খেটে খাওয়া মানুষের প্রতি প্রশাসনকে মানবিক আচরণ করার আহ্বান জানিয়েছেন চরমোনাই পীর ও ইসলামী আন্দোলনের আমির সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম।
চলমান লকডাউনে শ্রমজীবী মানুষদেরকে বাধা দেয়ার বিষয়ে নানা ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে তিনি আহ্বান জানান।
চরমোনাই পীর বলেন, ‘করোনায় বিপর্যস্ত সাধারণ মানুষ যারা পেটের দায়ে রিকশা চালায় কিংবা ফুটপাতে দোকান নিয়ে বসে তাদের প্রতি নির্দয় আচরণ খুবই দুঃখজনক।
‘দরিদ্র মানুষ যারা একান্ত নিরুপায় হয়ে রিকসা চালায়, বা অন্য কোন কাজে বের হয়েছে তাদের প্রতি সদয় হওয়া প্রয়োজন।’
ফেসবুকে ভাইরাল একটি ছবির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে রিকসাচালক বৃদ্ধ মানুষ, যিনি পুলিশের অমানবিক আচরণ থেকে বাঁচতে বলছেন ‘বাবা আমি ভুলে এ রাস্তা দিয়ে চলে আসছি, আর আসব না, আমি রোজা রেখেছি আমাকে মারবেন না’। এমন আকুতি করেও পুলিশের নির্যাতন থেকে রেহাই পাননি। এ ধরণের আচরণ আসলেই অমানবিক যা মেনে নেয়ার মতো নয়।’
রেজাউল করীম বলেন, ‘দীর্ঘ দিন যাবৎ লকডাউনের ফলে সাধারণ মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হয়ে উঠছে। পেটের দায়ে অনেক মানুষ হাহাকার করছে। অনেক মানুষ লোক লজ্জার কারণে নিরবে নিভৃতে অসহায় যন্ত্রণা সহ্য করছে। এ ধরনের মানুষের প্রতি সদয় আচরণ এবং সরকারের পক্ষ থেকে প্রণোদনার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।’
হেফাজতে ইসলামের নেতাদের গ্রেপ্তারের বিষয়টিও তুলে ধরা হয় বিবৃতিতে।
নিরীহ নিরাপরাধ আলেম-ওলামা, সাধারণ মানুষকে গ্রেপ্তার এবং হয়রানি করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোনো শ্রেণি ও পেশার মানুষই আজ নিরাপদ নয়। শ্রমিকরা তাদের পাওনা চাইতে গিয়ে খুন হওয়ার মত ঘটনা বিশ্ববিবেককে নাড়া দিয়েছে।’
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র হিসেবে শপথ নিয়েছেন বিএনপি নেতা ডা. শাহাদাত হোসেন।
চসিকে কাউন্সিলর না থাকায় কাজ চালানোর জন্য ১৭ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি করে দেয়া হয়েছে।
রাজধানীর স্থানীয় সরকার বিভাগের সভাকক্ষে রোববার স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ শপথবাক্য পাঠ করান।
অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকার শুধুই কেয়ারটেকার সরকার না, গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী নিহত-আহতদের আমানত। এই সরকার রুটিন কেয়ারটেকার সরকার নয়, আন্দোলনের পর বিশেষ প্রেক্ষাপটে গঠিত হয়েছে এই সরকার। তাই সরকারের কাছে মানুষের প্রত্যাশাও বেশি।’
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামে কাউন্সিলর না থাকায় ১৭ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি করে দেয়া হয়েছে, যারা মেয়রের নেতৃত্বে কাজ করবেন। সিটি করপোরেশনগুলোতে শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ প্রশাসক নিয়োগ করা হবে। বর্তমান চট্টগ্রামের মেয়রের মেয়াদ আইন অনুযায়ী যেটা হবে, ততদিন তিনি দায়িত্বে থাকবেন।’
নতুন মেয়র বলেন, ‘চট্টগ্রাম বাঁচলেই বাংলাদেশ বাঁচবে। চট্টগ্রাম শহরের অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ করব। যত দ্রুত সম্ভব জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রকল্প হাতে নেয়ার চেষ্টা করব।
‘ইশতেহার পূরণের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করব। গ্রিন সিটি, ক্লিন সিটি এবং হেলদি সিটি হিসেবে চট্টগ্রামকে গড়ে তোলা হবে।’
আরও পড়ুন:যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবাননে ইসরায়েলি বিমান হামলায় এক প্রবাসী বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বৈরুতে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস।
নিহত মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন (৩১) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার খাড়েরা ইউনিয়নের খাড়েরা গ্রামের মোহাম্মদ আবদুল কুদ্দুসের ছেলে। তিনি বৈরুতে একটি কফি শপে কর্মরত ছিলেন।
স্থানীয় সময় শনিবার বিকেলে নিজাম উদ্দিন বৈরুতের হাজমিয়ে এলাকায় নিজ কর্মস্থলে যাওয়ার পথে হামলার শিকার হয়ে প্রাণ হারান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানান, নিহতের স্ত্রী বর্তমানে লেবাননে অবস্থান করছেন। লেবাননে বাংলাদেশের দূতাবাস তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।
যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ফ্লাইট না থাকায় মরদেহ বাংলাদেশে আনা সম্ভব হবে না বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
খাড়েরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘জীবিকার তাগিদে গত ১২ বছর আগে মোহাম্মদ নিজাম লেবাননে যান। শনিবার কর্মস্থলে যাওয়ার পথে বোমা বিস্ফোরিত হয়ে নিহত হয়েছেন বলে তার বড় ভাই আমাকে নিশ্চিত করেছেন। তার লাশ সেখানে হিমঘরে রাখা আছে।’
নিজাম উদ্দিনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন লেবাননে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এয়ার ভাইস মার্শাল জাভেদ তানভীর খান।
আরও পড়ুন:প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কমলা হ্যারিস বা ডোনাল্ড ট্রাম্প যে-ই বিজয়ী হোন না কেন ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্কের ক্ষেত্রে তা কোনো চ্যালেঞ্জ হবে না।
শনিবার রাজধানীর এফডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের প্রভাব নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
শফিকুল আলম বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিক দুই পার্টিরই সিনিয়র লিডারদের খুব ভালো সম্পর্ক। তার বন্ধু দু’দলের মধ্যেই আছেন। সম্পর্ক অনেকখানি নির্ভর করে ব্যক্তিগত অ্যাটাচমেন্টের ওপর।
‘ড. ইউনূস একজন গ্লোবাল লিডার। তাই যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনে কমলা হ্যারিস বা ডোনাল্ড ট্রাম্প যে-ই বিজয়ী হোন না কেন তা আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনো চ্যালেঞ্জ হবে না।’
তিনি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের (বাংলাদেশের) সম্পর্ক ভালো। আমরা চাচ্ছি তাদের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক বজায় থাকুক। বাংলাদেশে যে অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থান হয়েছে তাতে আমরা সারা বিশ্বের সাপোর্ট পেয়েছি। পতিত স্বৈরাচার সরকারের সঙ্গে ভারত থাকা সত্ত্বেও তা কোনো কাজে আসেনি। জনগণ জেগে উঠলে কোনো অপশক্তিই টেকে না।’
বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেন, ‘বাংলাদেশে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্যপরিষদ নয়জন সংখ্যালঘু মারা যাওয়ার বিষয়ে যে রিপোর্ট দিয়েছে তা বিশ্লেষণ করলে বুঝা যায় এখানে রিলিজিয়াস মোটিভেশনের চেয়ে পলিটিক্যাল অ্যাফিলিয়েশন বা অন্য কোনো কারণ ছিল। লবিস্টরা হয়তো এ বিষয়ে প্রভাব বিস্তার করেছেন। বাংলাদেশে কোনো সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়নি।’
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ সভাপতির বক্তব্যে বলেন, ‘নির্বাচনের আগে ট্রাম্পের বক্তব্য ভোটের রাজনীতির কৌশল। কমলা হ্যারিস ভারতীয় বংশোদ্ভূত। আমেরিকায় অবস্থানরত ভারতীয়রা বেশিরভাগই কমলাকে সমর্থন দেয়ায় ট্রাম্প ভারতীয় হিন্দুদের সহানুভূতি পাওয়ার জন্য এ ধরনের মন্তব্য করেছেন।’
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে ‘আগামী মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল বাংলাদেশের রাজনীতিতে কোনো প্রভাব ফেলবে না’ শীর্ষক ছায়া সংসদে গ্রিন ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের বিতার্কিকদের পরাজিত করে স্টেট ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের বিতার্কিকরা বিজয়ী হন।
প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন প্রফেসর ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, প্রফেসর ড. এ কে এম মাজহারুল ইসলাম, সাংবাদিক নুরুল ইসলাম হাসিব, আশিকুর রহমান অপু ও মো. আতিকুর রহমান। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেয়া হয়।
জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘরের ১৯ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে শিক্ষক, লেখক ও নির্মাতা ড. এবাদুর রহমানকে। কমিটিতে যুগ্ম-আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করবেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. মাহফুজ আলম।
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম শনিবার গণভবনের গেটে এক ব্রিফিংয়ে এই কমিটি ঘোষণা করেন।
কমিটির সদস্যরা হলেন- লেখক ও মানবাধিকার কর্মী মুসতাইন বিল্লাহ; জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষক জাহিদ সবুজ; জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানের শিক্ষক ড. নুরুল মোমেন ভূঁইয়া; আলোকচিত্রী, শিক্ষক ও শিল্পকলা একাডেমির গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগের পরিচালক তানজিম ওয়াহাব; লেখক ও গবেষক সহুল আহমেদ মুন্না; স্থপতি মেরিনা তাবাসসুম।
আরও রয়েছেন- বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক; আরকাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক; প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক; স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রধান স্থপতি; গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী; স্থাপত্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান স্থপতি মো. আসিফুর রহমান ভূঁইয়া; ইনস্টিটিউট অফ আর্কিটেক্টস বাংলাদেশের সভাপতি বা উপযুক্ত প্রতিনিধি; নকশাবিদ আর্কিটেক্টসের লিড আর্কিটেক্ট বায়েজিদ মাহবুব খন্দকার এবং ডিজাইন ওয়ার্কস গ্রুপের আর্কিটেক্ট তানজিম হাসান সেলিম।
কমিটিতে এছাড়া এক বা দু’জন ছাত্র প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত হবেন।
রাজনীতিবিদরা ক্ষমতায় যেতে উসখুস করছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেছেন, ‘আমরাও নিজ পেশায় ফিরে যেতে চাই। আমাদের হাতে সময় বেশি নেই।
রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে শনিবার বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত ‘সংস্কার ও টেকসই উন্নয়নের সমন্বয়ে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের কাছে প্রত্যাশা আকাশচুম্বি। মানুষ মনে করছে আমাদের হাতে জাদুর চেরাগ রয়েছে, সব বদলে ফেলতে পারব। আমরা কঠিন পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নিয়েছি। কোষাগারে টাকা নেই, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে দেনা রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘অন্য সরকারের সঙ্গে এই সরকারের পার্থক্য আছে। সরকার হতে গেলে ভোট করতে হয়। সেখানে টাকা লাগে, পেশিশক্তি লাগে, নানা বিষয় থাকে। তাই সরকার কায়েমি স্বার্থের কাছে দায়বদ্ধ থাকে।
‘আর আমরা দায়িত্ব গ্রহণ করেছি কায়েমি স্বার্থের কাছে দায়বদ্ধ না থেকে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হাজারের ওপর নিহত এবং আহতদের প্রতি আমরা দায়বদ্ধ। আমরা তাদের কথা মাথায় রেখে কাজ করছি।’
ড. ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘সরকার হচ্ছে এক প্রকার আমানত। জনগণের টাকা খরচ করলে তাদের কথা মাথায় রাখতে হবে। আমরা কোনো প্রকল্প নিলে মানুষের কাছে যাচ্ছি, তাদের মতামত নিচ্ছি। বাড়ি যাওয়ার প্রকল্প বাতিল করে দিচ্ছি। আমরা জনগণের চাওয়া অনুযায়ী প্রকল্প নিচ্ছি। যতটা সম্ভব দুর্নীতি কমানোর চেষ্টা চলছে। আর কেনাকাটা হবে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে।’
জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, ‘সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। এখন যে কএনা দরপত্র হবে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে। মেট্রো রেলের প্রধান হতে হলে তাকে সাবেক সচিব হতে হবে- এমন বিধান বাদ দিয়ে দেশ-বিদেশে মেট্রো রেল পরিচালনার অভিজ্ঞতা থাকলেই হবে। পিজিসিবির বোর্ড চেয়ারম্যান করা হয়েছে একজন অধ্যাপককে।’
সাংবাদিকদের কাছে দুর্নীতি-অনিয়মের পাশাপাশি দিকনির্দেশনামূলক প্রতিবেদন আহ্বান করেন উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইকোনমিক রিসার্চ প্লাটফর্মের ডিরেক্টর ড. একেএম আতিকুর রহমান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার শাহাদাৎ আলী, বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শামসুল আলম, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ প্লানার্সের সাবেক সভাপতি আক্তার মাহমুদ, সিপিডির রিসার্চ ডিরেক্টর খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা, মাহিন সরকার প্রমুখ।
বিএসআরএফ সভাপতি ফসিহ উদ্দিন মাহতাবের সভাপতিত্বে সেমিনার সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক।
সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের আট সদস্য। রাজধানীর মতিঝিলে ড. কামাল হোসেনের কার্যালয়ে শনিবার তারা এই সাক্ষাৎ করেন।
কমিশন প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বে সাক্ষাৎকালে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের, ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিক, অধ্যাপক মোহাম্মদ ইকরামুল হক, ড. শরীফ ভূঁইয়া, ব্যারিস্টার এম মঈন আলম ফিরোজী, ফিরোজ আহমেদ ও মো. মুসতাইন বিল্লাহ।
ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে এই সাক্ষাতের সময় সংবিধান সংস্কারের প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করা হয় বলে জানান সংবিধান সংস্কার কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত জনসংযোগ কর্মকর্তা ও জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের উপ-পরিচালক মো. সাব্বির মাহমুদ।
এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ড. কামাল হোসেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধানসহ উপস্থিত সদস্যদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং সংবিধান সংস্কার প্রক্রিয়ায় আস্থা প্রকাশ করেন। তিনি সংবিধানকে সমসাময়িক করার কথা উল্লেখ করেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৭২ সালের সংবিধান প্রণয়ন কমিটির প্রধান ছিলেন প্রখ্যাত আইনজীবী ও রাজনীতিক ড. কামাল হোসেন।
দেশ থেকে ১৭ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ অর্থ পাচারের তথ্য জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, বিভিন্ন ঘটনার ভিত্তিতে ধারণা করা যায় যে বাংলাদেশ থেকে বছরে গড়ে ১২ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ বিভিন্ন দেশে পাচার করা হয়েছে।
রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) কার্যালয়ে শনিবার ‘পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উপায়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে মোট কী পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা সম্ভব নয়। তবে ব্যাংকের মতো আনুষ্ঠানিক মাধ্যম ব্যবহার করে ১৭ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ অর্থ পাচারের কথা জানা যায়।’
টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতার বলয় প্রতিষ্ঠা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দখলের মাধ্যমে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ পাচার করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে রাজনীতি, আমলাতন্ত্র ও ব্যবসা- এই ত্রিমুখী আঁতাত মূল ভূমিকা পালন করেছে।
‘সব প্রতিষ্ঠানেই দীর্ঘ সময় ধরে দলীয়করণের চর্চা হয়েছে। গত ১৫-১৬ বছরে আমরা এর চূড়ান্ত রূপ দেখেছি। এতে আমলাতন্ত্রকে কর্তৃত্ব দিয়েছে রাজনৈতিক শক্তি আর তা বাস্তবায়নে ব্যবহার করা হয়েছে বিভিন্ন এজেন্সিকে। ফলে এসব জায়গায় কতটুকু পরিবর্তন আনা যাবে, তা গুরুত্বপূর্ণ।’
‘যে পরিবর্তন আসবে বলে আমরা আশা করছি তা যেন টেকসই হয়’, যোগ করেন তিনি।
পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত একটি দৃষ্টান্ত আছে। সেটি হলো, সিঙ্গাপুর থেকে। দেশটি থেকে ২০০৭ সালে পাচার হওয়া অর্থ ফেরতের উদ্যোগ নেয়া হয় এবং পারস্পরিক আইনি সহায়তার মাধ্যমে ২০১৩ সালে ৯ দশমিক ৩ বিলিয়ন বা ৯৩০ কোটি ডলার ফেরত আনা সম্ভব হয়েছিল।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা সম্ভব। তবে তা অনেক কঠিন ও দীর্ঘ প্রক্রিয়া। যেসব দেশে অর্থ পাচার করা হয়েছে, ওইসব দেশের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে পাচার করা অর্থ ফেরত আনা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে দেশগুলোর এ বিষয়ে সহযোগিতার মনোভাব গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি বলেন, ‘অর্থ পাচার বন্ধে সাপ্লাই (যে দেশ থেকে পাচার হয়) ও ডিমান্ড (যে দেশে পাচার হয়) উভয়ের মধ্যে সহযোগিতার পরিবেশ থাকতে হবে। পাচার হওয়া অর্থ ফেরতে সহযোগিতা করতে বিভিন্ন দেশে বিশেষজ্ঞদের সিন্ডিকেট আছে। সে কারণে আমরা একজন সাবেক মন্ত্রীর কয়েকটি দেশে কয়েক শ’ অ্যাপার্টমেন্টের বিষয়ে জানতে পারছি। কিন্তু এই ঘটনা বরফখণ্ডের চূড়ামাত্র, এমন পাচারকারী আরও অনেকে আছেন।’
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), সিআইডি, এনবিআর, অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস, বিএফআইইউ- অর্থ পাচার বিষয়ে এসব প্রতিষ্ঠানের পরিষ্কার পথনকশা আছে। কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় সংস্কার আনতে হবে, শুধু মুখের কথায় কাজ হবে না। অর্থ পাচার রোধে বেশ কিছু আইনেরও প্রয়োজন আছে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য