× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

জাতীয়
সোনারগাঁ তাণ্ডবে হেফাজতের সঙ্গী জাপা দিশাহীন আ লীগ
google_news print-icon

সোনারগাঁ তাণ্ডবে হেফাজতের সঙ্গী জাপা, দিশাহীন আ. লীগ

সোনারগাঁ-তাণ্ডবে-হেফাজতের-সঙ্গী-জাপা-দিশাহীন-আ-লীগ
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের একটি রিসোর্টে কথিত দ্বিতীয় স্ত্রীসহ স্থানীয়দের হাতে হেফাজত নেতা মামুনুল হক অবরুদ্ধ হলে তাণ্ডব চালিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায় সংগঠনটির কর্মীরা। ছবি: নিউজবাংলা
সহিংসতায় হেফাজত কর্মীদের সঙ্গে জাতীয় পার্টির স্থানীয় সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকার অনুসারীরা সরাসরি অংশ নেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই সঙ্গে শামীম ওসমান ও সেলিনা হায়াত আইভীর দ্বন্দ্বে বিপর্যস্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ছিলেন অপ্রস্তুত।

হেফাজত নেতা মামুনুল হকের রিসোর্টকাণ্ড কেন্দ্র করে ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলায় ব্যাপক তাণ্ডব চালান হেফাজত কর্মীরা। রয়্যাল রিসোর্টের পাশাপাশি ভাঙচুর করা হয় স্থানীয় আওয়ামী লীগ কার্যালয়, বাজারের দোকানপাট। হামলা হয় আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িতেও।

এই সহিংসতায় হেফাজত কর্মীদের সঙ্গে জাতীয় পার্টির স্থানীয় সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকার অনুসারীরা সরাসরি অংশ নেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই সঙ্গে হামলায় যোগ দেন বিএনপি, জামায়াতের কর্মীরাও।

ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ, নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমান ও সেলিনা হায়াত আইভীর দ্বন্দ্বের জেরে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগও বিপর্যস্ত। এ কারণে ৩ এপ্রিলের সংঘাতময় পরিস্থিতিতে কোনো প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।

রয়্যাল রিসোর্টে মামুনুল হককে তার কথিত স্ত্রীর বিষয়ে জেরা করেছিলেন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেকসহ সভাপতি সোহাগ রনি। পরে এ দুজনের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করেন হেফাজত কর্মীরা।

যুবলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম নান্নু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্থানীয় কয়েকজন ইউটিউবার ও সাংবাদিক আমাকে টেলিফোনে পরনারীসহ মামুনুল হকের রিসোর্টে অবস্থানের কথা জানালে, আমি সেখানে ছুটে যাই। আমার মতো ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সোহাগ রনিও সেখানে যান। আমাদের এলাকায় এমন ঘটনা ঘটলে আমাদের তো যেতে হবেই। সেখানে সাংবাদিক-পুলিশ তাদের জেরা করেছে, সেসব ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পরলে হেফাজত কর্মীরা ভেবেছে আমরা ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছি। এরপর তারা আমার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান আর বাসায় ভাঙচুর করে, হামলা করে আমার সবকিছু শেষ করে দেয়।’

সোনারগাঁ তাণ্ডবে হেফাজতের সঙ্গী জাপা, দিশাহীন আ. লীগ
সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্ট কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী নিয়ে অবরুদ্ধ হন হেফাজতের যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হক। ছবি: নিউজবাংলা

ওই দিনের হামলায় হেফাজতের সঙ্গে অন্য কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও অংশ নেন দাবি করে নান্নু বলেন, ‘তারা অতর্কিত হামলা করেছিল, আমরা বুঝতেই পারিনি এমন হামলা হবে। হামলা প্রতিহত করার কোনো প্রস্তুতিই আমাদের ছিল না। হেফাজত, বিএনপি ও জামাত-শিবিরের কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে স্থানীয় জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকার আত্মীয়-স্বজন আমার বাড়ি ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে হামলা-লুটপাট করেছে।’

জাতীয় পার্টির এমপির স্বজন-সমর্থকদের জড়িত হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তারা প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে হামলা করেছে। এখানে জাতীয় পার্টির এমপি আওয়ামী লীগের বিরোধী দল হিসেবে কাজ করে। তিনি বিএনপি-জামাতকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে সব সময় তৎপর থাকেন।’

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদেরও বিষয়টি জানানো হয়েছে উল্লেখ করে নান্নু বলেন, ‘তাদের জানানোর পরই ঘটনাস্থল সরেজমিনে দেখতে এসেছেন। তখনও আমরা সামনাসামনি সব কিছু বলেছি, এরপর তারা বলেছেন কাউকেই আর ছাড় দেয়া হবে না।’

তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সোহাগ রনি বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তবে তার বাবা মোগড়াপাড়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার শাহ জামাল তোঁতা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হেফাজতের কর্মীদের সঙ্গে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির কর্মীরা এসে আমাদের বাড়ি ও পাশের বাজারে হামলা চালায়।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা জনগণের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি নন, তাই তিনি এখানকার মানুষের জন্য রাজনীতি করেন না। তিনি নিজের স্বার্থের কারণে বিএনপি-জামাতকে নিয়ে রাজনীতি করতে চান। আমাদের বাড়িতে হামলা হলো, কই তিনি তো একবার দেখতেও এলেন না!’

শাহ জামাল তোঁতা বলেন, ‘আমার ছেলে নিয়মিত মাদ্রাসার ছাত্রদের খোঁজ খবর রাখে, নিয়মিত তাদের খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করে, তাদের সঙ্গে আমার ছেলের সম্পর্ক ভালো, তারপরেও তারা আমার ছেলের বাসায় ভাঙচুর করল কীভাবে!’

তবে অভিযোগ মানছেন না নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির নেতা লিয়াকত হোসেন খোকা। তিনি পাল্টা অভিযোগ তোলেন নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল কায়সারের বিরুদ্ধে।

খোকা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছেন আবদুল্লাহ আল কায়সার। তার আসনে আমি নির্বাচিত হওয়ায় প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে আমার বিরুদ্ধে তার কর্মীদের দিয়ে এসব কথা বলাচ্ছেন।’

সোনারগাঁ তাণ্ডবে হেফাজতের সঙ্গী জাপা, দিশাহীন আ. লীগ
মামুনুলকে ছাড়িয়ে নিতে লাঠিসোটা নিয়ে সোনারগাঁ এলাকায় তাণ্ডব চালায় হেফাজতের কর্মীরা। ছবি: নিউজবাংলা

৩ এপ্রিলের ঘটনার বিষয়ে খোকা বলেন, ‘আমি বা আমার কর্মীরা কোনোভাবেই হেফাজতের সঙ্গে ছিলাম না। পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে ধারণা করে আমি আমার কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছিলাম, তারা যেন রাস্তায় নেমে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে ফেরত পাঠায়। কোনো ধরনের সহিংসতা না করতে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করতে তাদের মাঠে নামতে বলেছিলাম।

‘মামুনুল হকের বিষয়টি শোনার সঙ্গে সঙ্গেই একজন দায়িত্বশীল সংসদ সদস্য হিসেবে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি, যেন এ নিয়ে কোনো উত্তেজনা সৃষ্টি না হয়। কিন্তু উল্টো এখন আমার ঘাড়ে দোষ চাপানো হচ্ছে।’

হামলার পর সংসদ সদস্য হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে দেখা না করার কারণ ব্যাখ্যা করে খোকা বলেন, ‘তারা তো সবাইকে আমার বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ করে তুলেছিল, এমন পরিস্থিতিতে আমি কীভাবে সেখানে যাই!’

লিয়াকত হোসেন খোকার অভিযোগের বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল্লাহ আল কায়সারের বক্তব্য জানতে চায় নিউজবাংলা। তিনি বলেন, ‘তার (খোকা) প্রতি আমার প্রতিহিংসার কিছু নাই। তিনি তার মতো নিজেকে সেভ করতে মনগড়া কথা বলতেই পারেন। আপনারা সাংবাদিক নিজেরা তদন্ত করে দেখুন, সব উত্তর পেয়ে যাবেন।’

৩ এপ্রিলের পর আবদুল্লাহ আল কায়সার এক সমাবেশে বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি না আলেম সমাজ এই হামলায় জড়িত, এই হামলা করেছে জাতীয় পার্টি, বিএনপির কর্মীরা।’

এ বক্তব্যের বিষয়ে আবদুল্লাহ আল কায়সার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি সত্যিই বিশ্বাস করি না, কারণ স্থানীয় আলেমদের সঙ্গে আমাদের বোঝাপড়া অনেক ভালো। ২০১৩ সালের ৫ মের আন্দোলনের সময় স্থানীয় আলেমরা আমার অনুরোধে শাপলা চত্বরে যাননি। আমি তখন এই আসনের সংসদ সদস্য, পরে আমি খেয়াল রেখেছি তাদের বিরুদ্ধে যেন হয়রানিমূলক কোনো মামলা না হয়।’

সোনারগাঁয়ে তাণ্ডবের ঘটনায় যে তিনটি মামলা হয়েছে তার একটির বাদি সোনারগাঁ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জিয়াউর রহমান। সে মামলায় প্রধান আসামি মামুনুল হকের পাশাপাশি সোনারগাঁ পৌরসভা জাতীয় পার্টির সভাপতি এম এ জামান ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলামকেও আসামি করা হয়েছে। একই মামলায় আসামি হিসেবে আছেন স্থানীয় হেফাজত, বিএনপি, জামাত-শিবির কর্মীরাও।

সোনারগাঁ তাণ্ডবে হেফাজতের সঙ্গী জাপা, দিশাহীন আ. লীগ
হেফাজতের তাণ্ডবে তছনছ রয়্যাল রিসোর্টের জিম। ছবি: নিউজবাংলা

আওয়ামী লীগ কেন কোণঠাসা?

মামুনুল হকের রিসোর্টকাণ্ড ঘিরে সোনারগাঁ উপজেলার মোগড়া পাড়া এলাকায় আওয়ামী লীগের কার্যালয়সহ দুই নেতার বাড়িতে হামলার সময় ন্যূনতম প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি স্থানীয় আওয়ামী লীগ।

উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক শামছুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ভাবতেই পারিনি এমন কিছু ঘটবে। হঠাৎ করেই সহিংসতা শুরু হল। কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছ থেকে কোনো নির্দেশনা ছিল না, তাই আমাদের কোনো প্রস্তুতিও ছিল না।’

সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল কায়সার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য একটি শিক্ষা। এখানে কমিউনিকেশন গ্যাপ হয়েছে, সেই সঙ্গে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের দুই নেতারও ভুল আছে। মামুনুল হক তো আর কোনো ছোট নেতা নন। তিনি সাম্প্রতিক সময়ে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছেন। তাই সেখানে ছুটে যাবার আগে তাদের অবশ্যই সিনিয়র নেতাদের জানানো দরকার ছিল।’

প্রশাসনও কালক্ষেপণ করে হামলাকারীদের সুসংগঠিত হবার সুযোগ করে দিয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘প্রশাসনের উচিত ছিল মামুনুল হককে নিরাপদ কোথাও সরিয়ে নেয়া, তারা সেটা করেনি।’

রিসোর্টে যাবার আগে সিনিয়র নেতাদের কেন জানাননি- জানতে চাইলে যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সেটা আমার ভুল হয়েছে, আমি আসলে বুঝেতে পারিনি।’

প্রশাসনের অবহেলার অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি সোনারগাঁ পুলিশের কোনো কর্মকর্তা। তবে সোনারগাঁ থানার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই ধরনের রাজনৈতিক সিচ্যুয়েশন ডিল করতে হলে আমাদের পলিটিক্যাল ডিসিশনের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। ধরে নিন সেখান থেকে আমরা কোনো সিদ্ধান্ত পাচ্ছিলাম না।’

সোনারগাঁ তাণ্ডবে হেফাজতের সঙ্গী জাপা, দিশাহীন আ. লীগ
সোনারগাঁ এলাকায় এক ছাত্রলীগ নেতার রেস্টুরেন্টেও ভাঙচুর চালায় হেফাজত কর্মীরা। ছবি: নিউজবাংলা

২৫ বছর কমিটি ছাড়া সোনারগাঁ আওয়ামী লীগ

সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের সবশেষ সম্মেলন হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। এ নিয়ে ক্ষোভ আছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগ করতে করতে বুড়ো হয়ে গেলাম, এখনও কোনো পদ পেলাম না। আমার বয়স ৬১ চলছে, কবে কমিটি হবে আর কবেই বা পদ পাব! সারাজীবন আওয়ামী লীগকে দিয়েই গেলাম, পেলাম না কিছুই।’

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করেন, ‘এত লম্বা সময়ে কমিটি না হওয়ায় দলীয় কোন্দলের মাত্রা বেড়েছে। তৈরি হয়েছে নেতৃত্বের সংকট।

১৯৯৬ সালে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য আবুল হাসনাত। তিনি মারা যাবার পর ২০১৭ সাল পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন বর্তমান উপজেলা আহ্বায়ক শামছুল ইসলাম।

এত সময় ধরে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি থাকার পরেও কেন উপজেলা কমিটি করতে পারলেন না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি জেলা আওয়ামী লীগ থেকে তখন সহযোগিতা পাইনি। জেলা আওয়ামী লীগের আগ্রহের অভাব ছিল। এখন আর কোনো সমস্যা নাই, সব কিছু গোছানো আছে, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে আমরা সম্মেলন করব।’

এ অভিযোগ নিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শামছুল ইসলাম সাহেব কেন জেলা থেকে সহযোগিতা পাননি, সে বিষয়ে আমরা সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলতে পারব না। কারণ সে সময়ে আমরা দায়িত্ব ছিলাম না।’

জেলা আওয়ামী লীগে হেফাজত ও জাতীয় পার্টি ‘প্রীতি’

সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা জানান, নারায়ণগঞ্জে কখনওই হেফাজত বা জাতীয় পার্টির আধিপত্য ছিল না। তবে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের বড় ভাই সেলিম ওসমান নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য হওয়ায় জাতীয় পার্টির প্রতি তার মৌন সমর্থন কাজ করে। তাছাড়া শামীম ওসমান অনেকবার হেফাজত নেতাদের প্রকাশ্য সমর্থন দিয়েছেন।

সোনারগাঁ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু অভিযোগ করেন, ‘শামীম ওসমান সাহেব জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকাকে প্রশ্রয় দেন। সেজন্যই তিনি বাড়াবাড়ি করার সাহস পাচ্ছেন। আমরা আওয়ামী লীগের কর্মীরা নানাভাবে নির্যাতিত। আমি নিজেসহ অন্য আওয়ামী লীগ নেতারা খোকা সাহেবের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ করেও তার (শামীম ওসমান) কাছ থেকে কোনো সমাধান পাইনি।’

সোনারগাঁয়ের স্থানীয়রা জানান, তাদের এলাকায় সম্প্রতি অনেক মাদ্রাসা স্থাপিত হয়েছে, যেগুলোর পৃষ্ঠপোষকতায় আছেন শামীম ওসমান ও তার সমর্থকেরা।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল ও ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি।

সোনারগাঁ তাণ্ডবে হেফাজতের সঙ্গী জাপা, দিশাহীন আ. লীগ
নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের পরিচিত দুই মুখ শামীম ওসমান ও সেলিনা হায়াত আইভী। ছবি: সংগৃহীত

জেলায় দলীয় বিরোধের জের উপজেলায়

সোনারগাঁ ‍উপজেলার রাজনীতিক, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ বলছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগে বছরের পর বছর ধরে চলা কোন্দলের কারণে উপজেলা পর্যায়েও আওয়ামী লীগ সংগঠিত হতে পারছে না। আর সোনারগাঁয়ে এই সুযোগটাই নিয়েছে হেফাজত আর জাতীয় পার্টি।

তাদের অভিযোগ, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান আর নারায়ণগঞ্জ পৌর মেয়র সেলিনা হায়াত আইভীর মধ্যে দা-কুমড়া সম্পর্কের প্রভাব জেলা থেকে উপজেলা পর্যায়ের নেতার্মীদের মধ্যেও পড়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সোনারগাঁ ‍উপজেলার এক আওয়ামী লীগ নেতা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শামীম ওসমান ও সেলিনা হায়াত আইভীর দ্বন্দ্ব এতটাই চরমে যে তারা কারও মুখোমুখি হন না। এমনকি কোনো দলীয় অনুষ্ঠানে একজন গেলে অন্যজন যান না। তাই আমরাও সুসংগঠিত হতে পারছি না। আমাদের নেতাদের পক্ষ থেকে সরাসরি কোনো নির্দেশ না থাকায় হেফাজতের তাণ্ডবের সময় নিশ্চুপ ছিলাম।’

হেফাজতের তাণ্ডবের চিত্র সরেজমিনে দেখতে বুধবার ঢাকা থেকে ঘটনাস্থলে যায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের একটি দল। সেখানে শামীম ওসমান উপস্থিত থাকলেও যাননি মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী। তবে আইভী সমর্থকদের একটি অংশ উপস্থিত ছিলেন।

ঘটনাস্থলে না যাওয়ার কারণ জানতে মোবাইল ফোনে আইভীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই ইস্যু নিয়ে আমি কথা বলতে চাই না।’

এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল কায়সার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দলে যতই কোন্দল থাকুক, জাতীয় ইস্যুতে আমরা সবসময় ঐক্যবদ্ধ। এর আগেও আমরা এক হয়ে অনেক আন্দোলন করেছি। সেদিনের হেফাজত তাণ্ডবে দলীয় কোন্দলের কোনো প্রভাব ছিল না। এটা ভুল কথা।’

অন্যদিকে, উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক শামসুল ইসলাম বলেন, ‘এখন আমরা সুসংগঠিত। আমাদের মাঝে আর কোনো সমস্যা নেই। কেন্দ্রীয় নেতারা এসেছেন, তারা আমাদের নির্দেশনা দিয়ে গেছেন, এখন আমরা ঐক্যবদ্ধ, আর কোনো সমস্যা হবে না।’

আরও পড়ুন:
একা মা পরিচয়েই ঢাকায় বাসা ভাড়া
মামুনুল হক চরিত্রহীন: নওফেল
রিসোর্টকাণ্ডে হেফাজতে ভাঙনের শঙ্কায় মামুনুল
‘আল্লাহর গজবের’ চ্যালেঞ্জ মামুনুলের
নাম তাইয়্যেবা বলেছিলাম ভয়ে: মামুনুল

মন্তব্য

আরও পড়ুন

জাতীয়
US human rights report uses baseless facts

‘যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদনে ভিত্তিহীন তথ্য ব্যবহার হয়েছে’

‘যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদনে ভিত্তিহীন তথ্য ব্যবহার হয়েছে’ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন বৃহস্পতিবার ঢাকায় মন্ত্রণালয়ে ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্য তুলে ধরেন। ছবি: সংগৃহীত
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন বলেন, ‘প্রতিবেদনে সরকারের অনেক উন্নতি ও অর্জন স্থান পায়নি। অন্যদিকে বিচ্ছিন্ন ও ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয়েছে। এটি দেশের স্বাধীন বিচার বিভাগ এবং নির্দিষ্ট কিছু সংবিধিবদ্ধ সংস্থাসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে মূল্যায়ন করতে শুধু ব্যর্থই হয়নি বরং অবমূল্যায়ন করেছে।’

বাংলাদেশকে নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ২০২৩ সালের মানবাধিকার প্রতিবেদনের সমালোচনা করেছে বাংলাদেশ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনটি নিয়ে বাংলাদেশের বক্তব্য তুলে ধরেন। সূত্র: ইউএনবি

তাতে বলা হয়েছে, ‘প্রতিবেদনটি দেশের স্বাধীন বিচার বিভাগ এবং নির্দিষ্ট কিছু সংবিধিবদ্ধ সংস্থাসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে মূল্যায়ন করতে শুধু ব্যর্থই হয়নি বরং অবমূল্যায়ন করেছে, যা এ ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলোর মনোবল ও কার্যকারিতার জন্য ক্ষতিকর।’

সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মুখপাত্র বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য যে সরকারের অনেক উন্নতি ও অর্জন প্রতিবেদনে স্থান পায়নি। অন্যদিকে বিচ্ছিন্ন ও ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয়েছে।

‘প্রতিবেদনটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পড়লে স্পষ্ট হবে যে এতে পৃথকভাবে রিপোর্ট করা বা কথিত ঘটনাগুলোর পরিপূর্ণ রেফারেন্স দেয়া হয়নি। এটি সরলীকরণ অনুমাননির্ভর তথ্যে ভরপুর।’

ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী গাজায় অব্যাহতভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করার বিষয়ে উদ্বেগ পুনর্ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ সরকার। একইসঙ্গে আশা প্রকাশ করেছে, ফিলিস্তিনে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন, নিরপরাধ নারী ও শিশু হত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চলমান প্রচেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্র নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করবে।

সেহেলী সাবরীন বলেন, ‘গত বছর অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন অজুহাতে এবং বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীকে ব্যবহার করে অস্থিরতা, সহিংসতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির বিষয়টি প্রতিবেদনে অনুপস্থিত।

‘বেশিরভাগই স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থার (বেনামী উৎসসহ) কাছ থেকে পাওয়া অনুমাননির্ভর তথ্য দিয়ে প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে অনেকগুলো যুক্তরাষ্ট্র সরকার বা সংশ্লিষ্ট সংস্থা সমর্থিত।’

‘প্রতিবেদনটি সহজাত পক্ষপাতদুষ্ট, এটি বেশ স্পষ্ট।’

বাংলাদেশ সরকার অবশ্য বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের অব্যাহত আগ্রহের প্রশংসা করেছে।

মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা যতই প্রত্যাশা করি না কেন, বিশ্বের কোথাও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিখুঁত নয়। মানবাধিকার কোনো শ্রেণির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। তবে আর্থ-সামাজিক সীমাবদ্ধতা প্রায়ই এসব অধিকার আদায়ের গতিকে সীমাবদ্ধ করে।’

‘বাংলাদেশ সরকার তার নাগরিকদের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে।

‘যেসব ক্ষেত্রে আরও উন্নতি প্রয়োজন সেগুলো সম্পর্কে সচেতন হয়ে বর্তমান সরকার ২০০৯ সাল থেকে টানা মেয়াদে মানবাধিকার পরিস্থিতির অর্থবহ অগ্রগতি করতে বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছে।’

তিনি বলেন, ‘যেকোনো বিচক্ষণ পর্যবেক্ষক লক্ষ্য করবেন, এ জাতীয় প্রচেষ্টার ফলে নারীর ক্ষমতায়ন, লিঙ্গ সমতা, শিশুদের অধিকার, প্রবীণদের অধিকার, শ্রমিকদের অধিকার, অভিযোগ নিষ্পত্তি, ন্যায়বিচারের সুবিধা, ধর্মীয় স্বাধীনতা, বাক-স্বাধীনতা, সংগঠন করার স্বাধীনতা, সমাবেশের স্বাধীনতা এবং আরও অনেক কিছুতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘প্রতিবেদনে কিছু ক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে মাত্রাতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের অভিযোগ করা হয়েছে। যদিও এটি বিএনপি এবং তার রাজনৈতিক মিত্রদের সহিংসতা ও ভাঙচুরের বিষয়টি তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে। ওইসব ঘটনা সাধারণ মানুষের জীবনকে বিপর্যস্ত করে এবং এর ফলে সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তির ক্ষতি সাধিত হয়েছে।

‘এ ধরনের পরিকল্পিত প্রচারণা থেকে জনসাধারণের জীবন, শৃঙ্খলা ও সম্পত্তি রক্ষায় আইনানুগ পদক্ষেপ এবং প্রতিকারের চেষ্টা করার রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপকেও প্রতিবেদনে দায়ী করা হয়েছে। এটি খুবই হাস্যকর।’

তিনি বলেন, ‘এটা অবশ্যই উল্লেখ করা উচিত যে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন করেছে এবং যেকোনো আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পূর্ণ পেশাদারত্বের সঙ্গে মোকাবিলা করেছে।’

সেহেলী সাবরীন বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন পরিচালনায় সরকারের আন্তরিক সমর্থন ও পেশাদারত্বের ভিত্তিতে ৪৪টি নিবন্ধিত দলের মধ্যে ২৮টি দল দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। বিএনপি ও অন্যান্য দলের নির্বাচন বর্জন সত্ত্বেও ৪২ শতাংশ মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে।’

মুখপাত্র বলেন, ‘মানবাধিকার ও শ্রম অধিকার ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ হওয়া সত্ত্বেও প্রতিবেদনে বার বার বেশকিছু অভিযোগ বা অনুযোগ উঠে এসেছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক।

‘উদাহরণস্বরূপ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে শরণার্থী বা রাষ্ট্রহীন ব্যক্তি হিসেবে অভিহিত করা অব্যাহত রয়েছে, যা মিয়ানমারের নাগরিক বা বাসিন্দা হিসেবে স্বীকৃতির বৈধ দাবিকে ক্ষুণ্ন করছে।’

অন্য একটি উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, “কিছু ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীকে দেশের সাংবিধানিক বিধানের পরিপন্থী ‘আদিবাসী জনগণ’ হিসেবে চিহ্নিত করা অব্যাহত রয়েছে, যা অযৌক্তিক উত্তেজনা ও বিভাজনকে উসকে দেয়ার প্রচেষ্টার নামান্তর।

“আবার কিছু ক্ষেত্রে প্রতিবেদনটি আলাদাভাবে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিনিময় করা অকাট্য প্রমাণ বা তথ্য বাদ দিয়েছে বা এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।

“উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, শাহীন মিয়া ও মোহাম্মদ রাজু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিচারিক কার্যক্রম সম্পর্কে তথ্য আদান-প্রদান করা হয়েছে, যাতে ঘটনাগুলো আইনের আওতাভুক্ত বলে প্রমাণিত হয়েছে। জেসমিন সুলতানার ক্ষেত্রে যে বিচারিক প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছে তা প্রতিবেদনে যথাযথভাবে তুলে ধরা হয়নি, বিশেষ করে চলমান যথাযথ প্রক্রিয়ার বিষয়টি।”

মুখপাত্র বলেন, ‘একইভাবে শ্রম অধিকার সম্পর্কিত বিষয়গুলো, বিশেষত ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধকরণ ও কার্যক্রম সম্পর্কিত প্রতিবেদনে বেশ কয়েকটি মামলা চিহ্নিত করা হয়েছে, যা বেশ কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় বা বহুপক্ষীয় প্ল্যাটফর্মে সংশ্লিষ্ট যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে।’

‘বরাবরের মতোই প্রতিবেদনে আইনগত কর্মকাণ্ডের চিত্র ভুলভাবে তুলে ধরা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বরাবরের মতো এবারও কারখানা, প্রতিষ্ঠান, সরকারি সম্পত্তি বা ব্যবস্থাপনা কর্মীদের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের নামে অযাচিত বাধা বা ভাঙচুরের ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের গৃহীত আইনানুগ পদক্ষেপের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে।

‘প্রতিকার ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে গৃহীত প্রশাসনিক ও বিচারিক পদক্ষেপের বিস্তারিত বিবরণ না দিয়ে প্রতিবেদনে মানবাধিকারের পদ্ধতিগত অপব্যবহারের অংশ হিসেবে বেসরকারি ব্যক্তি বা সংস্থার দ্বারা সংঘটিত ঘটনাগুলো প্রকাশের প্রবণতা বজায় রাখা হয়েছে।

মুখপাত্র আরও বলেন, ‘সাধারণভাবে বাংলাদেশ সরকার সামগ্রিক প্রতিবেদনটি নজরে নিয়ে যেকোনো পরিস্থিতিতে সব নাগরিকের মানবাধিকারের পূর্ণ উপভোগ নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি সমুন্নত রাখতে জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রক্রিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক অংশীদার ও স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রত্যাশায় রয়েছে।’

আরও পড়ুন:
বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন নেই: যুক্তরাষ্ট্র

মন্তব্য

জাতীয়
Not only the recognition but also the quality of the product should be looked at
১৪টি জিআই পণ্যের সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী

শুধু স্বীকৃতি নয়, পণ্যের মানের দিকেও নজর দিতে হবে

শুধু স্বীকৃতি নয়, পণ্যের মানের দিকেও নজর দিতে হবে বাংলাদেশ ফরিন সার্ভিস অ্যাকাডেমির মাল্টিপারপাস হলে বৃহস্পতিবার ডিপিডিটি আয়োজিত ১৪টি জিআই পণ্যের নিবন্ধন সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। ছবি: নিউজবাংলা
শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘মাটি, বায়ু, পানি, পরিবেশ, কারিগরদের দক্ষতা প্রভৃতি স্বতন্ত্র ও অনন্য বৈশিষ্ট্যের কারণে ছোট এ ভূখণ্ডের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য ভৌগলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এসব পণ্যকে জিআই হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের পাশাপাশি এর গুণগত মান ও টেকসই সংরক্ষণের দিকে নজর দিতে হবে।’

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, ‘পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ একটি অমিত সম্ভাবনাময় দেশ। ষড়ঋতুর এ দেশকে প্রকৃতি যেমন দুহাত ভরে তার বৈচিত্র্যময় সম্পদ ঢেলে দিয়েছে, তেমনি এদেশের মেহনতি মানুষ তাদের আপন শৈল্পিক কারুকার্যের মাধ্যমে অনন্যসাধারণ সামগ্রী প্রস্তুত করে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের সুনাম ও খ্যাতি বৃদ্ধি করেছে।’

তিনি বলেন, ‘মাটি, বায়ু, পানি, পরিবেশ, কারিগরদের দক্ষতা প্রভৃতি স্বতন্ত্র ও অনন্য বৈশিষ্ট্যের কারণে ছোট এ ভূখণ্ডের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য ভৌগলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এসব পণ্যকে জিআই হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের পাশাপাশি এর গুণগত মান ও টেকসই সংরক্ষণের দিকে নজর দিতে হবে।’

বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর বেইলি রোডে বাংলাদেশ ফরিন সার্ভিস অ্যাকাডেমির মাল্টিপারপাস হলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) আয়োজিত বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গাইল শাড়ি, গোপালগঞ্জের রসগোল্লা ও নরসিংদীর অমৃত সাগর কলাসহ ১৪টি ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের নিবন্ধন সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

ডিপিডিটির মহাপরিচালক মো. মুনিম হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা দেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব জাকিয়া সুলতানা, ফরিন সার্ভিস অ্যাকাডেমির রেক্টর রাষ্ট্রদূত মাশফী বিনতে শামস ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কামরুন নাহার সিদ্দীকা।

শুধু স্বীকৃতি নয়, পণ্যের মানের দিকেও নজর দিতে হবে

মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ববাজারে জিআই পণ্যের প্রচার ও প্রসারে আমাদের এখনই কার্যকর উদ্যোগ ও পদক্ষেপ নিতে হবে। বিদেশের বাংলাদেশ মিশনসমূহ, দেশের সকল আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে কেন্দ্রীয়ভাবে এসব পণ্য প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করতে হবে। তাছাড়া দেশে-বিদেশে বিভিন্ন মেলায় জিআই পণ্যসমূহ প্রদর্শন করা যেতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ডিপিডিটি, বিসিক ও এসএমই ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এসব পণ্যের উন্নয়ন ও প্রসারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারে।’

নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন কোনো খালি বাস্কেট নয়, এটি একটি পরিপূর্ণ ভরা বাস্কেট। আমাদের সম্পদের কোনো অভাব নেই, শুধু প্রয়োজন এর সদ্ব্যবহারের। প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা, কারিগরি সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এসব সম্পদ ও পণ্যের প্রচার-প্রসার ঘটাতে হবে।’

জ্যেষ্ঠ শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে জিআই হিসেবে স্বীকৃতি পেতে পারে এমন ৫০০টি পণ্যের প্রাথমিক তালিকা তৈরি করেছি। একটু দেরিতে হলেও আমরা এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় আমরা ২০১৩ সালে ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন প্রণয়ন করি এবং পরবর্তীতে ২০১৫ সালে এ সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়ন করি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের জিআই পণ্যকে সুরক্ষা দিতে হবে এবং একই সঙ্গে এর পেটেন্ট দিতে হবে। জিআই পণ্যের প্রচার-প্রসারে বিভিন্ন উৎসব, পালাপার্বণ ও রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে এসব পণ্যকে আমরা উপহার হিসেবে প্রদান করতে পারি। তাছাড়া এসব পণ্য সম্পর্কে টিভিসি (বিজ্ঞাপন), ডকুমেন্টারি তৈরি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।’

অনুষ্ঠানে টাঙ্গাইল শাড়িসহ বাংলাদেশের মোট ১৪টি ঐতিহ্যবাহী পণ্যকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সনদ প্রদান করা হয়।

সেগুলো হলো যথাক্রমে- গোপালগঞ্জের রসগোল্লা, নরসিংদীর অমৃত সাগর কলা, টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচম, কুমিল্লার রসমালাই, কুষ্টিয়ার তিলের খাজা, বাংলাদেশের ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল, রংপুরের হাঁড়িভাঙ্গা আম, মৌলভীবাজারের আগর, মৌলভীবাজারের আগর আতর, মুক্তাগাছার মণ্ডা, যশোরের খেজুরের গুড়, রাজশাহীর মিষ্টি পান এবং জামালপুরের নকশিকাঁথা।

এ নিয়ে ডিপিডিটি কর্তৃক জিআই সনদপ্রাপ্ত বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পণ্যের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩১টিতে।

আরও পড়ুন:
‘আমি বরই দিয়ে ইফতার করব, আর তুই খেজুর-আঙুর খাবি?’
‘টাঙ্গাইল শাড়ি আমাদেরই থাকবে’
গোপালগঞ্জের রসগোল্লা পেল জিআই পণ্যের স্বীকৃতি
জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেল মুক্তাগাছার মণ্ডা
টাঙ্গাইল শাড়িকে জিআই পণ্য ঘোষণা করেছে সরকার

মন্তব্য

জাতীয়
Democracy established on January 7 will fail if upazila elections fail CEC

উপজেলা নির্বাচন ব্যর্থ হলে ৭ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত গণতন্ত্র ব্যর্থ হবে: সিইসি

উপজেলা নির্বাচন ব্যর্থ হলে ৭ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত গণতন্ত্র ব্যর্থ হবে: সিইসি সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। ফাইল ছবি
সিইসি বলেন, ‘দেশের নির্বাচনে আবেগ-অনুভূতির জন্য কিছুটা বিশৃঙ্খলা হয়। ভোটাররা যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। যেকোনো মূল্যে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হবে।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, আসন্ন উপজেলা নির্বাচন ব্যর্থ হলে ৭ জানুয়ারি (দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন) যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেটি ব্যর্থ হবে।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বিষয় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

সিইসি বলেন, ‘দেশের নির্বাচনে আবেগ-অনুভূতির জন্য কিছুটা বিশৃঙ্খলা হয়। ভোটাররা যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। যেকোনো মূল্যে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হবে। এই নির্বাচনে ব্যর্থ হলে বিগত সংসদ নির্বাচনে যে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে, তা ক্ষুণ্ন হতে পারে। বাংলাদেশে গণতন্ত্র আছে, তা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে।’

সভায় দেশের সব জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন:
নৌকা ২২২ লাঙ্গল ১১ স্বতন্ত্র পেল ৬২ আসন
ভোট ৪০ শতাংশের মতো, আরও বাড়তে পারে: সিইসি
বেশির ভাগ জায়গায় নৌকা ছাড়া অন্য এজেন্ট পেলাম না: সিইসি
ভোট দিলেন সিইসি
জাতির উদ্দেশে ভাষণে সিইসি

মন্তব্য

জাতীয়
Say no to war Prime Minister

যুদ্ধকে ‘না’ বলুন: প্রধানমন্ত্রী

যুদ্ধকে ‘না’ বলুন: প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে জাতিসংঘের কনফারেন্স সেন্টারে (ইউএনসিসি) বৃহস্পতিবার এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসক্যাপ) ৮০তম অধিবেশনে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ইয়াসিন কবির জয়/ফোকাস বাংলা
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের সব ধরনের আগ্রাসন ও নৃশংসতার বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে এবং যুদ্ধকে ‘না’ বলতে হবে। বাংলাদেশ জাতিসংঘ মহাসচিবের ‘শান্তির জন্য নতুন এজেন্ডা’র পক্ষে।”

সব ধরনের আগ্রাসন ও নৃশংসতার বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর পাশাপাশি যুদ্ধকে ‘না’ বলতে বৃহস্পতিবার সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

থাইল্যান্ডে জাতিসংঘের কনফারেন্স সেন্টারে (ইউএনসিসি) এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসক্যাপ) ৮০তম অধিবেশনে দেয়া ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান বলে বার্তা সংস্থা বাসসের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের সব ধরনের আগ্রাসন ও নৃশংসতার বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে এবং যুদ্ধকে ‘না’ বলতে হবে। বাংলাদেশ জাতিসংঘ মহাসচিবের ‘শান্তির জন্য নতুন এজেন্ডা’র পক্ষে।”

ভাষণে সব ধরনের যুদ্ধ, আগ্রাসন ও নৃশংসতা বন্ধে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গাজায় ইসরায়েলের হামলা ‍শুধু হতাহতের সংখ্যা বাড়াচ্ছে, বিশেষত নারী ও শিশুরা এর বলি হচ্ছে। অথচ আলোচনায় আসতে পারে শান্তি।

তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনি যুদ্ধ ও গণহত্যা চলছে। এটি অবশ্যই বন্ধ হতে হবে। যুদ্ধ কোনো সমাধান দিতে পারে না।’

এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা তার উদ্যোগ ও শাসনামলে ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশে ‘পার্বত্য শান্তি চুক্তি’র কথা উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আঞ্চলিক বিরোধ ও উত্তেজনা নিষ্পত্তি করতে হবে।’

আরও পড়ুন:
প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে, লাল গালিচা সংবর্ধনা
থাইল্যান্ডের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা ত্যাগ
বাংলাদেশ-কাতার ১০ চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই
জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় প্রতিশ্রুত অর্থ ছাড়ের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
ন্যাপ এক্সপো উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর

মন্তব্য

জাতীয়
The fire may continue for another 72 hours

আরও ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে দাবদাহ

আরও ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে দাবদাহ গরমের তীব্রতা বাড়ার মধ্যে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় গোসল করছেন এক ব্যক্তি। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস/নিউজবাংলা
সতর্কবার্তায় বলা হয়, ‘দেশের ওপর চলমান তাপপ্রবাহ আজ (২৫ এপ্রিল, ২০২৪) হতে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে।’

দেশজুড়ে চলমান দাবদাহ আরও ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।

রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম বৃহস্পতিবার তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন।

সতর্কবার্তায় বলা হয়, ‘দেশের ওপর চলমান তাপপ্রবাহ আজ (২৫ এপ্রিল, ২০২৪) হতে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে।’

৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাস

আবহাওয়া অধিদপ্তর বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ নিয়ে জানায়, খুলনা বিভাগসহ দিনাজপুর, নীলফামারী, রাজশাহী, পাবনা, ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ বরিশাল বিভাগ এবং রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

তাপমাত্রার বিষয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।

আরও পড়ুন:
দাবদাহ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব হাসপাতাল প্রস্তুত রাখার নির্দেশ
গাছহীন সড়কটি যেন ‘উত্তপ্ত কড়াই’
অতি তীব্র দাবদাহ চুয়াডাঙ্গায়, তাপমাত্রা ৪২.২
দাবদাহে ঢাবি জবিতে বন্ধ সশরীরে ক্লাস
দাবদাহ থেকে মুক্তি মিলবে কবে

মন্তব্য

জাতীয়
Tribute to memorial on 11th anniversary of Rana Plaza tragedy

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ১১তম বার্ষিকীতে স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ১১তম বার্ষিকীতে স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বুধবার সকাল থেকে ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানানো শুরু হয়। ছবি: নিউজবাংলা
সমাবেশে রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ১১ বছর পর এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের সুচিকিৎসা, ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন নিশ্চিত না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়ে তা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান বক্তারা।

রাজধানীর উপকণ্ঠ সাভারে রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ১১ বছর পূর্তিতে বুধবার প্রাণ হারানো শ্রমিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন হতাহত শ্রমিক, তাদের পরিবার, বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন ও পুলিশ সদস্যরা।

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল ঘটে যাওয়া ওই দুর্ঘটনায় পাঁচটি পোশাক কারখানার এক হাজার ১৩৮ জন শ্রমিক প্রাণ হারান। পঙ্গুত্ব নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন দুই সহস্রাধিক শ্রমিক।

ট্র্যাজেডির বার্ষিকীতে আহত শ্রমিকদের পুনর্বাসন ও সুচিকিৎসা নিশ্চিতের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন শ্রমিক ও সংগঠনগুলোর সদস্যরা।

সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বুধবার সকাল থেকে ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানানো শুরু হয়।

একে একে নিহত শ্রমিকের পরিবার, আহত শ্রমিক, পুলিশ ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের ফুলের শ্রদ্ধায় সিক্ত হয়ে ওঠে বেদি। ওই সময় নিহত শ্রমিকদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

পরে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি আদায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ, র‌্যালি ও মানববন্ধন করা হয়।

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডিতে প্রাণ হারানো শ্রমিকদের অনেক স্বজন প্রিয়জনের কথা স্মরণ করে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

সমাবেশে রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ১১ বছর পর এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের সুচিকিৎসা, ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন নিশ্চিত না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়ে তা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান বক্তারা।

একই সঙ্গে ভবনের মালিক সোহেল রানার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডেরও দাবি জানান তারা।

আরও পড়ুন:
সাভারে যুগান্তরের সাংবাদিকের ওপর রাসায়নিক নিক্ষেপ
সাভারে গোডাউন খুলতেই বিস্ফোরণ, দগ্ধ তিন
টেইলার্সে এসি বিস্ফোরণে আটজন আহত
ধামরাইয়ে বাইক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আরোহীর মৃত্যু
সাভার থেকে চুরি হওয়া শিশু নারায়ণগঞ্জে উদ্ধার

মন্তব্য

জাতীয়
1500 megawatts loadshedding people suffer in extreme heat

প্রচণ্ড গরমে দেড় হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং, দুর্ভোগে মানুষ

প্রচণ্ড গরমে দেড় হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং, দুর্ভোগে মানুষ প্রতীকী ছবি।
এনএলডিসির তথ্য বলছে, মঙ্গলবার রাত ১টায় লোডশেডিং ছিল ১ হাজার ৪৬৮ মেগাওয়াট। বুধবার সকাল ৭টায় তা ৫৪২ মেগাওয়াটে নেমে এলেও বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে লোডশেডিং বাড়তে থাকে। বিকেল ৩টায় লোডশেডিং বেড়ে দাঁড়ায় ৮২১ মেগাওয়াট।

দেশজুড়ে বয়ে চলেছে তাপপ্রবাহ। প্রচণ্ড গরমে অস্থির জনজীবন। বিদ্যুতের লোডশেডিং সেই অস্বস্তি-অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

বিদ্যুৎ উৎপাদনে নতুন রেকর্ড গড়লেও সারাদেশে লোডশেডিং কমার কোনো লক্ষণ নেই। বরং আগের তুলনায় লোডশেডিংয়ের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ।

পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অফ বাংলাদেশের (পিজিসিবি) ন্যাশনাল লোড ডিসপ্যাচ সেন্টারের (এনএলডিসি) তথ্যের উল্লেখ করে বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানায়, বুধবার (দেশে প্রায় দেড় হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়েছে। আগের দিন মঙ্গলবার তা ছিল ১ হাজার ৪৯ মেগাওয়াট।

এনএলডিসির তথ্যে আরও দেখা যায়, মঙ্গলবার রাত ১টায় লোডশেডিং ছিল ১ হাজার ৪৬৮ মেগাওয়াট। তবে বুধবার দিনের বেলায় বিদ্যুৎ ঘাটতির মাত্রা কমে সকাল ৭টায় ৫৪২ মেগাওয়াটে নেমে আসে। আবার বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তা বাড়তে থাকে। বিকেল ৩টায় লোডশেডিং বেড়ে দাঁড়ায় ৮২১ মেগাওয়াট।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) ও পিজিসিবির তথ্য বলছে, ১৫ হাজার ২০০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে বুধবার বিকেল ৫টায় দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ১৪ হাজার ৪৭৩ মেগাওয়াট। সে হিসাবে সন্ধ্যার এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উৎপাদন ঘাটতি ছিল ৭২৭ মেগাওয়াট।

ওদিকে বুধবার সন্ধ্যায় চাহিদার পূর্বাভাস ছিল ১৬ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট এবং সরবরাহের পূর্বাভাস ছিল ১৬ হাজার ৫৩০ মেগাওয়াট।

সরকারি সূত্রে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকা ও অন্যান্য বড় শহরে লোডশেডিং এড়াতে গিয়ে গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ বেড়েছে।

বিভিন্ন এলাকা থেকে পাওয়া সংবাদে জানা যায়, এই গ্রীষ্মে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে লোডশেডিংয়ের মাত্রা গ্রামীণ মানুষের দুর্দশা আরও বাড়িয়ে তুলছে।

এদিকে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পেট্রোবাংলার সরকারি তথ্যে দেখা যায়, ৩ হাজার ৭৬০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে দেশে গ্যাস উৎপাদন হয়েছে দৈনিক ৩ হাজার ৫৬ মিলিয়ন ঘনফুট।

বেশ কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র, বিশেষ করে যেগুলো প্রাথমিক জ্বালানি হিসেবে গ্যাস ব্যবহার করে, সেগুলোতে গ্যাস সংকটের কারণে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।

বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ২ হাজার ৩১৬ দশমিক ৯ মিলিয়ন ঘনফুট চাহিদার বিপরীতে ১ হাজার ৩৪৯ দশমিক ৯ মিলিয়ন ঘটফুট গ্যাস সরবরাহ পেয়েছে।

আরও পড়ুন:
তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকলে লোডশেডিং বাড়ার শঙ্কা
তীব্র লোডশেডিং, পানির সংকটে অতিষ্ঠ সিলেটবাসী
জনরোষ এড়াতে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কোপ গ্রামে
সিলেটে গ্রামের চেয়ে বেশি লোডশেডিং শহরে
গ্যাস সংকটে লোডশেডিংয়ের সতর্কতা

মন্তব্য

p
উপরে