মামুনুল হকের রিসোর্ট-কাণ্ড এবং দুই নারীর সঙ্গে তার ব্যক্তিগত সম্পর্কের পর বিয়ের প্রশ্নবিদ্ধ দাবি নিয়ে হেফাজতে ইসলামের মধ্যে বিভক্তি স্পষ্ট। একটি পক্ষ মামুনুলকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছে কেন্দ্রের কাছে।
সংগঠনের সহপ্রচার সম্পাদক মুফতি শরীফ উল্লাহর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমীর মধ্যকার আলাপনে মামুনুলকে বহিষ্কারের বিষয়ে কথা হয়েছে।
১১ এপ্রিল চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় হেফাজতের শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনার কথা জানিয়েছেন নেতারা। যদিও বৈঠক শেষে হেফাজতের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী বিষয়টি স্বীকার না করে দাবি করেছেন, মামুনুলের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কেউ কথা তোলেনি।
তবে হেফাজতসংশ্লিষ্ট ও তাদের বিষয়ে খোঁজখবর রাখা বিভিন্ন ব্যক্তি ফেসবুকে সেদিনের আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরে বলছেন উল্টো কথা।
হেফাজতের প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া নোমান ফয়েজী এখন বলছেন, সেদিন নায়েবে আমির আবদুল আউয়াল প্রসঙ্গটি তোলেন। তবে আলোচনা আর আগায়নি।
৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁর রয়্যাল রিসোর্টে জান্নাত আরা ঝর্ণা নামে এক নারীকে নিয়ে গিয়ে অবরুদ্ধ হন মামুনুল। স্থানীয় লোকজনের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি সঙ্গীনির নাম বলেন আমিনা তাইয়্যেবা। তবে প্রকৃতপক্ষে এটি তার চার সন্তানের জননী স্ত্রীর নাম।
পরে মামুনুল দাবি করেন, ঝর্ণাকে তিনি দুই বছর আগে বিয়ে করেছেন। যদিও এই দাবির সত্যতা দুই সপ্তাহ পরও বড় প্রশ্নের মুখে।
এর মধ্যে জান্নাতুল ফেরদৌস লিপি নামে আরও এক নারীর সঙ্গে মামুনুলের সম্পর্কের বিষয়টি সামনে আসে। আর মামুনুল সেই নারীর ভাইকে ডেকে নিয়ে তাকেও বিয়ের দাবি করেন বলে মোহাম্মদপুর থানায় করা একটি সাধারণ ডায়েরিতে (জিডি) বলা হয়েছে। সেই নারীর বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়ায়। সেখানে গিয়ে স্বজনদের কাছ থেকে কথিত বিয়ের বিষয়ে কোনো তথ্যই পাওয়া যায়নি।
এসব ঘটনায় হেফাজত কতটা বিব্রত সেটি যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী ও সহপ্রচার সম্পাদক মুফতি শরীফ উল্লাহর আলোচনাতেই স্পষ্ট।
দুইজনই একমত যে মামুনুলকে সংগঠনে রাখা যাবে না।
দুইজনের কথোপকথনের অডিও রেকর্ড এখন সামাজিক মাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে।
এতে কাসেমীকে বলতে শোনা যায়, ‘এটা কোন ধরনের বিয়ে? এমন বিয়ে তো আমগো করা দরকার।… ঝামেলা শেষ হোক। তারে (মামুনুল) এই পদে রাখা যাবে না।’
মুফতি শরীফ উল্লাহ বলেন, ‘এটা আমারও কথা এটা। তারে (মামুনুল) এখানে রাখা কোনো অবস্থাতেই সঠিক হবে না।’
কাসেমী আবার বলেন, ‘না না তারে (মামুনুল) এই পদে রাখা যাবে না।’
মুফতি শরীফ উল্লাহ বলেন, ‘তারে অবশ্যই এই পদ থেকে সরাইতে হবে।’
এর মধ্যে মামুনুল ফেসবুক লাইভে এসে ৩২ মিনিট বক্তব্য দিয়ে আরও বিপাকে পড়েন। তার রিসোর্ট-কাণ্ডের পর ফেসবুকে যেসব ফোনালাপ পাওয়া যাচ্ছিল, তার সমর্থকরা সেগুলোকে বানোয়াট বলে দাবি করে আসছিলেন। তবে মামুনুল কার্যত স্বীকার করে নেন ফোনালাপগুলো সঠিক।
এরপর থেকে মামুনুলের কোনো সাড়াশব্দ নেই। আর তিনি সেই ভিডিও তার ফেসবুক পেজ থেকে ডিলিট করে দিয়েছেন।
এর মধ্যে ১১ এপ্রিল হাটহাজারী মাদ্রাসায় ডাকা হয় জরুরি বৈঠক। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সোয়া ৪টা পর্যন্ত চলা বৈঠক শেষে হেফাজতের আমির জুনাইদ বাবুনগরী দাবি করেন, মামুনুলের বিষয়টি নিয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি।
তবে বৈঠকে উপস্থিত অন্য নেতারা বলছেন ভিন্ন কথা। নাম প্রকাশে না করার শর্তে নিউজবাংলাকে তারা বলেন, ঢাকাকেন্দ্রিক একটি পক্ষ মামুনুল হককে আরও সময় দেয়ার অনুরোধ জানায়। তবে হাটহাজারী মাদ্রাসাকেন্দ্রিক পক্ষটি চেয়েছিল মামুনুল হককে যেন হেফাজত থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। তবে শেষ পর্যন্ত মামুনুল হক টিকে যান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিস্তারিত কিছু বলতে না চাইলেও হেফাজতের প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া নোমান ফয়েজী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও নারায়ণগঞ্জ জেলার কমিটির সভাপতি মাওলানা আবদুল আউয়াল হুজুর মামুনুল হককে নিয়ে আলোচনা শুরু করতে চান। কিন্তু আমিরে হেফাজত জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, মামুনুল হকের বিষয়টি ব্যক্তিগত। তাই এই বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা না করাই উত্তম।’
তবে হেফাজতের বিষয়ে খোঁজখবর রাখা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের মুখপাত্র উসামা মাদানী ফেসবুকে লিখেছেন, বৈঠকের একপর্যায়ে মামুনুল হককে অব্যাহতির বিষয়ে একমত হন অধিকাংশ নেতা। তারা মনে করছেন, এই বিষয়টিকে ঘিরে মিডিয়া হেফাজত ইসলামকে জড়িয়ে নানা লেখালেখি করার সুযোগ পাচ্ছে।
তবে মামুনুলের রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা খোরশেদ আলম কাসেমী কিছুটা সময় চেয়ে বলেন যে, মামুনুল হক সাহেব নিজে থেকেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। তার সম্মান রক্ষার্থে অব্যাহতি না দিয়ে এই সুযোগ করে দেয়া হোক। পরে হেফাজতের ঢাকা মহানগর শাখার আমির জুনায়েদ আল হাবিব এই বক্তব্যে সমর্থন করেন।
এরপর মামুনুল হকের বিষয়টি নিয়ে আর কেউ কথা বলেনি।
মাওলানা খোরশেদ আলম কাসেমী বৈঠকে অনুরোধ করেছেন কি না, জানতে চাইলে হেফাজতের প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া নোমান ফয়েজী অবশ্য একে অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘তিনি এই বিষয়ে কোনো কথা বলেননি। যদি কেউ এটা বলে থাকে তাহলে সেটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট তথ্য।’
হেফাজতের নায়েবে আমির ও নারায়ণগঞ্জ শাখা কমিটির সভাপতি মাওলানা আবদুল আউয়ালও স্বীকার করেন, তাদের বৈঠকে মামুনুলকে নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।
আউয়াল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মজলিশে (সভায়) তো কত কথাই হয়। সব কথাই তো সবাই শুনে না, সবাই মানে না। তারপরও বলব, দলের সিদ্ধান্ত, আমার সিদ্ধান্ত।’
মামুনুলকে ছাঁটাইয়ে আপনার প্রস্তাব তোলায় আপনার তো অবমূল্যায়ন হয়েছে এমন মন্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমি কিছু বলব না, আমি শুধু শুনব, তারা কী বলতে চায়।’
কাসেমী-বশিরের মধ্যে কী সে আলোচনা
মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী: কাদের ভাই (নায়েবে আমির আহমাদ আবদুল কাদের) কালকে... আমার তো যাওয়ার ইচ্ছা নাই সেখানে। অনেক কথা বলল আসলে সে (মামুনুল হক) এই কাজটা কেন করল বা তার ...?
মুফতি শরীফ উল্লাহ: কাদের ভাই তো বেশ কিছু কথা বলছে কিন্তু।
মাওলানা কাসেমী: এগুলি আমার সাথে আগে বলছে। আমি বললাম না যে, আপনাকে আসতে হবে, আসি আপনার কথাগুলো বলতে হবে। কাদের ভাইয়ের অনেক কথা আমার কথার সাথে কিছু কিছু পয়েন্ট মিলছে না?
মুফতি শরীফ: হ্যাঁ, হ্যাঁ।
মাওলানা কাসেমী: আপনাকে (কাদের ভাই) আসতে হবে। কথাগুলি বলতে হবে। মধুপুরের পীরও বলবে না। নুরুল ইসলাম সাব তো আরেক ইয়ে। সে তো এগুলি বলবে না। কারও মুখ থেকে এই কথাগুলি আসেনাই।
এই কথাগুলি বলার কারণে তার (মামুনুল হক) যে হিস্ট্রির কথা যে বলল। এটা একটা ছেলেখেলার মতো না?
মুফতি শরীফ: শুধু ছেলেখেলা না, এটারে তো আপনার একেবারে আপনার বস্তিতে যারা বসবাস করে, হেরা এটা করলে এটা মানায়। একেবারের যে সমস্ত শব্দ ব্যবহার করছে, যেসব জায়গা ঘুরাইছে… এগুলোতে আমরা আলোচনা করতেও লজ্জা লাগে।
মাওলানা কাসেমী: এই যে তার ... তারা তো জানে না, তাই না।
মুফতি শরীফ: নাহ, কিচ্ছু জানে না।
মাওলানা কাসেমী: তার বউ আগের বউ যেটা, সেটা হইলো ভালো ফ্যামিলি। কিন্তু সেই ফ্যামিলির সাথে ... রাস্তার মেয়েটারে নিয়া এই করল! এই যে আইয়ুবী টাইয়ুবীর নাম কইল না? শয়তানগুলো তো ... অলি উল্লাহ আরমান, পাগলের বাচ্চা এরাই করাইছে। হেরা জানে কিন্তু ভাইয়েরা (মামুনুলের ভাইয়েরা) জানে না। এটা কোন ধরনের বিয়ে? এমন বিয়ে তো আমগো করা দরকার। এহ, কথা কন না কা।
মুফতি শরীফ: হ্যাঁ, এটাই। এখন অনেকে এটা বলবে যে কালকে অনেকে আমাকে ফোন করছে। বলতেছে শরীফ ভাই আপনারা যেটা করছেন আজকে। এটা কিন্তু আপনারা সামনে মাথায় রাইখেন। একজন নিম্নমানের মানে হেফাজতের মানুষ যদি কিছু করে তখন কিন্তু আপানারা মাথায় রাইখেন। আমরা তখন দেখব আপনারা কী করেন, সিদ্ধান্ত নেন।
মাওলানা কাসেমী: নাহ ইয়াটা, ঝামেলা শেষ হোক। তারে (মামুনুল) এই পদে রাখা যাবে না।
মুফতি শরীফ: এটা আমারও কথা এটা। তারে (মামুনুল) এখানে রাখা কোনো অবস্থাতেই সঠিক হবে না।
মাওলানা কাসেমী: না না তারে (মামুনুল) এই পদে রাখা যাবে না।
মুফতি শরীফ: তারে (মামুনুল) অবশ্যই এই পদ থেকে সরাইতে হবে।
আরও পড়ুন:জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে সরকারি সফর করেছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। শুক্রবার তাকে বহনকারী হেলিকপ্টার উপজেলার গোপীনাথপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করে। হেলিকপ্টার থেকে নামার পর জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। সেখানে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, আগামী এক মাসের ভেতর আলুর দাম কিছুটা বাড়তে পারে। আমরা আলু রপ্তানীতে প্রণোদনা দিচ্ছি এবং রপ্তানিতে সহযোগিতা করছি। চাহিদা তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে।
গোপীনাথপুর থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে বগুড়ার দুঁপচাচিয়া উপজেলার মর্তুজাপুর গ্রামে গিয়ে উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন জুম্মার নামাজ আদায়ের পর তার শ্বশুর মরহুম আব্দুর রাজ্জাক আকন্দের কবর জিয়ারত করেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টাককে ও হেলিকপ্টার দেখতে উৎসুক লোকজনের ভিড়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসছেন এমন খবর গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জানাজানি হয়।
সরকারি সফরসূচি অনুযায়ী, বাণিজ্য উপদেষ্টার হেলিকপ্টার শুক্রবার সকাল ১১ টায় গোপীনাথপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করে। সকাল থেকে প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত হন। সকাল ১০টার আগেই গণমাধ্যম কর্মীরাও গোপীনাথপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আসেন। তখন থেকেই উৎসুক জনতা গোপীনাথপুর উচ্চবিদ্যালয়ের দুটি ফটকে বাণিজ্য উপদেষ্টা ও হেলিকপ্টার দেখতে ভিড় করছিলেন। তবে দেড় ঘন্টা বিলম্বে দুপুর পৌঁনে একটার দিকে উপদেষ্টাকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করে।
গোপীনাথপুর এলাকার আবু রায়হান তার দুই বছরের নাতিকে কাঁধে নিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টাকে ও হেলিকপ্টার দেখতে আসেন। তিনি বলেন, আমার নাতি হেলিকপ্টার দেখার বয়না ধরেছে। নাতিকে কাঁধে নিয়ে হেলিকপ্টার দেখতে এসেছি। বাণিজ্য উপদেষ্টা গোপীনাথপুরে এসেছেন। গোপীনাথপুরের বাসিন্দা হিসেবে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। আগে কখনও সরকারের কোনা মন্ত্রী গোপীনাথপুরের এসেছিল কি না তা জানি না।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, মৎস্য খাতে এ দেশের বিজ্ঞানীদের অবদান গর্ব করার মতো। তাই মৎস্য সম্পদ রক্ষায় গবেষণার কোনো বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণা খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে।
শুক্রবার সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে মৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী তৃতীয় ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স ফর সাসটেইনেবল ফিশারিজ (আইসিএসএফ)-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন উপদেষ্টা। টেকসই মৎস্য ব্যবস্থাপনা ও গবেষণার উন্নয়ন, উদ্ভাবনী প্রযুক্তি বিনিময় এবং অংশীজনদের মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, অতিরিক্ত মাছ শিকার এবং অবৈধ জাল যেমন চায়না জাল ও ট্রল ডোর ব্যবহার করে মাছ শিকার অত্যন্ত দুঃখজনক। এতে মাছের ক্ষতি হচ্ছে এবং ভবিষ্যতের কথা কেউ ভাবছে না।
মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, শীতকালে কৃষিকাজে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারের ফলে বর্ষা মৌসুমে সেই বিষ পানিতে মিশে মাছের ক্ষতি করছে। কীভাবে কৃষিতে বালাইনাশকের ব্যবহার কমিয়ে উৎপাদন বাড়ানো যায় এবং মৎস্যসম্পদ রক্ষা করা যায় সে লক্ষ্যে কৃষি খাতে বালাইনাশক ব্যবহার সীমিত করতে ইতোমধ্যে একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ইলিশের প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, চলতি বছর ইলিশ আহরণের পরিমাণ কমে যাওয়ায় বাজারে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, বৃষ্টি সময়মতো না হওয়া, জলবায়ু পরিবর্তন, দূষণ এবং নদীর নাব্যতা হ্রাসসহ নানা কারণে ইলিশ আহরণ কমে গেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে মিঠা পানির মাছচাষ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ ও মানসম্মত খাদ্য নিশ্চিত করতে মিঠা পানির মাছের চাষ বাড়াতে হবে। তাই মাছের বৈচিত্র রক্ষা এবং হাওড়, নদীসহ প্রজনন ক্ষেত্রগুলো সংরক্ষণে জোর দিতে হবে।
হাওড়ের উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হাওড়ে অপরিকল্পিত সড়ক বা অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ করে প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস করা যাবে না। হাওড় গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটকে সমন্বয় করে কীভাবে হাওড় রক্ষা করা যায়, সে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
সম্মেলনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলিমুল ইসলাম। মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. নির্মল চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্র, পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী, সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এটিএম মাহবুব-ই-এলাহি, কোয়ালিটি ফিডস লিমিটেডের চেয়ারম্যান এম কায়সার রহমান।
সম্মেলনের মূল প্রবন্ধ স্পিকার হিসেবে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল ওয়াহাব। তিন দিনব্যাপী ওই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ১১টি সেশনে প্রায় আড়াই শতাধিক বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হবে।
দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে চিকিৎসকদের ‘মানবিক চিকিৎসক’ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেছেন, চিকিৎসকদের সবসময় রোগীদের প্রতি মানবিক ব্যবহার এবং তাদের সেবার মাধ্যমে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে হবে।
শুক্রবার চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদে মা ও শিশু হাসপাতাল পরিদর্শন করতে এসে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। মা ও শিশু হাসপাতালের কনফারেন্স কক্ষে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
নূরজাহান বেগম বলেন, ঢাকায় সবক্ষেত্রে বিশেষ বিশেষ হাসপাতাল থাকলেও চট্টগ্রামে জনসাধারণের তুলনায় তা খুবই অপ্রতুল। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতাল এবং চট্টগ্রাম রেলওয়ে হাসপাতালের মাধ্যমে সরকারিভাবে চিকিৎসা সেবা দেয়া হলেও এখানকার জনসাধারণের তুলনায় তা খুব কম। তার ওপর সরকারি হাসপাতালগুলোতে যন্ত্রপাতির সংকট এবং বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার কারণে ঠিকমতো চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হতো না। বর্তমান সরকার দায়িত্বে নেওয়ার পর এসব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
জাপানে সামনে ১ হাজার দক্ষ নার্স পাঠানো হবে জানিয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাপান সফরে গিয়ে যে ১লাখ দক্ষ জনবল নেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন জাপান সরকারকে, তারই ধারাবাহিকতায় জাপানে সামনে ১ হাজার দক্ষ নার্স পাঠানো হবে। আমাদের বাইরে নানা ক্ষেত্রে দক্ষ এবং প্রশিক্ষিত জনবল পাঠানোর সুযোগ থাকলেও নানা অব্যবস্থাপনা, দক্ষতা এবং প্রশিক্ষণের অভাবে আমরা তা পারছি না।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, সারাদেশে সরকারিভাবে আমাদের ১০হাজার চিকিৎসক এবং ১২হাজার নার্সের সংকট রয়েছে। সে সংকট কাটানোর লক্ষ্যে সরকার ইতোমধ্যে ৩হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিয়েছে, সামনে আরও ২হাজার নিয়োগ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। নার্সের সংকট নিরসনে সাড়ে ৩ হাজার নার্স নিয়োগ করা হবে।
উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম বলেন, সরকার সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে ক্যান্সার এবং হার্টের রিং এর দাম কমিয়েছে। সামনে তিনশ’ ওষুধের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার কাজ শুরু করেছে। ডেঙ্গুর কিটের দাম সরকারিভাবে ৩৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সারাদেশে উপজেলা হাসপাতালগুলোতে বিষধর সাপের কামড়ের রোগীদের জন্য এনটিভেনম সরবরাহ করা হচ্ছে। চিকিৎসা খাতের সংকট দূর করার জন্য আরও ৩৫০কোটি টাকার বিভিন্ন সরঞ্জাম এবং ওষুধ আমদানি করা হবে।
মা ও শিশু হাসপাতালের সভাপতি সৈয়দ মো. মোরশেদ হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ডা. শেখ ফজলে রাব্বী, চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গভর্নিং বডির সদস্য ড. মনজুরুল ইসলাম, মা ও শিশু হাসপাতালের সহসভাপতি আবদুল মান্নান রানা, ডা. কামরুন্নাহার দস্তগীর, যুগ্ম সম্পাদক জাহিদ হাসান, মো. সগীর, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. রেজাউল করিম প্রমুখ।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, মৎস্য খাতে এ দেশের বিজ্ঞানীদের অবদান গর্ব করার মতো। মৎস্যসম্পদ রক্ষায় গবেষণার কোনো বিকল্প নেই। তাই সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণা খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে।
উপদেষ্টা আজ সকালে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে মৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী তৃতীয় ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স ফর সাসটেইনেবল ফিশারিজ (আইসিএসএফ)-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। টেকসই মৎস্য ব্যবস্থাপনা ও গবেষণার উন্নয়ন, উদ্ভাবনী প্রযুক্তি বিনিময় এবং অংশীজনদের মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ কনফারেন্স আয়োজন করা হয়।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, অতিরিক্ত মাছ শিকার, অবৈধ জাল যেমন চায়না জাল ও ট্রল ডোর ব্যবহার করে মাছ শিকার অত্যন্ত দুঃখজনক। যারা এভাবে সাময়িক লাভের জন্য মাছ শিকার করছে, তারা প্রকৃত মৎস্যজীবী নয়। এতে মাছের ক্ষতি হচ্ছে এবং ভবিষ্যতের কথা কেউ ভাবছে না। মৎস্য অধিদপ্তর ও বিএফআরআইকে এ বিষয়ে সম্মিলিতভাবে দায়িত্ব নিতে হবে।
মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, শীতকালে কৃষিকাজে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারের ফলে বর্ষা মৌসুমে সেই বিষ পানিতে মিশে মাছের ক্ষতি করছে। কীভাবে কৃষিতে বালাইনাশকের ব্যবহার কমিয়ে উৎপাদন বাড়ানো যায় এবং মৎস্যসম্পদ রক্ষা করা যায়— সে লক্ষ্যে কৃষিখাতে বালাইনাশক ব্যবহার সীমিত করতে ইতোমধ্যে একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ইলিশের প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, এ বছর ইলিশ আহরণের পরিমাণ কমে যাওয়ায় বাজারে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। গবেষণায় দেখা যাচ্ছে বৃষ্টি সময়মতো না হওয়া, জলবায়ু পরিবর্তন, দূষণ এবং নদীর নাব্যতা হ্রাসসহ নানা কারণে ইলিশ আহরণ কমে গেছে। তবে ইলিশ যাতে সাধারণ মানুষের পাতে পৌঁছায়, সে লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সংশ্লিষ্টদের তিনি আরো গুরুত্বপ্রদানের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে মিঠা পানির মাছ চাষ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মাছের প্রাপ্যতা বাড়লেও তা নিরাপদ কিনা, সে বিষয়েও নজর দিতে হবে। নিরাপদ ও মানসম্মত খাদ্য নিশ্চিত করতে মিঠা পানির মাছের চাষ বাড়াতে হবে। তিনি আরো বলেন, মাছের বৈচিত্র্যের দিক থেকে বাংলাদেশ অনন্য। তাই মাছের বৈচিত্র রক্ষা এবং হাওড়, নদীসহ প্রজননক্ষেত্রগুলো সংরক্ষণে জোর দিতে হবে। নদীগুলোর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে সরকার সামগ্রিক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
হাওড়ের উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হাওড়ে অপরিকল্পিত সড়ক বা অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ করে প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস করা যাবে না। হাওড় গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটকে সমন্বয় করে কীভাবে হাওড় রক্ষা করা যায়, সে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
কনফারেন্সের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলিমুল ইসলাম। তিনি বলেন, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গবেষণার মাধ্যমে মাছ, গবাদিপশু ও ফসলের উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন করছে, যা দেশের খাদ্য ঘাটতি পূরণ ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। তিনি আরও বলেন, পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এ খাতে আরও ব্যাপক অবদান রাখতে সক্ষম হবেন। দেশে উদ্ভাবিত ভ্যাকসিন বৃহৎ পরিসরে উৎপাদনের সুযোগ তৈরি হলে শুধু দেশের চাহিদা পূরণ নয়, বরং তা বিদেশে রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেরও পথ খুলে দেবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. নির্মল চন্দ্র রয়ের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্র, পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধক্ষ অধ্যাপক ড. এটিএম মাহবুব-ই-এলাহি, কোয়ালিটি ফিডস লিমিটেডের চেয়ারম্যান এম কায়সার রহমান।
কনফারেন্সের কী-নোট স্পিকার হিসেবে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল ওয়াহাব।
তিন দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ১১টি সেশনে প্রায় আড়াই শতাধিক বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হবে। এতে দেশি-বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং সংশ্লিষ্ট খাতের বিজ্ঞানী ও গবেষকরা অংশ নিচ্ছেন।
অধূমপায়ীদের সুরক্ষা এবং তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় মৎস্য অধিদপ্তরের অফিস প্রাঙ্গণ শতভাগ তামাকমুক্ত রাখার বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে তামাক বিরোধী সংগঠন তাবিনাজ (তামাক বিরোধী নারী জোট)। সভাটি আজ বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫) মৎস্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মোঃ আব্দুর রউফ। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিচালক (প্রশাসন), পরিচালক (অভ্যন্তরীণ মৎস্য), প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, উপপরিচালক, সিনিয়র সহকারী পরিচালক, সহকারী পরিচালক ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাসহ প্রায় ৪০ জন কর্মকর্তা।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আতাউর রহমান মাসুদ। তিনি তামাকজাত দ্রব্যের ভয়াবহ ক্ষতিকর দিক এবং এর বহুমুখী প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তাবিনাজের পরিচালক সীমা দাস সীমু তার বক্তব্যে ধোঁয়ামুক্ত ও ধোঁয়াযুক্ত তামাকজাত দ্রব্য এবং গবেষণালব্ধ তথ্য তুলে ধরেন। তাবিনাজ কর্মী শারমিন কবীর বীণা গ্রামীণ তামাক চাষ ও এর ক্ষতিকর দিক নিয়ে আলোকপাত করেন।
উন্মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা অফিস প্রাঙ্গণ শতভাগ তামাকমুক্ত রাখতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ ও কর্মপরিকল্পনা দেন।
সুপারিশসমূহ:
১. অফিস প্রাঙ্গণে ধূমপানের জন্য কোনো স্মোকিং জোন থাকবে না।
২. ক্যান্টিনে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হবে।
৩. দেশব্যাপী মৎস্য অধিদপ্তরের সকল অফিস প্রাঙ্গণকে শতভাগ তামাকমুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হবে।
৪. সকল অফিস প্রাঙ্গণে ‘তামাকমুক্ত এলাকা’ লেখা সম্বলিত সাইনেজ প্রতিস্থাপন করা হবে।
সভায় উপস্থিত কর্মকর্তারা তামাকমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলার প্রয়াসে সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস প্রদান করেন।
অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে স্নাতকে (অনার্স) তথ্য প্রযুক্তি ও ইংরেজি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
আধুনিক পাঠ্যক্রম প্রণয়নের পাশাপাশি তা বাস্তবায়নে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রয়োজনীয় সহায়তা ও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা দেওয়া হবে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজে গতকাল বুধবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারের এটুআই প্রকল্পের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ এসব কথা বলেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন শিক্ষাক্রমের আইসিটি বিষয়ের ‘টিচিং, লার্নিং অ্যান্ড অ্যাসেসমেন্ট স্ট্র্যাটেজি’ শীর্ষক এ কর্মশালার প্রথম সেশনে সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ও এটুআই প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক মো. রশিদুল মান্নাফ কবীর।
উপাচার্য বলেন, কলেজগুলোতে তথ্য প্রযুক্তি শিক্ষাদানে শিক্ষক সংকটসহ নানা সমস্যা রয়েছে। এ বিষয়ে সহায়তার জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সব টেকনিক্যাল কলেজ ও কম্পিউটার কাউন্সিলের সাথে আলোচনা করছে।
তিনি আরও বলেন, দেশের কলেজ শিক্ষার্থীদের মেধার ঘাটতি নেই। সঠিক দিকনির্দেশনা পেলে তারা সহজেই তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ হয়ে উঠবে।
শিক্ষার্থীদের জন্য আধুনিক, সময়োপযোগী ও কর্মমুখী তথ্য প্রযুক্তি পাঠ্যক্রম প্রণয়নে সরকারের এটুআই প্রোগ্রাম ও শিক্ষাবিদদের প্রতি আহ্বান জানান অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ।
কর্মশালার দ্বিতীয় সেশনে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নুরুল ইসলাম।
দিনব্যাপী এ কর্মশালায় দেশের বিভিন্ন কলেজের ৮টি বিভাগের ৪০ জন তথ্য প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন। প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ড. নাজমা তারা এবং মির্জা মোহাম্মদ দিদারুল আনাম।
এছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তরের পরিচালক ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মন্তব্য