× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

জাতীয়
সোনারগাঁ তাণ্ডবে হেফাজতের সঙ্গী জাপা দিশাহীন আ লীগ
google_news print-icon

সোনারগাঁ তাণ্ডবে হেফাজতের সঙ্গী জাপা, দিশাহীন আ. লীগ

সোনারগাঁ-তাণ্ডবে-হেফাজতের-সঙ্গী-জাপা-দিশাহীন-আ-লীগ
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের একটি রিসোর্টে কথিত দ্বিতীয় স্ত্রীসহ স্থানীয়দের হাতে হেফাজত নেতা মামুনুল হক অবরুদ্ধ হলে তাণ্ডব চালিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায় সংগঠনটির কর্মীরা। ছবি: নিউজবাংলা
সহিংসতায় হেফাজত কর্মীদের সঙ্গে জাতীয় পার্টির স্থানীয় সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকার অনুসারীরা সরাসরি অংশ নেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই সঙ্গে শামীম ওসমান ও সেলিনা হায়াত আইভীর দ্বন্দ্বে বিপর্যস্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ছিলেন অপ্রস্তুত।

হেফাজত নেতা মামুনুল হকের রিসোর্টকাণ্ড কেন্দ্র করে ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলায় ব্যাপক তাণ্ডব চালান হেফাজত কর্মীরা। রয়্যাল রিসোর্টের পাশাপাশি ভাঙচুর করা হয় স্থানীয় আওয়ামী লীগ কার্যালয়, বাজারের দোকানপাট। হামলা হয় আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িতেও।

এই সহিংসতায় হেফাজত কর্মীদের সঙ্গে জাতীয় পার্টির স্থানীয় সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকার অনুসারীরা সরাসরি অংশ নেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই সঙ্গে হামলায় যোগ দেন বিএনপি, জামায়াতের কর্মীরাও।

ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ, নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমান ও সেলিনা হায়াত আইভীর দ্বন্দ্বের জেরে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগও বিপর্যস্ত। এ কারণে ৩ এপ্রিলের সংঘাতময় পরিস্থিতিতে কোনো প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।

রয়্যাল রিসোর্টে মামুনুল হককে তার কথিত স্ত্রীর বিষয়ে জেরা করেছিলেন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেকসহ সভাপতি সোহাগ রনি। পরে এ দুজনের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করেন হেফাজত কর্মীরা।

যুবলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম নান্নু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্থানীয় কয়েকজন ইউটিউবার ও সাংবাদিক আমাকে টেলিফোনে পরনারীসহ মামুনুল হকের রিসোর্টে অবস্থানের কথা জানালে, আমি সেখানে ছুটে যাই। আমার মতো ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সোহাগ রনিও সেখানে যান। আমাদের এলাকায় এমন ঘটনা ঘটলে আমাদের তো যেতে হবেই। সেখানে সাংবাদিক-পুলিশ তাদের জেরা করেছে, সেসব ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পরলে হেফাজত কর্মীরা ভেবেছে আমরা ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছি। এরপর তারা আমার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান আর বাসায় ভাঙচুর করে, হামলা করে আমার সবকিছু শেষ করে দেয়।’

সোনারগাঁ তাণ্ডবে হেফাজতের সঙ্গী জাপা, দিশাহীন আ. লীগ
সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্ট কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী নিয়ে অবরুদ্ধ হন হেফাজতের যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হক। ছবি: নিউজবাংলা

ওই দিনের হামলায় হেফাজতের সঙ্গে অন্য কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও অংশ নেন দাবি করে নান্নু বলেন, ‘তারা অতর্কিত হামলা করেছিল, আমরা বুঝতেই পারিনি এমন হামলা হবে। হামলা প্রতিহত করার কোনো প্রস্তুতিই আমাদের ছিল না। হেফাজত, বিএনপি ও জামাত-শিবিরের কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে স্থানীয় জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকার আত্মীয়-স্বজন আমার বাড়ি ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে হামলা-লুটপাট করেছে।’

জাতীয় পার্টির এমপির স্বজন-সমর্থকদের জড়িত হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তারা প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে হামলা করেছে। এখানে জাতীয় পার্টির এমপি আওয়ামী লীগের বিরোধী দল হিসেবে কাজ করে। তিনি বিএনপি-জামাতকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে সব সময় তৎপর থাকেন।’

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদেরও বিষয়টি জানানো হয়েছে উল্লেখ করে নান্নু বলেন, ‘তাদের জানানোর পরই ঘটনাস্থল সরেজমিনে দেখতে এসেছেন। তখনও আমরা সামনাসামনি সব কিছু বলেছি, এরপর তারা বলেছেন কাউকেই আর ছাড় দেয়া হবে না।’

তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সোহাগ রনি বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তবে তার বাবা মোগড়াপাড়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার শাহ জামাল তোঁতা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হেফাজতের কর্মীদের সঙ্গে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির কর্মীরা এসে আমাদের বাড়ি ও পাশের বাজারে হামলা চালায়।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা জনগণের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি নন, তাই তিনি এখানকার মানুষের জন্য রাজনীতি করেন না। তিনি নিজের স্বার্থের কারণে বিএনপি-জামাতকে নিয়ে রাজনীতি করতে চান। আমাদের বাড়িতে হামলা হলো, কই তিনি তো একবার দেখতেও এলেন না!’

শাহ জামাল তোঁতা বলেন, ‘আমার ছেলে নিয়মিত মাদ্রাসার ছাত্রদের খোঁজ খবর রাখে, নিয়মিত তাদের খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করে, তাদের সঙ্গে আমার ছেলের সম্পর্ক ভালো, তারপরেও তারা আমার ছেলের বাসায় ভাঙচুর করল কীভাবে!’

তবে অভিযোগ মানছেন না নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির নেতা লিয়াকত হোসেন খোকা। তিনি পাল্টা অভিযোগ তোলেন নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল কায়সারের বিরুদ্ধে।

খোকা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছেন আবদুল্লাহ আল কায়সার। তার আসনে আমি নির্বাচিত হওয়ায় প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে আমার বিরুদ্ধে তার কর্মীদের দিয়ে এসব কথা বলাচ্ছেন।’

সোনারগাঁ তাণ্ডবে হেফাজতের সঙ্গী জাপা, দিশাহীন আ. লীগ
মামুনুলকে ছাড়িয়ে নিতে লাঠিসোটা নিয়ে সোনারগাঁ এলাকায় তাণ্ডব চালায় হেফাজতের কর্মীরা। ছবি: নিউজবাংলা

৩ এপ্রিলের ঘটনার বিষয়ে খোকা বলেন, ‘আমি বা আমার কর্মীরা কোনোভাবেই হেফাজতের সঙ্গে ছিলাম না। পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে ধারণা করে আমি আমার কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছিলাম, তারা যেন রাস্তায় নেমে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে ফেরত পাঠায়। কোনো ধরনের সহিংসতা না করতে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করতে তাদের মাঠে নামতে বলেছিলাম।

‘মামুনুল হকের বিষয়টি শোনার সঙ্গে সঙ্গেই একজন দায়িত্বশীল সংসদ সদস্য হিসেবে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি, যেন এ নিয়ে কোনো উত্তেজনা সৃষ্টি না হয়। কিন্তু উল্টো এখন আমার ঘাড়ে দোষ চাপানো হচ্ছে।’

হামলার পর সংসদ সদস্য হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে দেখা না করার কারণ ব্যাখ্যা করে খোকা বলেন, ‘তারা তো সবাইকে আমার বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ করে তুলেছিল, এমন পরিস্থিতিতে আমি কীভাবে সেখানে যাই!’

লিয়াকত হোসেন খোকার অভিযোগের বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল্লাহ আল কায়সারের বক্তব্য জানতে চায় নিউজবাংলা। তিনি বলেন, ‘তার (খোকা) প্রতি আমার প্রতিহিংসার কিছু নাই। তিনি তার মতো নিজেকে সেভ করতে মনগড়া কথা বলতেই পারেন। আপনারা সাংবাদিক নিজেরা তদন্ত করে দেখুন, সব উত্তর পেয়ে যাবেন।’

৩ এপ্রিলের পর আবদুল্লাহ আল কায়সার এক সমাবেশে বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি না আলেম সমাজ এই হামলায় জড়িত, এই হামলা করেছে জাতীয় পার্টি, বিএনপির কর্মীরা।’

এ বক্তব্যের বিষয়ে আবদুল্লাহ আল কায়সার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি সত্যিই বিশ্বাস করি না, কারণ স্থানীয় আলেমদের সঙ্গে আমাদের বোঝাপড়া অনেক ভালো। ২০১৩ সালের ৫ মের আন্দোলনের সময় স্থানীয় আলেমরা আমার অনুরোধে শাপলা চত্বরে যাননি। আমি তখন এই আসনের সংসদ সদস্য, পরে আমি খেয়াল রেখেছি তাদের বিরুদ্ধে যেন হয়রানিমূলক কোনো মামলা না হয়।’

সোনারগাঁয়ে তাণ্ডবের ঘটনায় যে তিনটি মামলা হয়েছে তার একটির বাদি সোনারগাঁ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জিয়াউর রহমান। সে মামলায় প্রধান আসামি মামুনুল হকের পাশাপাশি সোনারগাঁ পৌরসভা জাতীয় পার্টির সভাপতি এম এ জামান ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলামকেও আসামি করা হয়েছে। একই মামলায় আসামি হিসেবে আছেন স্থানীয় হেফাজত, বিএনপি, জামাত-শিবির কর্মীরাও।

সোনারগাঁ তাণ্ডবে হেফাজতের সঙ্গী জাপা, দিশাহীন আ. লীগ
হেফাজতের তাণ্ডবে তছনছ রয়্যাল রিসোর্টের জিম। ছবি: নিউজবাংলা

আওয়ামী লীগ কেন কোণঠাসা?

মামুনুল হকের রিসোর্টকাণ্ড ঘিরে সোনারগাঁ উপজেলার মোগড়া পাড়া এলাকায় আওয়ামী লীগের কার্যালয়সহ দুই নেতার বাড়িতে হামলার সময় ন্যূনতম প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি স্থানীয় আওয়ামী লীগ।

উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক শামছুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ভাবতেই পারিনি এমন কিছু ঘটবে। হঠাৎ করেই সহিংসতা শুরু হল। কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছ থেকে কোনো নির্দেশনা ছিল না, তাই আমাদের কোনো প্রস্তুতিও ছিল না।’

সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল কায়সার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য একটি শিক্ষা। এখানে কমিউনিকেশন গ্যাপ হয়েছে, সেই সঙ্গে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের দুই নেতারও ভুল আছে। মামুনুল হক তো আর কোনো ছোট নেতা নন। তিনি সাম্প্রতিক সময়ে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছেন। তাই সেখানে ছুটে যাবার আগে তাদের অবশ্যই সিনিয়র নেতাদের জানানো দরকার ছিল।’

প্রশাসনও কালক্ষেপণ করে হামলাকারীদের সুসংগঠিত হবার সুযোগ করে দিয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘প্রশাসনের উচিত ছিল মামুনুল হককে নিরাপদ কোথাও সরিয়ে নেয়া, তারা সেটা করেনি।’

রিসোর্টে যাবার আগে সিনিয়র নেতাদের কেন জানাননি- জানতে চাইলে যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সেটা আমার ভুল হয়েছে, আমি আসলে বুঝেতে পারিনি।’

প্রশাসনের অবহেলার অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি সোনারগাঁ পুলিশের কোনো কর্মকর্তা। তবে সোনারগাঁ থানার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই ধরনের রাজনৈতিক সিচ্যুয়েশন ডিল করতে হলে আমাদের পলিটিক্যাল ডিসিশনের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। ধরে নিন সেখান থেকে আমরা কোনো সিদ্ধান্ত পাচ্ছিলাম না।’

সোনারগাঁ তাণ্ডবে হেফাজতের সঙ্গী জাপা, দিশাহীন আ. লীগ
সোনারগাঁ এলাকায় এক ছাত্রলীগ নেতার রেস্টুরেন্টেও ভাঙচুর চালায় হেফাজত কর্মীরা। ছবি: নিউজবাংলা

২৫ বছর কমিটি ছাড়া সোনারগাঁ আওয়ামী লীগ

সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের সবশেষ সম্মেলন হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। এ নিয়ে ক্ষোভ আছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগ করতে করতে বুড়ো হয়ে গেলাম, এখনও কোনো পদ পেলাম না। আমার বয়স ৬১ চলছে, কবে কমিটি হবে আর কবেই বা পদ পাব! সারাজীবন আওয়ামী লীগকে দিয়েই গেলাম, পেলাম না কিছুই।’

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করেন, ‘এত লম্বা সময়ে কমিটি না হওয়ায় দলীয় কোন্দলের মাত্রা বেড়েছে। তৈরি হয়েছে নেতৃত্বের সংকট।

১৯৯৬ সালে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য আবুল হাসনাত। তিনি মারা যাবার পর ২০১৭ সাল পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন বর্তমান উপজেলা আহ্বায়ক শামছুল ইসলাম।

এত সময় ধরে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি থাকার পরেও কেন উপজেলা কমিটি করতে পারলেন না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি জেলা আওয়ামী লীগ থেকে তখন সহযোগিতা পাইনি। জেলা আওয়ামী লীগের আগ্রহের অভাব ছিল। এখন আর কোনো সমস্যা নাই, সব কিছু গোছানো আছে, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে আমরা সম্মেলন করব।’

এ অভিযোগ নিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শামছুল ইসলাম সাহেব কেন জেলা থেকে সহযোগিতা পাননি, সে বিষয়ে আমরা সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলতে পারব না। কারণ সে সময়ে আমরা দায়িত্ব ছিলাম না।’

জেলা আওয়ামী লীগে হেফাজত ও জাতীয় পার্টি ‘প্রীতি’

সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা জানান, নারায়ণগঞ্জে কখনওই হেফাজত বা জাতীয় পার্টির আধিপত্য ছিল না। তবে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের বড় ভাই সেলিম ওসমান নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য হওয়ায় জাতীয় পার্টির প্রতি তার মৌন সমর্থন কাজ করে। তাছাড়া শামীম ওসমান অনেকবার হেফাজত নেতাদের প্রকাশ্য সমর্থন দিয়েছেন।

সোনারগাঁ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু অভিযোগ করেন, ‘শামীম ওসমান সাহেব জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকাকে প্রশ্রয় দেন। সেজন্যই তিনি বাড়াবাড়ি করার সাহস পাচ্ছেন। আমরা আওয়ামী লীগের কর্মীরা নানাভাবে নির্যাতিত। আমি নিজেসহ অন্য আওয়ামী লীগ নেতারা খোকা সাহেবের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ করেও তার (শামীম ওসমান) কাছ থেকে কোনো সমাধান পাইনি।’

সোনারগাঁয়ের স্থানীয়রা জানান, তাদের এলাকায় সম্প্রতি অনেক মাদ্রাসা স্থাপিত হয়েছে, যেগুলোর পৃষ্ঠপোষকতায় আছেন শামীম ওসমান ও তার সমর্থকেরা।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল ও ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি।

সোনারগাঁ তাণ্ডবে হেফাজতের সঙ্গী জাপা, দিশাহীন আ. লীগ
নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের পরিচিত দুই মুখ শামীম ওসমান ও সেলিনা হায়াত আইভী। ছবি: সংগৃহীত

জেলায় দলীয় বিরোধের জের উপজেলায়

সোনারগাঁ ‍উপজেলার রাজনীতিক, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ বলছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগে বছরের পর বছর ধরে চলা কোন্দলের কারণে উপজেলা পর্যায়েও আওয়ামী লীগ সংগঠিত হতে পারছে না। আর সোনারগাঁয়ে এই সুযোগটাই নিয়েছে হেফাজত আর জাতীয় পার্টি।

তাদের অভিযোগ, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান আর নারায়ণগঞ্জ পৌর মেয়র সেলিনা হায়াত আইভীর মধ্যে দা-কুমড়া সম্পর্কের প্রভাব জেলা থেকে উপজেলা পর্যায়ের নেতার্মীদের মধ্যেও পড়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সোনারগাঁ ‍উপজেলার এক আওয়ামী লীগ নেতা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শামীম ওসমান ও সেলিনা হায়াত আইভীর দ্বন্দ্ব এতটাই চরমে যে তারা কারও মুখোমুখি হন না। এমনকি কোনো দলীয় অনুষ্ঠানে একজন গেলে অন্যজন যান না। তাই আমরাও সুসংগঠিত হতে পারছি না। আমাদের নেতাদের পক্ষ থেকে সরাসরি কোনো নির্দেশ না থাকায় হেফাজতের তাণ্ডবের সময় নিশ্চুপ ছিলাম।’

হেফাজতের তাণ্ডবের চিত্র সরেজমিনে দেখতে বুধবার ঢাকা থেকে ঘটনাস্থলে যায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের একটি দল। সেখানে শামীম ওসমান উপস্থিত থাকলেও যাননি মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী। তবে আইভী সমর্থকদের একটি অংশ উপস্থিত ছিলেন।

ঘটনাস্থলে না যাওয়ার কারণ জানতে মোবাইল ফোনে আইভীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই ইস্যু নিয়ে আমি কথা বলতে চাই না।’

এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল কায়সার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দলে যতই কোন্দল থাকুক, জাতীয় ইস্যুতে আমরা সবসময় ঐক্যবদ্ধ। এর আগেও আমরা এক হয়ে অনেক আন্দোলন করেছি। সেদিনের হেফাজত তাণ্ডবে দলীয় কোন্দলের কোনো প্রভাব ছিল না। এটা ভুল কথা।’

অন্যদিকে, উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক শামসুল ইসলাম বলেন, ‘এখন আমরা সুসংগঠিত। আমাদের মাঝে আর কোনো সমস্যা নেই। কেন্দ্রীয় নেতারা এসেছেন, তারা আমাদের নির্দেশনা দিয়ে গেছেন, এখন আমরা ঐক্যবদ্ধ, আর কোনো সমস্যা হবে না।’

আরও পড়ুন:
একা মা পরিচয়েই ঢাকায় বাসা ভাড়া
মামুনুল হক চরিত্রহীন: নওফেল
রিসোর্টকাণ্ডে হেফাজতে ভাঙনের শঙ্কায় মামুনুল
‘আল্লাহর গজবের’ চ্যালেঞ্জ মামুনুলের
নাম তাইয়্যেবা বলেছিলাম ভয়ে: মামুনুল

মন্তব্য

আরও পড়ুন

জাতীয়
Another 120 people from Libya have been brought back home

লিবিয়া থেকে আরও ১২৩ জনকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে

লিবিয়া থেকে আরও ১২৩ জনকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে

লিবিয়া থেকে স্বেচ্ছায় দেশে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করা আরও ১২৩ অনিবন্ধিত বাংলাদেশি নাগরিককে গতকাল বৃহস্পতিবার দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এসব বাংলাদেশির সবাই বুরাক এয়ারের একটি বিশেষ চার্টার্ড ফ্লাইটে (ইউজেড ০২২২) সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান।

উল্লেখ্য, প্রত্যাগতদের অধিকাংশই মানবপাচারের শিকার। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে, ত্রিপোলিতে বাংলাদেশ দূতাবাস, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সমন্বিত উদ্যোগে প্রত্যাবাসন কার্যক্রমটি বাস্তবায়িত হয়েছে।

দেশে ফেরার পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আইওএম-এর প্রতিনিধিরা তাদের স্বাগত জানান ।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অধিকাংশ বাংলাদেশি সমুদ্রপথে ইউরোপে পৌঁছানোর উদ্দেশে অনিবন্ধিতভাবে লিবিয়ায় প্রবেশ করেছিলেন। লিবিয়ায় অবস্থানকালে তাদের অনেকেই মানব পাচারকারীদের দ্বারা অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার হন।

সরকারি কর্মকর্তারা এসব অভিবাসীকে পরামর্শ দেন, যেন তারা অন্যদের এই ধরনের বিপজ্জনক ও অবৈধ পথে বিদেশ গমনের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন করেন এবং ভবিষ্যতে এমন যাত্রা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন।

পুনর্বাসন সহায়তার অংশ হিসেবে আইওএম প্রত্যেককে নগদ ৬ হাজার টাকা, জরুরি খাদ্য সহায়তা, প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা এবং প্রয়োজনে অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করেছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, বর্তমানে লিবিয়ার বিভিন্ন বন্দিশিবিরে আটক থাকা অন্যান্য বাংলাদেশির নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের কাজ চলছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ত্রিপোলিতে বাংলাদেশ দূতাবাস, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আইওএম যৌথভাবে এ বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে।

মন্তব্য

তদন্ত কমিশনের সংবাদ সম্মেলন

গুমের শিকার ব‍্যক্তিদের চার ধরনের পরিণতি হতো

গুমের শিকার ব‍্যক্তিদের চার ধরনের পরিণতি হতো

রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই গুম করা হতো বলে জানিয়েছেন গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিটির সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। গুমের শিকার ব্যক্তিদের সম্ভাব্য ৪ ধরনের পরিণতি হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে সংবাদ সম্মেলনে গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিটির সভাপতি এসব তথ্য জানান। কমিশনে দাখিল করা অভিযোগ বিশ্লেষণে এসব তথ্য দেন তিনি।

তিনি বলেন, গুমের শিকার ব্যক্তিদের সম্ভাব্য যে ৪ ধরনের পরিণতি হয়েছে, তা হলো: ১. গুমের শিকার ব্যক্তিকে হত্যা করা। ২. বিচারের আগেই মিডিয়ার সামনে উপস্থাপন করে জঙ্গি তকমা দিয়ে বাংলাদেশেই বিচারাধীন বা নতুন ফৌজদারি মামলায় গ্রেফতার দেখানো।৩. তাকে সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাঠিয়ে সে দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে গ্রেপ্তারের ব্যবস্থা করা। ৪. ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে, অল্পসংখ্যক ক্ষেত্রে মামলা না দিয়ে ছেড়ে দেওয়া।

গুম কমিশনের ২য় অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন গত ৪ জুন প্রধান উপদেষ্টা বরাবর জমা দেওয়ার পর আজ দুপুরে রাজধানীর গুলশানে গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মইনুল ইসলাম চৌধুরী এ সব কথা বলেন।

গুম কমিশনের সভাপতি বলেন, বিগত কর্তৃত্ববাদী সরকারের আমলে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি এবং ভিন্ন মতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে পদ্ধতিগত দমননীতির অংশ হিসেবে গুমকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরেও বহু অপরাধী ও তাদের শুভাকাঙ্ক্ষীরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকায় অনেক জোরালো প্রমাণ ও নিদর্শন ধ্বংস, অনেক ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক অসহযোগিতা, সাক্ষীদের ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানারকম ভীতিকর ও আতঙ্কজনক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। তবুও বহু ভুক্তভোগী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের অভিযোগ ও অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন। তারা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বিস্তারিতভাবে সে কাহিনি তুলে ধরেছেন।

গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারির সভাপতি আরো বলেন, বিগত সরকারের শাসনামলে গুম একটি সুশৃঙ্খল ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপে ‘জঙ্গিবাদবিরোধী’ অভিযানের ছায়াতলে ইসলামি উগ্রবাদের হুমকিকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করা, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন ও শাসন দীর্ঘায়িত করার উদ্দেশে পরিচালিত হয়েছিল। ভুক্তভোগীদের মধ্যে ছিলেন- মেধাবী শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক কর্মী ও সাংবাদিক থেকে সাধারণ জনগণ।

মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এ প্রক্রিয়ায় তারা ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থাকে অস্ত্র বানিয়েছিল। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও নিরাপত্তা বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাবাধীন করে এবং নির্যাতন ও গোপন আটকের সংস্কৃতি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে চালু করেছিল। এমনকি সাধারণ নাগরিকদের বেআইনি পন্থায় বারবার ভারতীয় বাহিনীর হাতেও তুলে দেওয়া হয়েছিল।

কমিশন অফ ইনকোয়ারি অ্যাক্টের ধারা ১০ এ(১) ও (২) অনুযায়ী কমিশনে দাখিলকৃত ১৩১টি অভিযোগের বিষয়ে আইন মোতাবেক জিডি রেকর্ডপূর্বক ভিকটিমদের সন্ধান ও উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পুলিশ মহাপরিদর্শক বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, গোপন আটক কেন্দ্রের অস্তিত্ব এখন আর অস্বীকার করা যায় না। সকল ক্ষেত্রেই ভুক্তভোগীরা প্রায় একই ধরনের প্রক্রিয়ার শিকার হয়েছেন। পদ্ধতিগত নির্যাতন, সন্ত্রাসী হিসেবে প্রচার, একই ধরনের আইন অনুযায়ী অভিযোগ দায়ের ও একই ধরনের ভাষায় বর্ণনা। বিভিন্ন পটভূমি থেকে আসা ব্যক্তিদের অভিজ্ঞতার এই সামঞ্জস্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যকে স্পষ্ট করে।

তিনি বলেন, প্রতিবেদনে ১৯ শতাংশ ফেরত না আসা ১২ জন ভিকটিমের বিষয়ে অগ্রগতি তুলে ধরেছি, যাদের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে অনুসন্ধান সম্পন্ন হয়েছে। তাদের গুমের জন্য কারা দায়ী, তা প্রাথমিকভাবে আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি। চলমান অনুসন্ধানের স্বার্থে এই মুহূর্তে এর চেয়ে বেশি প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না।

ফিরে না আসা ভিকটিমদের বিষয়ে অপরাধী ও গুমের অপরাধ সংঘটনের স্থানসহ নানাবিধ বিষয়ে তথ্যের ঘাটতি বা পুরোনো কললিস্ট না পাওয়াসহ নানারকম বিলম্বঘটিত প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হলেও কমিশন আন্তরিকতার সঙ্গে অনুসন্ধান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

প্রতিবেদনে কমিশন সন্ত্রাসবিরোধী যে সব মামলায় অপব্যবহার হয়েছে, তা ন্যায় বিচারের মানদণ্ড বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতনের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে মালয়েশিয়া-ইন্দোনেশিয়ার মতো উপযুক্ত কাউন্টার টেরোরিজম মেথড বের করার জন্য দুটি সুপারিশ করা হয়।

এ সময় গুম সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারির সদস্য অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত বিচারক মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকার কর্মী নূর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কমিশনের সদস্য নাবিলা ইদ্রিস, মানবাধিকার কর্মী ও কমিশনের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

জাতীয়
The accused in the murder case

আদালত থেকে পালাল হত্যা মামলার আসামি

আদালত থেকে পালাল হত্যা মামলার আসামি

ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের এজলাস থেকে হাজতখানায় নেওয়ার পথে পুলিশকে মারধর করে পালিয়েছেন হত্যা মামলার এক আসামি।

আসামি শরিফুল ইসলাম (২২) দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ থানার হরিপুর গ্রামের মৃত শফিক আহম্মেদের ছেলে। তিনি রাজধানীর খিলগাঁও থানার জিসান হোসেন (১৪) হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। মামলাটি বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণের পর্যায়ে রয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টার পর সংশ্লিষ্ট আদালতের দায়িত্বে থাকা পুলিশ কনস্টেবল শহিদুল্লাহকে মারধর করে ছুটে পালিয়ে যান আসামি শরিফুল। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানার ইনচার্জ এসআই রিপন।

তিনি বলেন, আসামিকে আদালত থেকে হাজতখানায় নেওয়ার সময় পুলিশকে আঘাত করে তিনি পালিয়ে যায় আসামি শহিদুল।

ডিএমপির প্রসিকিশন বিভাগের এডিসি মাইন উদ্দিন বলেন, আসামির হাতে হাতকড়া পরানো ছিল। তিনি ধাতব কিছু দিয়ে হাতকড়া ঢিলা করে কৌশলে খুলে ফেলে। পরে পুলিশ কনস্টেবলের হাতে আঘাত করে পালিয়ে যায়।

তিনি বলেন, আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। কোতোয়ালি থানাকে জানানো হয়েছে আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য। তার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলমান।

মন্তব্য

জাতীয়
The 5th Annual Senate Meeting in the BUP

বিইউপিতে ১৭তম বার্ষিক সিনেট সভা অনুষ্ঠিত

বিইউপিতে ১৭তম বার্ষিক সিনেট সভা অনুষ্ঠিত

১৯ জুন ২০২৫ তারিখে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) এর ১৭তম বার্ষিক সিনেট সভা বিইউপির বিজয় অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিইউপির উপাচার্য ও সিনেট চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোঃ মাহ্বুব-উল আলম, বিএসপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, এমফিল, পিএইচডি।

সভার শুরুতে বিইউপির উপাচার্য ও সিনেট চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোঃ মাহ্বুব-উল আলম বিদায়ী সদস্যদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং নবনিযুক্ত সদস্যদের স্বাগত জানান। পরে বিইউপির ট্রেজারার এয়ার কমডোর মোঃ রেজা এমদাদ খান, জিইউপি, বিইউপি, এনডিসি, পিএসসি, জিডি(পি), ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট ১৩৪ কোটি ৮ লক্ষ টাকা ও ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের ১৩৪ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন।

সিনেট সদস্যগণ ট্রেজারার এর বক্তৃতার ওপর আলোচনা করেন এবং সর্বসম্মতিক্রমে বাজেট প্রস্তাব অনুমোদন করেন। এছাড়াও সিনেট সভায় ১৭তম বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপিত ও সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়। ১৭তম বার্ষিক সিনেট সভাটি সার্বিকভাবে সঞ্চালনা করেন বিইউপির রেজিস্ট্রার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ রাব্বি আহসান, এনডিসি, পিএসসি।

সভায় সিনেট চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মাহ্বুব তাঁর বক্তব্যে বলেন, বিইউপি বয়সে নবীন হলেও এর শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও গবেষকগণের বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, সেমিনার, ওয়ার্কশপ ও গবেষণা ভিত্তিক কার্যক্রমের অর্জনসমূহ জাতীয় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সুনাম বয়ে আনছে। যুগোপযোগী শিক্ষা প্রদান, গবেষণা ও উদ্ভাবনী কার্যক্রমে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নিত হওয়ার লক্ষ্যে অত্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক একটি সুনির্দিষ্ট Academic Strategic Plan –২০৫০ প্রণয়ন করা হয়েছে।

Academic Strategic Plan এর মাধ্যমে পাঠ্যক্রমের আধুনিক মান নির্ধারণ, Outcome Based Education (OBE) কারিকুলাম প্রনয়ণ, গবেষণা, উদ্ভাবন, প্রকাশনা ও গবেষণা সহায়তার সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

মাননীয় উপাচার্য সকলকে অবহিত করেন যে বিইউপি’র গবেষণাভিত্তিক অগ্রযাত্রায় BUP Research Centre (BRC) অংঙ্গীভূত ফ্যাকাল্টি ও অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহে গবেষণা, উদ্ভাবন ও পরামর্শমূলক কার্যক্রমে গতিশীলতা আনার লক্ষ্যে কাজ করছে। 'Inspiring Innovation for Advancing Knowledge' শ্লোগানকে ধারণ করে, BUP Research Centre, গবেষকদের মানসম্মত গবেষণায় উৎসাহ দিচ্ছে এবং শিল্প-প্রতিষ্ঠান ও একাডেমিয়ার মধ্যে সংযোগ স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

এছাড়াও তিনি উল্লেখ করেন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষকদের গবেষণালব্ধ জ্ঞান প্রসারের উদ্দেশ্যে বিইউপি থেকে ৫টি জার্নাল প্রতিবছর নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে যা সকলের মাঝে সমাদৃত। সিনেট চেয়ারম্যান আরও উল্লেখ করেন যে, শিক্ষার্থীদের শিক্ষার পাশাপাশি একজন সুশৃঙ্খল, নৈতিকতা সম্পন্ন সু-নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বিইউপি বদ্ধপরিকর এবং সে লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের চারিত্রিক গুণাবলি ও আত্মিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সকল প্রোগ্রামের পাঠ্যক্রমে নৈতিক শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে Need Based Education - কেও গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হচ্ছে। তিনি বলেন যে, আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের মানসম্মত কারিকুলাম ও শিক্ষা পরিবেশের পাশাপাশি বৈচিত্র‍্যময় সাংস্কৃতিক সান্নিধ্যের গুরুত্বকে সামনে রেখে বিইউপি'তে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, নবপ্রজন্মের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ, সততা, চরিত্র গঠন ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা এবং দেশপ্রেম জাগ্রত করতে পড়াশোনার পাশাপাশি বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য, জাতীয় দিবসগুলোর তাৎপর্য ও মাহাত্ম্য তুলে ধরে বিইউপি’র বিভিন্ন আলোচনা সভা, সিম্পোজিয়াম, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনের কথা উল্লেখ করেন।

এই সিনেট সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং বিইউপির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

জাতীয়
BNP does not support the electoral college in the presidential election

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ইলেকট্রোরাল কলেজব্যবস্থা সমর্থন করে না বিএনপি

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ইলেকট্রোরাল কলেজব্যবস্থা সমর্থন করে না বিএনপি

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রস্তাবিত ইলেকট্রোরাল কলেজব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘জনগণের ভোটাধিকার হরণে এই ব্যবস্থাকে আরেকটি ছলচাতুরী হিসেবে দেখা হচ্ছে।’

গতকাল বুধবার বিকালে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য কমিশনের যে প্রস্তাব তাতে একটা ইলেক্টোরাল কলেজ করা হবে। এবং প্রায় ওনাদের ভাষ্য অনুযায়ী ৭০ হাজারের মতো ভোটার থাকবে। ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে স্থানীয় সরকার পর্যায়ের প্রতিনিধিগণ এখানে ভোটার হবেন। এবং রাষ্ট্রপতিকে সৎ, দক্ষ ও অভিজ্ঞ একজন ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য ওখানে প্রস্তাব করা হয়েছে।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের প্রস্তাবে আগের মতোই একমত নয় বিএনপি।

এই কাউন্সিলের জবাবদিহি না থাকায় সমর্থন করে না বিএনপি। এই কাউন্সিলে আরেকটি ভারসাম্যহীন অবস্থা তৈরি হবে বলে মনে করি আমরা।’

স্বাধীন বিচারব্যবস্থার দাবি জানিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘স্বাধীন বিচারব্যবস্থা হলে ভারসাম্যহীনতা দূর হবে, ফ্যাসিবাদ দমন করবে। প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য, অন্য সাংবিধানিক পদ, সংস্থা স্বাধীন করতে পারলে সমস্যা থাকবে না।’

বিএনপি মনে করে সুশাসন নিশ্চিত করতে ন্যায়পাল করা যেতে পারে। বিদ্যমান ব্যবস্থা বজায় রেখে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ হলে তাদের যোগ করা যেতে পারে, বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন আইন সংশোধন করা যেতে পারে। জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। বিএনপি মনে করে, দুদক ও মানবাধিকার কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী করতে বিদ্যমান আইনগুলো সংস্কারের প্রয়োজন।

মন্তব্য

জাতীয়
Bhawal Chandipur Agrakhola road is like a death

ভাওয়াল-চন্ডিপুর-অগ্রখোলা সড়ক যেন মরণফাঁদ

চরম দুর্ভোগে এলাকাবাসী   
ভাওয়াল-চন্ডিপুর-অগ্রখোলা সড়ক যেন মরণফাঁদ

কেরানীগঞ্জের শাক্তা ও তারানগর ইউনিয়নের বুক চিরে চলা ভাওয়াল-চন্ডিপুর-অগ্রখোলা সড়কের বেহাল দশায় নিত্যদিন ভোগান্তিতে পড়ছে হাজারো মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে সড়কজুড়ে এখন গর্ত আর ধুলাবালি। সামান্য বৃষ্টিতে কাদায় যানবাহন আটকে যায়, আর শুকনো মৌসুমে উড়ে ধূলোর ঝড়।

রাস্তাটির বেহাল অবস্থার কারণে প্রায় প্রতিদিনই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন পথচারী ও যানবাহনের চালকরা। ছোট-বড় গর্তে হোঁচট খেয়ে পড়ে আহত হন অনেক পথচারী। অন্যদিকে, যানবাহন চলাচলের অযোগ্য এই সড়কে প্রতিনিয়তই নষ্ট হয়ে পড়ে ভ্যান, অটোরিকশা, ট্রাকসহ বিভিন্ন গাড়ি। আকিজ ফাউন্ডেশন স্কুল, মেকাইল মাদ্রাসা ও অগ্রখোলা কমিউনিটি হাসপাতালের সামনের অবস্থা এতটাই খারাপ যে মাঝে মাঝেই উল্টে যায় যাত্রী বোঝাই যানবাহন ।

সড়কের করুণ অবস্থার কারণে অনেক চালক ও পথচারী এখন পাশের বেলনা, কলাতিয়া ও নয়াবাজার হয়ে বিকল্প রাস্তায় যাতায়াত করছেন। এতে সময়, অর্থ ও দুর্ভোগ বাড়ছে।

এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন কেরানীগঞ্জ ছাড়াও নবাবগঞ্জ, দোহার, সিরাজদিখানসহ দক্ষিণবঙ্গের হাজার হাজার মানুষ মোহাম্মদপুর হয়ে রাজধানীতে প্রবেশ করে। অথচ বছরের পর বছর ধরে অবহেলায় পড়ে আছে সড়কটি।

স্থানীয় বাসিন্দা কবির হোসেন বলেন, ‘রাস্তাটার অবস্থা এমন যে, অটোরিকশা সিএনজিতে ওঠা মানেই কোমর ভাঙা। মাঝে মাঝেই যানবাহন পড়ে মানুষ আহত হয়। স্কুলের বাচ্চারা পর্যন্ত ভয়ে এই রাস্তায় যেতে চায় না। কোন এমপি-মন্ত্রী একবার এই রাস্তা দিয়ে গেলে বুঝত কষ্টটা কেমন।

একই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পণ্যবাহী ট্রাকচালক রাকিব হাওলাদার। তিনি বলেন, একবার গর্তে পড়লে গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যায়। ট্রাকে থাকা জিনিসপত্র পড়ে যায়, এভাবে থাকলে এই রাস্তা দিয়ে আর চলাচল করা সম্ভব নয়। এটি দ্রুত সংস্কার করা উচিত।

এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ বলেন, সড়কটি ইতোমধ্যে ডিপিপিতে অনুমোদন পেয়েছে। তাই এখন সংস্কার করা হচ্ছেনা। বছরের শেষ দিকে ২০ ফুট প্রশস্ত করে এবং আরও শক্তিশালী করে কাজ শুরু হবে। তখন রাস্তাটি আরো টেকসই হবে।

এদিকে এলাকাবাসীর দাবি, সংস্কার কাজ শুরুর আগ পর্যন্ত অন্তত গর্ত ভরাট করে সাময়িক চলাচলের উপযোগী করে তুলতে হবে। নইলে প্রতিদিন দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

মন্তব্য

জাতীয়
Twenty four bucks the family of four runs a family of four

আড়াইশ টাকা আয়ে চারজনের সংসার চালায় কিশোর তোফাজ্জল!

আড়াইশ টাকা আয়ে চারজনের সংসার চালায় কিশোর তোফাজ্জল!

একটা ভাঙাচোরা বাইসাইকেলই তার ভরসা। এ সাইকেল চালিয়ে ১৫ কিলোমিটার দুরের দুর্গম খাসিয়া পল্লীতে কাজ করে দুই-আড়াইশ টাকা রোজগার করে কিশোর তোফাজ্জল (১৪)। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী ৯নং ইসলামপুর ইউনিয়নের কাঁঠালকান্দী গ্রামের আলী আহমেদ (৬৫) এর ছেলে তোফাজ্জল হোসেন। পরিবারে সে একমাত্র উপার্জনক্ষম। বাবা হার্টের রোগী, বোন আয়েশা খাতুন (২৫) মানসিক ভারসাম্যহীন আর বয়োবৃদ্ধ দাদী সমিতা বিবি (৮২) দীর্ঘদিন ধরে শয্যাশায়ী।

তোফাজ্জল কান্নাজড়িত কন্ঠে এ প্রতিবেদককে বলেন, প্রতিদিনি সকালে ভাঙাচোরা একটি সাইকেল নিয়ে ১৫ কিলোমিটার দুরের খাসিয়া পল্লীতে কাজে যাই। সন্ধ্যায় ফিরি। যা রোজগার হয়, দুবেলাও খেতে পাইনা। এ দুনিয়ায় আল্লাহ ছাড়া আমাদের আর কেউ নাই। প্রতিবেশী ফজল মিয়া, আবু শহীদ এ পরিবারের দুরাবস্থার কথা জানিয়ে বলেন, প্রকৃতই তারা খুব অসহায় ও মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। তিনজনই অসুস্থ। মাঝে মধ্যে আমরা যতটা সম্ভব সহযোগিতা করার চেষ্টা করি।

সরেজমিন তোফাজ্জলদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি আবাসন প্রকল্পের ছোট্ট একটি ঘরে মেঝেয় জীর্ণ-শীর্ণ কাঁথায় শুয়ে আছেন সমিতা বিবি। অপুষ্টি আর ক্ষুধার যন্ত্রণায় ক্লান্ত। ঠিকমতো কথা বলতে পারছেন না। যা বললেন বোঝা গেলো, ডালভাত খেয়ে ঈদের দিন পার করেছি। ক্ষিদের জ্বালায় রাতে ঘুম আসে না। একরত্তি নাতি আর কিইবা করবে। তবু যা করছে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। চাল ডাল আনলে ওষুধ আনতে পারে না। তবু প্রায়ই অনাহারে থাকতে হয়। ঈদে চান্দে প্রতিবেশীরা কেউ খাবার দেয়, কেউ সামান্য টাকা-পয়সা দেয়। এইভাবেই টিকে আছি।

স্থানীয়দের সহযোগিতাই একমাত্র ভরসা। মানুষের সাহায্যে দুমুঠো ভাত খেতে পারেন, যদি কেউ সাহায্যে না করে তাহলে না খেয়েই থাকতে হয়। তার বিলাপে চোখে জল চলে আসে। এ যেন দারিদ্র্যের এক করুণ চিত্র। এই অসহায় নারীর জীবন কাটছে অভাব আর কষ্টে। পা ভেঙে এক বছর ধরে শয্যাশায়ী। ছেলে আলী আহমেদও হার্টের রোগী। কোন কাজকর্ম করতে পারেন না। তাই ১৩/১৪ বছরের নাতি তোফাজ্জলের কাঁধেই সংসারের ভার। দুর্গম খাসিয়া পুঞ্জিতে কাজ করে দিনে আয় করে দুই-আড়াইশ টাকা মাত্র। এ টাকায় দুবেলা খাবার যোগানোই মুশকিল। তার ওপর অসুস্থ দাদি, বাবা আর মরার উপর খাঁড়ার ঘা মানসিক প্রতিবন্ধী বড় বোন আয়েশা খাতুন।

ইসলামপুর ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক আহমেদ জানান, একসময় তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিলো না। কয়েক বছর আগে সরকারি আবাসন প্রকল্পের মাধ্যমে এ পরিবারের জন্য একটি ঘরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোফাজ্জলদের দুরাবস্থা জেনে অনেকে খাদ্য সামগ্রী দিয়ে তাদের সহায়তা করছেন। তবে বয়োবৃদ্ধ সমিতা বিবি ও মানসিক প্রতিবন্ধী আয়েশা খাতুনের সুচিকিৎসা ও তোফাজ্জলদের আত্মনির্ভরশীল হওয়ার ব্যবস্থা জরুরি।

মন্তব্য

p
উপরে