বালুক্ষয় থেকে সৈকত রক্ষায় দেশে প্রথমবারের মতো ব্যবহার করা হচ্ছে ওভেন জিয়োটিউব।
পরীক্ষামূলকভাবে বালুভর্তি এ টিউব বসানো শুরু হয়েছে ভাঙনপ্রবণ কুয়াকাটা সৈকতের দেড় কিলোমিটার এলাকায়।
তিন কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে টিউব বসানোর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। এর বাস্তবায়ন হলে বর্ষা মৌসুমে সৈকত বালুক্ষয় থেকে রক্ষা পেতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে অমাবশ্যা-পূর্নিমার জোর প্রভাবে বালুক্ষয়ে ধ্বংস হয় ‘সাগরকন্যা’ খ্যাত পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা।
বালুক্ষয়ের ফলে ১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ সৈকতটির প্রস্থ জিরো পয়েন্টের কাছাকাছি এসে পৌঁছেছে।
পর্যটকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের দাবি ও আন্দোলন-সংগ্রামের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতি বছর নামমাত্র সৈকত রক্ষার অস্থায়ী চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিভিন্ন সময়ে দেখা গেছে, জোয়ারের তীব্রতায় সৈকত রক্ষার চেষ্টা ম্লান হয়ে যায়। সেদিকে খেয়াল রেখে এবার বিদেশ থেকে আমদানিকৃত জিয়োটিউব বসানো হচ্ছে সৈকতে।
কোথায় বসছে টিউব
পটুয়াখালী পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুল রহমান জানান, সৈকতের মূল পয়েন্টের দুই পাশে দেড় কিলোমিটার এলাকায় বসানো হচ্ছে ওভেন আর নন ওভেন জিয়োটিউবগুলো।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার সময় ধরা হয়েছিল জুন। তবে এরই মধ্যে কাজ প্রায় শেষের পথে।
রাশেদুল জানান, জিয়োটিউবের মধ্যে এক কিলোমিটার সাদা রঙের বা নন-ওভেন। এগুলো বাংলাদেশ তৈরি। বাকি ৫০০ মিটার বা আধা কিলোমিটারে বসানো হচ্ছে কালো রঙের ওভেন জিয়োটিউব, যেগুলো বিদেশি তৈরি।
তিনি জানান, নন-ওভেন টিউবের চেয়ে ওভেন টিউব বেশি টেকসই হওয়ায় বালুক্ষয় থেকে সহজেই রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
এ কর্মকর্তা আরও জানান, জিয়োটিউবের বাইরে ও ভেতরের দিকে জিয়ো ব্যাগ স্থাপন করায় এবারের প্রতিরক্ষা বাঁধটি আগের চেয়ে টেকসই হবে। সৈকত রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
সম্প্রতি কুয়াকাটা সৈকতের জিরো পয়েন্ট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ১০ থেকে ১৫ জন শ্রমিক নন ওভেন জিয়োটিউব স্থাপনের কাজ করছেন। ভাটার সময় শ্রমিকরা অনরবত কাজ করতে পারলেও জোয়ারের সময় ঢেউয়ের ঝাপটায় তারা কাজ করা থেকে বিরত থাকেন।
কাজে ব্যস্ত শ্রমিক রফিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভাডার সময়ে কাম করতে সুবিধা অয়। কিন্তু যহন জোয়ার আয় তহন লবণপানি ঢুইকা কামে সমস্যা অয়।
‘মুহূর্তের মধ্যে বস্তার (নন ওভেন জিয়োটিউব) উপরে বালু জমা অইয়া শক্ত অইয়া যায়। পরে হেগুলো আরেকখানে নেওয়া যায় না।’
পটুয়াখালী পাউবোর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মজিবুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বালুক্ষয় থেকে কুয়াকাটা সৈকতকে রক্ষায় একটি স্থায়ী প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণকাজের জন্য ডিপিপি বা খসড়া প্রকল্প প্রণয়নের কাজ চলছে। সেটি চূড়ান্ত হলে সে অনুযায়ী এখানে স্থায়ী প্রতিরক্ষা বাঁধ তৈরি করা হবে।’
তিনি আরও জানান, গত বছর যে জিয়োটিউব বসানো হয়েছিল, সেগুলো স্থানীয় লোকজন কিংবা পর্যটকরা নষ্ট করেছিলেন। কিন্তু ওভেন জিয়োটিউব এতই শক্ত ও মজবুত যে এগুলো যে কেউ ইচ্ছা করলেই নষ্ট করতে পারবে না। কারণ এগুলো কাটা-ছেঁড়া সম্ভব নয়।
তবে কাজের মান নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে রয়েছে নানা প্রতিক্রিয়া।
পর্যটনকেন্দ্রিক ব্যবসায়ী রাজু আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গতবারের চাইতে এবারের টিউবগুলো দ্যাখতে ভালো মনে হয়। কিন্তু এসব টিউবে যদি লাল এবং মোটা বালু দিত তাইলে আরও ভালো হইত।’
এসব টিউবে স্থানীয় বালু দেয়ায় স্থায়িত্ব নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। তার সঙ্গে একমত পোষণ করেন স্থানীয় আরও অনেকে।
কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব শরীফ নিউজবাংলাকে জানান, ভাঙনের কবল থেকে সৈকতটি স্থায়ীভাবে রক্ষা করতে না পারলে পর্যটকরা এখানে ভ্রমণের আগ্রহ হারাবেন। পাশাপাশি উদ্যোক্তারাও কুয়াকাটা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন। তাই যেভাবেই হোক সৈকতটিকে স্থায়ীভাবে রক্ষা করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘শুনেছি গত বছরের চেয়ে এবারের ব্যাগগুলো নাকি খুব মজবুত। যদি তাই হয় তাহলে পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ পৌর মেয়রের উচিত এগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করা।’
স্থানীয়দের বিরুদ্ধে দেশি জিয়োটিউব কেটে ফেলার অভিযোগ করেছেন পাউবোর সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার স্বপন মৃধা।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘স্থানীয় খুটা জাল ব্যবহারকারী কিংবা সৈকতে ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালকরা পরিকল্পিতভাবে দেশীয় তৈরি নন ওভেন জিয়োটিউবগুলো গত বছরের মতো এবারও কেটে নষ্ট করে ফেলছে। ফলে সেগুলো জোয়ারের পানির সাথে মিশে যাচ্ছে।’
সরকারি সম্পত্তি এভাবে নষ্ট না করার আহ্বান জানান তিনি।
তবে লকডাউন থাকায় এ ব্যাপারে স্থানীয় জেলে আর মোটরসাইকেল চালকদের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
পাহারার আশ্বাস মেয়রের
জিয়োটিউবগুলো যাতে নষ্ট না হয়, সে বিষয়ে কড়া নজরদারির আশ্বস দেন কুয়াকাটা পৌরসভা মেয়র মো. আনোয়ার হাওলাদার।
তিনি বলেন, ‘প্রয়োজনে দিনে-রাতে পাহারার ব্যবস্থা করা হবে। তারপরও সরকারি এই সম্পত্তি আর কাউকে নষ্ট করতে দেয়া হবে না।’
স্থায়িত্ব বাড়াতে তিনি কাছাকাছি দূরত্বে দুটি করে টিউব স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন।
তার মতে, দুটি টিউব বসানো হলে সাগরের উত্তাল ঢেউ থেকে গোটা পয়েন্টটা বর্ষা মৌসুমে রক্ষা পাবে।
২০১৯ সালে এক কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে একই স্থানে দেশীয় তৈরি জিয়োটিউব দেয়া হয়েছিল। কিন্তু মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই সেটি সাগরে বিলীন হয়ে যায়। এর জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড স্থানীয়দের দায়ী করেছে।
নওগাঁর ধামইরহাটে রেজওয়ানুল আহমেদ পিয়াল নামে সিআইডি কর্মকর্তা পরিচয় দেয়া এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তা পরিচয় দিলেও তিনি আসলে তা নন, প্রতারণার স্বার্থে ভুয়া পরিচয় ধারণ করেছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার রুপনারায়নপুর গ্রাম থেকে তিনি গ্রেপ্তার হন।
২৫ বছর বয়সী রেজওয়ানুল আহমেদ পিয়াল বগুড়ার আদমদিঘী উপজেলার ছাতিয়ান গ্রামের বাসিন্দা।
ভুক্তভোগী ম্যানুয়েল তপন জানান, ভয়ভীতি দেখিয়ে বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে তিনি (পিয়াল) তার কাছ থেকে ২৯ হাজার ৫৩৮ টাকা গ্রহণ করেন এবং আরও টাকা দাবি করলে স্থানীয় জনতা তাকে চ্যালেঞ্জ করে। এরপর সংশ্লিষ্ট থানায় খবর দেয়া হয়। পরে থানা পুলিশ গিয়ে প্রতারক পিয়ালকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে।
তপন বলেন, ‘বেশকিছু দিন ধরে আমার মতো এলাকার অন্য লোকজনের কাছেও বিভিন্ন ফন্দি এঁটে প্রতারণা করে আসছে এই প্রতারক।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে ধামইরহাট থানার ওসি মো. বাহাউদ্দিন ফারুকী বলেন, ‘প্রতারক রেজওয়ানুল আহমেদ পিয়াল বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এলাকায় নিজেকে সিআইডি কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করতেন। ইতোমধ্যে একজনের কাছে থেকে ২৯ হাজার টাকা নিয়েছে। এছাড়া ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাও নিতেন তিনি।
‘এদিনও প্রতারণা করতে গেলে জনগণ তাকে আটক করে রাখে। এরপর পুলিশ গিয়ে তাকে থানায় নিয়ে আসে। তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ মামলা হয়েছে। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তাকে আদালতে পাঠানো হবে।’
আরও পড়ুন:নোয়াখালীর হাতিয়ায় ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মো. সুলতান নামে এক রোহিঙ্গা নাগরিকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাৎক্ষণিক এই হত্যাকাণ্ডের কারণ জানাতে পারেনি পুলিশ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১১৬ নম্বর ক্লাস্টার থেকে পুলিশ সুলতানের মরদেহ উদ্ধার করে। তিনি ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৭৮ নম্বর ক্লাস্টারের বাসিন্দা ছিলেন।
ভাসানচর থানার ওসি কাওসার আহমেদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
স্থানীয়দের বরাতে ওসি বলেন, সুলতান ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৭৮ নম্বর ক্লাস্টারে বসবাস করতেন। ১১৬ নম্বর ক্লাস্টারের খালি জায়গায় তিনি সবজি চাষ করতেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ছেলে তার জন্য দুপুরের খাবার নিয়ে যান। সেখানে গিয়ে বাবাকে দেখতে না পেয়ে তার ছেলে ওই ক্লাস্টারে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি শুরু করেন। একপর্যায়ে তার বাবার গলা কাটা মরতেজ পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার দেন। এ সময় অন্য ক্লাস্টারের লোকজন এগিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।
ওসি কাওসার আহমেদ জানান, পেছনের দিক থেকে গলা কেটে এই রোহিঙ্গা নাগরিককে হত্যা করা হয়। শুক্রবার সকালে মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে। পুলিশ হত্যার রহস্য উদঘাটনে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন:নাটোরের সিংড়া উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে অপহরণ ও মারধরের অভিযোগে অপর প্রার্থী মো. লুৎফুল হাবিবকে তলব করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান বৃহস্পাতবার অভিযুক্তকে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছেন।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের ৮ মে অনুষ্ঠেয় নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক দেলোয়ার হোসেন ও তার ভাইসহ তিনজনকে অপহরণের সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। এ ঘটনায় আপনি লুৎফুল হাবীবকে দায়ী করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে বর্ণিত বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থা থেকে প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। এছাড়া সব জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সচিত্র বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে।
উল্লেখিত প্রতিবেদন ও পত্রিকান্তে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা প্রমাণ হয়েছে। এরূপ ঘটনার জন্য কেন আপনার প্রার্থিতা বাতিল অথবা আপনার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না সে বিষয়ে লিখিত জবাবসহ নির্বাচন কমিশনে ২২ এপ্রিল সোমবার বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দেয়ার নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত দিয়েছে।
উল্লেখ্য, গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর নাটোর জেলা নির্বাচন অফিসে গেলে দেলোয়ার হোসেনকে গাড়িতে তুলে নিয়ে আহত অবস্থায় তাকে তার বাড়ির পাশে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা।
ভুক্তভোগী প্রার্থীর পরিবার এ ঘটনার জন্য আরেক প্রার্থী লুৎফুল হাবীব রুবেল ও তার সমর্থকদের দায়ী করেছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লুৎফুল হাবীব তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক। দেলোয়ার হোসেন মনোনয়নপত্র দাখিলের আগে লুৎফুল হাবীব ছিলেন একক প্রার্থী।
আরও পড়ুন:চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে টিউবওয়েল বসানোর জন্য স্থাপন করা পাইপে পানির পরিবর্তে উঠে আসছে এক ধরনের তরল। অনেকটা ডিজেলের মতো গন্ধযুক্ত এই তরল নিয়ে জনমনে সৃষ্টি হয়েছে কৌতূহল।
উপজেলার ভোলামোড় এলাকায় এক বাড়িতে ঘটেছে এই ঘটনা। বাড়ির মালিক আব্দুল আওয়াল বলেন, ‘পানীয় জলের জন্য তিন বছর আগে এখানে মোটর বসানো হয়। এটি উপজেলা পরিষদ থেকেই বসানো হয়েছিল। কয়েক মাস থেকে মোটরটি দিয়ে পানি উঠছে না। কারণ জানার জন্য বুধবার সকালে মিস্ত্রি ডেকে আনা হয়।
‘মিস্ত্রি কাজ করার সময় মোটরের সঙ্গে যুক্ত পাইপ দিয়ে মাটির নিচ থেকে পানির পরিবর্তে তেলের মতো এক ধরনের তরল উঠে আসে। তা দেখে মনে হয়েছে ডিজেলের মতো। বিষয়টি আমরা উপজেলা চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি, যাতে তারা এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা করেন।’
স্থানীয় সংবাদকর্মী মনিরুল ইসলাম জানান, ফেসবুকে ঘটনাটি দেখার পর তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। এ সময় পাইপ দিয়ে উঠে আসা তরলে তিনি কাগজ চুবিয়ে আগুন ধরানোর চেষ্টা করলে তাতে আগুন ধরে যায়। তার প্রশ্ন- পানি হলে তো ভেজা কাগজে আগুন ধরতো না। তাহলে এই তরল কি খনিজ তেল?
এ বিষয়ে নাচোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা সরকার জানান, তিনিও বিষয়টি ফেসবুকে দেখেছেন। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর করবেন বলে জানান তিনি।
গাইবান্ধায় ভাঙারির দোকানে চুরি করা রেলপাত (রেললাইন) বিক্রির সময় এক অটোচালকসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এসময় দোকান মালিক পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের ব্রিজ রোড এলাকার আশা ভাঙারি দোকানে সরকারি এসব রেলপাত বিক্রির সময় তাদের হাতেনাতে আটক করে গাইবান্ধার রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি)।
এ সময় চুরি করে বিক্রি করতে নিয়ে আসা রেলপাত এবং সেসব পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত একটি অটোরিকশাও জব্দ করা হয়।
আটককৃতরা হলেন- সদর উপজেলার পশ্চিম দুর্গাপুর এলাকার ৩০ বছর বয়সী সাগর মিয়া, ফুলছড়ি উপজেলার উত্তর কঞ্চিপাড়া এলাকার ৪০ বছর বয়সী ওয়াহেদ মিয়া ও আশা ভাঙারি দোকানের শ্রমিক সদর উপজেলার বালুয়া বাজারের পাকারখুটি এলাকার ৩৩ বছর বয়সী মোকলেছুর রহমান। এদের মধ্যে ওয়াহেদ মিয়ার অটোরিকশায় এসব মালামাল পরিবহন করা হয়েছিল।
নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বোনারপাড়া রেলওয়ে পুলিশের ওসি খাইরুল ইসলাম তালুকদার।
তিনি বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শহরের ব্রিজ রোডের একটি ভাঙারির দোকানে সরকারি রেলপাত অবৈধভাবে ক্রয়-বিক্রয়কালে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এ সময় দোকান মালিক পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘এ সময় তাদের কাছ থেকে খণ্ড খণ্ড তিন ফুট দৈর্ঘ্যের ৯ টুকরা রেললাইনের পাত উদ্ধার করা হয়, যা সংশ্লিষ্ট বিভাগে জমা দেয়া হবে।’
রেলপাতগুলো বালাসিঘাটের পরিত্যক্ত রেলপথ থেকে খুলে আনা হয়েছে বলে জানান রেলওয়ে পুলিশের এ কর্মকর্তা।
এ সময় এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আটককৃতদের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পদ অবৈধভাবে ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহন আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া এদের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না তাও খতিয়ে দেখবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।’
অপহরণের ৬ ঘণ্টার মধ্যে সিরাজগঞ্জ থেকে তামিম হোসেন নামের ৭ বছরের এক শিশুকে উদ্ধার করেছে র্যাব। এ সময় এ মামলার আসামি আল-আমিন গ্রেপ্তার হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার ভোরে বেলকুচি উপজেলার চন্দনগাতী গ্রাম থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে র্যাব ১২-এর একটি দল। বুধবার দুপুর তিনটার দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলার হানুরবাড়াদি গ্রাম থেকে তাকে অপহরণ করা হয়।
অপহৃত তামিম হোসেন চুয়াডাঙ্গার হানুরবাড়াদি গ্রামের মো. সুন্নত আলীর ছেলে। অপরদিকে গ্রেপ্তার হওয়া ২৯ বছর বয়সী আল-আমিন কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম থানায় মেষতলী বাজারের বাসিন্দা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে র্যাব ১২-এর অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মারুফ হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, অপহরণের পর শিশুটির বাবা সুন্নত আলী চুয়াডাঙ্গা থানায় মামলা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বিষয়টি র্যাবকে জানালে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে আসামির অবস্থান নির্ণয় করা হয়। পরে অভিযান চালিয়ে আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার সঙ্গে থাকা শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।
তিনি জানান, তামিমের বাবার সঙ্গে আল আমিনের দুই মাস আগে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। বন্ধুত্বের সুযোগ নিয়েই সুকৌশলে তামিমকে অপহরণ করা হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মুক্তিপণের জন্যই শিশুটিকে অপহরণ করা হয়েছিল।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় হস্তান্তর করার আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান র্যাবের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
বিজিবি মহাপরিচালক বৃহস্পতিবার সকালে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ১১ বিজিবি ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরের কোয়ার্টার গার্ড পরিদর্শন শেষে বিজিবি কার্যালয় পরিদর্শন করেন। দুপুরে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা বর্ডার গার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয়া প্রতিবেশী দেশটির জান্তা বাহিনীর সদস্যদের খোঁজখবর নেন তিনি।
পরে তিনি ১১ বিজিবির অধীন চাকঢালা বিওপি (বর্ডার অবজারবেশন পোস্ট) পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি মিয়ানমার থেকে জান্তা বাহিনীর সদস্যদের পালিয়ে আসার স্পটগুলো সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। সীমান্তে বিজিবিকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেন।
পরিদর্শনকালে বিজিবি মহাপরিচালকের সঙ্গে ছিলেন কক্সবাজার রিজিয়ন কমন্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মোরশেদ আলমসহ বিজিবি রামুর সেক্টর ও অধীনস্ত বিজিবি ব্যাটালিয়নে নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবি’র জোন কমন্ডার ও অধিনায়ক লে. কর্নেল সাহল আহমদ এসিসহ বিজিবির কর্মকর্তারা।
মন্তব্য