ধর্মভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের তিন দিনের বিক্ষোভ আর হরতালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মুক্তিযুদ্ধের স্মারক সব স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের নামফলকও। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার কার্যালয়েও দেয়া হয়েছে আগুন।
হামলাকারীরা মাদ্রাসা থেকে মিছিল বের করার সময় পাত্রে করে পেট্রল নিয়ে গেছে। সঙ্গে ছিল হাতুড়িসহ দেশীয় নানা অস্ত্রশস্ত্র।
যেখানেই তারা গেছে, চালানো হয়েছে ভাঙচুর, সেই পেট্রল ঢেলে দেয়া হয়েছে আগুন।
এসব ঘটনায় আওয়ামী লীগ, মুক্তিযোদ্ধা, সামাজিক আন্দোলনের কর্মীরা ভীষণ ক্ষুব্ধ। তারা বলছেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতা করে আসা এই শক্তি এখনও তাদের অবস্থান পাল্টায়নি। এই ঘটনাই তার প্রমাণ।
আরও পড়ুন: মাদ্রাসাছাত্রদের হামলায় ট্রেন বন্ধ ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট রুটে
১৯৭১ সালে কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক রাজনৈতিক দলের মধ্যে সবচেয়ে বড় নেজামে ইসলামসহ অন্যরাও পাকিস্তানকে সমর্থন দিয়েছে। হেফাজত নেতা মামুনুল হকের বাবা শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হকের ৯০ দশকে দেয়া একটি সাক্ষাৎকার সম্প্রতি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে তিনি বলেছেন, ‘৭১-এ আমগো অবস্থান ছিলো নিরপেক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে।’
শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কান্দিপাড়া এলাকার জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুসিয়া মাদ্রাসা থেকে কয়েক হাজার ছাত্রের মিছিল বের হয়। তারা শহরের কেন্দ্রস্থল বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে গিয়ে হামলে পড়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে। সেখানে ভাঙচুর করে পেট্রল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এতে ম্যুরালটির বেশ ক্ষতি হয়েছে।
রোববারও হামলা হয় একই ম্যুরালে। এবারও হাতুড়ি পেটা করে সেখানে পেট্রল ঢেলে আগুন দেয়া হয়।
শনিবার বিকেল পর্যন্ত মাদ্রাসার ছাত্ররা ছিল শান্ত। বিকেলে ওই মাদ্রাসারা সামনে দিয়ে আওয়ামী লীগের একটি মিছিল যাওয়াকে কেন্দ্র করে ছাত্ররা বের হয়ে জড়ায় সংঘর্ষে। পরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে নন্দনপুর এলাকায়।
রোববার হরতালের দিন সকালে একই মাদ্রাসা থেকে মিছিল বের হয়। পরে আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকেও হেফাজত সমর্থকরা এসে যোগ দেন তাদের সঙ্গে।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়াজুড়ে ত্রাসের পর সংঘর্ষে নিহত ৩
বিকেল পর্যন্ত শুক্রবারের মতোই বিভিন্ন সরকারি স্থাপনার পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যালয়ে তারা বিনা উসকানিতে হামলে পড়ে।
কেবল এবার নয়, এর আগেও নানা সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একই চিত্র দেখা গেছে।
মুক্তিযুদ্ধের একটি স্থাপনাও বাদ যায়নি
বিভিন্ন যানবাহনে হামলা শেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর আধুনিক সুপার মার্কেটের সামনে যায় মাদ্রাসাছাত্ররা। সেখানে থাকা বঙ্গবন্ধুর আরও একটি ম্যুরালে লাঠিসোঁটা ও হাতুড়ি দিয়ে ভাঙচুর চালায় তারা।
এরপর হেফাজত সমর্থকরা যায় পাশের ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরে। সেখানে গত দুই দিন ধরে চলছিল উন্নয়ন মেলা। তবে হরতালের কারণে স্টলগুলো বন্ধ ছিল।
মাদ্রাসাছাত্ররা সেখানে স্টলগুলো ভাঙচুরের পাশাপাশি ধরিয়ে দেয় আগুন। চত্বর মঞ্চে যেখানে নানা সময় জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানমালা ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করা হয়, সেখানে পেট্রল ঢেলে দেয়া হয় আগুন।
বাঙালির মুক্তি সংগ্রামে ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের নাম বরাবর শ্রদ্ধার সঙ্গে উচ্চারিত হয়। পাকিস্তান আমলে এই নেতাই প্রথম বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দিতে পাকিস্তান গণপরিষদে দাবি তোলেন।
১৯৪৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ওই দাবি তোলা এই রাজনীতিক বাংলাদেশের স্বাধিকার আন্দোলনেও রাখেন ভূমিকা। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে তাকে ধরে নিয়ে হত্যা করে পাকিস্তানি বাহিনী।
যুদ্ধ শেষে এই সংগ্রামীর স্মরণে জেলার বিভিন্ন সড়কসহ এই ভাষা চত্বরটি তৈরি করা হয়।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আবার সহিংস হেফাজত, নীরব পুলিশ
এটি ভাঙচুর শেষে হামলাকারীরা যায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকারের কার্যালয়ে। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকও।
ওই কার্যালয়েও ব্যাপক ভাঙচুর করে পেট্রল ঢেলে আগুন দেয়া হয়। উন্মত্ত মাদ্রাসাছাত্রদের বাধা দেয়ার মতো কোনো পরিস্থিতিই ছিল না।
এখানে ভাঙচুর শেষে হেফাজত কর্মীরা যায় একই এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবনে। সেটি ছিল তালাবদ্ধ। সেখানে ইটপাটকেল দিয়ে ঢিল ছোড়া হয় ফাঁকা সেই ভবনে। এতে ভবনের জানলার কাচগুলো ভেঙে যায়।
সেখান থেকে মাদ্রাসাছাত্ররা যায় শহরের কাউতলী এলাকায়। সেখানে আছে শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের নামফলক। হাতুড়ি দিয়ে সেই ফলকও ভাঙচুর করা হয়।
এরপর হেফাজত সমর্থকরা যায় শহরের কুমারশীল মোড়ে। সেখানে হামলা চালানো হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি গণ গ্রন্থাগারে।
ভবনের জানলার কাঁচ ভাঙচুরের পাশাপাশি গ্রন্থাগারের ভেতরে পেট্রলের বোতল ছুড়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এতে পুড়ে যায় বইয়ের বেশির ভাগ।
মাদ্রাসা ছাত্ররা ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর স্মৃতিবিজড়িত দুটি স্থাপনায়।
শহরের কুমারশীল এলাকায় সুর সম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনে গিয়ে তারা ভাঙচুরের পাশাপাশি ধরিয়ে দেয় আগুন। পুড়ে যায় আলাউদ্দিন খাঁর ব্যবহৃত গামছা, নামাজের বিছানা, তবলাসহ নানা ঐতিহাসিক জিনিসপত্র।
এই সঙ্গীতাঙ্গনে বছর কয়েক আগেও ব্যাপক হামলা চালিয়েছিল একই মাদ্রাসার ছাত্ররা। তখনও বাংলাদেশের অন্যতম সেরা এই সঙ্গীতজ্ঞের নানা স্মৃতি নষ্ট হয়ে যায়।
প্রতিষ্ঠানটিতে দ্বিতীয় দফা হামলা চালানোর পাশাপাশি মাদ্রাসা ছাত্ররা ভাঙচুর করে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ মিলনায়তনেও। পৌরসভার পাশে এই মিলনায়তনে নানা সাংস্কৃতির অনুষ্ঠান হয়ে থাকে।
সেখানে গিয়ে পাঁচ থেকে ছয়শ চেয়ার ছাড়াও মঞ্চে ভাঙচুর করে আগুন দেয়া হয়।
বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত তাণ্ডব চালানোর পর মাইকে ‘কর্মসূচি’ শেষ ঘোষণা করে মাদ্রাসায় ফিরে যায় ছাত্ররা।
বিরূপ প্রতিক্রিয়া
হেফাজত কর্মীদের এই ধ্বংসযজ্ঞে ভীষণ ক্ষুব্ধ মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের জন্য অস্ত্র তুলে নেয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা রতন কান্তি দত্ত। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্তিযুদ্ধের একটি অন্যতম স্থান। এখানে মুক্তিযুদ্ধে স্মৃতিবিজড়িত অনেক কিছুই আছে। বারবার তারা এগুলোতে হামলা চালায়। আমি তাদের তাণ্ডবের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
শহীদ ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত ভাষা চত্বরে হামলার সমালোচনা করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক স্বপন মিয়া বলেন, ‘বাংলা ভাষা রক্ষায় শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের রয়েছে অতুলনীয় ভূমিকা। যারা আজ এ কাজ করেছে তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী নয়। এটা তারা অতীতেও বারবার প্রমাণ দিয়েছে, আজও দিয়েছে।’
জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার হারুন অর রশিদ বলেন, ‘যদি তারা মনে-প্রাণে মুক্তিযুদ্ধকে লালন করত, তাহলে এভাবে ধ্বংসযজ্ঞ চালাত না।’
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকার বলেন, হামলার ধরন দেখে বোঝা যায়, তারা ইচ্ছা করেই এই স্থাপনাগুলোতে হামলা করেছে। তারা মূলত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আগুন দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত বাংলার গৌরব। তার নামেই শহরের মূল ফটকে ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত ভাষা চত্বর তৈরি করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সকল সভা ও অনুষ্ঠান করা হয়।
‘কাউতলীর শহীদদের নামফলক, বঙ্গবন্ধ ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়েছে, গণগ্রন্থাগার যেখানে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের অনেক বই রয়েছে, পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বইগুলো অভাবে মুক্তিযুদ্ধের অনেক ইতিহাস থেকে বঞ্চিত হবে নতুন প্রজন্ম।’
আরও পড়ুন:দেশের চারটি বিভাগে বৃষ্টির আভাস দিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, অন্য অঞ্চলগুলোতে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দিয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
বৃষ্টিপাত নিয়ে বলা হয়, ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এ ছাড়া দেশের অন্যান্য জায়গায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
আজকের তাপমাত্রা নিয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
আরও পড়ুন:স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে ২০২৬ সালে উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও উত্তরণ-পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে কৌশল প্রণয়ন করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সূত্র: বাসস
রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সভাপতিত্বকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সত্যজিৎ কর্মকার সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
তিনি বলেন, ‘এলডিসি থেকে উত্তরণে সম্ভাবনার পাশাপাশি কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের বিষয়ে সরকারের তরফ থেকে সমন্বয়ের কোনো সমস্যা নেই। এটি কোনো নির্দিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নয়, বরং এটি একটি সার্বিক সমস্যা।’
ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) মো. আব্দুস সালাম ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শহীদুজ্জামান সরকার বক্তব্য দেন। এ সময় পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ও সংশ্লিষ্ট সচিবগণ উপস্থিত ছিলেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, বৈঠকে মোট ৮ হাজার ৪২৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা ব্যয়সাপেক্ষ মোট ১১টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। মোট প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে ৭ হাজার ৯৩৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা সরকার দেবে এবং বাকি ৪৮৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা প্রকল্প সহায়তা হিসেবে আসবে।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর কিছু নির্দেশনা প্রকাশ করে পরিকল্পনা সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী মিসরের কায়রোতে বাংলাদেশ চ্যান্সারি কমপ্লেক্স ও আবাসিক ভবন নির্মাণের জন্য ১৬৬ কোটি টাকার প্রকল্পের অনুমোদন দেয়ার সময় প্রয়োজনীয় বিশ্রাম কক্ষ রাখা এবং প্রবাসী বাংলাদেশিরা যেন স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে পরিষেবা পান সেজন্য পর্যাপ্তসংখ্যক বুথ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের জেলাগুলোতে গ্রামীণ অবকাঠামোগত উন্নয়নে আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদনের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী কুড়িগ্রামে নদীভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং রাস্তা ও সেতু নির্মাণের সময় বন্যার বিষয়টি বিবেচনা করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সারা দেশে ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স (তৃতীয় পর্যায়) নির্মাণের জন্য ৩ হাজার ৫৯ কোটি টাকার প্রকল্প সম্পর্কে সত্যজিৎ বলেন, প্রধানমন্ত্রী সারা দেশে বাকি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সগুলোর নির্মাণ দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে তিনি উপকূলীয় এলাকার ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের পাশাপাশি সোলার সিস্টেম রাখার জন্য একটি ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেন।
পরিকল্পনা সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেসব প্রকল্প সমাপ্তির পথে সেগুলোর সবশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে সংশ্লিষ্ট উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসেছেন।
প্রধানমন্ত্রী পরিকল্পনা কমিশনকে এসব প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ নিশ্চিত করতে বলেন, যাতে করে এগুলো দ্রুত সম্পন্ন করা যায়।
মিরপুরে বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠার জন্য ১১৫ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সেখানে নারীদের প্রশিক্ষণের বিষয়টি অগ্রাধিকার দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সরকার প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব করতে না চাইলেও মাঝে মাঝে জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত জটিলতা ও ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে বিলম্ব হয়।
তিনি বলেন, ‘উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন দেয়া হচ্ছে।
সভায় অনুমোদিত অন্যান্য প্রকল্পগুলো হল- অতিরিক্ত ২৮৮ কোটি ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০টি মিটার গেজ ডিজেল ইলেক্ট্রিক লোকোমোটিভ এবং ১৫০টি মিটার গেজ যাত্রীবাহী ক্যারেজ সংগ্রহ (প্রথম সংশোধিত); ৪৮১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা ব্যয়ে কাশিনাথপুর-দাশুরিয়া-নাটোর-রাজশাহী-নবাবগঞ্জ-কানসাট-সোনামসজিদ-বালিয়াদিঘি সীমান্ত জাতীয় মহাসড়কের যথাযথ মান উন্নয়ন; ৩৭১ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে সরকারি মৎস্য খামারের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্প (প্রথম পর্যায়); ২৩২ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ে কক্সবাজার জেলায় বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের ফিশ ল্যান্ডিং সেন্টারের উন্নয়ন; অতিরিক্ত ১৬৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ে অবকাঠামো, উন্নত দক্ষতা ও তথ্যের প্রবেশাধিকারের মাধ্যমে দুর্বল জনগোষ্ঠীর জন্য টিকে থাকার সামর্থ বৃদ্ধি এবং অতিরিক্ত ১ হাজার ৪৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে আটটি বিভাগীয় শহরে পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার, হার্ট ও কিডনি রোগের চিকিৎসা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা (প্রথম সংশোধিত)।
আরও পড়ুন:কোনো ধরনের দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবেন না বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ।
তিনি বলেছেন, ‘আমি কোনো দুর্নীতি করব না। কোনো দুর্নীতি প্রশ্রয়ও দেব না। আমি মানুষ হিসেবে ভুল করতেই পারি, তবে ভুল হলে ধরিয়ে দেবেন। আমার কাজের গতি যেন ত্বরান্বিত হয়, সে ব্যাপারে সহযোগিতা করবেন।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডা. মিল্টন হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে দুপুর ১২টার দিকে উপাচার্যের কার্যালয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন নতুন উপাচার্য।
দায়িত্ব নিয়েই সবার প্রতি সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে উপাচার্য বলেন, ‘আমি আপনাদেরই লোক, আমি বঙ্গবন্ধুর লোক, আমি প্রধানমন্ত্রীর লোক। আমাকে সবাই সহযোগিতা করবেন, ভুল হয়ে ধরিয়ে দেবেন। তবে কেউ আমাকে পিছু টানবেন না।’
তিনি বলেন, ‘আমি কারও অন্যায় আবদার শুনব না। সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে চাই। প্রশাসনিক ক্ষমতা দেখাতে নয়, আমি আপনাদের বন্ধু হয়ে কাজ করতে চাই। আমি আপনাদের পাশে থেকে সব সমস্যা সমাধান করব।’
চিকিৎসকদের উদ্দেশে নতুন উপাচার্য বলেন, ‘আপনাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করলেই আমি সবচেয়ে খুশি হব। অন্যকিছু দিয়ে আমাকে খুশি করা যাবে না। কেউ দায়িত্ব পালন করতে না পারলে দায়িত্ব থেকে সরে যেতে হবে। যিনি চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করতে পারবেন, তিনিই দায়িত্ব নেবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ আমার বন্ধু। তিনি আমাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে বিদায় নিয়েছেন। আমি শারফুদ্দিন আহমেদকে শুভেচ্ছা জানাই।’
ডা. দীন মোহাম্মদ বলেন, ‘আমি সুনির্দিষ্ট কোনো গ্রুপের লোক নই। আমি কোনো ধরনের গ্রুপে যেতে চাই না। এ বয়সে আমার কোনো গ্রুপিংয়ের প্রয়োজন নেই। আমাকে যে আস্থা এবং বিশ্বাস নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখানে পাঠিয়েছেন, আমি সেটাকে মূল্যায়ন করতে চাই।’
উদ্বোধনের দীর্ঘদিন পরও সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল চালু না হওয়া প্রসঙ্গে নতুন উপাচার্য বলেন, ‘সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল চালু করা একটা বড় চ্যালেঞ্জ।’ এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও সচিবের সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানান তিনি।
উপাচার্য বলেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আমার দায়বদ্ধতা আছে। আমি বিদেশ থেকে অভিজ্ঞ চিকিৎসক-ট্রেইনারদের নিয়ে এসে আমাদের চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করব। আশা করি, সেবায় প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের অন্যতম জায়গায় অবস্থান করবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়টিকে বিশ্বের অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা উপাচার্য হিসেবে তার একমাত্র অ্যাজেন্ডা বলে উল্লেখ করেন তিনি।
নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ইউনেস্কো ‘ট্রি অফ পিস’ পুরস্কার প্রদান করেনি বলে শিক্ষামন্ত্রীর দাবির একদিন পর এ বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছে ইউনূস সেন্টার।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে ইউনূস সেন্টার জানিয়েছে, ২০২৪ সালের ১৪-১৬ মার্চ প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে আজারবাইজানের বাকুতে অনুষ্ঠিত বাকু ফোরাম একাদশে বিশিষ্ট বক্তা হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, নিজামি গানজাভি ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার থেকে অধ্যাপক ইউনূসকে পাঠানো বাকু ফোরামের অফিশিয়াল অনুষ্ঠানসূচিতেও অধ্যাপক ইউনূস ইউনেস্কোর পুরস্কার গ্রহণ করবেন বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। অধ্যাপক ইউনূসকে বাকু ফোরামের সমাপনী নৈশভোজে যোগদানের বিষয়টি বিশেষভাবে মনে করিয়ে দেওয়া হয়, যাতে তিনি ‘ট্রি অফ পিস’ পুরস্কারটি গ্রহণের জন্য মঞ্চে সশরীর উপস্থিত থাকেন।
ইউনূস সেন্টার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইউনেস্কোর পুরস্কারের বিষয়টি উল্লেখ করে। অধ্যাপক ইউনূসকে প্রদত্ত ‘ট্রি অফ পিস’ ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত পদকের একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এর আগে ২০২৩ সালের জুনে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ইউনেস্কোর প্রধান কার্যালয় পরিদর্শনের সময় ইউনেস্কো এবং অধ্যাপক ইউনূস প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সংগঠন ইউনূস স্পোর্টস হাবের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার উদ্দেশ্য ছিল ইউনেস্কোর ফিট ফর লাইফ ফ্ল্যাগশিপের অধীন টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে উভয় প্রতিষ্ঠানের একসঙ্গে কাজ করে যাওয়া।
এর আগে বুধবার শিক্ষামন্ত্রী ও বাংলাদেশ ইউনেস্কো কমিশনের চেয়ারম্যান মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, “নোবেল বিজয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে ইউনেস্কো ‘ট্রি অফ পিস’ পুরস্কার দেয়নি।”
তিনি বলেন, “আজারবাইজানের গঞ্জাভি ফাউন্ডেশনের আমন্ত্রণে ড. ইউনূসকে ইসরাইলের একজন ভাস্কর ‘ট্রি অফ পিস’ পুরস্কারে ভূষিত করেন।”
ইউনেস্কো থেকে পুরস্কার পেয়েছেন বলে ড. ইউনূস যে দাবি করেছেন তা অসত্য বলে দাবি করেন মন্ত্রী।
আরও পড়ুন:শান্তিতে নোবেলজয়ী হয়েও ড. ইউনূস ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার পক্ষ নিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, হত্যাযজ্ঞে নিশ্চুপ থেকে এবং একজন ইসরায়েলির দেয়া পুরস্কার নিয়ে ড. ইউনূস প্রকারান্তরে গণহত্যায় সমর্থন দিয়েছেন। আর ইউনূস সেন্টার এটিকে ইউনেস্কোর পুরস্কার উল্লেখ করে মিথ্যাচার করছে, যা খুবই দুঃখজনক।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৃহস্পতিবার মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘ইউনূস সেন্টারের মিথ্যাচারে আমি বিষ্মিত, হতবাক। সম্প্রতি আজারবাইজানের বাকুতে একটি সম্মেলনে মিজ হেদভা সের নামে একজন ইসরায়েলি ভাস্বর ড. ইউনুসকে একটি পুরস্কার দিয়েছেন। এ সম্মেলনে ইউনেস্কো কোনোভাবে জড়িত ছিল না।
‘এই পুরস্কার ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে তো নয়ই, একজন ব্যক্তির পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে। আর ইউনূস সেন্টার সেটিকে ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে বলে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার করেছে। তবে এটিই প্রথম নয়, এর আগেও এ ধরনের মিথ্যাচার ইউনূস সেন্টারের পক্ষ থেকে করা হয়েছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ড. ইউনূস শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। ওদিকে গাজায় আজ নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ চলছে, নারী ও শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে। এ নিয়ে তিনি একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি, প্রতিবাদ করেননি।
‘বরং এই সময়ে তিনি একজন ইসরায়েলির কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেছেন। এর অর্থ কি এটাই নয় যে ড. ইউনূস প্রকারান্তরে গণহত্যায় সমর্থন দিয়েছেন? এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।’
সীমান্ত হত্যায় বিজিবি’র মাধ্যমে প্রতিবাদ
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২৫ মার্চ মধ্যরাতে লালমনিরহাট ও ২৬ মার্চ ভোরে নওগাঁ সীমান্তে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হওয়ার ঘটনায় বিজিবি’র মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানো এবং সীমান্তে পতাকা বৈঠকও হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা অনেকদিন ধরেই ভারতের সঙ্গে আলোচনা করে আসছি। সম্প্রতি ভারত সফরেও এ নিয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকগুলোতে গুরুত্বসহ আলোচনা করেছি। সেই প্রেক্ষিতে সীমান্তে এখন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নন-লেথাল বা প্রাণঘাতী নয় এমন অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। রাবার বুলেটে অনেকে আহত হন; কিন্তু প্রাণহানি কমে এসেছে। তবে আমাদের লক্ষ্য প্রাণহানিকে শূন্যের কোটায় নিয়ে আসা।’
নাবিক ও জাহাজ উদ্ধারে নানামুখী তৎপরতা চলছে
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সোমালি জলদস্যুদের কবল থেকে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর নাবিকদের নিরাপদে উদ্ধার ও জাহাজটিকে মুক্ত করাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য।’
তিনি বলেন, ‘জাহাজ সম্পর্কে শুধু এটুকু বলতে চাই, নাবিকদের মুক্ত করার জন্য আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগে আছি। আমরা নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছি। আমরা অনেকদূর এগিয়েছি।’
জাহাজে খাদ্য সংকট নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, জাহাজটিতে খাদ্য সংকট নেই। এর আগে তিন মাস ধরে জলদস্যুদের কবলে থাকা অন্য জাহাজেও খাদ্য সংকট ছিল না।
আরও পড়ুন:ঈদের পর সমাধান করা হবে- স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এমন আশ্বাসে এক মাসের জন্য আন্দোলন থামালেন বেতন-ভাতা বাড়ানো ও বকেয়া ভাতা পরিশোধসহ চার দফা দাবিতে কর্মবিরতি কর্মসূচি পালনকারী পোস্ট গ্রাজুয়েট ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চিকিৎসকরা যে দাবিগুলো করেছেন সেগুলো যৌক্তিক। চিকিৎসকরা হাসপাতালকে বাঁচিয়ে রাখে। তাদের বেতন বাড়ানোর বিষয়ে আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, চিকিৎসকদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন হবে। তারা কাজে যোগদান করুক।’
বিষয়টি কতদিনে বাস্তবায়িত হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কিছুদিন তো লাগবেই। তবে ঈদের পর হয়তো বলতে পারব, কতদিনের মধ্যে বেতন বাড়বে।’
এর আগে গত শনিবার (২৩ মার্চ) চার দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানববন্ধন করেন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
আগামী মাসে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির বাংলাদেশ সফরে কিছু বিষয়ে গুরুত্ব পাবে বলে ইউএনবিকে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র।
ওই সূত্র বার্তা সংস্থাটিকে জানায়, শেখ তামিমের সফরে জনশক্তি, জ্বালানি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বৃহত্তর সহযোগিতার মাধ্যমে বিদ্যমান সম্পর্ক আরও জোরদার করতে চায় উভয় দেশ।
কাতারের আমিরের সফরে দুই দেশের মধ্যে প্রায় ডজনখানেক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও চুক্তি চূড়ান্ত করার বিষয়ে আলোচনা চলছে জানিয়ে সূত্রটি বলেছে, সফরকালে এসব এমওইউ ও চুক্তি সই করা হবে।
ইউএনবির প্রতিবেদনে বলা হয়, কাতারের আমিরের দুই দিনের সফরটি হতে পারে আগামী ২১ থেকে ২২ এপ্রিল।
বার্তা সংস্থাটি জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আমিরের বৈঠকের পর যেসব এমওইউ ও চুক্তি সই হবে, সেগুলো নিয়ে দুই পক্ষ এখন কাজ করছে। সফরের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে আন্তমন্ত্রণালয় সভা করেছে।
গত বছরের মার্চে কাতারের রাজধানী দোহায় স্বল্পোন্নত দেশগুলোর বিষয়ে জাতিসংঘের সম্মেলন এলডিসি-৫-এর পার্শ্ববৈঠকে কাতারের আমির শেখ তামিমের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ওই বৈঠকে কাতারের কাছে বিশেষ করে এলএনজি সরবরাহে সহযোগিতার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
১৯৭৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনের পর একই বছরের ৪ মার্চ বাংলাদেশকে সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় কাতার।
১৯৭৫ সালের ২৫ জুন দোহায় বাংলাদেশ তার কূটনৈতিক মিশন চালু করে। ১৯৮২ সালে ঢাকায় কূটনৈতিক মিশন খোলে কাতার।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য