‘ট্রাভেল ডকুমেন্ট’ হিসেবে বাংলাদেশের পাসপোর্ট এখন বিশ্বের সব দেশের জন্য বৈধ।
পাসপোর্টে ‘ইসরায়েল ছাড়া এই পাসপোর্ট বিশ্বের সব দেশের জন্য বৈধ’ (দিস পাসপোর্ট ইজ ভ্যালিড ফর অল কান্ট্রিজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড এক্সসেপ্ট ইসরায়েল) কথাটি বদলে এখন লেখা হচ্ছে, ‘এই পাসপোর্ট বিশ্বের সব দেশের জন্য বৈধ (দিস পাসপোর্ট ইজ ভ্যালিড ফর অল কান্ট্রিজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড)।’
‘ইসরায়েল ছাড়া’ শব্দ দুটি বাদ পড়ার মধ্য দিয়ে ভ্রমণের জন্য সব দেশ উন্মুক্ত হয়ে গেছে বলে মনে করেন কূটনীতিক বিশ্লেষকরা। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, বাংলাদেশি নাগরিকরা ইসরায়েল ভ্রমণ করতে পারবেন না।
তাহলে কেন এই পরিবর্তন
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, ই-পাসপোর্টের আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করতে নেয়া হয়েছে এই সিদ্ধান্ত।
পাসপোর্টে কবে থেকে এ পরিবর্তন আনা হয়েছে নির্দিষ্ট করে দিন, তারিখ বলতে না পারলেও মন্ত্রী বলেন, ‘এটা অনেক দিন ধরে হয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল পাসপোর্টে তো এগুলো লেখা থাকে না। সে জন্য ইন্টারন্যাশনাল পাসপোর্টে যেভাবে থাকে আমরা সেভাবেই করেছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের কণ্ঠেও ধ্বনিত হয় একই সুর। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘এটা আমি শুনেছি। শোনার পরে আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করেছি। এটা প্রায় ছয় মাস আগে নতুন পাসপোর্ট যখন অর্ডার দেয়া হয়, তখন টু মেইনটেইন স্ট্যান্ডার্ড, অনেকগুলো পাসপোর্ট তারা দেখেছেন।
দুনিয়ার কোনো পাসপোর্টে ‘এক্সসেপ্ট’-এর মতো বিষয়টি নেই দাবি করে মোমেন আরও বলেন, ‘পৃথিবীর আর কোনো দেশের পাসপোর্টে এ রকম লেখা থাকে না। সে জন্য এটা উঠিয়ে দেয়া হয়েছে।’
ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. আইয়ুব চৌধুরীও বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনার আলোকে পাসপোর্টের আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখার স্বার্থে এটা বাদ দেয়া হয়েছে।’
ওই মুহূর্তে তিনি অফিসে না থাকায় ঠিক কবে থেকে বাদ দেয়া হয়েছে, সেটি নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি আইয়ুব।
তিনি বলেন, ‘এটা আগেই বাদ দেয়া হয়েছে। ইমপ্লিমেন্ট হতে তো এক বছর সময় লেগে যায়।’
আধুনিক পাসপোর্টে এসব কথা লেখা থাকা না থাকা তেমন কোনো প্রভাব ফেলে না বলে দাবি করেন ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
তিনি বলেন, ‘আমাদের পাসপোর্ট আছে দুইটা। পাসপোর্ট রিড করা হয়, রিডিং পড়ে নয়। আপনি যখন ভিসার জন্য অ্যাপ্লাই করেন, একটা আছে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট। মেশিন রিড করে। সেখানে এ ধরনের কোনো কিছু নাই।
‘আরেকটা আছে ই-পাসপোর্ট। সেটা ইলেক্ট্রনিক চিপ থেকে রিড করে। সেখানেও নেই। আইসিএও নিয়ম অনুযায়ী, যেগুলো থাকার কথা সেগুলো আছে। আপনার পরিচয়, আপনার বায়োমেট্রিক-সেগুলো আছে।’
পাসপোর্টে অনেক কিছু লেখা থাকলেও সেগুলো দেখা হয় না বলে দাবি করেন তিনি।
এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশি নাগরিকরা ইসরায়েলে যেতে পারবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘না। এটার সঙ্গে ইসরায়েলে যাওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই।’
ভিন্নমত কূটনীতিকদের
সাবেক পররাষ্ট্রসচিব ও কূটনীতি বিশ্লেষক তৌহিদ হোসেন বলেন, এই পরিবর্তনের ফলে পাসপোর্ট অনুযায়ী ইসরায়েল যেতে কোনো বাধা থাকল না বাংলাদেশিদের।
তার মতে, ‘সেটা সরকার সিদ্ধান্ত নেবে, যেতে পারবেন কি না। কিন্তু পাসপোর্টটা অ্যালাউ করে যেতে। ডিপ্লোম্যাটিক পাসপোর্টে কখনো এটা লেখা ছিল না।’
আরেক কূটনীতি বিশ্লেষক ও সাবেক রাষ্ট্রদূত নাসিম ফেরদৌসও মনে করেন, এতে ইসরায়েলে প্রবেশে বাধা কাটল।
তিনি বলেন, ‘লেখা নেই যেহেতু ইসরায়েলে প্রবেশ করতে পারবেন, এখন এটা ইসরায়েলের ওপর নির্ভর করে তারা যেতে দেবে কি দেবে না। দুটো দেশ একে অপরকে রিকগনাইজ না করলে সাধারণত যাওয়া-আসার সুবিধাটা দেয়া হয় না।’
সাবেক পররাষ্ট্রসচিব তৌহিদ হোসেনের কাছে জানা গেল, ইসরায়েল, তাইওয়ান ও সাউথ আফ্রিকার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পাসপোর্টের বৈধতা ছিল না।
তিনি বলেন, ‘বর্ণবৈষম্যের অবসান হলে সাউথ আফ্রিকাকে আমরা স্বীকৃতি দিয়েছি। তাইওয়ানকে কিন্তু আমরা স্বীকার করি না। স্বীকৃতি দিই না আলাদা দেশ হিসেবে; চীনের অংশ হিসেবে মনে করা হয়। কিন্তু প্র্যাকটিক্যাল কারণে তাইওয়ানের নিষেধাজ্ঞা আমরা তুলে দিয়েছি।’
পাসপোর্টে যতক্ষণ ওই কথাটি লেখা ছিল, ততক্ষণ ইসরায়েলে যাওয়ার উপায় ছিল না বলে জানান তৌহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘সরকার কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটা দেখতে হবে। ইসরায়েল কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটাও দেখতে হবে। বাংলাদেশিদের তারা ঢুকতে দেয় কি না। যেহেতু বাংলাদেশ তাদের স্বীকার করে না, স্বীকৃতি দেয় না।’
বিদেশে নিযুক্ত কোনো ইসরায়েলি দূতাবাস থেকে যদি কোনো বাংলাদেশি নাগরিক আবেদন করে ভিসা নিয়ে দেশটিতে যায়, সেটা রাষ্ট্র অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করবে কি না, জানতে চাওয়া হয় কূটনীতিকদের কাছে।
তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘রাষ্ট্র যদি স্পেসিফিক নিষেধাজ্ঞা জারি রাখে, অর্থাৎ কোনো নাগরিক ইসরায়েলে যেতে পারবেন না, এ রকম যদি কোনো নিষেধাজ্ঞা থাকে, তাহলে সেটা হতে পারে। এগুলো তো ইলেকট্রনিক পাসপোর্টের সব তথ্য। আপনি কোথায় যাচ্ছেন, না যাচ্ছেন অন্য দেশের মতো বাংলাদেশের কাছেও চলে আসবে। নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও যদি আপনি যান, তাহলে সরকার ব্যবস্থা নিতেই পারে আপনার বিরুদ্ধে।’
নাসিম ফেরদৌস বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ না থাকলে এটাতে ধরার খুব একটা সুযোগ নেই। কারণ, আপনি বলতে পারবেন, ডিফেন্ড করতে পারবেন যে, এখানে তো লেখা নেই ইসরায়েল যেতে পারব না।’
বহাল আছে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা
বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের ইসরায়েলে ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে এক্সসেপ্ট ইসরায়েল শব্দটি তুলে নেয়া হয়েছে পাসপোর্টের আন্তর্জাতিক মান রক্ষার জন্য এবং এর মানে এই নয় যে, বাংলাদেশের মধ্যপ্রাচ্য নীতিতে কোনো পরিবর্তন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার ইসরায়েলের ব্যাপারে তার অবস্থান থেকে সরে আসেনি এবং এ ব্যাপারে বাংলাদেশ তার দীর্ঘদিনের অবস্থানে অটল আছে।
ফলে পাসপোর্টে ভ্রমণ জটিলতা দূর হলেও নিষেধাজ্ঞা থাকায় বাংলাদেশি নাগরিকরা যেতে পারবেন না ইসরায়েলে।
তবে কি কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন প্রক্রিয়া
বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে এক্সসেপ্ট ইসরায়েল শব্দ তুলে দেয়ার ঘটনায় ঢাকার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছে তেল আবিব।
এক টুইটবার্তায় রোববার ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উপমহাপরিচালক গিলাড কোহেন এ সন্তোষ প্রকাশ করেন।
তিনি লিখেন, ‘অনেক বড় খবর। বাংলাদেশ ইসরায়েলের সঙ্গে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নিয়েছে। এবার বাংলাদেশ ও ইসরায়েলের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করলে উভয় দেশের জনগণ লাভবান হবে। কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে আমরা বাংলাদেশকে স্বাগত জানাচ্ছি।’
কিন্তু এটা কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন প্রক্রিয়া নয় বলে জোর গলায় বলছে সরকার।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘ইট ডাজনট মিন, এর ফলে বাংলাদেশ এবং ইসরায়েলের সম্পর্কের কোনো পরিবর্তন হয়েছে। আমরা এখনও তাদের রিকগনাইজ করি না। এখনও আমাদের আগের যে অবস্থান, সে অবস্থানে আছি।’
রোববার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘ইসরায়েল নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান অপরিবর্তিত আছে এবং যত দিন পর্যন্ত সেখানে দুই রাষ্ট্র নীতি (ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলিদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র) বাস্তবায়ন না হচ্ছে, তা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।’
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে সাবেক পররাষ্ট্রসচিব তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘কোনো দেশের পাসপোর্টে সম্ভবত এই রেস্ট্রিকশনটা আর নেই। এ কারণেই হয়তো আমাদের সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার মানে এই না যে, আমরা ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিয়ে দিচ্ছি।’
পাসপোর্টের মর্যাদা কি বাড়বে
এই পরিবর্তনের ফলে আন্তর্জাতিক বিশ্বে বাংলাদেশের পাসপোর্টের মর্যাদা বাড়বে বলে মনে করেন না কূটনীতিকরা।
তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘আমার মনে হয় না ইসরায়েলের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে কি না, তার সঙ্গে র্যাঙ্কিংয়ের কোনো সম্পর্ক আছে।’
তিনি বলেন, ‘র্যাঙ্কিংটা হয়, যে দেশগুলো এমন ফিল করে বাংলাদেশি কেউ এসে তার এখানে ইলিগ্যাল থেকে যাবে না, তারা অন অ্যারাইভাল ভিসা দেয়। যে পাসপোর্ট দিয়ে বেশিসংখ্যক দেশে অন অ্যারাইভাল ভিসা দেয়, তার র্যাঙ্কিং তত বেশি।’
গ্লোবাল পাসপোর্ট ইনডেক্সের র্যাঙ্কিংয়ে দেখা যায়, এই মুহূর্তে বাংলাদেশের পাসপোর্টের অবস্থান ৭৩।
আরও পড়ুন:আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়-স্বজনদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করতে কড়া নির্দেশনা দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
বৃহস্পতিবার দলটির এক অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এরপর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের মাধ্যমে তা বিভিন্ন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে জানিয়ে দেয়া হয়।
বৈঠকে উপস্থিত থাকা নেতাদের একজন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তরিকভাবে চান উপজেলা নির্বাচন প্রভাবমুক্ত হোক। সে কারণে দল চায় যে মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের নিজ পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়-স্বজনরা যেন এই নির্বাচনে অংশ না নেন।’
‘আজ (বৃহস্পতিবার) দলের একটি বৈঠকে সাধারণ সম্পাদক আমাদেরকে বিষয়টি জানান। আমরা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং জেলা-উপজেলায় তা জানাতে শুরু করেছি।’
এবার স্বতন্ত্র মডেলে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এতে নিজ নিজ এলাকায় রাজনৈতিক বলয় নিজেদের কব্জায় রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন আওয়ামী লীগের কিছু মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য। দলের হাইকমান্ড এই নির্বাচনে কাউকে সমর্থন না দেয়ার নির্দেশনা দিলেও এসবে কান দিচ্ছেন না তারা।
কোনো কোনো সরকার দলীয় সংসদ সদস্যরা তাদের স্ত্রী, সন্তান ও আত্মীয়-স্বজনদের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার নেপথ্যে কলকাঠি নাড়ছেন। নিজ দলের প্রভাবশালীদের এমন হস্তক্ষেপে ইতোমধ্যে তৃণমূলে নানামুখী বিশৃঙ্খলা দেখা দিচ্ছে।
দীর্ঘদিন ধরে জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো নিজেদের পরিবারের দখলে রাখার চেষ্টার পাশাপাশি উপজেলায় একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তারা। ভোটের মাঠে স্বজনদের জিতিয়ে আনতে নানামুখী কৌশল অবলম্বন শুরু হয়েছে। এতে তৃণমূলের সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়তে শুরু করেছে। এ নিয়ে তৃণমূল আওয়ামী লীগে বিরাজ করছে চরম ক্ষোভ।
দলীয় সূত্র জানায়, দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক নেতারা ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর দুই সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী এবং একজন প্রভাবশালী সংসদ সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের সন্তান বা নিকটাত্মীয়দের প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার থেকে দলটির দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকেরা নিজ নিজ বিভাগের মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের দলের এই নির্দেশ জানাতে শুরু করেছেন।
ইতোমধ্যে অর্ধশতাধিক দলীয় ও দলীয় স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ দলের হাইকমান্ডের কাছে জমা পড়েছে। অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে। কেউ কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অমান্য করলে তাদেরকে শো-কজ, সতর্কতা, তলবসহ বর্তমান দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে দলের হাইকমান্ডের।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর করার স্বার্থে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদেরকে নিজ পরিবারের সদস্যদের প্রার্থী না করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।’
বিএনপি ৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচন বর্জন করায় ওই নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক দেখাতে দলের নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে উৎসাহ দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। তখন সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া নিয়ে আওয়ামী লীগের তৃণমূলে বিরোধ তৈরি হয়।
জাতীয় নির্বাচনের মাস তিনেকের মাথায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীদের পছন্দের ব্যক্তিদের প্রার্থী করা নিয়ে দলীয় বিরোধ আরও বেড়ে যাচ্ছে। এর রেশ ইতোমধ্যে বিভিন্ন উপজেলায় পড়তে শুরু করেছে।
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে নিজের ছেলেকে ভোট না দিলে উন্নয়ন কাজ না করার হুমকি দিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী। নাটোরে প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকের শ্যালক লুৎফুল হাবিবের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষ প্রার্থীকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে।
এসবের পরিপ্রেক্ষিতে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বৃহস্পতিবার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেন। বৈঠকে ওবায়দুল কাদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দপ্তরকে সারা দেশে মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের মধ্যে যাদের স্বজন ও পরিবারের সদস্য নির্বাচন করছেন, সেই তালিকা তৈরির নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত, এবার চার পর্বে দেশের ৪৮১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন হতে যাচ্ছে। প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ হবে ৮ মে। ইতোমধ্যে প্রথম ধাপে ১৫২টি ও দ্বিতীয় ধাপে দেশের ১৬১টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এরপর ২১ মে হবে দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ।
আরও পড়ুন:প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে মোট বৈধ প্রার্থী দাঁড়িয়েছে এক হাজর ৭৮৬ জন। মাঠ পর্যায় থেকে পাঠনো তথ্য একীভূত করার পর এ তথ্য জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।
তিনি জানান, প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন এক হাজার ৮৯০ জন। এদের মধ্যে বাছাইয়ে ১০৪ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল, আর বৈধতা পেয়েছে এক হাজার ৭৮৬ প্রার্থীর।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ১৮ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত আপিল করা যাবে। আপিল নিষ্পত্তি ২১ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। এরপর প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল এবং ১৫০ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে আগামী ৮ মে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে টিউবওয়েল বসানোর জন্য স্থাপন করা পাইপে পানির পরিবর্তে উঠে আসছে এক ধরনের তরল। অনেকটা ডিজেলের মতো গন্ধযুক্ত এই তরল নিয়ে জনমনে সৃষ্টি হয়েছে কৌতূহল।
উপজেলার ভোলামোড় এলাকায় এক বাড়িতে ঘটেছে এই ঘটনা। বাড়ির মালিক আব্দুল আওয়াল বলেন, ‘পানীয় জলের জন্য তিন বছর আগে এখানে মোটর বসানো হয়। এটি উপজেলা পরিষদ থেকেই বসানো হয়েছিল। কয়েক মাস থেকে মোটরটি দিয়ে পানি উঠছে না। কারণ জানার জন্য বুধবার সকালে মিস্ত্রি ডেকে আনা হয়।
‘মিস্ত্রি কাজ করার সময় মোটরের সঙ্গে যুক্ত পাইপ দিয়ে মাটির নিচ থেকে পানির পরিবর্তে তেলের মতো এক ধরনের তরল উঠে আসে। তা দেখে মনে হয়েছে ডিজেলের মতো। বিষয়টি আমরা উপজেলা চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি, যাতে তারা এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা করেন।’
স্থানীয় সংবাদকর্মী মনিরুল ইসলাম জানান, ফেসবুকে ঘটনাটি দেখার পর তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। এ সময় পাইপ দিয়ে উঠে আসা তরলে তিনি কাগজ চুবিয়ে আগুন ধরানোর চেষ্টা করলে তাতে আগুন ধরে যায়। তার প্রশ্ন- পানি হলে তো ভেজা কাগজে আগুন ধরতো না। তাহলে এই তরল কি খনিজ তেল?
এ বিষয়ে নাচোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা সরকার জানান, তিনিও বিষয়টি ফেসবুকে দেখেছেন। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর করবেন বলে জানান তিনি।
গাইবান্ধায় ভাঙারির দোকানে চুরি করা রেলপাত (রেললাইন) বিক্রির সময় এক অটোচালকসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এসময় দোকান মালিক পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের ব্রিজ রোড এলাকার আশা ভাঙারি দোকানে সরকারি এসব রেলপাত বিক্রির সময় তাদের হাতেনাতে আটক করে গাইবান্ধার রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি)।
এ সময় চুরি করে বিক্রি করতে নিয়ে আসা রেলপাত এবং সেসব পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত একটি অটোরিকশাও জব্দ করা হয়।
আটককৃতরা হলেন- সদর উপজেলার পশ্চিম দুর্গাপুর এলাকার ৩০ বছর বয়সী সাগর মিয়া, ফুলছড়ি উপজেলার উত্তর কঞ্চিপাড়া এলাকার ৪০ বছর বয়সী ওয়াহেদ মিয়া ও আশা ভাঙারি দোকানের শ্রমিক সদর উপজেলার বালুয়া বাজারের পাকারখুটি এলাকার ৩৩ বছর বয়সী মোকলেছুর রহমান। এদের মধ্যে ওয়াহেদ মিয়ার অটোরিকশায় এসব মালামাল পরিবহন করা হয়েছিল।
নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বোনারপাড়া রেলওয়ে পুলিশের ওসি খাইরুল ইসলাম তালুকদার।
তিনি বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শহরের ব্রিজ রোডের একটি ভাঙারির দোকানে সরকারি রেলপাত অবৈধভাবে ক্রয়-বিক্রয়কালে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এ সময় দোকান মালিক পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘এ সময় তাদের কাছ থেকে খণ্ড খণ্ড তিন ফুট দৈর্ঘ্যের ৯ টুকরা রেললাইনের পাত উদ্ধার করা হয়, যা সংশ্লিষ্ট বিভাগে জমা দেয়া হবে।’
রেলপাতগুলো বালাসিঘাটের পরিত্যক্ত রেলপথ থেকে খুলে আনা হয়েছে বলে জানান রেলওয়ে পুলিশের এ কর্মকর্তা।
এ সময় এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আটককৃতদের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পদ অবৈধভাবে ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহন আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া এদের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না তাও খতিয়ে দেখবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।’
চিত্রনায়িকা পরীমনির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। ঢাকার সাভারের বোট ক্লাবের পরিচালক নাছির উদ্দিন মাহমুদকে মারধর, হত্যাচেষ্টা, ভাঙচুর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে করা মামলাটি তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সত্যতা পেয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছে।
এই প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এম সাইফুল ইসলামের আদালতে বৃহস্পতিবার এই আবেদন করেন বাদী পক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম মোহাম্মদ সোহেল। শুনানি শেষে আদালত আদেশের জন্য রেখেছে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম মোহাম্মদ সোহেল এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই ঢাকা জেলার পরিদর্শক মো. মনির হোসেন সম্প্রতি ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পরীমনি ও তার কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ বোগদাদী জিমি ওরফে জিমের বিরুদ্ধে মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করেন। তবে আরেক আসামি ফাতেমা তুজ জান্নাত বনির বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি।
ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন ২০২২ সালের ৬ জুলাই আদালতে মামলাটি করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, পরীমনি ও তার সহযোগীরা অ্যালকোহলসেবী। সুযোগ বুঝে তারা বিভিন্ন নামিদামি ক্লাবে ঢুকে অ্যালকোহল পান করেন এবং পার্সেল নিয়ে মূল্য পরিশোধ করেন না। পরীমনি তার পরিচিত পুলিশ কর্মকর্তাদের দিয়ে মিথ্যা মামলা করে হয়রানির ভয় দেখান। ২০২১ সালের ৯ জুন রাত ১২টার পর আসামিরা সাভারের বোট ক্লাবে ঢুকে দ্বিতীয় তলার ওয়াশরুম ব্যবহার করেন।
পরে তারা ক্লাবের ভেতরে বসে অ্যালকোহল পান করেন। বাদী ও তার সহযোগী শাহ শহিদুল আলম রাত সোয়া ১টার দিকে যখন ক্লাব ত্যাগ করছিলেন, তখন পরীমনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে বাদী নাসির উদ্দিনকে ডাক দেন এবং তাদের সঙ্গে কিছু সময় বসার অনুরোধ করেন।
একপর্যায়ে পরীমনি অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে নাসির উদ্দিনকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন এবং একটি ব্লু লেবেল অ্যালকোহলের বোতল বিনামূল্যে পার্সেল দেয়ার জন্য বাদীকে চাপ দেন। বাদী এতে রাজি না হওয়ায় পরীমনি বাদীকে গালমন্দ করেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, বাদী ও আসামিদের মধ্যে বাদানুবাদের এক পর্যায়ে পরীমনি বাদীর দিকে একটি সারভিং গ্লাস ছুড়ে মারেন এবং হাতে থাকা মোবাইল ফোনটিও ছুড়ে মারেন। এতে নাসির উদ্দিন মাথা ও বুকে আঘাত পান। এ সময় পরীমনি ও তার সহযোগীরা নাসির উদ্দিনকে মারধর ও হত্যার হুমকি দেন ও ভাঙচুর করেন।
বাদী মামলায় আরও উল্লেখ করেন, এ ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্য পরীমনি সাভার থানায় বাদী নাসির উদ্দিনসহ দুজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে মামলা করেন।
২০২১ সালের ১৪ জুন ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তার বন্ধু অমির নাম উল্লেখ করে এবং চারজনকে অজ্ঞাত আসামি করে পরীমনি সাভার থানায় মামলা করেন।
ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কামাল হোসেন ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নাসিরসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন।
২০২২ সালের ১৮ মে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯ এর বিচারক হেমায়েত উদ্দিন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। অভিযোগ গঠনের সময় নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন নাসিরসহ তিন আসামি। বর্তমানে মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য রয়েছে।
আরও পড়ুন:নাটোরের সিংড়া উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে অপহরণ ও মারধরের অভিযোগে অপর প্রার্থী মো. লুৎফুল হাবিবকে তলব করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান বৃহস্পাতবার অভিযুক্তকে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছেন।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের ৮ মে অনুষ্ঠেয় নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক দেলোয়ার হোসেন ও তার ভাইসহ তিনজনকে অপহরণের সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। এ ঘটনায় আপনি লুৎফুল হাবীবকে দায়ী করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে বর্ণিত বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থা থেকে প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। এছাড়া সব জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সচিত্র বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে।
উল্লেখিত প্রতিবেদন ও পত্রিকান্তে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা প্রমাণ হয়েছে। এরূপ ঘটনার জন্য কেন আপনার প্রার্থিতা বাতিল অথবা আপনার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না সে বিষয়ে লিখিত জবাবসহ নির্বাচন কমিশনে ২২ এপ্রিল সোমবার বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দেয়ার নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত দিয়েছে।
উল্লেখ্য, গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর নাটোর জেলা নির্বাচন অফিসে গেলে দেলোয়ার হোসেনকে গাড়িতে তুলে নিয়ে আহত অবস্থায় তাকে তার বাড়ির পাশে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা।
ভুক্তভোগী প্রার্থীর পরিবার এ ঘটনার জন্য আরেক প্রার্থী লুৎফুল হাবীব রুবেল ও তার সমর্থকদের দায়ী করেছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লুৎফুল হাবীব তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক। দেলোয়ার হোসেন মনোনয়নপত্র দাখিলের আগে লুৎফুল হাবীব ছিলেন একক প্রার্থী।
আরও পড়ুন:অপপ্রচার রোধে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হলে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে প্রতিমন্ত্রীর নিজ দপ্তরে ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মার সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
আরাফাত বলেন, ‘অপপ্রচার রোধে ভারতের কিছু প্রতিষ্ঠান কাজ করে। তারা কীভাবে কাজ করে, তাদের অভিজ্ঞতা এবং প্রক্রিয়া-পদ্ধতি বিনিময় জানা-বোঝার চেষ্টা করব। এক্ষেত্রে কোনো প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হলে আমরা তাদের কাছ থেকে সহায়তা নেব।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে যেসব কো-অপারেশন আছে, সেসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে বিটিভিতে দুই ঘণ্টার একটি চাংক নিয়ে আমরা আন্তর্জাতিক সংবাদ বিশ্লেষণ, চলমান ঘটনাপ্রবাহ এবং সংবাদ উপস্থাপনা শুরু করতে যাচ্ছি। সেক্ষেত্রে ভারতের যে সংবাদ সংস্থাগুলো আছে, বিশেষ করে এএনআইয়ের সঙ্গে কোলাবরেশন করা যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
‘যেহেতু বিটিভি ইন্ডিয়াতে দেখানো হয়, সেহেতু দুই ঘণ্টার এ চাংক আমরা ধীরে ধীরে দুই, তিন, চার ঘণ্টা পর্যন্ত বাড়াব। আমরা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী করতে চাচ্ছি, যেখানে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের খবর থাকবে। এর বাইরেও বিভিন্ন দেশের খবর থাকবে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করব ভারতীয় দর্শকদের আকৃষ্ট করতে। এ ছাড়া ইন্ডিয়ান ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন নিয়ে ইনস্টিটিউশন আছে, তাদের সঙ্গে কোলাবরেশন করা, বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রাম ও ট্রেনিং করা।’
‘সম্প্রতি মুজিব শিরোনামের যে সিনেমাটি সহ-প্রযোজনা হয়েছে, এমন অন্য কোনো সিনেমায় সহ-প্রযোজনার সুযোগ আছে কি না তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে’- যোগ করেন প্রতিমন্ত্রী।
ভারতের সিনেমা যেহেতু বাংলাদেশের বাজারে চলে সেহেতু বাংলাদেশেরও ভালো মানের সিনেমা ভারতে চালানোর বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দর্শককে জোর করে কিছু দেখানো যায় না। বাজারে কোনো জিনিসের চাহিদা থাকলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই যাবে-আসবে। সিনেমা যেহেতু প্রোডাক্ট, সেহেতু ভারতের বাজারে দর্শক থাকলে অবশ্যই যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের আরও কো-অপারেশনের সুযোগ আছে, সেসব নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আমি মনে করি- বাংলাদেশ এ বিষয়ে বেশি লাভবান হবে। কারণ ভারতের ফিল্মে, টেলিভিশনে বা অন্যান্য জায়গায় যে অভিজ্ঞতা আছে, তা আমরা যত বেশি নেয়ার চেষ্টা করা যায়। দেশের উন্নয়নের জন্য এসব জরুরি।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য