মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণের লক্ষ্যে ২৫ বছর আগে সেগুনবাগিচায় ছোট্ট পরিসরের একটি ভাড়া বাড়িতে একেবারে ব্যক্তি পর্যায়ের উদ্যোগে যাত্রা শুরু হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের।
একেবারে সূচনালগ্নে বহু মানুষ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন স্মৃতিরক্ষার এই উদ্যোগে। ছোট-বড় নানা সহযোগিতা এই প্রতিষ্ঠানটিকে সার্থকতা দিয়েছিল যাত্রার শুরুর দিন থেকেই।
এরপর আগারগাঁওয়ে স্থায়ী ভবন নির্মাণে তহবিল সংগ্রহের জন্য ১০ হাজার টাকায় প্রতীকী ইট কিনতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কর্তৃপক্ষ। এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে হাজারের বেশি প্রতীকী ইট কিনে নেয় স্কুলশিক্ষার্থীসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ।
আগারগাঁওয়ে প্রায় তিন বিঘা জায়গার ওপর তিনটি বেজমেন্ট ও পাঁচটি ফ্লোর নিয়ে জাদুঘরের স্থায়ী ভবন নির্মাণে ব্যয় হয় শত কোটি টাকার বেশি, যার অর্ধেকের জোগান আসে এসব সাধারণ মানুষের কাছ থেকেই।
এভাবেই বাংলাদেশের অগণিত মানুষের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহায়তায় বিস্মৃতির বিরুদ্ধে স্মৃতির ধারক ও বাহক হয়ে ওঠার নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
নির্মাণ কাজ ও আনুসঙ্গিক প্রস্তুতি শেষ হওয়ার পর ২০১৭ সালের ১৬ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অত্যাধুনিক ও নান্দনিক স্থাপত্যশৈলীর ভবনটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এই জাদুঘরে চারটি স্থায়ী গ্যালারি আছে। যার প্রতিটির আয়তন ২১ হাজার স্কয়ার ফুট। চারটি গ্যালারিতে তুলে ধরা হয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের নানা দিক, স্মৃতিচিহ্ন; সেখানে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বাঙালি জাতির হাজার বছরের এবং মুক্তিযুদ্ধের সময়ের মূল্যবোধের নানা দিক।
দুটি অস্থায়ী গ্যালারিও রয়েছে জাদুঘরে, যার একটিতে কোনো গ্যালারিতে স্থান না পাওয়া স্মৃতিস্মারক রাখা হয়েছে। আরেকটিতে আছে পৃথিবীর নানা দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস।
কথা হয় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি মফিদুল হকের সঙ্গে। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ট্রাস্টি বোর্ড স্থায়ী ভবন নির্মাণের সময় একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, স্বদেশের অর্থায়নেই এই জাদুঘর নির্মিত হবে। যে কারণে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য কোনো বিদেশি সহযোগিতা নেয়া হয়নি। এই কাজে দেশের মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই ছিল আমাদের লক্ষ্য।’
এ ব্যাপারে জাদুঘরের ব্যবস্থাপক (কর্মসূচি) রফিকুল ইসলাম জানান, ‘মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টিরা প্রথম থেকেই সচেষ্ট ছিলেন প্রতিষ্ঠানটিকে সার্বজনীন করে তুলতে। যে কারণে তারা সবসময় জাদুঘরের সঙ্গে জনসাধারণের একটি যোগসূত্র তৈরির চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। এভাবেই মূল্যবান স্মারক থেকে শুরু করে বিপুল অর্থদানের ভেতর দিয়ে জনগণ এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছে। দেহাবশেষ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদদের ব্যবহৃত সামগ্রী, অস্ত্র, দলিল, চিঠিপত্র ইত্যাদি মিলিয়ে ১৭ হাজারের বেশি নিদর্শন এখন এই জাদুঘরের সংগ্রহে আছে।’
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রচলিত ধারার কোনো জাদুঘর নয়। এখানে নানা আয়োজনের ভেতর দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বহুমাত্রিক কর্মযজ্ঞ তুলে ধরা হয়েছে। এ কাজেও বিভিন্ন সময় সহায়তার উন্মুক্ত হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন দেশের বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী ও শিল্পীরা।
এভাবেই সময় পরিক্রমায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর পরিণত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের সর্ববৃহৎ সংগ্রহশালায়। এর মধ্যে শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধাদের অমূল্য স্মারকের বাইরেও আছে একাত্তরের দেশ-বিদেশের সংবাদপত্র এবং জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের অবমুক্ত দলিলাদি।
এসবের বাইরে নতুন প্রজন্মের মনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগিয়ে রাখা এবং যুদ্ধের ইতিহাসের সঙ্গে তাদের পরিচয় করিয়ে দিতে কিছু কর্মসূচিও চালিয়ে যাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। এর মধ্যে অন্যতম মুক্তিযুদ্ধের কথ্য ইতিহাস সংগ্রহ।
জাদুঘরের ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম জানান, ২০০৯ সাল থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচির আওতায় দেশের প্রতিটি জেলার স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ এলাকার মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধে হতাহতের শিকার পরিবারের সদস্য, স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে তাদের অভিজ্ঞতা শুনে লিখে পাঠিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে। এতে ৬৪ জেলার ১৫ হাজার স্কুলের ১ লাখের বেশি শিক্ষার্থী ৪০ হাজারের বেশি প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্য লিখে পাঠিয়েছে। যা সংরক্ষিত আছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে।
এ ছাড়া ১৯৯৭ সাল থেকে চালু হওয়া আউটরিচ কর্মসূচির আওতায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জাদুঘরে আনা হয়। তারা জাদুঘর পরিদর্শন করে। একটি করে প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়। কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। বিজয়ীদের পুরস্কার দেয়া হয়। এই কর্মসূচিতেও সব মিলিয়ে হাজারখানেক স্কুলের দুই লাখের বেশি শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। এর সঙ্গে আছে জেলায় জেলায় ঘুরে ভ্রাম্যমাণ জাদুঘরের কার্যক্রম।
আধুনিক সময়ের সহযাত্রী
এদিকে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গেও নিজেদের খাপ খাইয়ে নিচ্ছে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ। অন্যতম ট্রাস্টি মফিদুল হক যেমন বললেন, ‘আমাদের প্রোগ্রামগুলো এখন সব অনলাইনে চলে যাচ্ছে। এতে করে নাম্বার অব ভিউয়ার বেড়েছে। একটা প্রদর্শনী করলে আগে যে পরিমাণ দর্শক হতো, তা অনেক বেড়েছে। কিন্তু আবার আমরা পারসন টু পারসন কন্ট্রাক্টটা মিস করছি। ওটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই ভবিষ্যতে দুটোই থাকবে।’
এ ছাড়া কিছু দিনের মধ্যেই ঘরে বসে জাদুঘরের বিভিন্ন স্মারক ও কার্যক্রম পরিদর্শনের জন্য ভার্চুয়াল ট্যুর চালু করার পরিকল্পনার কথাও জানান মফিদুল হক। বলেন, ‘যে কোনো ধরনের জাদুঘরের জন্য কমিউনিটি ইনভলবমেন্টটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমরা সব সময়ই এ ব্যাপারে সচেষ্ট থাকার চেষ্টা করেছি। যার ফলাফল হিসেবেই হয়তো একটা ছোট্ট পরিসর থেকে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর আজ একটা মহিরুহে পরিণত হয়েছে।’
একই সঙ্গে ১৯৯৬ সালে যে ভাবনা থেকে এমন একটা জাদুঘর নির্মাণের স্বপ্ন তারা দেখেছিলেন, সে বিষয়েও কথা বলেন এই লেখক। বলেন, ‘তখন তো একটা কৃষ্ণ সময়। নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ঠিকঠাক পৌঁছাচ্ছিল না। ইতিহাস সংরক্ষণেরও কোনো কাজ হচ্ছিল না। সে জন্যই আমাদের মনে হয়েছিল, এই চাহিদাতো কোনো সরকার পূরণ করতে পারবে না। সবা বিভ্রান্তির মধ্যেই থাকবে। তখন মনে হয়েছিল একটা উদ্যোগ যদি নেয়া যায় সমাজের পক্ষে, নাগরিকদের পক্ষে।’
গত ২২ মার্চ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে লেখা এক নিবন্ধে প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেছেন আরেক ট্রাস্টি সারওয়ার আলী। সেখানে তিনি দেখিয়েছেন কীভাবে নানা প্রতিকূলতা অতিক্রম করে আপামর জনসাধারণকে সঙ্গে নিয়ে এমন একটা অসাধ্য সাধন করেছেন তারা।
সারওয়ার আলী লিখেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রতিষ্ঠার কয়েক বছর পর ব্রিটিশ হাইকমিশনের একজন ইতিহাসবিদ কর্মকর্তা জাদুঘর পরিদর্শনের পর এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানান, বিশ্বের বহু দেশে বেসরকারি উদ্যোগে উৎসাহী ব্যক্তিরা জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করেন, কিন্তু বহু ক্ষেত্রে প্রাথমিক উৎসাহে ভাটা পড়ে এবং অর্থাভাবে এ ধরনের জাদুঘর পাঁচ বছরের বেশি টেকে না। অধিকাংশ জাদুঘর বিত্তশালীদের ট্রাস্ট ফান্ড ও নিবেদিতপ্রাণ ট্রাস্টি ও কর্মকর্তাদের ওপর নির্ভরশীল। তদুপরি চ্যালেঞ্জ রয়েছে, বাংলাদেশে মতাদর্শগত কারণে সমাজে বিভক্তি গভীর ও বিস্তীর্ণ। সরকার পরিবর্তন হলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত ও পরিবর্তিত হয়। এ সত্য মেনেও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর তার ২৫ বছর পূর্ণ করছে।’
কুমিল্লা সদর উপজেলার কালীর বাজার ইউনিয়নের ধনুয়াখলা পূর্ব পাড়ার কমলাপুর সড়কের পশ্চিম পাশে বিদ্যুৎ কেন্দ্র সংলগ্ন এক মাদ্রাসা-মসজিদের নামে পরিচালিত কথিত রাজারবাগী অনুসারীদের কুফর ও শিরকি আকীদাভিত্তিক আস্তানা বন্ধের দাবিতে এলাকাবাসী প্রতিবাদে ফেটে পড়েছেন।
বুধবার (২৭ আগস্ট) সকাল ১০টায় উপজেলার ধনুয়াখলা বাজারে সর্বস্তরের তাওহীদি জনতার আয়োজনে এক প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল আয়োজন করা হয়। এতে বক্তারা বলেন, এলাকাবাসীর ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি চরম অবজ্ঞা দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে রাজারবাগী মতাদর্শে পরিচালিত এই ভণ্ড আস্তানা ইসলাম ধর্মের মৌলিক আকীদার পরিপন্থী কার্যকলাপে লিপ্ত রয়েছে।
বক্তারা আরো জানান, কুরআন ও সহীহ হাদীসভিত্তিক ইসলামি শিক্ষা ও চর্চার পরিবর্তে বিভ্রান্তিকর ও ভ্রান্ত আকীদা প্রচার করে মুসলিম সমাজে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে এই চক্র। এতে নতুন প্রজন্মের ধর্ম থেকে বিচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।প্রতিবাদ সভায় তাওহীদি জনতার পক্ষে বক্তারা দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেন এবং এই ভ্রান্তপথগামী গোষ্ঠীর কার্যক্রম বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।মুফতি শামসুল ইসলাম জিলানীর সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিলে বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা
আদর্শ সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল কাইয়ুম, সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম রায়হান, জামাতে ইসলামীর নায়েবে আমীর আব্দুল্লাহ আল মামুন, কালীর বাজার ইউপির চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম সিআইপি, কুফর শিরক প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি হাফেজ আহমদ। এছাড়া স্থানীয় নেতৃবৃন্দও বক্তব্য রাখেন।
নেত্রকোণা ব্যাটালিয়ন (৩১ বিজিবি) ভারত সীমান্ত এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে ইয়াবা, বিয়ার ও মোবাইল ফোনসহ একজন মাদক কারবারিকে আটক করেছে।আটককৃত মাদক কারবারি হলেন ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়া উপজেলার ১ নং দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের উত্তর মাইজপাড়া গ্রামের মৃত মমতাজ উদ্দিনের ছেলে মো. নজরুল ইসলাম উরফে আবুনী (৩০)। নেত্রকোণা ব্যাটালিয়ন (৩১ বিজিবি)-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এ এস এম কামরুজ্জামান মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিকদের কাছে প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, নিজস্ব গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়া উপজেলার চারুয়াপাড়া বিওপির একটি টহল টিম সোমবার দিবাগত রাতে ১ নং দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের উত্তর মাইজপাড়া এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে ২৩ পিছ ইয়াবা, ১ পিছ বিয়ার ও ২টি মোবাইল ফোনসহ নজরুল ইসলাম উরফে আবুনীকে আটক করে। আটককৃত ব্যক্তিকে আলামতসহ ধোবাউড়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলায় সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শুরু হলো।
বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ আজ এই মামলায় সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
এরপর আবু সাঈদকে গুলি করার দুটি ভিডিও ট্রাইব্যুনালে প্রদর্শন করা হয়। এ সময় ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন মনিটরে ছেলেকে গুলির দৃশ্যের ভিডিও দেখে বার বার চোখ মুছছিলেন।
এরপর প্রসিকিউসনের আবেদনে আগামীকাল এই মামলায় প্রথম সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।
গত ৩০ জুলাই প্রসিকিউসনের পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এই মামলায় অভিযোগ গঠনের প্রার্থনা করেন।
অন্যদিকে, আসামী পক্ষে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চাওয়া হয়।
এরপর গত ৬ আগস্ট ট্রাইব্যুনাল এই মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য ২৭ আগস্ট দিন ধার্য করেন।
এই মামলার যে ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ আনা হয়, তাদের মধ্যে গ্রেফতার ৬ জন আজ ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন।
এরা হলেন-বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, সাবেক সহকারী রেজিস্ট্রার রাফিউল হাসান রাসেল, রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের চুক্তিভিত্তিক সাবেক কর্মচারী মো. আনোয়ার পারভেজ, পুলিশের সাবেক সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন, সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা ইমরান চৌধুরী ওরফে আকাশ।
আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত ৩০ জুন ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন যখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল, তখন ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে গুলিবিদ্ধ হন আবু সাঈদ।
২৫ বছর বয়সী আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নিরস্ত্র আবু সাঈদের পুলিশ কর্তৃক গুলিবিদ্ধ হওয়ার ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে, সারা দেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদেই সোচ্চার হন বহু মানুষ, যাতে আরও গতিশীল হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন।
ওই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে আওয়ামী লীগ সরকার, তার দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত করে বলে, একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে।
জাজ্জ্বল্যমান এসব অপরাধের বিচার এখন অনুষ্ঠিত হচ্ছে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) আগামীকাল বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে এক ব্রিফিংয়ে সচিব সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘আমরা যে কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) করেছি, সে কর্মপরিকল্পনাটা আপনাদের জানাবো। আমি ঢাকার বাইরে থাকায় একটু পিছিয়ে পড়েছি। এটা আমার টেবিলে এখন আছে। আগামীকাল পর্যন্ত একটু অপেক্ষা করেন।’
এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব আজ এক বৈঠকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) অনুমোদন করেছে কমিশন।
এখন যেকোনো সময় নির্বাচনের এই রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হতে পারে বলে ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে একজন নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘কর্মপরিকল্পনার সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে গেছে। অনুমোদন হয়েছে, এখন শুধু টাইপিং চলছে।’
উল্লেখ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইসির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে দল নিবন্ধন, সীমানা নির্ধারণ, নির্বাচন পর্যবেক্ষক, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংস্কার, বিধিমালা ও নীতিমালা জারি, প্রবাসীদের জন্য আইটি সাপোর্টেড নিবন্ধন ও পোষ্টাল ব্যালট পদ্ধতি ও নির্বাচনী সরঞ্জাম কেনাকাটা বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে রোডম্যাপে।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার সোনামুখী ইউনিয়নের চকরঘুনাথ বালুদিয়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চুরির ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে চোরেরা বিদ্যালয়ের দুটি কক্ষের তালা কেটে আটটি সিলিং ফ্যান ও শিক্ষার্থীদের খেলাধূলার জন্য রাখা ফুটবলও নিয়ে গেছে। বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষের আলমারির তালা ভেঙে কাগজপত্রও তছনছ করেছে। আজ বুধবার সকালে থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছে। এদিকে সেলিং ফ্যান চুরি হওয়ায় আজ বুধবার বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা প্রচন্ড গরমে ভোগান্তির শিকার হন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পবিত্র কুমার বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে নৈশপ্রহরি নেই। আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে বিদ্যালয়ে এসে দেখি, অফিস কক্ষ ও পাশের শ্রেণিকক্ষের দরজার হ্যাজবল কাটা রয়েছে। দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে দেখি, দুই ঘরের আটটি ফ্যান খুলে নিয়ে গেছে। অফিস কক্ষের ভেতরে রাখা স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য খেলাধুলা করার চারটি ফুটবলসহ অন্যান্য জিনিত্রপত্রও চুরি হয়েছে। বিষয়টি থানা পুলিশকে জানিয়েছি। পুলিশ এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিদ্যালয়ে ফ্যান না থাকায় সবার অনেক কষ্ট হচ্ছে।
পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী জান্নাতুন আক্তার বলে, আমাদের শ্রেণিকক্ষের চারটি ফ্যান চুরি হয়েছে। গরমের মধ্য ক্লাসে বসে থাকতে গা ঘেঁমে যাচ্ছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান মজনু বলেন, প্রধান শিক্ষক আমাকে বিদ্যালয়ের চুরির ঘটনাটি জানিয়েছেন। আমি বিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। দুটি কক্ষের মোট ৮ টি ফ্যান ও কিছু খেলাধুলার সামগ্রি চুরি হয়েছে। বিদ্যালয়টি নতুন জাতীয়করণ হওয়ায় ওই বিদ্যালয়ে কোন নৈশপ্রহরি নেই।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
নোয়াখালীর হাতিয়ায় নৌ-অ্যাম্বুলেন্সের সংকটে একের পর এক রোগীর মৃত্যু ঘটছে। দ্বীপ উপজেলা হওয়ায় মূল ভূখণ্ডে দ্রুত চিকিৎসার জন্য নৌ-অ্যাম্বুলেন্সই একমাত্র ভরসা। কিন্তু যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ ও ড্রাইভার না থাকায় জরুরি সময়ে রোগীরা সঠিক সেবা পাচ্ছেন না। ঘাটেই পড়ে আছে দুটি নৌ এম্বুলেন্স।
সম্প্রতি প্রসব জটিলতায় ভোগা এক নারী এবং হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত এক বৃদ্ধ নৌ-অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে মৃত্যুবরণ করেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের কাছে বহুবার লিখিত ও মৌখিকভাবে নৌ-অ্যাম্বুলেন্স সচল করার দাবি জানানো হলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান সিভিল সার্জন শুধু আশ্বাসই দিয়ে যাচ্ছেন।
একজন স্থানীয় শিক্ষক বলেন, “প্রতিবার মৃত্যু ঘটলেই আশ্বাস দেওয়া হয়, কিন্তু স্থায়ী কোনো সমাধান আসে না। দ্বীপে থাকা মানে যেন মৃত্যুকে বরণ করার জন্য অপেক্ষা করা।”
নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার ৭ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা প্রায় ভাগ্যের ওপর নির্ভরশীল। এখানে রয়েছে মাত্র ৫০ শয্যার একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। নেই পর্যাপ্ত ডাক্তার-নার্স, নেই কোনো আধুনিক যন্ত্রপাতি। ফলে প্রতিমাসে ৬০ থেকে ৭০ জন গুরুতর রোগীকে নিতে হয় জেলা সদর হাসপাতালে। আরও শতাধিক মানুষ উন্নত চিকিৎসার জন্য নিজের উদ্যোগে সদর হাসপাতালে যান। কিন্তু এই দীর্ঘ যাত্রা হয়ে ওঠে জীবন-মরণ ঝুঁকির আরেক নাম। বাসিন্দাদের জরুরি প্রয়োজনে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেয়া রয়েছে দুটি নৌ অ্যাম্বুলেন্স। তবে দুটি অ্যাম্বুলেন্সই বিকল হয়ে পড়ে আছে বছরের পর বছর।
জানা গেছে, রোগীদের জন্য ২০১৯ সালে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে আনা হয়েছিল একটি নৌ অ্যাম্বুলেন্স। কিন্তু অল্পদিন চলার পরই সেটি বিকল হয়ে পড়ে আছে নদীর পাড়ে। পরে ২০২২ সালে জাইকার সহায়তায় আসে আরেকটি আধুনিক নৌ অ্যাম্বুলেন্স। প্রথম বছর সেটি মানুষের মনে আশার আলো জাগালেও চালক, জ্বালানি আর রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেটিও এখন দুই বছর ধরে অচল অবস্থায় বাঁধা আছে নদীর তীরে। কোটি টাকার এই দুই নৌ অ্যাম্বুলেন্সে আজ মরিচা ধরছে, অথচ হাতিয়ার অসহায় মানুষগুলো প্রতিদিন কাঠের নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হচ্ছেন।
দ্বীপের বাসিন্দা আয়াত খান জুয়েল বলেন, আমাদের পেশা হচ্ছে মাছধরা ও কৃষি। ট্রলারে করে নদী পার হয়ে যেতে সময় লাগে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। কেউ গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে মাইজদী নেয়া যায় না। অন্যদিকে সময়মতো ট্রলারও পাওয়া যায় না। আমাদের দুর্দশার শেষ নেই। আমরা গরিব মানুষ তাই বাধ্য হয়েই ট্রলারে যাই। সরকারি নৌ অ্যাম্বুলেন্স আমাদের কাজে আসেনি।
নলচিরা ঘাটের বাসিন্দা আবু সালেহ বলেন, নোয়াখালীর দ্বীপ এলাকার মানুষের জন্য নৌ-অ্যাম্বুলেন্স শুধু একটি যান নয়, বরং জীবন বাঁচানোর শেষ ভরসা হতে পারত। কিন্তু সেই ভরসা ভেঙে পড়েছে। অনেক মা ঘাটেই সন্তান জন্ম দিয়েছেন, অনেকে নদীর ঢেউয়ের সঙ্গে জীবন হারিয়েছেন। যদি নৌ-অ্যাম্বুলেন্স সচল থাকত, তাহলে হয়তো আজ অনেক প্রাণ আমাদের মাঝে বেঁচে থাকত।
স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম আক্ষেপ করে বলেন, অ্যাম্বুলেন্সের শুধু নাম আছে, সেবা নেই। অথচ রাতে যখন কোনো রোগী আসে, তখন জীবনের ঝুঁকি নিয়েই কাঠের নৌকায় উঠতে হয়। নদীর ঢেউ আর আঁধারের ভেতর সময়মতো হাসপাতালে পৌঁছানো যায় না। আর সেই দেরির কারণেই হারিয়ে যায় অসংখ্য জীবন।
তিন বছর নৌ অ্যাম্বুলেন্স চালানো স্পিডবোট চালক জাকের হোসেন কালু বলেন, আমি দিনে পাঁচ-সাতজন রোগী পার করেছি। কত মা আমার বোটেই সন্তান জন্ম দিয়েছেন, কত মানুষের কান্না দেখেছি আমি। কিন্তু কোনো বেতন-ভাতা না থাকায় সেই কাজটিই ছেড়ে দিতে হয়েছে। এখনো বুক ভরে আফসোস করি, যদি থাকতে পারতাম? হয়তো অনেক প্রাণ বাঁচানো যেত।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মানসী রানী সরকার বলেন, অত্যন্ত দুঃখজনক যে একটি নৌ-অ্যাম্বুলেন্স অনেক আগেই বিকল হয়ে গেছে, আরেকটি চালকের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ পড়ে আছে। আমরা ইতোমধ্যে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। দ্রুত লোকবল নিয়োগ দেওয়া হলে আবারও এই জীবন বাঁচানোর সেবা চালু করা সম্ভব হবে। যা দ্বীপের হাজারো অসহায় মানুষের জন্য আশার আলো হয়ে উঠতে পারে।
নোয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. মরিয়ম সিমি দৈনিক বাংলাকে বলেন, হাতিয়ার নৌ এম্বুলেন্স ড্রাইভার না থাকায় বন্ধ থাকে। মাঝমাঝে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চলে। আইএসও প্রজেক্ট চালু হলে এটার সুরাহা হবে। তবে কবে নাগাদ এ সেবা সচল হবে, তার সুনির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা তিনি দিতে পারেননি।
রাজধানীর জোয়ার সাহারা মৌজায় দুটি মসজিদ ও একটি মন্দিরের জন্য জমি বরাদ্দ প্রদান করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
বুধবার (২৭ আগস্ট) রেলভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে উক্ত মসজিদ ও মন্দিরের পরিচালনা কমিটির নিকট বরাদ্দপত্র তুলে দেন ঢাকার বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার মো: মহিউদ্দিন আরিফ।
বরাদ্দপ্রাপ্ত মসজিদ ও মন্দিরের মধ্যে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানাধীন জোয়ার সাহারা মৌজায় খিলক্ষেত রেলওয়ে জামে মসজিদের জন্য ০.২০১১ একর (৮৭৬০ বর্গফুট), একই মৌজায় আন-নূর-জামে মসজিদের জন্য ০.০৫৫২ একর (২৪০৫ বর্গফুট) এবং খিলক্ষেত থানাধীন একই মৌজায় খিলক্ষেত সার্বজনীন শ্রী শ্রী দূর্গা মন্দিরের জন্য ০.০৫৬২ একর (২৪৫০ বর্গফুট) জমি বরাদ্দ প্রদান করা হয়। বাংলাদেশ রেলওয়ের নির্ধারিত প্রতীকী মূল্যের বিনিময়ে এসব জমি বরাদ্দ প্রদান করা হয়।
বরাদ্দপত্র হস্তান্তরের জন্য আয়োজিত এ অনু্ষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারি ড. শেখ মইনউদ্দিন, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: ফাহিমুল ইসলাম, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো: আফজাল হোসেন, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব এড. গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, মসজিদ ও মন্দির সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, খিলক্ষেত এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, বাংলাদেশ ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ। ইসলাম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সকল ধর্মেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার কথা বলা হয়েছে। কেউ এই সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করলে তাকে কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না। তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রেলওয়ের জমি মসজিদ ও মন্দিরকে বরাদ্দ দেওয়াকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির হিসেবে উল্লেখ করে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের রোল মডেল। তারপরও বিভিন্ন সময়ে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে থাকে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান কিংবা উপাসনালয়গুলোকে যারা অপবিত্র করতে চায় তাদের ধর্মীয় কোন পরিচয় নেই, তারা দুষ্কৃতকারী, ক্রিমিনাল। তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের বেহাত হয়ে যাওয়া দেবোত্তর সম্পত্তি যেগুলো নিয়ে আদালতে কোন মামলা-মোকদ্দমা নেই এরূপ সম্পত্তি উদ্ধারে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বাংলাদেশ রেলওয়ের এই উদ্যোগের ভুয়সী প্রশংসা করেন। বরাদ্দপত্র হস্তান্তর শেষে একটি প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। ব্রিফিং শেষে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
মন্তব্য