গোপালগঞ্জে ৭৬ কেজি বোমা পুঁতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার যে চেষ্টা হয়েছিল, সেই বোমাটি খুঁজে পাওয়া যায় যার কারণে, তিনি একজন সাধারণ চা বিক্রেতা।
২০০০ সালের ২০ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলের পাশে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখা হয়। ৪০ কেজি ওজনের আরও একটি বোমা পোঁতা হয় হয় তখন।
লুৎফর রহমান মহাবিদ্যালয়ের উত্তর পাশে হেলিপ্যাডের কাছে পোঁতা হয় বড় বোমাটি। জনসভায় যোগ দিতে হেলিকপ্টারে করে আসা বঙ্গবন্ধু কন্যার নামার কথা ছিল সেখানে। আর ছোট বোমাটি পোতা হয় জনসভাস্থলে।
ঘটনার আগের সকালে চায়ের দোকানি বদিউজ্জামান সরদার ঘটনাক্রমে বোমার তারটি খুঁজে পান। এর সূত্র ধরেই এই বোমাটি এবং পরে আরও একটি বোমা পাওয়া যায়।
বোমাটি যখন সেনাবাহিনীর বিশেষজ্ঞ দল খুঁজে যায়, তখন তারা এর শক্তি সম্পর্কে বুঝতে পারে। এটি বিস্ফোরিত হলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে, এই আশঙ্কায় দুই কিলোমিটারের মতো এলাকা থেকে সরানো হয় জনসাধারণকে।
বাবা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার ছয় বছর পর ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা দেশে ফেরার পর এখন পর্যন্ত ১৯ বার হত্যাচেষ্টার অভিযোগ করছে তার দল। এসব ঘটনায় অন্তত ১৩টি মামলার তথ্য পাওয়া যায়। এর মধ্যে রায় হয়েছে ছয়টির। সাতটি এখনও বিচারাধীন।
আর যে ছয়টি মামলায় রায় হয়েছে, তার মধ্যে কেবল কোটালীপাড়ায় বোমা হামলা মামলার নিষ্পত্তি হলো হাইকোর্টে। এখন বাকি আপিলের মীমাংসা।
এই মামলায় ১০ জনের প্রাণদণ্ডের আদেশ এসেছিল বিচারিক আদালত থেকে। হাইকোর্ট রায় বহাল রাখার দিন সেই দোকানের পাশে বসে বদি স্মৃতিচারণ করেন নিউজবাংলার কাছে।
তিনি বলেন, ‘সকালবেলা ফজরের নামাজের পড়ে আমি দুকান খলি। দুকান খুইলা মালামাল বাইর কইরা কলসি নিয়া পানি আনতে যাই।
‘আমার দুকানের দক্ষিণখানে আমার ঘাট আছিল। তিনখান গাছ দিয়া একটা ঘাট আছিল। সেই ঘাটে পানি আনতে গেলে একটা তার দেখতে পাই।
‘তারটি ধরলে দেখা গেল, তিনটা গাছের নিচ দিয়া নিছে তারটা। একটা মাথা গেছে দক্ষিণ দিয়া, এক মাথা গেছে উত্তর দিকে।
‘দক্ষিণ সাইডের অংশডা টাইনা আমি তার গুছাইয়া ঘাটের পারে রাখলাম। উত্তর মাথার দিকে দেখলাম দোকানের পিছন দিয়া রাস্তার দিকে ওপরে উঠছে।
‘পরবর্তীতে আমি ওইডা থুইয়া দোকানে পানি নিয়া চইলা আইলাম কলসি নিয়া।’
এরপর কোটালীপাড়া পৌরসভার মেয়র কামাল হোসেন ঘটনাস্থলে যান।
শেখ হাসিনার হেলিকপ্টার অবতরণের জন্য যে হেলিপ্যাড তৈরি করা হচ্ছিল, সেখান থেকে জনসভাস্থলে যেতে রাস্তার কাজ তদারক করছিলেন তিনি।
বদিউজ্জামান বলেন, ‘মেয়র মহোদয় আইলেন, কামাল সাব, তারে দেহাইলাম।…সে আমারে বলল, ভাডি (ভাই) এইডা থাকুক, কেউ যেন না ধরে। আমি পার্টি অফিসে যাইয়া থানায় ফোন করব আনে।’
এর কিছুক্ষণ পরে পুলিশ এসে বদিউজ্জামানের দোকান বন্ধ করতে বলে।
তিনি বলেন, ‘থানার থেইক্যা যে দারোগা সাব আসল, দুইজন লোক নিয়া, তার ধইরা টানাটানি করল। তার ছিইড়া গেল। দক্ষিণ দিকের যে অংশডা, ওই অংশডা টানাটানি করলে আর আসে না।
‘একটা গোজার পেচাইয়া দক্ষিণ মাথাত যাইয়া একটা তাল গাছের গোড়া পানির মইদ্যে ডুবাইয়া রাখছিল। পরে তারটা উটাইয়া আমার দোকানে থুইল।
‘আমারে কইল, ‘‘তুমার দোকানে ইয়া থাক, দোকান খোলার দরকার নাই। বেচাকেনার দরকার নাই।‘”
বদিউজ্জামান বলেন, ‘পুলিশ পিছন দিয়া খুঁজতে খুঁজতে যেই রোডের দিকে ওপরে উঠল, দেখল একটা পলিথিন। তহন লোকজন সরাইয়া দিয়া পুলিশ চতুর্দিকে ইয়ে করল।’
পরে কোটালীপাড়া থানা পুলিশ সন্দেহজনক ঘটনাটি জানায় সদরদপ্তরে। সেখান থেকে জানানো হয় সরকারকে। আর সেনাবাহিনীর বোমা নিষ্ক্রিয় দল যায় ঘটনাস্থলে।
বদিউজ্জামান বলেন, ‘রাত্রেবেলা আর্মির একটা টিম আসল। তারা আইসা ই-টি করল, উঠাইল।
‘যহনই আর্মি উঠাইতে গেল, তহন মিটার দিয়া মাপ দিছে, যেডুকুই আসল, বেশি উইঠা গেল। তহন আর্মি ভয় পাইয়া গেল। অত বড় জিনিস এই জায়গায় কী আছে।
‘লোকজন সরাইয়া দিয়া রাইতের বেলায় উঠাইল, ৭২ কেজির (আসলে ৭৬ কেজির) বোমা। পরবর্তীতে আরেকটা পাওয়া গেল। হ্যালিপেডের পূর্ব সাইডে, আমি এই জায়গায় ছিলাম না, থানায় ছিলাম।’
রায় ঘোষণার খবরে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বদিউজ্জামান বলেন, ‘রায় ঘোষণা হইছে, খুশি লাগতাছে। ভালো লাগতাছে। যারা নিরপেক্ষ, তারা মুক্তি পাক, যারা এই কাজ করছে, তাদের শাস্তি হওয়া উচিত। ভবিষ্যতে কোনো দিন যেন কেউ কিছু করতে না পারে।’
রায়ের খুশিতে এলাকায় মিছিল, মিষ্টি বিতরণ
এই মামলায় ২০১৭ সালের ২০ আগস্ট রায় হয়েছিল বিচারিক আদালতে। সাড়ে তিন বছর পর রায় এল হাইকোর্ট থেকে।
এখন আপিল বিভাগে আবেদন করার সুযোগ পাবেন দণ্ডিতরা। সেই রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউয়ের সুযোগ আছে। সবশেষ রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার আইনি সুযোগও পাবেন সাজাপ্রাপ্তরা।
কোটালীপাড়াবাসী অবশ্য অত কিছু নিয়ে ভাবছেন না। রায় হয়েছে, তাতেই খুশি তারা।
হাইকোর্টের আদেশ প্রচার হওয়ার পর পর আনন্দ মিছিল হয়েছে এলাকায়। হয়েছে মিষ্টি বিতরণ।
উপজেলা চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই রায়ের কারণে কিছুটা হলেও কলঙ্কমুক্ত হতে পেরেছি। প্রধানমন্ত্রী তার নিজ এলাকায় কোনো প্রকারের সিকিউরিটি ছাড়াই চলে ফিরে বেড়াতেন। কিন্তু এই কোটালীপাড়ার কিছু বিপথগামী লোক তাকে হত্যার চেষ্টা করে যেটা আমাদের জন্য ছিল লজ্জাজনক একটি ঘটনা।
‘আজকের রায়ে আমরা গোপালগঞ্জবাসী তথা সারা দেশের মানুষ অনেক আনন্দিত।’
যে সমাবেশে হামলার জন্য বোমা দুটি পোঁতা হয়েছিল, সেটি হওয়ার কথা ছিল শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ সরকারি কলেজ মাঠে।
কলেজ সংসদের তৎকালীন ক্রীড়া সম্পাদক জুয়েল সরদার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার যে পরিকল্পনা করা হয়েছিল তার উপযুক্ত বিচার হয়েছে। আমরা অনেক অনেক খুশি।’
তিনি বলেন, ‘এই ঘটনার দিন সেনাবাহিনী মাইকিং করে ঘটনাস্থল থেকে চারপাশে দুই কিলোমিটার পর্যন্ত জনশূন্য করে রেখেছিল। তাদের ধারণা ছিল, এই বোমা এতটা শক্তিশালী যে এটি ব্লাস্ট হলে দুই কিলোমিটারের মধ্যে যা আছে সব ধ্বংস হয়ে যাবে। সেদিনের সেই বিভীষিকাময় দিনের কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে ওঠে।’
আরও পড়ুন:আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার ইসি মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।
তিনি বলেন, ‘আইনগতভাবে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। স্থগিত দল হওয়া মানে তাদের যাবতীয় কার্যক্রম স্থগিত। তাই আগামী নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করতে পারবে না।’
তিনি আজ রোববার সকালে সিলেটে সাংবাদিকদের এই কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশনার জেলা পুলিশ লাইনে নির্বাচনী দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধিতে আয়োজিত প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’র প্রতীক সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রতীক নির্ধারণ সংবিধান ও নির্বাচনী বিধিমালার আওতায় করা হয়। শাপলা প্রতীক সেই তালিকায় নেই।
তাই তা বরাদ্দ দেওয়ার সুযোগও নেই।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে না হওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
নির্বাচনকে সামনে রেখে সব বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোনো চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকবে না বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ইসি আনোয়ারুল বলেন, ‘অতীতের মতো বিতর্কিত নির্বাচন আর হবে না। সবার সহযোগিতায় একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিতর্কিত বা প্রশ্নবিদ্ধ কোনো কর্মকর্তা যাতে নির্বাচনী দায়িত্বে না থাকেন, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কঠোর অবস্থানে রয়েছে।’ সূত্র: বাসস
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটওয়ারীকে।
অন্য সদস্যরা হলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রথম সচিব মুঃ রইচ উদ্দিন খান ও মোঃ তারেক হাসান এবং ঢাকা কাস্টম হাউসের যুগ্ম কমিশনার মুহাম্মদ কামরুল হাসান। কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের উপসচিব পঙ্কজ বড়ুয়া।
কমিটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে সরকারের কাছে প্রতিবেদন দেবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডও বিশেষ ব্যবস্থায় ঢাকা কাস্টম হাউসে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম অব্যাহত রাখার উদ্যোগ নিয়েছে। সূত্র: বাসস
গত ১৬ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড SRO No-404-Law/2025 এর মাধ্যমে বাংলা ভাষায় প্রণীত আয়কর আইন, ২০২৩ এর Authentic English Text সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে।
আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ বাতিল করে ২০২৩ সালে বাংলা আয়কর আইন, ২০২৩ প্রণয়ন করার পর হতেই বিদেশি বিনিয়োগকারীগণ সরকারি গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে আয়কর আইনের Authentic English Text প্রকাশের দাবি জানাচ্ছিলেন।
আয়কর আইনের Authentic English Text না থাকায় বিদেশী বিনিয়োগকারীগণ আইনের সঠিক ব্যাখ্যা ও অনুশীলনের বিষয়ে সংশয়ের মধ্যে থাকতেন এবং বিভিন্ন আইনি জটিলতার সম্মুখীন হতেন।
আয়কর আইনের Authentic English Text সরকারী গেজেটে প্রকাশ হবার ফলে দেশী-বিদেশি বিনিয়োগকারীগণ আয়কর আইন সম্পর্কে স্বচ্ছ ব্যাখ্যা পাবেন বিধায় করদাতাগণের আস্থা অধিকতর বৃদ্ধি পাবে এবং আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে দ্ব্যর্থবোধকতা দূর করে স্বচ্ছতা ও সঠিকতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
কাস্টমস আইন, ২০২৩ এবং মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর Authentic English Text সরকারি গেজেটে প্রকাশের প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। অচিরেই এই দুটি আইনের Authentic English Text সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশের মাধ্যমে দেশি-বিদেশী বিনিয়োগকারীগনের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটবে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশা করছে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের আওতাধীন পদ্মা সেতুতে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ক্যাশলেস, টোল কালেক্টর ব্যতীত ননস্টপ ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন (ETC) সিস্টেম চালু করা হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের টোল পরিশোধ প্রক্রিয়া আরও দ্রুত, স্বচ্ছ ও ডিজিটাল ব্যবস্থার আওতায় এসেছে।
বর্তমানে বিকাশ, ট্রাস্ট ব্যাংকের TAP অ্যাপ এবং মিডল্যান্ড ব্যাংকের অ্যাপ এর মাধ্যমে পদ্মা সেতুর টোল পরিশোধ করা যাচ্ছে। ব্যবহারকারীরা বিকাশ অ্যাপে গিয়ে “টোল” অপশনের অধীনে “মোটরযান রেজিস্ট্রেশন করুন” এ প্রবেশ করে গাড়ির নম্বর ও চেসিস নম্বরের শেষ ৪ (চার) ডিজিট প্রদান করে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে পারবেন। সফল রেজিস্ট্রেশনের পর ফিরতি এসএমএসে একটি Ekpass ID প্রেরণ করা হবে।
এই Ekpass ID ব্যবহার করে বিকাশ অ্যাপের “Pay Bill” অপশনের “D-Toll Top-Up” সেবার মাধ্যমে রিচার্জ করতে হবে। এরপর পদ্মা সেতুর মাওয়া টোল প্লাজার নিকটস্থ রেজিস্ট্রেশন বুথে বিআরটিএ অনুমোদিত RFID ট্যাগ প্রথমবারের মতো যাচাই করে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। একবার রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে, যানবাহন কমপক্ষে ৩০ কিলোমিটার/ঘণ্টা গতিতে ETC লেন ব্যবহার করে নির্বিঘ্নে পারাপার হতে পারবে।
১৮ অক্টোবর সেতু বিভাগের সচিব এবং বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক জনাব মোহাম্মদ আবদুর রউফ পদ্মা সেতুর ইটিসি বুথ পরিদর্শন করেন এবং ইটিসি সেবা ব্যবহার করে পদ্মা সেতু পারাপার করেন।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে ট্রাস্ট ব্যাংকের TAP অ্যাপের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর ETC সিস্টেমের লাইভ পাইলটিং কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর থেকে ধীরে ধীরে এই সেবার পরিসর বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতোমধ্যে ETC সিস্টেমের মাধ্যমে মোট ১,৮১৪টি যানবাহন পারাপার হয়েছে এবং মোট ৩৪,৯১,৭০০ টাকা টোল আদায় সম্পন্ন হয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান মহোদয়ের বিশেষ নির্দেশনা ও দিকনির্দেশনায় পদ্মা সেতুতে এই ETC সিস্টেম বাস্তবায়িত হয়েছে। এটি দেশের টোল ব্যবস্থাপনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক, যা সময়, জ্বালানি ও মানবসম্পদের অপচয় হ্রাসে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
ভবিষ্যতে আরও বিভিন্ন ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাপ এই সেবার আওতায় যুক্ত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ-এর a2i (এটুআই) কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং নতুন ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডারদের সাথে সংযুক্তির কাজ অব্যাহত রয়েছে।
এই টোল কালেক্টর ব্যতীত নন স্টপ ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন সিস্টেমের মাধ্যমে পদ্মা সেতু ব্যবহারকারীরা দ্রুত, নিরাপদ ও স্বচ্ছভাবে টোল পরিশোধ করতে পারবেন—যা বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তরের যাত্রায় একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ এবং ২০২১ সালের মার্চ মাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি দমনে পরিচালিত হত্যাকাণ্ডে শাহাদাতবরণকারী শহিদ পরিবারের সদস্যদের মাঝে চেক বিতরণ অনুষ্ঠান ২০২৫ আজ ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রধান অতিথি হিসেবে এবং ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা ডা. আ ফ ম খালিদ হোসেন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞে শহিদ ৫৮ টি পরিবার এবং ২০২১ সালের মার্চ মাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি দমনে পরিচালিত হত্যাকাণ্ডে শহিদ ১৯টি পরিবারের সদস্যদের মাঝে পরিবার প্রতি ১০ লক্ষ টাকা করে, মোট ৭ কোটি ৭০ লক্ষ টাকার চেক প্রদান করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, "শহীদদের রক্ত কখনো বৃথা যায় না। ঐতিহাসিক শাপলা চত্বর এবং মোদি বিরোধী আন্দোলনে শহীদদের আজকের এই স্বীকৃতি তারই প্রমাণ।" শহীদ পরিবারদেরকে স্বীকৃতি দিতে পেরে সরকার গর্বিত উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন ইতিহাস থেকে যেনো কেউ ঐতিহাসিক শাপলা চত্বরের শহীদদের নাম মুছতে না পারে, এজন্য শাপলা চত্বরেই খোদাই করে লেখা হবে শহীদদের নাম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ডা. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন,"শাপলা চত্বর এবং মোদি বিরোধী আন্দোলনে শহিদদের আর্থিক সহায়তা প্রদান স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এক ঐতিহাসিক উদ্যোগ।" এই উদ্যোগের মাধ্যমে দুই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার স্বীকৃতি দেওয়ার প্রক্রিয়ার সূচনা হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
২০১৩ সালের শাপলা চত্বরের হত্যাযজ্ঞ এবং ২০২১ সালের মোদি বিরোধী বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে শাহাদতবরণকারী শহিদ পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে আন্তরিক সাধুবাদ জানিয়ে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মাওলানা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, "স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার এই মহতী উদ্যোগে সারা বাংলার আলেম সমাজ সম্মানিত হয়েছে। "
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব জনাব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, এবি পার্টির চেয়ারম্যান জনাব মজিবুর রহমান ভূঁইয়া মঞ্জু, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি জনাব নুরুল হক নুর, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা সাজিদুর রহমান এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক জনাব মোঃ শাহজাহান মিয়া।
‘জুলাই সনদ’ স্বাক্ষরকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঐক্য ও সংস্কারের পথে বড় ধরনের অগ্রগতি হিসেবে অভিহিত করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার।
তিনি আরও বলেন, এটি ২০২৬ সালের নির্বাচনের প্রস্তুতিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে।
শুক্রবার ফেসবুক পোস্টে মিলার লেখেন, ‘জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পেরে আমি আনন্দিত। এই দলিল মৌলিক সংস্কার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গড়ে ওঠা ব্যাপক ঐকমত্যের প্রতিফলন।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পালাবদলের এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। ২০২৬ সালের নির্বাচনের পথে দেশটি ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাচ্ছে এটি তারই প্রমাণ।
‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ মোট ২৫টি রাজনৈতিক দল যোগ দেয়।
অনুষ্ঠানে মিলারের উপস্থিতি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ও শাসনব্যবস্থা সংস্কারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগীতা অব্যাহত রাখার ইঙ্গিত বহন করে।
সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও প্রাতিষ্ঠানিক জবাবদিহিতা বাড়াতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছে।
সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশে অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিতের পক্ষে তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে।
এ লক্ষ্যে ইইউ কারিগরি সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনে নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর প্রস্তাবও দিয়েছে। এসব উদ্যোগ গণতান্ত্রিক চর্চা ও টেকসই উন্নয়নের প্রতি ইইউর প্রতিশ্রুতির অংশ। সূত্র: বাসস
ইতালির রোমে অনুষ্ঠেয় বিশ্ব খাদ্য ফোরাম ২০২৫-এ যোগ দিয়েছেন কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল। প্রতিনিধিদলে আরও রয়েছেন কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান ও অতিরিক্ত সচিব (পিপিসি উইং) ড. মো. মাহমুদুর রহমান।
উপদেষ্টার নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল ফোরামে দেশের কৃষি, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিয়ে পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময় ও সদস্য দেশসমূহের সাথে বিভিন্ন সেশনে অংশগ্রহণ করবে। সফরকালে স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা ইতালির ইন্টেরিয়র মিনিস্টার এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ইতালির রোমস্থ জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিতব্য এ ফোরাম ১০ অক্টোবর শুরু হয়ে চলবে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত। সূত্র: বাসস
মন্তব্য