রাষ্ট্রীয় গোপনীয় নথি চুরির অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার প্রথম আলোর সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে পাল্টা নির্যাতন মামলা করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
তিনি মনে করেন, রোজিনা পাল্টা মামলা করতে পারবেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। কারণ, তাকে বেআইনিভাবে পাঁচ ঘণ্টা আটক করা হয়েছে। সেখানে মানসিক নির্যাতনও করা হয়েছে।
এই গণমাধ্যমকর্মীর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, সেটা সত্য হলেও তাকে পাঁচ ঘণ্টা মন্ত্রণালয়ের আটকে রাখার কোনো আইনি সুযোগ ছিল না বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন তিনি।
এটি ২০১৩ সালে করা হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু নিবারণ আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলেই মনে করেন তিনি।
সোমবার বিকেলে এই গণমাধ্যমকর্মী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে গিয়ে গোপন নথি সরানোর অভিযোগে আটক হন। বেলা দুইটা ৫৫ মিনিটের দিকে এই ঘটনা ঘটে বলে শাহবাগ থানায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে করা মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
রোজিনাকে থানায় নেয়া হয় রাত সাড়ে আটটার পরে। অর্থাৎ প্রায় পাঁচ ঘণ্টা তিনি মন্ত্রণালয়েই ছিলেন।
পরে রাত ১১টার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করা অভিযোগটি মামলা হিসেবে নিবন্ধন করে রোজিনাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের যে জায়গাটা কথা বলা দরকার, সেটা হলো সাংবাদিক রোজিনাকে যে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রাখলেন, এই আটকে রাখার আইনি এখতিয়ার কেবল সচিব কেন, তার ওপরেও যদি হয়, মন্ত্রীও যদি হয়, তার আছে কি না। এই ধরনের কোনো আইনি এখতিয়ারই তাদের ছিল না। তারা সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে তাকে আটক রেখেছেন এবং এটা ফৌজদারি অপরাধ।’
তিনি বলেন, ২০১৩ সালে হেফাজতে নির্যাতন এবং মৃত্যু নিবারণ আইনে বলা হয়েছে, যেকোনো সরকারি কর্মকর্তা বা তার অফিস যদি নির্যাতন করে তাহলে সেটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আর এই নির্যাতন বলতে কেবল শারীরিক নির্যাতন হতে হবে, তা নয়, মানসিক নির্যাতনকেও আইনে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।
এই আইনজীবী বলেন, ‘রোজিনার উচিত হবে এদের বিরুদ্ধে তার আইনি প্রতিকার চাওয়া।
‘আমি যদি ধরেও নেই যে রোজিনা নথি চুরিও করে থাকেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত ছিল সাথে সাথে। তাকে পাঁচ ঘণ্টা আটক রাখার কোনো এখতিয়ার তাদের ছিল না। তারা প্রমাণ করতেন, রোজিনা তার বক্তব্য আদালতে উপস্থাপন করতেন। কিন্তু তাকে নির্যাতন যখন করা হলো তিনি নিজে ভিকটিম হয়ে গেলেন। তিনি আর একিউজড (অভিযুক্ত) নন।’
জ্যোতির্ময় বলেন, ‘তিনি (রোজিনা) প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারেন।
রোজিনাকে মন্ত্রণালয়ে অবরুদ্ধ করার পরই গণমাধ্যমকর্মীরা ফেসবুকে নানা প্রতিক্রিয়া জানাতে থাকেন। তাকে শাহবাগ থানায় নেয়া হলে সেখানেও জড়ো হন সাংবাদিকরা। তারা তার মুক্তির দাবিতে নানা স্লোগান দিতে থাকেন।
মন্ত্রণালয়ের যে অভিযোগ
রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে যেসব নথি সরানোর অভিযোগ আনা হয়েছে, সেগুলোতে রাষ্ট্রীয় গোপনীয় তথ্য ছিল বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
বলা হয়, বিভিন্ন দেশের সাথে বাংলাদেশের ভ্যাকসিন ক্রয় সংক্রান্ত আলোচনা চলছে। এর খসড়া সমঝোতা স্মারক ও নন ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্ট প্রণয়ন কাজ চলমান রয়েছে। সমঝোতা স্মারক নিয়ে পক্ষদ্বয়ের মধ্যে প্রতিনিয়ত পত্র ও ইমেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ হচ্ছে। যেখানে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সন্নিবেশিত রয়েছে।
সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম যেসব নথিপত্রের ছবি তুলেছিল, তার মধ্যে উল্লেখিত গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিল বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
বলা হয়, ‘এ সকল তথ্য জনসম্মুখে প্রচার হলে সংশ্লিষ্ট দেশসমূহের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
আরও বলা হয়, বিকেল দুইটা ৫৫ মিনিটে রোজিনা ইসলাম স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে সচিবের একান্ত সচিবের দপ্তরে ঢোকেন। তখন একান্ত সচিব দাপ্তরিক কাজে সচিবের কক্ষে অবস্থান করছিলেন। সে সময় রোজিনা ইসলাম দাপ্তরিক গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র শরীরের বিভিন্ন স্থানে লুকানোর পাশাপাশি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ছবি তোলেন।
সচিবের দপ্তরে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য মিজানুর রহমান খান বিষয়টি দেখতে পেয়ে রোজিনাকে বাধা দেন। আর নির্ধারিত কর্মকর্তার অনুপস্থিতে তিনি ওই কক্ষে কী করছেন, তা জানতে চান। এ সময় রোজিনা নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দেন।
অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেছা বেগম তল্লাশি করে রোজিনার কাছ থেকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ কাজগপত্র এবং নথির ছবি সংবলিত মোবাইল উদ্ধার করেন।
সর্বোচ্চ সাজা কী?
রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে মোট চারটি ধারায়। এগুলো হলো দণ্ডবিধির ৩৭৯ ও ৪১১ এবং অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ৩ ও ৫ ধারা।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া জানিয়েছেন, এই চারটি ধারায় সর্বোচ্চ সাজা আছে তিন বছর এবং সঙ্গে জরিমানা হতে পারে।
আরও পড়ুন:সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে মোটর মালিক-শ্রমিকদের স্বেচ্ছাচারিতা ও শ্রমিকদের মারধরের প্রতিবাদে পাবনা থেকে ঢাকা রুটে ডাকা অনির্দিষ্টকালের জন্য দূরপাল্লার বাস ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে।
২৮ জুন দুপুরে পাবনা মোটর মালিক গ্রুপের অফিস সচিব আমিনুল ইসলাম বাবলু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, পাবনার জেলা প্রশাসক ও সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসকের মধ্যস্থতায় সমস্যা সমাধানের আশ্বাসে বাস ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। গতকাল রাত ১০টার পর আমরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছি। মোটর মালিক গ্রুপ, বাস মিনিবাস মালিক সমিতিসহ তিনটি সংগঠনকে ডাকা হয়। আজ সকাল থেকে পাবনা-ঢাকা রুটে গাড়ি চলাচল শুরু হয়েছে। আমরা আশা করি সব সমস্যার সমাধান হবে।
বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ধর্মঘট থাকায় পাবনা থেকে ঢাকাগামী যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বাস না পাওয়ায় অনেকে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে বিকল্প উপায়ে ভিন্ন ভিন্ন গাড়িতে ঢাকায় ফিরেছেন। অনেকে গাড়ি না পেয়ে বাড়িতে ফিরে গেছেন।
পাবনা মোটর মালিক গ্রুপের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খাদেমুল ইসলাম বাদশা বলেন, ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ সকাল ৬টা থেকে আগের নিয়মেই দূরপাল্লার বাস ঢাকায় যাচ্ছে। পাবনার ডিসি স্যার ও সিরাজগঞ্জের ডিসি স্যার সমাধানের দায়িত্ব নেওয়ায় আমরা সম্মিলিতভাবে বসে গতকাল রাতে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছি।
পাবনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম বলেন, আপনাদের (সাংবাদিক) ধন্যবাদ জানাচ্ছি যে আপনাদের ফোনের মাধ্যমে আমি বিষযটি জানি এবং তাৎক্ষণিক সমাধান করি। মোটর মালিকরা বাস বন্ধ করে নিজেরা সমাধানের চেষ্টা করেছেন। না পেরে রাজনৈতিক নেতাদের দিয়ে সমাধানের চেষ্টা করেছেন। এরপর আমি বিষয়টি জানতে পেরে ওদের সঙ্গে মিটিং করে ধর্মঘট প্রত্যাহার করিয়েছি।
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে বরিশালে একজনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় এই মৃত্যু হয়। আর এই সময়ের মধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ২৬২ জন।
শনিবার (২৮ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের হারেও সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে বরিশাল বিভাগ। এই সময়ের মধ্যে বিভাগটিতে নতুন করে মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৪১ জন।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে, নতুন আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৮ জন। আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ২১৪ জন।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫৬ দশমিক ১০ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৩ দশমিক ৯০ শতাংশ নারী।
একই সময়ে (১ জানুয়ারি থেকে ২৮ জুন) পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৯ হাজার ৪৮৪ জন। এর মধ্যে ৫৮ দশমিক ৯০ শতাংশ পুরুষ এবং ৪১ দশমিক ১০ শতাংশ নারী।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এন নাসির উদ্দীনের বৈঠকের পর বিএনপি জাতীয় নির্বাচনের নির্দিষ্ট সময়সূচি ঘোষণার প্রত্যাশা করছে বলে জানিয়েছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেছেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, নির্বাচনের দিন নির্ধারণ ও সময়সূচি ঘোষণায় জনগণের প্রত্যাশা ও আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হবে।’
শনিবার (২৮ জুন) চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন রিজভী।
প্রধান উপদেষ্টা ও সিইসির বৈঠকের পর বিএনপি কি নির্দিষ্ট নির্বাচনের তারিখ প্রত্যাশা করে—এমন প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেন, ‘আমরা নিশ্চয়ই তা আশা করি।’
এর আগে বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন সিইসি নাসির উদ্দীন। বৈঠকটি রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত হয়।
রিজভী বলেন, নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে জনগণের প্রত্যাশা ও আলোচনার বিষয়টি বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশের জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলো বিশ্বাস করে, অধ্যাপক ইউনূস ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের কল্যাণ ও গণতন্ত্রের স্বার্থেই কাজ করবেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, তারাও বিশ্বাস করেন যে, প্রধান উপদেষ্টা একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন, যাতে জনগণ তাদের জবাবদিহিমূলক প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে।
বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতি ও সামাজিক সংকট রয়েছে। মব কালচার আছে। এসব থেকে মুক্ত হতে হবে। গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে হবে। গত বছরেও আমাদের প্রবৃদ্ধি ছিল ৪.২। এবার সেটি হয়েছে ৩.৯। আমরা সরকারকে সেটি দেখার জন্য বলব। আমরা তো সমালোচনা করবই। অবশ্যই যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। আমরা প্রত্যাশা করি— নির্বাচন কমিশন দ্রুত একটি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিগত অগণতান্ত্রিক সরকার দেশের অর্থ লোপাট করেছে। দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছে— যার অন্যতম নির্বাচন কমিশন ও মিডিয়া। তারা কখনও প্রকৃত গণতন্ত্র চায়নি। জনগণ মনে করে, ড. ইউনূস দেশবাসীর মনের প্রত্যাশা মোতাবেক ব্যবস্থা নেবেন।’
নারী শিক্ষার্থীকে মানসিক নিপীড়ন ও যৌন হেনস্তার অভিযোগে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) ডিজাস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. আবদুল আহাদ বিশ্বাসকে তিন বছরের জন্য সহযোগী অধ্যাপক পদে অবনমিত করা হয়েছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. ইকতিয়ার উদ্দিনের স্বাক্ষরিত ১৯ জুনের এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।
চাকরি সংক্রান্ত একটি তদন্ত কমিটির সুপারিশ পর্যালোচনা করে ৩০ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের ৫৫তম সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।
আদেশ অনুযায়ী, অবনমনকালীন তিন বছর ড. আহাদ বিশ্বাস কোনো ক্লাস নিতে পারবেন না। পরীক্ষার দায়িত্ব, শিক্ষার্থীদের গবেষণার তত্ত্বাবধান কিংবা শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ থেকেও তাকে বিরত থাকতে হবে। এছাড়া, এ সময় কোনো অসৌজন্যমূলক আচরণ বা পূর্বের অভিযোগের পুনরাবৃত্তি ঘটলে উপাচার্য তাকে কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই চাকরিচ্যুত করতে পারবেন। এই বিষয়ে তার আপিল করার সুযোগও রাখা হয়নি।
তবে তিন বছর পর নির্ধারিত শর্ত পূরণ সাপেক্ষে তিনি পূর্বের পদ ও স্কেলে পশু বিজ্ঞান বিভাগে যোগ দিতে পারবেন। উল্লেখযোগ্য যে, অবনমনকালীন এই সময়সীমা তার সক্রিয় চাকরিকাল হিসেবে গণ্য হবে না।
গত বছরের ১২ ডিসেম্বর এক নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তার অভিযোগ ওঠার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ড. আহাদ বিশ্বাসকে তাৎক্ষণিকভাবে সব শিক্ষা ও পরীক্ষা কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেয় এবং সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অনুষদের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী। তার অভিযোগে বলা হয়, ওই শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে তাকে মানসিকভাবে নিপীড়ন করতেন, ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ ও অপমানজনক মন্তব্য করতেন এবং একাধিকবার যৌন হেনস্তার চেষ্টা করেন। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করে।
এছাড়াও ড. আহাদ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের নাম্বার আটকিয়ে দেওয়া, পরীক্ষায় অনৈতিকভাবে নম্বর কেটে দেওয়া এবং টানা ৪-৫ ঘণ্টা ধরে অনলাইন ক্লাস নেওয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে। গত বছরের ১৮ নভেম্বর, ২০১৮-১৯ বর্ষের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ নিয়ে রেজিস্ট্রার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে ড. আহাদ বিশ্বাসের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনায় বিদেশি কোম্পানিকে যুক্ত করার পদক্ষেপ, রাখাইনের জন্য মানবিক করিডোরের উদ্যোগ, স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবা চালুর মাধ্যমে বাংলাদেশকে ‘সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধচক্রে’ জড়ানোর চেষ্টা বন্ধের দাবিতে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখে রোড মার্চ ফেনীতে সমাবেশ করেছে।
অর্ধশতাধিক সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মী এ কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন বলে আয়োজকদের ভাষ্য।
শনিবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে ফেনী শহরের ট্রাংক রোডস্থ শহিদ মিনার প্রাঙ্গনে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা বক্তব্য রাখেন।
এর আগে শুক্রবার সকাল ১০টায় ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে রোড মার্চের সূচনা হয়। শুরুতে গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্যের শিল্পীরা 'দুর্গম গিরি কান্তার মরু', 'জনতার সংগ্রাম চলবেই' গানগুলো গেয়ে শোনান। আগে মিছিল নিয়ে বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীরা রোড মার্চে যোগ দিতে আসেন। তাদের প্রায় সবার হাতেই দেখা যায় প্ল্যাকার্ড, ব্যানার।
রোড মার্চ শুরুর আগে বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীদের পরিচয় করিয়ে দিয়ে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।
রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, "চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর বিদেশি কোম্পানিকে দেওয়ার উদ্যোগের বিরোধিতাসহ রাখাইনের জন্য মানবিক করিডোর চালুর প্রতিবাদে এ রোর্ডমার্চ। মা মাটি মোহনা কোনোভাবেই আমরা বিদেশিদের হাতে দেব না।"
‘দেশবিরোধী যে কোনো ষড়যন্ত্র’ রুখে দিতে দেশপ্রেমিক সকল জনগণকে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় জানান তিনি।
রোড মার্চের দ্বিতীয় দিন শনিবার সকালে ফেনী থেকে যাত্রা করে মিরসরাই, সীতাকুণ্ডে পথসভা ও মিছিল শেষে চট্টগ্রাম বন্দরের সামনে সমাপনী সমাবেশ করা হবে।
ক্যাপশন : বক্তব্য রাখছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মাদকাসক্ত হয়ে মাতলামি করার প্রতিবাদ করায় ইয়াছিন (৩৮) ও সিপন( ৩২) নামে দুই যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অপরজনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার মুড়াপাড়া টঙ্গীরঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ ইয়াছিন মুড়াপাড়ার হাউলিপাড়া এলাকার ইদু মিয়ার ছেলে এবং সিপন টঙ্গীরঘাট এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, রাত ১১টার দিকে ইয়াছিন তার স্ত্রীকে নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে খালাতো বোনের বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে স্থানীয় সোহরাব নামের এক যুবক মাদকাসক্ত অবস্থায় তাদের উদ্দেশে গালিগালাজ করলে ইয়াছিন প্রতিবাদ করেন। পরে তিনি খালাতো ভাই সিপনকে নিয়ে স্থানীয় অহিদুল্লার বাড়িতে গিয়ে ঘটনার কথা জানান। সেখানেই সোহরাব ক্ষিপ্ত হয়ে পিস্তল দিয়ে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে ইয়াছিনের মাথায় ও সিপনের পায়ে গুলি লাগে।
তাদের প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সিপনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ইয়াছিনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার জয়সিদ্ধি ইউনিয়নের বাসিন্দা গোরখোদক মনু মিয়া মারা গেছেন। শনিবার (২৮ জুন) সকাল ১০টার দিকে আলগাপাড়া গ্রামের নিজ বাড়িতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
মনু মিয়া তার জীবদ্দশায় প্রায় সাড়ে তিন হাজারের মতো কবর খনন করেছেন। কবর খুঁড়তে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে তিনি ঘোড়া ব্যবহার করতেন। কিছুদিন আগে বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। এই সুযোগে রহস্যজনক কারণে দুর্বৃত্তরা মনু মিয়ার ঘোড়াটিকে হত্যা করে।
বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে চারদিকে সমালোচনার ঝড় উঠে। তবে শারীরিক দিক বিবেচনায় তখন মনু মিয়াকে তার ঘোড়ার মৃত্যুর কথা জানানো হয়নি।
এরপর কিছুটা সুস্থ হলে তাকে ঘোড়াটির মৃত্যুর খবর জানানো হয়। ঢাকায় চিকিৎসার পর কিছুটা সুস্থ হলে নিজ বাড়িতে যান মনু মিয়া। আজ শনিবার সকালে সেখানেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
মন্তব্য