ফারমার্স ব্যাংক থেকে ৪ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আরও একজন সাক্ষ্য দিয়েছেন আদালতে।
বৃহস্পতিবার সাক্ষ্য দিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দুদকের পরিচালক বেনজীর আহমেদ। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক শেখ নাজমুল আলমের আদালতে তিনি সাক্ষ্য দেন।
এদিন তার সাক্ষ্য শেষ না হওয়ায় ১ এপ্রিল পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ঠিক করে আদালত।
মামলার এখন পর্যন্ত ২১ সাক্ষীর মধ্যে ২০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে।
গত বছর ১৩ আগস্ট সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম।
এ বছর ২০ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ-৪-এ বদলির আদেশ দেন।
গত বছরের ১০ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দুদকের পরিচালক বেনজীর আহমেদ।
এর আগে ৪ ডিসেম্বর কমিশনের সভায় ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন দেয়া হয়।
মামলার আসামিদের মধ্যে ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেডের অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হক চিশতী (বাবুল চিশতী) কারাগারে আছেন। এ ছাড়া ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক এমডি এ কে এম শামীম, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. লুৎফুল হক, সাবেক এসইভিপি গাজী সালাহউদ্দিন, টাঙ্গাইলের বাসিন্দা মো. শাহজাহান ও একই এলাকার বাসিন্দা নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা জামিনে আছেন।
সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, ফারমার্স ব্যাংকের ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সাফিউদ্দিন আসকারী, রণজিৎ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী সান্ত্রী রায় পলাতক রয়েছেন।
এ মামলা থেকে মৃত হিসেবে প্রমাণ মেলায় চার্জশিট থেকে এক আসামির নাম বাদ দেয়া হয়েছে।
পরে নতুন করে আরেকজনের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
গত বছরের ১০ জুলাই দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকায় মামলাটি দায়ের হয়।
দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন এ মামলার বাদী।
ফারমার্স ব্যাংকের দুটি হিসাব থেকে ৪ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে জালিয়াতির ‘প্রমাণ’ পাওয়ার তথ্য গত বছরের অক্টোবরে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন দুদক চেয়ারম্যান।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে ৪ কোটি টাকা ঋণ পেয়েছিলেন কথিত ব্যবসায়ী শাহজাহান ও নিরঞ্জন।
সেই টাকা রণজিৎ চন্দ্র সাহার হাত ঘুরে বিচারপতি এস কে সিনহার বাড়ি বিক্রির টাকা হিসেবে দেখিয়ে তার ব্যাংক হিসাবে ঢুকেছে বলে অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্তে নামে দুদক।
দুদক আইনজীবী মীর আহমেদ আলী সালাম জানান, সিনহার বিরুদ্ধে গত বছরের জুলাই মাসে মামলা করে সংস্থাটি। মামলায় ফারমার্স ব্যাংক থেকে ভুয়া তথ্য দিয়ে অন্যের নামে ৪ কোটি টাকার ঋণ করেন এস কে সিনহা।
পরে তা এস কে সিনহার ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করার অভিযোগ পাওয়া যায়।
অভিযোগে বলা হয়, সেই ব্যাংক হিসাব থেকে পরবর্তী সময়ে টাকা স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে পাচার করা হয়েছে।
এদিকে দুদক বলছে, মামলার তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।
তাই সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তার সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে বিদেশে অবস্থানরত এস কে সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
তদন্ত শেষে নতুন করে আসামি হয়েছেন ফারমার্স ব্যাংকের নিরীক্ষা কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতী (বাবুল চিশতী)।
এর আগে মামলায় তার নাম ছিল না।
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় এবং কিছু পর্যবেক্ষণের কারণে তোপের মুখে ২০১৭ সালের অক্টোবরের শুরুতে ছুটিতে যান তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।
পরে বিদেশ থেকেই তিনি পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন। যা পরে গৃহীত হয়।
আরও পড়ুন:১৮ জুলাই ২০২৪ এ ইন্টারনেট শাট ডাউনের প্রতিবাদে এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস পালনের অংশ হিসেবে আজ শুক্রবার থেকে (১৮ জুলাই, ২০২৫) ৫ দিন মেয়াদে দেশের সব গ্রাহক বিনা মূল্যে ১ জিবি ইন্টারনেট ডেটা পাচ্ছেন।
১৮ জুলাই বিনা মূল্যে গ্রাহকদের ১ জিবি ইন্টারনেট দেওয়া যায় কি-না, সে বিষয়ে বিটিআরসি দেশের সব মোবাইল ফোন অপারেটরকে একটি প্রস্তাব দেয়।
দেশের সব মোবাইল অপারেটর স্বপ্রণোদিত হয়ে এই উদ্যোগে সাড়া দিয়ে নিজ নিজ গ্রাহকদের বিনা মূল্যে ৫ দিন মেয়াদে ১ জিবি ইন্টারনেট ডেটা ফ্রি দিচ্ছে।
বিটিআরসি’র নির্দেশনায় অপারেটররা গ্রাহকদের ফ্রি ডেটা দেওয়ার বিষয়টি আগেই এসএমএস-এর মাধ্যমে অবহিত করে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
আজ থেকে ৫ দিন মেয়াদে ১ জিবি ফ্রি ইন্টারনেট ডাটা পেতে নিজ নিজ মোবাইল অপারেটরের নির্ধারিত কোড ডায়াল করতে হবে গ্রাহকদের।
ডায়াল কোড-
গ্রামীণফোন: *১২১*১৮০৭#
বাংলালিংক: *১২১*১৮০৭#
রবি: *৪*১৮০৭#
টেলিটক: *১১১*১৮০৭#
বিজ্ঞপ্তিতে প্রেস উইং আরও জানায়, সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৭ জুলাই রাতে মুঠোফোনে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়।
পরদিন ১৮ জুলাই রাতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটও বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে দেশ পুরোপুরি ইন্টারনেটবিহীন হয়ে পড়ে।
সেই বিষয়টিকে মাথায় রেখেই গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে গ্রাহকদের বিনা মূল্যে ১ জিবি ইন্টারনেট ডেটা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে আগামীকাল শুক্রবার (১৮ জুলাই) ‘ফ্রি ইন্টারনেট ডে’ পালন করতে যাচ্ছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। এ উপলক্ষে দেশের সব মোবাইল ফোন গ্রাহককে ৫ দিন মেয়াদি ১ জিবি ইন্টারনেট সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম মনিরুজ্জামান।
তিনি জানান, ৩ জুলাই ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের নির্দেশনা এবং ৮ জুলাই বিটিআরসির ভাইস-চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে ৯ জুলাই মোবাইল অপারেটরদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এই নির্দেশনায় বলা হয়, ১৮ জুলাই তারিখে দেশের সব মোবাইল ফোন গ্রাহককে একবারের জন্য ৫ দিন মেয়াদি ১ জিবি ইন্টারনেট ফ্রি দিতে হবে।
যেভাবে পাবেন ফ্রি ইন্টারনেট
বিটিআরসি জানিয়েছে, ফ্রি ইন্টারনেট সুবিধা নিতে গ্রাহকদের নিজ নিজ অপারেটরের নির্ধারিত কোড ডায়াল করতে হবে।
এই কোড ডায়াল করলেই গ্রাহকরা নির্ধারিত ফ্রি ডেটা সংগ্রহ করতে পারবেন।
গোপালগঞ্জের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় আগামীকাল ১৮ জুলাই শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারির সময় বাড়িয়েছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ কামরুজ্জামানের অফিস সূত্র বৃহস্পতিবার(১৭ জুলাই) বিকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তবে এ সময়ের মধ্যে দুপুর ১২টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে বলেও জানানো হয়েছে।
গোপালগঞ্জে বুধবার(১৬ জুলাই) জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির সমাবেশ পরবর্তী সংঘর্ষে নিহত চার জনের লাশ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পোষ্টমর্টেম ছাড়া নিয়ে গেছে উপস্থিত আপনজনেরা। গোপালগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালের পরিচালক ডা. জীবিতেশ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ডা. জীবিতেশ বলেন, হাসপাতালে আহতদের আনার পর এদের মধ্যে ৪ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেন চিকিৎসক। মৃত্যু নিশ্চিতের পরপরই উপস্থিত লোকজন জোর করেই লাশ নিয়ে যায়। কে বা কারা কার আত্বীয় বা আপনজন আমরা তা নিশ্চিত করতে পারিনি। কারণ ঐ সময় সে রকম পরিবেশ ছিল না।
গোপালগঞ্জে গ্রেপ্তার আতঙ্কের মধ্যে এখন পর্যন্ত বুধবারের সংঘর্ষে জড়িত থাকা সন্দেহে ২৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার মো মিজানুর রহমান।
তিনি বলেন, জেলার শান্তি শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে ও স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে আমাদের যা যা করণীয় সবই করা হবে। সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের কাউকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলে দৃড় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
বুধবারের সংঘসের ঘটনায় আহত বা নিহতের ঘটনায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি বলে জানা গেছে।
সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত মীর মো. সাজেদুর রহমান জানান, বুধবারের ঘটনায় আহত বা নিহত হওয়া কোনো পক্ষ থেকে বা কারো পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাইনি।
এদিকে বুধবারের হামলার প্রতিবাদে এনসিপির নেতাকর্মীরা দেশের বিভিন্ন স্থানে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও মহাসড়ক অবরোধ করেছিল। পরে দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম নিজের ভ্যারিফায়েড ফেসবুকে এক পোস্টে নেতাকর্মীদের অবরোধ তুলে নিতে বলেন এবং বৃহস্পতিবার সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
সরকার গোপালগঞ্জের হামলার ঘটনাকে অমার্জনীয় উল্লেখ করে ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। এছাড়া স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ওই হামলার ঘটনায় কাউকে ছাড় না দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে অপরাধীদের গ্রেপ্তারে সারা দেশে অভিযান অব্যাহত রাখার কথা বলেছেন। এখন পর্যন্ত ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
আগামী শনিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলের প্রথম সমাবেশ ১০ লাখেরও বেশি লোকের উপস্থিতির প্রত্যাশা নিয়ে সার্বিক প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এই সমাবেশের লক্ষ্য ‘শান্ত কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ’। ব্যাপক জনসমাগমের মাধ্যমে ‘একটি রাজনৈতিক আলোড়ন’ তৈরি করতে চায় দলটি।
বৃহস্পতিবার(১৭ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় সমাবেশের বিষয় তুলে ধরেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।
তিনি বলেন, ‘এই সমাবেশটি একটি ঐতিহাসিক মোড় হবে। আমরা আশা করছি ১০ লাখেরও বেশি মানুষ অংশগ্রহণ করবে। শুধু দলীয় কর্মীরাই নয়, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থার মধ্যে পরিবর্তনের দাবিদার সাধারণ মানুষও এতে অংশ নেবে।’
চলমান রাজনৈতিক বিতর্ক ও দলগুলোর মধ্যে বিভাজন তীব্রতর হওয়া সময় আসন্ন দলের সমাবেশে ‘স্মরণকালের জনসাধারণের উপস্থিতি’ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিজেদের প্রস্তুতি, পরিকল্পনা ও দাবির রূপরেখা তুলে ধরেন তিনি।
গোলাম পরওয়ার বলেন, জামায়াতের আমির ও অন্যান্য জ্যেষ্ঠ নেতারা ঢাকা এবং সারা দেশের সমর্থকদের জড়ো করার জন্য সরাসরি সাংগঠনিক কার্যক্রম তদারকি করছেন।
গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করার জন্য একটি বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং আটটি উপ-কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
তিনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সরকারকে অনুষ্ঠানটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করার জন্য নির্বাচনকালীন সময়ে একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য দলের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন গোলাম পরওয়ার।
সমাবেশ ঘিরে প্রস্তুতি
দলীয় নেতারা জানান, সমাবেশ সফল করার জন্য সারা দেশে প্রতিদিন পথসভা, সভা ও জনসংযোগ কর্মসূচির আয়োজন করা হচ্ছে।
গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আমাদের কর্মীরা এই সমাবেশের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সারা দেশে ঘরে ঘরে যাচ্ছেন।’
বিপুল সংখ্যক জনসমাগমের জন্য পরিবহন সুবিধার্থে, দলটি ট্রেন এবং লঞ্চের পাশাপাশি প্রায় ১০ হাজার বাস ভাড়া করেছে। বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকায় আসা যানবাহনের জন্য বিশেষ রুট পরিকল্পনা করা হয়েছে।
পড়ুন: হেলমেট বাহিনী নেই, পাথর বাহিনী এসেছে: ড. রেজাউল করিম
৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক
দলটি সমাবেশে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যও পদক্ষেপ নিয়েছে।
সমাবেশের সময় অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বজায় রাখতে, ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে এবং সরবরাহ সমন্বয় করতে ৬ হাজারেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন করা হবে।
ডিএমপির সঙ্গে বৈঠক
আইন-শৃঙ্খলা, পরিবহন এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের জন্য জামায়াতের সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ১৫ জুলাই বিকালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেছে।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপারেশনস) নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, পার্কিং ব্যবস্থা, সাউন্ড সিস্টেম স্থাপন এবং জননিরাপত্তার মতো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।
ভোটার তালিকা (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। এর মাধ্যমে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত ভোটার হওয়ার সুযোগ পাবেন যোগ্য নাগরিকেরা অর্থাৎ বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হলেই তিনি এই সুযোগ পাবেন।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) উপদেষ্টা পরিষদে খসড়াটি অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলন করে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ।
বর্তমানে প্রতি বছর ডিসেম্বরের মধ্যে যাদের বয়স ১৮ বছর হয় তাঁরা পরবর্তী জানুয়ারি মাসে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন।
ফয়েজ আহম্মদ বলেন, ‘বিদ্যমান যে ব্যবস্থা, তাতে বাংলাদেশের নাগরিকদের মধ্যে যেসব ব্যক্তি ভোটার হওয়ার উপযোগী—যারা শুধুমাত্র ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার আগের বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে বয়স ১৮ বছর হয়,তারা সেই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হন। প্রতি বছর ২ জানুয়ারি এ খসড়া তালিকা নির্বাচন কমিশন প্রকাশ করে এবং ২ মার্চ চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে। তাহলে দেখা যায়, পরবর্তী সময়ে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, সেটি অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে যেসব নাগরিক ১৮ বছর বয়সে পৌঁছান, তারা ওই নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন না। তারা এ তালিকা থেকে বাদ পড়ে যান। তাদেরকে পরবর্তী নির্বাচনের জন্য আবার অপেক্ষা করতে হয়। এই বাস্তবতায় নির্বাচন কমিশন মনে করে— নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে যে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রস্তুত রাখতে হয়, সেক্ষেত্রে তফসিল ঘোষণার আগে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে যারা ভোটার হবার উপযোগী হন, তাদেরকে ভোটার তালিকায় নিয়ে আসা’।
তিনি বলেন, ভোটার তালিকা (সংশোধন) অধ্যাদেশ অনুমোদন হওয়ায়-নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার অন্তত এক মাস আগ পর্যন্ত যেসব ব্যক্তির বয়স ১৮ বছর হবেন,তারা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সুযোগ পাবেন।
এছাড়া উপদেষ্টা পরিষদের সভায় ‘মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন করা হয়েছে। এতে করে অঙ্গ দানের ক্ষেত্রে দাতার পরিধি বাড়ানো হয়েছে বলে জানান প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, এর ফলে কিডনি প্রতিস্থাপনের কাজ দেশে আরও সহজ হবে। আন্তর্জাতিক আইন মেনে এটি করা হয়েছে। এছাড়া মৃত্যুর পর মরদেহ থেকে কীভাবে অঙ্গ সংগ্রহ করা যাবে এবং কীভাবে প্রতিস্থাপন করা যাবে, সে বিষয়েও বলা হয়েছে অধ্যাদেশে।
এদিকে, ‘বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সংশোধন)অধ্যাদেশ ২০২৫’ এর খসড়া লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের ভেটিং-সাপেক্ষে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম জানান,গোপালগঞ্জে সংঘটিত সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটি পুরো ঘটনা তদন্ত করবে। ঘটনা কেন হলো, কীভাবে মৃত্যুগুলো হলো-সব বিষয় দেখবে তদন্ত কমিটি। সহিংসতা কারা করলো সেটিও দেখা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর উপস্থিত ছিলেন।
ভোটার তালিকা (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ সহ তিনটি অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এসব অধ্যাদেশে অনুমোদন দেওয়া হয়।
এর ফলে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে যুক্তিসঙ্গত সময় পর্যন্ত যোগ্য ব্যক্তিরা ভোটার হিসাবে নিবন্ধিত হওয়ার সুযোগ উন্মুক্ত হলো।
বিদ্যমান আইন অনুযায়ী ২ জানুয়ারির পরে ভোটার হিসেবে যোগ্য হয়ে ওঠা তরুণরা পরবর্তী মাসগুলোতে, এমনকি পরবর্তী বছরের মার্চ পর্যন্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও তারা তাদের ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছিলেন না।
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘সভায় ভোটার তালিকা (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, উপদেষ্টা পরিষদ আরও দুটি খসড়া অধ্যাদেশ অনুমোদন করেছে—যা এখন আইনগত দিক যাচাই-বাছাই করা হবে।
খসড়া অনুমোদন পাওয়া অন্য দুটি অধ্যাদেশ হলো ‘মানব অঙ্গ প্রতিস্থাপন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এবং ‘বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’।
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা ঘিরে সহিংসতায় আত্মরক্ষার্থেই বলপ্রয়োগ করা হয়েছে। এছাড়া ওই এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, রাজনৈতিক সংগঠনের সমাবেশ চলাকালীন মঞ্চে পুনরায় হামলা চালানো হয় এবং একই সাথে জেলা কারাগারে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। এমতাবস্থায়, সেনাবাহিনী হামলাকারীদের মাইকে বারবার ঘোষণা দিয়ে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলে তারা সেনাবাহিনীর উপর বিপুল সংখ্যক ককটেল ও ইট-পাটকেল ছুড়ে হামলা করে এবং এক পর্যায়ে সেনাবাহিনী আত্মরক্ষার্থে বলপ্রয়োগে বাধ্য হয়।
‘পরবর্তীতে, সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ যৌথভাবে বিশৃঙ্খলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। অতঃপর, সেনাবাহিনীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে পুলিশ সুপারের কার্যালয়, গোপালগঞ্জে আশ্রয় গ্রহণকারী ব্যক্তিবর্গকে খুলনায় স্থানান্তর করা হয়। সর্বোপরি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পেশাদারিত্ব ও ধৈর্যের সাথে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।’
আইএসপিআর জানিয়েছে, বর্তমানে গোপালগঞ্জ জেলায় সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং প্রশাসন কর্তৃক জারিকৃত কারফিউ চলমান রয়েছে। সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র্যাব এবং প্রশাসনের অন্যান্য সংস্থাগুলো ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয় রেখে কাজ করে যাচ্ছে।
‘গতকাল সকাল হতে চলমান এই রাজনৈতিক সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলায়, গোপালগঞ্জ জেলার জনসাধারণ অত্যন্ত ধৈর্যের সাথে নিজেদের নিবৃত্ত রেখে সেনাবাহিনীকে সহায়তা করেছেন। গুজব বা অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে ধৈর্য ধারণ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য সর্বসাধারণকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব ও জননিরাপত্তা রক্ষায় সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
সংবাদবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গোপালগঞ্জ জেলায় একটি রাজনৈতিক দলের জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে আহ্বানকৃত জনসমাবেশকে কেন্দ্র করে এলাকার একদল উচ্ছৃঙ্খল জনতা গত ১৬ জুলাই সংঘবদ্ধভাবে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে কয়েকজন পুলিশ সদস্য ও সাংবাদিক আহত হন।
এছাড়াও, শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও সরকারি যানবাহনে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হওয়ায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও স্থানীয় পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে হস্তক্ষেপ করে এবং প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
মন্তব্য