‘ট্রাভেল ডকুমেন্ট’ হিসেবে বাংলাদেশের পাসপোর্ট এখন বিশ্বের সব দেশের জন্য বৈধ।
পাসপোর্টে ‘ইসরায়েল ছাড়া এই পাসপোর্ট বিশ্বের সব দেশের জন্য বৈধ’ (দিস পাসপোর্ট ইজ ভ্যালিড ফর অল কান্ট্রিজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড এক্সসেপ্ট ইসরায়েল) কথাটি বদলে এখন লেখা হচ্ছে, ‘এই পাসপোর্ট বিশ্বের সব দেশের জন্য বৈধ (দিস পাসপোর্ট ইজ ভ্যালিড ফর অল কান্ট্রিজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড)।’
‘ইসরায়েল ছাড়া’ শব্দ দুটি বাদ পড়ার মধ্য দিয়ে ভ্রমণের জন্য সব দেশ উন্মুক্ত হয়ে গেছে বলে মনে করেন কূটনীতিক বিশ্লেষকরা। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, বাংলাদেশি নাগরিকরা ইসরায়েল ভ্রমণ করতে পারবেন না।
তাহলে কেন এই পরিবর্তন
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, ই-পাসপোর্টের আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করতে নেয়া হয়েছে এই সিদ্ধান্ত।
পাসপোর্টে কবে থেকে এ পরিবর্তন আনা হয়েছে নির্দিষ্ট করে দিন, তারিখ বলতে না পারলেও মন্ত্রী বলেন, ‘এটা অনেক দিন ধরে হয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল পাসপোর্টে তো এগুলো লেখা থাকে না। সে জন্য ইন্টারন্যাশনাল পাসপোর্টে যেভাবে থাকে আমরা সেভাবেই করেছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের কণ্ঠেও ধ্বনিত হয় একই সুর। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘এটা আমি শুনেছি। শোনার পরে আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করেছি। এটা প্রায় ছয় মাস আগে নতুন পাসপোর্ট যখন অর্ডার দেয়া হয়, তখন টু মেইনটেইন স্ট্যান্ডার্ড, অনেকগুলো পাসপোর্ট তারা দেখেছেন।
দুনিয়ার কোনো পাসপোর্টে ‘এক্সসেপ্ট’-এর মতো বিষয়টি নেই দাবি করে মোমেন আরও বলেন, ‘পৃথিবীর আর কোনো দেশের পাসপোর্টে এ রকম লেখা থাকে না। সে জন্য এটা উঠিয়ে দেয়া হয়েছে।’
ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. আইয়ুব চৌধুরীও বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনার আলোকে পাসপোর্টের আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখার স্বার্থে এটা বাদ দেয়া হয়েছে।’
ওই মুহূর্তে তিনি অফিসে না থাকায় ঠিক কবে থেকে বাদ দেয়া হয়েছে, সেটি নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি আইয়ুব।
তিনি বলেন, ‘এটা আগেই বাদ দেয়া হয়েছে। ইমপ্লিমেন্ট হতে তো এক বছর সময় লেগে যায়।’
আধুনিক পাসপোর্টে এসব কথা লেখা থাকা না থাকা তেমন কোনো প্রভাব ফেলে না বলে দাবি করেন ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
তিনি বলেন, ‘আমাদের পাসপোর্ট আছে দুইটা। পাসপোর্ট রিড করা হয়, রিডিং পড়ে নয়। আপনি যখন ভিসার জন্য অ্যাপ্লাই করেন, একটা আছে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট। মেশিন রিড করে। সেখানে এ ধরনের কোনো কিছু নাই।
‘আরেকটা আছে ই-পাসপোর্ট। সেটা ইলেক্ট্রনিক চিপ থেকে রিড করে। সেখানেও নেই। আইসিএও নিয়ম অনুযায়ী, যেগুলো থাকার কথা সেগুলো আছে। আপনার পরিচয়, আপনার বায়োমেট্রিক-সেগুলো আছে।’
পাসপোর্টে অনেক কিছু লেখা থাকলেও সেগুলো দেখা হয় না বলে দাবি করেন তিনি।
এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশি নাগরিকরা ইসরায়েলে যেতে পারবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘না। এটার সঙ্গে ইসরায়েলে যাওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই।’
ভিন্নমত কূটনীতিকদের
সাবেক পররাষ্ট্রসচিব ও কূটনীতি বিশ্লেষক তৌহিদ হোসেন বলেন, এই পরিবর্তনের ফলে পাসপোর্ট অনুযায়ী ইসরায়েল যেতে কোনো বাধা থাকল না বাংলাদেশিদের।
তার মতে, ‘সেটা সরকার সিদ্ধান্ত নেবে, যেতে পারবেন কি না। কিন্তু পাসপোর্টটা অ্যালাউ করে যেতে। ডিপ্লোম্যাটিক পাসপোর্টে কখনো এটা লেখা ছিল না।’
আরেক কূটনীতি বিশ্লেষক ও সাবেক রাষ্ট্রদূত নাসিম ফেরদৌসও মনে করেন, এতে ইসরায়েলে প্রবেশে বাধা কাটল।
তিনি বলেন, ‘লেখা নেই যেহেতু ইসরায়েলে প্রবেশ করতে পারবেন, এখন এটা ইসরায়েলের ওপর নির্ভর করে তারা যেতে দেবে কি দেবে না। দুটো দেশ একে অপরকে রিকগনাইজ না করলে সাধারণত যাওয়া-আসার সুবিধাটা দেয়া হয় না।’
সাবেক পররাষ্ট্রসচিব তৌহিদ হোসেনের কাছে জানা গেল, ইসরায়েল, তাইওয়ান ও সাউথ আফ্রিকার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পাসপোর্টের বৈধতা ছিল না।
তিনি বলেন, ‘বর্ণবৈষম্যের অবসান হলে সাউথ আফ্রিকাকে আমরা স্বীকৃতি দিয়েছি। তাইওয়ানকে কিন্তু আমরা স্বীকার করি না। স্বীকৃতি দিই না আলাদা দেশ হিসেবে; চীনের অংশ হিসেবে মনে করা হয়। কিন্তু প্র্যাকটিক্যাল কারণে তাইওয়ানের নিষেধাজ্ঞা আমরা তুলে দিয়েছি।’
পাসপোর্টে যতক্ষণ ওই কথাটি লেখা ছিল, ততক্ষণ ইসরায়েলে যাওয়ার উপায় ছিল না বলে জানান তৌহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘সরকার কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটা দেখতে হবে। ইসরায়েল কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটাও দেখতে হবে। বাংলাদেশিদের তারা ঢুকতে দেয় কি না। যেহেতু বাংলাদেশ তাদের স্বীকার করে না, স্বীকৃতি দেয় না।’
বিদেশে নিযুক্ত কোনো ইসরায়েলি দূতাবাস থেকে যদি কোনো বাংলাদেশি নাগরিক আবেদন করে ভিসা নিয়ে দেশটিতে যায়, সেটা রাষ্ট্র অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করবে কি না, জানতে চাওয়া হয় কূটনীতিকদের কাছে।
তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘রাষ্ট্র যদি স্পেসিফিক নিষেধাজ্ঞা জারি রাখে, অর্থাৎ কোনো নাগরিক ইসরায়েলে যেতে পারবেন না, এ রকম যদি কোনো নিষেধাজ্ঞা থাকে, তাহলে সেটা হতে পারে। এগুলো তো ইলেকট্রনিক পাসপোর্টের সব তথ্য। আপনি কোথায় যাচ্ছেন, না যাচ্ছেন অন্য দেশের মতো বাংলাদেশের কাছেও চলে আসবে। নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও যদি আপনি যান, তাহলে সরকার ব্যবস্থা নিতেই পারে আপনার বিরুদ্ধে।’
নাসিম ফেরদৌস বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ না থাকলে এটাতে ধরার খুব একটা সুযোগ নেই। কারণ, আপনি বলতে পারবেন, ডিফেন্ড করতে পারবেন যে, এখানে তো লেখা নেই ইসরায়েল যেতে পারব না।’
বহাল আছে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা
বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের ইসরায়েলে ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে এক্সসেপ্ট ইসরায়েল শব্দটি তুলে নেয়া হয়েছে পাসপোর্টের আন্তর্জাতিক মান রক্ষার জন্য এবং এর মানে এই নয় যে, বাংলাদেশের মধ্যপ্রাচ্য নীতিতে কোনো পরিবর্তন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার ইসরায়েলের ব্যাপারে তার অবস্থান থেকে সরে আসেনি এবং এ ব্যাপারে বাংলাদেশ তার দীর্ঘদিনের অবস্থানে অটল আছে।
ফলে পাসপোর্টে ভ্রমণ জটিলতা দূর হলেও নিষেধাজ্ঞা থাকায় বাংলাদেশি নাগরিকরা যেতে পারবেন না ইসরায়েলে।
তবে কি কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন প্রক্রিয়া
বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে এক্সসেপ্ট ইসরায়েল শব্দ তুলে দেয়ার ঘটনায় ঢাকার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছে তেল আবিব।
এক টুইটবার্তায় রোববার ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উপমহাপরিচালক গিলাড কোহেন এ সন্তোষ প্রকাশ করেন।
তিনি লিখেন, ‘অনেক বড় খবর। বাংলাদেশ ইসরায়েলের সঙ্গে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নিয়েছে। এবার বাংলাদেশ ও ইসরায়েলের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করলে উভয় দেশের জনগণ লাভবান হবে। কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে আমরা বাংলাদেশকে স্বাগত জানাচ্ছি।’
কিন্তু এটা কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন প্রক্রিয়া নয় বলে জোর গলায় বলছে সরকার।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘ইট ডাজনট মিন, এর ফলে বাংলাদেশ এবং ইসরায়েলের সম্পর্কের কোনো পরিবর্তন হয়েছে। আমরা এখনও তাদের রিকগনাইজ করি না। এখনও আমাদের আগের যে অবস্থান, সে অবস্থানে আছি।’
রোববার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘ইসরায়েল নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান অপরিবর্তিত আছে এবং যত দিন পর্যন্ত সেখানে দুই রাষ্ট্র নীতি (ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলিদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র) বাস্তবায়ন না হচ্ছে, তা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।’
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে সাবেক পররাষ্ট্রসচিব তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘কোনো দেশের পাসপোর্টে সম্ভবত এই রেস্ট্রিকশনটা আর নেই। এ কারণেই হয়তো আমাদের সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার মানে এই না যে, আমরা ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিয়ে দিচ্ছি।’
পাসপোর্টের মর্যাদা কি বাড়বে
এই পরিবর্তনের ফলে আন্তর্জাতিক বিশ্বে বাংলাদেশের পাসপোর্টের মর্যাদা বাড়বে বলে মনে করেন না কূটনীতিকরা।
তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘আমার মনে হয় না ইসরায়েলের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে কি না, তার সঙ্গে র্যাঙ্কিংয়ের কোনো সম্পর্ক আছে।’
তিনি বলেন, ‘র্যাঙ্কিংটা হয়, যে দেশগুলো এমন ফিল করে বাংলাদেশি কেউ এসে তার এখানে ইলিগ্যাল থেকে যাবে না, তারা অন অ্যারাইভাল ভিসা দেয়। যে পাসপোর্ট দিয়ে বেশিসংখ্যক দেশে অন অ্যারাইভাল ভিসা দেয়, তার র্যাঙ্কিং তত বেশি।’
গ্লোবাল পাসপোর্ট ইনডেক্সের র্যাঙ্কিংয়ে দেখা যায়, এই মুহূর্তে বাংলাদেশের পাসপোর্টের অবস্থান ৭৩।
আরও পড়ুন:ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও হত্যা চেষ্টা মামলায় রংপুর মহানগর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইফতেখারুল ইসলাম শুভকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রোববার (১৩ জুলাই) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আরপিএমপি কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান।
এর আগে শনিবার (১২ জুলাই) রাত ১১টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নগরীর সিও বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃত ইফতেখারুল ইসলাম শুভ রংপুর নগরীর মাহিগঞ্জ ধুমখাটিয়া এলাকার আশরাফুল ইসলামের ছেলে। তার বিরুদ্ধে গত বছরের জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে।
আরপিএমপি কোতোয়ালি থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, গত বছরের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে ছিলেন শুভ।
তিনি আরো বলেন, গ্রেফতারকৃত শুভর বিরুদ্ধে রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগ এনে আহত মামুনুর রশিদ মামুন, আহত জয়নাল আবেদীন বাপ্পী, আহত রমজান আলী ও আহত শহিদুল ইসলাম পৃথক চারটি মামলা করেছেন।
এসব মামলায় শুভকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আজ (রবিবার) থেকেই সারা দেশে একযোগে চিরুনি অভিযান শুরু করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
রবিবার (১৩ জুলাই) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর নজরদারি চালাবে। কোথাও কোনো অপরাধী বা বিশৃঙ্খলাকারীকে ছাড় দেওয়া হবে না। তবে আমরা সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই—আইন যেন কেউ নিজের হাতে তুলে না নেন। আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার দায়িত্ব রাষ্ট্রের।’
মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ডের পর দ্রুত তদন্ত শুরু করা হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এরইমধ্যে ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৬ জনকে ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা হয়েছে। অপরাধীদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। যারাই জড়িত থাকুক না কেন; তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
‘এসব ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতকরণে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অত্যন্ত তৎপর ও ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশনে যাচ্ছে এবং অপরাধীদেরকে গ্রেপ্তার করছে।’
তিনি বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এরইমধ্যে খুলনার হত্যাকাণ্ডেও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সরকার বিশ্বাস করে, অপরাধী অপরাধীই—তা সে যে-দলেরই হোক না কেন। রাজনৈতিক অথবা অন্য কোনো পরিচয়ে কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না এবং ভবিষ্যতেও দেওয়া হবে না। কোনো অপরাধীকেই পুলিশ প্রশ্রয় দেবে না।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘দেশে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে আমরা কোনো আপস করব না। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।’
নির্বাচন নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ের মাধ্যমে আমরা নির্বাচনকে ঘিরে যেসব নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করছি, তা ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই শেষ করতে পারব বলে আশা করছি। আমাদের অংশটুকু যথাসময়ে ও সুচারুভাবে সম্পন্ন করতে আমরা বদ্ধপরিকর।’
পাবনা থেকে ঢাকায় সরাসরি ট্রেন সার্ভিস চালু, ঈশ্বরদী বিমানবন্দর চালু, শহরে চার লেন সড়ক নির্মাণ, আরিচা-কাজিরহাট ফেরিঘাট খয়েরচরে স্থানান্তরের দাবিতে মানববন্ধন করেছে শেকড় পাবনা ফাউন্ডেশনের ব্যানারে পাবনাবাসী। যেকোন মূল্যে ট্রেন সার্ভিস চালু করতে হরে এই সরকারকে। এসব চারদফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে চরম মূল্য দিতে হবে সংশ্লিষ্টদের বলে হুঁশিয়ারী দেওয়া হয়।
রোববার (১৩ জুলাই) সকাল ১১ টা থেকে ঘন্টাব্যাপী আব্দুল হামিদ সড়কের শহীদ চত্ত্বর থেকে পুরো শহরজুড়ে বিশাল মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পাবনার রাজনৈতিক সংগঠনের চরম ব্যর্থতায় আমরা ট্রেনের দাবিতে রাজপথে নেমে এসেছি। এটাতো রাজনৈতিক দলের কাজ। পাবনা থেকে মাঝ পাড়া পর্যন্ত অকার্যকর একটি রেল লাইন চালু করা হয়েছে। সেটি কার্যকর করে দ্রুত পাবনা-ঢাকা ট্রেন সার্ভিস চালু করে ঢাকায় যাতায়াত সহজীকরণ করতে হবে। কাজিরহাটের ফেরিঘাট খয়েরচরে স্থানান্তর করা হলে দু'ঘন্টার পথ ১৫ মিনিটে পারাপার হওয়া যাবে। ঈশ্বরদী ইপিজেড, রপপুর প্রকল্পের জন্য বিমানবন্দর চালু করা হোক। যানজট নিরসনে পাবনা শহরে চার লেন সড়ক নির্মাণ করতে হবে। পাবনা আটঘরিয়া হয়ে মাঝপাড়া দিয়ে ৩০ কিলোমিটার ঘুড়ে ট্রেন ঢাকায় যাওয়ার কথা শুনতেছি। এটা আমরা কোনভাবেই মেনে নেবোনা।
যেকোন মূল্যে পাবনা ঢাকা ট্রেন চালু করতেই হরে। তাছাড়া এটার জন্য সংশ্লিষ্টদের চরম মূল্য দিতে হবে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের আন্দোলন শেষে সরকার পতনের আন্দোলনে পরিনত হয়েছিল। আমাদের এই দাবি যেন অন্য দাবিতে পরিনত না হয়। আমরা সবদিক থেকেই বঞ্চিত ও বৈষম্যের শিকার।
বক্তারা আরও বলেন, পাবনাবাসীর প্রাণের দাবি ছিল নগরবাড়ি আরিচায় নতুন যমুনা সেতু নির্মাণ করা। দ্বিতীয় যমুনা সেতু এখান দিয়ে দ্রুত বাস্তবায়ন করা হলে এ অঞ্চলের মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন তরান্বিত হবে। ইছামতী নদী উদ্ধারে অনেক জটিলতা ছিল। এখন নদী খনন হচ্ছে। যারা মামলা করেছেন দ্রুত মামলা তুলে নিয়ে নদী খননের কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে সহযোগীতা করুন। এটা হলে পাবনাবাসীর জন্য স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে। এছাড়াও পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আধুনিকায়ন করা, মানসিক হাসপাতাল সংস্কার করতে হবে। এটা জুলাইয়ের মাস। এই চত্বরেই দুজন শিক্ষার্থী শহীদ হয়েছিল। এখনো ওসব খুনি গ্রেফতার হয়নি। দ্রুত গ্রেপ্তার করতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান।
শেকড় পাবনা ফাউন্ডেশনের সভাপতি খান হাবিব মোস্তফার সভাপতিত্বে ও আতাইকুলা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক রাজু ইসলাম ওলির সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, পাবনা জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা মো: ইকবাল হোসাইন, পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি আখতারুজ্জামান আখতার, সাবেক সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমান, জামায়াতের পৌর আমীর আব্দুল লতিফ, দেশ বরেণ্য শিল্পী ওবায়দুল্লাহ তারেক, সাইদুল ইসলাম, কিন্ডার গার্টেন এসোসিয়েশনের সভাপতি মাহফুজুর রহমান, আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক আব্দুল আলিম, এডভোকেট রানা, রোটারিয়ান বিনয় জ্যোতি কুন্ডু, সমন্বয়ক শাওন হোসাইন, আইডিয়াল গ্রুপের পরিচালক সিরাজুল ইসলাম সহ পাবনার সর্বস্তরের জনগণ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও মানবন্ধনে পাবনা শহরের বিভিন্ন স্কুল কলেজ ও নার্সিং শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশন পদ্ধতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।
প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত কোনো প্রার্থী যদি পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রতিবেদন ফরম জমা না দেন, তবে তাকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হবে না। অর্থাৎ ভেরিফিকেশন ছাড়া নিয়োগের সুযোগ থাকছে না।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়েরের সই করা পরিপত্রে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, ‘বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের নিকট থেকে পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য প্রয়োজনীয় পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রতিবেদন ফরম প্রাপ্তির পর তা সরাসরি স্পেশাল ব্রাঞ্চ, পুলিশ অধিদপ্তরে পাঠাবে। প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের মধ্যে কেউ পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রতিবেদন ফরম দাখিল না করলে তাকে নিয়োগ সুপারিশের জন্য বিবেচনা করা হবে না।’ এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এর আগে বিদ্যমান নিয়মে, এই ভেরিফিকেশন ফরম শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে পাঠানো হতো। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সে পদ্ধতি আর অনুসরণ করা হবে না।
পরিপত্রের অনুলিপি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, আইন মন্ত্রণালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
অন্যদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া দ্রুত ও কার্যকর করার লক্ষ্যেই এ পরিবর্তন আনা হয়েছে। কারণ, আগের প্রক্রিয়ায় ধাপে ধাপে পাঠানোর কারণে দীর্ঘসূত্রিতা তৈরি হচ্ছিল। তাই এনটিআরসিএকে সরাসরি পুলিশের সঙ্গে যুক্ত করে সময় কমানো এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, এনটিআরসিএ-এর অধীন এমপিওভুক্ত বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরি ও ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির আলোকে এক লাখ ৮২২ জন শিক্ষক নিয়োগের আবেদন চলছে।
এ আবেদন চলার মধ্যেই গত বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ পুলিশ ভেরিফিকেশন সংক্রান্ত পরিপত্রটি জারি করেছে।
রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তিন নম্বর টার্মিনালের সামনে সড়ক দুর্ঘটনায় এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন।
শনিবার (১২ জুলাই) রাত ১১টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত আশরাফুল আলম (৩২) গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর থানার কালনী গ্রামের প্রয়াত মকসেদ আলীর ছেলে।
নিহতের চাচাতো ভাই হাসান আল আরিফ জানান, রাত সোয়া ১১টার দিকে আশরাফুল মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় তিন নম্বর টার্মিনালের সামনে একটি অজ্ঞাতনামা পিকআপ ভ্যান তাকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন।
পুলিশ জানায়, খবর পেয়ে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশের সহযোগিতায় লাশ উদ্ধার করে আইনি প্রক্রিয়া শেষে দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান হাসান। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ঢামেক হাসপাতালের মর্গের দায়িত্বে থাকা এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ সদস্য ইসমাইল জানান, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্য শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে এক হাজার কেজি হাড়িভাঙ্গা আম পাঠাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। দুই প্রতিবেশী দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদারে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ হাইকমিশনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সোমবার (১৫ জুলাই) এই আমের চালানটি ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে পৌঁছাবে।
নয়াদিল্লি পৌঁছানোর পর আমগুলো ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, কূটনীতিক এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যেও বিতরণ করা হবে— মৈত্রীর অংশ হিসেবে।
এছাড়া, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও আম পাঠাচ্ছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীসহ সেখানকার বিশিষ্টজনদের জন্য ৩০০ কেজি হাড়িভাঙ্গা আম উপহার পাঠানো হয়। আখাউড়া স্থলবন্দর হয়ে বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে ৬০টি কার্টনে এসব আম পাঠানো হয়।
প্রতিবছর বাংলাদেশ সরকার মৌসুমি উপহার হিসেবে ত্রিপুরা রাজ্য সরকার ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য আমসহ বিভিন্ন ফল পাঠিয়ে থাকে। এর জবাবে ত্রিপুরা রাজ্য সরকারও উপহার হিসেবে বাংলাদেশের জন্য পাঠায় বিখ্যাত রসালো ‘কুইন’ জাতের আনারস।
চলতি বছরের আম উপহার পাঠানোর কার্যক্রমটি পরিচালনা করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং এটি রপ্তানিকারকের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন, আগরতলার কর্মকর্তাদের কাছে উপহারের চালানটি হস্তান্তর করা হয়।
এই উদ্যোগকে ‘আম কূটনীতি’ হিসেবে অভিহিত করা হয়, যা আগের প্রশাসনের সময়েও চলমান ছিল। এখনো এটি সৌহার্দ্য ও পারস্পরিক শুভেচ্ছার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ বিষয়ে ঐক্য গড়ে এবং রাষ্ট্র সংস্কারের বিভিন্ন বিষয়ে একমত হয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ‘জুলাই সনদ’ তৈরির লক্ষ্যে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আজ আলোচনায় বসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে আজ সকাল সাড়ে ১১টায় দ্বিতীয় দফার দ্বাদশ দিনের মত আনুষ্ঠানিকভাবে এ আলোচনা শুরু হয়েছে।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আজকের আলোচনার সূচিতে প্রাধান্য পাচ্ছে- তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা, প্রধান বিচারপতি নিয়োগবিধি ও জরুরি অবস্থা ঘোষণা।
এর আগে, উল্লেখ্য তিনটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। পূর্বের অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়ে আজ অধিকতর আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
বরাবরের মতো আজকেও আলোচনায় সভাপতিত্ব করছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ।
এছাড়া, কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন- বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. মো. আইয়ুব মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
সংলাপ শুরু হওয়ার আগে সূচনা বক্তব্যে কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যে বলেন, যেহেতু আপনারা রাজনৈতিক দল করেন, সেহেতু সব বিষয়ে আপনাদের একটি নির্দিষ্ট অবস্থান থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে আপনাদের প্রতি অনুরোধ, একটি মাঝামাঝি স্থানে এসে আমাদের দাঁড়াতে হবে।
পরবর্তীতে যদি জনগণের কাছ থেকে আপনারা প্রতিনিধিত্ব লাভ করতে পারেন, তাহলে সেটি পরিবর্তন করতে পারেন এবং সেটি জনগণের রায়ের ওপর নির্ভরশীল থাকবে।
কিন্তু কমিশন মনে করছে, একটি পর্যায়ে আসা ভালো।
তিনি আরো বলেন, আমরা আপনাদের বক্তব্যকে গুরুত্বহীন মনে করছি না, বরং আমরা চাচ্ছি সকলে একটি ঐক্যমতে পৌঁছাক। চাইলেই এ আলোচনা বাদ দেওয়া যেতে পারে, কিন্তু তাতে বিদ্যমান পরিস্থিতিই থেকে যাবে। আমাদের একটি জায়গায় আসতে হবে- এই বিবেচনাটা যদি আপনারা করেন, তাহলে আমাদের পক্ষে ঐকমত্য গঠন করা সম্ভব।
তিনি সকলের প্রতি কিছুটা ছাড় দিয়ে ও কিছুটা অবস্থান পরিবর্তন করে একটি জায়গায় আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা অবস্থার পরিবর্তন করে হলেও এগিয়ে আসুন। না হলে আমরা যেখানে আছি, সেখানেই থেকে যাব। গ্রহণযোগ্যতার দিক থেকে এইটুকু বিবেচনা করুন যে, এটা সম্ভব কি-না।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় অংশগ্রহণ করছে- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা।
এর আগে, দফায় দফায় বৈঠকে কমিশন প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি ও সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণকল্পে স্বতন্ত্র কমিটি গঠন করাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেছে।
কমিশন সূত্রে জানা যায়, আলোচনা শেষে ব্রিফ করবেন রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিরা।
মন্তব্য