আগামী সপ্তাহে আবারও খালেদা জিয়ার করোনা পরীক্ষা করা হবে বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
বুধবার রাতে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
এ জেড এম জাহিদ হোসেন রাত পৌনে ১০টায় এবং আব্দুল্লাহ আল মামুন সাড়ে ১০টার দিকে খালেদা জিয়ার বাসায় যান। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে খালেদা জিয়ার বাসার সামনে জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আজকে ১৪তম দিন। তার স্যাচুরেশন সব সময় ৯৯ শতাংশ থাকে। খাবারের রুচি সব সময় ভালো ছিল। এখনও ভালো। টেম্পারেচার তিন দিন ধরে নরমাল। তার চেস্ট ক্লিয়ার। তার কোনো কফ-কাশি নেই অর্থাৎ করোনা-সংক্রান্ত আর কোনো উপসর্গ নেই। শুধু অল্প শারীরিক দুর্বলতা আছে।
‘করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর দুর্বলতা বেশ দীর্ঘ সময় ধরে থাকে। প্রতিদিনই সেই দুর্বলতা আগের চেয়ে কিছুটা কমে যাচ্ছে। গতকালের চেয়ে আজ দুর্বলতা অনেক কম। তিনি নিজেও বলেছেন, আজকে গতকালকের চেয়ে ভালো বোধ করছেন। অর্থাৎ তার অনেকটা উন্নতি হয়েছে। তার অবস্থা শুধু স্থিতিশীলই নয়, প্রতিদিনই তার অবস্থা একটু একটু করে ভালো হচ্ছে। আগামী দু-এক দিনের মধ্যে তার ব্লাড টেস্ট করা হবে। করোনা পরীক্ষা করা হবে আগামী সপ্তাহে।’
ডা. জাহিদ বলেন, ‘আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান (তারেক রহমান) সব সময়ে এ ব্যাপারে অত্যন্ত সজাগ। সেই সঙ্গে ম্যাডামের পুত্রবধূ অর্থাৎ ডাক্তার জোবায়দা রহমান চিকিৎসার সমন্বয় করছেন।’
খালেদা জিয়াকে বিপদমুক্ত বলা যায় কি না, এমন প্রশ্নের সরাসরি জবাব এড়িয়ে গিয়ে ডা. জাহিদ বলেন, ‘তার ইতিবাচক উন্নতি হয়েছে।’
খালেদা জিয়ার বাসার অন্য যারা আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের প্রসঙ্গে ডা. জাহিদ বলেন, আটজন স্টাফ আক্রান্ত হয়েছেন। প্রত্যেকের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। অন্যরা তার (খালেদা) চেয়েও ভালো আছেন। তাদের বয়স ওনার চেয়ে একটু কম। কাজেই তারা আরও দ্রুত সেরে উঠছেন। তারা ভালো আছেন।
এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার এবং শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ পুলিশের ডিআইজি, অতিরিক্ত ডিআইজি ও পুলিশ সুপার পদমর্যাদার ৬৪ কর্মকর্তাকে বদলি ও প্রত্যাহার করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-১ শাখা থেকে সোমবার পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপনে এই বদলি ও প্রত্যাহার করা হয়।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রজ্ঞাপনে সই করেন উপ-সচিব আবু সাঈদ।
একটি প্রজ্ঞাপনে একজন ডিআইজি, আটজন অতিরিক্ত ডিআইজি ও ৩৯ জন পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে বিভিন্ন ইউনিটে বদলি করা হয়।
আরেকটি প্রজ্ঞাপনে একজন ডিআইজি, পাঁচজন অতিরিক্ত ডিআইজি ও ১০ জন পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করে বিভিন্ন ইউনিটে সংযুক্ত করা হয়েছে।
সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন নয়, বরং বর্তমান সিস্টেমকেই কার্যকর করে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব বলে মনে করেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) মোহাম্মদ আবু হেনা। তার মতে, এজন্য কমিশনে যোগ্য লোক নিয়োগ দিতে হবে।
সোমবার নির্বাচন ভবনে নির্বাচন সংস্কারবিষয়ক কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
আবু হেনা বলেন, ‘কমিশনের আমন্ত্রণে এসেছিলাম। আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছি। ১৯৯৬ সালের ১২ জুন সাধারণ নির্বাচন পরিচালনা করেছি। এই সুযোগে সেই অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছি। আমাদের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে যারা নিহত ও আহত হয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।’
তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচন নিয়ে আমার সুপারিশ কিছু আছে। আমি তাদের বলেছি, আশা করি তারা বিবেচনা করবেন। সবচেয়ে বড় কথা হলো- দেশের একজন জ্যেষ্ঠ নাগরিক হিসেবে আমি চাই, আগামীতে যে নির্বাচন হবে সেগুলো সাধারণ বা অন্যান্য নির্বাচন যাই হোক, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয় এবং দেশের যেন কল্যাণ হয়।’
সাবেক এই প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, যত ভালো আইনই হোক না কেন, প্রয়োগ না হলে সুফল আসে না। যত রিফর্ম করেন না কেন, নির্বাচন কমিশনে যোগ্য মানুষ দরকার, যোগ্য কমিশন দরকার।
‘যোগ্য সিইসি ও অন্য নির্বাচন কমিশনার দরকার। তারা যদি যোগ্য না হন তবে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। আর আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির উন্নয়ন দরকার। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রার্থী নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া দরকার। উপর থেকে আরোপ করা নয়। নিচে থেকে উঠে আসতে হবে। ভোটের মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে নির্বাচনের মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থী দিতে হবে। এটা যদি সবগু দল বাস্তবায়ন করে তবে দেশের জন্য কল্যাণ হবে।’
আবু হেনা বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত মতামত হচ্ছে নির্বাচন পদ্ধতি পরিবর্তনের কোনো প্রয়োজন নেই। এ সিস্টেমই কার্যকর হতে পারে। নতুন কোনো সিস্টেম দরকার আছে বলে মনে করি না। যেসব দেশে সংখ্যানুপাতিক সিস্টেম আছে সেসব দেশে যে এটা ভালোভাবে চলছে এটা মনে করবেন না। এটা আমি জানি।
‘আমাদের যে সিস্টেম আছে, যেটা মানুষের কাছে পরীক্ষিত- এই সিস্টেমই কার্যকর করে তোলা দরকার। আর সংসদ কয় কক্ষের হবে সেটা দলগুলোর ওপর ছেড়ে দেয়া ভালো।’
নির্বাচনবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘উনি যা বলেছেন আমরা তাতে উৎসাহিত হয়েছি। উনি বলেছেন যে আমরা সঠিক পথেই আছি। ওনার অভিজ্ঞতার আলোকে সঠিক আছে।
‘আমরা আইনকানুন গভীরভাবে পর্যালোচনা করছি। ১৭ থেকে ১৮টি মিটিং করেছি। আমাদের অগ্রগতি নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট। দলগুলোর কিছু মতামত পেয়েছি। গণমাধ্যমের সঙ্গেও বসবো।’
তিনি বলেন, ‘অনেক ধরনের মতামত আছে। এক্ষেত্রে অনেক মতামত বাস্তবায়নে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। এক্ষেত্রে আমরা সংশ্লিষ্ট কমিশনের সঙ্গেও বসবো।’
আরও পড়ুন:জাতিসংঘের বৃহত্তম জলবায়ু সম্মেলন, কপ-২৯ এ যোগ দিতে আজারবাইজানের বাকুর উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টা ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট সোমবার বেলা ১১টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানান, ১৪ নভেম্বর তিনি দেশে ফিরবেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান হুমকি কীভাবে এড়ানো যায় তা নিয়ে আলোচনা করতে বিশ্বনেতা ও কূটনীতিকরা এই বার্ষিক জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন।
জলবায়ু পরিবর্তন-সংক্রান্ত জাতিসংঘ ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনের (কপ২৯) ২৯তম সম্মেলন ১১ নভেম্বর শুরু হয়ে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে।
এবারের কপ-২৯ এ অংশ নিচ্ছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বৈশ্বিক ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।
উন্নত দেশগুলোর প্রতি জলবায়ু আর্থিক প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে প্রযুক্তিগত সহায়তার আহ্বান জানান এই উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘সময় এসেছে উন্নত দেশগুলোর তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে থাকা দেশগুলোর পাশে দাঁড়ানোর।’
১৮৪৬ সালে বিশ্বের প্রথম তেলক্ষেত্র গড়ে উঠেছিল বাকুতে এবং ১৮৯৯ সালে তেল উৎপাদনকারী বিশ্বের নেতৃত্ব দিতো আজারবাইজান।
আজারবাইজানের রপ্তানির প্রায় সবই তেল ও গ্যাস। বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য দায়ী কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণের প্রধান উত্সগুলোর মধ্যে দুটি হলো তেল ও গ্যাস।
আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ এপ্রিল মাসে এগুলোকে ‘সৃষ্টিকর্তার উপহার’ বলে বর্ণনা করেছিলেন।
আলিয়েভ বলেছেন, কপ২৯ সম্মেলনটি আজারবাইজানের জন্য একটি ‘বড় সম্মান’।
বৈশ্বিক তাপমাত্রা রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে এবং দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার ঘটনাগুলো বিশ্বজুড়ে মানুষকে প্রভাবিত করছে। কপ২৯-এ বিভিন্ন দেশের সরকার, ব্যবসায়ী ও নাগরিক সমাজের নেতারা অংশ নিচ্ছেন। সুনির্দিষ্ট সমস্যার সমাধান করতে তারা আলোচনা করবেন।
আয়োজকদের মতে, কপ২৯ এর মূল ফোকাস অর্থায়নের দিকে থাকবে। কারণ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব থেকে জীবন ও জীবিকা রক্ষা করতে দেশগুলোর জন্য ট্রিলিয়ন ডলার প্রয়োজন।
প্যারিস চুক্তির অধীনে তাদের হালনাগাদ জাতীয় জলবায়ু কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপনের জন্য এই সম্মেলন ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এ কর্মপরিকল্পনা ২০২৫ সালের প্রথম দিকে নির্ধারিত হবে।
যদি সঠিকভাবে করা হয় তবে এই পরিকল্পনাগুলো বৈশ্বিক উষ্ণতা প্রাক-শিল্প স্তরের চেয়ে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।
আরও পড়ুন:রাজনৈতিক দলগুলো বারবার দ্রুত নির্বাচন চাইলেও সরকার চাপহীনভাবে কাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নবনিযুক্ত উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।
সচিবালয়ে নিজ দপ্তরের দায়িত্ব বুঝে নিয়ে সোমবার উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘পুরো বাজার প্রক্রিয়াই একটা চ্যালেঞ্জ, তবে এটাকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন নয়। বাজারে কেউ কেউ কৃত্রিম দাম বাড়াতে চায়, তবে সেটাকে কঠোর হাতে দমন করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘নতুন সরকার গঠন করার এই সময় কিছুটা অস্থিতিশীল থাকে সবখানেই। সেই প্রভাবে চালের দাম বেড়ে গিয়েছিল। সেটা এখন নিয়ন্ত্রণে আছে।
‘চাল আমদানিতে বেসরকারি খাতকে প্রধান্য দেয়া হচ্ছে। সরকারিভাবেও আমদানির পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।’
খাদ্য মজুতকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চলমান আছে এবং এটা জোরদার করা হবে বলে উল্লেখ করে আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ‘আমনে কিছুটা ফসলহানি হয়েছে। সেটা মোকাবিলায় কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, আমি সেটা অবগত হলাম। আমরা মনে হয় সঠিক পথেই আছি। সেই গতি আরও বাড়বে ইনশাআল্লাহ।’
খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘কৃষক ফসল ফলায়, তাদের সবচেয়ে বড় অবদান। বেসরকারি খাত খাদ্যশস্য আমদানি করে। এটাকেও আমরা উৎসাহিত করি। কিছু ঘাটতি মোকাবিলায় সরকারিভাবে আমদানি করে মজুত রাখা হয়, পরে যেন আমরা মার্কেটে ইনজেক্ট করতে পারি।
‘বেসরকারিভাবে খাদ্য আমদানিতে সব ট্যাক্স উঠিয়ে দেয়া হয়েছে। সরকারিভাবেও আমদানিতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। কিছু শিপমেন্টেও আছে।’
আরও পড়ুন:প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সোমবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অভিবাসী কর্মীদের জন্য একটি বিশেষ লাউঞ্জ উদ্বোধন করেছেন।
ওই সময় তিনি বলেন, ‘প্রবাসী শ্রমিকরা দেশ গড়ার কারিগর। জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে তারা বড় ভূমিকা পালন করেছিল। আমরা তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।’
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে এটিই প্রথম প্রবাসী লাউঞ্জ।’
এ লাউঞ্জ অভিবাসীদের ভ্রমণকে সহজ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
লাউঞ্জে বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকদের বিশ্রামের জন্য জায়গা এবং সুলভ মূল্যে খাবার পাওয়া যাবে এবং সরকার এতে ভর্তুকি দেবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আইন ও প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত আইওএম মিশনের ডেপুটি চিফ ফাতিমা নুসরাত গাজালি জানান, জাতিসংঘ বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকদের সহায়তা করতে লাউঞ্জটিতে পৃষ্ঠপোষকতা করেছে।
আরও পড়ুন:রাষ্ট্রপতির কার্যালয় ও বাসভবন বঙ্গভবনের দরবার হল থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সোমবার এক পোস্টে এ তথ্য জানান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।
ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, ‘৭১ পরবর্তী ফ্যাসিস্ট শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি দরবার হল থেকে সরানো হয়েছে। এটা আমাদের জন্য লজ্জার যে, আমরা ৫ আগস্টের পর বঙ্গভবন থেকে তার ছবি সরাতে পারিনি।’
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে লিখেন, ‘তবে মানুষের ভিতরে জুলাই স্পিরিট যতদিন থাকবে, তাকে আর কোথাও দেখা যাবে না।’
মাহফুজ আলম আরও লিখেন, ‘শেখ মুজিব এবং তার কন্যা অগণতান্ত্রিক বাহাত্তরের সংবিধান থেকে শুরু করে দুর্ভিক্ষ, কোটি কোটি টাকা পাচার এবং হাজার হাজার ভিন্নমতাবলম্বী ও বিরোধীদের বিচার-বহির্ভূত হত্যাসহ (৭২-৭৫, ২০০৯-২০২৪) বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে যা করেছে, তা আওয়ামী লীগকে অবশ্যই স্বীকার করতে হবে এবং ক্ষমা চাইতে হবে।
‘তাহলেই কেবল আমরা একাত্তরের আগের শেখ মুজিবের কথা বলতে পারি। ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত এবং ফ্যাসিস্টদের বিচার না করা পর্যন্ত কোনো ধরনের সমঝোতা হবে না।’
আরও পড়ুন:ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়া নতুন তিনজনের মধ্যে দু’জনকে দপ্তর বণ্টন এবং বর্তমান উপদেষ্টাদের মধ্যে ছয়জনের দায়িত্ব পুনর্বণ্টন করা হয়েছে।
তবে রোববার সন্ধ্যায় শপথ নেয়া নতুন উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের বিষয়ে কোনো মন্ত্রণালয় বা বিভাগের কথা উল্লেখ করা হয়নি।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে রোববার রাতে দেয়া এক প্রজ্ঞাপনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
নতুন উপদেষ্টাদের মধ্যে শেখ বশির উদ্দিনকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আর সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকছেন।
এছাড়া পুরনোদের মধ্যে ছয় উপদেষ্টার দপ্তর পুনর্বণ্টন করা হয়েছে। উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার আগে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সংযুক্ত ছিলেন। এখন তাকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
নতুন উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ায় অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা সালেহ উদ্দিন আহমেদের দায়িত্ব কমেছে। এখন তিনি শুধু অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ এতোদিন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সামলে আসছিলেন। এখন ভূমি মন্ত্রণালয় তার অধীনে থাকলেও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পরিবর্তে তাকে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ছিলেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। এখন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় তার অধীনে থাকলেও শ্রম এবং কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের পরিবর্তে তিনি পেয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন এখন থেকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। আগে তার অধীনে ছিল নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়।
আইনসহ তিন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের দায়িত্বভারও কিছুটা কমেছে। তাকে আর সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সামলাতে হবে না। মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য