সাহিনুদ্দীন ও মাঈনুদ্দীন দুই ভাই। পল্লবীতে সরকারের অধিগ্রহণ থেকে তাদের জমি ছাড়িয়ে আনতে সাবেক এমপি এম এ আউয়ালের সঙ্গে তাদের রফা হয়। এর বিনিময়ে সাহাবুদ্দীন ভাইয়েরা তাদের মালিকানাধীন জমি আউয়ালকে উপঢৌকন হিসেবে দেন।
কিন্তু উদ্ধার না করে আউয়াল উল্টো সব জমি তার আবাসন প্রকল্পের জন্য বিক্রি করতে শুরু করেন। এ নিয়ে শুরু হয় বিরোধ। এ নিয়ে দুই ভাইয়ের উপর কয়েক দফায় হামলা করেন আউয়াল।
গত ১৬ মে রাজধানীর পল্লবীতে নিজ সন্তানের সামনে সাহিনুদ্দীন নৃশংসভাব খুন হন। তাকে সন্ত্রাসীরা চাপাতি, রামদাসহ বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে।
পরদিন সাহিনুদ্দীনের মা মোসাম্মদ আকলিমা রাজধানীর পল্লবী থানায় ২০ জনের নামে মামলা করেন। এতে আউয়ালকে প্রধান আসামি করা হয়। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় ১৪-১৫ জনকে। পরে ২০ মে র্যাবের অভিযানে ভৈরব থেকে গ্রেপ্তার হন আউয়াল।
এম এ আউয়াল লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক এমপি। তিনি তরীকত ফেডারেশনের নেতা হিসেবে আওয়ামী লীগের সমর্থনে মহাজোটের প্রার্থী হয়েছিলেন। তবে ২০১৮ সালে আর মনোনয়ন পাননি।
পল্লবীতে তার হ্যাভেলি প্রোপার্টিজের একটি আবাসন প্রকল্প আছে।
সাহিনুদ্দীনের ভাই মাঈনুদ্দীন নিউজবাংলাকে বলেন, আউয়ালের সঙ্গে ২০০৪ সাল থেকে তাদের জমি নিয়ে মামলা-হামলা চলছে।
মাঈনুদ্দীন জানান, পল্লবীর উত্তর কালশিতে বুড়িরটেক এলাকায় তাদের পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ৮৫ শতাংশ জমি আছে। পাঁচটি খণ্ডে বিভক্ত এই জমির চারটি খণ্ড ১৯৭২-৭৩ সালে সরকার একটি প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণ করে। মুক্তিযুদ্ধের পরে রক্ষীবাহিনীর আবাসনের জন্য এটি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। জমিটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। কোনো স্থাপনা নেই।
মাঈনুদ্দীন বলেন, ‘এই জমি সরকারের অধিগ্রহণ থেকে ছাড়িয়ে আনার জন্য আমরা আউয়ালের সঙ্গে চুক্তি করি। আমাদের পাঁচ দাগের জমির মধ্যে চার দাগ সরকার নিয়ে গেছে। একটা দাগ ছিল আমাদের মালিকানায়। চার দাগের জমি সরকারের কাছ থেকে উদ্ধারের জন্য আউয়ালকে ২০ কাঠা ফ্রেশ জমি ফ্রি দিছি।’
মাঈনুদ্দীন বলেন, ‘আমি আমাদের ভাগের জমির পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি। তাই আমি আউয়ালকে জমি দিছিলাম আমাদের বাকি জমি উদ্ধারের জন্য। আউয়াল আমাদের জমি উদ্ধার না করে জমির মধ্যে সাইনবোর্ড দিয়ে আমাদের কাছ থেকে জমি কিনছে বলে মানুষের কাছে বেচা শুরু করে।’
মাঈনুদ্দীন ও সাহিনুদ্দীনের মালিকানাধীন জমিতে একসময় প্রায় এক হাজার বস্তিঘর ছিল, যা দুই ভাই ভাড়া দিতেন। আউয়ালকে উপঢৌকন হিসেবে দেয়ার জন্য তারা সেই বস্তি তুলে দেন। এমপি আউয়াল সব জমিই বিক্রি শুরু করেন। এ নিয়ে দুই ভাই আপত্তি তোলেন।
আউয়াল এমপি থাকাকালে তাদের ওপর আগেও হামলা করেছেন উল্লেখ করে মাঈনুদ্দীন বলেন, ‘সে সময় মমিন বাহিনী নামে একটা বাহিনীর ৩০ জনকে আউয়াল বেতন দিয়ে রাখতেন। আমরা কিছু বললেই আমাদের মারধর করা হতো। এই মমিনের সঙ্গে আমাদের কোপাকোপিও হয়। তখন আমার ভাইয়ের হাত কেটে ফেলে।
‘আমার ভাই আহত হলে ওকে নিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল চলে যাই। তখন ওরা আমাদের বাড়িতে হামলা করে। চঞ্চল নামে একটা ছেলেকে আমার ভাই মনে করে ওরা ওকে মেরে ফেলে। চঞ্চল আমাদের প্রতিবেশী।’
‘তখন মমিন ও তার বাহিনীর সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা হয়। আউয়াল হুকুম দিলেও রানিং এমপি ছিলেন বলে রেহাই পান। পরে মমিনরে র্যাব ক্রসফায়ারে দিছে। তখন কিছুদিন শান্তিতে ছিলাম। পরবর্তীতে সুমন এবং টিটুর মাধ্যমে ২০ থেকে ৩০ জন লোক নিয়োগ দেয়।’
পল্লবীর যে বাড়িতে ১৬ মে সাহিনুদ্দীনকে কোপানো হয়েছিল এবং সেখান থেকে তিনি দৌড়ে পাশের যে বাসায় গিয়েছিলেন, এ দুই বাসার গ্যারেজে এখনও রক্তের দাগ লেগে আছে। ওইদিন বিকেল চারটার দিকে এলাকার অনেকের চোখের সামনে ঘটনাটি ঘটলেও এখন কেউ তা স্বীকার করছেন না। সবাই বলছেন, তারা হত্যার পরে সেখানে হাজির হয়েছেন।
পাশের ভবনের দোতলার ভাড়াটিয়া আলামিন বলেন, ‘আমরা তখন ঘুমায় ছিলাম। মারামারি হওয়ার পরে চিল্লাচিল্লির শব্দ শুনে বাইর হইছি। গিয়ে দেখি অনেক লোকজন। আর লাশ পড়ে আছে। বিকেল চারটার পরে হবে ঘটনাটা। এর বাইরে কিছু জানি না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কিশোর বলেন, ‘এরা সবাই দেখছেন। কিন্তু সুমন বাহিনীর ভয়ে কেউ কিছু বলছে না। সুমনকে এলাকার সবাই ভয় পায়। তার ভয়ে কেউ মুখ খুলছে না।’
সাহিনুদ্দীনের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার শোকে পাথর হয়ে আছেন। এলাকার মানুষ তাকে দেখতে এসে ভিড় করছেন। কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন তিনি।
মাহমুদা আক্তার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আউয়াল দীর্ঘদিন ধরে আমার স্বামীকে একটার পর একটা মামলা দিছে এই জমি দখল করার জন্য। যখন দেখছে মামলা দিয়ে কাজ হয় না, তখন তার গুন্ডা-পান্ডা দিয়ে হামলা শুরু করছে। প্রতিবার হামলায় আমরা দৌড়াইয়া গিয়া আমার স্বামীকে উদ্ধার করছি।
‘এই টিটু গত ডিসেম্বর মাসে কত বুঝাইয়া আমার স্বামীর সাথে মিলছে। পরে পটাইয়া সিরামিকসের ভেতরে নিয়ে সুমন বাহিনী আমার স্বামীকে কোপাইছে। পরে আল্লার রহমতে বেঁচে যায়।
‘ওই দিনও আমার ছেলে ওর বাবার সাথে ছিল। তখন আমার স্বামী আমার ছেলেকে বলে তুমি সরে যাও ওরা আমায় মারতে আসতেছে। পরে ঢাকা মেডিক্যাল নিলে সেখান থেকে পঙ্গুতে পাঠায়। তখন মাথায় অনেকগুলা কোপ দেয়। একেক কোপে শিলাই পড়ছিল তিরিশটার মতো।’
দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে আউয়াল ও তার লোকজন নিয়মিত বানোয়াট মামলা দিতেন বলে অভিযোগ করেন মাহমুদা আক্তার।
তিনি বলেন, ‘গত ১৪-১৫ রোজার দিকে আউয়াল আবার আমার ভাশুর (মাঈনুদ্দীন) ও আমার স্বামীকে চাঁদাবাজির মামলা দিয়ে ধরিয়ে দেয়। তার ১২ দিন পরে তারা জামিনে আসে। জামিনের আসার দিন বিকালে ২০-৩০ জন আমার স্বামীরে দা নিয়ে মারতে আসে।’
হত্যার দিনের বিবরণ দিতে গিয়ে মাহমুদা আক্তার বলেন, ‘টিটু হয়ত দাওয়াত দিছে আমাদের এইখানে আইসেন। সুমনও বলছে আইসেন। আমায় না বলে বের হইছে। হোন্ডা দিয়ে আমার ছেলেকে নিয়ে ডি ব্লক গেছে। যাওয়া মাত্র সুমনের সাথে কথা হইছে। আমার ছেলে বলছে, আব্বুর সাথে সুমন প্রথমে একলা কথা বলছে। পরে কী যেন একটা হইলো, তখন সুমন বলে এ তোরা কে কোথায় আছিস আইসা ধর ওরে। পরে সবাই চিপা-চাপা থেকে বাইরাইয়া হোন্ডা ঘেরাও দিয়ে ধরছে।
‘‘পরে দা দিয়ে কোপাতে গেলে ওর বাবা ঠেকাতে গেলে কোপ লাগে হাতে। পরে আমার ছেলে দৌড়াইয়া গিয়ে ওর নানির বাসায় গিয়ে আমার বোনের নম্বর দিয়ে আমারে ফোন দিয়ে বলে, ‘আম্মু, আম্মু আব্বুরে সুমন মাইরা ফেলতাছে ডি ব্লকে।’ আমরা যেয়ে দেখি ওর লাশ ফালাইয়া গেছে। পুলিশ দাঁড়ানো।”
সাহিনুদ্দীনের মৃত্যুতে টিটুর কোনো হাত নেই জানিয়ে টিটুর মা নুরজাহান বেগম বলেন, ‘আউয়াল আমাদের সব শরিকের কাছ থেকে জমি কিনছে। মাঈনুদ্দীন আমার ছেলেরেও মারছে। মামলাও দিছে।’
সাহিনুদ্দীনের মা আকলিমা খাতুন বলেন, ‘এই জমি নিয়ে আমার স্বামীও লইড়া গেছে। কতবার বসছে এটা নিয়ে, সমাধান হয় নাই। জমি মাপ দিয়েই আমাদের সান্ত্বনা দিয়ে রাখে। কিন্তু বুঝাইয়া দেয় না। জমির যে দাম, এই দাম আমাদের দিতে গেলে অনেক টাকা দেওয়া লাগত। রংবাজ সন্ত্রাসগো অল্প কিছু দিয়ে মাইরা পথের কাটা সরাইয়া দিতে চাইছিল।’
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক জয় চৌধুরীর নেতৃত্বে গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন সাংবাদিকরা।
টেলিভিশন ক্যামেরাম্যান জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের (টিসিএ) উদ্যোগে বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বিএফইউজে সভাপতি ওমর ফারুক, মহাসচিব দীপ আজাদ, ডিইউজে সভাপতি সাজ্জাদ আলম তপু ও সোহেল হায়দার চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মুজতবা ধ্রুব, বাচসাস সভাপতি রাজু আলীম, সাধারণ সম্পাদক রিমন মাহফুজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাবু প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সাংবাদিকরা নানা ক্ষেত্রে আজ নির্যাতিত। তারা পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নানাভাবে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। চলচ্চিত্রে যারা অভিনয় করেন তাদেরকে আমরা মননশীল মনে করি। কিন্তু তারা যখন মাস্তানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন, তখন তারা সমাজে কী বার্তা দেন?
নারকীয় এই হামলায় নেতৃত্ব দেয়া জয় চৌধুরী, শিবা শানু ও আলেকজান্ডার বোসহ হামলায় জড়িত সবাইকে শিল্পী সমিতির সদস্যপদ বাতিলসহ আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা।
মানববন্ধনে আরও অংশ নেন বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত বিনোদন বিটের সাংবাদিকরা।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বিকেলে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান শেষে শিবা শানু, জয় চৌধুরী ও আলেকজান্ডার বোর নেতৃত্বে সাংবাদিকদের ওপর হামলা করা হয়। এতে প্রায় ২০ জন সাংবাদিক আহত হন। হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন চারজন।
তদন্ত কমিটি
এদিকে হামলার ঘটনা তদন্তে ১১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি ও সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে পাঁচ জন করে রাখা হয়েছে। আর উপদেষ্টা হিসেবে আছেন প্রযোজক আরশাদ আদনান।
দশজনের তদন্ত কমিটিতে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে লিমন আহমেদ, রাহাত সাইফুল, আহমেদ তৌকির, বুলবুল আহমেদ জয় ও আবুল কালাম এবং শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে মিশা সওদাগর, ডি এ তায়েব, নানাশাহ, রুবেল ও রত্না রয়েছেন।
আরও পড়ুন:উপজেলা নির্বাচন থেকে মন্ত্রী ও এমপিদের স্বজনরা সরে না দাঁড়ালে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বুধবার দলের সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
কাদের বলেন, ‘দলীয় সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রীদের নিকটাত্মীয় এবং স্বজনদের প্রার্থী না হতে দলীয় যে নির্দেশনা, তা না মানলে সময়মতো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় পেরিয়ে গেছে। এদের মধ্যে অনেকেই বলেছেন যে, আমরা বিষয়টি আরও আগে অবহিত হলে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হতো। তারপরও কেউ কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন, কেউ কেউ করেননি।
‘নির্বাচন কমিশনে সময়সীমা শেষ হয়ে গেলে কেউ ইচ্ছা করলে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে পারেন। এ বিষয়টা চূড়ান্ত হতে নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এখানে কেউ অমান্য করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ আছে দলে; সময়মতো সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিষয়ে কাদের বলেন, ‘আমাদের দলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশনের বিষয়টি আছে। দল যার যার কর্মকাণ্ড বিবেচনায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কৌশলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন নিয়ে থাকে। চূড়ান্ত পর্যায়ে যারা প্রত্যাহার করবে না, এ ব্যাপারে দলের সিদ্ধান্ত সময়মতো নেয়া হবে।’
চূড়ান্ত পর্যায়ে এসেও কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে কি না, এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সাধারণ ক্ষমা একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে দলীয় রণকৌশল। সেটা হতেই পারে। সেটা দলের সভাপতি নিতে পারেন। নির্বাচন হওয়া পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সুযোগ আছে।’
বিএনপির সমাবেশের দিনে আওয়ামী লীগেরও সমাবেশ থাকে—সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির সন্ত্রাস থেকে জনগণকে রক্ষায় কর্মসূচি দেয় আওয়ামী লীগ। বিএনপি একতরফা সমাবেশ করতে গেলে সন্ত্রাস, আগুন সন্ত্রাসের আশঙ্কা থেকেই যায়। জনগণের জানমাল রক্ষায় সরকারি দল হিসেবে আমাদের দায়িত্ব আছে।
‘আমরা মাঠে থাকলে তারা এসব অপকর্ম করতে মানসিকভাবে চাপে থাকবে। সে জন্য আমরা কর্মসূচি দিই। বিএনপির চোরাগোপ্তা হামলা প্রতিহত করতে জনগণের স্বার্থে আমাদের কর্মসূচি থাকা উচিত।’
আরও পড়ুন:গ্যাস পাইপলাইনের জরুরি কাজের জন্য বুধবার তিন ঘণ্টা রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় গ্যাস থাকবে না।
এদিন দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ অবস্থা বিরাজ করবে।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের তথ্য অনুযায়ী, যেসব এলাকায় সব শ্রেণির গ্রাহকদের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে সেগুলো হলো- শনির আখড়া, বড়ইতলা, ছাপড়া মসজিদ, দনিয়া, জুরাইন, ধোলাইরপাড় ও কদমতলী।
আশপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহে চাপ কম থাকতে পারে জানিয়ে গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তিতাস গ্যাস।
রাজধানীর সদরঘাটের শ্যামবাজার ঘাটে একটি লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে ওই আগুনের খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এমভি বাঙালি নামের লঞ্চটিতে কোনো যাত্রী ছিল না।
ফায়ার সার্ভিসের গণমাধ্যম কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম জানিয়েছেন, দুপুর ১টা ৫ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় চারটি ইউনিট। পরে যোগ দেয় আরও একটি ইউনিট।
তিনি জানান, দুপুর পৌনে ২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। লঞ্চটির তৃতীয় তলায় আগুনের সূত্রপাত। আগুনের কারণ ও বিস্তারিত তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, লঞ্চটি নোঙর করা ছিল। হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে (পিএমও) গেছেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি।
মঙ্গলবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছালে শেখ হাসিনা আমিরকে টাইগার গেটে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান। খবর বাসসের
তারা সেখানে একান্ত বৈঠকেও মিলিত হবেন। পরে তারা দুই দেশের মধ্যে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর প্রত্যক্ষ করবেন।
পিএমও ত্যাগের আগে আমির টাইগার গেটে রক্ষিত ভিজিটরস বুকেও সই করবেন। এরপর তিনি বঙ্গভবনে যাবেন যেখানে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন কাতার আমিরের সম্মানে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেছেন।
সন্ধ্যায় আমির একটি বিশেষ বিমানে কাতারের উদ্দেশে যাত্রা করবেন।
রাষ্ট্রপতি মো.সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ আমন্ত্রণে কাতারের আমির সোমবার দু দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকা এসেছেন।
আগামী ২৬ এপ্রিলের (শুক্রবার) শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ স্থগিত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। পুলিশের অনুমতি না পাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মো. রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সমাবেশের অনুমতি চেয়ে পুলিশের কাছে আবেদন করা হয়েছিল, কিন্তু অনুমতি দেয়া হয়নি। ফলে সমাবেশ আপাতত স্থগিত। শান্তি সমাবেশের তারিখ পরে জানানো হবে।’
প্রসঙ্গতঃ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের আয়োজনে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে এ শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
রোববার (২১ এপ্রিল) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশের ঘোষণা দেয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বেলা ৩টা থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করা হবে।
অবশ্য এর আগে গত শনিবার (২০ এপ্রিল) চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ দলের নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে ২৬ এপ্রিল বিকেলে নয়াপল্টনে সমাবেশ ডেকেছিল বিএনপি। পরে তাপপ্রবাহের কারণ দেখিয়ে সোমবার তা স্থগিত করে দলটি।
রাজধানীর গুলিস্তানে গোলাপ শাহ মাজারের সামনে থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার সকাল ৯টার দিকে ৪০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে পাঠানো হয়।
শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আরিফ নেওয়াজ বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল গোলাপ শাহ মাজার সংলগ্ন ফুটপাত থেকে ওই মরদেহ উদ্ধার করি,পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে ঢাকা মেডিক্যালের মর্গে পাঠানো হয়।
তিনি বলেন, আশেপাশের লোকদের সাথে কথা বলে জানতে পারি, মৃত ব্যক্তি ভবঘুরে প্রকৃতির ছিলেন। ভিক্ষাবৃত্তি করতেন এবং সেখানে ঘুমাতেন। তার পরিচয় এখনো জানা যায়নি তবে জানার চেষ্টা চলছে।
এসআই বলেন, সিআইডির ক্রাইম সিনকে খবর দেয়া হয়েছে। ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে হয়তো তার পরিচয় জানা যেতে পারে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ মর্গে রাখা হয়েছে।
মন্তব্য