‘আমাদের গ্যারেজে যত গাড়ি চোখে পড়বে কোনোটারই ফিটনেস নাই। এতে সমস্যা নাই। ফিটনেসহীন গাড়িতে ফিটনেস দিতে সময় লাগে ১৫ থেকে ২০ দিন। এরপর গাড়িকে নতুনের চেয়েও বেশি সুন্দর লাগে।’
কথা হচ্ছিল গাজীপুরের পূবাইলে একটি গ্যারেজের কারিগর আলাউদ্দিনের সঙ্গে (ছদ্মনাম)।
তিনি বলেন, ‘ঈদ আসলে কাজের চাপ বাইড়া যায় কয়েক গুণ। দুই বছর যাবৎ করোনার জন্য কাজের চাপ কম হলেও রঙের কাজের চাপ কমেনি।’
কয়েকদিন পর ঈদ। ইতিমধ্যে রাজধানী ঢাকা ও শিল্পনগরী গাজীপুর ছাড়তে শুরু করেছেন হাজার হাজার মানুষ। এ যাত্রীদের বাড়তি চাপ থাকে পরিবহনের ওপর। লকডাউনে দূরপাল্লার বাস বন্ধ রয়েছে। কিছুদিন পরে আবার চালু হতে পারে এই আশায় নষ্ট বা পড়ে থাকা গাড়ি মেরামত করতে চাইছেন পরিবহনমালিকরা। এ জন্য ঘষেমেজে পুরোনো গাড়িকে নতুন করতে শেষ সময়ে চলছে কারিগরদের তোড়জোড়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, টঙ্গী মিল গেট, হোসেন মার্কেট, বড়বাড়ি, বোর্ডবাজার, চন্দনা, কোনাবাড়ি, পূবাইল ও তুরাগে চলছে মেরামত ও রঙের কাজ। রোজার এক মাস আগে শুরু হওয়া এ কাজ শেষ হবে ২৫ রমজান। ওয়ার্কশপগুলোতে দুই মাস ধরে পুরোদমে চলে মেরামতের কাজ। অন্য বছরের তুলনায় এ বছর কাজের চাপ কম।
তুরাগে তামিম ওয়ার্কশপের শ্রমিক মো. সোহেল রানা বলেন, ‘এ পেশায় আমি ২০ বছর। দুই বছর যাবৎ করোনার কারণে কিছুটা কাজের চাপ কম। তবুও কাজের অর্ডার আছে। আরও চার-পাঁচ দিন কাজ চলবে।’
মিতালি ইঞ্জিনিয়ারিং মোটর ওয়ার্কসের মালিক মো.খোরশেদ আলম বলেন, ‘হাজার হাজার বাসমালিক সরকারের নির্দেশের অপেক্ষায় আছেন। তারা দুটি ঈদে ব্যবসা করবেন বলে এসব গাড়ি সার্ভিস করেন। আমরাও তাদের জন্য অপেক্ষায় থাকি। তবে দুই-এক দিনের মধ্যে কী হয় বলা যায় না। সবকিছুই সরকারের ওপরে নির্ভর করছে।’
তিনি বলেন, ‘অন্যান্য বছরের চেয়ে এ বছর কাজের চাপ অনেক কম। অনেক গাড়ির মালিক গাড়ি বিভিন্ন গ্যারেজে ফেলে রাখছেন। এতে অনেক গাড়ি এ বছর রোডে নামছে না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক বলেন, ‘গাড়ির বিভিন্ন নষ্ট অংশে নতুন সেট দিয়ে ঝালাই করে রং লাগিয়ে ছোটখাটো মেরামত করে এসব গাড়ি নতুন করা হয়। তবে এমনভাবে কাজ করানো হয়, সড়কে পুলিশও ধরতে পারবে না।’
ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-টাঙ্গাইলের লং রুটে চলা ফিটনেসহীন ভাঙাচোরা গাড়িগুলো জোড়াতালি ও রং দেয়া হচ্ছে এসব ওয়ার্কশপে।
গাড়ি মেরামতে দিনরাত কাজ করছেন শ্রমিকরা। কোনো গাড়ির ইঞ্জিন ও ব্রেকে সমস্যা, কোনোটির সিট ছেঁড়া, আবার কোনোটির বডিতে রং নেই।
সড়কে দুর্ঘটনার জন্য এসব বাস দায়ী নয় এমন দাবি মালিকদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসমালিক বলেন, ‘রোডে বাস চললে ছোটখাটো ত্রুটি হতেই পারে। আমাদের একটি ইঞ্জিন ও চেসিসের মেয়াদ ন্যূনতম ২০ থেকে ২৫ বছর। এর আগে তেমন কিছু হয় না। সড়কে যে দুর্ঘটনা হয় সেগুলো সাধারণত অসচেতনতা ও ড্রাইভারদের প্রতিযোগিতার কারণে হয়।’
তুরাগ পবিরহনের মালিক মো. সোলেইমান হোসেন বলেন, ‘প্রতি বছর ঈদে আমার তিনটি গাড়ি রং করে রাস্তায় নামানো হয়। বিশেষ করে বছরে দুটি ঈদ সুন্দর করে করব এটাই আশা করি। এ বছর তিনটা গাড়ির মধ্যে একটা গাড়ি রং করানো হয়েছে।’
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমাদের অভিযান হবে। ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস না থাকলে গাড়ি সঙ্গে সঙ্গে আটক করা হবে। তবে ফিটনেসহীন গাড়ি নতুন করার সুযোগ নেই। এ ছাড়া অদক্ষ চালকসহ মালিকদের আইনের আওতায় আনা হবে।’
আরও পড়ুন:সিলেটের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ে পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা (Ecologically Critical Area-ECA) থেকে অবৈধভাবে চলছে বালু ও পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে হুমকিতে পড়েছে ওই এলাকার পরিবেশ। বিনষ্ট হচ্ছে জীববৈচিত্র্য।
জাফলংয়ে ইসিএ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ পেয়ে সোমবার অভিযান চালায় টাস্কফোর্স। এ সময় বালুবাহী পাঁচটি নৌকা জব্দ করা হয়। এছাড়া এসব নৌকার মালিকদের দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
পরিবেশ অধিদপ্তর, বিজিবি, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ যৌথভাবে সোমবার দুপুরে এই অভিযান চালায়।
গোয়াইনঘাট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তানভীর হোসেন জানান, সোমবার জাফলংয়ের পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকায় পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালকের নেতৃত্বে তাদের একটি টিম, বিজিবি ও গোয়াইনঘাট থানা পুলিশের অংশগ্রহণে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে বালুবাহী পাঁচটি নৌকা আটক করে মামলা দেয়া হয়। এছাড়া এসব নৌকার পরিচালকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় মোট ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত।
পরিবেশ রক্ষায় এমন অভিযান নিয়মিত পরিচালিত হবে বলে জানান তানভীর হোসেন।
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং দেশের প্রধান পর্যটন কেন্দ্রগুলোর একটি। কিন্তু এই পর্যটন কেন্দ্র এখন পরিণত হয়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ পাথর কোয়ারিতে। অনিয়ন্ত্রিত পাথর ও বালু উত্তোলনের ফলে পর্যটন কেন্দ্রটির সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি হুমকিতে পড়ছে পরিবেশও।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি জাফলংকে পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়।
এর আগে পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে জাফলংকে ইসিএ ঘোষণার নির্দেশনা দেয় আদালত।
ইসিএ ঘোষণার পর জাফলং থেকে সব ধরনের বালু ও পাথর উত্তোলন নিষিদ্ধ করে প্রশাসন। তবে নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও একটি গোষ্ঠী বালু ও পাথর উত্তোলনের মাধ্যমে জাফলংয়ের পরিবেশ বিনষ্ট করে চলেছে।
টাঙ্গাইলে স্বেচ্ছাসেবক লীগের হামলায় গণঅধিকার পরিষদের সমাবেশ ও পদযাত্রা পণ্ড হয়ে গেছে।
টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সামনে সোমবার বিকেলে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির প্রতিবাদ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের এক দফা দাবিতে সমাবেশ ও পদযাত্রার আয়োজন করে জেলা গণঅধিকার পরিষদ। কর্মসূচি চলার সময়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরা তাদের ওপর হামলা করে এবং এক পর্যায়ে তাদের ব্যানার ছিনিয়ে নেয় ও তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের জাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে হামলা করা হয় বলে নিউজবাংলার কাছে অভিযোগ করেন গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীরা।
গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য শাকিল উজ্জামান বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করছিলাম। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরা আমাদের ওপর হামলা করে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’
এ বিষয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মির্জা আনোয়ার হোসেন বাবুল বলেন, ‘সরকারের বিরুদ্ধে তারা অপপ্রচার চালাচ্ছিল। তাই আমাদের কর্মীরা তাদের মানববন্ধন বন্ধ করে দেয়।’
সদর থানার ওসি আবু ছালাম মিয়া বলেন, ‘প্রেসক্লাবের সামনে তাদের মানববন্ধন করার অনুমতি ছিল না। কিন্তু তারা তারপরও সেখানে প্রোগ্রাম করেছে। কিন্তু সেই প্রোগ্রাম পণ্ড হয়েছে কি না তা আমার জানা নেই। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগও করেনি।’
সমাবেশ ও পদযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য শাকিল উজ্জামান, জেলা শাখার সভাপতি জহিরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান রাসেল, জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাকিব হাসানসহ অন্য নেতৃবৃন্দ।
হত্যার রাজনীতি করতে বিএনপি কিলিং এজেন্ট নিয়োগ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা সদরে ঈদগাহ ময়দানে সোমবার দুপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার বিবরণ জনগণের মাঝে পৌছে দেয়া এবং আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের তৃণমূল প্রতিনিধি ও নেতাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে দিকনির্দেশনামূলক মতবিনিময় সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘বিএনপি হিট অ্যান্ড রান করে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে চায়। প্রকৃতপক্ষে বিএনপি কিলিং এজেন্ট নিয়োগ করেছে। বিএনপি জামাত যদি বিভিন্নভাবে বাংলাদেশের একজন মানুষের ওপর আঘাত হানে বা হত্যা করে, তাহলে আমরা ক্লিলিং এজেন্টদেরকে প্রতিরোধ ও প্রতিহত করব।’
তিনি বলেন, ‘স্যাংশন দিয়ে কোনো লাভ নেই, সকল ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করে স্বচ্ছতার সঙ্গে নির্বাচনের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় আনব। বিএনপিকে মোকাবেলা করেই বাংলাদেশে সাংবিধানিকভাবে নির্বিঘ্নে ও স্বাধীন-সার্বভৌম নির্বাচন কমিশনের অধীনে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার ব্যবস্থা করব। যাতে সুষ্ঠ, স্বচ্ছ, অবাধ ও নিরপেক্ষ ভাবে বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে ও স্বস্তিতে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে।’
উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা কারও ভয়ে ভীত হয়ে নয়, জামাত-শিবির ও বিএনপি, এমনকি অশুভ শক্তি ও অশুভ রাজনীতির বিপক্ষে এবং সাম্প্রদায়িক শক্তির বিপক্ষে আপনারা লড়াই করতে অভ্যস্ত। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বিপক্ষের শক্তি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের নেতা-কর্মীদের আঘাত করে আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করা যায় না।
‘আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্ত ছড়িয়ে, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের রক্তচক্ষু ও মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে কেউ টিকে থাকতে পারেনি । খুনি জিয়া ও মোস্তাকরা উৎখাত হয়ে গেছে। জাতীর পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করার পরও জাতীর পিতার আদর্শের সুযোগ্য সন্তান জননেত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব নিয়ে ২১ বছর লড়াই সংগ্রাম করে টিকে আছেন।’
রাজৈর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সেকান্দার আলী শেকের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে, পৌর মেয়র নাজমা রশীদসহ আরও অনেকে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির (চরমোনাই পীর) সৈয়দ রেজাউল করীম বলেছেন, ‘দেশের ১২টা বেজে গেছে। এ সরকারের অধীনে আর কোন নির্বাচন নয়, ক্ষমতাপ্রেমীদের মসনদ ভেঙে এবার বঙ্গোপসাগরে ফেলা হবে।’
জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন, নির্বাচনের কমিশনারের পদত্যাগ; বিদ্যুৎ, গ্যাস ও নিত্য পণ্য দ্রব্যমূল্যের দাম কমানোসহ বিভিন্ন দাবিতে সোমবার বিকেলে মুন্সিগঞ্জে আয়োজিত ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
সোমবার মুন্সিগঞ্জ শহরের কৃষিব্যাংক সংলগ্ন সড়কে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন দলটির কয়েক হাজার নেতা-কর্মী।
রেজাউল করিম বলেন, ‘বর্তমান সরকার অবৈধ সরকার। এ সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। তবে আমাদেরকে ধোকা দিয়ে বোকা বানিয়ে আবারও সরকার ক্ষমতায় যাবে- এই স্বপ্ন বাংলার মাটিতে আর বাস্তবায়ন হবে না। তারা বলে থাকে- আমরা দেশপ্রেমিক, আমরা জনগণ প্রেমিক। এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। আমাদের দাবি আগামী নির্বাচন হবে সুষ্ঠু, যে নির্বাচন হবে স্বচ্ছ, যে নির্বাচন থাকবে প্রশ্নের উর্ধ্বে। বিভিন্ন দেশেও একই কথা বলছে। আমেরিকাও বলছে, বাংলাদেশ একটি সুন্দর, নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে হবে। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বলেন- বিদেশীরা তাদের ওপর হস্তক্ষেপ করে। আপনারা যদি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিস্থিতি তৈরি করেন, তাহলে তারা আর এসব কথা বলার সাহস পায় না।’
ভিসা নীতি দেশের জন্য লজ্জাজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে ভিসা স্যাংশনসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চলছে। ভিসা স্যাংশন বাংলাদেশের জন্য লজ্জাজনক। এভাবে একটি দেশ চলতে পারে না। তাই এর পরিবর্তন দরকার। চোরের দিক থেকে, দুর্নীতিবাজের দিক থেকে এ দেশ পাঁচবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, এ অবস্থা আমরা আর দেখতে চাই না। তাই দেশ ও জাতির কল্যাণের জন্য এক নীতি, আদর্শ দরকার; যার নাম ইসলাম।
‘ইসলামী নীতি, আদর্শের মাধ্যমে সারা বিশ্বে শান্তি আসবে। এ শান্তির পক্ষে আমরা সবাই একত্রিত হব। যারা ক্ষমতাপ্রেমিক রয়েছে, আমরা দেশ প্রেমিকরা একত্রিত হয়ে এদের মসনদকে ভেঙে বঙ্গোপসাগরে নিক্ষেপ করা হবে।’
সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন মুন্সীগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি আতিকুর রহমানের সভাপতিত্বে ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি মুফতি শাহাদাত হোসেনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমেদসহ জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ।
আরও পড়ুন:ঢাকার সাভারে নেশাদ্রব্য খাইয়ে নয় বছরের এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে প্রতিবেশী এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই শিশুকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আসামিকে সোমবার দুপুরে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠিয়েছে সাভার মডেল থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তার ৪০ বছর বয়সী ভ্যানচালক মো. আরিফ সাভারের ছায়াবিথী এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেন।
এর আগে রবিবার শিশুটির মা বাদী হয়ে আসামির বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করলে ওই রাতেই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
শিশুটির পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, রোববার দুপুর থেকেই মেয়েকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না তার মা। পরে প্রতিবেশী আরিফের ঘরের সামনে মেয়ের জুতা দেখে ভিতরে প্রবেশ করেন তিনি। তখন মেয়েকে অজ্ঞান অবস্থায় দেখতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। সেখান থেকে শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন চিকিৎসকরা।
সাভার মডেল থানার এসআই শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘ভুক্তভোগীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিকভাবে ধর্ষণচেষ্টার আলামত পেয়েছি। শিশুটিকে নেশাদ্রব্য তাড়ি খাইয়ে অচেতন করে লুকিয়ে রেখেছিল আরিফ। কিন্তু ধর্ষণ করার আগেই শিশুটির মা তার খোঁজ পায় বলে ধারণা করছি। শিশুটিকে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে অপহরণ ও ধর্ষণচেষ্টার মামলা করা হয়েছে। তবে রিপোর্টে যদি ধর্ষণের প্রমাণ মেলে তাহলে মামলাটি ধর্ষণ মামলায় রূপান্তরিত হবে।’
কুমিল্লায় অটোরিকশা ছিনতাই করে চালক সঞ্জিত চন্দ্র দেবনাথকে হত্যার ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার দেবপুর এলাকা থেকে রোববার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার পাঁচজন হলেন কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বড়ইয়াকুড়ি গ্রামের ২৫ বছর বয়সী মো. নুর ইসলাম, দেবিদ্বার উপজেলার বারেরা গ্রামের ২৪ বছর বয়সী মো. মিজান, মুরাদনগর উপজেলার বড়কুইয়া গ্রামের ২৩ বছর বয়সী শিপন মিয়া, চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার পনশাহী গ্রামের ৩৫ বছর বয়সী মো. মিজানুর রহমান ও চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার ৩৭ বছর বয়সী মো. মোখলেছ।
প্রাণ হারানো ৫৮ বছর বয়সী সঞ্জিত চন্দ্র দেবনাথ কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলার শাহদৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
কুমিল্লা র্যাব-১১ এর অধিনায়ক স্কোয়াড্রন লিডার একেএম মনিরুল আলম তার কার্যালয়ে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতরা আন্তজেলা ডাকাতদলের সদস্য। তারা এর আগেও একাধিক অটো ছিনতাই করেছে। তাদের পরবর্তী টার্গেট ছিল নোয়াখালী অঞ্চলে একটি স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি করা এবং পরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পণ্যবাহী বাহন ছিনতাই করা। চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির আগে তারা সূক্ষ্মভাবে পরিকল্পনা করে, তবে তার আগেই তারা ধরা পড়েছে।
‘তাদের নামে চুরি, ছিনতাইসহ একাধিক মামলা রয়েছে। রোববার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার দেবপুর এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ওই সময় আরও অন্তত তিন থেকে চারজন পালিয়ে যায়। তারা প্রাথমিকভাবে খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।’
র্যাব কর্মকর্তা একেএম মনিরুল আলম বলেন, ‘গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ছোরা, চাকু, ক্রিজ, স্টিলের পাইপ, পাইপ গিয়ার, টাকা ও মোবাইল ফোন জব্দ উদ্ধার করা হয়।’
এর আগে গত ২৫ সেপ্টেম্বর সঞ্জিত চন্দ্র দেবনাথের অটোরিকশায় গ্রেপ্তারকৃতরা ২০০ টাকা ভাড়ায় ক্যান্টনমেন্ট থেকে কংশনগর যাওয়ার জন্য অটোরিকশায় চড়ে। পথে সঞ্জিতকে হত্যা করে অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যান তারা। পরে ২৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের রামপুর এলাকার একটি জলাশয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত সঞ্জিতের ছেলে অর্পণ দেবনাথ অজ্ঞাতদের আসামি করে বুড়িচং থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের উখিয়ায় আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) প্রধানের একান্ত সহকারী এরশাদ প্রকাশ নোমান চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
উপজেলার কুতুপালং থেকে রোববার রাত একটার দিকে তাকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব-১৫-এর অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উখিয়ার কুতুপালং থেকে এরশাদকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার নামে বিভিন্ন অপরাধে একাধিক মামলা রয়েছে। এ ছাড়াও তিনি আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি প্রধান আতা উল্লাহ আবু জুনুনীর একান্ত সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এরশাদের নেতৃত্বে ও নির্দেশনায় বিভিন্ন ক্যাম্পে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হচ্ছিল। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন দেশের অর্থ সরবারহকারীদের সঙ্গে আসার অর্থ সম্বনয় করে আসছিলেন।’
মন্তব্য