করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ রোধে সরকারঘোষিত লকডাউনে বন্ধ রয়েছে আন্তজেলা বাস চলাচল। সংক্রমণ কমাতে সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা এবার ঈদে বাড়ি যেতে নিরুৎসাহিত করছেন লোকজনকে। কিন্তু এরপরও থেমে নেই ঘরমুখী মানুষের ঢল।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সাইনবোর্ড, শিমরাইল, মোগরাপাড়া ভুলতা এলাকায় গরমের মধ্যেই লোকাল বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, লেগুনা, ইজিবাইক, পিকআপ, ট্রাক, মাইক্রোবাসে দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে উঠে পড়ছেন নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা।
কাছাকাছি অঞ্চলে যেতে গত কয়েকদিন ছোট যান চলাচল করলেও সোমবার সকাল থেকে বেড়েছে বড় যানবাহনও। কিছুক্ষণ পরপর দূরপাল্লার বাসও চলাচল করছে এ দুইটি মহাসড়কে। তবে বাস থামাতে সড়কে অবস্থান করতে দেখা গেছে ট্রাফিক ও হাইওয়ে পুলিশের সদস্যদের।
সকাল সাড়ে ৭টা থেকে দুপুর পর্যন্ত মহাসড়কে বাড়তে থাকে যাত্রীদের ঢল। অধিকাংশ মানুষ মহানগর এলাকায় চলাচলরত বাসে গন্তব্যে রওনা হন।
ট্রাক ভর্তি করে উত্তরাঞ্চলের দিকে যাচ্ছেন অনেকে। মাইক্রোবাসে চট্টগ্রাম, সিলেটসহ এই দুই বিভাগের বিভিন্ন জেলায় যেতে দেখা গেছে হাজারো যাত্রীকে। তবে কুমিল্লা, ফেনী, ভৈরব পর্যন্ত অনেকে ভেঙে ভেঙে যাচ্ছেন।
মহাসড়কে চলাচল করতে দেখা গেছে দূরপাল্লার বাস। মোড়ে দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠানো হয়েছে। তবে ভাড়া গুনতে হচ্ছে দ্বিগুণ। তা দিয়েও যেতে রাজি ঘরমুখী মানুষরা।
কিশোরগঞ্জের উদ্দেশে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে রওনা হওয়া সোহেল জানান, ভোরে সাইবোর্ড এলাকায় এসেছেন। দূরপাল্লার বাস এখনও পাননি।
তিনি জানান, স্ত্রীকে নিয়ে পিকআপভ্যানে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই অপেক্ষা করছেন। অসহ্য গরমে আরও ভোগান্তি হচ্ছে।
বড় বোনকে নিয়ে চট্টগ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে যাচ্ছেন তৌফিক হাসান।
তিনি বলেন, ‘ঈদে কম-বেশি সবার সঙ্গে মালপত্র থাকে। যাত্রীর ভাড়া তো দ্বিগুণ। সেই সাথে মালের ভাড়াও চায়। তারপরও এত মানুষ যে গাড়ি পাওয়া যায় না।’
শিমরাইল এলাকায় দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে দেখা গেছে রাসেল মিয়া, তার স্ত্রী ও তাদের দেড় বছরের শিশু জান্নাতকে। তারা যাবে ফেনী।
রাজমিস্ত্রি রাসেল বলেন, ‘মাইক্রোবাসে তিনজনের ভাড়া চায়। তাই যাইতে পারতাছি না। গরমে স্ত্রী-সন্তানের অবস্থা খারাপ। লোকাল বাসেও অনেক ভিড়।
‘তাই এখনও যেতে পারি নাই। অপেক্ষায় আছি দূরপাল্লার বাস আসলে উঠে পড়ব।’
নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঈদে ঘরমুখী মানুষের ঢল আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। তারা সরকারি বিধিনিষেধ না মেনে ছুটছেন। আমরা মানুষকে তো আটকে রাখতে পারব না।
‘তবে দূরপাল্লার বাস যাতে যেতে না পারে সে জন্য ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা টোলপ্লাজা, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের গোলাকান্দাইল ভুলতা ও এশিয়ান হাইওয়ের সামনে হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছে। মানুষ যদি সচেতন না হয় তাহলে সামনে আরও চাপ বাড়বে।’
জেলা ট্রাফিক পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সালেহ উদ্দিন বলেন, ‘সকাল থেকে গাড়ির চাপ বেড়েছে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী জেলার সড়ক ও বিভিন্ন স্থানে সাড়ে ৫ শর বেশি পুলিশ কাজ করছে।
‘গত কয়েক দিনে দূরপাল্লার বিভিন্ন পরিবহনের নামে মামলা হয়েছে। এ ছাড়া মাইক্রোবাস, ট্রাক ও পিকআপ জব্দ করা হচ্ছে। কিন্তু তাতেও মানুষ থামানো যাচ্ছে না।’
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিষয়ে সর্বোচ্চ উদারতা দেখিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের দলীয় কার্যালয়ে ঢাকা ও বিভিন্ন অঞ্চলের নেতাদের সঙ্গে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের যৌথসভা শেষে রোববার তিনি এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা খালেদা জিয়ার বিষয়ে সংবেদনশীল। তিনি (শেখ হাসিনা) খালেদা জিয়ার বিষয়ে সর্বোচ্চ উদারতা দেখিয়েছেন। তিনি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।’
ভয়েস অফ আমেরিকায় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া সাক্ষাৎকারে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী যে কথা বলেছেন তাতে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে। বিএনপি প্রধানের চিকিৎসার বিষয়ে প্রচলিত আইনে সরকারের কিছু করার নেই। আইন অনুযায়ী আদালতের দ্বারস্থ হয়ে নির্দেশ মেনে তাকে চিকিৎসা করাতে হবে।’
এ সময় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ চলতি অক্টোবর মাসে রাজধানী ঢাকায় তিনটি এবং ঢাকার বাইরে দুটিসহ মোট পাঁচটি সমাবেশ করবে বলে জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক।
ওবায়দুল কাদের জানান, পাঁচটির মধ্যে একটি জনসমাবেশ এবং বাকি চারটি হবে সুধী সমাবেশ। ৩ অক্টোবর সাভারের আমিনবাজারের মহাসমাবেশটি হবে এ মাসের একমাত্র জনসমাবেশ ।
আর বাকি ৪টি সুধী সমাবেশ হবে- ৭ অক্টোবর বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন, ১০ অক্টোবর পদ্মাসেতুর রেলসেতুর উদ্বোধন, মেট্রোরেলের মতিঝিল অংশ উদ্বোধন এবং ২৮ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু টানেলের উদ্বোধন উপলক্ষে।
বিএনপিকে ইঙ্গিত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ অবৈধ দল হলে কেন খালেদা জিয়ার মুক্তি কিংবা বিদেশে পাঠানোর জন্য অনুমতি চাওয়া হয়। রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপিকে কথার সীমারেখা মানা উচিত।’
তিনি বলেন, ‘আ স ম আব্দুর রবও একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন। খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গে আ স ম আব্দুর রব উদাহরণ হতে পারে না। হাজী সেলিমও কিন্তু আইনের বাইরে যাওয়ার সুযোগ পাননি। আওয়ামী লীগ শূন্যে ভেসে হাওয়ায় উড়ে কিংবা বন্দুকের নল উঁচিয়ে ক্ষমতায় বসেনি।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘রাজনীতিতে কঠিন এক চ্যালেঞ্জে আছি। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতেই যৌথ সভার আয়োজন। বিএনপিকে প্রতিপক্ষ নয়, শত্রুপক্ষ মনে করতে হবে।’
রাজনীতির মাঠে বিএনপিকে মোকাবিলায় নেতা-কর্মীদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আলটিমেটামেও বিএনপি ব্যর্থ মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গত ১৫ বছরে অনেকবার বিএনপির হাঁকডাক শোনা হয়েছে। বিএনপি বিভিন্ন সময় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আসন নিয়ে তিরস্কার করে সমালোচনা করেছিল, যা ছিল বিএনপির অহংকার, দম্ভ। যারা আওয়ামী লীগের পতন দেখছে তাদের নিজেদের পতন হয় কি না সেটাই এখন দেখার বিষয়।’
রাজনীতিবিদদের বেফাঁস কথা বলা থেকে দূরে থাকা উচিত বলেও পরামর্শ দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এ সময় তিনি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিলবোর্ড কিংবা পোস্টার ফেস্টুন করে প্রচারণা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘এক এগারোর মতো অস্বাভাবিক সরকার তৈরি করার সুগভীর ষড়যন্ত্র করছে বিএনপি, তাদের একমাত্র টার্গেট হচ্ছে শেখ হাসিনাকে হটানো।
আগামী ৪ অক্টোবর দুপুরে প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরবেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তিনি আমাদের জন্য অনেকগুলো আন্তর্জাতিক পুরস্কার ও সম্মাননা নিয়ে এসেছেন।’
প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলে আওয়ামী লীগের দেয়া সংবর্ধনার প্রস্তাব এ সময় তিনি ফিরিয়ে দেন।
গণমাধ্যমের ওপর ভিসা নীতি প্রয়োগ বিষয়ে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বক্তব্যে হতাশা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের ১৯০ জন বিশিষ্ট নাগরিক।
শনিবার এক বিবৃতিতে এই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। খবর বাসসের
এতে বলা হয়, গণমাধ্যমে ভিসা নীতি প্রয়োগের ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নীতির পরিপন্থী। বাংলাদেশের গণমাধ্যম উগ্রবাদী শক্তি, জঙ্গি, জামায়াত ইসলামীর মতো যুদ্ধাপরাধীর দল, সন্ত্রাসী গোষ্ঠী যারা প্রগতিশীল ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিগুলোকে নির্মূল করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরিতে সোচ্চার ভূমিকা রাখছে। এর ফলে বাংলাদেশ তালেবানের মতো একটি রাষ্ট্রে পরিণত হয়নি।
বিবৃতিতে বিশিষ্ট নাগরিকরা বলেন, গণমাধ্যমের ওপর ভিসা নীতি নিয়ে হাসের বক্তব্যটিকে কট্টরপন্থী ও স্বাধীনতাবিরোধীরা স্বাগত জানিয়েছে। এই পক্ষটি অন্যান্য নীতিতে পশ্চিমাদের নিন্দা করে, মুক্তচিন্তকদের শত্রু মনে করে এবং তারা ১৯৭১ সালে যুদ্ধাপরাধীদের দায়মুক্তির পক্ষে। হাসের বক্তব্যকে জামায়াতে ইসলামীর মুখপত্র হিসেবে পরিচিত ‘বাঁশের কেল্লা’ নামের ফেসবুক পেজ থেকে স্বাগত জানিয়ে পোস্ট করা হয়েছে। যেখানে হাসকে ‘একজন সত্যিকারের বন্ধু’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অতীতে এই পেজে ব্লগার ও মুক্তচিন্তকদের হত্যার পক্ষে নানা বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে। ফলে, এই পেজে হাসের বিবৃতি নিয়ে উল্লাস আসলে ধর্মনিরপেক্ষ নাগরিকদের জন্য নিগূঢ় বার্তা দেয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা দেখেছি, জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধ, ধর্মনিরপেক্ষ নাগরিকদের কণ্ঠরোধ ও সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য নিয়ে “বাঁশের কেল্লা” পেজে আস্ফালন চলছে।’
এতে বলা হয়, ‘আমরা দেখেছি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ভিসা নীতিতে গণমাধ্যমের কথা উল্লেখ করা থেকে বিরত ছিলেন। কিন্তু হাস তার বক্তব্য প্রত্যাহার না করায় ধারণা করা যায়, গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়তো চূড়ান্ত। এরই মধ্যে সম্পাদক ও সাংবাদিকেরা এটির নিন্দা করেছেন। হাসের এই বক্তব্যের কারণে সংবাদমাধ্যমগুলো সমালোচনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশে বাধাপ্রাপ্ত হবে বলে অনেকেই মত দিয়েছেন।’
হাসের দ্বৈতনীতির বিষয়টি তার বক্তব্যে উঠে এসেছে উল্লেখ করে বিশিষ্ট নাগরিকরা বিবৃতিতে বলেন, বাংলাদেশে আসার পর থেকে তিনি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পক্ষে সোচ্চার ছিলেন। কিন্তু তার এখনকার অবস্থান গণমাধ্যমের স্বাধীনতার মৌলিক অবস্থানকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। অন্যদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা ছিল, গণমাধ্যমকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে না দিলে তারাও ভিসা নীতির আওতায় আসবেন। কিন্তু হাসের বিবৃতিতে দেখা যায়, বাংলাদেশের সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের যে প্রতিশ্রুতি, আর সেখানে গণমাধ্যমের ভূমিকার যে সুযোগ ছিল, সেটিকে মারাত্মক বাধাগ্রস্ত করবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক প্রচেষ্টা দেখেছি, যা দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে বিপন্ন করার সম্ভাবনা রাখে। র্যাবের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নিষেধাজ্ঞার দাবি উত্থাপনে বড় ভূমিকা রেখেছেন দেশটির বিতর্কিত মার্কিন সিনেটর বব মেনেন্ডেজ। এ ছাড়া ছয় মার্কিন কংগ্রেসম্যানের স্বাক্ষরে একটি বিবৃতি প্রদান করা, যেখানে দাবি করা হয়েছে, বর্তমান সরকারের আমলে সংখ্যালঘুদের সংখ্যা অর্ধেক হয়ে গেছে, যা একেবারে বাস্তবতাবিবর্জিত এবং ন্যায়সংগত নয়। ফলে, এই বিষয়গুলো আমাদের চিন্তা করতে বাধ্য করে যে এ ধরনের কার্যক্রমের পেছনে ভিন্ন কোনো ইচ্ছা রয়েছে কি না।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অতীতে ২০১৩ থেকে ২০১৫ সালে জামায়াত এবং সাম্প্রদায়িক শক্তির সংখ্যালঘুদের ওপর সাম্প্রদায়িক হামলা থেকে শুরু করে হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের হামলা আমরা দেখেছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা ব্যতীত এসব সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা অসম্ভব। বিএনপি-জামায়াত সর্বশেষ যেই জোট সরকার গঠন করেছিল, সে সময়ও ২৮ হাজারের বেশি হামলা চালানো হয় সংখ্যালঘুদের ওপর, যেখানে তাদের সম্পত্তি, বাড়িঘর দখলসহ মন্দিরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়, জীবন্ত মানুষকে জ্বালিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু এ বিষয়ে তৎকালীন সরকারকে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। কিন্তু বর্তমান সরকার নির্বাচিত হয়ে আসার পর রাষ্ট্রের সহায়তায় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন বন্ধ হয়েছে। আর সাম্প্রদায়িক এই সম্প্রতি বজায় রাখার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা দেখতে পেলাম, ন্যায়বিচার সমুন্নত রাখার প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন ঘটেনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দণ্ডপ্রাপ্ত এবং আত্মস্বীকৃত খুনিদের ক্ষেত্রে, যাদের যুক্তরাষ্ট্র আশ্রয় প্রদান করছে। এটি বাংলাদেশের জন্য এমন এক জঘন্য হত্যাকান্ড, যা মৌলবাদী শক্তির উত্থান ঘটায়। সুতরাং আমরা মনে করি যে ভিসা নীতিটি কীভাবে প্রয়োগ করা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করা যৌক্তিক। কারা এর অনুমোদন দেবে এবং এই ধরনের পদক্ষেপের বৈধতা নিয়ে কারা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, তা বোঝাটাও জরুরি। কারণ, আমরা রাষ্ট্রদূতের কার্যকলাপ দেখেছি এবং অন্যান্য কার্যাবলিও দেখেছি, যা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাওয়া মৌলবাদী শক্তিগুলোর জন্য বারুদ হিসেবে কাজে এসেছে।’
বিবৃতিতে লেখক, অধিকারকর্মী, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য, যুদ্ধাপরাধবিরোধী প্রচারক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মীসহ মোট ১৯০ জন বিশিষ্ট নাগরিক স্বাক্ষর করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, শহীদজায়া শিক্ষাবিদ শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, কথাশিল্পী অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, শহীদজায়া সালমা হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, আইনজীবী ও বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাণা দাশগুপ্ত, চলচ্চিত্রনির্মাতা নাসির উদ্দিন ইউসুফ, ক্যাপ্টেন (অব.) আলমগীর সাত্তার বীর প্রতীক, চিকিৎসক আমজাদ হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা চিকিৎসক নূরন নবী, অধ্যাপক শিল্পী আবুল বারক আলভী, অধ্যাপক মেজবাহ কামাল, চিকিৎসক শেখ বাহারুল আলম, চিকিৎসক ইকবাল কবীর, বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাজকর্মী সুব্রত চক্রবর্ত্তী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ভূতত্ত্ববিদ মকবুল-ই এলাহী চৌধুরী, অধ্যাপক আবদুল গাফ্ফার, কবি জয়দুল হোসেন, সমাজকর্মী কাজী লুৎফর রহমান, সমাজকর্মী কামরুননেসা মান্নান, আইনজীবী আজাহার উল্লাহ্ ভূঁইয়া, নির্মল রোজারিও, সভাপতি বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশন, ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয়, সাধারণ সম্পাদক বুড্ডিস্ট ফেডারেশন।
‘খবরের সব দিক, সব দিকের খবর’ স্লোগান সঙ্গী করে ২০২০ সালের আজকের দিনটিতে যাত্রা শুরু নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর। নতুন দিনের সাংবাদিকতার আদর্শ ধারণ করে অভিজ্ঞতা ও তারুণ্যে প্রদীপ্ত একদল তথ্যযোদ্ধার মেধা ও শ্রমে আজ তিন বছর পেরিয়ে চতুর্থ বর্ষে পা দিল নিউজ পোর্টালটি।
তৃতীয় বর্ষপূর্তি ও চতুর্থ বর্ষে পদার্পণের ক্ষণটি কেক কেটে উদযাপন হয়েছে নিউজবাংলা প্রাঙ্গণে। রোববার সন্ধ্যায় প্রতিষ্ঠানের সব কর্মীর উপস্থিতিতে ঘরোয়া আয়োজনে দিনটি পালন করা হয়।
এসময় নিউজবাংলা ও দৈনিক বাংলার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত বলেন, ‘নিউজবাংলা হলো আমাদের বিজয় রথের সারথী। দুই বাংলা, অর্থাৎ দৈনিক বাংলা ও নিউজবাংলা, দুই প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নিতে সারথীর ভূমিকা পালন করে চলেছে নিউজবাংলা।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই নিউজবাংলার সংবাদকর্মীরা প্রতিষ্ঠানটিকে দেশের প্রথম সারির অনলাইন সংবাদমাধ্যমে পরিণত করেছেন। দৈনিক বাংলার সংবাদকর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় করে নিজেদের শক্তি আরও বাড়িয়ে নিউজবাংলা অনন্য উচ্চতায় পৌঁছবে, আমি সবসময় এই কামনা করি।’
এ সময় প্রতিষ্ঠানটির মান ধরে রাখতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাওয়া নিউজবাংলার সংবাদকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। এ ছাড়া সারা দেশ থেকে প্রতি মুহূর্তের খবর সবার আগে সংগ্রহ করে তা সরবরাহ করা জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধিদেরও ধন্যবাদ জানান সম্পাদক।
শুধু তিন বা চার বছর পূর্তি নয়, নিউজবাংলা শত-সহস্র বছর ধরে পাঠকের চাহিদা অনুযায়ী সংবাদ পরিবেশন করে যাবে; দেশের মানুষের দুঃখ-দুর্দশার কথা দায়িত্বপ্রাপ্তদের অবগত করা ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেবে; দেশের শাসন বিভাগ ও জনগণের মধ্যে সমন্বয় করে দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় নিয়োজিত থাকবে- এমনটা প্রত্যাশা করেন তিনি।
এরপর সবাইকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটেন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক।
এসময় উপস্থিত ছিলেন নিউজবাংলার নির্বাহী পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর আফিজুর রহমান, বার্তা সম্পাদক কামরুল হাসান খান, যুগ্ম বার্তা সম্পাদক আজাহারুল ইসলাম, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনুর রহমান, সিনিয়র আইটি অফিসার সাইদুল ইসলাম মিঠু, বিজনেস ডেভেলপমেন্ট বিভাগের সহকারী মহাব্যবস্থাপক জাকারিয়া হোসেন জয় এবং প্রতিষ্ঠানটির রিপোর্টার, সাব-এডিটরসহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মীরা।
আরও পড়ুন:প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, মিডিয়ার মাধ্যমে অপপ্রচার কঠোরভাবে প্রতিরোধ করা হবে, যাতে নির্বাচনে এর ক্ষতিকর প্রভাব না পড়ে।
রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
সিইসি বলেন, ‘মিডিয়ার মাধ্যমে এখন অনেক অপপ্রচার হয়, যেটাকে মিসইনফরমেশন বা ডিজইনফরমেশন বলে। অনেক কিছু বানিয়েও প্রচার করা হতে পারে। সেগুলো আমরা কঠোরভাবে প্রতিরোধ করবো, যাতে নির্বাচনে এর নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে।’
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে অবাধ, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচন হবে বলে উল্লেখ করেন কাজী হাবিবুল আউয়াল। একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্য তখনই হবে, যদি দায়িত্ব পালন করে মানুষকে দেখানো যায়। বাজারে পারসেপশন আছে- আমাদের ওপর আস্থা নেই, সরকারের ওপর আস্থা নেই। নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয় না।
‘আমরা এই চ্যালেঞ্জটা গ্রহণ করতে চাই, আমাদের অধীন যে নির্বাচন হবে সেটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ হবে। স্বচ্ছতাটা গণমাধ্যম ও পর্যবেক্ষকদের মাধ্যমে দেখাতে চাই।’
সিইসি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বিতর্ক ও সমালোচনা হতে পারে। অতীতেও হয়েছে। ৫০, ৬০, ৭০ বছরের ইতিহাস ঘাঁটলেও বিতর্ক পাওয়া যাবে। এমনকি ব্রিটিশ আমলের নির্বাচন নিয়েও কিছু কিছু বিতর্ক হয়েছে। তখন হয়তো মাত্রাটা কম ছিল।’
ইউএনওদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনাদের ওপর যে দায়িত্ব অর্পিত হবে, সেটি কঠোরভাবে প্রতিপালন করতে হবে। আমরা নির্বাচন কমিশন থেকে বিষয়টি কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করব। জানার চেষ্টা করব আপনারা কে কীভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে আমরা তথ্য নেব।’
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে নির্বাচন পরিচালনা হবে। নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য, শান্তিপূর্ণ হতে হবে।
‘আরেকটি বিষয়, ভোটাররা যেন নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে এসে ভোট দিতে পারে। তা না হলে সেই দায় আপনাদের ওপর বর্তাবে। পুলিশ প্রশাসনের সহায়তা নেবেন এবং জনগণকেও উদ্বুদ্ধ করবেন, তারা যেন কেন্দ্রে এসে ভোট দিয়ে যায়।’
তিনি বলেন, ‘পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ আছে। অনেকে আবার এজেন্ট না দিয়েও অভিযোগ করেন। কাজেই প্রতিটি দল থেকে এজেন্ট দিয়েছে কি না সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। এজেন্ট শক্তিশালী হলে কারচুপির আশঙ্কা অনেক কমে যাবে।’
দু’দিনের আবাসিক এই কর্মশালায় ৫০ জন ইউএনও এবং ৫০ জন নির্বাচন কর্মকর্তা অংশ নেন।
কর্মশালায় ইসি সচিবালয়ের সচিব মো. জাহাংগীর আলম, অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক একেএম হুমায়ুন কবীর, ইটিআই মহাপরিচালক এসএম আসাদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:ঢাকার উপকণ্ঠ সাভারে গভীর রাতে নিজ বাড়িতে বাইসাইকেল চালিয়ে ফেরার পথে সন্ত্রাসীদের গুলিতে পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আজিজুল খান।
শনিবার রাত একটার দিকে আশুলিয়ার ভাদাইল পূর্ব পাড়া রূপায়ন মাঠ সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় থানায় এখনও মামলা হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রোববার বিকেলে ভুক্তভোগীর চাচাতো ভাই সুজন আহমেদ এসব তথ্য জানান।
সুজন আহমেদ বলেন, ‘শনিবার গভীর রাতে সাইকেল চালিয়ে নিজ বাড়ি ফিরছিলেন আজিজুল। এ সময় বাড়ি থেকে কিছু দূরে সামনে অন্ধকারে চারজনকে বসে থাকতে দেখে আজিজুল সেখানে সাইকেল থামিয়ে দাড়ায়ে পরেন। এতো রাতে তারা কারা এবং সেখানে কী করছেন এটা জিজ্ঞেস করেন আজিজুল। তখন তারা আজিজুলকে বলেন- তুই বাসায় যা।
‘এর জবাবে আজিজুল জিজ্ঞাসা তাদের পাল্টা প্রশ্ন করেন তার বাড়ির ওখানে তারা কারা? এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ত্রাসী বাপ্পী আজিজুলের বাম পায়ে গুলি করে সেখান থেকে দ্রুত পালিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা আমার ভাইকে প্রথমে আশুলিয়ার নারী ও শিশু স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখান থেকে চিকিৎসকরা তাকে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে রেফার্ড করেন।’
রোববার আজিজুলের পায়ে অস্ত্রপচার শেষে হাসপাতালে তাকে ভর্তি রাখা হয়েছে।
সুজন বলেন, ‘আজিজুল বাপ্পীকে চিনতে পেরেছে। বাপ্পী এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। এর আগেও অস্ত্র ও মাদকসহ সে গ্রেপ্তার হয়েছিল। আমরা পরিবারের সবাই আতঙ্কিত। কারণ বাড়ির পাশে গভীর রাতে কারা আড্ডা দিচ্ছে সামান্য এই প্রশ্ন করে আমার ভাইকে গুলি খেতে হয়েছে। আল্লাহর রহমতে সে প্রাণে বেঁচে গেছে। তবে সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা না হলে আমাদের পক্ষে স্বস্তিতে বসবাস করা সম্ভব হবে না।’
আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সোহেল মোল্লা জানান, ‘শনিবার অনেক রাতে ভাদাইল এলাকায় গুলির ঘটনা শুনে আমি সেখানে গিয়েছিলাম। একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। সামান্য বিষয়েই ওই যুবককে গুলি করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। ঘটনাস্থল থেকে কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে। ভুক্তভোগী ও তার স্বজনরা হাসপাতালে থাকায় এখনও লিখিত অভিযোগ দেয়নি তারা। লিখিত অভিযোগ পেলে মামলা রুজু হবে। পাশাপাশি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে।’
যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আছেন সেখানে কোনো পেশি শক্তি টিকবে না বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
রোববার বিকেলে ফেনীর ছাগলনাইয়ায় উপজেলার শহীদ মিনার চত্ত্বরে আয়োজিত ১৪ দলের জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পশ্চিমা শক্তি কত রকমের সবক দিচ্ছে, নিজেদের দেশে কী করছেন তার খবর নেই। আমাদের সবক দিয়ে লাভ নেই। যেখানে শেখ হাসিনা আছেন সেখানে কোনো পেশি শক্তি টিকবে না।’
দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা, সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়ন ও শান্তির ধারা অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘শেখ হাসিনা দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন। ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা এই বাংলার অপরাজেয় শক্তি। তাকে কোনো অপশক্তি দমাতে পারবে না। ১৪ দলের সকলে মিলে দেশবিরোধী শক্তিকে প্রতিহত করবে।’
জনসভায় অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম, শিক্ষা উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এমপিফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী, চট্টগ্রাম মহানগর ১৪ দলের সমন্বয়ক খোরশেদ আলম সুজন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, বাসদ সভাপতি রেজাউর রশীদ, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য কামরুল আহসান।
এতে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার।
আরও পড়ুন:
‘আমাদের জাহাজের ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে ইঞ্জিন রুমে পানি ঢুকতেছে। এখন জাহাজের কন্ট্রোল নাই, সাগরে এলোমেলো ভাসতেছি। আমরা ১৪ জন ক্রু আছি জাহাজে। আমাদের উদ্ধারের ব্যবস্থা নেন দয়া করে।’
এমন অনুরোধ জানিয়ে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় মুরাদ (১৮) নামে একটি লাইটার জাহাজের ক্রু জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেন। পরবর্তীতে তৎপরতা চালিয়ে কোস্টগার্ড ওই ১৩ নাবিককে উদ্ধার করে।
জানা যায়, এমভি মাস্টার সুমন-২ নামে একটি লাইটার জাহাজ এক হাজার ১০০ টন কয়লা বোঝাই করে চট্টগ্রাম থেকে দাউদকান্দি যাচ্ছিল। এক পর্যায়ে ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। ইঞ্জিন রুমে পানি ঢুকে জাহাজটি সাগরে নিয়ন্ত্রণহীন ভাসতে থাকে। এ সময় জাহাজটি সাঙ্গু গ্যাস ফিল্ড থেকে আনুমানিক ৯ দশমিক ৫ নটিক্যাল মাইল উত্তরে গভীর সাগরে অবস্থান করছিল।
নাবিক মুরাদের কলটি রিসিভ করেন ৯৯৯ কলটেকার কনস্টেবল মো. আবদুল কাদের। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে কোস্টগার্ড নিয়ন্ত্রণ কক্ষ ও সন্দ্বীপ কোস্টগার্ডে ঘটনাটি জানিয়ে দ্রুত উদ্ধারে ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।
পরবর্তীতে ৯৯৯ ডেসপাচার এসআই কবির রায়হান উদ্ধার-সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে যোগাযোগ করে উদ্ধার তৎপরতার আপডেট নিতে থাকেন।
সংবাদ পেয়ে কোস্টগার্ডের নিয়মিত টহল কার্যক্রম পরিচালনাকারী জাহাজ ‘সবুজ বাংলা’ দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে লাইটার জাহাজটি থেকে ১৩ জন ক্রুকে নিরাপদে উদ্ধার করে।
উদ্ধারকৃতদের প্রাথমিক শুশ্রূষা এবং খাবার সরবরাহ করা হয়। পরবর্তীতে মালিক পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে উদ্ধারকৃত ক্রু এবং জাহাজটি বুঝিয়ে দেয়া হয়।
কোস্টগার্ড উদ্ধারকারী দলের নেতৃত্ব দেয়া লে. কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন ৯৯৯-কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য