× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

জাতীয়
হঠাৎ গরম থেকে নরম হেফাজত
google_news print-icon

হঠাৎ ‘গরম’ থেকে ‘নরম’ হেফাজত

হঠাৎ-গরম-থেকে-নরম-হেফাজত
মামুনুল হকের রিসোর্টকাণ্ডে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের কথাবার্তা অনেকটা নরম হয়ে এসেছে। ছবি: নিউজবাংলা
গত মার্চ থেকে বারবার সরকার ফেলে দেয়ার ‍হুমকি দেয়া হেফাজত নেতারা এখন বলছেন, সরকার ফেলে দেয়া তাদের কাজ নয়। হেফাজতের এই অবস্থান পরিবর্তনে কাজ করেছে ‍দুটি ঘটনা। দেশের বিভিন্ন এলাকায় তাণ্ডবের পর গ্রেপ্তার অভিযান এবং সোনারগাঁয়ে মামুনুল হকের রিসোর্ট-কাণ্ড। এইসব ঘটনাপ্রবাহে চুপসে গেছে সংগঠনটি।

২৫ মার্চ। বায়তুল মোকাররমের সামনের সমাবেশে বক্তা হেফাজত নেতা মামুনুল হক। বক্তব্যের ভাষা বেশ আক্রমণাত্মক। বলেন, ‘নরেন্দ্র মোদির আগমনই হবে সরকারের পতনের ক্ষেত্র, যদি সরকার আমাদের দাবি না মানে।’

২৭ মার্চ। পরদিনের হরতালকে সামনে রেখে আবার বায়তুল মোকাররমের সামনে হেফাজতের সমাবেশ। এবার একই ধরনের বক্তব্য কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ফজলুল করিম কাসেমীর। বলেন, ‘হরতালে বাধা দিলে সরকার পতনের আন্দোলন শুরু হবে।’

৩১ মার্চ। হরতালে তাণ্ডবের নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দেয়া ১১ বিশিষ্ট ব্যক্তিকে তুলাধুনা করে হেফাজতের বিবৃতি। বক্তব্য: ‘আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসী ভারতের করদরাজ্যে পরিণত করার চক্রান্ত আমরা গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলে নস্যাৎ করে দিব, ইনশা আল্লাহ।… কোনো অপশক্তির হুমকি-ধমকিকে নায়েবে রাসূল ওলামায়ে কেরাম ও তৌহিদি জনতা পরোয়া করে না।’

২ এপ্রিল। বায়তুল মোকাররমে হেফাজতের সমাবেশ। মামুনুল হক বললেন, ‘সাবধান হয়ে যান আমাদের ভাইদের একজনকেও আর গ্রেপ্তার করবেন না। মামলা প্রত্যাহার করুন যাদেরকে গ্রেপ্তার করেছেন তাদের।’

৭ এপ্রিল। জাতীয় সংসদে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় হেফাজতের বিবৃতি। ‘আমরা কোনো ধরনের রক্তচক্ষুকে পরোয়া করি না। কোনো সংঘাত চাই না। কিন্তু আমাদের উসকানি দিয়ে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করলে তার পরিণতি সরকারের জন্য ভালো হবে না।’

এর পর দিন হেফাজতের আমির জুনাইদ বাবুনগরীর নামে গণমাধ্যমে বিবৃতি। তার বক্তব্য: ‘হেফাজতে ইসলাম একটি অরাজনৈতিক ও ধর্মীয় সংগঠন। কাউকে ক্ষমতা থেকে নামানো কিংবা কাউকে ক্ষমতায় বসানো হেফাজতের কাজ নয়। আমরা শান্তিপ্রিয় এবং সহিংসতার বিরুদ্ধে।’

গত কয়েক মাস ধরে সভা-সমাবেশে, ওয়াজে হুমকি ধমকি দিয়ে আসা কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক সংগঠনটি মার্চের শেষে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকে ঘিরে ব্যাপক সহিংসতা চালায় দেশের বিভিন্ন এলাকায়। গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের রয়্যাল রিসোর্টে নারী নিয়ে মামুনুল হক অবরুদ্ধ হওয়ার পর তাকে উদ্ধার করতে গিয়েও তাণ্ডব চালায় হেফাজত কর্মীরা।

হঠাৎ ‘গরম’ থেকে ‘নরম’ হেফাজত
হরতালে সারাদেশে তাণ্ডব চালায় হেফাজতে ইসলাম। ছবি: নিউজবাংলা

সোনারগাঁ তো বটেই, মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া, সুনামগঞ্জের ছাতকেও ত্রাস তৈরি করে সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সেই সঙ্গে অনলাইনে বিশেষ করে ফেসবুক লাইভে চলতে থাকে হুমকি ধমকি।

তবে সরকারপ্রধান পার্লামেন্টে এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একাধিক স্থানে যখন হেফাজতকে সতর্ক করে দিয়ে কড়া বক্তব্য রাখেন, সেইসঙ্গে সহিংসতার ঘটনায় গ্রেপ্তার অভিযান শুরু হয়, তখন হেফাজতের বক্তব্য নরম হয়ে আসে। বাবুনগরীর শেষ বিবৃতিতে কোনো ধরনের হুমকি নেই বরং জনগণের মধ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার ব্যাপারে সরকারকে সতর্ক করা হয়েছে।

হেফাজতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে এতে বলা হয়েছে, ‘অন্যথায় আলেম-ওলামার সঙ্গে বাড়াবাড়ির কারণে সরকার নিঃসন্দেহে জনগণের কাছে আরও ঘৃণিত ও নিন্দিত হবে।’

নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশে এলে ‘সরকার পতনের ক্ষেত্র তৈরি করার’ ঘোষণা দেয়ার পর ২৬ মার্চ চট্টগ্রামের হাটহাজারী, ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় ত্রাস চালায় হেফাজত। আক্রমণ হয় বহু সরকারি স্থাপনা, এমনকি থানায়।

দুই দিন পর হরতালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে তাণ্ডব ছিল নজিরবিহীন। সরকারি বেসরকারি স্থাপনার পাশাপাশি সেখানে হামলা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিচিহ্নগুলোতে। নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান, হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ এবং বিভিন্ন স্থানে মহাসড়কে যানবাহনে চলে তাণ্ডব।

তবে এখন কিছুই স্বীকার করে না হেফাজত। সংগঠনের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নোমান ফয়েজী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আসলে আমরা সরকারকে কোনো হুমকি দেইনি। এখানে বোঝার ভুল আছে, যা আমাদের আমির স্পষ্ট করে বলেছেন। আমরা কারও রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করি না, কারও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের হাতিয়ারও হই না। কোনো রাজনৈতিক ফাঁদে আমরা পা দেব না। এ কারণে দেশের বিরোধী জোটগুলো বিভিন্ন সময়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও লাভবান হয়নি।’

হঠাৎ ‘গরম’ থেকে ‘নরম’ হেফাজত
হরতালে হেফাজত সবচেয়ে তাণ্ডব চালায় নারায়ণগঞ্জে। ছবি: নিউজবাংলা

তিনি বলেন, ‘আমাদের পরিষ্কার কথা, অদূর ভবিষ্যতেও হেফাজতে ইসলাম কারও রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করবে না। আর সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের কর্মসূচি ছিল বলে যেটা বলা হচ্ছে, এটাও ঠিক না।’

এভাবে ‘উত্তপ্ত’ থেকে ‘শীতল’ হয়ে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব ফজলুল করিম কাশেমী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখন লকডাউনের বিষয়টি সামনে চলে আসছে। আমাদের কর্মীরাও অনেকে আহত, প্রতিদিনই কিছু কিছু গ্রেপ্তার হচ্ছে। এ বিষয়গুলো আমরা আগে দেখছি। আমরা সরকারের সঙ্গে কোনো সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার দিকে যাচ্ছি না। তার আসলে প্রয়োজনও নেই।’

বাবুনগরীর বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘সরকারের পতন ঘটানো আমাদের কাজ না। তবে হয়ত কেউ কেউ গরম কথা বলে থাকতে পারেন। কিন্তু আমাদের সংগঠনের আমির যে কথা বলেছেন, সেটাই বাস্তব কথা।’

তা হলে হরতালের মতো কর্মসূচি কেন দিয়েছিলেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের ওপর হাটহাজারী ও ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় জুলুম হয়েছে তাই আমরা এমন কর্মসূচি দিয়েছি।

‘হেফাজতে ইসলাম একটা দ্বীনি আন্দোলন। ধর্মীয় বিষয়ে যদি কোনো আঘাত আসে, সে বিষয়ে আমরা প্রতিবাদ করি। আর নরেন্দ্র মোদির বিষয়টাও এ রকমই ছিল। মোদি ভারতের মুসলমানদের টার্গেট করে কাজ করেছে। যেহেতু আমরা ধর্মীয় ইস্যুতেই কাজ করি, মুসলমানরা যেখানে নির্যাতিত হয়, সেখানেই তো আমাদের কথা বলার অধিকার আছে।’

হঠাৎ ‘গরম’ থেকে ‘নরম’ হেফাজত
কথিত দ্বিতীয় স্ত্রীসহ সোনারগাঁয়ের একটি রিসোর্টে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব স্থানীয়দের হাতে অবরুদ্ধ হওয়ার পর থেকে সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা অনেকটা চুপ। ছবি: নিউজবাংলা

‘শান্তি’ চান মামুনুলও

গত বৃহস্পতিবার বহুল আলোচিত ফেসবুক লাইভে এসে মামুনুল হক বলেছেন, তারা শান্তি চান। যে করোনা মহামারি এতদিন তিনি স্বীকার করতে চান নি, সেই পরিস্থিতিতে এখন একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহের কথাও বলেছেন।

সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই সকল মহলের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান। কেউ কারও ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করব না। অন্য কারও সঙ্গে মতের অমিল থাকতে পারে, রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকতে পারে, সেখানে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করবেন, কোনো আদর্শিক ভিন্নতা থাকতে পারে, আদর্শিকভাবে আপনি আপনার যুক্তিতর্কসহ ভিন্ন মতাদর্শকে মোকাবিলা করবেন।’

করোনা পরিস্থিতির উল্লেখ করে সেদিন তিনি বলেন, ‘সকল মহলকে আহ্বান জানাব, আসুন বিশ্বে কোভিড নাইনটিনের যে ভয়াবহ পরিবেশ বিরাজ করছে, এই পরিস্থিতিতে আমরা দেশবাসী সবাই ঐক্যবদ্ধ থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলা করি।’

অথচ, ২ এপ্রিল বায়তুল মোকাররমে হেফাজতের সমাবেশে অভিযোগ করা হয়, সরকার করোনাকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছে। সেদিন মামুনুলের উপস্থিতিতে সংগঠনের ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি জুনাইদ আল হাবীব বলেন, ‘করোনা হওয়ার পর স্ত্রী পুত্র তাদের পাশে আসে না। ছেলেমেয়েরা তাকে ছেড়ে চলে গেছে। তার রুমের ভেতরে গিয়েছি, মাথার পাশে বসেছি, মাথায় হাত ভুলিয়ে দিয়েছি, দোয়া করেছি। মাশাআল্লাহ আমার করোনা হয় নাই, আমার ফ্যামিলির কারো করুণা হয় নাই। সুতরাং এই অজুহাত দেখিয়ে ইসলামি সম্মেলন তারাবির নামাজ, মাদ্রাসা মসজিদে নামাজ বন্ধের পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন না। করলে হেফাজত ইসলাম আবার মাঠে নামবে।’

হঠাৎ ‘গরম’ থেকে ‘নরম’ হেফাজত
নিজেদের অরাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে দাবি করলেও বিভিন্ন রাজনৈতিক ইস্যুতে সরব উপস্থিতি দেখা যায় হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের।

‘অরাজনৈতিক’ হেফাজতের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা

২০০৯ সালে ঘোষিত নারী নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে পরের বছর চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসার শাহ আহমেদ শফীকে প্রধান করে গঠন করা হয় হেফাজতে ইসলাম। একে অরাজনৈতিক সংগঠন বলা হলেও আহমেদ শফী ছাড়া শীর্ষ নেতাদের প্রায় সবারই রাজনৈতিক পরিচয় ছিল। সে সময় শীর্ষ নেতৃত্বের প্রায় সবাই ছিলেন বিএনপি-জামায়াত জোটের শরিক।

বেশ কিছুদিন বিরতির পর ২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলন গণজাগরণের নেতাদের ফাঁসির দাবিতে হঠাৎ মাঠে নামে হেফাজত। তাদের কর্মসূচিতে লাভবান হওয়ার সুযোগ ছিল বিএনপির শরিক জামায়াতে ইসলামীর। কারণ, তাদের শীর্ষ নেতারা তখন ফাঁসির দড়ির সামনে।

ওই বছরের ৫ মে রাজধানীর শাপলা চত্বর ও আশপাশে তাণ্ডবের সময় তখনকার ২০ দলীয় জোটের শরিক হেফাজত নেতারা স্পষ্টতই সরকার পতনের কথা বলেছিলেন। বিএনপি-জামায়াত জোটও সে সময় হেফাজতের ওই কর্মসূচিকে ঘিরে উৎসাহী হয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতার কথা বলেছিল। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া হেফাজতের পক্ষে নেমে আসতে তার নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছিলেন।

এরপর নানা ঘটনাপ্রবাহে কওমিপন্থিদের সঙ্গে বিএনপির বিভেদ তৈরি হয় আর কওমিদের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে নেয় আওয়ামী লীগ। কওমি শিক্ষা ব্যবস্থার সর্বোচ্চ সনদ দাওরায়ে হাদিসকে দেয়া হয় ইসলামিক স্টাডিজে মাস্টার্সের সমমান। প্রথমবারের মতো সরকারি চাকরি পেতে শুরু করেন কওমি আলেমরা।

তবে গত বছর শাহ আহমেদ শফীর মৃত্যুর পর হেফাজতে আবার বিএনপি সম্পৃক্তরা নেতৃত্বে চলে আসেন। গত নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে জুনাইদ বাবুনগরীকে আমির করে যে কমিটি গঠন করা হয়, তাতে সিংহভাগকেই বিএনপি জোটের শরিক বিভিন্ন ইসলামী দল থেকে নেয়া হয়েছে।

১৫১ সদস্যের কমিটিতে ২০ দলীয় জোটের শরিক জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নেতাই আছেন ৩২ জন। জোটের আরেক শরিক খেলাফতে ইসলামীর শীর্ষ নেতারাও স্থান পেয়েছেন এতে।

সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত মামুনুল হকের খেলাফত মজলিস ২০ দলীয় জোট থেকে বের হয়ে এলেও সাম্প্রতিক সময়ে তাদের কাছাকাছি এসেছে।

হঠাৎ ‘গরম’ থেকে ‘নরম’ হেফাজত
কথিত দ্বিতীয় স্ত্রীসহ রিসোর্টে অবরুদ্ধ হওয়ার পর তাণ্ডব চালিয়ে মামুনুল হককে ছাড়িয়ে নিচ্ছেন হেফাজতের কর্মীরা। ছবি: নিউজবাংলা

মামুনুলকাণ্ডে বিব্রত

মামুনুল হকের রিসোর্টকাণ্ডের পর তার পক্ষে প্রকাশ্যেই অবস্থান নেয় হেফাজত। তবে মামুনুলের দ্বিতীয় বিয়ের দাবি যখন প্রশ্নের মুখে পড়েছে, তখন সংগঠনের নেতারা এই বিষয়টি নিয়ে আগের মতো সোচ্চার নন। কথা বলাও কমিয়ে দিয়েছেন তারা। এমনকি মামুনুলকে সংগঠন থেকে বাদ দেয়ার আলোচনাও আছে।

এ বিষয়ে এক প্রশ্নে প্রচার সম্পাদক নোমানী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা যাচাই করে দেখেছি তিনি সঠিক আছেন। তবে এ বিষয়ে যদি আমিরে হেফাজত (বাবুনগরী) মনে করেন তার সংগঠনে থাকা ঠিক না, তবে অবশ্যই পরিবর্তন আসবে।’

শুরুতে মামুনুলের রিসোর্টকাণ্ড ও কথিত ‘দ্বিতীয় বিয়ে’ নিয়ে যারা ‘অপপ্রচার’ করেছেন তাদের কঠোরভাবে মোকাবিলার হুমকি দিয়ে আসা সংগঠনটি গত সাত দিনে এ নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়নি। গত ৭ এপ্রিল থেকে আসা কোনো বিবৃতিতে এই প্রসঙ্গটি উল্লেখই নেই। এদিকে মামুনুল হক ফেসবুক লাইভে এসে হেফাজতে বিভক্তি ঠেকানোর আকুতি জানিয়েছেন। বলেছেন, তারা বিভক্ত হলে তার পরিণাম ভালো হবে না।

অথচ রিসোর্টকাণ্ডের পর দিন ৪ এপ্রিল ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে এক প্রতিবাদ সভায় বলা হয়, ‘হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে যদি কেউ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়, তবে তার গদি টিকবে না।’

হেফাজতের ইসলামের সহকারী মহাসচিব সাখাওয়াত হোসেন রাজী সেদিন মামুনুল হকের ফাঁস হওয়া কল রেকর্ড নিয়ে বলেছিলেন, ‘আমরা জানি, ওগুলো কাট-ছাঁটকরা যায়। এগুলো আইনবিরোধী। এ জন্য আমরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ব্যবস্থা নেব।’

মামুনুলকে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ফেসবুক লাইভে এসে। তবে তিনি এসব ফোনালাপকে কার্যত সত্য বলে স্বীকার করে নেন। আর এর পরেই চুপসে যান হেফাজত নেতারা।

মামুনুল হকের সোনারগাঁওয়ের ঘটনায় কল রেকর্ড ফাঁস নিয়ে হেফাজতের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করার উদ্যোগ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে ফজলুল করিম কাশেমী বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমাদের প্রস্তুতি চলছে।’

আরও পড়ুন:
হাটহাজারীতে বৈঠকে বসেছেন হেফাজত নেতারা
হেফাজতের তাণ্ডব: বাখরাবাদে হামলার ‘উসকানিদাতা’ গ্রেপ্তার
হেফাজতের তাণ্ডবে এবার পটিয়ায় গ্রেপ্তার ৫
‘হেফাজতের সঙ্গে আপস আমাদের মস্তবড় ভুল’
সোনারগাঁয়ে আ. লীগ কার্যালয় ভাঙচুর: মামুনুলের বিরুদ্ধে মামলা

মন্তব্য

আরও পড়ুন

জাতীয়
Daksu Selection One new message of student politics

ডাকসু নির্বাচন: ছাত্র রাজনীতির এক নতুন বার্তা

লেখক: ড: তারনিমা ওয়ারদা আন্দালিব এবং দাউদ ইব্রাহিম হাসান
ডাকসু নির্বাচন: ছাত্র রাজনীতির এক নতুন বার্তা

অসম্ভবকে সম্ভব করার এই গল্পটি প্রতিটি ছাত্রের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। স্বপ্ন পূরণের পথে সাহস আর নিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই। মনে রাখতে হবে, কেবল বিজয়ের জন্য নয়, বরং একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার জন্যই লড়াই করতে হয়। সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছাতে মেধা ও পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই, আর সেই পথেই রচিত হয় নতুন ইতিহাস। এই ডাকসু নির্বাচন সেই ইতিহাসেরই একটি অংশ, যেখানে মেধা আর সততা পেয়েছে সর্বোচ্চ সম্মান।

দুর্ধর্ষ জয়, না অভিস্মরণীয় বিজয়! ডাকসুতে শিবিরের এই জয়কে আপনি কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন? সাদিক কায়েম, এস এম ফরহাদ এবং মহিউদ্দিন খান তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি ভোট পেয়েছেন, মানে এক কথায় অলআউট উইন। জয়ের ব্যবধানটাই সবচেয়ে বড় চমক সৃষ্টি করেছে এখানে। ডাকসুর ইতিহাসে এমন ঘটনা খুব বেশি ঘটেনি। ভিপি পদে সাদিক কায়েম পেয়েছেন ১৪ হাজার ৪২ ভোট, ছাত্রদলের আবিদ পেয়েছেন ৫৬৫৮ ভোট, অর্থাৎ অর্ধেকেরও কম। জিএস পদে এস এম ফরহাদ পেয়েছেন ১০,৭৯৪ ভোট, অন্যদিকে ছাত্রদলের হামিম পেয়েছেন ৫২৮৩ ভোট। এখানেও রয়েছে দ্বিগুণ ব্যবধান। এজিএস পদে মহিউদ্দিন খান পেয়েছেন ৯৫০১ ভোট, অন্যদিকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের মায়েদ পেয়েছেন ৪২৫৪ ভোট। অর্থাৎ ৫২৪৭ ভোটের ব্যবধান রয়েছে এখানে। শিবিরের এই তিন নায়ক সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দেওয়া যাক।

শুরুতেই আলোচনা করা যাক মহিউদ্দিন খান মহিকে। চোখে চশমা, পরনে পাঞ্জাবি আর চেহারায় ভদ্রতার ছাপ সুস্পষ্ট। শিক্ষার্থীরা তো বটেই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যেও মহিউদ্দিনের জনপ্রিয়তা আছে। ভদ্রতার পাশাপাশি মেধাতেও যে কারো চেয়ে এগিয়ে তিনি। মহিউদ্দিন খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি অনার্সে ৩.৯৩ সিজিপিএ অর্জন করে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম এবং মাস্টার্সে ৪.০০ সিজিপিএ অর্জন করতে সক্ষম হন। এরপর তিনি মাস্টার্সের পূর্ণাঙ্গ ফলাফলে ৩.৯৭ সিজিপিএ পেয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেন। তিনি বিজয় '৭১ হলের সাবেক শিক্ষার্থী। ছাত্র রাজনীতিতে দাপট বজায় রাখার জন্য হলে বছরের পর বছর সময় কাটানোর নজির আছে, সেখানে মহিউদ্দিন খান বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। স্নাতকোত্তর শেষ হওয়ার তিন দিনের মাথায় তিনি হল ছেড়ে দেন যা ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয় তখন। তাই এজিএস হিসেবে ডাকসু নির্বাচনে মহিউদ্দিন খানের এই জয়টা মোটেও অবাক করার মতো নয়।

এবার আসবে এস এম ফরহাদের নাম। দেখতে সে ছোটখাটো হলেও তার দায়িত্বটা বিশাল। একজন ডিবেটর হিসেবে তার বেশ খ্যাতি আছে। কখনো কখনো তিনি বাম রাজনীতির সমালোচনা করেছেন, আবার কখনো ছাত্রদলের ভুলগুলোকে ধরিয়ে দিয়েছেন। আবার প্রতিপক্ষের দিক থেকেও কেউ কেউ ফরহাদকে নিয়ে নানা সময় নানা আলোচনা ও সমালোচনা করেছেন। তিনি সেসব সমালোচনার সুস্পষ্ট জবাব দিয়েছেন তার দায়িত্বশীল আচরণের মাধ্যমে। ছাত্রলীগের সাথে তার অতীত সংশ্লিষ্টতা নিয়ে প্রচুর সমালোচনা আছে, কিন্তু ফরহাদের দাবি সেটা ছিল তার চৌকস কৌশল। তিনি নাকি পরিচয় লুকিয়ে শিবির করতেন। ফরহাদের যে রুমমেট তার সঙ্গে দীর্ঘ চার বছর থেকেছে, সেও ফরহাদের আসল রাজনৈতিক পরিচয় জানতো না। ২০০৪ সালের ৫ই আগস্টের পর ফরহাদের পরিচয় সামনে আসার পর, অন্য অনেকের মতো তার রুমমেটও অবাক হয়েছিল। ফরহাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ১৭-১৮ সেশনের এবং পাশাপাশি কবি জসীমউদ্দীন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। ডাকসু নির্বাচনের সময় ফরহাদকে তেমন প্রচারণা করতে দেখা যায়নি, অথচ তার জয় আল্লাহ সহজভাবে এনে দিয়েছেন।

সর্বশেষে আসবে এই ডাকসুর ইতিহাসের অন্যতম নাম, যার দ্বারা পুরো ডাকসু আগামী কয়েক বছর পরিচালিত হবে, তার নাম হলো সাদিক কায়েম। তিনি হলেন শিবিরের অন্যতম ফ্রন্টলাইনার। ডাকসুতে তিনি শিবিরের হয়ে প্রচার-প্রচারণা করেছেন সবচেয়ে বেশি। সাদিক কায়েমের প্রচারণা সবসময়ই ছিল একদম সাদামাটা। কিন্তু তার জয় আল্লাহ দিলেন অনেক বড়সড় করে। তিনি বর্তমান ডাকসুর ইতিহাসে শিবিরের প্রথম এবং একমাত্র ভিপি। মাঝরাতে গতকাল সবাই যখন বিজয় উল্লাসের অপেক্ষায়, সাদিক কায়েমকে তখন নামাজরত অবস্থায় একটি ভিডিও চিত্রে দেখা যায়। ভিপি হওয়ার আগেই আল্লাহর নাম স্মরণ করে সাদিক কায়েম বলেছিলেন, “ডাকসুর কাজ নেতা তৈরি করা নয়, বরং শিক্ষার্থীদের স্বার্থ হাসিল করা। এই স্বার্থগুলোর মধ্যে রয়েছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ: আবাসন সংকট দূর করা, শিক্ষার্থীদের খাবার এবং সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা, এবং বিশেষ করে রেজিস্টার ভবনে শিক্ষার্থীদের অনেককালের ভোগান্তি থেকে চির বিদায় দেওয়া।” এবার মূলত সেসব বাস্তবিকতার চিত্র প্রমাণ করার পালা। তিনি শিক্ষার্থীদের পার্টটাইম চাকরির সুযোগ, আধুনিক লাইব্রেরি ব্যবস্থা, মসজিদের আধুনিকায়ন, শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসনের প্রসারসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক সমস্যা সমাধানে কাজ করতে চান। শিক্ষাজীবনের প্রতিটি ধাপে সাদিক কায়েম অপূর্ব মেধার পরিচয় দিয়ে এসেছেন। সাদিক কায়েম যে এলাকা থেকে উঠে এসেছেন, সেখান থেকে খুব কম সংখ্যক ছেলে এ যাবৎ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে জায়গা করে নিতে পেরেছে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় খুব ভালোভাবে টিকে যান এবং একাধিক সংগঠনের প্রধান হিসেবে তিনি কাজ করেছেন। তার নেতৃত্বের গুণটা তার ভেতর আগে থেকেই আছে। এবার ভিপি হিসেবে তিনি কতটা সফল হবেন, তা সময় বলে দেবে।

জীবনে বড় কিছু অর্জন করতে হলে শুধু মেধা থাকলেই চলে না, তার সাথে দরকার দৃঢ় সংকল্প আর সততা। এই নির্বাচন প্রমাণ করলো যে, যখন মেধা আর সততার সমন্বয় ঘটে, তখন যেকোনো বাধা অতিক্রম করা সম্ভব। ছাত্র রাজনীতিকে কলঙ্কমুক্ত করে নতুন একটি উদাহরণ সৃষ্টি করার এই সুযোগ এসেছে, যা আগামী প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। বিজয় শুধু একটি পদের নয়, বরং লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীর প্রত্যাশার। এই পথচলা যেন নতুন দিনের সূচনা করে।

সংক্ষিপ্ত জীবনী :

ডঃ তারনিমা ওয়ারদা আন্দালিব, বর্তমানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক এবং যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ইমপ্যাক্ট গ্রুপে গ্লোবাল কনসালট্যান্ট ডিরেক্টর হিসেবে কর্মরত আছেন।

দাউদ ইব্রাহিম হাসান, বর্তমানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় একজন রিসার্চ এসিস্ট্যান্ট হওয়ার পাশাপাশি ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য এবং যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে নিয়োজিত থাকার পাশাপাশি আইডিএলসি ফাইনান্স পিএলসিতে মার্কেটিং ডিপার্টমেন্টের একজন সদস্য হিসেবে নিয়োজিত আছেন।

মন্তব্য

জাতীয়
Mirza Fakhrul on the way to Singapore for his wifes treatment

স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের পথে মির্জা ফখরুল

স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের পথে মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার সহধর্মিণী রাহাত আরা বেগমের চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন।

আজ সকালে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে বিমানবন্দর ত্যাগ করেন তিনি।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান সাংবাদিকদের জানান, রাহাত আরা বেগমের চিকিৎসকের শিডিউল আগে থেকেই নেওয়া ছিল। সেই অনুযায়ী আজ তারা সিঙ্গাপুর গেছেন।

তিনি জানান, সকাল ৮টা ১০ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তারা রওনা হন। তবে, চিকিৎসার জন্য তারা কতদিন সিঙ্গাপুরে থাকবেন, তা জানাননি শায়রুল।

মন্তব্য

জাতীয়
Future Government will be determined by the vote of the people Amir Khasru

জনগণের ভোটেই নির্ধারিত হবে ভবিষ্যৎ সরকার: আমীর খসরু

জনগণের ভোটেই নির্ধারিত হবে ভবিষ্যৎ সরকার: আমীর খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনের মাধ্যমেই দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা হবে। ভোটের জন্য বিএনপি ইতোমধ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছে, আর জনগণও অধীর আগ্রহে নির্বাচনের অপেক্ষায় রয়েছে।
শুক্রবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে বরিশাল জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বরিশাল বিভাগীয় ব্যবসায়ী ফোরাম আয়োজিত ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আমীর খসরু বলেন,ভোটের মাধ্যমে জনগণ তাদের প্রতিনিধি ও সরকার নির্বাচন করবে। তখন মানুষ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে মৌলিক চাহিদার কথা বলতে পারবে। পাশাপাশি সরকার জনগণের কাছে দায়বদ্ধ ও জবাবদিহিমূলক থাকবে।
তিনি আরও বলেন,আমরা একটি নির্বাচিত সরকারের অপেক্ষায় আছি। জনগণ যদি আমাদের সমর্থন দেয়, তবে আগেভাগেই প্রস্তুতি নিচ্ছি যাতে প্রথম দিন থেকেই বাংলাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আগে অর্থনীতি কিছু সীমিত গোষ্ঠীর হাতে ছিল। আমরা চাই অর্থনীতিকে গণতন্ত্রায়ণ করতে। এজন্য ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পকে আন্তর্জাতিক বাজারে জায়গা করে দিতে হবে। গ্রামের মানুষের তৈরি একটি পণ্যই তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের হাতিয়ার হতে পারে।
তিনি জানান, বিএনপি দেশের প্রতিটি বিভাগে গিয়ে মানুষের সমস্যার কথা শুনছে এবং তাদের দাবি-চাহিদা পূরণের উপায় খুঁজছে। হস্তশিল্প ও কুটির শিল্পকে পুনরুদ্ধার, ব্র্যান্ডিং ও আর্থিক-প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারে জায়গা করে দিতে হবে।
আমীর খসরু বলেন, আমরা চাই প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষ ঘরে বসেই পণ্য তৈরি করবে এবং সেসব পণ্য দেশ-বিদেশে বিক্রি হবে। এতে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে, কর্মসংস্থান বাড়বে এবং অর্থনীতির মূলধারায় সাধারণ মানুষ যুক্ত হবে। এর মাধ্যমেই দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে।

মন্তব্য

জাতীয়
The situation of the country without selection will go worse Salam Pintu

নির্বাচন ছাড়া দেশের অবস্থা খারাপের দিকে যাবে: সালাম পিন্টু

নির্বাচন ছাড়া দেশের অবস্থা খারাপের দিকে যাবে: সালাম পিন্টু

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির ভাইস ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টু বলেনছেন- নির্বাচনটা বানচাল করার জন্য অনেকেই চেষ্টা করতেছেন। নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করতেছে, কিন্তু আপনাদের মনে রাখতে হবে একটি নির্বাচিত সরকার দেশকে সুশৃঙ্খল অবস্থায় নিয়ে আসতে পারে। নির্বাচন ছাড়া এ দেশের অবস্থা খারাপের দিকে যাবে।

বুধবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারী ও এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের সংবর্ধনা এবং ক্রেস্ট প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির তিনি এসব কথা বলেন।

সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু বলেন, নির্বাচন নিয়ে যারা চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র করুন না কেন এই বাংলাদেশের মানুষ অন্তত সচেতন। আমরা জনগণকে নিয়ে সেই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে যাতে সঠিক সময়ে নির্বাচন হয় এবং সরকারও নির্বাচনটা সঠিক সময়ে দিতে বদ্ধপরিকর। সে ব্যাপারে আমরা সচেতন থাকব এবং সক্রিয় থাকব।

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাদের সাথে জোটের ব্যাপারে এখন কিছু বলা যাচ্ছে না।

এ সময় ভূঞাপুর বালিকা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকে গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান তরফদার। এতে অতিথি ছিলেন- উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সেলিমুজ্জামান তালুকদার সেলু, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. মনিরুজ্জামান প্রমুখ।

মন্তব্য

জাতীয়
Rizvi is the expectation of a fair election before Ramadan

রমজানের আগেই একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা রিজভীর

রমজানের আগেই একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা রিজভীর

আগামী রমজানের আগেই দেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, এতে ষোলো বছর পর দেশের ভোটাররা ভোট দিতে পারবেন।

বুধবার (২৭ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির পক্ষ থেকে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও ফাতিহা পাঠ শেষে এ মন্তব্য করেন তিনি।

দেশের মানুষ এখনো নানাভাবে অধিকারবঞ্চিত উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তকারীদের দিক থেকে আমরা এক ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্রের মধ্যে বাস করছি। আমাদের আন্দোলনের চূড়ান্ত লক্ষ্য গণতন্ত্র এখনো প্রতিষ্ঠা পায়নি। তবে আমাদের বিশ্বাস খুবই দ্রুত রমজানের আগেই একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে, তাতে এ দেশের ভোটাররা ষোলো বছর ধরে যে ভোট দিতে পারেননি, এবার তারা সেই ভোট দিতে পারবেন।’

‘পাশাপাশি গণতন্ত্রের আরও বিভিন্ন শর্ত, যেমন: এ দেশের মানুষের মনে নিরাপত্তাবোধ তৈরি, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা— পূরণ করা সম্ভব হবে।’

তিনি বলেন, ‘আদালত হতে হবে অসহায় মানুষের শেষ ভরসার স্থল। সেই ধরনের একটি সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আর এই লক্ষ্য পূরণে মানুষের অনুপ্রেরণা হচ্ছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তিনি ছিলেন মানবতা, প্রেম ও দ্রোহের কবি। ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রাম, স্বাধীনতার লড়াই, নব্বইয়ের গণআন্দোলন এবং বছরখানেক আগে যে দুনিয়া কাঁপানো গণঅভ্যুত্থান হয়েছে, প্রতিটি জাতীয় অর্জন ও অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে যার গান ও কবিতা মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছে, দেশের জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেছে, তার গান গাইতে গাইতে ও তার কবিতা আবৃত্তি করতে করতে আমরা রাজপথে নেমে আসতাম।’

রিজভী বলেন, ‘স্বৈরশাসনের তপ্ত বুলেটের সামনে নিঃশঙ্কচিত্তে দাঁড়াতেও দ্বিধা করিনি, কারণ আমাদের কণ্ঠে ছিল জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের গান ও কবিতা। যখনই এ দেশের মানুষ অধিকারহারা হয়, তখনই তাদের সংঘবদ্ধ ও ঐক্যবদ্ধ করে অত্যাচারীর শৃঙ্খল ভাঙার প্রত্যয় জেগে ওঠে যার কবিতা ও গানে, তিনি কাজী নজরুল ইসলাম।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে তিনি (নজরুল) তার শানিত কলম চালাতে দ্বিধা করেননি। তার লেখা কবিতা, গান ও সৃষ্টির মধ্য দিয়ে যে চেতনা তিনি গোটা জাতিকে দিয়েছেন, তা ধারণ করেই আমরা দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে সংগ্রাম করেছি, জুলাই আন্দোলনে যার চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ হয়েছে।’

মন্তব্য

জাতীয়
Overnight discrimination will not end Mirza Fakhrul

রাতারাতি বৈষম্যের অবসান হবে না: মির্জা ফখরুল

রাতারাতি বৈষম্যের অবসান হবে না: মির্জা ফখরুল

বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠোমোতে দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্য চলে আসছে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সেখানে রাতারাতি এগুলোর সমাধান সম্ভব হবে না। কিন্তু আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, এই রাষ্ট্রকাঠামো বদলাতে হবে।

তিনি বলেছেন, ‘রাষ্ট্র কাঠামোর সংস্কারর চূড়ান্ত পর্যায়ে আমরা এখনো আসতে পরিনি। এমনকি নির্বাচন নিয়েও একই বিষয় আছে, যদিও জাতি এখন সেই দিকেই মনোনিবেশ করেছে। যে বিষয়গুলো নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন সংগ্রাম ও লড়াই করেছি, এটা মুহূর্তের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে— এমনটা মনে করার কোনো কারণ নেই।’

শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর প্রেসক্লাবে একটি সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘সামাজিক সুরক্ষা কতটুকু সু-রক্ষিত’ শিরোনামের এই সেমিনারের আয়োজন করে অর্পণ আলোক সংঘ নামের একটি সংগঠন।

এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন দৈনিক প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য রেহানা আক্তার রানু ও পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ড. এম মাসরুর রিয়াজ। সেমিনারটির সঞ্চালনা করেন অর্পণ আলোক সংঘের চেয়ারম্যান বীথিকা বিনতে হোসাইন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা এখন রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের কথা বলছি, একইসঙ্গে অর্থনৈতিক কাঠামোর কথাও বলছি। কিন্তু দীর্ঘদিনের সব অনাচার, অবিচার, নৈরাজ্য, দুর্নীতি ও স্বৈরাচার— সবকিছু কাটিয়ে একদিনে সুন্দর করে একটি রাষ্ট্র আমরা তৈরি করব, এটা মনে করার কোনো কারণ আছে বলে আমি মনে করি না।’

তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নতুন একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে। যে ৫২ বছরে একটা নিয়মিত ও শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিধান আমরা তৈরি করতে পারিনি, সেখানে আজ হঠাৎ করে মুহূর্তের মধ্যে আমরা সবকিছু ঠিক করতে পারব না। আমরা যারা রাজনীতি করছি, তারা চেষ্টা করছি। তবে বিচ্ছিন্নভাবে কিংবা জোড়াতালি দিয়ে কোনোকিছু করা যায় না। এর জন্য সুনির্দিষ্ট চিন্তাভাবনা ও লক্ষ্য প্রয়োজন। পাশাপাশি, রাজনৈতিক নেতাকর্মীদেরও আন্তরিকতা থাকতে হবে।’

এ সময়ে রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারের ওপর জোর দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এটা আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি। এই কাঠামো বদলাতে হবে। কারণ, বেগুন গাছ লাগিয়ে আমরা কমলালেবু আশা করতে পারি না। কাজেই আমাদের সামনে একটা সুযোগ এসেছে, সেটা যদি কাজে লাগাতে পারি, বৈষম্যহীন একটা সমাজব্যবস্থার কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারি, তাহলে হয়তো-বা অভ্যুত্থানের কিছুটা মূল্য আমরা পাব।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সবকিছু নির্ধারণ করে আমলারা। সেখান থেকে সবকিছু নেমে আসে। একজন স্কুলশিক্ষককেও নিজের সমস্যা সমাধান করতে ঢাকায় আসতে হয়, যেটার কোনো প্রয়োজন নেই। এর জন্য তো জেলা পরিষদই যথেষ্ট হওয়ার কথা।’

‘কিন্তু ওই যে সিস্টেম। কারণ, তারা যদি ঢাকায় না আসেন, তাহলে ঘুষ আসবে কোথা থেকে? এখন স্কুলশিক্ষক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক— সব নিয়োগ হয় ঘুষের বিনিময়ে। যেই রাষ্ট্রকাঠামোতে এমন বৈষম্য চলতে থাকে, সেখানে রাতারাতি কিছু করে ফেলতে পারব না।’

অনুষ্ঠানে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘মেহনিত মানুষের আন্দোলনের দাবি-দাওয়ার মঞ্চ হিসেবে আমরা নিজেদের গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। ২০১৫ সালে গণসংহতি আন্দোলনকে একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে ঘোষণা করি। এ সময়ে বাংলাদেশের মানুষের লড়াই-সংগ্রামে যুক্ত থাকার চেষ্টা করেছি।’

‘রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে জনগোষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধ রাখা; আমাদের লক্ষ্যও তাই।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে শ্রেণিগত পার্থক্য রয়েছে। সবচেয়ে বড় পার্থক্য ধনসম্পদে। গত ৫৪ বছরে যে দলগুলো ক্ষমতায় ছিল, তারা যে নীতি তৈরি করেছে, তাতে সংখ্যাগরিষ্ঠ খেটে খাওয়া মানুষ, নিপীড়িত জনগোষ্ঠী কিংবা লিঙ্গীয় পরিচয়ের মানুষ, তাদের জন্য সাম্য তো দূরের কথা, ন্যূনতম ভারসাম্যও তৈরি করতে পারেনি।’

‘এতে লুটপাট-নির্ভর একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখানে ধরে নেওয়া হয়, ক্ষমতা দিয়ে টাকা-পয়সা বানাবে।’

ববি হাজ্জাজ বলেন, ‘শেখ হাসিনার আমলে ব্যাংক লুট হয়ে সাফা হয়ে গেছে। কিন্তু গত পরশুদিন দেখলাম, ৯টি নন-ব্যাংকি ফিন্যানশিয়াল ইনস্টিটিউশন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এটা বিশাল ব্যাপার। কিন্তু হাসিনা চলে যাওয়ার পরও লুটপাট বন্ধ হয়ে যায়নি। গেল ১২ মাসে প্রায় একইভাবে ব্যাংকিং খাতে লুটপাট হয়েছে। এটি আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক অবক্ষয়, যেগুলো হাসিনার আমলে বেশি হয়েছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, এজন্য কোনো জবাবদিহিতা নেই।

তিনি আরও বলেন, ‘কোনো ব্যাংক থেকে একটি টাকা লুট হলেও বাংলাদেশের ব্যাংকের নজরদারি থাকে। লুট হবে, বাংলাদেশ ব্যাংক জানবে না— এটা হয় না। হাসিনার আমলে যে লুট হয়েছে, তা বাংলাদেশ ব্যাংক জানত। কিন্তু সেখানে যে কর্মকর্তাদের এই নজরদারি করার কথা ছিল, তাদের নামে কোনো নিউজ হয়নি, মামলা হয়নি। অর্থাৎ এই প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসা হয়নি।’

মন্তব্য

জাতীয়
If people want we will form the government Dr Taher

যদি জনগণ চায় তবে আমরাই সরকার গঠন করব: ডা. তাহের

যদি জনগণ চায় তবে আমরাই সরকার গঠন করব: ডা. তাহের

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, সাধারণ মানুষ ইসলামকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। আমি নির্বাচনের ব্যাপারে খুবই সিরিয়াস। যদি জনগণ চায় তবে আমরাই সরকার গঠন করব।

তিনি বলেছেন, ইসলামী সমমনাদের এক মঞ্চে আনার বিষয়ে সবাই একমত। বড় বড় রাজনৈতিক নেতারা অনেক সময় পিআর বুঝেন না, কিন্তু সাধারণ মানুষ বিষয়টি ভালোভাবেই বোঝে। কুমিল্লা বিভাগ বাস্তবায়ন ও বিমানবন্দর চালুর বিষয়ে ইতোমধ্যে অগ্রগতি হয়েছে। শিগগিরই সুখবর আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে দিনব্যাপী কুমিল্লা ফানটাউনে জামায়াতে ইসলামী কুমিল্লা মহানগরীর ‘নির্বাচনী দায়িত্বশীল সমাবেশ’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

ডা. তাহের বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনে পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতি চালুর জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত রয়েছে।

বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, প্রয়োজনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আমলে হ্যাঁ/না ভোটের মতো পদ্ধতিও গ্রহণ করা হতে পারে।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন- কুমিল্লা মহানগরীর আমির ও কুমিল্লা ৬ সংসদীয় আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী কাজী দ্বীন মোহাম্মদ।

কুমিল্লা মহানগরীর দুরবস্থার প্রসঙ্গ টেনে ড. তাহের বলেন, আমি কান্দিরপাড় থেকে ডুলিপাড়া ফানটাউনে আসতে ৪৫ মিনিট সময় নিয়েছি। যেখানে স্বাভাবিক সময়ে ৫ মিনিটের বেশি লাগার কথা নয়।

সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি আবারও জোর দিয়ে বলেন, নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি চালুর বিষয়ে জামায়াত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে আগ্রহী। প্রয়োজনে বিকল্প ফরম্যাটেও কাজ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, কোনো দল যদি মনে করে আগামী নির্বাচনে নিশ্চিত জয়ী হবে তাহলে বোঝা যায় জেতার জন্য তারা কোনো একটা মেকানিজম করছে। একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলাদেশকে সংকট থেকে বের করে আনতে পারবে। জনগণ যাকে চাইবে তারাই জয়ী হবে।

মহানগরীর সেক্রেটারি মাওলানা মাহবুবুর রহমান এবং সহকারী সেক্রেটারি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান সোহেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- মহানগরীর নায়েবে আমির অধ্যাপক এ কে এম এমদাদুল হক মামুন, যুব বিভাগের সভাপতি কাজী নজির আহমেদ, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের মহানগর সভাপতি অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট নাছির উদ্দিন মোল্লা, মোতাহার আলী দিলাল, ভিপি মুজিবুর রহমান, কুসিক ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন, অধ্যাপক এ জি এস শহিদুল্লাহ, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সবুজ প্রমুখ।

মন্তব্য

p
উপরে