× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

জাতীয়
সোনারগাঁ তাণ্ডবে হেফাজতের সঙ্গী জাপা দিশাহীন আ লীগ
google_news print-icon

সোনারগাঁ তাণ্ডবে হেফাজতের সঙ্গী জাপা, দিশাহীন আ. লীগ

সোনারগাঁ-তাণ্ডবে-হেফাজতের-সঙ্গী-জাপা-দিশাহীন-আ-লীগ
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের একটি রিসোর্টে কথিত দ্বিতীয় স্ত্রীসহ স্থানীয়দের হাতে হেফাজত নেতা মামুনুল হক অবরুদ্ধ হলে তাণ্ডব চালিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায় সংগঠনটির কর্মীরা। ছবি: নিউজবাংলা
সহিংসতায় হেফাজত কর্মীদের সঙ্গে জাতীয় পার্টির স্থানীয় সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকার অনুসারীরা সরাসরি অংশ নেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই সঙ্গে শামীম ওসমান ও সেলিনা হায়াত আইভীর দ্বন্দ্বে বিপর্যস্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ছিলেন অপ্রস্তুত।

হেফাজত নেতা মামুনুল হকের রিসোর্টকাণ্ড কেন্দ্র করে ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলায় ব্যাপক তাণ্ডব চালান হেফাজত কর্মীরা। রয়্যাল রিসোর্টের পাশাপাশি ভাঙচুর করা হয় স্থানীয় আওয়ামী লীগ কার্যালয়, বাজারের দোকানপাট। হামলা হয় আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িতেও।

এই সহিংসতায় হেফাজত কর্মীদের সঙ্গে জাতীয় পার্টির স্থানীয় সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকার অনুসারীরা সরাসরি অংশ নেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই সঙ্গে হামলায় যোগ দেন বিএনপি, জামায়াতের কর্মীরাও।

ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ, নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমান ও সেলিনা হায়াত আইভীর দ্বন্দ্বের জেরে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগও বিপর্যস্ত। এ কারণে ৩ এপ্রিলের সংঘাতময় পরিস্থিতিতে কোনো প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।

রয়্যাল রিসোর্টে মামুনুল হককে তার কথিত স্ত্রীর বিষয়ে জেরা করেছিলেন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেকসহ সভাপতি সোহাগ রনি। পরে এ দুজনের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করেন হেফাজত কর্মীরা।

যুবলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম নান্নু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্থানীয় কয়েকজন ইউটিউবার ও সাংবাদিক আমাকে টেলিফোনে পরনারীসহ মামুনুল হকের রিসোর্টে অবস্থানের কথা জানালে, আমি সেখানে ছুটে যাই। আমার মতো ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সোহাগ রনিও সেখানে যান। আমাদের এলাকায় এমন ঘটনা ঘটলে আমাদের তো যেতে হবেই। সেখানে সাংবাদিক-পুলিশ তাদের জেরা করেছে, সেসব ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পরলে হেফাজত কর্মীরা ভেবেছে আমরা ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছি। এরপর তারা আমার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান আর বাসায় ভাঙচুর করে, হামলা করে আমার সবকিছু শেষ করে দেয়।’

সোনারগাঁ তাণ্ডবে হেফাজতের সঙ্গী জাপা, দিশাহীন আ. লীগ
সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্ট কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী নিয়ে অবরুদ্ধ হন হেফাজতের যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হক। ছবি: নিউজবাংলা

ওই দিনের হামলায় হেফাজতের সঙ্গে অন্য কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও অংশ নেন দাবি করে নান্নু বলেন, ‘তারা অতর্কিত হামলা করেছিল, আমরা বুঝতেই পারিনি এমন হামলা হবে। হামলা প্রতিহত করার কোনো প্রস্তুতিই আমাদের ছিল না। হেফাজত, বিএনপি ও জামাত-শিবিরের কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে স্থানীয় জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকার আত্মীয়-স্বজন আমার বাড়ি ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে হামলা-লুটপাট করেছে।’

জাতীয় পার্টির এমপির স্বজন-সমর্থকদের জড়িত হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তারা প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে হামলা করেছে। এখানে জাতীয় পার্টির এমপি আওয়ামী লীগের বিরোধী দল হিসেবে কাজ করে। তিনি বিএনপি-জামাতকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে সব সময় তৎপর থাকেন।’

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদেরও বিষয়টি জানানো হয়েছে উল্লেখ করে নান্নু বলেন, ‘তাদের জানানোর পরই ঘটনাস্থল সরেজমিনে দেখতে এসেছেন। তখনও আমরা সামনাসামনি সব কিছু বলেছি, এরপর তারা বলেছেন কাউকেই আর ছাড় দেয়া হবে না।’

তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সোহাগ রনি বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তবে তার বাবা মোগড়াপাড়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার শাহ জামাল তোঁতা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হেফাজতের কর্মীদের সঙ্গে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির কর্মীরা এসে আমাদের বাড়ি ও পাশের বাজারে হামলা চালায়।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা জনগণের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি নন, তাই তিনি এখানকার মানুষের জন্য রাজনীতি করেন না। তিনি নিজের স্বার্থের কারণে বিএনপি-জামাতকে নিয়ে রাজনীতি করতে চান। আমাদের বাড়িতে হামলা হলো, কই তিনি তো একবার দেখতেও এলেন না!’

শাহ জামাল তোঁতা বলেন, ‘আমার ছেলে নিয়মিত মাদ্রাসার ছাত্রদের খোঁজ খবর রাখে, নিয়মিত তাদের খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করে, তাদের সঙ্গে আমার ছেলের সম্পর্ক ভালো, তারপরেও তারা আমার ছেলের বাসায় ভাঙচুর করল কীভাবে!’

তবে অভিযোগ মানছেন না নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির নেতা লিয়াকত হোসেন খোকা। তিনি পাল্টা অভিযোগ তোলেন নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল কায়সারের বিরুদ্ধে।

খোকা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছেন আবদুল্লাহ আল কায়সার। তার আসনে আমি নির্বাচিত হওয়ায় প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে আমার বিরুদ্ধে তার কর্মীদের দিয়ে এসব কথা বলাচ্ছেন।’

সোনারগাঁ তাণ্ডবে হেফাজতের সঙ্গী জাপা, দিশাহীন আ. লীগ
মামুনুলকে ছাড়িয়ে নিতে লাঠিসোটা নিয়ে সোনারগাঁ এলাকায় তাণ্ডব চালায় হেফাজতের কর্মীরা। ছবি: নিউজবাংলা

৩ এপ্রিলের ঘটনার বিষয়ে খোকা বলেন, ‘আমি বা আমার কর্মীরা কোনোভাবেই হেফাজতের সঙ্গে ছিলাম না। পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে ধারণা করে আমি আমার কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছিলাম, তারা যেন রাস্তায় নেমে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে ফেরত পাঠায়। কোনো ধরনের সহিংসতা না করতে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করতে তাদের মাঠে নামতে বলেছিলাম।

‘মামুনুল হকের বিষয়টি শোনার সঙ্গে সঙ্গেই একজন দায়িত্বশীল সংসদ সদস্য হিসেবে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি, যেন এ নিয়ে কোনো উত্তেজনা সৃষ্টি না হয়। কিন্তু উল্টো এখন আমার ঘাড়ে দোষ চাপানো হচ্ছে।’

হামলার পর সংসদ সদস্য হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে দেখা না করার কারণ ব্যাখ্যা করে খোকা বলেন, ‘তারা তো সবাইকে আমার বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ করে তুলেছিল, এমন পরিস্থিতিতে আমি কীভাবে সেখানে যাই!’

লিয়াকত হোসেন খোকার অভিযোগের বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল্লাহ আল কায়সারের বক্তব্য জানতে চায় নিউজবাংলা। তিনি বলেন, ‘তার (খোকা) প্রতি আমার প্রতিহিংসার কিছু নাই। তিনি তার মতো নিজেকে সেভ করতে মনগড়া কথা বলতেই পারেন। আপনারা সাংবাদিক নিজেরা তদন্ত করে দেখুন, সব উত্তর পেয়ে যাবেন।’

৩ এপ্রিলের পর আবদুল্লাহ আল কায়সার এক সমাবেশে বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি না আলেম সমাজ এই হামলায় জড়িত, এই হামলা করেছে জাতীয় পার্টি, বিএনপির কর্মীরা।’

এ বক্তব্যের বিষয়ে আবদুল্লাহ আল কায়সার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি সত্যিই বিশ্বাস করি না, কারণ স্থানীয় আলেমদের সঙ্গে আমাদের বোঝাপড়া অনেক ভালো। ২০১৩ সালের ৫ মের আন্দোলনের সময় স্থানীয় আলেমরা আমার অনুরোধে শাপলা চত্বরে যাননি। আমি তখন এই আসনের সংসদ সদস্য, পরে আমি খেয়াল রেখেছি তাদের বিরুদ্ধে যেন হয়রানিমূলক কোনো মামলা না হয়।’

সোনারগাঁয়ে তাণ্ডবের ঘটনায় যে তিনটি মামলা হয়েছে তার একটির বাদি সোনারগাঁ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জিয়াউর রহমান। সে মামলায় প্রধান আসামি মামুনুল হকের পাশাপাশি সোনারগাঁ পৌরসভা জাতীয় পার্টির সভাপতি এম এ জামান ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলামকেও আসামি করা হয়েছে। একই মামলায় আসামি হিসেবে আছেন স্থানীয় হেফাজত, বিএনপি, জামাত-শিবির কর্মীরাও।

সোনারগাঁ তাণ্ডবে হেফাজতের সঙ্গী জাপা, দিশাহীন আ. লীগ
হেফাজতের তাণ্ডবে তছনছ রয়্যাল রিসোর্টের জিম। ছবি: নিউজবাংলা

আওয়ামী লীগ কেন কোণঠাসা?

মামুনুল হকের রিসোর্টকাণ্ড ঘিরে সোনারগাঁ উপজেলার মোগড়া পাড়া এলাকায় আওয়ামী লীগের কার্যালয়সহ দুই নেতার বাড়িতে হামলার সময় ন্যূনতম প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি স্থানীয় আওয়ামী লীগ।

উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক শামছুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ভাবতেই পারিনি এমন কিছু ঘটবে। হঠাৎ করেই সহিংসতা শুরু হল। কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছ থেকে কোনো নির্দেশনা ছিল না, তাই আমাদের কোনো প্রস্তুতিও ছিল না।’

সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল কায়সার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য একটি শিক্ষা। এখানে কমিউনিকেশন গ্যাপ হয়েছে, সেই সঙ্গে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের দুই নেতারও ভুল আছে। মামুনুল হক তো আর কোনো ছোট নেতা নন। তিনি সাম্প্রতিক সময়ে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছেন। তাই সেখানে ছুটে যাবার আগে তাদের অবশ্যই সিনিয়র নেতাদের জানানো দরকার ছিল।’

প্রশাসনও কালক্ষেপণ করে হামলাকারীদের সুসংগঠিত হবার সুযোগ করে দিয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘প্রশাসনের উচিত ছিল মামুনুল হককে নিরাপদ কোথাও সরিয়ে নেয়া, তারা সেটা করেনি।’

রিসোর্টে যাবার আগে সিনিয়র নেতাদের কেন জানাননি- জানতে চাইলে যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সেটা আমার ভুল হয়েছে, আমি আসলে বুঝেতে পারিনি।’

প্রশাসনের অবহেলার অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি সোনারগাঁ পুলিশের কোনো কর্মকর্তা। তবে সোনারগাঁ থানার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই ধরনের রাজনৈতিক সিচ্যুয়েশন ডিল করতে হলে আমাদের পলিটিক্যাল ডিসিশনের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। ধরে নিন সেখান থেকে আমরা কোনো সিদ্ধান্ত পাচ্ছিলাম না।’

সোনারগাঁ তাণ্ডবে হেফাজতের সঙ্গী জাপা, দিশাহীন আ. লীগ
সোনারগাঁ এলাকায় এক ছাত্রলীগ নেতার রেস্টুরেন্টেও ভাঙচুর চালায় হেফাজত কর্মীরা। ছবি: নিউজবাংলা

২৫ বছর কমিটি ছাড়া সোনারগাঁ আওয়ামী লীগ

সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের সবশেষ সম্মেলন হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। এ নিয়ে ক্ষোভ আছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগ করতে করতে বুড়ো হয়ে গেলাম, এখনও কোনো পদ পেলাম না। আমার বয়স ৬১ চলছে, কবে কমিটি হবে আর কবেই বা পদ পাব! সারাজীবন আওয়ামী লীগকে দিয়েই গেলাম, পেলাম না কিছুই।’

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করেন, ‘এত লম্বা সময়ে কমিটি না হওয়ায় দলীয় কোন্দলের মাত্রা বেড়েছে। তৈরি হয়েছে নেতৃত্বের সংকট।

১৯৯৬ সালে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য আবুল হাসনাত। তিনি মারা যাবার পর ২০১৭ সাল পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন বর্তমান উপজেলা আহ্বায়ক শামছুল ইসলাম।

এত সময় ধরে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি থাকার পরেও কেন উপজেলা কমিটি করতে পারলেন না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি জেলা আওয়ামী লীগ থেকে তখন সহযোগিতা পাইনি। জেলা আওয়ামী লীগের আগ্রহের অভাব ছিল। এখন আর কোনো সমস্যা নাই, সব কিছু গোছানো আছে, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে আমরা সম্মেলন করব।’

এ অভিযোগ নিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শামছুল ইসলাম সাহেব কেন জেলা থেকে সহযোগিতা পাননি, সে বিষয়ে আমরা সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলতে পারব না। কারণ সে সময়ে আমরা দায়িত্ব ছিলাম না।’

জেলা আওয়ামী লীগে হেফাজত ও জাতীয় পার্টি ‘প্রীতি’

সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা জানান, নারায়ণগঞ্জে কখনওই হেফাজত বা জাতীয় পার্টির আধিপত্য ছিল না। তবে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের বড় ভাই সেলিম ওসমান নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য হওয়ায় জাতীয় পার্টির প্রতি তার মৌন সমর্থন কাজ করে। তাছাড়া শামীম ওসমান অনেকবার হেফাজত নেতাদের প্রকাশ্য সমর্থন দিয়েছেন।

সোনারগাঁ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু অভিযোগ করেন, ‘শামীম ওসমান সাহেব জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকাকে প্রশ্রয় দেন। সেজন্যই তিনি বাড়াবাড়ি করার সাহস পাচ্ছেন। আমরা আওয়ামী লীগের কর্মীরা নানাভাবে নির্যাতিত। আমি নিজেসহ অন্য আওয়ামী লীগ নেতারা খোকা সাহেবের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ করেও তার (শামীম ওসমান) কাছ থেকে কোনো সমাধান পাইনি।’

সোনারগাঁয়ের স্থানীয়রা জানান, তাদের এলাকায় সম্প্রতি অনেক মাদ্রাসা স্থাপিত হয়েছে, যেগুলোর পৃষ্ঠপোষকতায় আছেন শামীম ওসমান ও তার সমর্থকেরা।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল ও ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি।

সোনারগাঁ তাণ্ডবে হেফাজতের সঙ্গী জাপা, দিশাহীন আ. লীগ
নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের পরিচিত দুই মুখ শামীম ওসমান ও সেলিনা হায়াত আইভী। ছবি: সংগৃহীত

জেলায় দলীয় বিরোধের জের উপজেলায়

সোনারগাঁ ‍উপজেলার রাজনীতিক, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ বলছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগে বছরের পর বছর ধরে চলা কোন্দলের কারণে উপজেলা পর্যায়েও আওয়ামী লীগ সংগঠিত হতে পারছে না। আর সোনারগাঁয়ে এই সুযোগটাই নিয়েছে হেফাজত আর জাতীয় পার্টি।

তাদের অভিযোগ, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান আর নারায়ণগঞ্জ পৌর মেয়র সেলিনা হায়াত আইভীর মধ্যে দা-কুমড়া সম্পর্কের প্রভাব জেলা থেকে উপজেলা পর্যায়ের নেতার্মীদের মধ্যেও পড়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সোনারগাঁ ‍উপজেলার এক আওয়ামী লীগ নেতা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শামীম ওসমান ও সেলিনা হায়াত আইভীর দ্বন্দ্ব এতটাই চরমে যে তারা কারও মুখোমুখি হন না। এমনকি কোনো দলীয় অনুষ্ঠানে একজন গেলে অন্যজন যান না। তাই আমরাও সুসংগঠিত হতে পারছি না। আমাদের নেতাদের পক্ষ থেকে সরাসরি কোনো নির্দেশ না থাকায় হেফাজতের তাণ্ডবের সময় নিশ্চুপ ছিলাম।’

হেফাজতের তাণ্ডবের চিত্র সরেজমিনে দেখতে বুধবার ঢাকা থেকে ঘটনাস্থলে যায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের একটি দল। সেখানে শামীম ওসমান উপস্থিত থাকলেও যাননি মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী। তবে আইভী সমর্থকদের একটি অংশ উপস্থিত ছিলেন।

ঘটনাস্থলে না যাওয়ার কারণ জানতে মোবাইল ফোনে আইভীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই ইস্যু নিয়ে আমি কথা বলতে চাই না।’

এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল কায়সার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দলে যতই কোন্দল থাকুক, জাতীয় ইস্যুতে আমরা সবসময় ঐক্যবদ্ধ। এর আগেও আমরা এক হয়ে অনেক আন্দোলন করেছি। সেদিনের হেফাজত তাণ্ডবে দলীয় কোন্দলের কোনো প্রভাব ছিল না। এটা ভুল কথা।’

অন্যদিকে, উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক শামসুল ইসলাম বলেন, ‘এখন আমরা সুসংগঠিত। আমাদের মাঝে আর কোনো সমস্যা নেই। কেন্দ্রীয় নেতারা এসেছেন, তারা আমাদের নির্দেশনা দিয়ে গেছেন, এখন আমরা ঐক্যবদ্ধ, আর কোনো সমস্যা হবে না।’

আরও পড়ুন:
একা মা পরিচয়েই ঢাকায় বাসা ভাড়া
মামুনুল হক চরিত্রহীন: নওফেল
রিসোর্টকাণ্ডে হেফাজতে ভাঙনের শঙ্কায় মামুনুল
‘আল্লাহর গজবের’ চ্যালেঞ্জ মামুনুলের
নাম তাইয়্যেবা বলেছিলাম ভয়ে: মামুনুল

মন্তব্য

আরও পড়ুন

জাতীয়
Live to appeal hearing next Sunday in the August 28 grenade attack case

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় লিভ টু আপিল শুনানি আগামী রোববার

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় লিভ টু আপিল শুনানি আগামী রোববার

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল আগামী রোববার শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসবে।

আসামি পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, আজ জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চে শুনানির জন্য আপিলটি ছিলো। কিন্তু এই মামলায় হাইকোর্টের অথর জাজ বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান আজ আপিল বিভাগের বেঞ্চে ছিলেন।

নিয়ম অনুযায়ী হাইকোর্টে রায় দানকারী বিচারপতি একই মামলা আপিল বেঞ্চে শুনানি গ্রহণ করতে পারেন না।

এজন্য আগামী রোববার পুনর্গঠিত বেঞ্চে আপিলটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসবে। আদালত বিষয়টিতে আজ নট টুডে আদেশ দিয়েছেন।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত ও বহু মানুষ আহত হন। ওই গ্রেনেড হামলার ঘটনায় মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়। ২০০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সিআইডি এই মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দিলে শুরু হয় বিচার।

তবে, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এই মামলায় অধিকতর তদন্তে আসামির তালিকায় যুক্ত করা হয় বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৩০ জনকে।

দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন আলোচিত মামলার রায় দেন।

আলোচিত ওই রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন- আব্দুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন, হুজি’র সাবেক আমির ও ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, কাশ্মীরি জঙ্গি আব্দুল মাজেদ ভাট, আবদুল মালেক ওরফে গোলাম মোস্তফা, মাওলানা শওকত ওসমান, মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান, মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডা. জাফর, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, মো. জাহাঙ্গীর আলম, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, হোসাইন আহম্মেদ তামিম, মঈন উদ্দিন শেখ ওরফে মুফতি মঈন, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. উজ্জল, এনএসআই-এর সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম ও হানিফ পরিবহনের মালিক মোহাম্মদ হানিফ।

বিচারিক আদালতের রায়ে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন ও ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। সে রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামীরা হলেন- খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিএনপি’র সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, হুজি সদস্য হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, শাহাদাৎ উল্লাহ ওরফে জুয়েল, মাওলানা আবদুর রউফ, মাওলানা সাব্বির আহমেদ, আরিফ হাসান ওরফে সুমন, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম মাওলাদার, মো. আরিফুল ইসলাম, মহিবুল মুত্তাকিন ওরফে মুত্তাকিন, আনিসুল মুরছালিন ওরফে মুরছালিন, মো. খলিল ওরফে খলিলুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মো. ইকবাল ওরফে ইকবাল হোসেন, লিটন ওরফে মাওলানা লিটন, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আব্দুল হাই ও রাতুল আহমেদ ওরফে রাতুল বাবু।

এছাড়া, বিচারিক আদালতের রায়ে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) মো. আশরাফুল হুদা ও শহিদুল হক, বিএনপি চেয়ারপারসন ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার, ডিজিএফআই-এর মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আমিন, ডিএমপি’র সাবেক উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) খান সাঈদ হাসান, আরেক সাবেক উপ-কমিশনার (পূর্ব) ওবায়দুর রহমান খান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক খোদা বক্স চৌধুরী, সিআইডি’র সাবেক বিশেষ সুপার মো. রুহুল আমিন, সাবেক এএসপি আবদুর রশিদ ও সাবেক এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমানকে দুই বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এই মামলার আরেকটি ধারায় খোদা বক্স চৌধুরী, রুহুল আমিন, আবদুর রশিদ ও মুন্সি আতিকুর রহমানকে তিন বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেন আদালত।

বিচারিক আদালতে এই রায়ের দেড় মাসের মাথায় ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্সসহ মামলার নথি হাইকোর্টে আসে। ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে ডেথ রেফারেন্স এবং আসামিদের আপিল ও জেল আপিল শুনানি শুরু হয়। বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি চলছিল।

তবে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর হাইকোর্ট বেঞ্চ পুনর্গঠন হলে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি হয়। শুনানি শেষে গত ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট এই মামলার সব আসামীকে খালাস দিয়ে রায় দেন। সে রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।

মন্তব্য

জাতীয়
Earthquake

দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভূমিকম্প

দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভূমিকম্প প্রতীকী ছবি
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের ডেটা অনুযায়ী, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমারের সাগাইংয়ের ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে।

ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।

ভূমিকম্পটি শুক্রবার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে অনুভূত হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের ডেটা অনুযায়ী, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমারের সাগাইংয়ের ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে।

এ ভূমিকম্পে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন:
জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামি সতর্কতা
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প
চীনে ভূমিকম্পে নিহত ৫৩, আহত ৬২
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প
বছরের শুরুতেই ভূমিকম্পে কাঁপল সিলেট

মন্তব্য

জাতীয়
The United States will pay and 1 million for the Rohingya

রোহিঙ্গাদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্র

রোহিঙ্গাদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা ক্যাম্প। ছবি: বাসস
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক্সে একটি পোস্টে বলেন, ‘বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিওইএফ) মাধ্যমে এ খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা ১০ লাখেরও বেশি মানুষের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা প্রদান করবে। এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদাররা এ ধরনের জীবন রক্ষাকারী সহায়তার মাধ্যমে বোঝা ভাগ করে নেওয়ার সঙ্গে যুক্ত।’

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত বৃহত্তম জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের সাহায্য কমে যাওয়ার ফলে সংকট আরও গভীর হওয়ার উদ্বেগের মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসন বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, তারা জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন (সাত কোটি ৩০ লাখ) ডলার নতুন আর্থিক সহায়তা দেবে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক্সে একটি পোস্টে বলেন, ‘বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিওইএফ) মাধ্যমে এ খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা ১০ লাখেরও বেশি মানুষের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা প্রদান করবে।

‘এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদাররা এ ধরনের জীবন রক্ষাকারী সহায়তার মাধ্যমে বোঝা ভাগ করে নেওয়ার সঙ্গে যুক্ত।’

সিনহুয়া জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার প্রশাসন ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ এজেন্ডার অংশ হিসেবে বিদেশি সহায়তায় ব্যাপক কাটছাঁট এবং ফেডারেল ব্যয় ব্যাপকভাবে হ্রাস এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কিছু অংশ ভেঙে ফেলার বিস্তৃত প্রচেষ্টার মধ্যেই এ অনুদান দেওয়া হলো।

জাতিসংঘের দুটি সংস্থা সতর্ক করে দিয়েছিল যে, তহবিলের ঘাটতি গত আট বছর ধরে প্রতিবেশী মিয়ানমারে সহিংসতার কারণে পালিয়ে আসা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য রেশনের পরিমাণ কমিয়ে দেবে।

রোহিঙ্গারা আশঙ্কা করছেন, তহবিল হ্রাসের ফলে ক্ষুধা পরিস্থিতির অবনতি হবে। গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা এবং জ্বালানি হ্রাস পাবে।

পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সবচেয়ে বড় সহায়তা প্রদানকারী দেশ ছিল। প্রায় ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়ে আসছে দেশটি। কিন্তু জানুয়ারিতে ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর সাম্প্রতিক তহবিল স্থগিত করার ফলে কমপক্ষে পাঁচটি হাসপাতাল তাদের সেবা কমিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়েছে।

ট্রাম্প ও বিলিয়নেয়ার মিত্র ইলন মাস্ক প্রধান মার্কিন বৈদেশিক সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডি বন্ধ করে দিয়েছেন এবং এর অবশিষ্টাংশগুলোকে পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে একীভূত করেছেন। শত শত কর্মী এবং ঠিকাদারকে বরখাস্ত করেছেন এবং কোটি কোটি ডলারের পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছেন, যার ওপর বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ নির্ভরশীল।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ফেব্রুয়ারিতে সমস্ত জীবন রক্ষাকারী সহায়তা এবং এ ধরনের সহায়তা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় যুক্তিসঙ্গত প্রশাসনিক খরচ মওকুফ করেছিলেন।

ওয়াশিংটন টাইমস জানায়, এ মাসের শুরুতে ইউএসএআইডি ভেঙে দেওয়ার তত্ত্বাবধানকারী ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তা রোহিঙ্গাদের জন্য পর্যায়ক্রমে সাহায্য বন্ধের প্রস্তাব করেছিলেন।

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তা হ্রাস করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছে।

কক্সবাজার উপকূলের বিভিন্ন শিবিরের বাসিন্দারা এখন জনপ্রতি মাসিক ১২ ডলার করে খাদ্য বরাদ্দ পাবেন, যা আগের ১২ দশমিক ৫০ ডলার থেকে কম।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘ডব্লিউএফপি একটি চিঠিতে এই সিদ্ধান্তের কথা আমাদের জানিয়েছে, যা ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে।’

তিনি আরও বলেন, ভাসানচরে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা জনপ্রতি ১৩ ডলার করে পাবে, যা কক্সবাজারের তুলনায় এক ডলার বেশি।

বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তা কমানোর পরিকল্পনা ডব্লিউএফপি পূর্বে জানানোর পর এ পরিবর্তন এসেছে।

গত ৫ মার্চ বাংলাদেশের শরণার্থী কমিশন ডব্লিউএফপি থেকে একটি চিঠি পায়, যেখানে বলা হয়, তহবিল সংকটের কারণে এপ্রিল থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য মাসিক খাদ্য বরাদ্দ জনপ্রতি ১২ দশমিক ৫০ ডলার থেকে কমিয়ে ৬ ডলার করা হবে।

চিঠিতে শরণার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

গত ১৪ মার্চ জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন।

তার সফরের সময় তাকে ছয় ডলারে রোহিঙ্গারা কী খাবার পাবে তার বিস্তারিত বিবরণ উপস্থাপন করা হয়েছিল। সে সময় অপর্যাপ্ত পরিমাণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছিল।

আরও পড়ুন:
ঢাকা-বেইজিংয়ের মধ্যে ৯ চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর
ঋণের সুদহার কমাতে ইতিবাচক সাড়া চীনের, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতার আশ্বাস
২৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল রিজার্ভ
রোহিঙ্গাবাহী নৌকাডুবি: উদ্ধার ২৫, বিজিবি সদস্যসহ নিখোঁজ অনেকে
যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে সতর্কতা যুক্তরাজ্য ও জার্মানির

মন্তব্য

জাতীয়
The government is working to implement the demands of the workers Home Ministry

শ্রমিকদের দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

শ্রমিকদের দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের লোগো। ফাইল ছবি
বিবৃতিতে বলা হয়, ‌‘গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্প কলকারখানার শ্রমিকদের পাওনা বেতন-ভাতাদিসহ যৌক্তিক দাবির ব্যাপারে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক ও একমত। শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে এবং এ ব্যাপারে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে মালিকপক্ষ ও বিজিএমইএকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে এবং তাদের কর্মকাণ্ড মনিটর করা হচ্ছে।’

গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্পকারখানার শ্রমিকদের পাওনা বেতন-ভাতাসহ যৌক্তিক দাবির ব্যাপারে সরকার আন্তরিক ও একমত বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‌‘গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্প কলকারখানার শ্রমিকদের পাওনা বেতন-ভাতাদিসহ যৌক্তিক দাবির ব্যাপারে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক ও একমত। শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে এবং এ ব্যাপারে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে মালিকপক্ষ ও বিজিএমইএকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে এবং তাদের কর্মকাণ্ড মনিটর করা হচ্ছে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘অন্যায্য ও অযৌক্তিক দাবির নামে গার্মেন্টস শিল্পে অস্থিরতা সৃষ্টি, অবরোধ করে যান চলাচল বন্ধ, নৈরাজ্য ও সহিংসতা কোনোভাবেই কাম্য নয় এবং তা কখনোই মেনে নেয়া হবে না।

‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় সরকার তা কঠোরভাবে প্রতিহত করবে। গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্প কলকারখানায় সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ বজায় রাখা এবং দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে সরকার এ বিষয়ে মালিকপক্ষ ও শ্রমিকপক্ষ উভয়ের সহযোগিতা কামনা করছে।’

আরও পড়ুন:
গাজীপুরে শ্রমিক বিক্ষোভ, ছুটির পর চালু বিভিন্ন কারখানা
বকেয়া বেতন পরিশোধের আশ্বাস, রেলের অস্থায়ী শ্রমিকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার
ঈদ বোনাসসহ বিভিন্ন দাবিতে গাজীপুরে শ্রমিক বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ
ঐতিহ্য ও আভিজাত্যে মোড়া লা রিভের ঈদ কালেকশন
টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ধর্মঘট টেকনাফ স্থলবন্দরের শ্রমিকদের

মন্তব্য

জাতীয়
Environment adviser

আন্তসীমান্ত বায়ুদূষণ রোধে পদক্ষেপের আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার

আন্তসীমান্ত বায়ুদূষণ রোধে পদক্ষেপের আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ছবি: ইউএনবি
তিনি দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর কাঠমান্ডু রোডম্যাপ ও অন্যান্য সমঝোতার কথা উল্লেখ করে বলেন, এগুলো যথেষ্ট নয়, আরও জোরালো উদ্যোগ প্রয়োজন।

পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, আন্তসীমান্ত বায়ুদূষণ মোকাবিলায় কার্যকর আঞ্চলিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশের বায়ুদূষণের ৩০-৩৫ শতাংশ আসে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে। তাই এ সমস্যা সমাধানে রাজনৈতিক আলোচনার গণ্ডি পেরিয়ে বাস্তব পদক্ষেপ ও আঞ্চলিক সহযোগিতা জরুরি।

তিনি দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর কাঠমান্ডু রোডম্যাপ ও অন্যান্য সমঝোতার কথা উল্লেখ করে বলেন, এগুলো যথেষ্ট নয়, আরও জোরালো উদ্যোগ প্রয়োজন।

কলম্বিয়ার কার্টাগেনায় অনুষ্ঠিত ডব্লিউএইচওর দ্বিতীয় বৈশ্বিক সম্মেলনের বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া সাইড ইভেন্টে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে বৃহস্পতিবার ভোরে পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

ঢাকাস্থ বাসভবন থেকে সংযুক্ত হয়ে তিনি বাংলাদেশের বায়ুদূষণ সমস্যা, বিশেষ করে ঢাকার ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেন।

উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশের বহুমাত্রিক বায়ুদূষণ সমস্যা মোকাবিলায় বায়ুমান নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে, যা ডব্লিউএইচওর অন্তর্বর্তীকালীন লক্ষ্যমাত্রার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ আইনি বিধিমালায় দূষণকারী খাতগুলোর জন্য নির্দিষ্ট মানদণ্ড নির্ধারণ করা হয়েছে এবং অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণের কাঠামো তৈরি করা হয়েছে।

তিনি জানান, ২০২৪ সালে চূড়ান্ত হওয়া জাতীয় বায়ুমান ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার বাস্তবায়ন রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পিছিয়ে ছিল, তবে এখন তা কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে। পরিকল্পনার লক্ষ্য হলো মানুষের দূষণজনিত ঝুঁকি কমানো ও পরিষ্কার বায়ুর দিন বৃদ্ধির মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা।

পরিবেশ উপদেষ্টা আরও জানান, বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় বাংলাদেশ ক্লিন এয়ার প্রকল্প চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে, যা সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে শিগগিরই বাস্তবায়ন শুরু হবে। এ প্রকল্প নিয়ন্ত্রক কাঠামো শক্তিশালী করা, আইন প্রয়োগ জোরদার করা, শিল্প কারখানায় দূষণ পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ এবং গণপরিবহন খাত আধুনিকায়নের ওপর গুরুত্ব দেবে।

তিনি ঢাকার আশেপাশের এলাকাগুলোকে ইটভাটামুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করার পরিকল্পনার কথা জানান, যেখানে ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ থাকবে।

এ ছাড়া ২০২৫ সালের মে থেকে পুরনো বাস ধাপে ধাপে তুলে দেওয়া হবে, যা পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে বাস্তবায়ন করবে।

তিনি বায়ুদূষণের অন্যতম প্রধান কারণ ধুলাবালি দূষণ রোধে ঢাকা শহরের খোলা সড়কগুলোতে সবুজায়নের উদ্যোগ এবং রাস্তা পরিস্কারে আরও শ্রমিক নিয়োগের পরিকল্পনার কথা জানান।

উপদেষ্টা জানান, অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদ অভিযানের ফলে এরই মধ্যে বায়ুমানের কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে এ অগ্রগতি ধরে রাখতে কঠোর নজরদারি ও খাতগুলোর আধুনিকায়ন জরুরি।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ মানুষ বায়ুদূষণের কারণে মারা যায় এবং ঢাকার মতো দূষিত শহরগুলোতে মানুষের গড় আয়ু ৫-৭ বছর কমে যাচ্ছে। এই সংকট আমাদের সবার জন্য, আমাদের শিশু, বাবা-মা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য হুমকি। নিষ্ক্রিয়তার মূল্য অনেক বেশি। আমাদের এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমি আশাবাদী। কারণ আমি বিশ্বাস করি, এ সমস্যার সমাধান সম্ভব। প্রযুক্তি ও বিকল্প ব্যবস্থা আমাদের হাতে রয়েছে, শুধু প্রতিশ্রুতি ও বাস্তবায়ন দরকার।

‘বায়ুদূষণ শুধুই পরিবেশগত ইস্যু নয়, এটি মানবিক সংকট।’

সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধি, পরিবেশ ও জ্বালানি খাতের নীতিনির্ধারক, আন্তর্জাতিক ও উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি, গবেষক, স্থানীয় প্রশাসন, পরিবহন ও শিল্প খাতের বিশেষজ্ঞ এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

তারা দক্ষিণ এশিয়ায় বায়ুদূষণ রোধে যৌথভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন।

আরও পড়ুন:
‘অস্বাস্থ্যকর বাতাস’ নিয়ে বিশ্বে পঞ্চম দূষিত শহর ঢাকা
বায়ুদূষণে বিশ্বে প্রতিদিন ২ হাজার শিশুর মৃত্যু: প্রতিবেদন
ছুটির দিনে বাতাসের নিম্ন মানে সপ্তম ঢাকা
সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর ঢাকার বাতাস
ছুটির দিনে মানে উন্নতি, তবু ‘অস্বাস্থ্যকর’ ঢাকার বাতাস

মন্তব্য

জাতীয়
Holy Lilatul Kadar today

পবিত্র ‘লাইলাতুল কদর’ আজ

পবিত্র ‘লাইলাতুল কদর’ আজ প্রতীকী ছবি
মহান আল্লাহ লাইলাতুল কদরের রাতকে অনন্য মর্যাদা দিয়েছেন। হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও এ রাতের ইবাদত উত্তম।

পবিত্র লাইলাতুল কদর বা শবে কদর বৃহস্পতিবার। এর অর্থ ‘অতিশয় সম্মানিত ও মহিমান্বিত রাত’ বা ‘পবিত্র রজনী’।

আজ সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হবে কদরের রজনী।

যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে সারা দেশে রাতটি পালন করা হবে।

মহান আল্লাহ লাইলাতুল কদরের রাতকে অনন্য মর্যাদা দিয়েছেন। হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও এ রাতের ইবাদত উত্তম।

এ রাতে আল্লাহর অশেষ রহমত ও নিয়ামত বর্ষণ করা হয়। নির্ধারণ করা হয় মানবজাতির ভাগ্য।

৬১০ সালে কদরের রাতেই মক্কার নূর পর্বতের হেরা গুহায় ধ্যানরত মহানবী হযরত মুহাম্মদের (সা.) কাছে সর্বপ্রথম সুরা আলাকের পাঁচ আয়াত নাজিল হয়। এরপর আল্লাহর নির্দেশে ফেরেশতা জিবরাইল (আ.)-এর বহনকৃত ওহির মাধ্যমে পরবর্তী ২৩ বছর ধরে মুহাম্মদ (সা.)-এর কাছে বিভিন্ন প্রয়োজনীয়তা এবং ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নির্দিষ্ট আয়াত আকারে বিভিন্ন সুরা নাজিল করা হয়।

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ ঘোষণা করেন, ‘নিশ্চয়ই আমি তা (কোরআন) অবতীর্ণ করেছি কদরের রাতে। আর কদরের রাত সম্বন্ধে তুমি কি জানো? কদরের রাত হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। সে রাতে ফেরেশতারা ও রুহ অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক কাজে তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে।

‘শান্তিই শান্তি, বিরাজ করে ঊষার আবির্ভাব পর্যন্ত। (সূরা আল- কদর, আয়াত ১-৫)।’

হাদিসে বর্ণিত আছে, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) রমজান মাসের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করতেন এবং বলতেন, ‘তোমরা রমজানের শেষ ১০ রাতে লাইলাতুল কদর সন্ধান করো (বুখারি ও মুসলিম)।’

মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় পবিত্র রাতটি ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে কাটিয়ে দেন। কামনা করেন মহান রবের অসীম রহমত, নাজাত, বরকত ও মাগফিরাত।

এরই ধারাবাহিকতায় আজ রাত থেকে পরের দিন ভোররাত পর্যন্ত মসজিদসহ বাসা-বাড়িতে এবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। নফল নামাজ, পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আসকার, দোয়া, মিলাদ মাহফিল ও আখেরি মোনাজাত করবেন তারা।

এই উপলক্ষে শুক্রবার সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ উপলক্ষে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে রাতব্যাপী ওয়াজ মাহফিল, ধর্মীয় বয়ান ও আখেরি মোনাজাতের আয়োজন করা হয়েছে।

এ ছাড়া দেশের সব মসজিদেই তারাবির নামাজের পর থেকে ওয়াজ মাহফিল, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন থাকবে।

পবিত্র লাইলাতুল কদর/শবে কদর উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এবং বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি রেডিওগুলো বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করবে।

এ ছাড়া সংবাদপত্রগুলোতে বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করা হবে।

মন্তব্য

জাতীয়
The chief adviser to create a clear roadmap to build a prosperous Asia

সমৃদ্ধ এশিয়া গড়তে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

সমৃদ্ধ এশিয়া গড়তে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার চীনের হাইনানে বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) সম্মেলনে বৃহস্পতিবার বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: পিআইডি
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘পরিবর্তনশীল এ বিশ্বে এশীয় দেশগুলোর ভাগ্য পরস্পরের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। আমাদের অবশ্যই একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে যা অভিন্ন ভবিষ্যৎ এবং যৌথ সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাবে।’

এশীয় দেশগুলোকে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ও যৌথ সমৃদ্ধির জন্য সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

চীনের হাইনানে বৃহস্পতিবার বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘পরিবর্তনশীল এ বিশ্বে এশীয় দেশগুলোর ভাগ্য পরস্পরের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। আমাদের অবশ্যই একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে যা অভিন্ন ভবিষ্যৎ এবং যৌথ সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাবে।’

আর্থিক সহযোগিতা প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এশিয়াকে অবশ্যই একটি টেকসই অর্থায়ন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে এবং আঞ্চলিক উন্নয়ন ব্যাংক (এমডিবি) ও অনুরূপ প্রতিষ্ঠানগুলোর এ প্রচেষ্টায় নেতৃত্ব দেওয়া উচিত।

তিনি বলেন, ‘আমাদের এমন নির্ভরযোগ্য তহবিল দরকার যা আমাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করবে।’

বাণিজ্য সহযোগিতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এশিয়া এখনও বিশ্বের অন্যতম কম সংযুক্ত অঞ্চল।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এ দুর্বল সংযুক্তি বিনিয়োগ ও বাণিজ্যকে বাধাগ্রস্ত করছে। আমাদের অবশ্যই বাণিজ্য সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য দ্রুত কাজ করতে হবে।’

খাদ্য ও কৃষি সহযোগিতা বিষয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এশীয় দেশগুলোকে অবশ্যই সম্পদ-সাশ্রয়ী কৃষিকে উৎসাহিত এবং খাদ্য নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় উৎপাদন বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের আমদানির ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে। স্বনির্ভরতা অর্জন করতে হবে। টেকসই প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষি সমাধান ও জলবায়ুবান্ধব চাষাবাদের ক্ষেত্রে উদ্ভাবন বাড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‌এশিয়াকে অবশ্যই একটি শক্তিশালী প্রযুক্তি ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে হবে, যা পুনর্গঠনমূলক, সমবণ্টনমূলক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে।

তিনি বলেন,‘আমাদের জ্ঞান, তথ্য ভাগ করে নিতে হবে এবং প্রযুক্তি ইনকিউবেশন ও উদ্ভাবনে বিনিয়োগ করতে হবে। ডিজিটাল সমাধানে সহযোগিতা আমাদের অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করবে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘পরিশেষে বলব আমাদের সম্মিলিত কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রে মেধা সম্পদ ও যুবশক্তিকে রাখতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই একটি নতুন সভ্যতার ভিত্তি স্থাপন করতে হবে—একটি আত্মরক্ষা ও আত্মস্থায়ী সমাজ। আমাদের শূন্য-বর্জ্যের জীবনধারার ওপর ভিত্তি করে একটি পাল্টা সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। ভোগ সীমিত রাখতে হবে মৌলিক প্রয়োজনের মধ্যে।

‘আমাদের অর্থনীতিকে সামাজিক ব্যবসার ওপর ভিত্তি করে গড়ে তুলতে হবে, যা ভবিষ্যতের ব্যবসায়িক কাঠামো হিসেবে উদ্ভাসিত হবে, যেখানে উদ্ভাবন, লক্ষ্য ও দায়িত্ববোধ একীভূত থাকবে।’

অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, বোয়াও ফোরাম ও অন্যান্য অনুরূপ উদ্যোগগুলোকে যুবসমাজ ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে হবে, যেন আগামী প্রজন্মের জন্য এশিয়াকে আরও উন্নত করা যায়।

আরও পড়ুন:
চীনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধান উপদেষ্টা
জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা প্রধান উপদেষ্টার
স্টারলিংকের ইন্টারনেট বাণিজ্যিকভাবে চালু করতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ
দেশবিরোধী আন্দোলনে উসকানিদাতাদের গ্রেপ্তার করা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ডাকটিকিট অবমুক্ত করলেন প্রধান উপদেষ্টা

মন্তব্য

p
উপরে