দিনাজপুর, কক্সবাজারসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামকে মাদকমুক্ত করতে পাইলট প্রকল্প নিয়েছে সরকার। পর্যায়ক্রমে সব জেলাতেই এই কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে বলেও জানিয়েছে সরকার।
বুধবার সচিবালয়ের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়নের এখনও কমিটি গঠন করা হয়নি বলে জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘গ্রেটার (বৃহত্তর) দিনাজপুর এবং কক্সবাজারসহ চিটাগাং জোনকে মাদকমুক্ত করার জন্য পাইলট প্রজেক্টের (প্রকল্প) সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবকে প্রধান করে কার্যপরিধি, কার্যপদ্ধতি ইত্যাদি ঠিক করে অ্যাডিশনাল আইজির (পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক) নেতৃত্বে কমিটি গঠন করা হবে।
‘মাদকমুক্ত এলাকা ঘোষণা করার জন্য যা যা পদক্ষেপ নেয়ার, তারা নেবেন। পর্যায়ক্রমে সারা বাংলাদেশকে আমরা এই প্রজেক্টের আওতায় আনতে চাচ্ছি।’
প্রকল্প বাস্তবায়নে কমিটির মূল কাজ কী হবে- এমন প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রকল্পের কাজ হবে তিনটি দিককে চিহ্নিত করা এবং তাদের দমন করা- মাদকসেবী, মাদকবিক্রেতা এবং যারা মাদকের কাজে বুঝে বা না বুঝে সহযোগিতা করে।’
মাদক প্রসঙ্গে আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক মন্ত্রিসভার উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘মাদককে যাতে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়, সে ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। আজকের সভার মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে পরামর্শ ও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে মাদক প্রতিরোধে গঠিত কমিটি এক বছর ধরে নিষ্ক্রিয় উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে প্রত্যেক উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি করে কমিটি ছিল। সেগুলোর সক্রিয়তা বাড়াতে, জনমত সৃষ্টিতে, যুব সমাজকে অনুপ্রেরণা দিতে এবং তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ আটজনকে খালাস দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
বেগম খালেদা জিয়াসহ অন্যদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যপ্রমাণে সব অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় আদালত তাদের মামলার দায় থেকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক রবিউল আলম বুধবার এ রায় ঘোষণা করেন।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী জিয়া উদ্দিন জিয়া বাসসকে খালাসের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
খালাস পাওয়া অন্যরা হলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল করপোরেশনের চেয়ারম্যান সেলিম ভূঁইয়া ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তৎকালীন সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের নামে মামলা করেন। কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতিসাধনের অভিযোগে এ মামলা হয়।
এরপর ২০১৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। এতে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতিসাধনের অভিযোগ আনা হয়।
২০২৩ সালের ১৯ মার্চ বিচারক আসামিদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ গঠন করেন।
অন্যদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন ও বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় মামলা থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ মামলার বিচার চলাকালীন ৬৮ সাক্ষীর মধ্যে ৩৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
আরও পড়ুন:খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) হামলার ঘটনায় জড়িতদের দ্রুতই আইনের আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।
এরই মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এ সংক্রান্ত নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজে বুধবার তারুণ্যের উৎসবে যোগ দিয়ে এ কথা বলেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপাতত আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ নেই। আগে তাদের বিচার করতে হবে। আওয়ামী লীগের মতো দলকে নির্মূল করা উচিত।
এর আগে মঙ্গলবার ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি ঘিরে দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ঘণ্টাব্যাপী চলা এ সংঘর্ষে আহত হন অন্তত অর্ধশত শিক্ষার্থী। তাদের অধিকাংশের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে।
এ ঘটনায় দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে খুলনার দৌলতপুর থানা যুবদলের সহসভাপতি মাহবুবুর রহমানকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বুধবার জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির দপ্তর সম্পাদক নুরুল ইসলাম সোহেল স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে খুলনা জেলা শাখার দৌলতপুর থানা যুবদলের সহসভাপতি মাহবুবুর রহমানকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃত নেতাদের কোনো অপকর্মের দায়দায়িত্ব দল নেবে না। যুবদলের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের তার সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, যুবদল সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন এরই মধ্যে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছেন।
আরও পড়ুন:যুবসমাজের জন্য সার্বজনীন সামরিক প্রশিক্ষণের প্রস্তাব দিয়েছেন জেলা প্রশাসকরা (ডিসি), যাতে দেশের প্রতিরক্ষায় যুবসমাজ অংশগ্রহণ করতে পারেন।
ওসমানী মিলনায়তনে মঙ্গলবার ডিসি সম্মেলনে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ সংক্রান্ত অধিবেশনে তারা এ প্রস্তাব দেন।
অধিবেশন শেষে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আবদুল হাফিজ সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
তিনি বলেন, ‘সিভিল মিলিটারি কোঅপারেশন কীভাবে বৃদ্ধি করা যায়, সে বিষয়ে জেলা প্রশাসকরা প্রশ্ন করেছিলেন। সিভিল প্রশাসনের অফিসাররা যে অরিয়েন্টেশন করেন, ডিভিশন পর্যায়ে এই অরিয়েন্টেশনগুলা করা সম্ভব কি না, যাতে সিভিল প্রশাসনের সঙ্গে সামরিক বাহিনী বা সশস্ত্র বাহিনীর বোঝাপড়া আরও বৃদ্ধি কীভাবে করা যায়।’
‘আর একটা প্রশ্ন ছিল, আমাদের যুব সমাজের জন্য একটি ইউনিভার্সেল মিলিটারি (সর্বজনীন সামরিক) প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যায় কি না, যেখানে যুবসমাজের যারা আছেন, তারা মিলিটারি ট্রেনিং পেতে পারেন এবং দেশের প্রতিরক্ষায় তারা অংশগ্রহণ করতে পারেন।’
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, ‘তারা নিজ নিজ কয়েকটি জেলায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করতে চান সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে। রিমোট জায়গায় বা চরাঞ্চলে যেখানে হয়তো বেশি পরিমাণ ফোর্স দরকার বা লজিস্টিক নিয়ে যেতে হবে এই ধরনের এলাকায় তারা অভিযান পরিচালনা করতে চান। সে সংক্রান্ত প্রশ্ন ছিল।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ নেভির কাছে প্রশ্ন ছিল কীভাবে জাটকাবিরোধী অভিযানের বা আমাদের নদীতে যে সম্পদ আছে, সেই সম্পদ রক্ষায় তারা আরও কীভাবে ওতপ্রোতভাবে সিভিল প্রশাসনকে সহায়তা করতে পারেন।
‘আমাদের সেনাবাহিনীর জন্য প্রশ্ন ছিল পার্বত্য চট্টগ্রামে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফন্ট যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে, তার কারণে কয়েকটি জেলায় পর্যটন শিল্প ব্যাহত হচ্ছে। এ পর্যটন শিল্প ব্যাহত হওয়ার কারণে সেখানকার ইয়াং জেনারেশন কাজ হারাচ্ছে, চাকরি হারাচ্ছে এবং তারা সন্ত্রাসের দিকে ঝুঁকে যাচ্ছে। সেখান থেকে কীভাবে উত্তরণ করতে পারি সে সংক্রান্ত প্রশ্ন ছিল।’
আবদুল হাফিজ বলেন, ‘দুই-একটি জেলায় অস্ত্র এবং গোলাবারুদ নষ্ট হয়ে গেছে। সেগুলো কীভাবে ধ্বংস করা যায়, সে বিষয়ে প্রশ্ন ছিল। এ ধরনের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তারা উত্থাপন করেছিলেন।’
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, ‘আমি উল্লেখ করেছি, স্বৈরাচার এবং তাদের দোসররা বিভিন্ন জায়গায় একত্রিত হচ্ছে এবং কর্মসূচি দিচ্ছে। তারা দেশকে একটা অরাজকতার দিকে নিয়ে যেতে পারে। সে ব্যাপারে তাদের সজাগ থাকতে হবে।’
আরও পড়ুন:জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মঙ্গলবার জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের কাছে এ মত তুলে ধরেন তিনি।
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘সারা দেশে জনপ্রতিনিধি না থাকায় জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) অতিরিক্ত সময় দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এমনকি অতিরিক্ত চাপ থেকে মুক্তি পেতে তারাও দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চান।’
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠক শেষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা খুব পরিষ্কারভাবে বলেছি, জাতীয় নির্বাচন আগে হতে হবে, তারপর স্থানীয় সরকার নির্বাচন।’
অন্যদিকে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন জনগণের দাবি উল্লেখ করে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, তারাও এ মতের পক্ষে।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশে একটি বিশেষ পরিস্থিতি যাচ্ছে। স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন সংস্থায় জনপ্রতিনিধিরা নেই। তাদের দায়িত্বগুলো বিভাগীয় কমিশনার এবং জেলা প্রশাসকরা পালন করছেন।
‘সেই জায়গা থেকে তাদের যে সমস্যাগুলো তৈরি হচ্ছে, আজকের ডিসি সম্মেলনে আমরা সেগুলো শুনেছি এবং এগুলো অ্যাড্রেস করেছি।’
জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচনের সম্ভাবনা আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিভাগীয় কমিশনারদের প্রত্যেকেই মূল দায়িত্বের বাইরে কিছু না কিছু অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। জেলা প্রশাসকদের অতিরিক্ত সময়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। সমস্যাটা হলো একজন অফিসার যখন নিজ দায়িত্বের বাইরে আরও দুই-তিনটা দায়িত্ব পালন করেন, তার পক্ষে কোনোটাই যথাযথভাবে পালন করা সম্ভব হয়ে ওঠে না, যে কারণে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, জাতীয় নির্বাচনের আগেই স্থানীয় নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্বে নিয়ে আসা উচিত।’
অন্তর্বর্তী সরকারের এ উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘সর্বশেষ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মিটিংয়েও স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনা এখনও চলমান আছে। চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত এখনও সরকার নেয়নি।
‘আশা করছি খুব দ্রুতই কোনো একটা সিদ্ধান্ত আসবে। হয় আমরা দ্রুতই জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করব, অন্যথায় প্রশাসক নিয়োগের মাধ্যমে স্থানীয় সরকারের সমস্যাগুলো সমাধান করা হবে।’
আরও পড়ুন:প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার জানিয়েছেন, চলতি মাসেই শতভাগ স্কুলে বই পৌঁছে যাবে।
ডিসি সম্মেলনের শেষ দিন মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান গণশিক্ষা উপদেষ্টা।
উপদেষ্টা বলেন, দেশের ৮৫ ভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বই এরই মধ্যে দেওয়া হয়েছে। এ মাসেই বাকি স্কুলগুলোতেও বই পৌঁছে যাবে।
তিনি বলেন, প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকরা যুক্ত রয়েছেন। ডিসিরা প্রাথমিক শিক্ষার নানান সমস্যা চিহ্নিত করেছেন, যা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণকাজ যেন সঠিকভাবে হয়, সে বিষয়ে ডিসিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বেসরকারি যেসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিবন্ধন নেই, সেগুলোকে দ্রুত নিবন্ধনের আওতায় আনার জন্য ডিসিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছেও বলে জানান উপদেষ্টা।
ওই সময় প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক পদে সুপারিশপ্রাপ্তদের নিয়োগের আন্দোলনে বিষয় জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা জানান, সুপারিশপ্রাপ্তদের প্রতি তার সহমর্মিতা আছে, তবে বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। তাই এ বিষয়ে মন্তব্য সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন:দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের চেয়ে উন্নতির দিকে বলে দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
জেলা প্রশাসক সম্মেলনের তৃতীয় দিন মঙ্গলবার এক বৈঠক শেষে এমন দাবি করেন তিনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘পরিস্থিতি আগের চেয়ে উন্নতির দিকে। আরও ভালো করার জন্য জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অপারেশন ডেভিল হান্ট চলছে। যতদিন ডেভিলরা থাকবে, ততদিন অপারেশন চলবে।’
তিনি বলেন, ‘দেশ থেকে দুর্নীতি কমাতে হবে। সব লেভেলে যেন দুর্নীতি কমে, সে জন্য ডিসিদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।’
ওই সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও জানান, সীমান্ত এলাকায় বিজিবি বাড়ানোর জন্য প্রস্তাব দিয়েছেন ডিসিরা। গাজীপুর জিএমপি, শিল্প পুলিশে জনবল বাড়ানোর প্রস্তাবও সংশ্লিষ্ট ডিসি দিয়েছেন।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কীভাবে আরও উন্নতি করা যায়, এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা সীমান্ত এলাকায় বিজিবি বৃদ্ধি করার জন্য বলেছেন।
‘নৌ পুলিশ বৃদ্ধি করার জন্য বলেছেন। গাজীপুরে জনবল বৃদ্ধির কথা বলেছেন। ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের জনবল বৃদ্ধির জন্য বলেছেন।’
পুলিশের হাতে মারণাস্ত্র না দেওয়া এবং এসপি ও ওসিদের এসিআর লেখার প্রস্তাব করেছিলেন ডিসিরা। এ বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত হয়েছে তা জানতে চান একজন সাংবাদিক।
জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এসব বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। কারণ আলোচনার সময় ছিল খুব কম।’
আরও পড়ুন:গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপদেষ্টা, সচিব ও সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারকসহ ১৬ জনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজার নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে মঙ্গলবার তাদের হাজির করা হয়।
সকাল ১০ টার পর ১৬ জনকে ট্রাইব্যুনালে এনে হাজতখানায় রাখা হয়। তারা হলেন সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, ফারুক খান, দীপু মনি, আবদুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, কামাল আহমেদ মজুমদার, গোলাম দস্তগীর গাজী, আমির হোসেন আমু, কামরুল ইসলাম, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক উপদেষ্টা তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী, সালমান এফ রহমান, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাবেক বিচারক এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম।
গত ৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলায় ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এবং আরেক মামলায় তার পরিবারের সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতাসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
যাদের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে, তাদের মধ্যে শেখ হাসিনা ছাড়াও তার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, শেখ হাসিনার ফুপাত ভাই ও সাবেক মন্ত্রী শেখ ফজলুল করিম সেলিম, তার দুই ভাতিজা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপস ও যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ রয়েছেন।
এ ছাড়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয় সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাতের বিরুদ্ধে।
গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে সেখানেই আছেন শেখ হাসিনা। তার দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের কয়েকজন গ্রেপ্তার হলেও অধিকাংশই এখন রয়েছেন আত্মগোপনে।
এদিকে জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য