ভাই জি এম কাদেরের উপস্থিতিতে সেনাশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সমালোচনা করলেন আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবউল আলম হানিফ। হানিফ বলেন, সংবিধান সংশোধন করে ‘রাষ্ট্রধর্ম’ ধারণা এনে দেশে সম্প্রদায়িকতার বীজ বপন করেন সেনাপ্রধান থাকা অবস্থায় বন্দুকের নল দেখিয়ে রাষ্ট্রপতির পদ দখল করা এরশাদ।
পরে জি এম কাদের বলেন, তার ধারণা তার ভাই সংবিধানে যে সংশেধন এনেছিলেন, তার সঙ্গে সংবিধানের মূল ভিত্তি ধর্মনিরপেক্ষ চেতনার কোনো বিরোধ নেই।
শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক স্মরণসভায় বক্তব্য রাখছিলেন দুই নেতা।
মুক্তিযুদ্ধের ৪ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার মেজর জেনারেল (অব.) সি আর দত্ত স্মরণে এই আলোচনার আয়োজন করে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্ট্রান ঐক্য পরিষদ ওই সভার আয়োজন করে।
সেনাপ্রধান থাকা অবস্থায় ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ রাষ্ট্রপতি আবদুস সাত্তারের হাত থেকে ক্ষমতা নেন এরশাদ।
ছয় বছর পর ১৯৮৮ সালের ৭ জুন সংবিধান সংশোধন করে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণা করেন এই সেনা শাসক।
সে সময় এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ, বিএনপি এমনকি জামায়াতে ইসলামীও হরতাল করে। তবে রাষ্ট্রধর্মে হাত দেয়ার সাহস পরে করেনি দুই প্রধান দল।
তবে উচ্চ আদালত এরই মধ্যে সংবিধানের অষ্টম সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করেছে।
হানিফ কথা বলেন এরশাদের আগের সেনাশাসক জিয়াউর রহমানকে নিয়েও।
তিনি বলেন, ‘ক্ষমতায় এসে জিয়াউর রহমান রহমান সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষ চেতনাকে বিনষ্ট করেছেন। তিনি ধর্মকে টেনে আনলেন এবং তার মধ্য দিয়ে সাম্প্রদায়িকতার বীজ বপন করলেন। পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি এরশাদ সাহেব অষ্টম সংশোধনীর মাধ্যমে এই জিনিসটাকে আরও পাকাপোক্ত করলেন।’
জি এম কাদেরকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘যদিও এখানে জি এম কাদের ভাই আছেন, উনি মনে হয়তো কষ্ট পাবেন। কিন্তু ইতিহাস তো সত্য, ইতিহাসকে অস্বীকার করার উপায় নেই। এটা আমাদের মানতেই হবে।
‘তারা (জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মী) যদি তাদের ভুল বুঝতে পারেন, স্বীকার করেন, তাহলে ভবিষ্যতে জনগণের জন্য ভালো কাজ করার মানসিকতা তৈরি করতে পারবেন। কিন্তু অতীতের ভুলটাকেই যদি আগলে ধরে রাখতে চান, তবে ভবিষ্যতে আপনাদের দ্বারা জনগণ ভাল কিছু প্রত্যাশা করতে পারে না।’
পরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি এখানে এসব কথা বলতাম না, কিন্তু কিছু কিছু কথা এসেছে, আমাদের নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সম্পর্কে। এ সম্পর্কে কিছু কিছু ভুল ধারণা আছে বলে আমি মনে করি। যেহেতু হানিফ সাহেব এ বিষয়ে সরাসরি বলেছেন, আমাদের এ বিষয়টি জানা দরকার।’
তিনি বলেন, “যেটা বলা হয়, যে জাতীয় পার্টির আমলে হুসেনই মুহাম্মদ এরশাদ ১৯৮৮ সালে ৩০ নম্বর আইনের ২ ধারায় বাংলাদেশের সংবিধানের পরিবর্তন উনি নিয়ে এসেছিলেন। সেই ধারাটি হলো ‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম, কিন্তু অন্যান্য ধর্ম প্রজাতন্ত্রে শান্তিতে পালন করা যাবে।’ এই বিষয়টিতে আপনাদের সকলের আপত্তি ছিল, অনেকেই এটাকে দ্বিমত প্রকাশ করেছিলেন। পববর্তীতে এটাকে পরিবর্তন করার জন্য আন্দোলনও হয়েছিল।”
২০১১ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর কথা উল্লেখ করে জি এম কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসলো, তখন সংবিধানকে নতুনভাবে সংশোধন করা হয়। কিন্তু সেই পঞ্চদশ সংশোধনীতে ১৪ নম্বর আইনের ৪ ধারায় বলা হয়েছে ‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। তবে হিন্দু,বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ অন্যান্য ধর্ম পালনে রাষ্ট্র সমমর্যাদা নিশ্চিত করিবেন। এটা আওয়ামী লীগ আমলে করা হয়েছে।
‘আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে আমি মনে করি ওই সংশোধনীর সঙ্গে সংবিধানের মূল ভিত্তি ধর্ম নিরপেক্ষতার কোনো বিরোধ নেই।’
এরশাদের ভাই বলেন, ‘আমার যেটা বিশ্বাস এ দেশের মানুষ স্বাভাবিকভাবেই অসাম্প্রদায়িক। স্বাভাবিকভাবেই তারা ধর্মনিরপেক্ষায় বিশ্বাস করেন। এটা হাজার বছরের আমাদের ঐতিহ্য। কোনো আইন, সংবিধান দ্বারা এটাকে পরিবর্তন আসা সম্ভব নয়।’
শ্রীকৃষ্ণর জন্মদিন, বুদ্ধ পুর্ণিমা ও গুড ফ্রাইডেতে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের দাবি
আলোচনা সভায় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদে সাধারণ সম্পাদক রানাদাশ গুপ্ত। তিনি মহানবী (সা.) এর জন্ম ও মৃত্যু দিবস ঈদে মিলাদুন্নবীতে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের বিধান উল্লেখ করে বাংলাদেশের পতাকা বিধিমালায় সংশোধনী আনার দাবি জানান।
রানাদাশ বলেন, ‘পতাকা বিধিমালায় মহানবীর জন্মদিন পবিত্র ঈদ-এ মিলাদুন্নবীতে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে ধর্মপ্রাণ নাগরিক হিসেবে এতে আমরা সবাই আনন্দিত। এ বিধিমালায় সমগ্র জনগোষ্ঠীর বিশাল একাংশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতি রক্ষায়ও ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এর জন্মদিন শুভ জন্মাষ্টমী, ভগবান বুদ্ধের জন্মদিন শুভ বুদ্ধপূর্ণিমা এবং মহামতি যীশু খ্রিষ্ট্রের জন্মদিন গুড ফ্রাইডের দিনগুলোতেও জাতীয় পতাকা উত্তোলন সম্বলিত বিধি সংযোজন হলে এসব সম্প্রদায়ের সাংবিধানিক সমঅধিকার ও সমমর্য়াদা নিশ্চিত করবে।’
তিনি বলেন, ‘সংবিধানের ১২ নম্বর অনুচ্ছেদে বিধৃত ধর্মনিরপেক্ষতার মৌলনীতি আক্ষরিক অর্থে রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে বাস্তবায়ণ আমাদের সময়ের দাবি।’
অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক হারুন হাবিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল বক্তব্য রাখেন।
স্মরণ সভার শুরুতে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধের সমরনায়ক সি আর দত্তের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে তার জীবন ও কর্ম পাঠ করে শোনানো হয়।
গত বছরের ২৫ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় মারা যান সি আর দত্ত। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের জন্য বীর উত্তম খেতাব পাওয়া এই সেনা কর্মকর্তার জন্ম ১৯২৭ সালের ১ জানুয়ারি আসামের শিলংয়ে।
তিনি হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি।
আরও পড়ুন:ফসলি জমির পানি নিষ্কাশনের দাবিতে মেহেরপুরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার সকালে গাংনী উপজেলার তেরাইল, মহব্বতপুর, বাদিয়াপাড়া, কামারখালি, ষোলটাকা ও সহড়াবাড়িয়া গ্রামের শতাধিক কৃষক জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন।
মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন বামুন্দি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জুলফিকার আলী ভুট্টো। এ সময় বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, বহু বছর ধরে সঠিক পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় প্রতি মৌসুমে হাজার হাজার বিঘা জমির ফসল পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি বা সামান্য প্লাবন হলেই জমি ডুবে যায়। ধান, পাট, শাক-সবজি থেকে শুরু করে সব ধরনের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
কৃষকরা আরও বলেন, সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বহুবার অভিযোগ জানানো হলেও কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে কৃষকরা একদিকে লোকসানের বোঝা বইছেন, অন্যদিকে ঋণের টাকা শোধ করতে হিমশিম খাচ্ছেন। বক্তারা দ্রুত সেচ ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান।
মানববন্ধন শেষে কৃষকরা জেলা প্রশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপিতে দ্রুত খাল খনন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নতকরণ এবং টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্প হাতে নেওয়ার দাবি জানানো হয়।
কৃষকদের দাবি, সরকার যদি দ্রুত উদ্যোগ না নেয়, তবে আগামী মৌসুমে আরও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে এ অঞ্চলের কৃষক-সমাজ।
জামালপুরে বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিক সমিতির নির্বাচন উপলক্ষে মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরু হয়েছে।
রোববার দুপুরে জামালপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ে এই ফরম বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়।
প্রথম দিনে সিভিল সার্জন ডা. আজিজুল হকের কাছ থেকে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন হজরত শাহ জামাল (র.) জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল ইসলাম বুলবুল। বুলবুল জানান, বিগত দিনে নির্বাচন ছাড়া কমিটি করা হয়েছিল। এ ক্ষেত্রে আমরা বঞ্চিত হয়েছিলাম। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে নির্বাচনের যে তফসিল ঘোষণা হয়েছে সেই অনুযায়ী সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি আরও বলেন, একটি মহল নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। কেউ যাতে পকেট কমিটি করতে না পারে সে ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. আজিজুল হক জানান, নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ইতোমধ্যেই সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আজ (রোববার) থেকে মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরু হয়েছে এবং জমা দেওয়ার শেষ সময় ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত। আগামী ৪ অক্টোবর ভোট গ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
কেরানীগঞ্জে দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় ধরে মানবিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা রাখছে কেরানীগঞ্জ ব্লাড ডোনার্স ক্লাব। রক্তের অভাবে বিপদে পড়া মানুষদের পাশে দাঁড়ানো থেকে শুরু করে চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দেওয়া, সবখানেই তারা পরিচিত এক আস্থার নাম।
২০১৪ সালে সূচনা হওয়ার পর থেকে সংগঠনটি নিয়মিত রক্তদান কর্মসূচি চালিয়ে আসছে। এ পর্যন্ত প্রায় ১৭ হাজার মানুষকে রক্তের গ্রুপ পরীক্ষার সেবা দেওয়া হয়েছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় ও কার্ড প্রদান কার্যক্রম স্থানীয়ভাবে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে।
সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা শুধু রক্তদানেই সীমাবদ্ধ নয়, নানা সময়ে বিনা মূল্যে মেডিকেল ক্যাম্প আয়োজন করছে। এসব ক্যাম্পে হেপাটাইটিস বি ভাইরাস, ডায়াবেটিস, রক্তচাপ পরীক্ষা এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ বিতরণ করা হয়। অসুস্থ ও অসচ্ছল রোগীদের জন্য তাদের এই উদ্যোগ অনেক পরিবারকে উপকৃত করছে।
সংগঠনের অন্যতম সদস্য সুমন আহমেদ জানান, মানুষের পাশে থাকা এবং মানবিক কাজের ধারা অব্যাহত রাখা আমাদের মূল লক্ষ্য। আমরা মনে করি, সমাজের বিত্তবানরা সহযোগিতার হাত বাড়ালে এই কার্যক্রম আরও বিস্তৃত হবে।
বর্তমানে কেরানীগঞ্জ ব্লাড ডোনার্স ক্লাব তরুণ প্রজন্মকে সামাজিক কাজে সম্পৃক্ত করতে সচেতনতামূলক কার্যক্রমও পরিচালনা করছে। দুর্যোগকালীন ত্রাণ বিতরণ, জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও চিকিৎসা সহায়তা সব মিলিয়ে এটি কেরানীগঞ্জের মানুষের কাছে একটি নির্ভরযোগ্য সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
সংগঠনের সদস্য শাহাদাৎ হোসেন বলেন, আমরা শুরু থেকেই চেষ্টা করেছি মানুষের বিপদে পাশে থাকতে। রক্তের অভাবে যেন কোনো মানুষ কষ্ট না পায়, সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছি। আজকে সাধারণ মানুষ আমাদের পাশে আছে বলেই কেরানীগঞ্জ ব্লাড ডোনার্স ক্লাব এ পর্যন্ত এতটা পথ এগোতে পেরেছে। আগামীতেও মানবিক সেবা অব্যাহত রাখতে চাই।
সামাজিক সংগঠক মহল বলছে, ব্লাড ডোনার্স ক্লাব ইতোমধ্যে কেরানীগঞ্জে মানবিক কাজের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ভবিষ্যতে এই সংগঠন যদি আরও সহায়তা পায় তবে মানবতার সেবায় বড় ভূমিকা রাখতে পারবে।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিলে ভোটগ্রহণ শেষে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়েছে। গত শনিবার সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার মো. রেদোয়ান খান এ ফলাফল ঘোষণা করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ জি. কে. গউছ, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি এম নাসের রহমান, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফয়জুল করিম ময়ুন, সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপন, সদস্য অ্যাডভোকেট আবেদ রাজাসহ বিএনপির অন্যান্য নেতারা।
ফলাফলে সভাপতি পদে মো. জয়নাল আবেদীন বাচ্চু ৪৯৩ ভোট, সিনিয়র সহসভাপতি পদে মো. আব্দুল জলিল জামাল ৩৬০ ভোট, সাধারণ সম্পাদক পদে বদরুজ্জামান সজল ৩৯২ ভোট, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে কমর উদ্দিন আহমদ কমরু ৪১৮ ভোট এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মো. আব্দুল মুক্তাদির মনু ৩২৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। দীর্ঘদিন পর হওয়া এ নির্বাচনী কাউন্সিলে নেতা-কর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়।
আগামীকাল ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ দুপুর ২:০০ টা থেকে পদ্মা সেতুতে লাইভ পাইলটিং আকারে চালু হচ্ছে আধুনিক নন-স্টপ ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন (ETC) সিস্টেম। এ সিস্টেমের মাধ্যমে গাড়ি থামানো ছাড়াই নির্ধারিত লেন ব্যবহার করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে টোল পরিশোধ করে সেতু পার হওয়া যাবে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান-এর বিশেষ নির্দেশনায় পদ্মা সেতুতে ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন (ইটিসি) সিস্টেম চালু হচ্ছে।
ইটিসি সিস্টেমে আগ্রহী ব্যবহারকারীগণকে প্রথমে ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড এর TAP অ্যাপ-এ গিয়ে “D-Toll” অপশনে গাড়ি রেজিস্ট্রেশন ও রিচার্জ সম্পন্ন করতে হবে। এরপর পদ্মা সেতুর RFID বুথে শুধু প্রথমবারের মতো RFID ট্যাগ চেক ও রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম শেষ করতে হবে।
প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে গাড়ি ব্যবহারকারীগণ ন্যূনতম ৩০ কিলোমিটার/ঘণ্টা গতিতে ETC লেন ব্যবহার করতে পারবেন। এ সময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যবহারকারীর একাউন্ট থেকে নির্ধারিত টোল কর্তন হবে।
ভবিষ্যতে TAP এর পাশাপাশি অন্যান্য ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাপও এই সেবার সঙ্গে যুক্ত হবে মর্মে আশা করা যায়। TAP সহ বিভিন্ন ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাপের সাথে যুক্ত হওয়ার জন্য কাজ করছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের a2i (এটুআই)।
আনোয়ারা উপজেলায় লায়ন্স ক্লাব অব চিটাগাং কর্ণফুলীর উদ্যোগে আয়োজন করা হয়েছে বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি।
রোববার সকালে উপজেলার রায়পুর গাউছিয়া হাশেমীয়া আলিম মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। ক্যাম্পে মাদ্রাসার এক হাজারের অধিক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের জন্য বিনা মূল্যে বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হয়।
সেবার মধ্যে ছিল রক্তের গ্রুপ নির্ণয়, ডায়াবেটিস পরীক্ষা, চক্ষু পরীক্ষা, ক্যান্সার সচেতনতা ও প্রাথমিক পরীক্ষা এবং ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়াবিষয়ক পরামর্শ।
অনুষ্ঠানে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোহাম্মদ সোলাইমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে লায়ন্স ইন্টারন্যাশনালের জেলা গভর্নর লায়ন মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ অপু, বিশেষ অতিথি হিসেবে প্রথম সহকারী জেলা গভর্নর লায়ন মো. কামরুজ্জামান লিটন, দ্বিতীয় সহকারী জেলা গভর্নর লায়ন মোহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক, লায়ন্স ক্লাব অব চিটাগাং কর্ণফুলীর সভাপতি লায়ন মো. ইকবাল হোসেন সুমন, রায়পুর গাউছিয়া হাশেমীয়া আলিম মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি লায়ন মোহাম্মদ ফয়সাল মিয়া।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন লায়ন্স ইন্টারন্যাশনালের জেলা গভর্নর লায়ন মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ অপু। তিনি বলেন, লায়ন্স ইন্টারন্যাশনাল বিশ্বব্যাপী ২১২টি দেশে মানুষের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশেও আমরা সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে চেষ্টা করছি। এ স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচি তারই অংশ। পাশাপাশি আয়োজনে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা রোপণ করা হয়। এই ধরনের সামাজিক ও মানবিক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
কুমিল্লা নগরীর শান্ত ভোর মুহূর্তেই পরিণত হচ্ছে ছিনতাই আতঙ্কে। শহর পুরোপুরি ঘুম থেকে জাগার আগেই সকালের পথচারী ও বিভিন্ন পেশাজীবীরা পড়ছেন ছিনতাইকারীদের খপ্পরে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোরের ফাঁকা সড়ককে টার্গেট করছে ছিনতাইকারীরা। মোটরসাইকেলে এসে ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মুহূর্তেই লুটে নিচ্ছে সর্বস্ব। কখনো কখনো তারা টার্গেট করা ব্যক্তিকে কুপিয়ে আহতও করছে। এতে নগরবাসীর মধ্যে তীব্র উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।
রোববার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে নগরীর কাপ্তান বাজার এলাকার বাসিন্দা মো. মঈনুল ইসলাম ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হন। পথে একটি সিএনজিতে উঠতেই তিনি ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন। সিএনজির ভেতরে থাকা দুই ব্যক্তি ছুরি ধরে মঈনুলের কাছ থেকে নগদ টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয় এবং আঘাত করে আহত করে। থানায় গেলেও আশানুরূপ সহযোগিতা পাননি তিনি। শুধু একটি মোবাইল ফোন হারানোর সাধারণ ডায়েরি করতে বলা হয়। এক সপ্তাহ পার হলেও এখনো ছিনতাইকারীরা ধরা পড়েনি।
দেড় মাস আগে কক্সবাজার ভ্রমণ শেষে বাড়ি ফেরার পথে একইভাবে ছিনতাইয়ের শিকার হন কালীপদ দেবনাথ ও তার বন্ধু পলাশ দে। সালাউদ্দিন মোড়ে অস্ত্রের মুখে তাদের কাছ থেকেও মোবাইল ও মূল্যবান সামগ্রী ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। থানায় অভিযোগ করা হলেও সেই চক্রও এখনো ধরা পড়েনি।
গত কয়েক মাস ধরে নগরীতে ভোর হলেই এমন ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। থানায় ও গণমাধ্যমে এসব বিষয়ে নিয়মিত মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ আসছে। তবে অনেকেই ঝামেলা এড়াতে ঘটনাগুলো গোপন রাখছেন।
নগরীর ঠাকুরপাড়া বিসিক এলাকার বাসিন্দা আবুল হোসেন জানান, ভোর হলেই ঠাকুরপাড়া ও রানীরবাজার এলাকার বিভিন্ন মোড়ে ছিনতাইকারীরা ওৎ পেতে থাকে। রিকশায় বা হেঁটে যাতায়াতকারী কাউকে দেখলেই অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয় তারা।
সম্প্রতি পুলিশ সুপারের বাসভবনের সামনে ছিনতাইয়ের একটি ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, রোববার রাত সোয়া ৩টার দিকে মোটরসাইকেলে আসা তিন ছিনতাইকারী এক অটো রিকশা যাত্রীর মোবাইল ফোন ও টাকা ছিনিয়ে নিচ্ছে।
৭ আগস্ট ভোরে টমছম ব্রিজ সংলগ্ন কাসেমুল উলুম মাদ্রাসার পাশে এক মাদ্রাসার শিক্ষক ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন। দুর্বৃত্তরা তার কাছ থেকেও নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। এর আগে, ৪ আগস্ট ভোরে শাসনগাছা এলাকায় চান্দিনার বাসিন্দা ইব্রাহীম একইভাবে ছিনতাইয়ের শিকার হন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বর্তমানে নগরীতে কুড়িটির বেশি ছিনতাইকারী গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। এদের অধিকাংশই মাদকাসক্ত। মাদকের টাকা জোগাড় করতেই তারা ছিনতাইয়ে জড়াচ্ছে। তাদের অনেকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা রয়েছে।
এদিকে নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বসানো সিসিটিভি ক্যামেরার বেশিরভাগই অকার্যকর। কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এসব ক্যামেরা মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. মহিনুল ইসলাম স্বীকার করেছেন- নগরীতে ছিনতাই বেড়েছে এবং ছিনতাইকারী ধরা পড়েছেও। তিনি জানান, গত এক বছরে ৪০ জন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য, গাড়ি ও কার্যকর সিসিটিভি না থাকায় টহল জোরদার করা যাচ্ছে না। লজিস্টিক সহায়তা বাড়ানো গেলে ছিনতাই প্রতিরোধে আরও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হতো।
মন্তব্য