নিজেদের বারবার অরাজনৈতিক দাবি করা হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির সিংহভাগ সদস্যই ছিলেন বিএনপি-জামায়াত জোটের শরিক দলের নেতা। তারা হেফাজতকে ব্যবহার করে তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের চেষ্টা করার অভিযোগের মধ্যে এই কমিটি ভেঙে দেয়ার পর এবার রাজনীতি থেকে দূরে থাকা কওমি আলেমদের নিয়ে কমিটি গঠনে মনযোগী হয়েছে সংগঠনটি।
গত মার্চ ও এপ্রিলের শুরুতে দেশের নানা স্থানে তাণ্ডবের পর ১১ এপ্রিল থেকে সরকার গ্রেপ্তার অভিযান শুরু করলে একাধিকবার হেফাজতের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা রাজনৈতিক সংগঠন না। ক্ষমতায় কে থাকল না থাকল, তা নিয়ে তাদের মাথাব্যথা নেই।
হেফাজত আমিরের বারবার বক্তব্যের পাশাপাশি গত ১৯ এপ্রিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সঙ্গে বৈঠক করেও এই বিষয়টি তুলে ধরা হয়।
তবে সরকার অভিযোগ করে আসছে, হেফাজতের যেসব নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের রাজনৈতিক অভিলাষ ছিল। বিশেষ করে, যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের চক্রান্ত করেছিলেন উগ্রবাদ ছড়িয়ে।
সমঝোতার চেষ্টায় মরিয়া হেফাজত আমির জুনায়েদ বাবুনগরী এর মধ্যে রোববার রাতে ১৫১ সদস্যের সেই কমিটি ভেঙে দেন। সাড়ে তিন ঘণ্টার মধ্যেই অবশ্য পাঁচ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তবে এই আহ্বায়ক কমিটির সবাই বিলুপ্ত কমিটির নেতা হলেও একটি বিষয় লক্ষ্যণীয় যে এদের কেউই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন।
এই কমিটি হেফাজতের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার উদ্যোগ নেবে।
হেফাজতে ইসলামের সদ্য বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির এক কেন্দ্রীয় নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমাদের ওপর উপর থেকে চাপ আছে যে রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট কাউকে হেফাজতের কমিটিতে না রাখার জন্য। পরবর্তীতে অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের নিয়ে কমিটি করব।’
বিলুপ্ত ও আহ্বায়ক কমিটির মহাসচিব নুরুল ইসলাম জিহাদীর কাছ থেকে অবশ্য এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। ফোন করলে তিনি লাইন কেটে দেন।
তবে তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘অরাজনৈতিক ব্যক্তি যারা আছেন, তাদের বা মুরুব্বী ও বয়স্ক নেতাদের নিয়ে আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছে। যদি এটার কোনো সম্প্রসারণ হয়, তাহলে একই ক্যাটাগরির লোক দিয়ে তা করা হবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সদ্য বিলুপ্ত হেফাজতে ইসলামের দাওয়াহ সম্পাদক ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান কাসেমীও কোনো কিছু বলতে রাজি হননি।
আহ্বায়ক কমিটিতে যারা, তারা কারা
হেফাজত বরাবর নিজেদের অরাজনৈতিক সংগঠন দাবি করলেও বিলুপ্ত কমিটির শতাধিক নেতারই রাজনৈতিক পরিচয় আছে। তারা কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক বিভিন্ন দলের নেতা ছিলেন।
তবে বিলুপ্ত ও আহ্বায়ক কমিটির আমির জুনায়েদ বাবুনগরী কোনো রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। মহাসচিব নূরুল ইসলাম জিহাদীরও রাজনৈতিক কোনো পরিচয় নেই। তিনি রাজধানীর খিলগাঁও মাখজানুল উলুম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ।
আহ্বায়ক কমিটির প্রধান উপদেষ্টা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী এক সময় ইসলামী ঐক্যজোটের সহ-সভাপতি থাকলেও, ২০১৮ সালে তিনি পদত্যাগ করেন।
সদস্য সালাহউদ্দীন নানুপুরী চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির জামিয়া ওবায়দিয়া নানুপুর মাদ্রাসার মহাপরিচালক। তবে কখনও কোনো দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না।
আরেক সদস্য মিজানুর রহমান (পীরসাহেব দেওনা) গাজীপুরের কাপাসিয়ার মাদ্রাসা দাওয়াতুল হকের প্রতিষ্ঠাতা। ২০১৩ সাল পর্যন্ত তিনি বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত থাকলেও, বিএনপি নেতা আ স ম হান্নান শাহের মৃত্যুর পর আর রাজনীতি করেননি। তিনি কাপাসিয়ার শহীদ তাজ উদ্দিন আহমেদ কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন।
বিলুপ্ত কমিটিতে বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গী যারা
নতুন কমিটিকে যাদেরকে রাখা হয়, তাদের মধ্যে যাদের রাজনৈতিক পরিচয় আছে, তারা সবাই বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন জোট ২০ দলের শরিক।
ওই কমিটির মহাসচিব করা হয় নূর হোসাইন কাসেমীকে। তিনি বিএনপি জামায়াত জোটের শরিক জমিয়তে উলামায়ে ইসলামীর একাংশের নেতা। পরে তিনি মারা যান।
দলের নেতা মাওলানা জিয়াউদ্দীন, মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক জায়গা পান সংগঠনের উপদেষ্টামণ্ডলীতে।
নায়েবে আমির পদে জমিয়তের ছয়জন নেতা জায়গা পান। তারা হলেন মাওলানা আব্দুল হামিদ (মধুপুর), মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ সাদী, মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া, মাওলানা আনোয়ারুল করিম (যশোর) ও মাওলানা নুরুল ইসলাম খান (সুনামগঞ্জ)।
নতুন চার যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন এই দলের। তাদের দুজন হলেন মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব ও মাওলানা নাসির উদ্দিন মুনির।
সহকারী মহাসচিব হন মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী ও মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী।
সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক হন মাওলানা মাসউদুল করীম, মাওলানা শামসুল ইসলাম জিলানী ও মাওলানা তাফহিমুল হক।
অর্থ সম্পাদক হন মুফতি মুনির হোসাইন কাসেমী ও সহকারী অর্থসম্পাদক মাওলানা লোকমান মাজহারী।
সহকারী প্রচার সম্পাদক হন মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াকুব ওসমানী, মুফতি শরীফুল্লাহ ও মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান।
আইন বিষয়ক সম্পাদক হন মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরী। তিনি বিএনপি-জামায়াত জোটের হয়ে ধানের শীষ প্রতীকে সংসদ নির্বাচন করেছেন।
দাওয়াহ সম্পাদক হন মাওলানা নাজমুল হাসান, সহকারী আন্তর্জাতিক সম্পাদক হন মাওলানা শুয়াইব আহমদ, মাওলানা গোলাম কিবরিয়া, সহকারী দপ্তর সম্পাদক হন মাওলানা সিদ্দিকুল ইসলাম তোফায়েল।
কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে মনোনীত হন জামিল আহমদ চৌধুরী, বশির আহমদ, তাফাজ্জল হক আজিজ, আলী আকবর সাভার, আবু আব্দুর রহিম, আব্দুল কুদ্দুস, মুহাম্মদ উল্লাহ জামি, মাওলানা হাবিবুল্লাহ মাহমুদ কাসেমী।
বিএনপি-জামায়াত জোটের শরিক খেলাফত মজলিসেরও ছয়জন নেতা স্থান পান কমিটিতে। এদের মধ্যে উপদেষ্টামণ্ডলীতে ছিলেন দলের আমির মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাক। নায়েবে আমির হন আহমাদ আবদুল কাদের, যিনি ছাত্রজীবনে ইসলামী ছাত্র শিবিরের সভাপতি ছিলেন।
এই দলের মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন হন নায়েবে আমির।
সহকারী আন্তর্জাতিক সম্পাদক হন মাওলানা আবদুল কাদের সালেহ ও আহমদ আলী কাসেমী।
মামুনুলের দলের যারা ছিলেন
সাম্প্রতিক সময়ে তুমুল আলোচিত হয়ে ওঠা মামুনুল হকের রাজনৈতিক দল খেলাফত মজলিসের আরেক অংশও ১৯৯৯ সালে বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ হয় ইসলামী ঐক্যজোটের শরিক হিসেবে।
তবে ২০০৬ সালে বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করলেও ২০১৩ সালের দিকে আবার সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে দুই দলের। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে জোটবদ্ধ আর হয়নি তারা।
২০১৩ সালের শাপলা চত্বরে অবস্থানের সময় মামনুল হকই সকালে নতুন সরকারের ঘোষণা দিয়েছিলেন।
এই দলের আমির মাওলানা ইসমাঈল নূরপুরীকে বিলুপ্ত কমিটির উপদেষ্টা করা হয়। নায়েবে আমির হন সাবেক মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক। যুগ্ম মহাসচিব হন মামুনুল হক।
মাওলানা খোরশেদ আলম কাসেমী ও মাওলানা জালালুদ্দিন হন সহকারী মহাসচিব। যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন হন সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক। মওলানা ফয়সাল আহমদ হন সহ প্রচার সম্পাদক।
দলটির বেশ কয়েকজন ভক্ত ও অনুসারী আলেম জায়গা পেয়েছেন হেফাজতের বিভিন্ন পদে।
হেফাজতের উত্থান যেভাবে
২০১০ সালে নারীনীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনের অংশ হিসেবে কওমি ঘরানার সব দল ও সংগঠন মিলে গঠন করে হেফাজতে ইসলাম। আমির করা হয় চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রধান শাহ আহমেদ শফীকে। কওমি আলেমদের মধ্যে তিনি মুরুব্বি হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
তবে সংগঠনটি আলোচিত হয়ে উঠে ২০১৩ সালের এপ্রিল-মে মাসে।
ওই বছর যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে গণজাগরণমঞ্চ নামে যে আন্দোলন গড়ে ওঠে, সেই আন্দোলনের নেতাদের ধর্মদ্রোহী আখ্যা দিয়ে তাদের ফাঁসি দাবি করে হেফাজত। তারা নানা কর্মসূচি দিয়ে ৫ মে ঢাকা অবরোধের ঘোষণা দেয়।
সেদিন বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষের পর হঠাৎ করে বিকেলে সংগঠনটি শাপলা চত্বরে সমাবেশের ঘোষণা দেয়। আর বিকেলে সেখানে জড়ো হওয়ার পর সেখান থেকে সরে দাঁড়াতে অস্বীকার করে। একপর্যায়ে তারা সরকার পতনের দাবি করতে তাকে।
দিনভর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায় হেফাজত কর্মীরা। ওই সমাবেশে অংশ নিয়ে পরদিন থেকে নতুন সরকারের ঘোষণাও দেয়া হয়।
সেই সমাবেশকে ঘিরে হেফাজত সে সময়ের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করেছিল বলে হেফাজতের গ্রেপ্তার এক নেতা আদালতে জানিয়েছেন। তিনি জানান, বিএনপির এক নেতা তাদের পাঁচ কোটি টাকা সহায়তা দিয়েছিলেন। পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, সেই নেতা হলেন আবদুল আউয়াল মিন্টু।
যদিও হেফাজতের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
তবে হেফাজত যখন শাপলা চত্বরে অবস্থান করে, সে সময় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তার কর্মী-সমর্থকদের রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানান। যদিও বিএনপির সেই স্বপ্ন সে সময় পূরণ হয়নি।
ওই রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের মুখে হেফাজত কর্মীরা শাপলা চত্বর ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। আর অভিযানের পর হাজার হাজার মানুষকে হত্যার গুজব ছড়িয়ে পড়ে।
বিএনপি ঘরানা ত্যাগ করে সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক
যদিও পরে কারও নাম দিতে পারেননি হেফাজত আর সংগঠনের সে সময়ের শীর্ষ নেতারা। পরে বিএনপি-জামায়াত জোটের সঙ্গ ত্যাগ করে সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন।
এর একপর্যায়ে কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ ডিগ্রি দাওরায়ে হাদিসকে ইসলামিক স্টাডিজে মাস্টার্সের সমমান দিয়ে কওমি অঙ্গনের দীর্ঘ বছরের দাবি পূরণ করে সরকার। এই সনদের স্বীকৃতির আশায় ১৯৯৯ সালে বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়েছিল কওমি রাজনৈতিক দলগুলোর জোট ইসলামী ঐক্যজোট।
পরিস্থিতি পাল্টে যায় গত সেপ্টেম্বরে
গত সেপ্টেম্বরে হাটহাজারী মাদ্রাসায় হাঙ্গামায় আল্লামা শফীর মৃত্যুর পর পরিস্থিতি আবার ঘোলাটে হয়।
গত ১৫ নভেম্বর বাবুনগরীকে আমির করে হেফাজতের ইসলামের ১৫১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়।
সংগঠনটি বরাবর নিজেদের অরাজনৈতিক দাবি করে আসলেও এই ১৫১ জনের সিংহভাগেরই রাজনৈতিক পরিচয় আছে। আর এদের বেশির ভাগই বিএনপি-জামায়াত জোটের শরিক।
এবার কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে ২০ দলীয় জোট ছেড়ে আসা দলগুলোর নেতাদের বাদ দেয়ার পরই হেফাজতের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়।
গোপালগঞ্জের গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসার মাওলানা রুহুল আমিন দুটি কওমি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান। তাকেও কোনো পদে রাখা হয়নি, যদিও বাকি চারটি বোর্ডের চেয়ারম্যানদের রাখা হয়েছে।
রুহুল আমিন আওয়ামী ঘনিষ্ঠ আলেম হিসেবে পরিচিত। তিনিও কওমি সনদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।
বাদ পড়েছেন বিএনপি-জামায়াত জোট থেকে বের হয়ে যাওয়া ইসলামী ঐক্যজোটর মহাসচিব মুফতি মোহাম্মদ ফয়জুল্লাহ। তিনি আগের কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন।
তবে ২০ দল ছাড়ার পর ইসলামী ঐক্যজোট থেকে বের হয়ে অন্য দলে যোগ দেয়া জুনায়েদ আল হাবিবকে ঠিকই কমিটিতে রাখা হয়েছে।
রাজনীতি নিয়ে নাক গলানো শুরু
হেফাজতের নতুন কমিটি গঠন হওয়ার পরেই সংগঠনের নেতারা রাজনৈতিক বিষয়ে নানা বক্তব্য দিতে থাকেন।
হেফাজত নেতারা নানা সভা সমাবেশ ও ওয়াজে বলতে থাকেন, তাদের কথা শুনে দেশ চালাতে হবে। এমনকি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় তারা। এমন বক্তব্যও আসে যে ভাস্কর্য নির্মাণ করা হলে, তা টেনে ফেলে দেয়া হবে। আবার শাপলা চত্বর পরিস্থিতি তৈরি করা হবে।
তবে হেফাজত সহিংস হয়ে ওঠে গত ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু ভারতের সরকারপ্রধান নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে।
মোদি ঠেকাতে হঠাৎ করেই মাঠে নামে সংগঠনটি। যদিও সফরের চার দিন আগে ২২ মার্চ ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনটি ঘোষণা দেয়, মোদির সফরের বিরোধী হলেও তারা কোনো কর্মসূচি দেবে না।
তবে হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক ২৫ মার্চ বায়তুল মোকাররমের সামনের সমাবেশে ঘোষণা করেন, মোদি দেশে এলে সরকার পতনের ক্ষেত্র তৈরি করবেন তারা।
আরও পড়ুন:
কদিন ধরেই তীব্র গরম। দেশের কোথাও মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হচ্ছে, তবে গরম অবশ্য কমছে না। আবহাওয়া আপাতত এমনই থাকবে।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এ তথ্য দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কুমিল্লা ও কিশোরগঞ্জ অঞ্চলসহ ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এতে বলা হয়, একই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
অধিদপ্তর বলছে, রাজশাহী, পাবনা ও টাঙ্গাইল জেলাসহ খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং চাঁদপুর ও মৌলভীবাজার জেলাসহ ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশ ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।
আবহাওয়ার সার্বিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
আগামী পাঁচ দিনের পূর্বভাসে বলা হয়েছে, তাপপ্রবাহ প্রায় একই রকম থাকতে পারে। আবহাওয়ায় তেমন পরিবতর্তন আসবে না।
দেশে চলমান দাবদাহ শুক্রবার থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শুক্রবার তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তায় এ কথা জানায়।
আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক স্বাক্ষরিত সতর্কবার্তায় বলা হয়, ‘দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ আজ (১৯ এপ্রিল, ২০২৪) হতে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে এবং তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
‘জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।’
৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাস
আবহাওয়া অধিদপ্তর শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলেছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে রয়েছে।
তাপপ্রবাহ বা দাবদাহের বিষয়ে বলা হয়, বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে দিনাজপুর, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা, বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলা এবং ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এটি অব্যাহত থাকতে পারে।
আরও পড়ুন:প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে মোট বৈধ প্রার্থী দাঁড়িয়েছে এক হাজর ৭৮৬ জন। মাঠ পর্যায় থেকে পাঠনো তথ্য একীভূত করার পর এ তথ্য জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।
তিনি জানান, প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন এক হাজার ৮৯০ জন। এদের মধ্যে বাছাইয়ে ১০৪ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল, আর বৈধতা পেয়েছে এক হাজার ৭৮৬ প্রার্থীর।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ১৮ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত আপিল করা যাবে। আপিল নিষ্পত্তি ২১ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। এরপর প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল এবং ১৫০ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে আগামী ৮ মে।
অপপ্রচার রোধে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হলে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে প্রতিমন্ত্রীর নিজ দপ্তরে ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মার সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
আরাফাত বলেন, ‘অপপ্রচার রোধে ভারতের কিছু প্রতিষ্ঠান কাজ করে। তারা কীভাবে কাজ করে, তাদের অভিজ্ঞতা এবং প্রক্রিয়া-পদ্ধতি বিনিময় জানা-বোঝার চেষ্টা করব। এক্ষেত্রে কোনো প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হলে আমরা তাদের কাছ থেকে সহায়তা নেব।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে যেসব কো-অপারেশন আছে, সেসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে বিটিভিতে দুই ঘণ্টার একটি চাংক নিয়ে আমরা আন্তর্জাতিক সংবাদ বিশ্লেষণ, চলমান ঘটনাপ্রবাহ এবং সংবাদ উপস্থাপনা শুরু করতে যাচ্ছি। সেক্ষেত্রে ভারতের যে সংবাদ সংস্থাগুলো আছে, বিশেষ করে এএনআইয়ের সঙ্গে কোলাবরেশন করা যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
‘যেহেতু বিটিভি ইন্ডিয়াতে দেখানো হয়, সেহেতু দুই ঘণ্টার এ চাংক আমরা ধীরে ধীরে দুই, তিন, চার ঘণ্টা পর্যন্ত বাড়াব। আমরা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী করতে চাচ্ছি, যেখানে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের খবর থাকবে। এর বাইরেও বিভিন্ন দেশের খবর থাকবে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করব ভারতীয় দর্শকদের আকৃষ্ট করতে। এ ছাড়া ইন্ডিয়ান ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন নিয়ে ইনস্টিটিউশন আছে, তাদের সঙ্গে কোলাবরেশন করা, বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রাম ও ট্রেনিং করা।’
‘সম্প্রতি মুজিব শিরোনামের যে সিনেমাটি সহ-প্রযোজনা হয়েছে, এমন অন্য কোনো সিনেমায় সহ-প্রযোজনার সুযোগ আছে কি না তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে’- যোগ করেন প্রতিমন্ত্রী।
ভারতের সিনেমা যেহেতু বাংলাদেশের বাজারে চলে সেহেতু বাংলাদেশেরও ভালো মানের সিনেমা ভারতে চালানোর বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দর্শককে জোর করে কিছু দেখানো যায় না। বাজারে কোনো জিনিসের চাহিদা থাকলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই যাবে-আসবে। সিনেমা যেহেতু প্রোডাক্ট, সেহেতু ভারতের বাজারে দর্শক থাকলে অবশ্যই যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের আরও কো-অপারেশনের সুযোগ আছে, সেসব নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আমি মনে করি- বাংলাদেশ এ বিষয়ে বেশি লাভবান হবে। কারণ ভারতের ফিল্মে, টেলিভিশনে বা অন্যান্য জায়গায় যে অভিজ্ঞতা আছে, তা আমরা যত বেশি নেয়ার চেষ্টা করা যায়। দেশের উন্নয়নের জন্য এসব জরুরি।’
আরও পড়ুন:সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি অর্জনে অবদান রাখতে এবং দেশকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করায় অবদান রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সবকিছু করছে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে ‘ডিফেন্স ডিপ্লোমেসি: স্ট্র্যাটেজি ফর বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সূত্র: ইউএনবি
সেনাপ্রধান বলেন, ‘মাতৃভূমিকে রক্ষা করা, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য এবং আমরা তার জন্য প্রস্তুত আছি। আমরা সবকিছুই করছি।’
বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্র নীতির বাণী ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নে আমরা সবকিছু করছি।’
জাতীয় নিরাপত্তা বজায় রেখে টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে সেনাপ্রধান বলেন, ‘কূটনীতি যেকোনো ধরনের জাতীয় স্বার্থ অর্জনের প্রচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়।’
বেসামরিক শক্তির সহায়তায় সেনাবাহিনী কীভাবে দেশে গঠনমূলক কর্মকাণ্ড, দেশ-বিদেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে সে কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
সেনাপ্রধান বলেন, ‘যেখানেই সুযোগ আছে, তা প্রত্যক্ষ হোক বা পরোক্ষ, আমরা সুযোগ গ্রহণ করি এবং বাংলাদেশের স্বার্থে সবকিছু করি।’
সামরিক কূটনীতির কথা বলতে গিয়ে জেনারেল শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আরও সম্পদ ও বাজেট বরাদ্দ করে তাদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। আমরা জানি কীভাবে এটা করতে হয়। কিন্তু আমাদের এটা করার সামর্থ্য থাকা উচিত।’
মিয়ানমার ইস্যু প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেন, ‘মিয়ানমারের সামরিক নেতাদের কেউ কেউ আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হচ্ছেন এবং এখানে নিজেদের সমস্যায় ফেলার ঝুঁকি রয়েছে।
‘এক বন্ধুকে খুশি করার জন্য আমরা আরেক বন্ধুর বিরোধিতা করতে পারি না। বেশকিছু বিষয় রয়েছে যা আমাদের খেয়াল করতে হবে। এসব ঘটনার প্রভাবও বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি এবং আমরা সঠিক পথেই রয়েছি।’
জেনারেল শফিউদ্দিন বলেন, দূর থেকে চালানো যায় এমন কিছু যানবাহন দেশেই তৈরি হচ্ছে যা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জন্য বেশ উপকারে আসবে। আগে এসব যন্ত্রপাতি আমদানি করতে হতো। তাই এখন আমাদের প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে।’
সেনাপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কেবল যুদ্ধে লড়াই করাই শেখে না, বরং জাতীয় স্বার্থে কীভাবে যুদ্ধ প্রতিরোধ বা এড়াতে হয় তা-ও জানে। আমরা সঠিক পথেই আছি এবং আমরা আমাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হবো না।’
একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা সামরিক বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব। এটি তারা কখনও ভুলে যায় না এবং এ কাজে সবসময় তাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।
‘উদ্দেশ্য রাতারাতি পরিবর্তন হতে পারে। কিন্তু সক্ষমতা রাতারাতি পরিবর্তন হয় না। আজ আপনি আমার বন্ধু, আগামীকাল বন্ধু না-ও হতে পারেন। কিন্তু জাতীয় স্বার্থ, মাতৃভূমি রক্ষায় আমাদের সক্ষমতা থাকতে হবে- পররাষ্ট্রনীতির এই আদেশ আমাদের সবার জন্য সমান।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিআইআইএসএস চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত এ এফ এম গওসোল আযম সরকার ও মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. আবু বকর সিদ্দিক খান।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
বিজিবি মহাপরিচালক বৃহস্পতিবার সকালে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ১১ বিজিবি ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরের কোয়ার্টার গার্ড পরিদর্শন শেষে বিজিবি কার্যালয় পরিদর্শন করেন। দুপুরে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা বর্ডার গার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয়া প্রতিবেশী দেশটির জান্তা বাহিনীর সদস্যদের খোঁজখবর নেন তিনি।
পরে তিনি ১১ বিজিবির অধীন চাকঢালা বিওপি (বর্ডার অবজারবেশন পোস্ট) পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি মিয়ানমার থেকে জান্তা বাহিনীর সদস্যদের পালিয়ে আসার স্পটগুলো সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। সীমান্তে বিজিবিকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেন।
পরিদর্শনকালে বিজিবি মহাপরিচালকের সঙ্গে ছিলেন কক্সবাজার রিজিয়ন কমন্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মোরশেদ আলমসহ বিজিবি রামুর সেক্টর ও অধীনস্ত বিজিবি ব্যাটালিয়নে নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবি’র জোন কমন্ডার ও অধিনায়ক লে. কর্নেল সাহল আহমদ এসিসহ বিজিবির কর্মকর্তারা।
বান্দরবানে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া ৫৩জনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। রুমা থানার দুটি মামলায় বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেয়া হয়। পাশাপাশি এক নারীকে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদসহ মামলায় ৫৭জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
বান্দরবান সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ নাজমুল হোছাইন বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলার শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
আদালতে আসামি পক্ষে একাধিক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। আইনজীবীরা জানান, রুমা থানার জিআর মামলা নং- ৪ ও ৭ মামলায় পুলিশ আসামিদের আদালতে হাজির করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে। আদালত উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ৫৩জনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। এর মধ্যে ৫২জনকে দু’দিন করে রিমান্ড এবং একজনকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয়া হয়।
এর আগে বান্দরবান জেলা কারাগার থেকে কঠোর নিরাপত্তায় ১৮জন নারী ও ৩৯জন পুরুষ বন্দিকে দুটি গাড়িতে করে আদালতে হাজির করা হয়। সম্প্রতি বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকে লুটের ঘটনায় তাদেরকে রুমা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে বান্দরবানে চলমান যৌথ অভিযানে সন্দেহভাজন আরও একজনকে আটক করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৬৬জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য