মানব ও অর্থপাচার মামলায় কুয়েতে সাজাপ্রাপ্ত কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের শূন্য আসন লক্ষ্মীপুর-২ এ ভোটের তফসিল দিল নির্বাচন কমিশন।
আসনটিতে ভোট হবে আগামী ১১ এপ্রিল।
আগ্রহী প্রার্থীদেরকে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে ১৮ মার্চের মধ্যে। সেই মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই করা হবে ১৯ মার্চ। প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা যাবে ২৪ মার্চ পর্যন্ত।
আসনটিতে ভোট নেয়া হবে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমে।
বুধবার নির্বাচন কমিশনের সভা শেষে এই তফসিল ঘোষণা করেন কমিশন সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে এই আসনটিতে পাপুল অংশ নেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তার জোটের শরিক জাতীয় পার্টিকে সেটি ছেড়ে দিয়েছিল।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির নেতা মোহাম্মদ নোমান আসনটিতে জেতেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। পরের বার মহাজোটের মনোনয়ন পেয়েও ভোটের আগে আগে হঠাৎ করেই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। পরে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা পাপুলের পক্ষে কাজ করেন বলে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে আসে।
পাপুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলামও সংসদ সদস্য। তিনি সংরক্ষিত নারী আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন সংসদ সদস্যদের ভোটে।
জাতীয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র হিসেবে পাস করা সংসদ সদস্যরা আনুপাতিক হারে নারী আসনের একটি পদ পেয়েছিলেন এবং তারা সেখানে মনোনয়ন দেন পাপুলের স্ত্রীকে।
গত ২৮ জানুয়ারি কুয়েতের একটি আদালত পাপুলকে চার বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি বাংলাদেশি টাকায় ৫৩ কোটি টাকা জরিমানা করে।
সংবিধান অনুযায়ী ফৌজদারি মামলায় দুই বছরের সাজা হলে কেউ সংসদ সদস্য থাকতে পারবেন না। তবে পাপুল দেশের বাইরে সাজা পাওয়ায় তার সংসদ সদস্য পদ ফাঁকা হবে কি না, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠে।
যদিও ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে রায়ের কপি স্পিকার শিরীর শারমিন চৌধুরীকে পাঠানো হলে তিনি পাপুলের সংসদ সদস্য পদ বাতিল করে সংসদীয় আসনটি শূন্য ঘোষণার নির্দেশ দেন। পরে জাতীয় সংসদ সচিবালয় সেটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রকাশ করে।
পাপুলের বিরুদ্ধে কুয়েত আদালতে আরও বেশ কিছু মামলা আছে।
আরও পড়ুন:রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখার ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে নারীদের অংশগ্রহণে একটি উঠান বৈঠক, মুক্ত আলোচনা ও ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ করেছে উপজেলা মহিলা দল।
সোমবার বিকেলে উপজেলার বৈদ্দ্যেরবাজার ইউনিয়নের পঞ্চবটি এলাকার মতিউর রহমান হাইস্কুল প্রাঙ্গণে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী আজহারুল ইসলাম মান্নানের নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন উপজেলা বিএনপির মহিলাবিষয়ক সম্পাদক সালমা আক্তার কাজল।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আজহারুল ইসলাম মান্নানের ছেলে ও নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক খাইরুল ইসলাম সজিবের সহধর্মিণী সাদিয়া ইসলাম জুঁই।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বোন মারিয়া ইসলাম মুন্নি। তারা সভায় এলাকার সাধারণ নারীদের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় করেন।
সাদিয়া ইসলাম জুঁই বলেন, আজকের নারী শুধু সংসার সামলায় না, দেশও সামলায়। আমরা চাই এমন বাংলাদেশ, যেখানে আমাদের সন্তানরা নিরাপদ থাকবে, যেখানে ভোট দিতে পারব নিজের ইচ্ছায়, যেখানে ন্যায়ের শাসন ফিরবে। বিএনপি সেই স্বপ্নের রাজনীতি করছে- মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনার রাজনীতি।’ আপনাদের সবাইকে ধানের শীষে ভোট দিয়ে বিএনপিকে রাষ্ট্র পরিচালনায় সহযোগিতা করার অনুরোধ করছি।
মারিয়া ইসলাম মুন্নি তার আবেগঘন বক্তব্যে বলেন, এই দেশটা আমাদের; কিন্তু আজ আমরা আমাদেরই অধিকার থেকে বঞ্চিত। আমাদের মা-বোনেরা কষ্টে আছে, ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। তাই ৩১ দফা শুধু রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি নয়, এটা আমাদের বাঁচার স্বপ্ন। আমরা সবাই মিলে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করব। তারেক রহমানের সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমার বাবা তার পুরো জীবন আপসহীনভাবে জনগণের স্বার্থে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়ে গেছেন। আশা করি আপনারা বিএনপির পাশে থাকবেন। একই সাথে সোনারগাঁও আসনটি তারেক রহমানকে উপহার দেবেন।
অন্যান্য বক্তারা বলেন, তারেক রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ আবারও গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ন্যায়বিচারের পথে ফিরবে। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা ছাড়া দেশের মুক্তি নেই।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বৈদ্দ্যেরবাজার ইউনিয়নের সভাপতি তাজুল ইসলাম সরকার, সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন, মোস্তাক হোসেন, রাকিব হাসান, কাউসার আহমেদ, সোহেল প্রধান, সেলিম হোসেন দিপু, আলিনুর বেপারী, মাহফুজ ইসলামসহ কয়েকশ নেতারা।
অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত নারীদের হাতে হাতে ৩১ দফা বাস্তবায়নের লিফলেট বিতরণ ও ধানের শীষে ভোট দেওয়ার আহ্বান করেন।
ঠাকুরগাঁওয়ের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল উত্তরাঞ্চলের ঠাকুরগাঁওসহ আশেপাশে দুই জেলার প্রায় ৪০ লাখ মানুষের চিকিৎসার প্রধান ভরসাস্থল। কিন্তু যে স্থানে মানুষ আসে সুস্থতার আশায়, সেই স্থানই এখন যেন রোগ উৎপত্তির কেন্দ্রস্থল। নোংরা পরিবেশ, অস্বাস্থ্যকর অবস্থা আর অব্যবস্থাপনায় ভরে গেছে হাসপাতালটি।
রোগীরা বলছেন, এখন এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে মানুষ সুস্থ নয়, বরং আরও অসুস্থ হয়ে পরে। অন্যদিকে ধারণক্ষমতার দুই থেকে তিন গুণ বেশি রোগী ভর্তি থাকায় চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
তারা বলছেন, জনবল সংকট ও অব্যবস্থাপনার কারণে কাঙ্ক্ষিত সেবা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে স্থানীয় সচেতন নাগরিক ও সেবাগ্রহীতারা মনে করছেন ঠাকুরগাঁওয়ে দ্রুত একটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন ছাড়া স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নের বিকল্প নেই।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালের ধারণক্ষমতা ২৫০ শয্যা হলেও প্রতিদিন ভর্তি থাকে প্রায় ৬০০ থেকে ৭০০ রোগী। রোগীর চাপে বেড তো পাওয়া যায় না, অনেক সময় ফ্লোরেও জায়গা মেলে না। চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় ডাক্তার ও নার্সদের।
অন্যদিকে হাসপাতালের করিডোর, বাথরুম এমনকি রোগী ওয়ার্ড সব খানেই নোংরা পরিবেশ। নোংরা অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, সুস্থ মানুষও সেখানে প্রবেশ করলে অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। অন্যদিকে দুটি লিফটের মধ্যে একটি নষ্ট হয়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। ফলে চাপের ভীরে গুরুতর রোগী বা বয়স্কদের সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হয় তীব্র কষ্টের মধ্যে। দীর্ঘদিন ঘরে বালতি ও পাত্রে জমে থাকা নোংরা পানি । যেখান থেকে জন্ম নিতে পারে এডিস মশাসহ বিভিন্ন ধরনের রোগ। এছাড়া হাসপাতালের। ভেতরে কুকুরের বিচরণ তো আছেই। যার মাধ্যমে ছড়াতে পারে জলাতঙ্ক রোগ। এমনকি আইসিইউ, ডায়ালাইসিস ইউনিট এবং পিসিআর ল্যাবের জন্য নির্ধারিত ভবন ও স্থান থাকলেও, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও জনবল না থাকায় দীর্ঘদিন ধরেই সেগুলো চালু হয়নি।
রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ, এই হাসপাতালে অধিকাংশ পরীক্ষার রিপোর্ট বাইরে থেকে করাতে হয়। যেসব ওষুধ হাসপাতল থেকে দেওয়ার কথা সেসব ওষুধ নিতে রোগীদের ছুটতে হয় বাইরের ফার্মেসিতে। আর অনেক রোগীকে দিনাজপুর, রংপুর বা ঢাকায় রেফার করেন। রোগীকে নিয়ে যাওয়ার সময় অনেকেই মৃত্যুর মুখে পতিত হন। এছাড়া এখানে ডাক্তার পাওয়া যায় না ঠিকমতো। বাথরুমগুলোতে ঢোকা যায় না। বেসিনগুলোতে হাত ধোয়ার অবস্থা নেই। এখানে রোগী নিয়ে আসলে সুস্থ মানুষই আমরা অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি এমন অবস্থা এখানকার বলে জানান তারা।
মো. মুজাহিদ বলেন, এখানকার পরিবেশ এতটাই নোংরা যে বলার মতো না। যেখানে-সেখানে পানি ও ময়লা আবর্জনা পড়ে থাকে। আর হাসপাতালে অনেক টেস্ট হয় না। রোগী নিয়ে টেস্ট করাতে বাইরে যেতে হয়। এভাবে আমরা চরম ভোগান্তিতে পরি। এছাড়া এখানে রোগীর সংখ্যা অনুযায়ী সেবা দেওয়ার মতো জনবল দেখছি না। জনবল বৃদ্ধি করলে হয়তো কিছুটা কাঙ্ক্ষিত সেবা পাওয়া যাবে।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা থেকে অসুস্থতাজনিত কারণে মাকে নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছেন মেহেদী হাসান। তিনি বলেন, ‘যেগুলো ওষুধ হাসপাতাল থেকে দেওয়ার কথা ওই ওষুধগুলোয় আবার আমাদের বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। তাহলে সরকার যে ওষুধ দিচ্ছে সেই ওষুধগুলো যাচ্ছে কোথায়।’
শহীদুল ইসলাম উজ্জল তার ছেলেকে নিয়ে ভর্তি আছেন হাসপাতালে তিনি বলেন, ‘ধরতে গেলে এই হাসপাতালে চিকিৎসা বলতে তেমন কিছুই হয় না। সময় মতো ডাক্তার পাওয়া যায় না। নার্সরা ঠিক মতো কথা শোনছেন না। তাদের কোনো কিছু বলতে গেলে বিরক্ত বোধ করেন। এছাড়া দীর্ঘদিন থেকে এখানকার লিফট নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। এদিকে কেউ নজর দিচ্ছেন না। তাই আমি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের এ বিষয়গুলো দেখার জন্য অনুরোধ করছি।’
রিক্তা পারভীন নামে এক নারী বলেন, ‘হাসপাতালের টয়লেটের অবস্থা এতটাই খারাপ যে আমরা সেগুলো ব্যবহার করতে পারছি না। ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে এসে বেসিনগুলোতে তাদের হাত ধুয়ে যে খাওয়াব সেটাও করতে পারি না এতটাই নোংরা। এখানে আমরা আসি সুস্থতার জন্য কিন্তু রোগীর সাথে যারা আসি তারাই মনে হয় অসুস্থ হয়ে পড়ছি এমন অবস্থা।’
বাঁধন নামে এক যুবক বলেন, ‘এখানে রোগী নিয়ে আসলেই অধিকাংশ রোগীকেই শুধু রেফার করে দেওয়া হয় দিনাজপুর, রংপুরসহ ঢাকায়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, দীর্ঘ সময়ের রাস্তা হওয়ায় রোগীকে নিয়ে যেতে যেতেই অনেকের মৃত্যু হয়। এ জন্য ঠাকুরগাঁওয়ে একটি ভালোমানের মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল জরুরি হয়ে পড়েছে।’
স্থানীয় নাগরিক হিমেলসহ অনেকে বলেন, ‘হাসপাতালটিতে আশেপাশের কয়েকটি জেলার মানুষ সেবা নিতে ছুটে আসেন। তাই এখানে একটি মেডিকেল কলেজ না হলে মানসম্মত চিকিৎসা পাওয়া অসম্ভব। তাই ঠাকুরগাঁওয়ে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপনের দাবি জানান তারা।’
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তথ্য মতে, এই হাসপাতালে প্রথম শ্রেণির চিকিৎসক ৫৯ জনের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ৪০ জন। দ্বিতীয় শ্রেণির ৩টি পদেই শূন্য। দ্বিতীয় শ্রেণির নার্সের পদ সংখ্যা মাত্র ৯১ জন। তার বিপরীতে কর্মরত আছেন ৮৮ জন। তৃতীয় শ্রেণির পদ সংখ্যা ৪২ জন হলেও আছেন মাত্র ২০ জন। এখনো শূন্য পদ ২২টি। চতুর্থ শ্রেণির লোকবল ২৫ জনের বিপরীতে আছেন ১৭ জন। ২৫০ শয্যার হাসপাতালে মঞ্জুরীকৃত মোট পদের সংখ্যা মাত্র ২২১টি। এর মধ্যে আবার এখনো শূন্য হয়ে পরে আছে ৫৬ জনের পদ।
রূপগঞ্জ থানার তারাব পৌরসভার শবনম ভেজিটেবল অয়েল মিলস লিমিটেডে আবারও ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার ভোররাত আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে কারখানার তেল উৎপাদন প্লান্টে আগুন লাগে। প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় দমকলকর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
কারখানার কর্তৃপক্ষ থেকে ঘটনার খবর পেয়ে ডেমরা ফায়ার স্টেশন, কাঁচপুর ফায়ার স্টেশন এবং নারায়ণগঞ্জ জোন-২ থেকে মোট পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালায়। ২ ঘন্টার সম্মিরিত চেষ্টায় সাড়ে পাঁচটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
রূপগঞ্জ থানা পুলিশ ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও আগুন নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা করে । ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শর্ট সার্কিট থেকেই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ঘটে।
শবনম ভেজিটেবল অয়েল মিলসের ম্যানেজার মেজর আশিকুর রহমান বলেন, আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে আমরা নিরাপত্তাকর্মী ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিই। দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার ফলে বড় ধরনের প্রাণহানি এড়ানো গেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হচ্ছে।
কারখানাটিতে প্রায় ৩২০ জন কর্মী কর্মরত রয়েছেন, এর মধ্যে ৩০০ জন শ্রমিক (পুরুষ ২৯০ ও নারী ১০ জন) এবং ২০ জন স্টাফ। অগ্নিকাণ্ডের সময় অধিকাংশ শ্রমিক উপস্থিত না থাকায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়েছে বলে জানা গেছে।
ডেমরা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মোহাম্মদ আলী বলেন, ৩০০ মেট্রিক টনের ওয়েল রিফাইনারিতে আগুন লাগে।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শর্ট সার্কিটের কারণে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো নিরূপণ করা যায়নি। পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে।
সরকার ঘোষিত ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিন সারাদেশে ইলিশ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন, মজুতে, বাজারজাতকরণ ও বিনিময় নিষিদ্ধ হলেও মানতে নারাজ মানিকগঞ্জের হরিরামপুর পদ্মা নদীর জেলেরা। হিংস্র আর হায়নারুপে পদ্মা নদীতে আইনের তোয়াক্কা না করেই প্রতিদিন বীরদর্পণে দিনে-রাতে চলছে পদ্মা নদীর ইলিশ লুট।
গত কয়েকদিনে সরেজমিনে, প্রতিদিন বিকেল ও সন্ধ্যারপর উপজেলার হাতিঘাটা, কাঞ্চনপুর, কালিতলা, লেছড়াগঞ্জ, হরিণাঘাট, সেলিমপুরসহ পদ্মা নদীতে জেলেদের ঐক্যবদ্ধ তাণ্ডবে মা-ইলিশের অকাল প্রয়াণে হতবাক স্থানীয়রা। এই ইলিশ হাতিঘাটা বাজারে একটা নির্দিষ্ট সময়ে ৮০০-১০০০ টাকা করে প্রতি কেজি প্রকাশ্যে বিক্রিও করছে নিয়মিত। হরিরামপুর উপজেলা মৎস্য অফিস কর্তৃক প্রতিদিন দিনে-রাতে কঠোর অভিযান পরিচালনা করে হিমশিম খাচ্ছে। জেল, জরিমানায়ও থামছে না ছোট-বড়, মা-ইলিশ নিধন। এমনকি, অভিযান চলাকালীন সময়ে গত ১১ অক্টোবর দুপুরে, উপজেলার কাঞ্চনপুর এলাকায় জেলেরা এক হয়ে হরিরামপুর মৎস্য অফিসের কর্মকর্তা, কর্মচারীদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে। হামলার পরপরই আবারও জোরালো পাল্টা অভিযানে বেশ কয়েকজন জেলেকে জাল, মাছসহ আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জেল দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। বিশেষ করে ফরিদপুর, গোয়ালন্দ, শিবালয়, রাজবাড়ির জেলেরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ ইলিশ নিধনে একযোগে পদ্মায় নামে।
রামকৃষ্ণপুর ইউপি বাসিন্দা মো. ইউসুব বলেন, আন্ধারমানিক ঘাট দিয়ে মৎস্য অফিসাররা দিনে-রাতে অভিযান করে দেখেছে। তাদের কঠোর চেষ্টায় থামছে না জেলেদের তাণ্ডব। নিয়মিত হাতিঘাটা বাজারে বিকেলে অথবা সন্ধ্যায় গেলে ছোট, মাঝারি সাইজের ইলিশ কিনতে পাওয়া যায় শুনেছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেলিমপুর গ্রামের এক জেলে আক্ষেপ করে জানান, ‘২২ দিন কি আমরা চুরি করে খামু.?
আমগো চাইল ও দ্যালনাই কেউ। জেল, জরিমানা স্বীকার করেই পদ্মায় নামছি। কিছু করার নাই। পেটের খিদ্যা তো আর অফিসারেরা মিটাইতে আইব না।’
হরিরামপুর উপজেলা ইলিশ প্রকল্পের ক্ষেত্র-সহকারী মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, আমরা প্রতিদিন জাতীয় সম্পদ ইলিশ রক্ষায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দিনে-রাতে পদ্মায় অভিযান করছি নিয়মিত। আমাদের ওপর বেশ কয়েকবার হামলা হলেও আমরাও ছারতে নারাজ। ইলিশ সম্পদ রক্ষায় যা যা প্রয়োজন, তাই আমরা করব। আরও কঠোর অভিযানে জেলা, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মহোদয়ের সাথে আলাপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমাদের জাতীয় সম্পদ- ইলিশ রক্ষায় সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
হরিরামপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নুরুল হক ইকরাম জানান, জাতীয় সম্পদ ইলিশ রক্ষায় আমরা অন্যায়ের সাথে কখনোই আপস করিনি। জেলেরা অপরাধ করবেই, তারপরেও আমরা কোনো ছাড় দেইনি। আমাদের অভিযান নিয়মিত চলছে, চলবে।
উপজেলা মৎস্য অফিসের তথ্য বলছে- গত কয়েকদিনে ২৩টি অভিযান পরিচালনা করে ১ লাখ ৫৪ হাজার লাখ মিটার জাল ধ্বংস করা হয়েছে। যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় সাড়ে ষোল লাখ টাকা। ৭টি মোবাইল কোর্ট, ১৭টি নিয়মিত মামলা, ৫২ হাজার টাকা জরিমানা, ৪ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা আর ৫৪ মণ ছোট, মাঝারি, বড় সাইজের ইলিশ জব্দ করে বিভিন্ন এতিমখানায় দেওয়া হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বৈশ্বিক খাদ্য ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার পূর্ণ সংস্কারের আহ্বান জানিয়ে ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব গঠনের জন্য ছয় দফা প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘ক্ষুধা কোনো অভাবের কারণে নয়, এটি আমাদের তৈরি করা অর্থনৈতিক কাঠামোর ব্যর্থতা। আমাদের এই ব্যবস্থা বদলাতে হবে।’
সোমবার ইতালির রোমে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সদর দপ্তরে আয়োজিত বিশ্ব খাদ্য ফোরাম (ডব্লিউএফএফ) ২০২৫-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মূল বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বৈশ্বিক খাদ্য ও অর্থনৈতিক কাঠামো সংস্কারের ছয় দফা প্রস্তাবে অধ্যাপক ইউনূস প্রথমেই বলেন, ‘যুদ্ধ বন্ধ করুন, সংলাপ শুরু করুন এবং সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে খাদ্য পৌঁছানোর ব্যবস্থা নিশ্চিত করুন’—এর মাধ্যমে ক্ষুধা ও সংঘাতের দুষ্টচক্র ভাঙতে হবে।
দ্বিতীয় প্রস্তাবে তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে অর্থায়নের অঙ্গীকার পূরণ করতে হবে, জলবায়ুুসংকট মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে টিকে থাকার সক্ষমতা গড়ে তুলতে সহায়তা করতে হবে।
তৃতীয় প্রস্তাবে তিনি বলেন, আঞ্চলিক খাদ্য ব্যাংক গঠন করে খাদ্য সরবরাহ চেইন স্থিতিশীল রাখতে হবে।
চতুর্থ প্রস্তাবে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অর্থায়ন, অবকাঠামো ও বৈশ্বিক অংশীদারত্বের মাধ্যমে সহায়তা দিতে হবে।
পঞ্চম প্রস্তাবে তিনি রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে বলেন, বাণিজ্যনীতিকে খাদ্য নিরাপত্তার সহায়ক হতে হবে, বাঁধা নয়।
ষষ্ঠ প্রস্তাবে তিনি বলেন, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে, বিশেষ করে গ্লোবাল সাউথের তরুণ কৃষক ও উদ্যোক্তাদের জন্য।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘২০২৪ সালে ৬৭৩ মিলিয়ন মানুষ ক্ষুধার্ত ছিল, অথচ আমরা যথেষ্ট খাদ্য উৎপাদন করেছি। এটি উৎপাদনের ব্যর্থতা নয়— এটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ব্যর্থতা, নৈতিক ব্যর্থতা।’
তিনি বলেন, ‘ক্ষুধা দূর করতে যেখানে কয়েক বিলিয়ন ডলার জোগাড় করা যায়নি, সেখানে অস্ত্র কিনতে বিশ্ব ব্যয় করেছে ২ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলার। একে কি আমরা অগ্রগতি বলব?’
অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মৌলিক পরিবর্তনের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের পুরো অর্থনৈতিক ব্যবস্থা পুনর্বিবেচনা করতে হবে। পুরোনো মুনাফাভিত্তিক ব্যবসা পদ্ধতি কোটি কোটি মানুষকে পিছনে ফেলে দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের এমন এক নতুন ব্যবসা পদ্ধতি গড়ে তুলতে হবে— সামাজিক ব্যবসা, যা ব্যক্তিগত মুনাফার জন্য নয়, বরং সমাজের সমস্যা সমাধানের জন্য।’
অধ্যাপক ইউনূস তাঁর স্বপ্নের ‘তিন-শূন্য বিশ্ব’ (শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য কার্বন নিঃসরণ) ধারণা ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘এটি কোনো কল্পনা নয়, এটি অপরিহার্য— বিশ্ব বাঁচানোর একমাত্র পথ।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে সামাজিক ব্যবসার সাফল্য আমরা দেখেছি। গ্রামীণ ব্যাংক দেখিয়েছে, দরিদ্র নারীরাও উদ্যোক্তা হতে পারেন। গ্রামীণ দানোন শিশু অপুষ্টির বিরুদ্ধে কাজ করছে। বিশ্বজুড়ে এমন বহু সামাজিক ব্যবসা মানুষের জীবন বদলে দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘তরুণ, নারী, কৃষক, কৃষিুউদ্যোক্তা ও প্রযুক্তি উদ্ভাবকদের সহায়তায় সামাজিক ব্যবসা তহবিল গঠন করতে হবে। এই ধরনের উদ্যোগের জন্য আইনগত ও আর্থিক কাঠামো তৈরি করতে হবে, বাঁধা নয়।’
তরুণদের ভূমিকা তুলে ধরে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আজকের তরুণ প্রজন্ম আগের তুলনায় অনেক বেশি সংযুক্ত, সৃজনশীল ও প্রযুক্তিনির্ভর। তাদের চাকরি খোঁজার কথা বলবেন না, বরং চাকরি সৃষ্টির ক্ষমতায়ন করুন।’
তিনি বলেন, ‘তরুণদের বিনিয়োগ তহবিল ও সামাজিক ব্যবসা তহবিলের মাধ্যমে মূলধনে প্রবেশাধিকার দিতে হবে। কৃষি-উদ্ভাবন কেন্দ্র, কৃষিুপ্রযুক্তি, চক্রাকার খাদ্য ব্যবস্থা ও জলবায়ুুস্মার্ট উদ্যোক্তা তৈরিতে সহায়তা দিতে হবে।’
তিনি যোগ করেন, ‘যুব সমাজের ওপর বিনিয়োগ করলে শুধু বিশ্বকে খাদ্য দিতে পারব না, বিশ্বকেই বদলে দিতে পারব।’
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশ ক্ষুধা ও দারিদ্র্েযর বিরুদ্ধে বৈশ্বিক জোটের (গ্লোবাল অ্যালায়েন্স অ্যাগেইনস্ট হাঙ্গার অ্যান্ড পোভার্টি) প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। আমরা এফএও ও জি-২০-এর সঙ্গে মিলিতভাবে প্রযুক্তিগত, আর্থিক ও নৈতিক সহায়তা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
তিনি আহ্বান জানান, ‘আসুন, একটি তিন-শূন্য বিশ্ব গড়ে তোলার জন্য আমরা একসঙ্গে কাজ করি।’
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এই ফোরামের তিনটি স্তম্ভ—যুব, বিজ্ঞান ও বিনিয়োগ—শুধু স্লোগান নয়, এটি আমাদের খাদ্যব্যবস্থা ও সমাজ রূপান্তরের প্রধান হাতিয়ার।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্বে সম্পদ ও প্রযুক্তি রয়েছে, ভবিষ্যতে আরও উন্নত প্রযুক্তি আসবে। এখন দরকার সৃজনশীল চিন্তা ও সঠিক ব্যবসা কাঠামো—যার মাধ্যমে আমরা নতুন বিশ্ব গড়ে তুলতে পারব। আমরা যদি কল্পনা করতে পারি, আমরা তা বাস্তবেও সৃষ্টি করতে পারব।’
বক্তৃতার শুরুতে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এফএও’র ৮০ বছর পূর্তি শুধু উদযাপন নয়, এটি ভবিষ্যতের প্রস্তুতির আহ্বান।’
তিনি বলেন, ‘এ বছরের প্রতিপাদ্য— ‘হাত ধরে হাতে, উন্নত খাদ্য ও উন্নত ভবিষ্যতের পথে’—আমাদের মনে করিয়ে দেয়: খাদ্য শুধু ক্যালরির ব্যাপার নয়, এটি মর্যাদার, ন্যায়ের এবং আমরা কেমন পৃথিবীতে বাস করতে চাই তার প্রতিচ্ছবি।’
তিনি এফএওুর নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী খাদ্য নিরাপত্তা ও শান্তি জোটের প্রশংসা করে বলেন, এটি ভবিষ্যতেও বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা করেন।
প্রধান উপদেষ্টা ২০২৪ সালের বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ তরুণ নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের কথা স্মরণ করে বলেন, ‘তরুণরা সাহস ও আশায় ভরপুর হয়ে গণতন্ত্র, শান্তি ও মানবাধিকারের জন্য লড়াই করেছে। তাদের দাবি ছিল ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া, ন্যায়, অন্তর্ভুক্তি ও আস্থার ভিত্তিতে সমাজ গঠন।’
তিনি যোগ করেন, ‘এ তরুণরাই এখন নতুন বাংলাদেশ গঠনে কাজ করছে—যেখানে জনগণ শাসনের কেন্দ্রে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হবে, যার মাধ্যমে আমরা ন্যায় ও জনগণের ক্ষমতায়নের প্রতিশ্রুতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেব।’
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ ১৭ কোটি মানুষের খাদ্য নিশ্চিত করছে এবং মিয়ানমারের সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসা ১৩ লাখ রোহিঙ্গাকেও আশ্রয় ও খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ধান উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। বিশ্বের শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে আছি ধান, সবজি ও স্বাদুপানির মাছ উৎপাদনে। কৃষকরা ফসলের নিবিড়তা ২১৪ শতাংশে উন্নীত করেছেন এবং আমরা জলবায়ুুসহনশীল ১৩৩ প্রজাতির ধান উদ্ভাবন করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণ করেছি, ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকি দিচ্ছি, শক্তিশালী খাদ্য বিতরণ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছি, অপুষ্টি কমিয়েছি, খাদ্যাভ্যাসে বৈচিত্র্য এনেছি এবং কৃষিকে সবুজ করেছি— মাটি, পানি ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে কাজ করছি।’ সূত্র: বাসস
একসময় বাংলাদেশের বিল-হাওর ভরে থাকত এমন এক খাবার যা ছিল ভাতের বিকল্প। যা শুধু খাবার নয়, ছিল গ্রামীণ জীবনের আনন্দ, ঐতিহ্য আর সংস্কৃতির অংশ। কিন্তু মানুষ এখন সেই খাবারের নাম প্রায় ভুলতেই বসেছে। সেই ভুলে যাওয়া নামটি হলো- শালুক।
বাংলাদেশের নদীমাতৃক অঞ্চলের এই ঐতিহ্যবাহী খাদ্য একসময় ছিল গ্রামের মানুষের নিত্যসঙ্গী। নিচু অঞ্চলের দোআঁশ ও কাদামাটিতে প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেওয়া শালুকের চারটি প্রধান জাত পাওয়া যেত। কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সুনামগঞ্জ, মাধবপুর, বৈরব, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ ও নরসিংদীর হাওর ও খালচর অঞ্চলজুড়ে ছিল এই শালুকের প্রাচুর্য।
ভাদ্র, আশ্বিন, কার্তিক মাস এলেই দেখা যেত বিলে উৎসবের আমেজ। কৃষক ও দামাল ছেলেমেয়েরা পড়াশোনার ফাঁকে দলে দলে যেত শালুক তুলতে। হাসি-আড্ডায় মুখর হতো চারদিক। তখন শালুক, শাপলা, বেট, উঠা- এসব ছিল সবার খাবার। শুধু যে মানুষ মজা করে খেতো তাই নয়, অভাবেও মানুষ শালুক খেয়ে জীবন বাঁচাতো।
শালুকেরও ছিল নানা জাত- গাইয়্যা, সিন্ধু, রামউঠা সবচেয়ে জনপ্রিয়, আর কিছু প্রজাতি শালুকের মতো দেখতে হওয়ায় তাদের বলা হতো উডা, যেগুলো থেকে হতো শাপলা।
প্রতিটি শালুকের ওজন প্রায় ৪০–৭০ গ্রাম। এটি সেদ্ধ করে কিংবা আগুনে পুড়িয়ে ভাতের বিকল্প হিসেবে খাওয়া যেত। পুষ্টিগুণে ভরপুর শালুক হজমে সাহায্য করত- গ্রামের মানুষ ভালোবেসে বলত, ‘শালুক খেলে পেটও খুশি, মনও খুশি।’
কিন্তু এখন বর্ষার পানি কমে গেছে, বিল শুকিয়ে গেছে, আর সেই সঙ্গে হারিয়ে গেছে শালুকের দিনগুলোও।
তবুও একেবারে সব শেষ হয়নি। কুমিল্লার মুরাদনগরের কোম্পানীগঞ্জে আজও কিছু মানুষ এই হারানো ঐতিহ্যটিকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। প্রায় বিশ বছর ধরে শালুকের ব্যাবসা করছেন আবুল কাসেম, নারায়ণ, দীপ্ত সাহা, আবু মুছা ও সফিকসহ অনেকে।
তারা সিলেটের সুনামগঞ্জ ও মাধবপুর হাট থেকে বারো মাস শালুক সংগ্রহ করে কুমিল্লার বিভিন্ন হাটে বিক্রি করেন। পাইকারি দরে কেজি প্রতি ৫০–৮০ টাকা, খুচরায় ১৫০–২০০ টাকা। দীপ্ত সাহা বলেন, ‘প্রতিদিন ৫০ থেকে ৮০ কেজি শালুক বিক্রি হয়। এই ব্যাবসাতেই আমাদের সংসার চলে, আর মনে হয় যেন একটা ঐতিহ্যকেও বাঁচিয়ে রাখছি।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্রসংস্কারের ৩১ দফা দাবিসমূহ সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করেছেন কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপি।
সোমবার কুমিল্লার তিতাস উপজেলার বাতাকান্দি ও হোমনা উপজেলার ঘারমোড়া বাজারে লিফলেট বিতরণ করেন কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আখতারুজ্জামান সরকার।
লিফলেট বিতরণকালে আখতারুজ্জামান সরকার বলেন, ‘রাষ্ট্র সংস্কারের এই ৩১ দফা দেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও আইনের শাসন নিশ্চিত করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই দফাগুলো বাস্তবায়িত হলে জনগণের অধিকার ও ন্যায়বিচার ফিরে আসবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত। বিএনপি জনগণের ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে রাষ্ট্র পরিচালনা করবে।’
অনুষ্ঠানে তিতাস উপজেলা বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য