× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

জাতীয়
হঠাৎ গরম থেকে নরম হেফাজত
google_news print-icon

হঠাৎ ‘গরম’ থেকে ‘নরম’ হেফাজত

হঠাৎ-গরম-থেকে-নরম-হেফাজত
মামুনুল হকের রিসোর্টকাণ্ডে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের কথাবার্তা অনেকটা নরম হয়ে এসেছে। ছবি: নিউজবাংলা
গত মার্চ থেকে বারবার সরকার ফেলে দেয়ার ‍হুমকি দেয়া হেফাজত নেতারা এখন বলছেন, সরকার ফেলে দেয়া তাদের কাজ নয়। হেফাজতের এই অবস্থান পরিবর্তনে কাজ করেছে ‍দুটি ঘটনা। দেশের বিভিন্ন এলাকায় তাণ্ডবের পর গ্রেপ্তার অভিযান এবং সোনারগাঁয়ে মামুনুল হকের রিসোর্ট-কাণ্ড। এইসব ঘটনাপ্রবাহে চুপসে গেছে সংগঠনটি।

২৫ মার্চ। বায়তুল মোকাররমের সামনের সমাবেশে বক্তা হেফাজত নেতা মামুনুল হক। বক্তব্যের ভাষা বেশ আক্রমণাত্মক। বলেন, ‘নরেন্দ্র মোদির আগমনই হবে সরকারের পতনের ক্ষেত্র, যদি সরকার আমাদের দাবি না মানে।’

২৭ মার্চ। পরদিনের হরতালকে সামনে রেখে আবার বায়তুল মোকাররমের সামনে হেফাজতের সমাবেশ। এবার একই ধরনের বক্তব্য কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ফজলুল করিম কাসেমীর। বলেন, ‘হরতালে বাধা দিলে সরকার পতনের আন্দোলন শুরু হবে।’

৩১ মার্চ। হরতালে তাণ্ডবের নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দেয়া ১১ বিশিষ্ট ব্যক্তিকে তুলাধুনা করে হেফাজতের বিবৃতি। বক্তব্য: ‘আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসী ভারতের করদরাজ্যে পরিণত করার চক্রান্ত আমরা গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলে নস্যাৎ করে দিব, ইনশা আল্লাহ।… কোনো অপশক্তির হুমকি-ধমকিকে নায়েবে রাসূল ওলামায়ে কেরাম ও তৌহিদি জনতা পরোয়া করে না।’

২ এপ্রিল। বায়তুল মোকাররমে হেফাজতের সমাবেশ। মামুনুল হক বললেন, ‘সাবধান হয়ে যান আমাদের ভাইদের একজনকেও আর গ্রেপ্তার করবেন না। মামলা প্রত্যাহার করুন যাদেরকে গ্রেপ্তার করেছেন তাদের।’

৭ এপ্রিল। জাতীয় সংসদে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় হেফাজতের বিবৃতি। ‘আমরা কোনো ধরনের রক্তচক্ষুকে পরোয়া করি না। কোনো সংঘাত চাই না। কিন্তু আমাদের উসকানি দিয়ে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করলে তার পরিণতি সরকারের জন্য ভালো হবে না।’

এর পর দিন হেফাজতের আমির জুনাইদ বাবুনগরীর নামে গণমাধ্যমে বিবৃতি। তার বক্তব্য: ‘হেফাজতে ইসলাম একটি অরাজনৈতিক ও ধর্মীয় সংগঠন। কাউকে ক্ষমতা থেকে নামানো কিংবা কাউকে ক্ষমতায় বসানো হেফাজতের কাজ নয়। আমরা শান্তিপ্রিয় এবং সহিংসতার বিরুদ্ধে।’

গত কয়েক মাস ধরে সভা-সমাবেশে, ওয়াজে হুমকি ধমকি দিয়ে আসা কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক সংগঠনটি মার্চের শেষে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকে ঘিরে ব্যাপক সহিংসতা চালায় দেশের বিভিন্ন এলাকায়। গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের রয়্যাল রিসোর্টে নারী নিয়ে মামুনুল হক অবরুদ্ধ হওয়ার পর তাকে উদ্ধার করতে গিয়েও তাণ্ডব চালায় হেফাজত কর্মীরা।

হঠাৎ ‘গরম’ থেকে ‘নরম’ হেফাজত
হরতালে সারাদেশে তাণ্ডব চালায় হেফাজতে ইসলাম। ছবি: নিউজবাংলা

সোনারগাঁ তো বটেই, মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া, সুনামগঞ্জের ছাতকেও ত্রাস তৈরি করে সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সেই সঙ্গে অনলাইনে বিশেষ করে ফেসবুক লাইভে চলতে থাকে হুমকি ধমকি।

তবে সরকারপ্রধান পার্লামেন্টে এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একাধিক স্থানে যখন হেফাজতকে সতর্ক করে দিয়ে কড়া বক্তব্য রাখেন, সেইসঙ্গে সহিংসতার ঘটনায় গ্রেপ্তার অভিযান শুরু হয়, তখন হেফাজতের বক্তব্য নরম হয়ে আসে। বাবুনগরীর শেষ বিবৃতিতে কোনো ধরনের হুমকি নেই বরং জনগণের মধ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার ব্যাপারে সরকারকে সতর্ক করা হয়েছে।

হেফাজতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে এতে বলা হয়েছে, ‘অন্যথায় আলেম-ওলামার সঙ্গে বাড়াবাড়ির কারণে সরকার নিঃসন্দেহে জনগণের কাছে আরও ঘৃণিত ও নিন্দিত হবে।’

নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশে এলে ‘সরকার পতনের ক্ষেত্র তৈরি করার’ ঘোষণা দেয়ার পর ২৬ মার্চ চট্টগ্রামের হাটহাজারী, ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় ত্রাস চালায় হেফাজত। আক্রমণ হয় বহু সরকারি স্থাপনা, এমনকি থানায়।

দুই দিন পর হরতালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে তাণ্ডব ছিল নজিরবিহীন। সরকারি বেসরকারি স্থাপনার পাশাপাশি সেখানে হামলা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিচিহ্নগুলোতে। নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান, হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ এবং বিভিন্ন স্থানে মহাসড়কে যানবাহনে চলে তাণ্ডব।

তবে এখন কিছুই স্বীকার করে না হেফাজত। সংগঠনের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নোমান ফয়েজী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আসলে আমরা সরকারকে কোনো হুমকি দেইনি। এখানে বোঝার ভুল আছে, যা আমাদের আমির স্পষ্ট করে বলেছেন। আমরা কারও রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করি না, কারও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের হাতিয়ারও হই না। কোনো রাজনৈতিক ফাঁদে আমরা পা দেব না। এ কারণে দেশের বিরোধী জোটগুলো বিভিন্ন সময়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও লাভবান হয়নি।’

হঠাৎ ‘গরম’ থেকে ‘নরম’ হেফাজত
হরতালে হেফাজত সবচেয়ে তাণ্ডব চালায় নারায়ণগঞ্জে। ছবি: নিউজবাংলা

তিনি বলেন, ‘আমাদের পরিষ্কার কথা, অদূর ভবিষ্যতেও হেফাজতে ইসলাম কারও রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করবে না। আর সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের কর্মসূচি ছিল বলে যেটা বলা হচ্ছে, এটাও ঠিক না।’

এভাবে ‘উত্তপ্ত’ থেকে ‘শীতল’ হয়ে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব ফজলুল করিম কাশেমী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখন লকডাউনের বিষয়টি সামনে চলে আসছে। আমাদের কর্মীরাও অনেকে আহত, প্রতিদিনই কিছু কিছু গ্রেপ্তার হচ্ছে। এ বিষয়গুলো আমরা আগে দেখছি। আমরা সরকারের সঙ্গে কোনো সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার দিকে যাচ্ছি না। তার আসলে প্রয়োজনও নেই।’

বাবুনগরীর বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘সরকারের পতন ঘটানো আমাদের কাজ না। তবে হয়ত কেউ কেউ গরম কথা বলে থাকতে পারেন। কিন্তু আমাদের সংগঠনের আমির যে কথা বলেছেন, সেটাই বাস্তব কথা।’

তা হলে হরতালের মতো কর্মসূচি কেন দিয়েছিলেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের ওপর হাটহাজারী ও ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় জুলুম হয়েছে তাই আমরা এমন কর্মসূচি দিয়েছি।

‘হেফাজতে ইসলাম একটা দ্বীনি আন্দোলন। ধর্মীয় বিষয়ে যদি কোনো আঘাত আসে, সে বিষয়ে আমরা প্রতিবাদ করি। আর নরেন্দ্র মোদির বিষয়টাও এ রকমই ছিল। মোদি ভারতের মুসলমানদের টার্গেট করে কাজ করেছে। যেহেতু আমরা ধর্মীয় ইস্যুতেই কাজ করি, মুসলমানরা যেখানে নির্যাতিত হয়, সেখানেই তো আমাদের কথা বলার অধিকার আছে।’

হঠাৎ ‘গরম’ থেকে ‘নরম’ হেফাজত
কথিত দ্বিতীয় স্ত্রীসহ সোনারগাঁয়ের একটি রিসোর্টে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব স্থানীয়দের হাতে অবরুদ্ধ হওয়ার পর থেকে সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা অনেকটা চুপ। ছবি: নিউজবাংলা

‘শান্তি’ চান মামুনুলও

গত বৃহস্পতিবার বহুল আলোচিত ফেসবুক লাইভে এসে মামুনুল হক বলেছেন, তারা শান্তি চান। যে করোনা মহামারি এতদিন তিনি স্বীকার করতে চান নি, সেই পরিস্থিতিতে এখন একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহের কথাও বলেছেন।

সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই সকল মহলের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান। কেউ কারও ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করব না। অন্য কারও সঙ্গে মতের অমিল থাকতে পারে, রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকতে পারে, সেখানে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করবেন, কোনো আদর্শিক ভিন্নতা থাকতে পারে, আদর্শিকভাবে আপনি আপনার যুক্তিতর্কসহ ভিন্ন মতাদর্শকে মোকাবিলা করবেন।’

করোনা পরিস্থিতির উল্লেখ করে সেদিন তিনি বলেন, ‘সকল মহলকে আহ্বান জানাব, আসুন বিশ্বে কোভিড নাইনটিনের যে ভয়াবহ পরিবেশ বিরাজ করছে, এই পরিস্থিতিতে আমরা দেশবাসী সবাই ঐক্যবদ্ধ থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলা করি।’

অথচ, ২ এপ্রিল বায়তুল মোকাররমে হেফাজতের সমাবেশে অভিযোগ করা হয়, সরকার করোনাকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছে। সেদিন মামুনুলের উপস্থিতিতে সংগঠনের ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি জুনাইদ আল হাবীব বলেন, ‘করোনা হওয়ার পর স্ত্রী পুত্র তাদের পাশে আসে না। ছেলেমেয়েরা তাকে ছেড়ে চলে গেছে। তার রুমের ভেতরে গিয়েছি, মাথার পাশে বসেছি, মাথায় হাত ভুলিয়ে দিয়েছি, দোয়া করেছি। মাশাআল্লাহ আমার করোনা হয় নাই, আমার ফ্যামিলির কারো করুণা হয় নাই। সুতরাং এই অজুহাত দেখিয়ে ইসলামি সম্মেলন তারাবির নামাজ, মাদ্রাসা মসজিদে নামাজ বন্ধের পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন না। করলে হেফাজত ইসলাম আবার মাঠে নামবে।’

হঠাৎ ‘গরম’ থেকে ‘নরম’ হেফাজত
নিজেদের অরাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে দাবি করলেও বিভিন্ন রাজনৈতিক ইস্যুতে সরব উপস্থিতি দেখা যায় হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের।

‘অরাজনৈতিক’ হেফাজতের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা

২০০৯ সালে ঘোষিত নারী নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে পরের বছর চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসার শাহ আহমেদ শফীকে প্রধান করে গঠন করা হয় হেফাজতে ইসলাম। একে অরাজনৈতিক সংগঠন বলা হলেও আহমেদ শফী ছাড়া শীর্ষ নেতাদের প্রায় সবারই রাজনৈতিক পরিচয় ছিল। সে সময় শীর্ষ নেতৃত্বের প্রায় সবাই ছিলেন বিএনপি-জামায়াত জোটের শরিক।

বেশ কিছুদিন বিরতির পর ২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলন গণজাগরণের নেতাদের ফাঁসির দাবিতে হঠাৎ মাঠে নামে হেফাজত। তাদের কর্মসূচিতে লাভবান হওয়ার সুযোগ ছিল বিএনপির শরিক জামায়াতে ইসলামীর। কারণ, তাদের শীর্ষ নেতারা তখন ফাঁসির দড়ির সামনে।

ওই বছরের ৫ মে রাজধানীর শাপলা চত্বর ও আশপাশে তাণ্ডবের সময় তখনকার ২০ দলীয় জোটের শরিক হেফাজত নেতারা স্পষ্টতই সরকার পতনের কথা বলেছিলেন। বিএনপি-জামায়াত জোটও সে সময় হেফাজতের ওই কর্মসূচিকে ঘিরে উৎসাহী হয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতার কথা বলেছিল। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া হেফাজতের পক্ষে নেমে আসতে তার নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছিলেন।

এরপর নানা ঘটনাপ্রবাহে কওমিপন্থিদের সঙ্গে বিএনপির বিভেদ তৈরি হয় আর কওমিদের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে নেয় আওয়ামী লীগ। কওমি শিক্ষা ব্যবস্থার সর্বোচ্চ সনদ দাওরায়ে হাদিসকে দেয়া হয় ইসলামিক স্টাডিজে মাস্টার্সের সমমান। প্রথমবারের মতো সরকারি চাকরি পেতে শুরু করেন কওমি আলেমরা।

তবে গত বছর শাহ আহমেদ শফীর মৃত্যুর পর হেফাজতে আবার বিএনপি সম্পৃক্তরা নেতৃত্বে চলে আসেন। গত নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে জুনাইদ বাবুনগরীকে আমির করে যে কমিটি গঠন করা হয়, তাতে সিংহভাগকেই বিএনপি জোটের শরিক বিভিন্ন ইসলামী দল থেকে নেয়া হয়েছে।

১৫১ সদস্যের কমিটিতে ২০ দলীয় জোটের শরিক জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নেতাই আছেন ৩২ জন। জোটের আরেক শরিক খেলাফতে ইসলামীর শীর্ষ নেতারাও স্থান পেয়েছেন এতে।

সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত মামুনুল হকের খেলাফত মজলিস ২০ দলীয় জোট থেকে বের হয়ে এলেও সাম্প্রতিক সময়ে তাদের কাছাকাছি এসেছে।

হঠাৎ ‘গরম’ থেকে ‘নরম’ হেফাজত
কথিত দ্বিতীয় স্ত্রীসহ রিসোর্টে অবরুদ্ধ হওয়ার পর তাণ্ডব চালিয়ে মামুনুল হককে ছাড়িয়ে নিচ্ছেন হেফাজতের কর্মীরা। ছবি: নিউজবাংলা

মামুনুলকাণ্ডে বিব্রত

মামুনুল হকের রিসোর্টকাণ্ডের পর তার পক্ষে প্রকাশ্যেই অবস্থান নেয় হেফাজত। তবে মামুনুলের দ্বিতীয় বিয়ের দাবি যখন প্রশ্নের মুখে পড়েছে, তখন সংগঠনের নেতারা এই বিষয়টি নিয়ে আগের মতো সোচ্চার নন। কথা বলাও কমিয়ে দিয়েছেন তারা। এমনকি মামুনুলকে সংগঠন থেকে বাদ দেয়ার আলোচনাও আছে।

এ বিষয়ে এক প্রশ্নে প্রচার সম্পাদক নোমানী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা যাচাই করে দেখেছি তিনি সঠিক আছেন। তবে এ বিষয়ে যদি আমিরে হেফাজত (বাবুনগরী) মনে করেন তার সংগঠনে থাকা ঠিক না, তবে অবশ্যই পরিবর্তন আসবে।’

শুরুতে মামুনুলের রিসোর্টকাণ্ড ও কথিত ‘দ্বিতীয় বিয়ে’ নিয়ে যারা ‘অপপ্রচার’ করেছেন তাদের কঠোরভাবে মোকাবিলার হুমকি দিয়ে আসা সংগঠনটি গত সাত দিনে এ নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়নি। গত ৭ এপ্রিল থেকে আসা কোনো বিবৃতিতে এই প্রসঙ্গটি উল্লেখই নেই। এদিকে মামুনুল হক ফেসবুক লাইভে এসে হেফাজতে বিভক্তি ঠেকানোর আকুতি জানিয়েছেন। বলেছেন, তারা বিভক্ত হলে তার পরিণাম ভালো হবে না।

অথচ রিসোর্টকাণ্ডের পর দিন ৪ এপ্রিল ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে এক প্রতিবাদ সভায় বলা হয়, ‘হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে যদি কেউ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়, তবে তার গদি টিকবে না।’

হেফাজতের ইসলামের সহকারী মহাসচিব সাখাওয়াত হোসেন রাজী সেদিন মামুনুল হকের ফাঁস হওয়া কল রেকর্ড নিয়ে বলেছিলেন, ‘আমরা জানি, ওগুলো কাট-ছাঁটকরা যায়। এগুলো আইনবিরোধী। এ জন্য আমরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ব্যবস্থা নেব।’

মামুনুলকে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ফেসবুক লাইভে এসে। তবে তিনি এসব ফোনালাপকে কার্যত সত্য বলে স্বীকার করে নেন। আর এর পরেই চুপসে যান হেফাজত নেতারা।

মামুনুল হকের সোনারগাঁওয়ের ঘটনায় কল রেকর্ড ফাঁস নিয়ে হেফাজতের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করার উদ্যোগ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে ফজলুল করিম কাশেমী বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমাদের প্রস্তুতি চলছে।’

আরও পড়ুন:
হাটহাজারীতে বৈঠকে বসেছেন হেফাজত নেতারা
হেফাজতের তাণ্ডব: বাখরাবাদে হামলার ‘উসকানিদাতা’ গ্রেপ্তার
হেফাজতের তাণ্ডবে এবার পটিয়ায় গ্রেপ্তার ৫
‘হেফাজতের সঙ্গে আপস আমাদের মস্তবড় ভুল’
সোনারগাঁয়ে আ. লীগ কার্যালয় ভাঙচুর: মামুনুলের বিরুদ্ধে মামলা

মন্তব্য

আরও পড়ুন

জাতীয়
The return of Khaleda Zia will ease the way of passing democracy
মির্জা ফখরুল

খালেদা জিয়ার ফিরে আসা গণতন্ত্র উত্তরণের পথ সহজ করবে

খালেদা জিয়ার ফিরে আসা গণতন্ত্র উত্তরণের পথ সহজ করবে বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিনএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ফিরে আসা গণতন্ত্র উত্তরণের পথ সহজ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে প্রবেশের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া দীর্ঘকাল ফ্যাসিবাদের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ফ্যাসিবাদ বিদায় নেওয়ার পর কারাবন্দিত্ব থেকে মুক্ত হয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশে গিয়েছিলেন। সেখানে প্রায় ৪ মাস চিকিৎসা শেষে আজকে দেশে ফিরে আসছেন। এটা আমাদের জন্য, জাতির জন্য একটা আনন্দের দিন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্র উত্তরণের এই সময়ে খালেদা জিয়ার উপস্থিতি একটি উল্লেখযোগ্য দিক। তার ফিরে আসা আমাদের গণতন্ত্র উত্তরণের পথ সহজ করবে। দেশকে সঠিক ও বৈষম্যহীন পথে নিয়ে যেতে সহযোগিতা করবে।

গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের লন্ডনে যান বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। সেখানে লন্ডন ক্লিনিকে টানা ১৭ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ২৫ জানুয়ারি থেকে তার ছেলে তারেক রহমানের বাসায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

মন্তব্য

জাতীয়
BNP wants a roadmap for the election for December Nazrul Islam Khan

ডিসেম্বর ধরেই নির্বাচনের রোডম্যাপ চায় বিএনপি : নজরুল ইসলাম খান

ডিসেম্বর ধরেই নির্বাচনের রোডম্যাপ চায় বিএনপি : নজরুল ইসলাম খান

আগামী ডিসেম্বর ধরেই জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ চায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। এ সময়ে ভোট আয়োজনে বাঁধা দেখছে না বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

তিনি বলেছেন, ‘জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিএনপি ও সরকারের চাওয়ার মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য নেই। সরকার তো বলেনি ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে না। তিনি বলেন, ‘এজন্য আমরা বলেছি, ডিসেম্বরের একটা তারিখ ধরে রোডম্যাপ ঘোষণা করা হোক।’

আজ সোমবার বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে লেবার পার্টির সঙ্গে লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন নজরুল ইসলাম খান।

তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। এটাকে ধরে একটা রোড ম্যাপ ঘোষণা করা হোক। সরকার বলছে যে, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। তার মানে তারা তো বলেনি যে, ডিসেম্বর নির্বাচন হবে না। কিন্তু আমরা বলছি, ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে এরকম একটা তারিখ ধরে রোড ম্যাপ ঘোষণা করা হোক। পার্থক্য তো খুব বেশি না।’

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘সরকারের কথা অনুযায়ী নির্বাচন ডিসেম্বরে হতে পারে, জানুয়ারিতে হতে পারে, ফেব্রুয়ারিতেও হতে পারে। কাজেই আমাদের সঙ্গে সরকারের পার্থক্য তো বহু মাসের না। আমরা শুধু সরকারকে বলছি, এভাবে না বলে, এভাবে বলেন।’

চলতি বছরের মাঝামাঝি নির্বাচন কমিশন ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশন তাদের দ্বায়িত্ব পূর্ণ করতে যাচ্ছেন। তাহলে ডিসেম্বরে নির্বাচনে বাধা কোথায় প্রশ্ন রেখে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, যারা ডিসেম্বরে নির্বাচন চায় না তাদেরই উত্তর দিতে হবে বছরের শেষে ভোটগ্রহণে অসুবিধা কোথায়?

বিএনপি ৩১ দফা থেকে সরে যাচ্ছে কিনা? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এখানে সরাসরি কোনো ব্যাপার নেই। ৩১ দফা বিএনপির প্রস্তাব। সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে যে প্রস্তাব এসেছে এর প্রেক্ষিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের মতামত প্রদান করেছে। এটা নিয়ে এখনো কোনো ঐক্যমত্য প্রতিষ্ঠা হয়নি। আমরা বলেছি পর পর দু’বারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবে না। এ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, সিদ্ধান্ত হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যখন ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলাম তখন আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছিলেন, এর চেয়ে ভালো কোনো প্রস্তাব যদি কারো কাছে থাকে তাহলে সেটা আমরা বিবেচনা করবো। এ কারণে আমরা দেখবো এর চেয়ে ভালো প্রস্তাব যদি কেউ দেয় সেটা যদি অধিকতর যুক্তিসংগত হয় তবে গ্রহণ করার সঙ্গে ৩১ দফার থেকে বিচ্যুত হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই।’

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দাবি করছে প্রশাসন বিএনপির হয়ে কাজ করছে, সেক্ষেত্রে তারা মৌলিক সংস্কার ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে পাল্টা প্রশ্ন রেখে নজরুল ইসলাম বলেন, যারা অভিযোগ করছেন তারা সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন, তারাই বিএনপির লোক বসিয়ে এসেছেন কিনা?

তিনি বলেন, ‘বিএনপিকে তো প্রশাসন থেকে উৎখাত করা হয়েছে। কোথাও বিএনপির কোনো ছিল না। যারা বৈষম্যের শিকার ছিল, যাদেরকে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তাদের ৭’শ অফিসারকে এখনো কোথাও পদায়ন করা হয়নি। তাহলে বিএনপির লোককে বসানো হলো কোথায়?’

বৈঠক শেষে লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, জনগণ ও রাজনীতিবিদদের প্রত্যাশা অনুযায়ী ড. ইউনূস ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দেবেন। লেবার পাটির পক্ষ থেকে বিএনপির কাছে জাতীয় কনভেনশন করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

মন্তব্য

জাতীয়
Election is not before the renovation and trial of the murderers Jamaats Emir

সংস্কার ও খুনিদের বিচারের আগে নির্বাচন নয়: জামায়াতের আমির

সংস্কার ও খুনিদের বিচারের আগে নির্বাচন নয়: জামায়াতের আমির

আগামীতে যেকোনো নির্বাচনের আগে খুনিদের বিচার ও প্রয়োজনীয় সংস্কার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘যেকোনো নির্বাচনের আগে অবশ্যই দুটি কাজ সম্পন্ন করতে হবে। একটি হচ্ছে খুনিদের বিচার, যা দৃশ্যমান হতে হবে। আর আরেকটি হচ্ছে প্রয়োজনীয় সংস্কার—এই দুটি ছাড়া বাংলাদেশের জনগণ কোনো নির্বাচন মেনে নেবে না।’

শনিবার (১৯ এপ্রিল) লালমনিরহাটের কালেক্টরেট মাঠে জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই, কালো টাকা ও পেশীশক্তির প্রভাবযুক্ত নির্বাচন আমরা দেখতে চাই না। সেজন্য অবশ্যই নির্বাচনের সমতল মাঠ তৈরি করতে হবে।’

ভারতের সঙ্গে সম্প্রীতি, শ্রদ্ধা ও সমতার ভিত্তিতে প্রতিবেশী হিসেবে বসবাসের দাবি জানিয়ে জামায়াতের আমির বলেন, ‘আমরা ভালো থাকলে তারাও ভালো থাকবে। আমাদের ভালো কেড়ে নিলে ভারতকে চিন্তা করতে হবে তারা ভালো থাকবে কিনা।’

জামায়াতপ্রধান আরও বলেন, ফ্যাসিবাদের পতন হলেও এখনও কিছু কু-রাজনীতিক চাঁদাবাজি-দখলবাজি করছে। জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের সম্মান, নিরাপত্তা ও কাজের ব্যবস্থা করবে বলেও তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন।

পাশাপাশি তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ লালমনিরহাটের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীকে ক্ষমতায় আনার আহ্বান জানান।

তিনি দেশবাসীর উদ্দেশে বলেন, আমরা এমন একটা দেশ চাই—যেখানে পক্ষ-বিপক্ষ বিভাজন চাই না। টুকরা টুকরা জাতি চাই না। আমরা মাইনরিটি ও মেজরিটি শব্দই শুনতে চাই না।

ডা. শফিকুর বলেন, এখন বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকেরাও বলছে এই কথাগুলো বলেই বলেই আমাদের শোষণ করা হয়েছে। আমরাও চাই না। নারী পুরুষ নির্বিশেষে এই দেশকে গড়ে তুলবো। নারীদের যথাযথ মর্যাদা দেওয়া হবে। তাদের নিরাপত্তা দেওয়া হবে। তারা নিরাপদভাবেই ঘরে থাকবেন, বাইরে যাবেন পেশাগত দায়িত্ব পালন করবেন। যুবকদের হাতকে আমরা কাজের হাতে পরিণত করব। সেই অপেক্ষায় আছি।

তিনি বলেন, আমাদের লাখ লাখ মানুষ বলছেন, জীবন দেবো, দেশের সার্বভৌমত্ব দেবো না। কারো লাল চোখের দিকে আর আমরা তাকাবো না। আমাদের দিকে যদি কেউ লাল চোখ তুলে তাকায় তাও আমরা বরদাশতহ করব না। আমরা পিন্ডির হাত থেকে মুক্ত হয়েছি অন্য কারো হাতে বন্দি হওয়ার জন্য না। বরং সত্যিকার অর্থে একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হওয়ার জন্য। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সেই বৈষম্যহীন মানবিক সাম্যের বাংলাদেশ গড়তে চায় বলে উল্লেখ করেন জামায়াত আমির।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা সেই দিনটির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমরা বিভেদহীন জাতি চাই। আমরা ঐক্যবদ্ধ জাতি নিয়ে সামনে এগোতে চাই, লালমনিরহাটের প্রাণের দাবি তিস্তা মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও লালমনিরহাটের বিমানবন্দর চালু করতে হবে—তাহলে বেকারত্ব দূর হবে।

কালেক্টরেট মাঠ ছাড়াও শহরের অপর একটি মাঠে নারীদের জন্য বড় পর্দার ব্যবস্থা করা হয়।

জেলা জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট আবু তাহেরের সভাপতিত্বে জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন ও অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল। এছাড়া দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দও এসময় জনসভায় বক্তব্য দেন।

মন্তব্য

জাতীয়
BNP reform is a party but at the root of all things Nazrul Islam Khan

বিএনপি সংস্কারেরই দল, তবে সবকিছুর মূলে জনগণ: নজরুল ইসলাম খান

বিএনপি সংস্কারেরই দল, তবে সবকিছুর মূলে জনগণ: নজরুল ইসলাম খান

বিএনপি সংস্কারের বিপক্ষে নয় বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘বরং বিএনপি সংস্কারেরই দল, তবে সবকিছুর মূলে জনগণ। জনগণের সম্মতিতে যেন সব হয়।’

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকালে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির আলোচনার শুরুতে তিনি এসব কথা বলেন।

নজরুল ইসলাম খান আরও বলেন, ‘আমরা গতকাল বুধবার প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি, বিএনপি সংস্কারের বিপক্ষে নয়, বিএনপি সংস্কারেরই দল। কিন্তু কেউ কেউ নানান কথা বলেন। তারা যখন সংস্কারের দন্তস্য উচ্চারণ করেননি, তখন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ভিশন ২০৩০ দিয়েছেন।’

সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো নিয়ে বিএনপির সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাতীয় সংসদের এলডি হলে শুরু হয়েছে।

গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘ আন্দোলন–সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমাদের সামনে আরেকবার একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, আমরা তা কাজে লাগাতে চাই। আমরা এই কমিশনকে সহযোগিতা করছি, এই সরকারকে সহযোগিতা করছি, সেই প্রত্যাশা নিয়েই।’

যদি ঐকমত্য কমিশনের কোনো সনদ না-ও হয়, বিএনপির জন্য সংস্কারের সনদ রয়েছে বলে জানান নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, সবকিছুর মূলে জনগণ এবং জনগণের সম্মতিতে যেন সব হয়। তিনি আরও বলেন, ‘আর জনগণ কার মাধ্যমে সম্মতি জানায়, তা আমরা জানি।’

আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ, নজরুল ইসলাম খান, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ,আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল, সাবেক সচিব নিরুজ্জামান খান অংশ নেন।

আজ দিনব্যাপী এই আলোচনা চলতে পারে বলে ঐক্য কমিশন সূত্রে জানা গেছে। আজ আলোচনা শেষ না হলে প্রয়োজনে আগামী সপ্তাহে আবারও বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসবে কমিশন।

মন্তব্য

জাতীয়
Not absolutely satisfied with the chief advisers statement Mirza Fakhrul

প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে একেবারে সন্তুষ্ট নই: মির্জা ফখরুল

প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে একেবারে সন্তুষ্ট নই: মির্জা ফখরুল

আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে অর্ন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের’ ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে’ এমন বক্তব্যে হতাশা প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘তার (প্রধান উপদেষ্টার) বক্তব্যে আমরা একেবারেই সন্তুষ্ট নই।’

আজ বুধবার মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে বিএনপির সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করে বের হওয়ার পর তিনি এ হতাশা ব্যক্ত করেন। বিএনপির মিডিয়া উইং থেকে জানানো হয়, বৈঠকে দলটির পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টাকে একটি চিঠিও দেয়া হয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা সুনির্দিষ্ট করে নির্বাচনের ডেটলাইন দেননি। তিনি বলেছেন, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে তিনি নির্বাচন শেষ করতে চান। উনি ডিসেম্বর থেকে জুন বলেছেন, উনি বলেননি এটা ডিসেম্বরে হবে। আমরা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছি যে, আমাদের কাটঅফ টাইম ইজ ডিসেম্বর। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন যদি না হয়, তাহলে দেশে যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং সামাজিক পরিস্থিতি, সেটা আরও খারাপের দিকে যাবে। সেটা তখন নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে।এ সময় ডিসেম্বরে নির্বাচন না হলে বিএনপি কী করবে-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে দলটির মহাসচিব বলেন, দলের মধ্যে এবং মিত্র দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের আলোচনার প্রধান বিষয় ছিলো নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ নিয়ে। সে বিষয়ে কথা বলেছি। আর বলেছি যে, যে পরিস্থিতি আছে এবং দেশের যে অবস্থা, তাতে করে আমরা বিশ্বাস করি এখানে দ্রুত একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সমস্যাগুলো সমাধান করতে হবে।

তিনি উল্লেখ করেন, যে সংস্কার কমিশনগুলো করা হয়েছে, সেগুলোতে আমরা সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছি। কয়েকদিন আগে সংস্কার কমিশনের কাছে আমাদের মতামতগুলো দিয়েছি। আগামীকালও আমাদের সঙ্গে বৈঠক আছে। সবগুলো দল যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে, সেগুলো নিয়ে আমরা একটা চার্টার করতে রাজি আছি। তারপরে আমরা নির্বাচনের দিকে চলে যেতে পারি। বাকি যেসব সংস্কারে আমরা একমত হব, সেটা আমরা অবশ্যই আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচিত হয়ে আসবেন, তারা সেগুলো বাস্তবায়নের ব্যবস্থা নেবেন। এটাই ছিল আমাদের (বিএনপির) মূল কথা।

এ বৈঠকের জন্য বেলা সোয় ১২টায় ‘যমুনা’য় পৌঁছায় বিএনপি মহাসচিবসহ দলের স্থায়ী কমিটির ৭ সদস্য। পৌনে দুই ঘণ্টার বৈঠকে নির্বাচনী রোডম্যাপ, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার, শেখ হাসিনার বিচার প্রক্রিয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকে বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

সরকারের পক্ষে অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ, পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ছিলেন উপস্থিত ছিলেন বৈঠকে।

চিঠিতে যা বলা হয়েছে

চিঠিতে বিএনপি উল্লেখ করে, মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে গণতন্ত্র ও মানবিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রতিটি লড়াইয়ের নেতৃত্বদানকারী কিংবা গর্বিত সক্রিয় অংশীদার হিসেবে বিএনপি তার অবস্থান থেকে প্রতিটি লড়াইয়ের সুফল জনগণের জন্য কার্যকর করার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে এবং করছে। সেই লক্ষ্যেই এবারও জুলাই-আগস্টের ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানের সুফল জনগণের কল্যাণে এবং তাদের আকাঙ্ক্ষা পূরণে নিবেদিত করার টেকসই ক্ষেত্র প্রস্তুতের লক্ষ্যে দেশের সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপরিচালনার ভার আপনার নেতৃত্বে অন্তর্র্বতী সরকার প্রতিষ্ঠায় আমরা সমর্থন জানিয়েছি এবং দায়িত্ব পালনে আপনাকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছি এবং সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছি। আপনার ও আপনার নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্র্বতী সরকারের কাছে প্রায় দেড় যুগ ধরে গণতান্ত্রিক অধিকারহীন জনগণের স্বাভাবিক প্রত্যাশা ছিল। যত দ্রুত সম্ভব ফ্যাসিবাদী দল, তাদের দলীয় সরকার ও তার দোসরদের আইনের আওতায় এনে তাদের গণবিরোধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার, দুর্নীতি-অনাচারের মাধ্যমে দেশের সম্পদ লুণ্ঠনকারীদের বিচার ও পাচার করা অর্থ পুনরুদ্ধারের, ফ্যাসিস্ট সরকারের হাতে নিহত ও আহতদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ, সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসন এবং দ্রব্যমূল্য ও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে পতিত সরকারের সব অপচক্র ও সিন্ডিকেট ধ্বংস করার পাশাপাশি যত দ্রুত সম্ভব দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের হাতে রাষ্ট্রক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া, যাতে তারা সম্মিলিতভাবে দেশে সুষ্ঠু রাজনীতি, উন্নত অর্থনীতি এবং জনগণের মানবিক অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে পারে।’

চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘বিএনপি মনে করে যে জনগণের স্বার্থরক্ষা ও স্থায়ী কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য গণতান্ত্রিক শাসনের বিকল্প নেই। আর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সংস্কার একটি সদা চলমান অনিবার্য প্রক্রিয়া। বিগত ফ্যাসিবাদী পতিত সরকারের মতো “আগে উন্নয়ন পরে গণতন্ত্র” যেমন জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের অপকৌশল ছিল, এখনো কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর “আগে সংস্কার পরে গণতন্ত্র” তেমনই ভ্রান্ত কূটতর্ক। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী ও কার্যকর করার মাধ্যমেই সবার জন্য উন্নয়ন সম্ভব এবং এ উদ্দেশ্য পূরণের জন্য রাষ্ট্রব্যবস্থা, আইন, নীতি, বিধানের সংস্কার অপরিহার্য। এর সবগুলো পরস্পরের পরিপূরক, কোনোটাই কোনোটার বিকল্প নয়; পরস্পর সাংঘর্ষিকও নয়।’

এতে আরও বলা হয়, আজ যারা সংস্কারের কথা বেশি বেশি বলে এবং বিএনপিকে সংস্কারের বিপক্ষের শক্তি বলে চিহ্নিত করার অপচেষ্টা করছে, তাদের ভিশন-২০৩০ এবং রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা কর্মসূচিতে যেসব সংস্কারের প্রস্তাব করা হয়েছে ও যেসব পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করা হয়েছে, তার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়, গোষ্ঠীস্বার্থে এবং রাজনীতি কিংবা রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে হেয় ও অপ্রাসঙ্গিক করার অপচেষ্টায় অযথা সময়ক্ষেপণ করে জনগণকে তাদের ভোটাধিকার তথা রাষ্ট্রের মালিকানা প্রতিষ্ঠার অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখার কৌশলকে বিএনপি সমর্থন করে না। দেশ ও জনগণের স্বার্থে জনগণের সম্মতি নিয়ে ৩১ দফায় বর্ণিত এবং ঐকমত্যে গৃহীত সব সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বিএনপি সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করে। চিঠিতে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী ও তার সরকারের বক্তব্য ও মতামতে সমন্বয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি এর কিছু ব্যতিক্রম আমাদের উদ্বিগ্ন করেছে। আপনার সরকারের কিছু ব্যক্তি এবং আপনাকে সমর্থনকারী বলে দাবিদার কিছু ব্যক্তি ও সংগঠনের প্রকাশ্য বক্তব্য ও অবস্থান জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। আশা করি আপনি এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।’

বিএনপি বলে, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য যেসব আইন, বিধি, বিধান সংস্কারে এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে যেসব পরিবর্তন জরুরি, তা সম্পন্ন করার মাধ্যমে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্ভব বলে আমরা মনে করি। সে লক্ষ্যে অবিলম্বে সুনির্দিষ্ট নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আমরা আপনার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা এনআইডি প্রকল্প নির্বাচন কমিশনের অধীনে রাখার এবং নির্বাচনি এলাকা পুনর্র্নিধারণের বিষয়ে আইনি জটিলতা দ্রুত নিরসনেরও প্রস্তাব করছি। একই সঙ্গে পতিত ফ্যাসিবাদী দল ও সেই দলীয় সরকারের সঙ্গে যারাই যুক্ত ছিল, তাদের বিচার দ্রুত করে রাজনীতির ময়দানকে জঞ্জালমুক্ত করার; জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের ক্ষতিপূরণ ও সুচিকিৎসা দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার এবং দ্রব্যমূল্য ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রমে গতিশীলতা আনার অধিকতর উদ্যোগ নেওয়ার জন্য আমরা আহ্বান জানাচ্ছি। একইসঙ্গে ১/১১-এর অবৈধ সরকার এবং পতিত ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে করা সব মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা অনতিবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি পুনর্ব্যক্ত করছি।

মন্তব্য

জাতীয়
Reform elections are not different things Mirza Fakhrul

সংস্কার-নির্বাচন আলাদা জিনিস না: মির্জা ফখরুল

সংস্কার-নির্বাচন আলাদা জিনিস না: মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সংস্কার আর নির্বাচন আলাদা জিনিস না। সংস্কার সংস্কারের মত চলবে। নির্বাচন নির্বাচনের মতো চলবে। এছাড়া সংস্কার প্রস্তাব যথাযথভাবে পর্যালোচনা করেই বিএনপি মতামত দিয়েছে বলেও জানান তিনি।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ে নিজ বাসভবনে নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টার সদ্য সমাপ্ত চীনসফর প্রসঙ্গে মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে চীন এক তরফাভাবে একটা দলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখেছে। তবে এখন তারা চিন্তাভাবনা পরিবর্তন করে সব দলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ছে। চীন বাংলাদেশে উৎপাদনে ও উন্নয়নে বিনিয়োগের জন্য যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সেটা দেশের জন্য আশাবাদের কথা।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, যে বিষয়ে মতের ঐক্য হবে সেগুলো মেনেই নির্বাচন হবে। যারাই নির্বাচিত হবে সেই সংস্কার করবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
পরে বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কুশল ও ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন তিনি। এসময় জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ জাফরুল্লাহ, যুবদলের সদস্য সচিব জাহিদ হাসান, ছাত্রদলের সভাপতি মোহাম্মদ কায়েসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

জাতীয়
Iftar and Dua Mahfil in Savar for the well being of Khaleda Zia

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় সাভারে ইফতার ও দোয়া মাহফিল

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় সাভারে ইফতার ও দোয়া মাহফিল সাভারে ইফতার ও দোয়া মাহফিলে উপস্থিত বিএনপি নেতা-কর্মীসহ আয়োজন সংশ্লিষ্টরা। ছবি: নিউজবাংলা
প্রধান অতিধির বক্তব্যে লায়ন মো. খোরশেদ আলম বলেন, ‘বিগত ১৫-১৬ বছর আমরা যারা বিএনপি করেছি, শুধু আমি নই সাভারের নেত্রীবৃন্দসহ সারা বাংলাদেশে বিরোধী দলে যারা রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল, তাদের ওপর অত্যাচারের একটি স্টিমরোলার চালিয়েছে বিগত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার। নানা রকম মামলা, হামলা নির্যাতন সহ্য করেও যারা আজকে পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সম্পর্ক রেখেছে এবং দলের কাজকর্ম করে যাচ্ছে, তাদের আমি দলের পক্ষ থেকে ও আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও স্বাগত জানাই।’

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় সাভারে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রদলের সভাপতি মোহাম্মদ তমিজ উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ ইকবালের নির্দেশে এবং সাভার পৌর ছাত্রদলের মেহেদী হাসান সানির উদ্যোগে পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অপারেটিভ অগ্রণী হাউজিং সোসাইটি মাঠে সম্প্রতি এ ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

ইফতার ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাভার পৌরসভার মেয়র পদপ্রার্থী লায়ন মো. খোরশেদ আলম।

অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাভার পৌর ছাত্রদলের নেতা-কর্মীসহ এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা।

ওই সময় প্রধান অতিধির বক্তব্যে লায়ন মো. খোরশেদ আলম বলেন, ‘বিগত ১৫-১৬ বছর আমরা যারা বিএনপি করেছি, শুধু আমি নই সাভারের নেত্রীবৃন্দসহ সারা বাংলাদেশে বিরোধী দলে যারা রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল, তাদের ওপর অত্যাচারের একটি স্টিমরোলার চালিয়েছে বিগত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার। নানা রকম মামলা, হামলা নির্যাতন সহ্য করেও যারা আজকে পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সম্পর্ক রেখেছে এবং দলের কাজকর্ম করে যাচ্ছে, তাদের আমি দলের পক্ষ থেকে ও আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও স্বাগত জানাই।

‘কারণ চরম ধৈর্য না ধরলে এই দীর্ঘদিন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে কড়াভাবে লড়ে না গেলে আমরা সফল হতে পারতাম না।’

তিনি আরও বলেন,‘৫ আগস্ট যে স্বাধীনতা এসেছে, এই স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। আর যারা আহত হয়েছেন, তাদের সুস্থতা কামনা করছি। ’

সাভারের উন্নয়ন নিয়ে খোরশেদ আলম বলেন, ‘আমরা একটু সাভারের দিকে তাকাই। এই সাভার একটি অবহেলিত সাভার। দীর্ঘদিন এই সাভারে যে পরিমাণ উন্নয়ন হওয়ার কথা ছিল, তা হয়নি। এই না হওয়ার পিছনে একটি জিনিস দায়ী। সেটি হলো দায়িত্বশীল যারা ছিলেন তারা কখনোই, আপনাদের নিজের মানুষ মনে করেনি। যদি তারা কাজ করত বা সাভারকে নিজের পৌরসভা হিসেবে যদি গ্রহণ করত, তাহলে কাজ করতে পারত।

‘আমি দীর্ঘদিন কাউন্সিলর ছিলাম। সমস্যাগুলো আমি কাছ থেকে দেখেছি। এখানে শুধু দরকার একটু প্রচেষ্টা এবং জনগণের সহযোগিতা। একজন মেয়র যদি চিন্তা করে আমি সাভারের জন্য কাজ করব আর জনগণ যদি চিন্তা করে আমরা মেয়রের পাশে আছি, তাহলে কোনোকিছুতেই সেই উন্নয়ন ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব না।’

তিনি আরও বলেন, ‌‌‘আমার কাজ দ্বারা যদি আমাকে আপনাদের যোগ্য মনে হয়, তাহলে আপনারা আমাকে নির্বাচিত করবেন। যতদিন বেঁচে আছি আমি সাভারের জন্য এবং সাভারের মানুষের জন্য কাজ করে যাব।’

আরও পড়ুন:
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ‘সর্বোচ্চ মাত্রার’ নিরপেক্ষতা চায় বিএনপি
এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে দেশে ফিরবেন বেগম খালেদা জিয়া
বরগুনার মন্টু দাসের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস বিএনপির
ভবিষ্যতে কেউ যেন এমন অপরাধ করার সাহস না পায়: তারেক রহমান
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে ভালো: ডা. জাহিদ

মন্তব্য

p
উপরে