রাষ্ট্রীয় গোপনীয় নথি চুরির অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার প্রথম আলোর সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে পাল্টা নির্যাতন মামলা করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
তিনি মনে করেন, রোজিনা পাল্টা মামলা করতে পারবেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। কারণ, তাকে বেআইনিভাবে পাঁচ ঘণ্টা আটক করা হয়েছে। সেখানে মানসিক নির্যাতনও করা হয়েছে।
এই গণমাধ্যমকর্মীর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, সেটা সত্য হলেও তাকে পাঁচ ঘণ্টা মন্ত্রণালয়ের আটকে রাখার কোনো আইনি সুযোগ ছিল না বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন তিনি।
এটি ২০১৩ সালে করা হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু নিবারণ আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলেই মনে করেন তিনি।
সোমবার বিকেলে এই গণমাধ্যমকর্মী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে গিয়ে গোপন নথি সরানোর অভিযোগে আটক হন। বেলা দুইটা ৫৫ মিনিটের দিকে এই ঘটনা ঘটে বলে শাহবাগ থানায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে করা মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
রোজিনাকে থানায় নেয়া হয় রাত সাড়ে আটটার পরে। অর্থাৎ প্রায় পাঁচ ঘণ্টা তিনি মন্ত্রণালয়েই ছিলেন।
পরে রাত ১১টার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করা অভিযোগটি মামলা হিসেবে নিবন্ধন করে রোজিনাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের যে জায়গাটা কথা বলা দরকার, সেটা হলো সাংবাদিক রোজিনাকে যে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রাখলেন, এই আটকে রাখার আইনি এখতিয়ার কেবল সচিব কেন, তার ওপরেও যদি হয়, মন্ত্রীও যদি হয়, তার আছে কি না। এই ধরনের কোনো আইনি এখতিয়ারই তাদের ছিল না। তারা সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে তাকে আটক রেখেছেন এবং এটা ফৌজদারি অপরাধ।’
তিনি বলেন, ২০১৩ সালে হেফাজতে নির্যাতন এবং মৃত্যু নিবারণ আইনে বলা হয়েছে, যেকোনো সরকারি কর্মকর্তা বা তার অফিস যদি নির্যাতন করে তাহলে সেটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আর এই নির্যাতন বলতে কেবল শারীরিক নির্যাতন হতে হবে, তা নয়, মানসিক নির্যাতনকেও আইনে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।
এই আইনজীবী বলেন, ‘রোজিনার উচিত হবে এদের বিরুদ্ধে তার আইনি প্রতিকার চাওয়া।
‘আমি যদি ধরেও নেই যে রোজিনা নথি চুরিও করে থাকেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত ছিল সাথে সাথে। তাকে পাঁচ ঘণ্টা আটক রাখার কোনো এখতিয়ার তাদের ছিল না। তারা প্রমাণ করতেন, রোজিনা তার বক্তব্য আদালতে উপস্থাপন করতেন। কিন্তু তাকে নির্যাতন যখন করা হলো তিনি নিজে ভিকটিম হয়ে গেলেন। তিনি আর একিউজড (অভিযুক্ত) নন।’
জ্যোতির্ময় বলেন, ‘তিনি (রোজিনা) প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারেন।
রোজিনাকে মন্ত্রণালয়ে অবরুদ্ধ করার পরই গণমাধ্যমকর্মীরা ফেসবুকে নানা প্রতিক্রিয়া জানাতে থাকেন। তাকে শাহবাগ থানায় নেয়া হলে সেখানেও জড়ো হন সাংবাদিকরা। তারা তার মুক্তির দাবিতে নানা স্লোগান দিতে থাকেন।
মন্ত্রণালয়ের যে অভিযোগ
রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে যেসব নথি সরানোর অভিযোগ আনা হয়েছে, সেগুলোতে রাষ্ট্রীয় গোপনীয় তথ্য ছিল বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
বলা হয়, বিভিন্ন দেশের সাথে বাংলাদেশের ভ্যাকসিন ক্রয় সংক্রান্ত আলোচনা চলছে। এর খসড়া সমঝোতা স্মারক ও নন ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্ট প্রণয়ন কাজ চলমান রয়েছে। সমঝোতা স্মারক নিয়ে পক্ষদ্বয়ের মধ্যে প্রতিনিয়ত পত্র ও ইমেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ হচ্ছে। যেখানে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সন্নিবেশিত রয়েছে।
সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম যেসব নথিপত্রের ছবি তুলেছিল, তার মধ্যে উল্লেখিত গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিল বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
বলা হয়, ‘এ সকল তথ্য জনসম্মুখে প্রচার হলে সংশ্লিষ্ট দেশসমূহের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
আরও বলা হয়, বিকেল দুইটা ৫৫ মিনিটে রোজিনা ইসলাম স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে সচিবের একান্ত সচিবের দপ্তরে ঢোকেন। তখন একান্ত সচিব দাপ্তরিক কাজে সচিবের কক্ষে অবস্থান করছিলেন। সে সময় রোজিনা ইসলাম দাপ্তরিক গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র শরীরের বিভিন্ন স্থানে লুকানোর পাশাপাশি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ছবি তোলেন।
সচিবের দপ্তরে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য মিজানুর রহমান খান বিষয়টি দেখতে পেয়ে রোজিনাকে বাধা দেন। আর নির্ধারিত কর্মকর্তার অনুপস্থিতে তিনি ওই কক্ষে কী করছেন, তা জানতে চান। এ সময় রোজিনা নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দেন।
অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেছা বেগম তল্লাশি করে রোজিনার কাছ থেকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ কাজগপত্র এবং নথির ছবি সংবলিত মোবাইল উদ্ধার করেন।
সর্বোচ্চ সাজা কী?
রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে মোট চারটি ধারায়। এগুলো হলো দণ্ডবিধির ৩৭৯ ও ৪১১ এবং অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ৩ ও ৫ ধারা।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া জানিয়েছেন, এই চারটি ধারায় সর্বোচ্চ সাজা আছে তিন বছর এবং সঙ্গে জরিমানা হতে পারে।
আরও পড়ুন:এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার (৯ মে) সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশে কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। এ সময়ে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৭ জন।
শনিবার (১০ মে) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ভর্তি হয়েছে ৪৭ জন। নতুন আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৮ জন। আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে আরও ২৯ জন।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৬০ দশমিক ৪ শতাংশ পুরুষ এবং ৪০ দশমিক ৬ শতাংশ নারী।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১০ মে পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ২ হাজার ৯৭২ জন। এর মধ্যে ৬০ দশমিক ৪ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৯ দশমিক ৬ শতাংশ নারী।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সূচনা মডেল টাউন থেকে প্রাণঘাতী মারনাস্ত্রের ৭.৬২ বোরের ২৯টি গুলি. দেশীয় অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণে মাদকসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-২। গত শুক্রবার মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলো- মো. সাগর হোসেন (৩৭), মো. হেলাল কবির (৩৩) এবং মো. আসিফ (২৭)।
গতকাল শনিবার র্যাব-২ জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) খান আসিফ তপু দৈনিক বাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গোয়েন্দা তথ্যে জানা যায়, সূচনা মডেল টাউন এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী সাগর হোসেন তার ভাড়া বাসায় বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য বিক্রির জন্য মজুদ করে রেখেছে। এমন তথ্যে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করা হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার দুপুরে র্যাবের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে আসামিরা পালাতে চেষ্টা করেন। তবে তাদের আটক করা হয়। পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সাগর হোসেনের দেয়া তথ্যে প্রাণঘাতী ৭ দশমিক ৬২ বোরের ২৯ রাউন্ড গুলি, ২টি চাপাতি, ২টি ছুরি, ২টি চাইনিজ কুড়াল, সাড়ে ১৫ কেজি গাঁজা, ১ হাজার ৭০০ পিস ইয়াবা ও নগদ ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৩৩০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক আসামিরা জানায়, দীর্ঘদির ধরে তারা দেশের সীমান্ত এলাকা থেকে বিভিন্ন মাদকদ্রব্য এনে রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় বিক্রি করেন।
তিনি আরও বলেন, আসামীদের দেয়া তথ্য যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। কোথা থেকে তারা এসব গুলি পেয়েছে, কিভাবে ব্যবহার করার পরিকলপনা রয়েছে ইত্যাদি বিষয় মাথায় রেখেই তদন্ত করা হচ্ছে। আসাদিরে বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে
বাংলাদেশ সচিবালয় এবং প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা ও আশপাশের এলাকায় যেকোনো সভা, সমাবেশ, গণজমায়েত, মিছিল ও শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
শনিবার (১০ মে) দুপুরে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীর সই করা এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জনশৃঙ্খলা ও প্রধান উপদেষ্টার নিরাপত্তা রক্ষার্থে বাংলাদেশ সচিবালয় এবং প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় (হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়, কাকরাইল মসজিদ মোড়, অফিসার্স ক্লাব মোড়, মিন্টু রোড) যেকোনো প্রকার সভা-সমাবেশ, গণজমায়েত, মিছিল ও শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করা হলো।
পুলিশ অধ্যাদেশ ১৯৭৬ এর ২৯ ধারায় বর্ণিত অর্পিত ক্ষমতাবলে আজ (শনিবার) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই আদেশ বহাল থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধসহ তিন দাবিতে 'ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য'র ব্যানারে শাহবাগে শুরু হয়েছে গণজমায়েত।
শনিবার বিকেল তিনটা থেকে এই গন জমায়েত শুরু হয়। এর আগে গতকাল তিন দফা দাবিতে এই গণ জমায়েতের ডাক দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ।
তবে তিনি বলেছেন, এটি কোন নির্দিষ্ট দলের প্রোগ্রাম নয়। এটি সব দলের স্বতঃস্ফূর্ত প্রোগ্রাম। এরপর তিনি এক ঘোষণায় বলেন, আজকের এই গণজমায়েত 'ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য'র ব্যানারে অনুষ্ঠিত হবে।
তিন দাবিগুলো হলো—আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করা; আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে আওয়ামী লীগের দলগত বিচারের বিধান যুক্ত করা এবং জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করা।
বিকেল তিনটা থেকে গনজমায়েত শুরু হলেও শাহবাগ অবরোধ কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল থেকেই শাহবাগ অবরোধ করে রেখেছে বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
আজ সারাদিনও ছিলো শাহবাগ অবরোধ।
বিকেল তিনটার কিছু আগে শাহবাগে এসে উপস্থিত হন জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, ইসলামি ছাত্রশিবিরের সাহিত্য সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ সিবগা, ইনকিলাব মঞ্চের শরীফ ওসমান হাদী, জুলাই ঐক্যের সংগঠক মোসাদ্দিক আলী ও এবি জুবায়ের। এরপর শুরু হয় গণজমায়েতের আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি।
এরপর একে একে শাহবাগে আসতে শুরু করেছে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের মিছিল। বিকেল চারটায় বড় একটি মিছিল নিয়ে শাহবাগে উপস্থিত হোন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। এসময় সকলে সমস্বরে 'লীগ ধর জেলে ভর', 'ব্যান ব্যান আওয়ামী লীগ' স্লোগান দিতে থাকেন।
গণজমায়েতে সারজিস আলম বলেন, এই শাহবাগে ফ্যাসিবাদ শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। আজ সেই শাহবাগ থেকেই আওয়ামী ফ্যাসিবাদ নিষিদ্ধ করা হবে। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না করা পর্যন্ত আমরা শাহবাগ ছাড়বো না।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান বলেন, এই সরকার আমাদের। আমরা এই সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে নামতে আগ্রহী না। কিন্তু সরকারকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আজ উপদেষ্টা পরিষদের সভা থেকে কোন সিদ্ধান্ত না আসলে ভালো হবে না বিষয়টি। সভা থেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত আসতে হবে।
বরেণ্য সংগীতশিল্পী, গবেষক ও লেখক মুস্তাফা জামান আব্বাসীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
শনিবার এক শোকবার্তায় মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, একুশে পদকপ্রাপ্ত এই গুণী শিল্পী বাংলাদেশের সংগীত জগতে যে অবদান রেখেছেন তা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
প্রধান উপদেষ্টা মুস্তাফা জামান আব্বাসীর আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “উপমহাদেশের খ্যাতনামা সংগীত পরিবারে জন্ম নেয়া বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী এই শিল্পীর গান ও গবেষণা বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে নিত্যনতুন চিন্তা ও সৃষ্টির খোরাক জোগাবে।”
প্রসঙ্গত, মুস্তাফা জামান আব্বাসী ৮৭ বছর বয়স আজ সকালে মৃত্যুবরণ করেন।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধসহ তিন দাবিতে হওয়া শাহবাগ অবরোধ কর্মসূচিসহ নানা কর্মসূচি এখন থেকে 'ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য' ব্যানারে পালিত হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ।
তিনি বলেন, এই আন্দোলন কোনো একক দলের বা মতের নয়।
বাংলাদেশের সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে একত্রিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন হাসনাত।
শনিবার দুপুরে নিজের ভ্যারিফাইড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তিনি এই ঘোষণা দেন।
ফেসবুকে হাসনাত লিখেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে গত দুই দিন ধরে ছাত্র-জনতা রাস্তায় অবস্থান করছে। এখনো পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ফ্যাসিস্ট ও সন্ত্রাসী দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে পারেনি।
বিভিন্ন মহল থেকে এই আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে দাবি করেন হাসনাত আবদুল্লাহ।
তিনি বলেন, নানাভাবে আন্দোলনকে বিতর্কিত ও বিভক্ত করার প্রচেষ্টা চলছে। আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিচ্ছি, এই আন্দোলন কোনো একক দলের বা মতের নয়। সবার ঐক্যমতের ভিত্তিতে এখন থেকে আমাদের সব কর্মসূচি "ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য" ব্যানারে পালিত হবে।
ঢাকাসহ সারাদেশের ছাত্র-জনতাকে রাজপথে নেমে আসার আহবান জানিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আসুন, আমরা সবাই জুলাইয়ের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হই। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত গণঅভ্যুত্থানপন্থী সকল মত ও দল একত্রে আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, জুলাই এখনো শেষ হয়ে যায়নি। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে গণঅভ্যুত্থানের শক্তিগুলো ঐক্যবদ্ধ থাকবে, ইনশাআল্লাহ।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ছাত্র জনতার শাহবাগ অবরোধ কর্মসূচি গতকাল বিকেল পাঁচটা থেকে শুরু হয়ে এখন পর্যন্ত চলছে। আজ বিকেল থেকে আর দুইটি দাবি যোগ করে আন্দোলন কর্মসূচি পালিত হবে বলে ঘোষণা দেন হাসনাত।
দাবিগুলো হলো—আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করা; আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে আওয়ামী লীগের দলগত বিচারের বিধান যুক্ত করা এবং জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করা।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ।
শনিবার (১০ মে) সকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে ফেরাতে সবসময়ই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে, ইন্টারপোল তো আমার কথা অনুযায়ী কাজ করবে না! এক্ষেত্রে তারা (ইন্টারপোল) তাদের আইন-কানুন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।’
এসময় সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশত্যাগের ঘটনা প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, ‘প্রাথমিকভাবে কয়েকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।’
‘তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। রিপোর্টে আরও কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে,’ যোগ করেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, ‘আব্দুল হামিদের দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞা চেয়ে জেলা ডিএসবির আবেদনের বিষয়টি আমার জানা নেই।’
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘দাবি-দাওয়ার বিষয়ে রাস্তায় আন্দোলন করলে জনদুর্ভোগ হয়। এ বিষয়টি মাথায় রেখে রাস্তা ছেড়ে অন্য কোথাও আন্দোলন করলে ভালো হয়।’
এ ব্যাপারে জনগণকে সতর্ক করার জন্য সাংবাদিকদের সাহায্য চান উপদেষ্টা।
গতকাল (শুক্রবার) যমুনার সামনে ছিলেন আন্দোলনকারীরা। পরে বলার পর তারা শাহবাগে গেছেন। সেখানেও দুর্ভোগ হচ্ছে। তবে তারা ইমার্জেন্সিগুলো দেখছেন,’ বলেন জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
মন্তব্য