করোনাভাইরাসের ভারত স্ট্রেইন নিয়ে যখন দুশ্চিন্তা, তখন দেশটি থেকে আক্রান্ত সাত ব্যক্তি দেশে এসে হাসপাতাল থেকে পলিয়ে যাওয়া তৈরি করেছে নতুন উদ্বেগ। এদের সবাইকে প্রশাসন খুঁজে ধরে এনেছে সত্য, তবে তারা যাদের সংস্পর্শে এসেছেন, তাদের সবাইকে খুঁজে বের করার কাজটি সহজ নয়।
তবে তারা যেখানে আছেন, সেই যশোরের চিকিৎসা প্রশাসন বলছে, তাদের এখানে করোনার ভ্যারিয়েন্ট খুঁজে বের করার কোনো উপায় নেই।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, সেই সাতজনের শরীরে করোনার কোন ধরনের স্ট্রেইন রয়েছে, সেটি খুঁজে বের করতে পরীক্ষা করা হবে। এ জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে নমুনা পাঠাতে বলা হবে। ঢাকাতেই সে পরীক্ষা হবে।
তবে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়া করোনা রোগীরা এরই মধ্যে কতজনের মধ্যে ভাইরাস ছড়িয়েছেন, সেই প্রশ্নের জবাব জানা সম্ভব নয়।
যশোর প্রশাসন বলছে, তারা যেসব বাড়িতে গিয়েছেন, সেসব বাড়িতে নজরদারি করা হবে। কিন্তু হাসপাতালেই যেখানে তাদের ধরে রাখা গেল না, সেখানে বাড়ির লোকজনকে কতটা নজরদারিতে রাখা হবে, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন।
করোনায় ভারতে বেঙ্গল ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সোমবার থেকে ১৪ দিনের জন্য সীমান্ত বন্ধ হয়ে গেছে।
আর আগে গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার ভারত থেকে দেশে আসার পর করোনা পজিটিভ প্রমাণ হওয়ার পর সাতজনকে যশোর জেনারেল হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়।
কিন্তু পাহারার ব্যবস্থা না থাকায় সবাই সেখান থেকে পালিয়ে যান। বিষয়টি জানাজানি হয় রোববার। সেদিন রাতে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক প্রথমে দাবি করেন দুইজন পালিয়েছেন, পরে স্বীকার করেন দশজনের কথা। অর্থাৎ ভারত থেকে আসা সাতজনের পাশাপাশি হাসপাতালে আগে থেকে থাকা তিনজনও পালিয়ে যান।
পরে রোববার পুলিশ পাঠিয়ে সবাইকে বাড়ি থেকে নিয়ে আসা হয়। রাত ৮টা পর্যন্ত এদের মধ্যে ছয়জনকে হাসপাতালে ফিরিয়ে আনা হয়েছে, বাকিরা ছিলেন পথে।
তারা কারা
ভারত থেকে এসে যারা পালিয়েছেন, তারা হলেন যশোর সদরের পশ্চিম বালান্দিপাড়ার বিশ্বনাথ দত্তের স্ত্রী মনিমালা দত্ত, খুলনা সদরের সদরের কলিম কৃষ্ণের ছেলে বিবেকানন্দ, রূপসার শের আলীর ছেলে সোহেল সরদার, পাইকগাছার আহমেদ সানার ছেলে আমিরুল সানা।
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার জালাল হোসেনের ছেলে মিলন হোসেন এবং কালিগঞ্জের মনতোষ সর্দারের স্ত্রী শেফালী রানীও পালিয়ে যান হাসপাতাল থেকে।
অপরজন হলেন রাজবাড়ী সদরের গোলাম রব্বানীর মেয়ে নাসিমা আক্তার।
অন্য যে তিনজন পালান তারা ভারত থেকে আসেননি। এরা হলেন যশোর সদরের পাঁচবাড়িয়া এলাকার একরামুল কবিরের স্ত্রী রুমা, রবিউল ইসলামের স্ত্রী ফাতেমা এবং অপরজন সদর উপজেলার ভদ্র বিশ্বাসের ছেলে সদরের প্রদীপ বিশ্বাস।
কী করছে চিকিৎসা প্রশাসন
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক দিলীপ কুমার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তারা পালিয়ে যাদের সংস্পর্শে এসেছেন, তাদের মধ্যে যাদের চিহ্নিত করা গেছে, তাদের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হবে।’
তবে তাদের আইসোলশনে রাখা হয়নি জানিয়ে এই চিকিৎসা কর্মকর্তা বলেন, ‘যেসব বাড়িতে তারা গিয়েছে সেখানে তাদের রেস্ট্রিকটেড করেছে প্রশাসন।’
ভারতফেরত এই সাতজন করোনার কোন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত, সেটি পরীক্ষা করা হবে কি না, জানতে চাইলে ‘না’ সূচক জবাব দেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক দিলীপ কুমার।
একই কথা জানিয়েছেন যশোরের সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন। এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট আলাদাভাবে পরীক্ষা করার কোনো সুযোগ নেই।’
ভ্যারিয়েন্ট জানা জরুরি
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য ও করোনা মোকাবিলায় সরকারের পরামর্শক কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভারত থেকে আসা লোকদের শরীরে করোনার কোন ভ্যারিয়েন্ট ছিল, এটা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতেই হবে।’
তিনি বলেন, ‘তারা পালিয়ে কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন সেগুলো খুঁজে বের করতে হবে। তাদের সংস্পর্শে যারা আসছে তাদের বের হয়ে অবশ্যই প্রাতিষ্ঠানিক কোয়াইন্টাইনে রাখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘যদি তাদের শরীরে ভারতের ভ্যারিয়েন্ট ধরা পড়ে, তাহলে এটা অবশ্যই শঙ্কার বিষয়। সরকারের উচিত হবে দ্রুত পরীক্ষার ব্যবস্থা করা।’
কী করবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের (এমআইএস) পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভারত থেকে আগতদের শরীরে কোন ধরনের ভ্যারিয়েন্ট ছিল, সেটা পরীক্ষা করা হবে। সেটা জেলাতে করা সম্ভব নয়। যে জন্য তাদের নমুনা ঢাকাতে এনে পরীক্ষা করতে হবে।’
‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলবে। নমুনা হয়তো কালই ঢাকাতে নিয়ে আসা হবে। নমুনা পরীক্ষার পর কোন দেশের ভ্যারিয়েন্টে তারা আক্রান্ত এ বিষয়ে নিশ্চিতভাবে বলতে পারব।’
করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের মধ্যে উদ্বেগ যে স্পষ্ট, সেটা চলমান লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোতেই বোঝা গেছে।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন নিউজবাংলাকে জানান, চলমান লকডাউন যে আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে, সেটি ভারতের পরিস্থিতি দেখেই। তিনি বলেন, ‘ভারতের অবস্থাটা এত খারাপ করেছে যে, এটা নিয়ে আমরা খুব ভয় পাচ্ছি। এটা যদি বাংলাদেশে চলে আসে...ইতোমধ্যে যশোরে দুজন পাওয়া গেছে। এ কারণে এটা আমাদের সাবধানতা, আমাদের ডিসিশান।’
বেঙ্গল ভ্যারিয়েন্টে কাঁপছে ভারত
করোনাভাইরাস ভারতে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। যে ভ্যারিয়েন্টটি সেখানে ছড়িয়েছে তার নাম দেয়া হয়েছে বেঙ্গল ভ্যারিয়েন্ট।
দেশটির হাসপাতালে রোগী উপচে পড়ছে। অনেক হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহ শেষ হয়ে যাওয়ার খবর আসছে। টানা পাঁচ দিন ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা তিন লাখ ছাড়িয়ে গেছে। ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু তিন হাজার ছুঁই ছুঁই।
দ্বিতীয় ঢেউয়ে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের যুক্তরাজ্য ও সাউথ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়েছে বেশি। গত বছর দেশে যে ভ্যারিয়েন্ট এসেছিল তার চেয়ে এই দুই ভ্যারিয়েন্ট বেশি সংক্রামক। পাশাপাশি মানুষকে বেশি ভোগাচ্ছে, দ্রুত অক্সিজেন সাপোর্ট এমনকি আইসিইউ লাগছে।
এর মধ্যে ভারত ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে উদ্বেগ আছে করোনা মোকাবিলায় গঠিত জাতীয় কমিটির মধ্যে। ২৪ এপ্রিল তারা অবিলম্বে ভারত সীমান্ত বন্ধ করার পরামর্শ দেয়ার পরদিনই সরকার ১৪ দিনের জন্য ভারতের সঙ্গে যাতায়াত বন্ধ করে।
আরও পড়ুন:ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. কামরুজ্জামান রবিবার যে প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন, তাতে বলা হয়, ‘সরকার আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করল। ছুটিকালীন সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।
‘তবে জরুরি পরিষেবা, যেমন: বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের কার্যক্রম, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবা এবং এ সংশ্লিষ্ট সেবা কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।’
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ‘হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এবং এ সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা এই ছুটির আওতা-বহির্ভূত থাকবে। চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও কর্মীরা এবং ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বহনকারী যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।
‘জরুরি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত অফিসসমূহ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে। ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে। আদালতের কার্যক্রমের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবেন।’
সীমান্তবর্তী নাফ নদে অভিযানে গিয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ৩৩ জন সদস্য নিখোঁজের বিষয়টি গুজবনির্ভর অপপ্রচার বলে জানিয়েছে বিজিবি ।
বাহিনীর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শনিবার রাতে দেওয়া পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে যে, গত দুই দিন ৩৩ জন বিজিবি সদস্য নাফ নদীতে মিশনে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের গুজবনির্ভর এ অপপ্রচারে বিজিবির দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত এই তথ্যটি ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
‘প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে ২২ মার্চ ভোররাতে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিমপাড়া ঘাটের নিকট দিয়ে রোহিঙ্গাবোঝাই একটি নৌকা অবৈধ উপায়ে সাগরপথে বাংলাদেশে আসার সময় প্রবল স্রোতের কারণে নৌকাটি উল্টে যায়। খবর পেয়ে সৈকতের পার্শ্ববর্তী স্থানে কর্তব্যরত বিজিবি সদস্যরা স্থানীয় জেলেদের সঙ্গে নিয়ে রোহিঙ্গাদের উদ্ধারের জন্য ছুটে যায় এবং ২৪ জন রোহিঙ্গাকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। উদ্ধারকাজ চলাকালে সমুদ্র উত্তাল থাকায় এবং অন্ধকার রাতের কারণে একজন বিজিবি সদস্য সম্ভাব্য পা পিছলে পড়ে সমুদ্রে নিখোঁজ হয়।’
পোস্টে আরও বলা হয়, ‘পরবর্তীতে ডুবে যাওয়া নৌকাসহ ২৪ জন রোহিঙ্গাকে জীবিত উদ্ধার করেছে বিজিবি। সম্পূর্ণ দুর্ঘটনাটি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক এবং বর্তমানে নিখোঁজ একজন বিজিবি সদস্যসহ অন্যান্য রোহিঙ্গাদের উদ্ধার ও সার্চ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।’
গণমাধ্যমে বর্তমানে বাস্তবায়নযোগ্য সংস্কার প্রস্তাবগুলো শিগগিরই কার্যকর করা হবে বলে শনিবার জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়।
পোস্টে বলা হয়, ‘গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের কাছ থেকে প্রাপ্ত সংস্কার প্রস্তাবগুলোর মধ্যে যেগুলো এখনই বাস্তবায়নযোগ্য সেগুলো অনতিবিলম্বে কার্যকর করার ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রতিবেদন হস্তান্তরকালে প্রধান উপদেষ্টা এই মন্তব্য করেন।’
প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্ধৃত করে পোস্টে বলা হয়, ‘সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে যেগুলো এখনই বাস্তবায়ন করা সম্ভব, সেগুলো আমরা দ্রুত বাস্তবায়ন করে ফেলতে চাই। সে জন্য আমি চাইব সংস্কার কমিশন আশু করণীয় বা দ্রুততার সঙ্গে বাস্তবায়ন করা যায় এমন সুপারিশগুলো দ্রুত আলাদাভাবে আমাদের কাছে পেশ করুক।’
জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কামাল আহমেদের নেতৃত্বাধীন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের এ কাজকে অমূল্য হিসেবে অভিহিত করে এ প্রতিবেদন যেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীসহ অন্যান্য মানুষ পড়তে পারেন, সে লক্ষ্যে কাজ করার পরামর্শ দেন তিনি।
দেশীয় টেলিভিশন চ্যানেলগুলো একটি নির্দিষ্ট স্যাটেলাইট ব্যবহারে বাধ্য বলে বিদেশ থেকে বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো দেখা যায় না। কমিশনের পক্ষ থেকে এমন তথ্য পাওয়ার পর প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো যাতে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা এবং আগ্রহী বিদেশিরা দেখতে পারেন, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে সরকার।’
কমিশনপ্রধান কামাল আহমেদসহ অন্য সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টার হাতে তাদের প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন।
কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, দ্য ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক ও সম্পাদক পরিষদের প্রতিনিধি শামসুল হক জাহিদ, অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন ওনার্স (অ্যাটকো) প্রতিনিধি ও মাছরাঙা টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী, নিউজ পেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) সচিব আখতার হোসেন খান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, যমুনা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের ট্রাস্টি ফাহিম আহমেদ, মিডিয়া সাপোর্ট নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক সাংবাদিক জিমি আমির, ডেইলি স্টারের বগুড়া জেলা প্রতিনিধি মোস্তফা সবুজ, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের ডেপুটি এডিটর টিটু দত্ত গুপ্ত এবং শিক্ষার্থী প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মামুন।
আরও পড়ুন:রাজধানীর উত্তরায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) সদরদপ্তর পরিদর্শন করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
সরকারি ছুটির দিন শনিবার সকালে এ পরিদর্শনকালে উপদেষ্টা বাহিনী দুটির কার্যক্রম সম্পর্কে খোঁজখবর নেন এবং অধস্তন ফোর্সদের বাসস্থান, খাবার ও আনুষঙ্গিক সুবিধা নিশ্চিতকরণ এবং এ সম্পর্কে যত্নবান হওয়ার জন্য জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
তিনি বাহিনী দুটির সদস্যদের জনসেবার মানসিকতা নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। ওই সময় বাহিনী দুটির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে পুলিশের টহল কার্যক্রম আকস্মিক পরিদর্শন করেন জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
ওই দিন ভোরে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ও মোড়ে স্থাপিত পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বিত চেকপোস্ট বা তল্লাশি চৌকির কার্যক্রম ও কয়েকটি থানা ঘুরে দেখেন তিনি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, উপদেষ্টা তার বারিধারার ডিওএইচএসের বাসা থেকে বের হয়ে বনানী মোড়, বিজয় সরণি (নভো থিয়েটার), মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, কলাবাগান, ইডেন কলেজ হয়ে নিউ মার্কেট থানা পরিদর্শন করেন। পরবর্তী সময়ে নিউ মার্কেট থানা থেকে শাহবাগ মোড়, মৎস্য ভবন, মগবাজার, হাতিরঝিল, পুলিশ প্লাজা হয়ে গুলশান থানা ঘুরে দেখেন।
পরিদর্শন শেষে গুলশান থানা থেকে ইউনাইটেড হাসপাতাল হয়ে বারিধারার বাসায় ফিরে যান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। পথে তিনি আশপাশের কিছু অলিগলিও ঘুরে দেখেন।
পরিদর্শনকালে উপদেষ্টা থানা ও চেকপোস্টে দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন ও তাদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন।
রাজধানীসহ সারা দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকারও নির্দেশনা দেন তিনি।
আরও পড়ুন:প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং কোনো দাবির কারণে ভোট পিছিয়ে দেওয়া হবে না।
ঢাকায় ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ড. কমফোর্ট ইরোর নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৃহস্পতিবার আলোচনায় অধ্যাপক ইউনূস এ কথা বলেন।
তিনি জানান, সরকার নির্বাচনের জন্য দুটি সম্ভাব্য সময়সীমা নির্ধারণ করেছে এবং নির্ধারিত তারিখ পরিবর্তন করা হবে না।
ভোটের তারিখের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যদি রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের আগে সীমিতসংখ্যক সংস্কার চায়, তাহলে নির্বাচন এ বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে। আর যদি বৃহত্তর সংস্কার প্রক্রিয়ার প্রয়োজন হয়, তাহলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের কোনো কারণ নেই। আসন্ন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে।
প্রবাসে যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশি কর্মীদের ভোগান্তি নতুন কিছু নয়। প্রতি বছরই অসংখ্য স্বপ্ন ঝরে পড়ে শুধু সময়মতো বিএমইটি বহির্গমন ছাড়পত্র না পাওয়ার কারণে। তবে বর্তমানে ঘরে বসেই কোনো প্রকার ভ্রমণ ও বাড়তি খরচ ছাড়া স্বল্প সময়ের মধ্যে প্রবাসীরা নিতে পারবেন এই বহির্গমন ছাড়পত্র।
২০২৩ সাল থেকে এমন সেবাই দিয়ে আসছে বিশ্বের একমাত্র ওয়ান স্টপ অভিবাসন সেবা প্রদানকারী অ্যাপ ‘আমি প্রবাসী’। চলুন জেনে নিই, কীভাবে বিএমইটি বহির্গমন ছাড়পত্রের আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন ঘরে বসেই।
ক্লিয়ারেন্সের আবেদন করার জন্য প্রথমে বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন ও প্রাক বহির্গমন ওরিয়েন্টেশন (পিডিও) কোর্স সম্পন্ন করতে হবে আগ্রহী প্রার্থীকে। এরপর তিনি ‘আমি প্রবাসী অ্যাপ থেকে সরাসরি বহির্গমন ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আর রিক্রুটিং এজেন্সির (RA) মাধ্যমে আবেদন করলে তারা নিজস্ব পোর্টাল থেকে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করবে।
বহির্গমন ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করতে হলে বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন নম্বর, প্রাক বহির্গমন সার্টিফিকেট বা শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, পাসপোর্ট, ভিসা, ৩০০ টাকার স্ট্যাম্প পেপারে করা চুক্তিপত্র, নারীদের ক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট দেশে গমনের ক্ষেত্রে স্বামী বা অভিভাবকের অনুমতিপত্র (স্ট্যাম্প পেপারে), ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত কাগজপত্র, ওয়ান স্টপ ফরম (শুধু ওয়ান স্টপ সেবা গ্রহণকারী প্রার্থীদের জন্য), মেডিক্যাল টেস্ট রিপোর্ট, নির্দিষ্ট কিছু দেশের জন্য প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত কিছু নথিপত্র এবং চাকরির চুক্তিপত্র (শুধু রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য প্রযোজ্য) জমা দিতে হবে।
ঘরে বসে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে চাইলে প্রথমেই প্রার্থীদের আবেদন ফি বাবদ ৫০ টাকা দিতে হয়। এরপর প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র নিয়ে ইন্টারভিউর জন্য বিএমইটি অফিসে উপস্থিত হতে হয়। আবেদন জমা দেওয়ার পর এটি বিএমইটির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে পর্যায়ক্রমে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়।
ওয়ান স্টপ সেবা গ্রহণকারী বা নিজ উদ্যোগে আবেদন করা প্রার্থীদের আবেদন চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে সরকারি ফি ও আবেদন চার্জ পরিশোধ করতে হয় তাদের। পেমেন্ট সম্পন্ন হওয়ার পর ব্যক্তি কিংবা রিক্রুটিং এজেন্সি উভয়েই বিএমইটি স্মার্ট বহির্গমন ছাড়পত্র কার্ড ডাউনলোড করতে পারেন।
আরও পড়ুন:এখন থেকে ঢাকায় অবস্থিত হাইকমিশন থেকে বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টনি বার্ক।
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে বৃহস্পতিবার ফোনালাপে টনি এ কথা জানান।
প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বৃহস্পতিবার এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়।
পোস্টে বলা হয়, ‘এখন থেকে অস্ট্রেলিয়া ঢাকায় অবস্থিত তাদের হাইকমিশন থেকে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভিসা প্রসেস করবে। বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এই তথ্য জানান।
‘এ সময় তিনি উপদেষ্টা পরিষদকে জানান যে, এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হবে।’
পোস্টে উল্লেখ করা হয়, ‘উল্লেখ্য, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গত বছরের অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বার্কের বাংলাদেশ সফরের সময় তার কাছে এই অনুরোধ করেছিলেন। এর আগে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা নয়াদিল্লি থেকে প্রসেস করত।’
মন্তব্য