ফিলিস্তিন সংকটের স্থায়ী সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সুদৃঢ় প্রতিশ্রুতি চেয়েছে বাংলাদেশ।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশ সময় শুক্রবার এক যৌথ আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ প্রতিশ্রুতি চাওয়া হয়।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার শাসক দল হামাসসহ অন্য সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার মধ্যে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ আহ্বান জানানো হলো।
আল-আকসা মসজিদে ইসরায়েলের হানার পরিপ্রেক্ষিতে হামাস রকেট ছোড়ে ইসরায়েলে। এর জেরে গত ১০ মে থেকে গাজা উপত্যকায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
যুদ্ধবিরতি শুক্রবার থেকে কার্যকর হওয়ার আগে টানা ১১ দিনের হামলায় গাজায় ২৩২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়, যাদের মধ্যে ৬৫ শিশু ও হামাস যোদ্ধা রয়েছে। হামলায় আহত হয়েছে এক হাজার ৯০০ মানুষ। অন্যদিকে ইসরায়েলে হামাস ও অন্য সংগঠনগুলোর রকেটে ১২ জন নিহত হয়।
দুই পক্ষের এ যুদ্ধ বন্ধে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহল শুরু থেকেই তৎপরতা শুরু করে। তবে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে যুদ্ধের পর বৃহস্পতিবার অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল ও হামাস।
এমন বাস্তবতায় যুক্তরাষ্ট্র সময় বৃহস্পতিবার মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি ও ফিলিস্তিন প্রশ্নে যৌথ আলোচনার আয়োজন করেছিলেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি। এতে অংশ নেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা।
তিনি বলেন, সুদীর্ঘ সময় ধরে চলমান ফিলিস্তিনি সংকটের স্থায়ী সমাধান জরুরি। নিষ্পত্তিমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যকর ভূমিকা দরকার।
শিশু ও নারীসহ নিরপরাধ ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলের হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে যে চিঠি দিয়েছিলেন, সে কথা সাধারণ পরিষদকে অবহিত করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।
প্রধানমন্ত্রীর লেখা সেই চিঠির উল্লেখ করে ফাতিমা পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে ১৯৬৭ সালের সীমানা অনুযায়ী স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথা বলেন। এর মাধ্যমে ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার রক্ষার প্রতি বাংলাদেশের অবিসংবাদিত প্রতিশ্রুতির কথা তিনি ফের উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি অবিলম্বে ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধের আহ্বান জানান। ধারাবাহিকভাবে এই অবিবেচনাপ্রসূত সহিংসতার প্রতি ধিক্কার জানান।
বাংলাদেশের অগ্রাধিকার প্রস্তাব
মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও ফিলিস্তিন সমস্যার ব্যাপকভিত্তিক, ন্যায়সংগত ও টেকসই সমাধানের লক্ষ্যে কিছু অগ্রাধিকার বিষয় তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এই সংকটের মূল কারণ খুঁজে বের করে তা সমাধানে আন্তরিক প্রচেষ্টা নেয়া, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ও সাধারণ পরিষদকে তাদের চার্টার অনুযায়ী পরিপূর্ণভাবে দায়িত্ব পালন করা, কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসা এবং সব ধরনের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও জাতিসংঘের প্রস্তাব ২৩৩৪(২০১৬)সহ এ বিষয়ের সব প্রস্তাব ইসরায়েলকে পরিপালন করাতে বাধ্য করা। এ ছাড়া শান্তি প্রতিষ্ঠার রোডম্যাপ ও মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়ার দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিতে সব পক্ষের সঙ্গে জাতিসংঘকে আরও নিবিড়ভাবে সংশ্লিষ্ট হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
জরুরিভাবে ফিলিস্তিনি জনগণের মানবিক প্রয়োজনগুলো মেটানোর প্রতি জোর দিয়ে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তায় সৃষ্ট জাতিসংঘের রিলিফ ফান্ডের (ইউএনআরডব্লিউএ) সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
আগ্রাসী ইসরায়েলি বাহিনীর দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় এটি হবে প্রথম পদক্ষেপ।
জাতিসংঘের শতাধিক সদস্যরাষ্ট্র দিনব্যাপী আলোচনায় অংশ নেয়। সদস্যরাষ্ট্রের প্রতিনিধি ছাড়াও বক্তব্য দেন জাতিসংঘ মহাসচিব ও জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি।
আরও পড়ুন:রাজধানী ঢাকার বাতাস আজ অস্বাস্থ্যকর। বায়ুদূষণে ঢাকা আজ বিশ্বের পঞ্চম স্থানে রয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সকাল ৯টায় বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের (আইকিউএয়ার) সূচক থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
আইকিউএয়ার অনুযায়ী সকাল ৯টায় ঢাকার বায়ুর দূষণ মান ১৫৮। একই সময় বিশ্বে শীর্ষ দূষণের তালিকায় প্রথম থাকা পাকিস্তানের লাহোরের বায়ুর দূষণ মান ২২১। তৃতীয় অবস্থানের থাকা কলকাতার বায়ুর দূষণ মান ১৬৪ ও চতুর্থ অবস্থানে থাকা বায়ুর দূষণ মান ১৬২।
বায়ুর মান শূন্য থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকলে বায়ুর মান ভালো বলে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে মাঝারি বা সহনীয় ধরা হয়। ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয়। ১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয়। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে খুবই অস্বাস্থ্যকর বলে বিবেচনা করা হয়। এছাড়া ৩০১-এর বেশি হলে তা দুর্যোগপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।
ইসরাইলি আটক থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তাদের কারাগারে কেমন ছিলেন সেই অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন ফিলিস্তিনিরা। তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার।
প্রতিবেদননে বলা হয়—আব্দাল্লাহ আবু রাফে নামের এক ফিলিস্তিনি তার ইসরাইল থেকে মুক্তির অনুভূতিকে ‘অসাধারণ’ বলে বর্ণনা করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা ছিলাম এক কসাইখানায়, কারাগারে নয়। দুর্ভাগ্যবশত, আমরা ‘ওফার কারাগার’ নামের এক কসাইখানায় ছিলাম। সেখানে এখনো অনেক তরুণ পুরুষ আটক রয়েছে। ইসরাইলি কারাগারের অবস্থা অত্যন্ত ভয়াবহ। সেখানে কোনো বিছানা নেই—তারা সবসময় বিছানা নিয়ে যায়। খাবারের অবস্থাও খুবই খারাপ। সেখানে জীবনযাপন সত্যিই কঠিন।’
আরেক মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দি, ইয়াসিন আবু আমরা, ইসরাইলি কারাগারের পরিস্থিতিকে ‘খুব, খুবই খারাপ’ বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘খাবার, নির্যাতন, মারধর—সবকিছুই খারাপ ছিল। কোনো খাবার বা পানীয় দেওয়া হতো না। আমি টানা চার দিন কিছু খাইনি। এখানে (খান ইউনিস) তারা আমাকে দুটি মিষ্টি দিয়েছে, আমি সেগুলোই খেয়েছি।’
আরেকজন মুক্তিপ্রাপ্ত, সাঈদ শুবাইর, যিনি সোমবার মুক্তি পান, বলেন তিনি তার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করতে পারছেন না।
তিনি বলেন, ‘এই অনুভূতি বর্ণনাতীত। লোহার শিক ছাড়াই সূর্য দেখা—এই অনুভূতি বর্ণনা করার মতো নয়। আমার হাত এখন হ্যান্ডকাফমুক্ত। স্বাধীনতা অমূল্য।’
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরাইল প্রায় ২৫০ জন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে, যারা আজীবন বা দীর্ঘ মেয়াদের সাজা ভোগ করছিলেন। এছাড়া, গাজা থেকে যুদ্ধ চলাকালে আটক করা আরও প্রায় ১,৭১৮ জনকেও মুক্তি দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘের মতে, এই দ্বিতীয় দলটি ‘জোরপূর্বক নিখোঁজ’ হিসেবে বিবেচিত ছিল।
ভারতের তিনটি কফ সিরাপের বিষয়ে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সংস্থাটি জানিয়েছে, এই কফগুলো উল্লেখযোগ্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে এবং জীবনের জন্য হুমকির কারণ হতে পারে। এই কফ সিরাপগুলো তৈরি করা হয়েছে ১ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের জন্য। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।
ভারতের ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সরকারি প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশনের (সিডিসসিও) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ডব্লিউএইচও’র সতর্কবর্তা সম্পর্কে তারা ওয়াবিহাল এবং এই সতর্কবার্তাকে আমলে নিয়ে ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরো কঠোর ও নিখুঁত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন তারা।
এই তিনটি কফ সিরাপ হলো ভারতীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান শ্রেসান ফার্মাসিউটিক্যালের তৈরি কোল্ডরিফ, রেডনেক্স ফার্মাসিউটিক্যালের তৈরি সিরাপ রেসপিফরেশ টিআর এবং শেপ ফার্মার তৈরি সিরাপ রিলাইফ।
এই সিরাপগুলোতে ডায়াথিলিন গ্লাইকোল নামের একটি রাসায়নিকের অস্বাভাবিক উপস্থিতির কারণেই এই সতর্কবার্তা দিয়েছে ডব্লিউএইচও। শিশুদের কাশির সিরাপ তৈরির জন্য ডায়াথিলিন গ্লাইকোল একটি প্রয়োজনীয় রাসায়নিক, তবে কোনো সিরাপে যদি অনুমোদিত বা নির্দিষ্ট মাত্রার বেশি ডায়াথিলিন গ্লাইকোল ব্যবহার করা হয়, তাহলে তা রীতিমতো বিষে পরিণত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, এই তিন কফ সিরাপে ডায়াথিলিন গ্লাইকোলের উপস্থিতি নির্ধারিত বা অনুমোদিত মাত্রার চেয়ে ৫০০ গুণ বেশি।
গত আগস্টে ভারতে শ্রেসান ফার্মাসিউটিক্যালসের তৈরি কোল্ডরিফ সিরাপ খেয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৭ জন শিশুর।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় যৌথ অভিযানে প্রায় ১৪ কোটি টাকার অবৈধ চায়না দুয়ারী ও কারেন্ট জাল জব্দ করেছে ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়ন। সোমবার (১৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজিবি সূত্রে জানা যায়, গত ১১ ও ১২ অক্টোবর উপজেলার সীমান্তবর্তী আশ্রায়ন বিওপির আওতাধীন এলাকায় এই অভিযান পরিচালিত হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার নেতৃত্বে, সহকারী পরিচালক এবং ভারপ্রাপ্ত কোয়ার্টার মাস্টার মো. জাকিরুল ইসলাম অভিযানে অংশ নেন।
অভিযানকালে উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের চল্লিশপাড়া ও মদনের ঘাট এলাকায় আনুমানিক ৩৫ হাজার কেজি অবৈধ চায়না দুয়ারী ও কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়, যার বাজারমূল্য প্রায় ১৪ কোটি টাকা।
পরে সোমবার দুপুর ২টার দিকে কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ আশ্রায়ন বিওপি এলাকায় জনসম্মুখে এসব অবৈধ জাল ধ্বংস করা হয়। পরিচালক (অপারেশন) যশোর সদর দপ্তর, দক্ষিণ-পশ্চিম রিজিয়ন লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মিজানুর রহমান শিকদার এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব মুর্শেদ রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হাই সিদ্দিকী ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হোসেন আহমেদ এর উপস্থিতিতে জালগুলো পুড়িয়ে ফেলা হয়।
৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব মুর্শেদ রহমান বলেন, সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিজিবি সর্বদা তৎপর রয়েছে। মাদক ও সব ধরনের অবৈধ কার্যক্রম প্রতিরোধে আমরা কঠোর অবস্থানে আছি। জনসাধারণের সেবায় বিজিবি ভবিষ্যতেও সর্বদা নিয়োজিত থাকবে।
দাবি পূরণ করে প্রজ্ঞাপন জারি না করায় মঙ্গলবার শহীদ মিনার থেকে ‘মার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচি পালন করবেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। পাশাপাশি তাঁদের অবস্থান ও কর্মবিরতি চলবে।
মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া, শিক্ষক ও কর্মচারীদের জন্য চিকিৎসা ভাতা দেড় হাজার টাকা এবং কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশের দাবিতে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। গতকালেক তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। পাশাপাশি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতি পালিত হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে সচিবালয় অভিমুখে ‘মার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা। গতকাল রাতে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের পক্ষ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন সংগঠনের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী।
তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার মধ্যে প্রজ্ঞাপন বা ঘোষণা না এলে লং মার্চসহ পরবর্তী কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া হবে।
দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, ‘আমাদের ওপর নির্বিচার পুলিশি লাঠিপেটা করা হয়েছে। আমাদের শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করে রক্তাক্ত করা হয়েছে। টিয়ার সেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। এমনকি একজন শিক্ষককে ধরে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমরা এর নিন্দা জানাই ও বিচার দাবি করছি।’
তিন দফা দাবিতে গত রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেছিলেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। এতে সারা দেশ থেকে আসা বিপুলসংখ্যক শিক্ষক-কর্মচারী এতে অংশ নেন। কিন্তু সেখানে বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি তারা। লাঠিপেটা, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান থেকে পানি ছুড়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে অবস্থান নেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-কর্মচারীরা।
বিশ বছর পর যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি) নবম বৈঠকে বসতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। আগামী ২৭ অক্টোবর ঢাকায় বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ উদ্দেশ্যে ঢাকা আসছেন পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী আহাদ খান চিমা।
আসন্ন জেইসি বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। আর পাকিস্তান প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন দেশটির অর্থনৈতিক বিষয়কমন্ত্রী আহাদ খান চিমা। বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবে দুই দেশ। আহাদ খান চিমার ঢাকা সফরের সময় জেইসি বৈঠকে অংশ নেওয়া ছাড়াও একাধিক বৈঠকের কথা রয়েছে। সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে পারেন। দুই দেশের যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের সবশেষ বৈঠকটি ২০০৫ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
সূত্রে জানা গেছে, জেইসির বৈঠকে পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী যখন ঢাকায় থাকবেন, কাছাকাছি সময়ে ইসলামাবাদ সফরের কথা রয়েছে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের। পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খানের আমন্ত্রণে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনার জন্য শেখ বশিরউদ্দীনের ওই সফরের কথা রয়েছে।
গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর সম্পর্ক স্বাভাবিক করার অংশ হিসেবে ব্যবসা-বাণিজ্যের নানা ইস্যু নিয়ে উদ্যোগ আর আলোচনা হচ্ছে। তাই এবারের জেইসি বৈঠকে দুই দেশ সরাসরি অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত সহযোগিতার বিষয় নিয়ে আলোচনা করার বিষয়টি ঠিক করেছে। সে ক্ষেত্রে ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানো, কৃষিতে সহায়তা, আর্থিক সেবা খাত, ব্যাংকিংসহ সংশ্লিষ্ট খাতে কীভাবে সামনের দিনে সহায়তা এগিয়ে নেওয়া যায়, তাতে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
এক কর্মকর্তা জানান, বৈঠকে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি পরিমাণে শুল্ক ও কোটামুক্তভাবে চা, পাটজাত পণ্য, মেডিসিন, তৈরি পোশাক, ইলেকট্রনিকস সামগ্রী আমদানির জন্য পাকিস্তানকে অনুরোধ করা হবে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর আহাদ খান চিমার সফরটি হবে বাংলাদেশে পাকিস্তানি মন্ত্রী পর্যায়ের চতুর্থ সফর। সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার প্রথম ধাপ হিসেবে গত এপ্রিলে পররাষ্ট্র সচিবদের বৈঠকে অংশ নিতে ঢাকায় এসেছিলেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ। এরপর ঢাকা আসেন বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খান এবং উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার।
কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব আহমেদ জামিল স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, দ্য সিভিল অ্যাভিয়েশন রুল, ১৯৮৪ এর রুল ১৬ এর সাব রুল (১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার কক্সবাজার বিমানবন্দরকে ‘কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।’
এই বিমানবন্দরটিকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে ২০২১ সালে কাজ শুরু করে বেবিচক। এই প্রকল্পের আওতায় বিমানবন্দরটিতে নতুন টার্মিনাল নির্মাণসহ বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে। এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে আগামী ডিসেম্বরে।
তবে এরই মধ্যে বেবিচক চেয়ারম্যান ঘোষণা দেন, চলতি বছর থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু হবে৷ তবে তা সম্ভব হয়নি এয়ারলাইন্সগুলোর মাঝ থেকে কোনো প্রকার সাড়া না পাওয়ায়।
উল্লেখ্য, ২০০৯ থেকে ২০১৩ সালের মেয়াদে কক্সবাজার বিমানবন্দরের উন্নয়ন কাজ শুরু হয়। এরপর ২০১৫ সালে যোগ হয় আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার নতুন ধাপ। ভৌগোলিকভাবে দক্ষিণ এশিয়ায় কক্সবাজার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট।
মন্তব্য