সাভারে রানা প্লাজা ধসের আট বছরেও ক্ষতিপূরণ পাননি নিহতদের স্বজন ও আহত শ্রমিকরা। এ জন্যে সরকার ও বিজিএমইএকে দায়ী করছেন তারা।
২০১৩ সালের এই দিনে সাভারে রানা প্লাজা ধসে প্রাণ হারান ১ হাজার ১৩৬ জন। আহতদের মধ্যে পঙ্গু হয়ে যান কমপক্ষে ১ হাজার ১৬৯ জন।
দেশের ইতিহাসে ভয়াবহ শিল্প দুর্ঘটনা রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির অষ্টম বার্ষিকী আজ।
নির্মম এ ঘটনার এত বছর পেরোলেও ক্ষতিপূরণ আর পুনর্বাসনের দোলাচলে রয়েছেন নিহত শ্রমিকদের পরিবারের সদস্য ও আহতরা। তাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন পার হয়ে গেলেও সরকার কিংবা বিজিএমইএ তাদের কোনো খোঁজ নেয়নি। আর দোষীদের বিচারের নামেও তাদের সঙ্গে চলছে প্রহসন।
এখানেই ছিল রানা প্লাজা। নয় তলা ভবনটির ধসের স্থানটি এখন পরিত্যক্ত জমিতে পরিণত হয়েছে। ছবি: নিউজবাংলা
ঘটনার দিন রানা প্লাজার চতুর্থ তলায় আয়রনম্যান হিসেবে কাজ করছিলেন ইমাদুল ইসলাম এমদাদ। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘২৩ এপ্রিল আমরা রানা প্লাজায় আসছিলাম, ডিউটি করছি। ওই দিন মূলত সকাল ১০টার সময় আমাদের বলে যে, বিদ্যুতের সমস্যা। এই জন্য আমাদের সাধারণ ছুটি দেয়া হয়।
‘পরদিন ২৪ এপ্রিলে মাইকিং করে আমাদের সবাইকে জড়ো করা হয়। তখন মালিকপক্ষের কিছু গুন্ডা বাহিনী জোর করে আমাদের গার্মেন্টের ভিতর কাজ করতে ঢোকায়। ওই দিন পৌনে এক ঘণ্টা ডিউটি করার পর একটা বিকট শব্দ হয়। শব্দটা শোনার পরেই দেখি রানা প্লাজা ভাইঙ্গা পড়ছে আমাদের উপরে।’
‘ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ৩৬ ঘণ্টা পর আমাকে উদ্ধার করা হয়। জ্ঞান ফিরে দেখছি আমি এনাম মেডিক্যালে ভর্তি আছি। মৃত্যুযাত্রা থেকে অল্পের জন্যে বেঁচে গেলেও শারীরিক কারণে আমি বেকার হয়ে পড়ি। আমি এখন পিজি হাসপাতালের চিকিৎসার আওতায় আছি।’
ইমাদুল ইসলাম এমদাদ এখন রানা প্লাজা গার্মেন্টস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন।
সাহায্য-সহযোগিতা পেয়েছিলেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সরকার থেকে কিছু আর বিভিন্ন এনজিও থেকে কিছু অনুদান দিছিল। কিন্তু আমাদের নামে যে ১২২ কোটি টাকার ফান্ড ছিল প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে। সেই খান থেকে ২২ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে, যা আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে সংবাদ পাইছি। কিন্তু বাকি ১০০ কোটি টাকার হিসাব চাইলে কোনো হিসাব দিচ্ছে না।’
রানা প্লাজা ধসের ঘটনার পর নির্মিত হয় অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ। ছবি: নিউজবাংলা
গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদারও একই দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘রানা প্লাজা ধসে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এক দিনের বেতন কেটে ১২২ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়। সেই অর্থে রানা প্লাজার নামে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে একটি ফান্ড তৈরি করা হয়।
‘সেখান থেকে পরবর্তী সময়ে ২২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ ও সহায়তা হিসেবে শ্রমিকদের দেয়া হয়েছিল। তবে বাকি এক শ কোটি টাকা অলস পড়ে আছে। যদি এই অর্থ আপাতত ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে দেয়া হয় তাহলে এই দুই হাজার পরিবারের সবার জন্যই যথেষ্ট হবে।’
নিলুফা ইয়াসমিন নামে আরেক শ্রমিক বলেন, ‘ওই দিন আমি চারতলায় কাজ করতেছিলাম। গার্মেন্টসটা ভাইঙ্গা পড়ার আগে আমরা লাইনচিফ, সুপারভাইজারকে বলছিলাম, কি সমস্যা হইছে? তারা বলছে, কিছুই হয় নাই। কিছুই যদি না হয় তো নিচতলার ব্যাংক, মার্কেট ওদের আগে থাইকা কেন সরায় দেয়া হয়। তাইলে আমাগো আগেভাগে জানাইলে কি হইছিল?’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ওই দিন না আসলে সবাই বাইচা যাইতাম। এটা মালিকদের ষড়যন্ত্র। আমরা দোষীদের বিচার চাই।’
গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক খাইরুল মামুন মিন্টু বলেন, ‘আমরা দেখছি রানা প্লাজার শ্রমিক হত্যাকাণ্ডের সাত বছর পূর্তি হলেও শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণের বিষয়টা নিশ্চিত করা হয় নাই। তাদের পুনর্বাসন ও সন্তানদের লেখাপড়ার ব্যবস্থা করা হয় নাই। বারবার দাবি জানানো সত্ত্বেও সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয় নাই।
‘২০১৩ সালে রানা প্লাজায় শ্রমিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পরপরই দেশি-বিদেশি সংস্থা শ্রমিকদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল। তাদের দেয়া এই অর্থকেই এখন দেশের কিছু লোক ও বিজিএমইএ ক্ষতিপূরণ বলার চেষ্টা করতেছে। এটা কোনোভাবেই ক্ষতিপূরণের টাকা হতে পারে না। এটা অনুদানের অর্থ।’
‘রানা প্লাজা ধসের অষ্টম বছরে এসেও আমরা বলতেছি অনুদানের অর্থে নয়, সরকারি অর্থেই হতে হবে রানা প্লাজার শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন।’
তিনি আরও বলেন, ‘রানা প্লাজা ধসের সেই স্থানটিতে বহুতল ভবন নির্মাণ করে শ্রমিকদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। এর পাশেই শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য স্থায়ীভাবে একটা ভাস্কর্য বা বেদি নির্মাণ করতে হবে, যাতে আমরা প্রতিবছর সেখানে গিয়ে সেই রানা প্লাজার শ্রমিকদের স্মরণ করতে পারি।’
আরও পড়ুন:
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সংঘাত কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর পুলিশ সুপারদের (এসপি) সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম।
আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর গুলশান ১ নম্বর সেকশনে বাংলাদেশ পুলিশের বার্ষিক শ্যুটিং প্রতিযোগিতা এবং আইজিপি কাপ ২০২৪-এর সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে আইজিপি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ভারত-পাকিস্তান সংঘাতকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের নিরাপত্তা যেন বিঘ্নিত না হয়, কোনো জঙ্গি বা সন্ত্রাসী যেন আমাদের দেশে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সীমান্ত জেলাগুলোর পুলিশ সুপারদের সতর্ক করা হয়েছে।
আইজিপি বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের সীমান্তবর্তী জেলা ৩০টি এবং মিয়ানমারের সঙ্গে তিনটি। ভারত-পাকিস্তান সংঘাতকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের নিরাপত্তা যেন বিঘ্নিত না হয় সেজন্য সীমান্তবর্তী জেলার পুলিশ সুপারদের আগেই সতর্কবার্তা দেয়া হয়েছে। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করব যেন এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয়।
এদিকে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) বাংলাদেশ পুলিশ বার্ষিক শ্যুটিং প্রতিযোগিতা এবং আইজিপি কাপ-২০২৪ এর চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। রানার্স আপ হয়েছে স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি)।
প্রতিযোগিতায় পয়েন্ট ১৭৭ এয়ার রাইফেল ওপেন সাইট ১০ মিটার (পুরুষ) ইভেন্টে প্রথম হয়েছেন এসবিতে সংযুক্ত নায়েক তানজীব হোসেন খন্দকার, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন এসবির এএসআই (নিরস্ত্র) মো. মনিরুল ইসলাম ও তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন ফেনী জেলার এএসআই (নিরস্ত্র) এবিএসএম হাসান।
একই ইভেন্টে নারীদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন এসবির নারী কনস্টেবল তানিয়া আক্তার, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন এসবির নারী কনস্টেবল নীলা খাতুন ও তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন এসবির নারী কনস্টেবল নীলা আক্তার।
পয়েন্ট ২২ বোর রাইফেল ওপেন সাইট ৫০ মিটার (পুরুষ) ইভেন্টে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন আরএমপির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাসিদ ফরহাদ, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন এসবির কনস্টেবল শাকিল আহমেদ ও তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন এসবিতে সংযুক্ত নায়েক তানজীব হোসেন খন্দকার। একই ইভেন্টে নারীদের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন এসবির এএসআই (নিরস্ত্র) ইসমত আরা, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন এসবির নারী কনস্টেবল আমেনা আক্তার ও তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন এসবির এএসআই (নিরস্ত্র) নীলিমা আক্তার।
পয়েন্ট ২২ বোর পিস্তল/রিভলভার ২৫ মিটার (পুরুষ) ইভেন্টে প্রথম হয়েছেন সারদা, রাজশাহীর পুলিশ সুপার শেখ মো. আব্দুল্লাহ বিন কালাম, দ্বিতীয় হয়েছেন র্যাবের সার্জেন্ট জুবায়ের ও তৃতীয় হয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার শাহেদ আহমেদ। একই ইভেন্টে নারীদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন এসবির নারী কনস্টেবল রুনা আক্তার, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন একই ইউনিটের নারী কনস্টেবল নীলা খাতুন এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন এসবির এএসআই (নিরস্ত্র) ইসমত আরা।
প্রতিযোগিতায় ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট (পুরুষ) হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন এসবিতে সংযুক্ত নায়েক তানজীব হোসেন খন্দকার এবং ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট (নারী) হওয়ার গৌরব অর্জন করেন এসবির নারী কনস্টেবল রুনা আক্তার।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পুলিশ ক্লাবের সভাপতি ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) অতিরিক্ত আইজিপি ও বাংলাদেশ পুলিশ শুটিং ক্লাবের সভাপতি মো. মোস্তফা কামালসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভিসা পুনরায় চালু করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময়ে বিভিন্ন খাতে দেশটির বিনিয়োগ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (৭ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠক করেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের সহনশীলতা ও সহাবস্থানবিষয়ক মন্ত্রী শেখ নাহিয়ান বিন মুবারক আল নাহিয়ানের নেতৃত্বাধীন উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল।
এ সময়ে নাহিয়ানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ড. ইউনূস। নাহিয়ান বলেন, ‘আমাদের প্রেসিডেন্টের নির্দেশে আমি এখানে এসেছি বাংলাদেশের সাথে সংহতি প্রকাশ করতে এবং আমাদের বন্ধুত্বকে আরও জোরদার করতে।’
‘সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের দুই সরকার যে বর্ধিত সংলাপের আয়োজন করেছে, তার আমরা প্রশংসা করি। আমরা বিনিয়োগ থেকে শুরু করে ভিসা পর্যন্ত সব ক্ষেত্রে সহযোগিতা নিশ্চিত করতে চাই,’ বলেন তিনি।
এই পদক্ষেপের প্রশংসা করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা সম্পৃক্ততা এবং সমর্থনকে স্বাগত জানাই, আমরা বিভিন্ন শিল্পে বিনিয়োগকেও স্বাগত জানাই।’
ভিসা ব্যবস্থা শিথিল করার কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। এখনও কিছু পদক্ষেপ নেওয়া বাকি আছে, আশা করি, আমরা সম্পৃক্ত থাকব এবং এই সমস্যাগুলি সমাধান করব।’
সংযুক্ত আরব আমিরাত সম্প্রতি প্রতিদিন ৩০ থেকে ৫০টি ভিজিট ভিসা দেওয়া শুরু করেছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদের জন্য বাল্ক ভিসাও ত্বরান্বিত করা হয়েছে। এছাড়াও, দক্ষ কর্মসংস্থান ভিসার অনলাইন ব্যবস্থা পুনরায় সক্রিয় করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের র্যাব-৭ এর বহদ্দারহাট ক্যাম্পের অফিস কক্ষে র্যাব কর্মকর্তা নিজের আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে। বুধবার(৭ মে) সকালে এই ঘটনা ঘটেছে।
নিহত পলাশ সাহা সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদমর্যাদার কর্মকর্তা। তিনি র্যাব-৭ ব্যাটালিয়নের অধীনে বহদ্দারহাট ক্যাম্পে কর্মরত ছিলেন।
র্যাব সূত্র জানায়, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এএসপি পলাশ যখন অভিযানে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখন ঘটনাটি ঘটে। তিনি তার কাছে থাকা আগ্নেয়াস্ত্রটি নিয়ে তার অফিস কক্ষে প্রবেশ করেন।
র্যাব-৭ এআরএমের সিনিয়র এএসপি (মিডিয়া) মোজাফফর হোসাইন জানান, কক্ষে প্রবেশের কিছুক্ষণ পরে র্যাব সদস্যরা গুলির শব্দ শুনতে পান এবং তাকে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দেখতে পান। তার সার্ভিস পিস্তলটি মেঝেতে পাওয়া যায় এবং টেবিলে একটি সুইসাইড নোট পাওয়া যায়।
তাকে তাৎক্ষণিকভাবে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ময়নাতদন্তের পর আরও বিস্তারিত জানা যাবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
যুক্তরাজ্যের লন্ডনে উন্নত চিকিৎসা এবং পারিবারিক আবহে দীর্ঘ চার মাস অবস্থান শেষে মানসিক প্রশান্তি নিয়ে দেশে ফিরেছেন বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলের চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানাতে আসা সাধারণ মানুষ এবং দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
গতকাল সকাল ১০ টা ৪৩ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। সেখান থেকে দুপুরে গুলশানে তাঁর নিজ বাসভবন ফিরোজায় ফেরার পথে তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে সড়কের দুই পাশে জড়ো হন লাখো মানুষ।
দলীয় নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। ঢাকায় প্রবেশের প্রায় প্রতিটি মোড়ে দেখা যায় হাতে ব্যানার ও ফুল নিয়ে দলীয় কর্মীদের ভিড়।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক বিবৃতিতে বিএনপির চেয়ারপার্সনকে স্বাগত জানাতে আসা দলীয় নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যারা খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন তাদের প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন তারেক রহমান।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয় সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্য, পুলিশ, র্যাবসহ অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটির সদস্যরা যেভাবে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করেছেন বিএনপির পক্ষ থেকে তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়েছে।
সংস্কারের নামে সময় নষ্ট না করে দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জয়নুল আবেদীন ফারুক।
বুধবার (৭ মে) রাজধানীতে এক প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এই আহ্বান জানান। বাংলাদেশ জাতীয় নাগরিক পরিষদ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
ফারুক বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রায় ৭৫ শতাংশ মানুষ এখনই নির্বাচন চায়। নির্বাচন আয়োজনে আর দেরি করা উচিত নয়, কারণ এখনই এটি প্রয়োজন।’
তিনি সংসদ নির্বাচনের জন্য একটি রোডম্যাপ এবং জনগণের উপর অবৈধ অস্ত্র ব্যবহারকারী আওয়ামী মাফিয়া শাসকদের গ্রেপ্তার এবং নির্বাচনের আগে তাদের বিচারের দাবিও জানান।
সংসদে বিরোধী দলের সাবেক প্রধান হুইপ ফারুক বলেন, সরকারের সংস্কার উদ্যোগ প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এমন কোনো সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ না করার আহ্বান জানান, যা ১/১১-এর মতো ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নির্বাচন বিলম্বিত করতে পারে।
অধ্যাপক ইউনূসকে একজন সম্মানিত ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি হিসেবে বর্ণনা করে বিএনপির নেতা। তিনি তাকে এই বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানান। বলেন, ‘দয়া করে এর ব্যবস্থা করুন।’
তিনি বলেন, দেশের জনগণ একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে সংসদ গঠন করবে।
ফারুক বলেন, জনগণ যদি তার দলকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনে তবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিএনপির ৩১ দফা রাষ্ট্রীয় সংস্কার প্রস্তাব পরবর্তী সংসদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। ‘কোথাও, একটি দাবার খেলা চলছে এবং সঠিক সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠান থেকে আপনাকে বিরত রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। আপনাকে এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে এবং আপনার উপদেষ্টাদেরও এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’
বিএনপি নেতা বলেন, সংস্কার এবং সংস্কার কমিশনের জন্যই সময় ব্যয় করা হচ্ছে। ‘নির্বাচনের আসল উদ্দেশ্য ব্যাহত করা হচ্ছে। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ বাংলাদেশপন্থী শক্তিগুলোকে ক্ষমতায় আনবে, যারা দেশের সমস্যা সমাধান করবে।’
মিয়ানমারের রাখাইনের জন্য একটি মানবিক করিডোর দেওয়ার সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টাকে তার অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা ও সরকার গঠনকারী দলের উপর বিষয়টি ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানান বিএনপির এই নেতা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকেন্দ্রিক রাজধানীর দুই থানায় হওয়া পৃথক তিনটি মামলায় গান বাংলা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কৌশিক হোসেন তাপসসহ চারজনকে ঢাকার আদালতে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন— নিয়ন ফামাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুস সালাম, দৈনিক সরেজমিন বার্তার সাংবাদিক সিকদার লিটন ও যুব মহিলা লীগ নেত্রী আশা আক্তার।
বুধবার (৭ মে) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইসতিয়াক শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। এর আগে তাদের আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা রাজধানীর তিন হত্যা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। পরে আদালত সেটি মঞ্জুর করেন।
তাপসের মামলা সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই গুলশানের শাহজাদপুরের কনফিডেন্স টাওয়ারের সামনে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ করা হয়। এতে জব্বার আলী হাওলাদার নামে একজন গুলিবিদ্ধ হন। চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১০৯ জনের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা করেন।
আব্দুস সালামের মামলা সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট রাজধানীর ধানমণ্ডির সাইন্সল্যাব থেকে জিগাতলা এলাকায় যাওয়ার পথে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন মো. রিয়াজ (২৩)। দুই সপ্তাহ চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ১৭ আগস্ট বিকালে মারা যান তিনি। এ ঘটনায় নিহতের মা মোসা. শাফিয়া বেগম ৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ধানমণ্ডি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
এছাড়া আশা ও সিকদার লিটনের মামলার সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ভাটারা থানাধীন যমুনা ফিউচার পার্কের পাশে গত ২০ জুলাই আন্দোলনে অংশ নেন মো. জাহাঙ্গীর। এদিন দুপুর ১২টায় আসামিদের ছোঁড়া গুলিতে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। এরপর ২১ জুলাই তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় এ বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ভাটারা থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যেকার ক্রমবর্ধমান উত্তেজনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। বুধবার (৭ এপ্রিল) এক সংক্ষিপ্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দুই দেশকে শান্ত থাকার পাশাপাশি সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ সরকার ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার উদ্ভূত পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।’
এতে বলা হয়, আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের স্বার্থে বাংলাদেশ আশাবাদী যে এই উত্তেজনা কূটনৈতিকভাবে নিরসন হবে এবং শান্তি ফিরে আসবে, যা দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এ নিয়ে প্রতিবেশি দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
এ ঘটনাকে ‘যুদ্ধের শামিল’ ও ‘আগ্রাসন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে পাকিস্তান। যেকোনো সময় হামলার জবাব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ। তিনি বলেছেন, ‘কোথায় ও কীভাবে জবাব দেব, সেটি একান্তই আমাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত।’
অন্যদিকে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, ‘ভারতের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা হচ্ছে, এমন অন্তত ৯টি স্থানে আঘাত হানা হয়েছে।’
এমন বাস্তবতায় দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার (৬ মে) দিবাগত রাতে ভারতের হামলার মধ্য দিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠা এই পরিস্থিতিতে উভয় পক্ষকেই সংযম প্রদর্শনের জন্য আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন ও দেশ।
মন্তব্য