চলমান লকডাউনে দায়িত্ব পালন নিয়ে পুলিশ ও চিকিৎসকরা মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন। দুই পেশাজীবীদের প্রধান সংগঠনগুলো পাল্টাপাল্টি বিবৃতি দিয়েছে। চিকিৎসকরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে বলেছেন, তাদের হয়রানি করা হলে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হবে। বিপরীতে পুলিশ সদস্যদের পক্ষ থেকে দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চিকিৎসকের আচরণে পুলিশের প্রতিটি সদস্য অত্যন্ত মর্মাহত।
এবার লকডাউনে চলাচল নিয়ে বিশেষ কড়াকড়ি আরোপ করে সরকার। এর অংশ হিসেবে পুলিশের কাছ থেকে মুভমেন্ট পাস (চলাচলের জন্য ছাড়পত্র) নেয়ার ব্যবস্থা করা হয়। আর এই ছাড়পত্র নিয়েই পুলিশ ও চিকিৎসকদের মধ্যে টানাপোড়েন দেখা দেয়।
চিকিৎসক ও অন্য স্বাস্থ্যকর্মীরা কর্মস্থলে যাওয়ার সময় দেশের বিভিন্ন জায়গায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক ‘হয়রানি’ ও ‘নিগ্রহের’ শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠতে থাকে ১২ মার্চ ‘সর্বাত্মক’ লকডাউনের শুরুর দিন থেকে।
এর মধ্যে রোববার রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে একজন চিকিৎসকের পরিচয়পত্র প্রদর্শন নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বাগবিতণ্ডার ভিডিও ভাইরাল হলে এ বিরোধ তুঙ্গে ওঠে।
ওই ঘটনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাঈদা শওকত জেনিকে ‘হেনস্তা’ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে দোষী পুলিশ কর্মকর্তাদের শাস্তি দাবি করেছেন চিকিৎসকদের প্রধান পেশাজীবী সংগঠন বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)। চিকিৎসকদের আরও বেশ কয়েকটি সংগঠন বিবৃতি দিয়েছে।
ওই ঘটনায় ডা. জেনির কাছে যে কর্মকর্তারা পরিচয়পত্র দেখতে চেয়েছিলেন, তারা হলেন নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এ কাইয়ুম এবং ডিএমপির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মামুন।
অপরদিকে ওই ঘটনায় ডা. জেনিকেই দায়ী করে তার শাস্তি দাবী করেছে পুলিশ কর্মকর্তাদের সংগঠন পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।
রোববার এলিফ্যান্ট রোডে পরিচয়পত্র দেখতে চাওয়া নিয়ে ডা. জেনির সঙ্গে পুলিশের তর্ক হয়, যা একপর্যায়ে উত্তপ্ত বিতণ্ডায় রূপ নেয়। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা ভাইরাল হয় এবং দিনভর এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা হয়। ডা. জেনি যখন এসব কথা পুলিশকে বলছিলেন, তখন তাকে ‘ভুয়া ডাক্তার’ বলা হয়েছে বলে তিনি নিউজবাংলার কাছে অভিযোগ করেছেন। এমনকি একপর্যায়ে অবৈধ যৌন ব্যবসা চালানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার শামীমা নূর পাপিয়ার সঙ্গে তাকে তুলনা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
অন্যদিকে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন তাদের বিবৃতিতে বলেছে, ডা. জেনি পুলিশ কর্মকর্তাদের ‘তুই-তোকারি’ করেছেন, ‘দেখে নেয়ার’ হুমকি দিয়েছেন।
ডা. জেনি একজন রেডিওলজিস্ট। এই সূত্রে রেডিওলজিস্টদের সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস সেফটি, রাইটস অ্যান্ড রেসপনসিবিলিটিজ এক বিবৃতিতে ওসি কাইয়ুমের শাস্তি দাবি করেছে। তারা বলেছে, ‘পতিতাবৃত্তির পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা পাপিয়ার সঙ্গে পুলিশ ডা. জেনির তুলনা করেছে, যা একজন নারী চিকিৎসকের জন্য চরম অবমাননাকর।’
ওই ঘটনায় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা আতঙ্কগ্রস্ত ও হতাশ হয়ে পড়ছেন বলে সোমবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)। এই বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হস্তক্ষেপ চাওয়ার পাশাপাশি ঘটনার দ্রুত তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত এবং বিভাগীয় শাস্তির আওতায় আনার দাবি করেছে সংগঠনটি।
ডা. জেনিকে ‘হেনস্তার’ প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, স্বাচিপের বিএসএমএমইউ শাখাও।
বিএমএ মহাসচিব ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘চিকিৎসকদের হয়রানি বন্ধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, এভাবে চিকিৎসক হয়রানি চলতে থাকলে আমরা ঠিকভাবে কাজ করতে পারব না, চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হবে। এখনও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি এটা দুঃখজনক।’
পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা পালন করা কঠিন উল্লেখ করে এই চিকিৎসক নেতা বলেন, ‘অধিদপ্তরের জানা উচিত দেশের ৮০ শতাংশ চিকিৎসকের কাছে কোনো ডাক্তারি পরিচয়পত্র নেই।’
জেনিকে হেনস্তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বললেন চিকিৎসকরা
ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস সেফটি, রাইটস অ্যান্ড রেসপনসিবিলিটিজ, এফডিএসআরের মহাসচিব শেখ আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, লকডাউনে হাসপাতাল থেকে ফেরার পথে বা কর্মস্থলে যাওয়ার সময় চিকিৎসকদের সুপরিকল্পিতভাবে হেনস্তা করা হয়েছে। এটার অন্য কোনো উদ্দেশ্য ও ষড়যন্ত্র রয়েছে।
সোমবার লকডাউন চলমান অবস্থায় চিকিৎসক হয়রানির প্রতিবাদে ওই সংগঠনের উদ্যোগে একটি অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এসে তিনি এই অভিযোগ করেন।
আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, কোনো একটি মহল করোনাকালে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত করতে এবং সরকার ও পুলিশের কাছে চিকিৎসকদের প্রশ্নবিদ্ধ করতেই এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। আইনশৃঙ্খালা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে এটির তদন্ত দাবি করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনায় বলা আছে, চিকিৎকরা মুভমেন্ট পাসের আওতামুক্ত থাকবেন। তারপরও কিছু পুলিশ কর্মকর্তা এ কাজটি করেছেন। আমরা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা আশা করব, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে দ্রুতই ব্যবস্থা নেবেন। পুলিশের নির্দেশনা উপেক্ষা করে যারা এ রকম হয়রানি করছে, আমরা তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।’
পুলিশ কী বলছে
চিকিৎসকের পরিচয়পত্র দেখানো নিয়ে এ তুলকালামে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এক পাল্টা বিবৃতি দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক সাঈদা শওকত জেনিকেই দায়ী করেছে।
সোমবার বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে পুলিশ সদস্যদের প্রতি জনৈক চিকিত্সক কর্তৃক এহেন অপেশাদার ও অরুচিকর আচরণে বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য অত্যন্ত মর্মাহত।…একজন গর্বিত পেশার সদস্য হয়ে অন্য একজন পেশাদার বাহিনীর সদস্যদের প্রতি কটাক্ষ বা অসৌজন্যমূলক আচরণ কখনোই কাম্য নয়।’
মহামারিকালে ঘরের বাইরে এলে পরিচয়পত্র প্রদর্শন বাধ্যতামূলক জানিয়ে বলা হয়, ‘মন্ত্রণালয়ের বৈধ আদেশ লঙ্ঘন এবং কর্তব্যরত বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের নিকট উক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন জোর দাবি জানাচ্ছে।’
ওই ভিডিওচিত্র ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের বাটা সিগন্যাল এলাকায় জেনির গাড়ি আটকে তার পরিচয়পত্র দেখতে চান নিউমার্কেট থানার ওসি এস এ কাইয়ুম।
ওই গাড়িতে ডা. জেনির কর্মস্থল বঙ্গবন্ধু মেডিক্যালের স্টিকার সাঁটানো ছিল, তার গায়েও চিকিৎসকের অ্যাপ্রোন ছিল। তারপরও কেন পরিচয়পত্র দেখাতে হবে– এ নিয়ে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে জেনি তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিচয়ও বলেন। ওসি কাইয়ুমও জানান, তিনিও মুক্তিযোদ্ধার ছেলে।
এই উত্তপ্ত তর্কের একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে আসেন ঢাকা মহানগর পুলিশের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মামুন। আধা ঘণ্টা পর তিনি ঘটনাটির মীমাংসা করতে সক্ষম হন।
পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘তিনি (ডা. জেনি) নিজ পেশার পরিচয় বাদ দিয়ে অপ্রাসঙ্গিক পরিচয় তুলে ধরে পুলিশ ও বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন এবং জাতির সামনে পেশাজীবী সংগঠনগুলোকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর অপচেষ্টা করেছেন।’
১৪ এপ্রিল থেকে চলা লকডাউনে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যারা বাইরে যেতে চান, তাদের মুভমেন্ট পাস সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। তবে চিকিৎসকদের জন্য এই পাস নেয়ার দরকার নেই। তাদের ক্ষেত্রে পরিচয়পত্র দেখালেই হবে বলে জানিয়েছিল পুলিশ।
পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন বিবৃতিতে বলেছে, ‘ডা. জেনিকে পরিচয়পত্র দেখাতে বললে তিনি অত্যন্ত ন্যক্কারজনকভাবে বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন, যা একজন পেশাদার ও সচেতন নাগরিকের কাছ থেকে কোনোভাবেই কাম্য নয়।
‘গত ১৪ এপ্রিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা, চিকিৎসাসেবাসহ অন্যান্য কার্যক্রমে জড়িত সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের দাপ্তরিক পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) অবশ্যিকভাবে ব্যবহারের নির্দেশনা থাকলেও তিনি তা অমান্য করেছেন এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তার পরিচয় প্রদান না করে নিজ মন্ত্রণালয়ের আদেশ লঙ্ঘন করেছেন।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘উক্ত চিকিৎসক বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে বাদানুবাদকালে যে শব্দ প্রয়োগ করেছেন তা অত্যন্ত অরুচিকর ও লজ্জাজনক। এক পেশার সদস্য হয়ে আরেক পেশার কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি কী ভাষা প্রয়োগ করেছেন, তা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত ও প্রকাশিত হয়েছে। তিনি কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের “তুই” বলে সম্বোধন করেছেন এবং “আর আমি কী, সেটা এখন তোদের দেখাচ্ছি হারামজাদা” বলে হুমকি দিয়েছেন।’
‘বৈশ্বিক মহামারির এই দুঃসময়ে পুলিশ বাহিনীর সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ সর্বজন স্বীকৃত’ উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, কোভিডে আক্রান্ত হয়ে ৯১ জন পুলিশ সদস্য মারা গেছেন, ২০ হাজারের বেশি আক্রান্ত হয়েছেন। এরপরেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের জীবনরক্ষায় পুলিশ সদস্যরা তীব্র দাবদাহে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে কাজ করছেন।
বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জায়েদুল আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওই ঘটনার ভিডিও আছে, ভিডিও থেকে আপনারাই এর মূল্যায়ন করবেন। আমাদের কথা হলো, কোনো পেশাকেই খাটো করে না দেখে সবার পেশাকেই সবার সম্মান করা দরকার। অতিমারির সময় আমরা যেন সবাই ধৈর্যশীল হই এবং সঠিক আইনের মাধ্যমে পরিচালিত হই। তাহলে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটবে না।’
দুই পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে পাল্টাপাল্টি বিবৃতি এই দুই পেশাজীবীদের মধ্যে বিরোধের বহিঃপ্রকাশ কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট বলেছি, আমরা প্রতিটি পেশাকেই সম্মান করি। সবাই মিলে যেন আরও সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে সবকিছু মোকাবিলা করি।’
আরও যা যা ঘটেছে
লকডাউনের শুরু থেকেই দায়িত্ব পালনরত চিকিৎসকদের সঙ্গে পুলিশের টানাপোড়েন স্পষ্ট হয়ে ওঠে। প্রথম দিন এক চিকিৎসক পরিচয়পত্র দেখানোর পরও তাকে জরিমানা করা হয়। আরেকজনকে একটি চেকপোস্টে ‘কসাই’ ডাকার অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া কয়েকজন চিকিৎসককে কর্মস্থলে নামিয়ে দিয়ে আসা গাড়িকে আটকে জরিমানা করা হয়েছে। এক চিকিৎসক পুলিশের সঙ্গে ফোনে কথা বললে তাকে কারাগারে পাঠানোর হুমকি দেয়া হয়েছে।
পরিচয়পত্র দেখানোর পরও মুভমেন্ট পাস না থাকায় জরিমানা করা হয় স্কয়ার হাসপাতালের কোভিড ইউনিটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) কর্মরত নাজমুল ইসলাম হৃদয়কে। বিষয়টি জানিয়ে তার স্ত্রী ইসরাত জাহান ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন। এরপর বিষয়টি বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে তার সেই টাকা ফিরিয়ে দেয় পুলিশ।
একইভাবে হেনস্তার শিকার হন চিকিৎসক দম্পতি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার কামরুন নাহার মুক্তা ও গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার এনামুল কবির খান।
ডা. মুক্তা নিউজবাংলাকে জানান, তার বাসা এলিফ্যান্ট রোডেই। সকালে তাকে হাসপাতালে নামিয়ে গাড়ি নিয়ে চালক ফিরছিলেন। তিনি তাকে তার আইডি কার্ড দিয়ে পুলিশকে দেখাতে বলেন।
পুলিশ আটকালে চালক জানান, চিকিৎসককে হাসপাতালে দিয়ে এসেছেন। প্রমাণস্বরূপ তিনি চিকিৎসকের আইডি কার্ড দেখান। পুলিশ সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করলে চালক কথা বলার জন্য ফোনে ওই চিকিৎসককে ধরিয়ে দেন। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি।
এনামুল কবির খান আরও কিছু ঘটনা জানিয়েছেন নিউজবাংলাকে। তিনি বলেন, ‘গত শুক্রবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যালের হেমাটোলজি বিভাগের চিকিৎসক ইমরান হাবিব রাজু ডিউটি সেরে সিএনজি নিয়ে বাসায় ফিরছিলেন। রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলের সামনে পুলিশ তাকে নামিয়ে সিএনজি রেখে বাসায় যেতে বলে।’
ডা. মুক্তা ও এনামুল কবির খানের মতো হয়রানির শিকার হয়েছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ভাইরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নুজরাত আরফিনও।
এই চিকিৎসককেও ঢাকা মেডিক্যালে নামিয়ে বাসায় ফিরছিলেন গাড়িচালক। শাহবাগ মোড়ে গাড়ি থামিয়ে জরিমানা করা হয়। চিকিৎসকের গাড়ি শোনার পরেও ভ্রুক্ষেপ ছিল না পুলিশের।
আরও পড়ুন:ফাঁকি দেয়া রাজস্ব পুনরুদ্ধার কার্যক্রমকে অধিকতর গতিময় করে কর ফাঁকি প্রতিরোধের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড মাঠ পর্যায়ের কর অঞ্চলসমূহের Intelligence & Investigation Cell (IIC) এর কার্যক্রম জোরদার করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (কর অডিট, ইন্টেলিগেন্স এন্ড ইনভেস্টিগেশন) এর দপ্তর হতে জারীকৃত উক্ত নির্দেশনায় প্রতিটি কর অঞ্চল কর্তৃক Intelligence & Investigation টিম গঠন, টিমসমূহের কার্য পদ্ধতি, টিমের সুপারিশ প্রণয়নের ভিত্তি এবং ফাঁকি দেয়া কর পুনরুদ্ধার কার্যক্রম গ্রহণের জন্য কমিটির অনুমোদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে।
বিভিন্ন প্রকারের গোয়েন্দা তথ্য, কর ফাঁকির অভিযোগ, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশিত তথ্য, আয়কর নথি ও বিভিন্ন রেজিস্টারে ঘষা-মাজা বা কাটা-ছেঁড়া, অস্বাভাবিক পরিমান করমুক্ত আয় প্রদর্শন, করযোগ্য আয় এবং পরিশোধিত করের তুলনায় সম্পদ বিবরণীতে অস্বাভাবিক পরিমান নীট সম্পদ প্রদর্শন ইত্যাদি ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট টিম অনুসন্ধান ও তথ্য বিশ্লেষণ কার্যক্রম শুরু করবে।
অনুসন্ধান পর্যায়ে কর ফাঁকির সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট টিম রাজস্ব পুনরুদ্ধার কার্যক্রম গ্রহণের লক্ষ্যে Intelligence & Investigation কমিটির অনুমোদনের জন্য প্রতিবেদন দাখিল করবে। রাজস্ব ফাঁকির সুস্পষ্ট তথ্য-উপাত্ত থাকলে সংশ্লিষ্ট কর অঞ্চলের Intelligence & Investigation কমিটি রাজস্ব পুনরুদ্ধারের আইনি কার্যক্রম গ্রহণের জন্য অনুমোদন প্রদান করবে।
প্রতিটি কর অঞ্চলকে মাসিক ভিত্তিতে নির্ধারিত ছকে তথ্য-উপাত্ত সন্নিবেশ করে Intelligence & Investigation কার্যক্রম হতে সৃষ্ট অতিরিক্ত দাবি এবং অতিরিক্ত দাবী হতে কর আদায়ের বিস্তারিত তথ্য পরবর্তি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে প্রেরণের নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
Intelligence & Investigation Cell এর কার্যক্রম জোরদার করার মাধ্যমে ফাঁকি দেয়া রাজস্ব পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে, কর ফাঁকি দেয়ার প্রবনতা হ্রাস পাবে এবং সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ কর সংস্কৃতির বিকাশ লাভ করবে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
-জাতীয় রাজস্ব বোর্ড
এবার পাকিস্তানের আট হাজার মিটার উচ্চতার নাঙ্গা পর্বত আরোহণ করতে চান বলে জানিয়েছেন এভারেস্টজয়ী বাবর আলী। নেপালের মানাসলু জয়ের পর দেশে ফিরে গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন মানাসলু অভিযানের সঙ্গী তানভীর আহমেদ।
বাবর আলী বলেন, এ বছরে দুইটা আট হাজারি পর্বত হয়ে গেছে। সামনে পরিকল্পনা হচ্ছে ধীরে ধীরে বাকি যে ১০টা আট হাজার মিটার বাকি রয়ে গেছে। আই লাইক টু মুভ টু পাকিস্তান। পাকিস্তানে পাঁচটা আট হাজার মিটার পর্বত আছে। এর মধ্যে আমার স্বপ্নের একটা হলো নাঙ্গা পর্বত। সামনে আমি নাঙ্গা পর্বতের দিকে যেতে চাই।
মানাসলু অভিযানে কোনো বড় প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়েছিলেন কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে বাবর বলেন, আমরা পুরো যাত্রাটা উপভোগ করেছি। এটা আমি সবাইকে বলি, পর্বতে অনেকে যেতে চায়। সঠিক প্রস্তুতিত নিয়ে গেলে আপনি উপভোগ করবেন।
তিনি বলেন, মানাসলুতে একটা সুবিধা হয়েছে, আমাকে অক্সিজেন সিলিন্ডার বহন করতে হয়নি। ৪-৫ লিটারের অক্সিজেন সিলিন্ডারটা অতিরিক্ত বহন করতে হচ্ছে না, এটা একটা সুবিধা; কিন্তু প্রত্যেকটা স্টেপ মেকস ইউ ব্রেথলেস। বাতাসের জন্য হাহাকার। সেটা ফিল করেছি।
কৃত্রিম অক্সিজেন ছাড়া মানাসলু আরোহণের কারণ জানতে চাইলে বাবর আলী বলেন, সব সময় দেখে এসেছি পশ্চিমারা সচরাচর এসব পাগলামিগুলো করে থাকে। বাঙালি ঘরকুণো ছিল বলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একটা ট্যাগ লাগানো থাকে। তিনি বলেন, যথাযথ প্রশিক্ষণ এবং ওই মানসিক শক্তি থাকলে এটা সম্ভব। পরের জেনারেশন বা পরের পর্বতারোহীরা আশা করি এই ব্যাপারটা এগিয়ে নিবে। ইতিবাচক মানসিকতার সাথে আমাকে সহযোগিতা করেছে নিয়মানুবর্তিতা।
মানাসলু আরোহণকারী তানভীর আহমেদ বলেন, সবচেয়ে কঠিন হলো উচ্চতা। একটা নির্দিষ্ট উচ্চতার উপরে বিষয়টা ভিন্ন। সেখানকার তাপমাত্রা ও আবহাওয়ার সাথে শরীরকে অ্যাডজাস্ট করানো এবং মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকা। ক্যাম্প ১ থেকে ক্যাম্প ২ এবং ক্যাম্প ৩স থেকে ক্যাম্প ৪ এর রাস্তা কঠিন। অনেক বড় উচ্চতা একদিনে আরোহণ করতে হচ্ছে। এটা বেশ কঠিন।
তিনি বলেন. বারবার পর্বতে যাওয়া এবং সেখানে শরীর কেমন আচরণ করছে। এটার সাথে মানিয়ে নেয়া। কোনো ঘাটতি আছে কি না, সে অনুসারে অনুশীলন করা। একেক জনের শরীর একেক রকম। তাই সেভাবেই প্রস্তুতি নিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্পন্সর প্রতিষ্ঠান ‘সামুদা’ এর চিফ বিজনেস অফিসার বিকাশ কান্তি দাস এবং ভার্টিক্যাল ড্রিমার্সের জনসংযোগ কর্মকর্তা আশরাফুল আরেফীন আসিফ।
গত ২৬ অক্টোবর ভোরে নেপালের মানাসলু পর্বতে আরোহণ করেন দুই বাংলাদেশি পর্বতারোহী বাবর আলী এবং তানভীর আহমেদ।
বিশ্ব বসতি দিবস-২০২৫ উপলক্ষ্যে দুই দিনব্যাপী বসতি মেলা শুরু হচ্ছে।
আগামী ৬ ও ৭ অক্টোবর ঢাকায় বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের লবীতে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং রাজউক আয়োজিত এই মেলা অনুষ্ঠিত হবে।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, এ বসতি মেলায় ৬০টি স্টলে আবাসন প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রী ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য ও সেবাগুলো প্রদর্শন করবে।
মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে রাত ০৮টা পর্যন্ত চলবে। মেলা প্রাঙ্গণ সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘটনায় অপরাধী দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচারের আনুষ্ঠানিক তদন্ত শিগগিরই শুরু হবে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
আজ রোববার ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
তাজুল ইসলাম বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের ব্যাপারে সম্প্রতি চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে অভিযোগ জমা দিয়েছে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম) নামে একটি রাজনৈতিক দল। তার ভিত্তিতে গুরুত্ব দিয়ে অভিযোগ যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, সুতরাং বলা যেতে পারে যে, এই মুহূর্তে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অপরাধী সংগঠন হিসেবে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য প্রাথমিক তদন্তের কাজটা আমরা শুরু করতে যাচ্ছি। পুরোদমে শুরু হলে আমরা বলতে পারবো দলটির বিচারের মুখোমুখি হওয়ার ব্যাপারটা কতদূর রয়েছে। তবে অভিযোগটি এখন গুরুত্ব দিয়ে যাচাই-বাছাইয়ের কাজ করা হচ্ছে। খুব সহসাই আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত শুরু হবে।
তিনি আরও বলেন, চলতি মাসেই হয়তো আমরা উল্লেখযোগ্য কিছু অগ্রগতি দেখতে পাবো। ইতিমধ্যে অনেকগুলো মামলার বিচার চলছে। বেশ কয়েকটি মামলার বিচার শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়া মামলা সম্পর্কিত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা এ সপ্তাহে ঘটবে। অনেক বড় বড় মামলার চার্জশিট দাখিল হবে। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ও দাখিল হবে বলে আশা করছি।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় আজ রোববার তাদের জাহাজ পৌঁছানোর কথা থাকলেও আরও দেরি হবে বলে জানিয়েছেন দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলম। ছোট নৌকাগুলোর কাছাকাছি থাকতে গতি কমিয়ে দেওয়ায় এই দেরি হবে। তবে কোথায় বা কখন আটকানো হতে পারে, তা আগেভাগে বলা কঠিন বলেও জানান তিনি।
আজ রোববার বাংলাদেশ সময় বেলা ১১টার পর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে আলোকচিত্রী শহিদুল আলম এসব কথা জানান।
পোস্টে শহিদুল আলম লেখেন, ‘শান্ত সমুদ্র আর দারুণ রোদ। গত রাতটা খোলা ডেকে ঘুমিয়েছি আমি। আজ আমাদের গাজায় পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু ছোট নৌকাগুলোর কাছাকাছি থাকতে গতি কমিয়ে দেওয়ায় এখন আরও দেরি হবে। তবে বিপদের এলাকা তার অনেক আগেই শুরু হয়, আর কোথায় বা কখন আমাদের আটকানো হতে পারে, তা আগেভাগে বলা কঠিন।’
শহিদুল আলম গাজা অভিমুখে থাকা কনশানস নৌযানে আছেন। কনশানস হলো আন্তর্জাতিক উদ্যোগ ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) এবং থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজা (টিএমটিজি) নৌবহরের একটি জাহাজ।
এফএফসি হলো ইসরায়েলের অবরোধ ভাঙতে ও গাজায় ত্রাণ পৌঁছাতে বৈশ্বিক প্রচেষ্টা ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার’ যৌথ আয়োজক জোটগুলোর একটি।
শহিদুল আলম কনশানস নামের যে নৌযানটিতে অবস্থান করছেন, সেটিকে তিনি ওই বহরের সবচেয়ে বড় নৌযান বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, এটি সবার শেষে (গত ৩০ সেপ্টেম্বর) ইতালি থেকে রওনা করেছিল। আর কনশানসের আগে ওই আটটি নৌযান রওনা করেছিল। এ ছাড়া আরও দুটি নৌকাও আগে ছিল। তবে ওই দুটি নৌকার অবস্থান এখনো নিশ্চিত নয়। কনশানস সবার শেষে রওনা করলেও এটির গতি বেশি হওয়ায় আগে রওনা করা আটটি নৌযানকে ছুঁয়ে ফেলেছে।
দুই বছর ধরে ইসরায়েল বিদেশি সাংবাদিকদের গাজায় প্রবেশে বাধা দিয়ে আসছে। এ সময়ে ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু করে আসছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ২৭০ দজনের বেশি সাংবাদিক নিহত হয়েছেন, অনেকে আটক ও কারাগারে বন্দী আছেন।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তৈরি হওয়া রামপাল পাওয়ার প্ল্যান্ট জনগণের মতামত ছাড়াই করা হয়েছে। বন মন্ত্রণালয়কে চাপ প্রয়োগ করে বনভূমি ছাড়তেও বাধ্য করা হয়েছে।
রোববার সকালে রাজধানীর গুলশানে হোটেল লেক ক্যাসলে রিজনাল ইনফ্র্যাসট্রাকচার মনিটরিং অ্যালাইয়েন্স কনফারেন্সে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, শেষ এক দশকে ঋণ, মুদ্রাস্ফীতি আর ভুল বিনিয়োগ জনগণের কাঁধে চাপিয়ে দেয়া হয়েছিলো যা কখনও শোধরানো হয়নি। জনগণের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই বিদেশি বিনিয়োগ আসায় দেশের নিরাপত্তা, পরিবেশ, বন সব কিছুই অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।
‘শিক্ষকতা পেশা: মিলিত প্রচেষ্টার দীপ্তি’ এ শ্লোগানকে সামনে রেখে ঝিনাইদহে বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত হয়েছে।
জেলা প্রশাসন ও জেলা শিক্ষা অফিসের আয়োজনে রোববার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি র্যালী বের করা হয়। র্যালীটি শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়। পরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আওয়াল, জেলা শিক্ষা অফিসার লুৎফর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসনে আরাসহ শিক্ষকরা বক্তব্য রাখেন।
সেসময় বক্তারা বলেন, শিক্ষকদের হাতেই গড়ে ওঠে জাতির ভবিষ্যৎ। তাই তাদের মর্যাদা রক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। তারা আরও বলেন, প্রযুক্তিনির্ভর যুগে শিক্ষকদের দায়িত্ব আরও বেড়েছে—শিক্ষার্থীদের জ্ঞান ও মানবিকতায় গড়ে তোলাই এখন মূল লক্ষ্য। তাই শিক্ষার্থীদের জ্ঞান, নৈতিকতা ও মানবিকতায় গড়ে তুলতে প্রতিটি শিক্ষককে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
মন্তব্য