে। সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ হাওর ও মেঘনা নদী বরাবর এই দুটি প্লেটের সংযোগস্থল। উত্তরে হিমালয় পাদদেশও আছে একটি সংযোগস্থল। এই তিনটি প্লেটের সংযোগস্থলে বাংলাদেশের অবস্থান।
সিলেটের ভূমিকম্পের স্থান ও প্রধান দুটি ভূমিকম্পের উৎসের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, শিলং মালভূমি যেটা বলা হয়, সেটি ক্ষুদ্র একটা প্লেট। এটি ডাউকি ফল্ট, সেটাও একটা প্লেট বাউন্ডারি। সিলেটের ভূমিকম্প হয়েছে ডাউকি ফল্টে।
হাজার বছর ধরে ভূ-অভ্যন্তরে শক্তি সঞ্চিত
অধ্যাপক হুমায়ুন আখতার বলেন, ‘সেখানে আমাদের দেড় যুগের গবেষণা বলছে, আমাদের প্রধান দুটি উৎস রয়েছে বিপজ্জনক ভূমিকম্পের। একটা হচ্ছে ডাউকি ফল্ট, আরেকটা হচ্ছে সিলেট থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চল।
‘ডাউকি ফল্ট ও চট্টগ্রামের এখানে ৫০০ থেকে হাজার বছর সময়ে ভূত্বকে যে শক্তি সঞ্চিত হয়ে রয়েছে, সেই শক্তি তো বের হতেই হবে। আজ হোক আর কাল হোক, এই শক্তি বের হতেই হবে, এর কোনো বিকল্প উপায় নেই।’
তিনি বলেন, ‘এই পুরো শক্তি আংশিকভাবে বের হলে আমার কিছুটা নিরাপদে থাকব। সাধারণত সঞ্চিত যে শক্তি থাকে, তার ৫০ ভাগ যদি একবারে বের হয়, সেটা বিপজ্জনক অবস্থায় নিয়ে যাবে।’
একবারে বের হলে পরিস্থিতি হতো ভয়ানক
অধ্যাপক আখতার জানান, যে পরিমাণ শক্তি আমাদের ভূগর্ভে জমা রয়েছে, সেটি একবারে বের হলে ৮ মাত্রার ভূমিকম্প সৃষ্টি করতে পারে।
তবে সেটা না হয়ে ছোট মাত্রার এসব ভূমিকম্প পরিবেশে তেমন প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করেন তিনি।
বড় ভূমিকম্প হলে তার প্রভাব কী হতে পারে, সেটি তুলে ধরতে গিয়ে এই ভূতত্ত্ববিদ উনিশ শতকের শেষ দিকের ভূমিকম্পের কথা তুলে ধরেন।
তিনি জানান, ১৭৮৭ সালের ভূমিকম্পে ব্রহ্মপুত্র নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে এখনকার যমুনা নদীতে প্লাবিত হচ্ছে।
ভূমিকম্প মোকাবিলায় কী প্রস্তুতি জরুরি
অধ্যাপক আখতার বলেন, স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি অনেক রকম আছে। বিল্ডিং কোড অনুসরণ করতে হবে। যেসব ভবন ঝুঁকিপূর্ণ, সেগুলো ভেঙে ফেলা উচিত।
সিলেটের এই ঘটনার আলোকে মহড়ার ওপরও গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি। বলেন, ‘মহড়ার মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করে সঠিক জায়গায় অবস্থান করার ব্যাপারে জ্ঞান দেয়া যায়। এ ছাড়া তাদের মানসিকভাবে প্রস্তুত রাখা যায়।’
তিনি বলেন, প্রতিবছর যদি একবার-দুবার মহড়া দেয়া হতো, তাহলে আজকে এই ৩ মাত্রার ভূমিকম্পে মানুষ আতঙ্কিত হতো না।
রিখটার স্কেলে ধরা পড়েছে চারটি
সিলেটবাসী ভূমিকম্পের কারণে পাঁচবার বাড়ি থেকে বের হয়ে এলেও আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে ধরা পড়েছে চারটি।
এর কারণ কী?
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, ‘ছোট ছোট আরও কিছু ভূমিকম্প হয়েছিল। যেগুলো রিখটার স্কেলে কম থাকার কারণে ধরা পড়েনি।’
এতবার কেন কাঁপল?
বজলুর রশিদ বলেন, ‘একটা ভূমিকম্প হওয়ার পরে অনেক ভূমিকম্প হতে পারে। এটাকে আফটার শক বলা হয়। নেপালে এমনও হয়, ২০০ থেকে ৩০০ বার টানা দুই দিন ধরে ভূমিকম্প হয়।
সিলেটের ভূমিকম্প নিয়ে কি আশঙ্কার কারণ আছে?
বজুলর বলেন, ‘এই কয়েকটা ভূমিকম্প হওয়ার কারণে যে আরেকটা বড় ভূমিকম্প আসছে, এটা বলার কোনো কারণ নেই। এ রকম কোনো রিসার্চেও পাওয়া যায়নি। অনেক সময় মাটির নিচে গ্যাস সন্ধানসহ কোন ধরনের পরীক্ষা করার সময়ও এ ধরনের ছোট ছোট ভূমিকম্প হয়ে থাকে।’
অধ্যাপক হুমায়ুন আখতারের মতো এই আবহাওয়াবিদও সতর্ক করে দেন যে, সিলেট উচ্চ ঝুঁকিতে আছে।
তিনি বলেন, ‘সিলেট যেহেতু একটা হাইরিস্ক জোন, অর্থাৎ ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা, সেহেতু ধরে নিতে হবে ওখানে ছোট-বড় ভূমিকম্প হবে।
‘সিলেট হচ্ছে তিনটি প্লেটের সংযোগস্থল, সেহেতু যেকোনো সময় এখানে বড় ভূমিকম্প হতে পারে। কিন্তু কত দিন পরপর হবে এটা বলা যাবে না।’
আরও পড়ুন:হজযাত্রীদের জন্য জরুরি বার্তা দিয়েছে বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্স। এতে, হজযাত্রীদের ফিরতি যাত্রাসহ যাবতীয় কার্যক্রমের জন্য ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে বিমানের বিক্রয়কেন্দ্রে এবং অতি জরুরি প্রয়োজনে জেদ্দা বা মদিনার অফিসে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
আজ বুধবার বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্স এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
বিমান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রতিবছর হজযাত্রীরা হজ পালন শেষে ফিরতি যাত্রা সুষ্ঠু, সুন্দর এবং নিরবিচ্ছিন্ন করার জন্য মক্কা ও মদিনায় অস্থায়ী অফিস স্থাপন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এবারও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স মক্কা ও মদিনায় অস্থায়ী অফিস স্থাপনের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
এতে বলা হয়, ‘সম্প্রতি সৌদি আরবের ভিসা নীতিমালায় বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশের নাগরিকদের জন্য সাময়িক ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। যার ফলে বিমানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সৌদি ভিসা আবেদনসহ যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত তারা হাজীদের সেবায় দেশটিতে যেতে পারছেন না।’
হজযাত্রীদের ফিরতি যাত্রায় টিকিট পরিবর্তনসহ যাবতীয় কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে হজ এজেন্সি ও প্রতিনিধিদের নিম্নলিখিত ঠিকানায় অফিস চলাকালীন সময়ে যোগাযোগের অনুরোধ করা হয়েছে।
এছাড়া, অতি জরুরি প্রয়োজনে বিমান জেদ্দা সিটি অফিস বা বিমান মদিনা সিটি অফিসে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে দেওয়া ঠিকানা—
জেলা বিক্রয় অফিস, মতিঝিল, ঢাকা
বিমান ভবন
মতিঝিল, ঢাকা, বাংলাদেশ।
ফোন: +৮৮০২-২২৩৩৫৭০০২, +৮৮০১৭২৭৯৯০৯২২
ই-মেইল: [email protected]
জেলা বিক্রয় অফিস, চট্টগ্রাম
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, চট্টগ্রাম
বিমান ভবন, ১/২ সিডিএ এভিনিউ, পূর্ব নাসিরাবাদ, চট্টগ্রাম।
ই-মেইল: [email protected]
ফোন: +৮৮০১৭৭৭৭১৫৭০০
+৮৮০১৭৭৭৭১৫৭২৩
+৮৮০১৭৭৭৭১৫৭২৫
জেলা বিক্রয় অফিস, সিলেট
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, সিলেট বিমান ভবন, মজুমদারি, এয়ারপোর্ট রোড, সিলেট।
ই-মেইল: [email protected]
ফোন: +৮৮০১৭৭৭৭১৫৭১০
+৮৮০১৭২৫২৩৫৬৬৪
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ১০৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১০ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ সময়ে শনাক্তের হার ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, দেশে এ পর্যন্ত ১ কোটি ৫৭ লাখ ২৬ হাজার ৪৮৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ২০ লাখ ৫১ হাজার ৭৭০ জন। এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৫ শতাংশ।
করোনা আক্রান্ত হয়ে আজ কেউ মারা যায়নি। এখন পর্যন্ত দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা ২৯ হাজার ৫০০ জন। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, করোনা আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছে ২ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ২০ লাখ ১৯ হাজার ৩৮০ জন। সুস্থতার হার ৯৮ দশমিক ৪২ শতাংশ।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, তিনি পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের অংশ হতে আগ্রহী নন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, তাদের কাজ হলো নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের কাছে সুষ্ঠুভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর নিশ্চিত করা।
নির্বাচনের পরে দায়িত্ব গ্রহণকারী পরবর্তী গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের অংশ হওয়ার কোনো ইচ্ছা তার আছে কিনা এবং কোনো পদে থাকবেন কিনা—সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের উত্তরে ড. ইউনূস বলেন, ‘কোনো উপায় নেই, কোনো উপায় নেই। আমার মনে হয়, আমাদের উপদেষ্টা পরিষদের কোনো সদস্য এটি করতে চান না।’
অধ্যাপক ইউনূস স্পষ্টভাবে বলেন, তাদের কাজ হলো ক্ষমতা হস্তান্তর সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা এবং নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার সময় জনগণ যাতে খুশি হয়—তা নিশ্চিত করা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’
প্রশ্নোত্তর পর্বের পর তিনি লন্ডনের চ্যাথাম হাউসের রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সে তিনি আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আওয়ামী লীগ যদি তরুণদের হত্যা, গুম করতে এবং অর্থ চুরি করতে পারে। তাই একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের পরিচয় নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আপনি কি এখনও এটিকে রাজনৈতিক দল বলবেন? তাহলে, এটি একটি বিতর্কিত বিচার নয়।’
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তারা মনে করেন, ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় সেই অধ্যায় বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু যারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন (আওয়ামী লীগ) - তাদের কেউই ভুল স্বীকার করেননি বরং তারা জনগণকে উত্তেজিত করছেন।
তিনি বলেন, জাতি আপাতত দেশের নিরাপত্তা ও রাজনীতির সুরক্ষায় আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘বিচার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম আপাতত স্থগিত থাকবে। আমরা কেবল এটাই করেছি।’
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অতীতে গণমাধ্যম কখনও এত স্বাধীনতা ভোগ করেনি।
আরেকজন সাংবাদিক ‘বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরটি ‘সিটি করপোরেশনের বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলা’ এবং ‘প্রশাসনের নীরবতা’ ও কিছু দল বা ব্যক্তির জমায়েত নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
উত্তরে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, অনেক বিষয় ও প্রশ্ন একসঙ্গে এসেছে এবং তারা সবকিছু সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারেননি। ‘এটা এমন এক সময় ছিল—যা আমরা অতিবাহিত করেছি। পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হচ্ছিল এবং এখন বিষয়গুলো শৃঙ্খলায় এসেছে...। দেশে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা আমাদের জন্য একটি বড় কাজ ছিল।’
দেশে করোনা সংক্রমণ আবারও বাড়তে থাকায়, হাসপাতালগুলোতে সীমিত পরিসরে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
প্রাথমিকভাবে যে সব মেডিকেল কলেজ ও জেলা হাসপাতালে আরটি পিসিআর ল্যাব রয়েছে, সেখানেই এই পরীক্ষা শুরু করা হবে।
আজ বুধবার (১১ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. হালিমুর রশীদ গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, স্থানীয় কোম্পানিগুলো থেকে পরীক্ষার কিট সংগ্রহ করা হচ্ছে। পাশাপাশি বিদেশ থেকেও কিট আমদানির জন্য সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোরস ডিপো (সিএমএসডি)-কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
হালিমুর রশীদ আরো বলেন, আমরা আশা করছি, আগামী ১০ দিনের মধ্যে হাসপাতালগুলোতে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা আবার চালু করা যাবে- তবে তা সীমিত পরিসরে হবে।
তিনি বলেন, যে সব হাসপাতালে আরটিপিসিআর ল্যাব রয়েছে, করোনা পরীক্ষা পুনরায় চালু করার প্রস্তুতি নিতে তাদেরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও ময়মনসিংহসহ বিভাগীয় শহরের হাসপাতালগুলোতে করোনা পরীক্ষা চালু করা হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যাদের করোনা উপসর্গ থাকবে, পরীক্ষা শুধু তাদের জন্যই চালু করা হবে। সে অনুযায়ী তারাই এ পরীক্ষার জন্য উপযুক্ত হবেন- যাদের শরীরে কোভিড-১৯ এর উপসর্গ (জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট) রয়েছে অথবা চিকিৎসক যাদের করোনা পরীক্ষার পরামর্শ দেবেন।
হালিমুর রশীদ আরও বলেন, সংক্রমণের হার যদি আরও বাড়ে, তাহলে পরীক্ষার পরিধিও বাড়ানো হবে।
জনগণকে মাস্ক পরা, হাত ধোয়ার পাশাপাশি উপসর্গ দেখা দিলে ঘরে থাকার আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ডা. রশীদ আরো বলেন, আমরা চাই না যে, পরিস্থিতি আবারো হাতের বাইরে চলে যাক। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
এডিস মশার বিস্তার রোধে তাৎক্ষণিক ফল পেতে ১৪ জুন থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন(ডিএসসিসি) এলাকায় দ্বিগুণহারে কীটনাশক প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এডিস মশার বিস্তার রোধে করণীয় নির্ধারণ ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও করোনা প্রতিরোধে ডিএসসিসি প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়ার সভাপতিত্বে আজ রাজধানীর ওয়াসা ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় অ্যাডাল্টিসাইডিং কার্যক্রমে (ফগার মেশিন দ্বারা পরিচালিত) বর্তমানে ব্যবহৃত ৩০ লিটার কীটনাশকের পরিবর্তে দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থাৎ ৬০ লিটার কীটনাশক প্রতিদিন ব্যবহারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এ ছাড়া অঞ্চলভিত্তিক ডেঙ্গু মনিটরিং টিম গঠন ও জনবল ঘাটতি পূরণে উদ্যোগসহ জনগুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
সভায় মশক কর্মীদের সকাল ও বিকেলে নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করা, সঠিক অনুপাতে কীটনাশক প্রয়োগ যাচাই, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা এবং মশক কর্মী দ্বারা বাড়ির ভিতর, আঙিনা ও ছাদের জমানো পানিসহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতকরণে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক এবং সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করে অঞ্চল ভিত্তিক ডেঙ্গু মনিটরিং টিম গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।
এছাড়া, ডেঙ্গু ও করোনা বিষয়ে ডিএসসিসি সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফারিয়া ফয়েজকে ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা হিসেবে মনোনীত করা হয়।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলতি মাসের মধ্যে কীটতত্ত্ববিদদের সমন্বয়ে নগর ভবনে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে এবং প্রতিদিনের ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের হালনাগাদ তথ্য ডিএসসিসির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। মশক নিধনে জনবল ঘাটতি পূরণে নিয়োগ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখাসহ ডেঙ্গু ও করোনা রোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় ডিএসসিসি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মো. জিল্লুর রহমান, সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদার, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নিশাত পারভীনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি বোরহানউদ্দিন উপজেলা শাখার আওতাধীন ৯টি ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের সভাপতি ও সম্পাদকের সাথে মতবিনিময় সভা করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং ভোলা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো: হাফিজ ইব্রাহিম।
বুধবার ( ১১ জুন ) সকাল ১১টায় বোরহানউদ্দিন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাফরুজা সুলতানার সভাপতিত্বে উপজেলা সড়কে উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মতবিনিময় সভায় আগামী নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ৯টি ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের সভাপতি-সম্পাদকবৃন্দ তাদের মতামত তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আলহাজ্ব মো: হাফিজ ইব্রাহিম বলেন, বিগত ১৭ বছর আপনারা যেভাবে দলের জন্য কাজ করেছেন তা সকলের জন্য অনুপ্রেরণা। অনেক সংগ্রাম করে দলের দুঃসময়ে প্রত্যেকটি আন্দোলন সংগ্রাম সফল করেছেন। ইনশাআল্লাহ্ আগামী নির্বাচনে যে যার অবস্থান থেকে নিজের সেরাটা দিয়ে দলের জন্য কাজ করে যাবেন। আমাদের নেতা তারেক রহমান যে নির্দেশনা দিয়েছে তা মেনে চলবেন। এ সময় তিনি উপস্থিত নেতাদের আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনামূলক পরামর্শ প্রদান করেন।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, বোরহানউদ্দিন উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ্যাড. কাজী মো: আজম, সিনিয়র যুগ্ন আহ্বায়ক সরোয়ার আলম খাঁন, যুগ্ন আহ্বায়ক হাসান হাওলাদার, যুগ্ন আহ্বায়ক মঞ্জুরুল আলম ফিরোজ কাজী, যুগ্ন আহ্বায়ক শহীদুল আলম নাসিম কাজী, যুগ্ন আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির সেলিম, উপজেলা যুবদল আহ্বায়ক শিহাবউদ্দিন হাওলাদার, সদস্য সচিব জসিমউদ্দিন খাঁন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দল আহ্বায়ক লিটন শিকদার, সদস্য সচিব আতিফ আসলাম রুবেল, উপজেলা ছাত্রদল সভাপতি দানিশ চৌধুরী, সম্পাদক তানজিল হাওলাদার, উপজেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক ইশরাত জাহান বনি সহ উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের মূল বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদল, ও ছাত্রদলের সভাপতি সম্পাদক বৃন্দ।
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার (১০ জুন) সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশে কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। এ সময়ে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৮৮ জন।
বুধবার (১১ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ভর্তি হয়েছেন ২৮৮ জন। নতুন আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৫ জন। আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ২৭৩ জন।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৩ দশমিক ৫ শতাংশ নারী।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১১ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৫ হাজার ৩০৩ জন। এর মধ্যে ৫৯ দশমিক ৭ শতাংশ পুরুষ এবং ৪০ দশমিক ৩ শতাংশ নারী।
মন্তব্য