প্রকৌশলী পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার অফিস সহকারী আবদুস সবুর খান। ছবি: নিউজবাংলা
বরিশাল নগরীর বিভিন্ন এলাকায় নিজেকে প্রকৌশলী পরিচয় দিয়ে ভবন মালিকদের নানাভাবে হয়রানি করছিলেন। তিনি ভবন মালিকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে প্ল্যান পাস করিয়ে দেয়াসহ ত্রুটির কারণে আটকে থাকা প্ল্যান ছাড়িয়ে দেয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নিতেন।
বরিশালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ের এক অফিস সহকারী নিজেকে প্রকৌশলী পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত ধরা পড়েছে জালিয়াতি। আবদুস সবুর খান নামের ওই কর্মীকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
তাকে বৃহস্পতিবার দুপুরে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয় বরিশাল সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ।
সবুরের বাড়ি ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার আনইলবুনিয়া এলাকায়। তিনি বরিশাল নগরীর বৈদ্যপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন।
সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা কাজী মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, সবুর নগরীর বিভিন্ন এলাকায় নিজেকে প্রকৌশলী পরিচয় দিয়ে ভবনমালিকদের হয়রানি করছিলেন। তিনি তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে প্ল্যান পাস করিয়ে দেয়াসহ ত্রুটির কারণে আটকে থাকা প্ল্যান ছাড়িয়ে দেয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নিতেন।
সম্প্রতি নগরীর ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের আজিজিয়া হাউজিংয়ে আঞ্জুমান আরা বেগম নামের এক মালিকের কাছে যান সবুর। নিজেকে সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলী ফরিদ মাহামুদ বলে পরিচয় দিয়ে নকশাবহির্ভূত ভবন নির্মাণ করার অভিযোগে আঞ্জুমান আরাকে হয়রানি শুরু করেন তিনি। একপর্যায়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। এতে ওই ভবনমালিকের সন্দেহ হলে তিনি সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান।
করপোরেশনের কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার দুপুরে সবুরকে কৌশলে নগর ভবনে ডেকে আনেন। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে দোষ স্বীকার করেন সবুর। পরে তাকে পুলিশে দেয়া হয়।
বানারীপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. হুমায়ুন কবির জানান, সবুর নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে কর্মরত।
কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, সবুরকে থানায় রাখা হয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
করোনায় আরও এক পুলিশ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার ভোরে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে মোশারফ হোসেনের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে করোন আক্রান্ত হয়ে পুলিশে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ৯৩ জনে।
করোনায় মারা গেছেন আরও একজন পুলিশ সদস্য। তার নাম মোশারফ হোসেন।
৪৬ বছর বয়সী মোশারফ কনস্টেবল পদে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক উত্তর বিভাগে কর্মরত ছিলেন।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার ভোরে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে তিনি মারা যান।
এ নিয়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে পুলিশে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ৯৩ জনে।
পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) সোহেল রানা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
করোনায় মোশারফের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ। শোকবার্তায় আইজিপি মরহুমের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানান।
মোশারফ হোসেনের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ থানার আশ্বিনপুর গ্রামে।
তিনি স্ত্রী, এক পুত্র ও এক কন্যাসহ বহু আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
এআইজি সোহেল রানা জানান, বাংলাদেশ পুলিশের ব্যবস্থাপনায় মরদেহ মরহুমের গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। সেখানে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
সংসদ সচিবালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব জাফর আহমেদ খান স্বাক্ষরিত এক গেজেটে বুধবার আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। এরই মধ্যে গেজেট নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পাঠানো হয়েছে।
সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরুর মৃত্যুতে কুমিল্লা-৫ আসন শূন্য ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।
সংসদ সচিবালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব জাফর আহমেদ খান স্বাক্ষরিত এক গেজেটে বুধবার আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। এরই মধ্যে গেজেট নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পাঠানো হয়েছে।
সংবিধান অনুযায়ী আসন শূন্য হওয়ার পর ৯০ দিনের মধ্যে উপনির্বাচনের ব্যবস্থা করবে নির্বাচন কমিশন।
তবে চলমান মহামারি বা অন্য কোনো পরিস্থিতিতে তা সম্ভব না হলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরও ৯০ দিন সময় নিতে পারেন।
ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৪ এপ্রিল মৃত্যু হয় আবদুল মতিন খসরুর।
কুমিল্লা-৫ আসনের পাঁচবারের সংসদ সদস্য মতিন খসরু ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। আওয়ামী লীগের ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদের সরকারে তিনি আইনমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
গত ১০ ও ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে তিনি সভাপতি নির্বাচিত হন। গত ১২ এপ্রিল অসুস্থ অবস্থায় সমিতির সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি।
খসরু বর্তমান জাতীয় সংসদের আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন খসরু। পরে করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ হলেও তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন।
খসরু ১৯৯৬ সাল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আইনমন্ত্রী হয়েছিলেন এবং তার সময়েই ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করা হয়, যা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারীদের বিচারের পথ উন্মুক্ত করে।
বাংলাদেশের মুক্তিযু্দ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করা আবদুল মতিন খসরু ১৯৫০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন।
হেফাজতে ইসলামের নেতা শারাফত হোসেন ও খোরশেদ আলম কাসেমী। ফাইল ছবি
কাসেমী ও শারাফতকে বৃহস্পতিবার সিএমএম আদালতে হাজির করে ২০১৩ সালে পল্টন থানায় করা সহিংসতার মামলায় ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করে ডিবি।পরে ঢাকার সিএমএম হাকিম বাকী বিল্লাহ কাসেমীকে সাত ও শারাফতকে পাঁচ দিনের রিমান্ড আদেশ দেন।
আট বছর আগে ২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে তাণ্ডব ও সহিংসতায় হেফাজতে ইসলামের দুই নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে আদেশ দিয়েছে ঢাকার মুখ্যমহানগর আদালত (সিএমএম)।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব, ঢাকা মহানগর সহসভাপতি ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির খোরশেদ আলম কাসেমীকে সাত দিন এবং সংগঠনের যুগ্ম-মহাসচিব ও খেলাফত মজলিসের সাধারণ সম্পাদক শারাফাত হোসাইনকে বৃহস্পতিবার পাঁচ দিনের রিমান্ড আদেশ দিয়েছে আদালত।
আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার সদস্য মো. সোলাইমান এ তথ্য নিউজজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন।
রাজধানীর মোহাম্মাদপুর থেকে মঙ্গলবার বিকেলে কাসেমীকে ও বুধবার শারাফাতকে কাফরুল থেকে গ্রেপ্তার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে গত ২৬ মার্চ রাজধানীর বায়তুল মোকাররমে হেফাজতের কর্মসূচিতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। ওই সংঘর্ষের জেরে সহিংসতা হয় চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়।
সেই সহিংসতা মামলার পাশাপাশি ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে অবস্থানকে ঘিরে দিনভর তাণ্ডবের মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখায় ডিবি।
বৃহস্পতিবার কাসেমী ও শারাফাতকে সিএমএম আদালতে হাজির করে ২০১৩ সালে পল্টন থানায় করা সহিংসতার মামলায় ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করে ডিবি।
আসামির পক্ষের আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেসবাহ রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা এর বিরোধিতা করেন।
পরে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার সিএমএম হাকিম বাকী বিল্লাহ জামিন আবেদন নাকচ করে কাসেমীকে জিজ্ঞাসাবাদে সাত দিন ও শারাফাতকে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
সম্প্রতি হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ নেতাদের বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সংগঠনটির অন্তত ১৫ শীর্ষ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ভারতে চারদিন ছুটি কাটিয়ে বাংলাদেশে ফেরার সময় ভ্যাকসিনের বিষয়ে কথা বলেন বিক্রম দোরাইস্বামী। ছবি: নিউজবাংলা
দোরাইস্বামী জানান, করোনা মহামারির কারণে দুই দেশ খারাপ সময় পার করছে। এর মধ্যে ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নত আছে। ভ্যাকসিনের জন্য দুই দেশের সম্পর্কে ভাটা পড়বে না।
ভারত থেকে করোনাভারাসের টিকার নতুন চালান আসা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে বাংলাদেশে দেশটির হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে ভারত নিজেই ভ্যাকসিন সংকটে আছে। তবে উৎপাদন বাড়ানো হচ্ছে, শিগগিরই বাংলাদেশে ভ্যাকসিন রপ্তানি করা হবে।’
ভারতে চারদিন ছুটি কাটিয়ে বাংলাদেশে ফেরার সময় বৃহস্পতিবার আখাউড়া স্থলবন্দরে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
দোরাইস্বামী বলেন, ‘করোনা মহামারির কারণে দুই দেশ খারাপ সময় পার করছে। এর মধ্যে ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নত আছে। ভ্যাকসিনের জন্য দুই দেশের সম্পর্কে ভাটা পড়বে না।’
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে উল্লেখ করে তিনি জানান, এ কারণে অন্যান্য দেশের চেয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে বেশি ভ্যাকসিন সরবরাহের চুক্তি আছে। চুক্তি অনুযায়ী ৭০ লাখ টিকা সরবরাহ করা হয়েছে। বাকি টিকা ক্রমান্বয়ে সরবরাহ করা হবে।
ভারতীয় হাই কমিশনারকে দুই দেশের শূন্যরেখায় স্বাগত জানান আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরে এ আলম, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমানসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
গত ১৮ মার্চ আখাউড়া স্থলবন্দর হয়ে ঢাকা থেকে দিল্লি গিয়েছিলেন দোরাইস্বামী।
ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে ৩ কোটি ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা কিনতে গত বছর নভেম্বরে চুক্তি করে বাংলাদেশ। চুক্তির আওতায় দুই চালানে ৭০ লাখ ডোজ বাংলাদেশ হাতে পেয়েছে।
ভারত সরকারের দুই দফা উপহারের ৩২ লাখ ডোজ মিলে ১ কোটি ২ লাখ ডোজ টিকা দেশে এসেছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৬০ লাখ মানুষ টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন, দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার জন্য ৪২ লাখ টিকা রাখা হয়েছে।
বিশ্বব্যাপী করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ভারত নিজস্ব চাহিদার কথা বিবেচনা করে সিরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ডের টিকার রপ্তানি গত ২৪ মার্চ স্থগিত করে।
কোভ্যাক্সের আওতায় ১৮০টি দেশও সিরাম উৎপাদিত টিকা পাবে, কিন্তু রপ্তানি স্থগিত হওয়ায় এসব দেশও টিকা পাচ্ছে না।
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এস আলম গ্রুপের বিদ্যুৎকেন্দ্রে সংঘর্ষে আহত শ্রমিককে নেয়া হচ্ছে হাসপাতালে। ফাইল ছবি
রিটে বাঁশখালীর ঘটনা তদন্তে বিচার বিভাগীয় কমিটি গঠন, শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং নিহত প্রত্যেক শ্রমিকের জন্য ৩ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এস আলম গ্রুপের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে শ্রমিক বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে সাত শ্রমিক নিহতের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।
হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় বৃহস্পতিবার রিটটি করা হয়েছে বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন রিটকারী আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন।
মানবাধিবার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পক্ষে এ রিট করা হয়।
রিটে বাঁশখালীর ঘটনা তদন্তে বিচার বিভাগীয় কমিটি গঠন, শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং নিহত প্রত্যেক শ্রমিকের জন্য ৩ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
রিটটি আগামী রোববার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের হাইকোর্ট বেঞ্চে উপস্থাপন করা হবে বলেও জানান রিটকারী আইনজীবী।
এর আগে গত ১৮ এপ্রিল এ ঘটনায় নিহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ চেয়ে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের কোনো জবাব না পাওয়ায় রিট করা হয়েছে বলে জানান আইনজীবী।
আইনি নোটিশে নিহত শ্রমিকের জন্য তিন কোটি করে এবং আহত শ্রমিকের জন্য ১ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছিল। পাশাপাশি নিহত ও আহত শ্রমিকদের পরিবারের নিরাপত্তা দিতে নোটিশে বলা হয়েছিল।
স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, শিল্প সচিব, বাণিজ্য সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শকসহ ১৭ জনকে এ নোটিশ দেওয়া হয়েছিল।
গত শনিবার চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে শ্রমিকদের বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে ৫ শ্রমিক নিহত হন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়।
গণ্ডামারা ইউনিয়নের পশ্চিম বড়ঘোনায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে ওই দিন বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছিলেন বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) আজিজুল ইসলাম।
তিনি জানিয়েছিলেন, বকেয়া বেতন পরিশোধসহ বেশ কিছু দাবিতে এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট নামের ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রের শ্রমিকরা শনিবার সকাল থেকে আন্দোলন করছিলেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সেখান গিয়ে শ্রমিকদের ওপর গুলি চালায়।
আগামী ২৪ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টা থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ঢাকা থেকে মাস্কাটের ফ্লাইট স্থগিতের নির্দেশ বহাল থাকবে বলে জানিয়েছে ওমান সরকার।
আগামী ২৪ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টা থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ঢাকা থেকে মাস্কাটের ফ্লাইট স্থগিতের নির্দেশ বহাল থাকবে বলে জানিয়েছে ওমান সরকার।
ওমান সরকারের নিষেধাজ্ঞার কারণে ঢাকা থেকে মাস্কাটের ফ্লাইট স্থগিত করেছে বেসরকারি ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত ফ্লাইট স্থগিত থাকবে বলে নিশ্চিত করেছে ইউএস বাংলা কর্তৃপক্ষ।
ইউএস-বাংলার জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম জানান, ‘পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত ঢাকা-মাস্কাট রুটে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ থাকবে।’
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ায় দক্ষিণ এশিয়ার তিন দেশ বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের নাগরিকদের ওমানে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটির সরকার।
আগামী ২৪ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টা থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এটি বহাল থাকবে বলে জানিয়েছে ওমান সরকার।
এছাড়াও যারা গত ১৪ দিনে এই তিনটি দেশের যেকোনও একটিতে ভ্রমণ করেছেন, তারাও ওমানে প্রবেশ করতে পারবে না বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। অবশ্য ওমানের নাগরিক, কূটনীতিক, স্বাস্থ্যকর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ক্ষেত্রে এই নির্দেশ কার্যকর হবে না।
দিয়াবাড়িতে মেট্রোরেলের ডিপোতে পৌঁছেছে জাপান থেকে আনা কোচ। ছবি: নিউজবাংলা
প্রথম দফায় খুব সতর্কতার সঙ্গে শুরু হয় প্রক্রিয়া, প্রায় ঘন্টাখানেকের চেষ্টায় বিশেষ প্রক্রিয়ায় লিফ্টিংবারের মাধ্যমে তোলা হয় অস্থায়ী জেটিতে রাখা কার্গোতে। এর পরে কোচগুলো নিয়ে যাওয়া হয় মোট্রোরেলের প্রধান ডিপোতে।
রাজধানীতে যোগাযোগ ব্যাবস্থা গতিশীল করতে মেট্রোরেলের এক সেট ট্রেনের কোচ ডিপোতে নেয়া শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল আটটার দিকে ক্রেন দিয়ে কোচ লরিতে তোলার কাজ শুরু হয়। পরে কোচগুলো দিয়াবাড়ির ডিপোতে নিয়ে যাওয়া হয়।
উত্তরার দিয়াবাড়িতে ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের তৈরি করা বিশেষ জেটিতে রাখা হবে এটি। আজ সারাদিন একই লরিতে করে মোট চারটি কোচ ডিপোতে নিয়ে যাওয়া হবে। জেটিতে অবস্থানরত বাকি দুটি কোচ নামিয়ে কাল শুক্রবার সকালে ডিপোতে নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
মেট্রোরেল প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক এ বি এম আরিফুর রহমান বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের মেট্রোরেলের প্রথম কোচ ট্রেইলারের উপর আনলোড করেছি। এরপর আমাদের বিশেষ ডিপোতে নেয়ার পর ওয়ার্কশপে তোলা হবে।
‘সেখানে আমরা কোচগুলোর কারিগরি কাজ করব। কোচগুলোর ক্ষেত্রে অন্যান্য ইন্টারনাল টেস্ট ছাড়াও ১৯টি টেস্ট করা হবে। এরপর ছয়টি কোচ জোড়াদিয়ে ফুল ট্রেন ফরম করা হবে। সেটার পর আবার পরীক্ষা হবে। এভাবে সব কারিগরি বিষয় পরীক্ষা করে দেখার পর আমরা ফাইনালি ডিএমটিসিএল এর কাছে হস্তান্তর করব।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘যদি কোন যন্ত্রের ডিফল্ট থাকে সে ক্ষেত্রে স্পেয়ার পার্টস আনা হয়েছে। তা ছাড়া জাপানি যে কোম্পানি এগুলো সরবরাহ করছে তাদের কুইক রেসপন্স টিমের সঙ্গে সঙ্গে ট্রেনিং টিম আছে। তা ছাড়া এটি জাপান থেকে টেস্ট হয়ে এসেছে। পথের মধ্যেও কোন সমস্যা হয়নি। সুতরাং আশা করি সেটআপে কোনো সমস্যা দেখা যাবে না।’
এর আগে বুধবার বিকেলে দুটি বার্জ দিয়ে এক সেট ট্রেনের মোট ছয়টি কোচ ঢাকায় এসেছে। পাঁচটার দিকে ট্রেনবাহী প্রথম বার্জটি মোংলা বন্দর থেকে ঢাকার উত্তরায় মেট্রোরেলের ডিপোর কাছে নদীর জেটিতে ভেড়ে। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আরেকটি বার্জ জেটিতে আসে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) অধীনে ঢাকা মেট্রোরেল প্রকল্প (লাইন-৬) বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জাপান থেকে ট্রেনের কোচের পাশাপাশি তা বার্জ থেকে নামানোর যন্ত্রও আনা হয়েছে। বুধবার এসব যন্ত্র খালাস করা হয়।
প্রকল্প নথি অনুসারে, জাপানের কাওয়াসাকি-মিতসুবিশি কনসোর্টিয়ামকে ২৪ সেট ট্রেন নির্মাণের দায়িত্ব দেয়া হয় ২০১৭ সালে। দুই পাশে দুটি ইঞ্জিন আর চারটি কোচের সমন্বয়ে ট্রেনের সেটগুলো তৈরি হচ্ছে জাপানে।
এরই মধ্যে প্রস্তুত হয়েছে পাঁচ সেট ট্রেন, যার প্রথমটি দেশে এসে পৌঁছেছে। দ্বিতীয় সেট জাপান থেকে ১৫ এপ্রিল রওনা হওয়ার কথা। সেটি পৌঁছাতে পারে আগামী ১৬ জুন। আর তৃতীয় সেট ১৩ জুন রওনা দিয়ে ১৩ আগস্ট পৌঁছাতে পারে। বাকি দুটি সেটের আসার সময়সীমা এখনো ঠিক হয়নি।
সব মিলিয়ে ২৪ সেট ট্রেনের দাম পড়ছে ৩ হাজার ২০৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা। শুল্ক ও ভ্যাট মিলিয়ে এসব ট্রেন বাংলাদেশে আনার পর মোট খরচ হবে ৪ হাজার ২৫৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।
ট্রেনগুলোয় ডিসি ১৫০০ ভোল্টেজ বিদ্যুৎ সরবরাহব্যবস্থা থাকবে। স্টেইনলেস স্টিল বডির ট্রেনগুলোয় থাকবে লম্বালম্বি সিট। প্রতিটি ট্রেনে থাকবে দুটি হুইলচেয়ারের ব্যবস্থা। শীতাতপনিয়ন্ত্রিত প্রতিটি বগির দুই পাশে থাকবে চারটি করে দরজা।
জাপানি স্ট্যান্ডার্ডের নিরাপত্তাব্যবস্থা-সংবলিত প্রতিটি ট্রেনের যাত্রী ধারণক্ষমতা হবে ১ হাজার ৭৩৮ জন। ভাড়া পরিশোধের জন্য থাকবে স্মার্ট কার্ড টিকিটিং ব্যবস্থা।
মেট্রোরেলের কোচগুলো তৈরি হয়েছে জাপানে। এরপর বড় জাহাজে ভরে জাপানের কোবে বন্দর থেকে গত ৪ মার্চে যাত্রা শুরু করে। বাংলাদেশের মোংলা বন্দরে পৌঁছায় ৩১ মার্চ। এরপর শুল্ক কর্তৃপক্ষের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ঢাকার পথে বার্জে করে যাত্রা করে। কোচগুলো পৃথক পৃথক আচ্ছাদন দিয়ে মুড়িয়ে আনা হয়েছে।
সার্বিক কাজের অগ্রগতি
মেট্রোরেলের পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ করার তাগিদ রয়েছে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে। সে অনুযায়ী শ্রমিকরা দিনরাত শ্রম দিয়ে এগিয়ে নিচ্ছেন মেট্রোরেলের কাজ।
ডিএমটিসিএল-এর সর্বশেষ তথ্যমতে, রাজধানীর প্রথম মেট্রোরেল প্রকল্পের (এমআরটি লাইন-৬) নির্মাণকাজের অগ্রগতি এসেছে প্রায় ৬৩ শতাংশ। এর মধ্যে প্রথম ভাগ উত্তরা-আগারগাঁও অংশের অগ্রগতি ৮৪ দশমিক ৫২ শতাংশ। আর আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের অগ্রগতি ৫৮ দশমিক ৬৮ শতাংশ।
ডিএমটিসিএল সূত্র আরও জানিয়েছে, ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার ভায়াডাক্টের মধ্যে ১৩ দশমিক ২৭৫ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট এখন দৃশ্যমান। ইতোমধ্যে ডিপোর ভিতরে ১৬ দশমিক ৯০ কিলোমিটার রেললাইন স্থাপিত হয়েছে। এ ছাড়া ভায়াডাক্টের উপরে ১০ কিলোমিটার রেল ট্র্যাক প্লেট কাস্টিং সম্পন্ন হয়েছে। রোড কাম রেল ভেহিক্যাল ব্যবহার করে ডিপোর অভ্যন্তরে এবং ভায়াডাক্টের উপরে ওভারহেড ক্যাটেনারি সিস্টেম স্থাপনের কাজও এগিয়ে চলছে। ইতোমধ্যে ডিপোর ভিতরে ৬ কিলোমিটার ওভারহেড ক্যাটেনারি সিস্টেম স্থাপন হয়ে গেছে।
ডিএমটিসিএল-এর বাস্তবায়ন অগ্রগতি প্রতিবেদন মতে, উত্তরা সেন্টার ও উত্তরা দক্ষিণ স্টেশনের প্লাটফর্ম নির্মাণকাজ শেষ। উত্তরা উত্তর স্টেশনের প্লাটফর্ম নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে। উত্তরা উত্তর ও উত্তরা দক্ষিণ স্টেশনে স্টিল স্ট্রাকচার ইরেকশন কাজ চলমান। উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার ও উত্তরা দক্ষিণ স্টেশনে বৈদ্যুতিক সাব স্টেশন, সিগন্যালিং ও টেলিকমিউনিকেশন এবং স্টেশন কন্ট্রোলার কক্ষ নির্মাণকাজও চলমান। এ ছাড়া উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার ও উত্তরা দক্ষিণ স্টেশনের ছাদ নির্মাণের কাজ চলছে। মেট্রোরেল নির্মাণে স্বাভাবিক পানির প্রবাহ ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, সেই বিবেচনায় পাঁচটি লং স্প্যান ব্যালান্স ক্যান্টিলিভারের মধ্যে তিনটির কাজও ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে।
চলবে ২৪ ট্রেন
ঢাকার যানজট নিরসনসহ নগরবাসীর যাতায়াত আরামদায়ক, দ্রুততর ও নির্বিঘ্ন করতে এই মেট্রোরেল প্রকল্পের মাধ্যমে সব কটি পয়েন্টে ২৪ সেট ট্রেন চলাচল করবে। প্রত্যেকটি ট্রেনে থাকবে ৬টি করে কার বা কামরা। এই ট্রেনের গতিবেগ হবে ঘণ্টায় এক শ কিলোমিটার। প্রতি ৪ মিনিট পরপর ১ হাজার ৮০০ যাত্রী নিয়ে চলবে মেট্রোরেল। চলাচল শুরু হলে উভয় দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী বহনে সক্ষমতা থাকবে মেট্রোরেলের।
ভাড়া হবে কত
মেট্রোরেলে উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত দূরত্ব ২০ দশমিক ১ কিলোমিটার। প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া হতে পারে ২ টাকা ৪০ পয়সা। ডিএমটিসিএল প্রাথমিকভাবে এই হারে ভাড়া নির্ধারণের বিষয়টি বিবেচনা করছে। এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলে উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত দূরত্বে যেতে ভাড়া আসবে ৪০ টাকা ২৫ পয়সা।
মন্তব্য