× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

জাতীয়
বিএনপি নিয়ে সিমপ্যাথি আছে রেজা কিবরিয়া
google_news print-icon

বিএনপি নিয়ে সিমপ্যাথি আছে: রেজা কিবরিয়া

বিএনপি-নিয়ে-সিমপ্যাথি-আছে-রেজা-কিবরিয়া
সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এস এম কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া। ছবি: নিউজবাংলা
বিএনপি শাসনামলে গ্রেনেড হামলায় বাবাকে হত্যার পর ওই সরকারের শাসনামলে যা যা হয়েছে, সেগুলো নয়, রেজা কিবরিয়ার ক্ষোভ আওয়ামী লীগের প্রতি। কেন এত দিনেও বিচার হবে না, সে প্রশ্ন তুলেছেন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এমএস কিবরিয়ার ছেলে রেজা।

১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া গণফোরাম ছেড়ে দিলেও রাজনীতিতে থাকতে চান। তবে তিনি কী করতে যাচ্ছেন, সেটা স্পষ্ট নয়।

নিউজবাংলাকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, বিএনপির প্রতি তার সহানুভূতি আছে। তবে এই দলটির অবস্থানও সুনির্দিষ্ট নয় বলে মনে করেন। আর এ কারণে এই দলে যোগ দেবেন না।

বিএনপি শাসনামলে গ্রেনেড হামলায় বাবাকে হত্যার পর ওই সরকারের শাসনামলে যা যা হয়েছে, সেগুলো নয়, রেজার ক্ষোভ আওয়ামী লীগের প্রতি। কেন এত দিনেও বিচার হবে না, সে প্রশ্ন তুলেছেন। এই মামলার আসামিদের একটি বড় অংশ বিএনপি নেতা, সেটা নিয়ে ভাবছেন না। রেজার ধারণা, তদন্ত ঠিকমতো হয়নি। এই হামলার পেছনে কারা, সেটি বের হয়নি।

গণফোরাম ছাড়লেন রাজনীতি থেকে সরে গেলেন কি?

রাজনীতি থেকে সরে আসার কোনো পরিকল্পনা নেই। গণফোরামের পলিটিক্সে একটা জটিলতা হয়েছিল, সেখানে আমি চাচ্ছিলাম না যে ব্যক্তিগত কোনো কারণে ব্যক্তিভিত্তিক মনোমালিন্যের জন্য দলের ক্ষতি হোক। কয়েকটা নীতিগত সমস্যা ছিল।

কী সেই সমস্যা?

এটা শুরু হয় ২০১৮ ডিসেম্বরে নির্বাচনের আগে থেকেই। ওই সময় যে নির্বাচনটা হয়েছিল, সেটাকে আসলে নির্বাচন বলা কঠিন। কিন্তু তারপরে কর্মসূচি নিয়ে আমি খুব হতাশ ছিলাম। কিন্তু তখন আমি কথা বলার মতো পজিশনে ছিলাম না। পরে আমি প্রেসিডিয়াম মেম্বার হলাম।

তখন একটা বড় সমস্যা হয়ে গেল। আমাদের এমপি সাহেবের (মোকাব্বির খান) সংসদে যাওয়া নিয়ে। আমরা সেটাকে বিবেচনা করে একটা ইতিবাচক অবস্থানে চলে এসেছিলাম অনেক আলোচনা তর্কবিতর্ক করে। আর তখন বেশির ভাগ লোকে বলেছে সংসদে যাওয়া উচিত। সেখানে আমার যুক্তি ছিল, এখন তো বিরোধিতা করার জন্য একটা রাস্তা লাগবে। সেটা এক ফুট জায়গা হোক না কেন।

নির্বাচনের ফলাফল বর্জন করার একটা গ্রুপও ছিল। তবে বর্জন করে তো বসে থেকে লাভ নেই। যদি আন্দোলন করত তবে আমি অবশ্যই বলতাম যে বর্জন করা হোক। কিন্তু আমি কিছুই দেখি না। তিন মাস পরেও আন্দালনের কোনো লক্ষণ নেই। তখন মন্দের ভালো যে ওনাকে সংসদে পাঠানো হোক।

এটা নিয়ে কয়েকজন খুব বেশি অসন্তুষ্ট ছিল। তারা তখন একটা সেন্ট্রাল কমিটির মিটিং হলো। বলা হলো কেন ওনাকে (মোকাব্বির খান) বহিষ্কার করা হবে না।

তখন ওনাকে শোকজ দেয়া হয় আর উনি সেটার উত্তরও দেন, উত্তরে আমরা সন্তুষ্ট ছিলাম। তাই তাকে বহিষ্কার করা হয়নি। কিন্তু এটা কয়েকজন সিনিয়র নেতা মেনে নিতে পারেননি, তাই তারা কাউন্সিলে আসেননি।

আমাকে সাধারণ সম্পাদক করা হলো। মনোমালিন্যের শুরু হয়েছে ওখান থেকে। কারণ, আমি সংসদে যাওয়ার পক্ষে ছিলাম। এখন দলের মধ্যে একজন সিনিয়র নেতা আরেকজনকে নিয়ে খারাপ মন্তব্য করবেন, এটা আমি নিতে পারিনি। আর সেটা বাইরের মানুষের কাছে গিয়ে বলবে ‘সে রাইটিং প্যাড চুরি করেছে’ এমন আরও খারাপ কথা।

গণফোরাম থকে বেরিয়ে আসা কি আপনার নিজের সিদ্ধান্ত?

জ্বি, এটা আমার নিজের সিদ্ধান্ত। আমি এ ব্যাপারে স্যারের সঙ্গে (ড. কামাল হোসেন) আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার থেকে দলের কারও দায়ভার বহন করতে হবে না। আমার পরিবারের কথা তো ভাবতে হয়। আমি যখন ২০১৮ সালে দেশে চলে আসি, তখন তো তাদের সেক্রিফাইস করতে হয়েছে। আমি তো বেতনে চলি। দেশে এসে কাজ করার ইচ্ছা আমার সব সময় আছে। এটা বাবা-মা চাইতেন। সেই ইচ্ছা পূরণ করার সঙ্গে আমার নিজের ইচ্ছাও ছিল।

আপনার বাবা তো আওয়ামী লীগ করতেন কিন্তু আপনি দলটি নিয়ে এখন হতাশ

আমি ওই আওয়ামী লীগ নিয়ে একটুও হতাশ না। আমার বাবা যে আওয়ামী লীগ করতেন সেই আওয়ামী লীগ তো এখন আর নেই। ওই আওয়ামী লীগ এই পৃথিবী থেকে চলে গেছে।

ওই আওয়ামী লীগ এবং এখনকার আওয়ামী লীগের মধ্যে পার্থক্য কোথায়?

আমি আব্বার কথা দিয়েই বলি। প্রথমে দুই বছর বিএনপির সময় নিল আব্বার হত্যার তদন্ত ও বিচার ঠিকমতো হয়নি। চার্জশিট দেয়নি ঠিকমতো। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকার আরও দুই বছর সময় নিল। আর আওয়ামী লীগ ১২ বছর।

একটা সুষ্ঠু তদন্ত করার মতো তাদের ইচ্ছা ছিল না, বা ক্ষমতা ছিল না? যেটাই হোক তাদের ব্যর্থতা। তা ছাড়া আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমার নীতিগত ব্যাপারে মিল নেই। আদর্শের মিল নেই। আদর্শহীন একটা দল। তারা যে গণতন্ত্রের কথা মুখে বলে আর যে কাজটা করে সেটা ঠিক না। বিরোধী দলের কোনো কথা তারা সহ্য করে না। হত্যা, মানুষকে তুলে নেয়া, মিথ্যা মামলা। এ ছাড়া ইকোনমিক পলিসিতে আমি তাদের সঙ্গে একমত না। একটা গ্রুপের জন্য তারা কাজ করে। যেটা পাকিস্তানে হয়।

এই সরকারের আমলেই তো বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সূচকে পাকিস্তানকে ছাড়িয়েছে, ভারতকেও বহু সূচকে ছাড়িয়ে যাওয়ার পথে সেটা কি বিবেচনায় আনবেন না?

হিসাবের কিছু ব্যাপার আছে। বাংলাদেশে খুব বেশি লোক জিডিপির হিসাব জানে না। আমি এটা করেছি। আমি ৩৫ বছর ধরে এগুলো করছি। জিডিপির বিষয় নিয়ে খুব বেশি লাফালাফি করা উচিত না। আর একটা হিসাবে সেটা হলো পিপিপির হিসাবে আমরা ভারত থেকে ১০০০ ডলার পিছিয়ে। আর একটা হলো একচুয়্যাল এক্সচেঞ্জ রেট হিসেবে। আমি এই টেকনিক্যাল আলোচনাতে যাব না।

হ্যাঁ, আমি মনে করি এটা খুব সুখবর। কিন্তু আমাদের দেশে যে সাত কোটি মানুষের পরিবারে তারা ঠিকমতো খেতে পারে না, এটা খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তানে বলা হতো, ২২টা ফ্যামিলি পুরো সম্পদের ৬০ ভাগ দখল করে রেখেছিল। এখন তো আরও কম পরিবার সেটার মালিক দেশে।

আমি মনে করি, এটা পুরোনো আওয়ামী লীগের আদর্শের বিপক্ষে। আমার বাবা যেটা করেছিলেন, সে সময় বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, তার সঙ্গে বেকারত্ব দূর করা ও ভূমিহীনদের জন্য কাজ করা, সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা রক্ষা করা, লোন ইনফ্লেশন দিয়ে কাজ করা। আব্বুর সময় দেড় শতাংশ মুদ্রাস্ফীতি ছিল। যেটা খুব কম। কিন্তু এখন এই প্রবৃদ্ধির কথা শুনে যে না খেয়ে আছে তাকে বিদ্রূপ করা।

আর একটা হলো, ভোটের অধিকার। সেটা এখন হাসাহাসি বিদ্রূপের অবস্থায় চলে গেছে। যার জন্য দেশে বিদেশে লজ্জা লাগে।

দল থেকে পদত্যাগের বিবৃতিতে বলেছেন, ‘বাংলাদেশে যারা গণতন্ত্র, সামাজিক ন্যায়বিচার সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে, আমি তাদের সঙ্গে কাজ করে যাব এটি অস্পষ্ট আসলে আপনি কী করতে যাচ্ছেন?

এদেশে আমি কখনও কাজ করতে পারব কি না, সেটা জানি না। আমি জাস্ট এসেছি যদি একটু সুযোগ পাই তবে করব। ওই পর্যন্ত হয়নি বাট আল্লাহর যদি ইচ্ছা হয় তো করব। এই ইচ্ছা নিয়ে আসা। গণতন্ত্রের জন্য কাজ করব।

. কামালকে যত দিন দেখলেন, সাধারণ মানুষের সঙ্গে যত দিন মিশলেন, তাতে গণফোরামের দল হিসেবে বিকশিত হতে না পারার কারণ কী মনে হয়েছে?

সত্যি কথা বলতে যে গণফোরামে আসার আগে বুঝিনি। আমি ওনার দিকে তাকিয়ে এসেছি। ওনার মেধা, বুদ্ধি, বিবেক এগুলা। আমি ওনাকে অনেক বছর ধরে চিনি। সবকিছু মিলে আমি ওনাকে দেখে এসেছি। কিন্তু দলের মধ্যে আমার মনে হয় না ওনাকে যাচাই করার মতো, মূল্যায়ন করার মতো ক্ষমতা খুব বেশি লোকের নাই। তাই উনি কীভাবে কাজ করতে পারবেন দলের জন্যে সেটা জানা নেই।

ড. কামালকে কি কখনও গণমানুষের মনে হয়েছে?

উনি চেষ্টা করেন রিচ করতে। কিন্তু সবার পক্ষে গ্রামে গিয়ে ভোট চাওয়া, ভোটের জন্য কাজ করা এটা সম্ভব না। সবাই তো ওই পলিটিক্সের জন্যে না। কিছু মানুষকে পলিসি করতে হবে, কিছু মানুষকে নীতিনির্ধারক হতে হবে। ওই বয়সে গিয়ে ক্যাম্পেইনিং করা আসলে ওনার পক্ষে সম্ভব না।

আর দলের মধ্যে কেন অগ্রসর হতে পারেনি এটা ওনাকে কেউ যাচাই করতে পারেনি। ওনাদের কথাবার্তা আমি যা শুনেছি, তাতে মনে হয়েছে ড. কামাল হোসেনকে তারা মফস্বলের অ্যাডভোকেট থেকে একটু ভালো মনে করে।

তবে কিছু লোক আছে, যারা ২৬ বছর ধরে ওনার সঙ্গে থেকেছে। কিন্তু কিছু আছে, যারা দলের পজিশন নিয়ে লোভ করে। আব্বা ২০০৫ সালে মারা যাওয়ার পর তো আওয়ামী লীগ চেয়েছিল আমাকে নমিনেশন দিতে। তখন তো আমি সিমপ্যাথিতে জিতে যেতে পারতাম।

তাহলে আপনার আব্বার হত্যার বিচারের দীর্ঘসূত্রতা নিয়ে আপনার মধ্যে একটা বড় ধরনের ক্ষোভ আছে...

হ্যাঁ, অভিয়াসলি এটা আমার মাইন্ডে আছে। তার চেয়ে বড় কথা, দেশের জন্য কাজ করা। শুধু রাজনীতি করব বাবার হত্যার বিচার করার জন্য, তা নয়। আমাকে অনেকেই বলেছে যে আপনি আওয়ামী লীগের মন্ত্রী বা এমপি হন তখন আপনি বিচার করতে পারবেন। কিন্তু দেশের কত মানুষ এমন হত্যার শিকার হয়েছে আর সেটার বিচারের জন্য কি এমপি-মন্ত্রী হতে হবে? এ কারণে আমি রাজনীতি করি, তা নয়।

আপনার বাবার হত্যা মামলাতেও তো বিএনপির তিন জন নেতা আসামি যাদের একজন বিএনপি সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ছিলেন একজন সিলেট সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র একজন হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র

কিন্তু কারও দলীয় পরিচয় নিয়ে মাথা ঘামাই না। কারা আসল হত্যাকারী ছিল তাদের চিহ্নিত করেন সেটা যে দলেরই হোক না কেন। আই ডোন্ট কেয়ার। আর বিএনপির যে কয়েকজনের নাম তারা দিয়েছে কিন্তু আমি তো সব সময় বলছি আপনাদেরকে যে এই তদন্তে আমার মা আসমা কিবিরিয়া ১০ বছরে ৮৩ বার রাস্তায় দাঁড়িয়েছেন।

আপনার মা শান্তির জন্য নীলিমা কর্মসূচি দিয়েছিলেন তখন

হ্যাঁ, এটার নাম দিয়েছিলেন শামসুর রাহমান। আর রক্তের অক্ষরে শপথের সঙ্গে স্বাক্ষর এটা শামসুল হক সাহেব দিয়েছিলেন। আম্মা করেছেন। কিন্তু আমাদের দুটি দাবি আমি সব সময় বলেছি।

একটা হলো, গ্রেনেডের উৎস কী? আর দুই নম্বরটা হলো, মদতদাতা কে? যে গ্রেনেড ছুড়ে মেরেছে, যে ট্রাক চালিয়েছে, যে লাইট অফ করেছে এটা তারা টাকা পেয়েছে একজন থেকে আর তারা কাজটা করেছে। আসল মদতদাতাদের দিকে যেতে তদন্তকারীরা চায় না। আমি বিশ্বাস করি, একটা মিথ্যা তদন্তের ওপর সুষ্ঠু বিচার হতে পারে আমার মনে হয় না। তাই কোনো চার্জশিট আমরা মানি না।

তিনটা চার্জশিট দেয়া হয়েছে। একটার সঙ্গে আরেকটার কোনো মিল নাই। ওই সময় একজন এমপি আছেন যিনি আমার মাকে পর্যন্ত ধমক দিয়েছে এ ব্যাপারে। এটা আপনাকে মানতে হবে। মানবেন না মানে? সরকার এটা চায়।

এমপি কে ছিলেন?

তার নাম মজিদ খান। বানিয়াচংয়ের সংসদ সদস্য। তিনি বাদী ছিলেন। তার অনেক ব্যাপার আছে। মানুষ বুঝতে পারছে যে ওরা একটা রাজনৈতিক শত্রুর বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে।

পেশাগত জীবনে বহুকাল দেশের বাইরে ছিলেন দেশের রাজনীতিতে অভিজ্ঞতা এক বছরের মতো পশ্চিমা দুনিয়ার সঙ্গে আমাদের রাজনীতির মৌলিক পার্থক্য কোথায়?

সবখানেই সমস্যা আছে। গণতন্ত্র পারফেক্ট না। সবগুলোর চেয়ে ভালো কিন্তু তা-ও সমস্যা থাকে। ইউরোপীয় ডেমোক্র্যাসির জবাবদিহি আছে। স্ট্রং মিডিয়া, স্ট্রং প্রেস। জার্নালিস্ট যদি সাহস করে কিছু বলে তাদের কেউ ফোন করে বলে না যে, পা ভেঙে দেব, আক্রমণ করব, মিথ্যা মামলা দেব।

এটা বাংলাদেশে নেই। আর আপনার ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও তো আপনি ভয়ে কোনো কিছু লিখবেন না। আমার ইন্টারভিউয়ের কথাই আপনি পুরোপুরি দিতে পারবেন না। আর এতে কী হয়েছে, বাইরের জার্নালিস্টরা যাদের এ ধরনের সমস্যা নেই তারা আমাদের দেশের জার্নালিজমের যে ঘাটতি তা তারা মেকআপ করছে। আমরা এখানে থেকে জাস্টিফাই করে যাচ্ছি।

আপনি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলেছেন আপনি কি কোনো কথা বলতে গিয়ে কখনও বাধার মুখে পড়েছেন? বা এমন কিছু জানেন, যেটা নিজের মধ্যে না বলে ভয়ে চেপে রেখেছেন?

দলের মধ্যে তো একটা প্রেশার আছে। যখন আমি দলের মধ্যে কথা বলেছি, তখন তো একটা ব্যালান্স নিয়ে কথা বলেছি। সবাই তো একমতের না।

এটা তো দলের বিষয় বাইরে?

হ্যাঁ, আমি তো আপনাকে বলছি কিন্তু আপনি তো লিখতে পারবেন না। এই যে আমি আপনাকে বলছি, এই অত্যাচারী, অদক্ষ, অসৎ এবং স্বৈরাচারী সরকারের মোটামুটি একটা কন্ট্রোল আছে দেশের সব সেক্টরে। সবার ওপর। তারা যে মানুষকে ক্ষতি করতে পারে সেটা তারা প্রমাণ করেছে। তারা বারবার প্রমাণ করে।

তাদের সবচেয়ে বেশি ক্ষোভ বিএনপির ওপরে। আমার এলাকায় যে মানুষকে অত্যাচার করেছে, সেটা আমি দেখেছি। একজন মানুষকে পায়নি। তার ১৫ বছরের ছেলেকে তুলে নিয়ে গেছে। একটা স্বাধীন মুক্ত দেশে এটা হতে পারে না।

এটা মিডিয়ার অনেক লোক বলেছে, এটা নিয়ে বেশি বলাবলি করা যাবে না। আমি একটা লোকের বাসায় গিয়েছি, আমার এলাকায়। তাকে রাত তিনটার সময় পুলিশ এসে ধরে নিয়ে গেছে। তার অপরাধ সে আমার কিছু পোস্টার লাগিয়েছে। কত সিরিয়াস অপরাধ! এভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে সম্মান পাওয়া যায় না।

আওয়ামী লীগের একটা কিছু কি মনে হয়েছে, যে প্রশংসা করা যাবে?

না, ছোটখাটো দুই-একটা ব্যাপার থাকতে পারে। কিন্তু তারা যে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করে দিচ্ছে, গরিব মানুষদের অবস্থা আরও খারাপ করে দিচ্ছে, ব্যাংক লুট করেছে, বাজেটে ১০০ কোটি টাকার প্রজেক্ট ৫০০ কোটি টাকা করে নিয়েছে। খুব বেশি প্রশংসনীয় কিছু থাকে না। যেগুলো করেছে সেগুলো জঘন্য।

গুঞ্জন আছে, নিজেই দল করতে যাচ্ছেন এমনও কথা শোনা যাচ্ছে, একটি বড় দলের বেশ কিছু নেতা আপনার সঙ্গে আছেন এগুলো কি শুধুই গুঞ্জন নাকি বাস্তবতাও কিছু আছে?

অনেক দলের সঙ্গে আমার যোগাযোগ আছে। আমি নিজে কোনো দল প্রতিষ্ঠা করব এই ধরনের খবর আমি এখনও পাইনি।

জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা বিএনপিকে নিয়ে জোট গঠনে গণফোরামের ভেতরে আপত্তি ছিল সমঝোতাটা তাহলে পরে কীভাবে হলো?

আমি একটু সিঙ্গেল মাইন্ডেড এ ব্যাপারে। এই অত্যাচারী সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরানো দরকার। আর এ ক্ষেত্রে দেশের যেকোনো রাজনৈতিক দল একমত থাকে, আমি তাদের সঙ্গে কাজ করতে রাজি আছি।

আওয়ামী লীগের একটা ভালো কাজ পেলাম যে, হ্যাঁ তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছে। তবে সেখানেও আমি বলতে চাই, বিচারটা সুষ্ঠুভাবে করুন। সবার কথা শুনুন। প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে সেটাও তো রং (ভুল)।

তার মানে আপনি বলতে চাচ্ছেন, এই সরকারকে হটানোর জন্য আপনার সঙ্গে যে কেউ যুক্ত হলে আপনি তাদের স্বাগত জানাবেন?

জামায়াতে ইসলামী বলে কোনো দলের এখন নিবন্ধন নেই। আমি তৃতীয় শক্তি, চতুর্থ শক্তি, পঞ্চম শক্তি, সবগুলোকে ওয়েলকাম করি। মানুষ বিবেচনা করবে। এখানে প্রতিযোগিতা লাগবে।

৫০ বছর আগে কী করছেন তা নিয়ে গর্ব করে তো কিছু হবে না। আমাদের নতুন প্রজন্ম যারা বেকার তাদের তো কিছু দিতে হবে। এখন যে বিরোধী দল (জাতীয় পার্টি) আছে তাদের তো কোনো ভূমিকা নেই। তারা সরকারের ভেতরে থেকে কাজ করলে কিছু করতে পারবে না।

আপনার কি মনে হয় বিএনপি কি এই সরকারের বিপক্ষে শক্ত কোনো অবস্থান নিতে পারবে?

খুব কঠিন। তাদের জন্য আমার সিমপ্যাথি আছে। এতগুলো কেস (মামলা) থাকা সত্ত্বেও তারা এই সরকারের বিপক্ষে নামছে।

তারা বড় কোনো পরিবর্তন আনতে পারবে?

দেখা যাক কী হয়। আমি ওদের ব্যাপারে কোনো ক্রিটিসাইজ করতে চাই না। আমি বলতে চাই, আওয়ামী লীগ একটা জনমুখী দল ছিল। তাদের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা ছিল মানুষের মধ্যে। তারা যে এমন ঘৃণিত হয়ে যাবে, তা আমি আশা করিনি। এই ১২ বছরের জন্য দেশে পরিবর্তন আসবে।

বিএনপি নিয়ে কোনো পরিকল্পনা?

সে রকম কোনো পরিকল্পনা আমি করিনি। বিএনপি নিয়ে ক্লিয়ার না আমি। আমি কী করতে চাই, তা আমি আগেই বলেছি। বিএনপিকে আমি ঠিক বুঝতে পারছি না যে, তাদের কতটুকু অ্যাম্বিশন। তাদের যদি অ্যাম্বিশন হয় সেটা এখনি বলুক। তারা যদি ক্ষমতায় এসে বলে আমরা আওয়ামী লীগ থেকে ১০ ভাগ ভালো হব, এটা যদি অ্যাম্বিশন হয় তাহলে আমি তাদের প্রতি আকৃষ্ট না। একটা কমপ্লিট চেঞ্জ দরকার রাজনীতিতে। বিএনপি তেমন যদি কোনো নীতি দেখায় তাইলে পসিবল।

আরও পড়ুন:
কিবরিয়া হত্যা : ১৬ বছর পূর্তির দিনে সাক্ষ্য দিলেন ৪ জন
সাক্ষীর অভাবে থমকে আছে কিবরিয়া হত্যার বিচার

মন্তব্য

আরও পড়ুন

জাতীয়
Daksu Selection One new message of student politics

ডাকসু নির্বাচন: ছাত্র রাজনীতির এক নতুন বার্তা

লেখক: ড: তারনিমা ওয়ারদা আন্দালিব এবং দাউদ ইব্রাহিম হাসান
ডাকসু নির্বাচন: ছাত্র রাজনীতির এক নতুন বার্তা

অসম্ভবকে সম্ভব করার এই গল্পটি প্রতিটি ছাত্রের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। স্বপ্ন পূরণের পথে সাহস আর নিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই। মনে রাখতে হবে, কেবল বিজয়ের জন্য নয়, বরং একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার জন্যই লড়াই করতে হয়। সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছাতে মেধা ও পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই, আর সেই পথেই রচিত হয় নতুন ইতিহাস। এই ডাকসু নির্বাচন সেই ইতিহাসেরই একটি অংশ, যেখানে মেধা আর সততা পেয়েছে সর্বোচ্চ সম্মান।

দুর্ধর্ষ জয়, না অভিস্মরণীয় বিজয়! ডাকসুতে শিবিরের এই জয়কে আপনি কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন? সাদিক কায়েম, এস এম ফরহাদ এবং মহিউদ্দিন খান তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি ভোট পেয়েছেন, মানে এক কথায় অলআউট উইন। জয়ের ব্যবধানটাই সবচেয়ে বড় চমক সৃষ্টি করেছে এখানে। ডাকসুর ইতিহাসে এমন ঘটনা খুব বেশি ঘটেনি। ভিপি পদে সাদিক কায়েম পেয়েছেন ১৪ হাজার ৪২ ভোট, ছাত্রদলের আবিদ পেয়েছেন ৫৬৫৮ ভোট, অর্থাৎ অর্ধেকেরও কম। জিএস পদে এস এম ফরহাদ পেয়েছেন ১০,৭৯৪ ভোট, অন্যদিকে ছাত্রদলের হামিম পেয়েছেন ৫২৮৩ ভোট। এখানেও রয়েছে দ্বিগুণ ব্যবধান। এজিএস পদে মহিউদ্দিন খান পেয়েছেন ৯৫০১ ভোট, অন্যদিকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের মায়েদ পেয়েছেন ৪২৫৪ ভোট। অর্থাৎ ৫২৪৭ ভোটের ব্যবধান রয়েছে এখানে। শিবিরের এই তিন নায়ক সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দেওয়া যাক।

শুরুতেই আলোচনা করা যাক মহিউদ্দিন খান মহিকে। চোখে চশমা, পরনে পাঞ্জাবি আর চেহারায় ভদ্রতার ছাপ সুস্পষ্ট। শিক্ষার্থীরা তো বটেই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যেও মহিউদ্দিনের জনপ্রিয়তা আছে। ভদ্রতার পাশাপাশি মেধাতেও যে কারো চেয়ে এগিয়ে তিনি। মহিউদ্দিন খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি অনার্সে ৩.৯৩ সিজিপিএ অর্জন করে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম এবং মাস্টার্সে ৪.০০ সিজিপিএ অর্জন করতে সক্ষম হন। এরপর তিনি মাস্টার্সের পূর্ণাঙ্গ ফলাফলে ৩.৯৭ সিজিপিএ পেয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেন। তিনি বিজয় '৭১ হলের সাবেক শিক্ষার্থী। ছাত্র রাজনীতিতে দাপট বজায় রাখার জন্য হলে বছরের পর বছর সময় কাটানোর নজির আছে, সেখানে মহিউদ্দিন খান বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। স্নাতকোত্তর শেষ হওয়ার তিন দিনের মাথায় তিনি হল ছেড়ে দেন যা ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয় তখন। তাই এজিএস হিসেবে ডাকসু নির্বাচনে মহিউদ্দিন খানের এই জয়টা মোটেও অবাক করার মতো নয়।

এবার আসবে এস এম ফরহাদের নাম। দেখতে সে ছোটখাটো হলেও তার দায়িত্বটা বিশাল। একজন ডিবেটর হিসেবে তার বেশ খ্যাতি আছে। কখনো কখনো তিনি বাম রাজনীতির সমালোচনা করেছেন, আবার কখনো ছাত্রদলের ভুলগুলোকে ধরিয়ে দিয়েছেন। আবার প্রতিপক্ষের দিক থেকেও কেউ কেউ ফরহাদকে নিয়ে নানা সময় নানা আলোচনা ও সমালোচনা করেছেন। তিনি সেসব সমালোচনার সুস্পষ্ট জবাব দিয়েছেন তার দায়িত্বশীল আচরণের মাধ্যমে। ছাত্রলীগের সাথে তার অতীত সংশ্লিষ্টতা নিয়ে প্রচুর সমালোচনা আছে, কিন্তু ফরহাদের দাবি সেটা ছিল তার চৌকস কৌশল। তিনি নাকি পরিচয় লুকিয়ে শিবির করতেন। ফরহাদের যে রুমমেট তার সঙ্গে দীর্ঘ চার বছর থেকেছে, সেও ফরহাদের আসল রাজনৈতিক পরিচয় জানতো না। ২০০৪ সালের ৫ই আগস্টের পর ফরহাদের পরিচয় সামনে আসার পর, অন্য অনেকের মতো তার রুমমেটও অবাক হয়েছিল। ফরহাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ১৭-১৮ সেশনের এবং পাশাপাশি কবি জসীমউদ্দীন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। ডাকসু নির্বাচনের সময় ফরহাদকে তেমন প্রচারণা করতে দেখা যায়নি, অথচ তার জয় আল্লাহ সহজভাবে এনে দিয়েছেন।

সর্বশেষে আসবে এই ডাকসুর ইতিহাসের অন্যতম নাম, যার দ্বারা পুরো ডাকসু আগামী কয়েক বছর পরিচালিত হবে, তার নাম হলো সাদিক কায়েম। তিনি হলেন শিবিরের অন্যতম ফ্রন্টলাইনার। ডাকসুতে তিনি শিবিরের হয়ে প্রচার-প্রচারণা করেছেন সবচেয়ে বেশি। সাদিক কায়েমের প্রচারণা সবসময়ই ছিল একদম সাদামাটা। কিন্তু তার জয় আল্লাহ দিলেন অনেক বড়সড় করে। তিনি বর্তমান ডাকসুর ইতিহাসে শিবিরের প্রথম এবং একমাত্র ভিপি। মাঝরাতে গতকাল সবাই যখন বিজয় উল্লাসের অপেক্ষায়, সাদিক কায়েমকে তখন নামাজরত অবস্থায় একটি ভিডিও চিত্রে দেখা যায়। ভিপি হওয়ার আগেই আল্লাহর নাম স্মরণ করে সাদিক কায়েম বলেছিলেন, “ডাকসুর কাজ নেতা তৈরি করা নয়, বরং শিক্ষার্থীদের স্বার্থ হাসিল করা। এই স্বার্থগুলোর মধ্যে রয়েছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ: আবাসন সংকট দূর করা, শিক্ষার্থীদের খাবার এবং সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা, এবং বিশেষ করে রেজিস্টার ভবনে শিক্ষার্থীদের অনেককালের ভোগান্তি থেকে চির বিদায় দেওয়া।” এবার মূলত সেসব বাস্তবিকতার চিত্র প্রমাণ করার পালা। তিনি শিক্ষার্থীদের পার্টটাইম চাকরির সুযোগ, আধুনিক লাইব্রেরি ব্যবস্থা, মসজিদের আধুনিকায়ন, শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসনের প্রসারসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক সমস্যা সমাধানে কাজ করতে চান। শিক্ষাজীবনের প্রতিটি ধাপে সাদিক কায়েম অপূর্ব মেধার পরিচয় দিয়ে এসেছেন। সাদিক কায়েম যে এলাকা থেকে উঠে এসেছেন, সেখান থেকে খুব কম সংখ্যক ছেলে এ যাবৎ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে জায়গা করে নিতে পেরেছে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় খুব ভালোভাবে টিকে যান এবং একাধিক সংগঠনের প্রধান হিসেবে তিনি কাজ করেছেন। তার নেতৃত্বের গুণটা তার ভেতর আগে থেকেই আছে। এবার ভিপি হিসেবে তিনি কতটা সফল হবেন, তা সময় বলে দেবে।

জীবনে বড় কিছু অর্জন করতে হলে শুধু মেধা থাকলেই চলে না, তার সাথে দরকার দৃঢ় সংকল্প আর সততা। এই নির্বাচন প্রমাণ করলো যে, যখন মেধা আর সততার সমন্বয় ঘটে, তখন যেকোনো বাধা অতিক্রম করা সম্ভব। ছাত্র রাজনীতিকে কলঙ্কমুক্ত করে নতুন একটি উদাহরণ সৃষ্টি করার এই সুযোগ এসেছে, যা আগামী প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। বিজয় শুধু একটি পদের নয়, বরং লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীর প্রত্যাশার। এই পথচলা যেন নতুন দিনের সূচনা করে।

সংক্ষিপ্ত জীবনী :

ডঃ তারনিমা ওয়ারদা আন্দালিব, বর্তমানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক এবং যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ইমপ্যাক্ট গ্রুপে গ্লোবাল কনসালট্যান্ট ডিরেক্টর হিসেবে কর্মরত আছেন।

দাউদ ইব্রাহিম হাসান, বর্তমানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় একজন রিসার্চ এসিস্ট্যান্ট হওয়ার পাশাপাশি ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য এবং যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে নিয়োজিত থাকার পাশাপাশি আইডিএলসি ফাইনান্স পিএলসিতে মার্কেটিং ডিপার্টমেন্টের একজন সদস্য হিসেবে নিয়োজিত আছেন।

মন্তব্য

জাতীয়
Mirza Fakhrul on the way to Singapore for his wifes treatment

স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের পথে মির্জা ফখরুল

স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের পথে মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার সহধর্মিণী রাহাত আরা বেগমের চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন।

আজ সকালে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে বিমানবন্দর ত্যাগ করেন তিনি।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান সাংবাদিকদের জানান, রাহাত আরা বেগমের চিকিৎসকের শিডিউল আগে থেকেই নেওয়া ছিল। সেই অনুযায়ী আজ তারা সিঙ্গাপুর গেছেন।

তিনি জানান, সকাল ৮টা ১০ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তারা রওনা হন। তবে, চিকিৎসার জন্য তারা কতদিন সিঙ্গাপুরে থাকবেন, তা জানাননি শায়রুল।

মন্তব্য

জাতীয়
Future Government will be determined by the vote of the people Amir Khasru

জনগণের ভোটেই নির্ধারিত হবে ভবিষ্যৎ সরকার: আমীর খসরু

জনগণের ভোটেই নির্ধারিত হবে ভবিষ্যৎ সরকার: আমীর খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনের মাধ্যমেই দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা হবে। ভোটের জন্য বিএনপি ইতোমধ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছে, আর জনগণও অধীর আগ্রহে নির্বাচনের অপেক্ষায় রয়েছে।
শুক্রবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে বরিশাল জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বরিশাল বিভাগীয় ব্যবসায়ী ফোরাম আয়োজিত ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আমীর খসরু বলেন,ভোটের মাধ্যমে জনগণ তাদের প্রতিনিধি ও সরকার নির্বাচন করবে। তখন মানুষ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে মৌলিক চাহিদার কথা বলতে পারবে। পাশাপাশি সরকার জনগণের কাছে দায়বদ্ধ ও জবাবদিহিমূলক থাকবে।
তিনি আরও বলেন,আমরা একটি নির্বাচিত সরকারের অপেক্ষায় আছি। জনগণ যদি আমাদের সমর্থন দেয়, তবে আগেভাগেই প্রস্তুতি নিচ্ছি যাতে প্রথম দিন থেকেই বাংলাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আগে অর্থনীতি কিছু সীমিত গোষ্ঠীর হাতে ছিল। আমরা চাই অর্থনীতিকে গণতন্ত্রায়ণ করতে। এজন্য ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পকে আন্তর্জাতিক বাজারে জায়গা করে দিতে হবে। গ্রামের মানুষের তৈরি একটি পণ্যই তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের হাতিয়ার হতে পারে।
তিনি জানান, বিএনপি দেশের প্রতিটি বিভাগে গিয়ে মানুষের সমস্যার কথা শুনছে এবং তাদের দাবি-চাহিদা পূরণের উপায় খুঁজছে। হস্তশিল্প ও কুটির শিল্পকে পুনরুদ্ধার, ব্র্যান্ডিং ও আর্থিক-প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারে জায়গা করে দিতে হবে।
আমীর খসরু বলেন, আমরা চাই প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষ ঘরে বসেই পণ্য তৈরি করবে এবং সেসব পণ্য দেশ-বিদেশে বিক্রি হবে। এতে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে, কর্মসংস্থান বাড়বে এবং অর্থনীতির মূলধারায় সাধারণ মানুষ যুক্ত হবে। এর মাধ্যমেই দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে।

মন্তব্য

জাতীয়
The situation of the country without selection will go worse Salam Pintu

নির্বাচন ছাড়া দেশের অবস্থা খারাপের দিকে যাবে: সালাম পিন্টু

নির্বাচন ছাড়া দেশের অবস্থা খারাপের দিকে যাবে: সালাম পিন্টু

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির ভাইস ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টু বলেনছেন- নির্বাচনটা বানচাল করার জন্য অনেকেই চেষ্টা করতেছেন। নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করতেছে, কিন্তু আপনাদের মনে রাখতে হবে একটি নির্বাচিত সরকার দেশকে সুশৃঙ্খল অবস্থায় নিয়ে আসতে পারে। নির্বাচন ছাড়া এ দেশের অবস্থা খারাপের দিকে যাবে।

বুধবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারী ও এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের সংবর্ধনা এবং ক্রেস্ট প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির তিনি এসব কথা বলেন।

সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু বলেন, নির্বাচন নিয়ে যারা চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র করুন না কেন এই বাংলাদেশের মানুষ অন্তত সচেতন। আমরা জনগণকে নিয়ে সেই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে যাতে সঠিক সময়ে নির্বাচন হয় এবং সরকারও নির্বাচনটা সঠিক সময়ে দিতে বদ্ধপরিকর। সে ব্যাপারে আমরা সচেতন থাকব এবং সক্রিয় থাকব।

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাদের সাথে জোটের ব্যাপারে এখন কিছু বলা যাচ্ছে না।

এ সময় ভূঞাপুর বালিকা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকে গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান তরফদার। এতে অতিথি ছিলেন- উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সেলিমুজ্জামান তালুকদার সেলু, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. মনিরুজ্জামান প্রমুখ।

মন্তব্য

জাতীয়
Rizvi is the expectation of a fair election before Ramadan

রমজানের আগেই একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা রিজভীর

রমজানের আগেই একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা রিজভীর

আগামী রমজানের আগেই দেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, এতে ষোলো বছর পর দেশের ভোটাররা ভোট দিতে পারবেন।

বুধবার (২৭ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির পক্ষ থেকে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও ফাতিহা পাঠ শেষে এ মন্তব্য করেন তিনি।

দেশের মানুষ এখনো নানাভাবে অধিকারবঞ্চিত উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তকারীদের দিক থেকে আমরা এক ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্রের মধ্যে বাস করছি। আমাদের আন্দোলনের চূড়ান্ত লক্ষ্য গণতন্ত্র এখনো প্রতিষ্ঠা পায়নি। তবে আমাদের বিশ্বাস খুবই দ্রুত রমজানের আগেই একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে, তাতে এ দেশের ভোটাররা ষোলো বছর ধরে যে ভোট দিতে পারেননি, এবার তারা সেই ভোট দিতে পারবেন।’

‘পাশাপাশি গণতন্ত্রের আরও বিভিন্ন শর্ত, যেমন: এ দেশের মানুষের মনে নিরাপত্তাবোধ তৈরি, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা— পূরণ করা সম্ভব হবে।’

তিনি বলেন, ‘আদালত হতে হবে অসহায় মানুষের শেষ ভরসার স্থল। সেই ধরনের একটি সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আর এই লক্ষ্য পূরণে মানুষের অনুপ্রেরণা হচ্ছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তিনি ছিলেন মানবতা, প্রেম ও দ্রোহের কবি। ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রাম, স্বাধীনতার লড়াই, নব্বইয়ের গণআন্দোলন এবং বছরখানেক আগে যে দুনিয়া কাঁপানো গণঅভ্যুত্থান হয়েছে, প্রতিটি জাতীয় অর্জন ও অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে যার গান ও কবিতা মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছে, দেশের জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেছে, তার গান গাইতে গাইতে ও তার কবিতা আবৃত্তি করতে করতে আমরা রাজপথে নেমে আসতাম।’

রিজভী বলেন, ‘স্বৈরশাসনের তপ্ত বুলেটের সামনে নিঃশঙ্কচিত্তে দাঁড়াতেও দ্বিধা করিনি, কারণ আমাদের কণ্ঠে ছিল জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের গান ও কবিতা। যখনই এ দেশের মানুষ অধিকারহারা হয়, তখনই তাদের সংঘবদ্ধ ও ঐক্যবদ্ধ করে অত্যাচারীর শৃঙ্খল ভাঙার প্রত্যয় জেগে ওঠে যার কবিতা ও গানে, তিনি কাজী নজরুল ইসলাম।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে তিনি (নজরুল) তার শানিত কলম চালাতে দ্বিধা করেননি। তার লেখা কবিতা, গান ও সৃষ্টির মধ্য দিয়ে যে চেতনা তিনি গোটা জাতিকে দিয়েছেন, তা ধারণ করেই আমরা দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে সংগ্রাম করেছি, জুলাই আন্দোলনে যার চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ হয়েছে।’

মন্তব্য

জাতীয়
Overnight discrimination will not end Mirza Fakhrul

রাতারাতি বৈষম্যের অবসান হবে না: মির্জা ফখরুল

রাতারাতি বৈষম্যের অবসান হবে না: মির্জা ফখরুল

বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠোমোতে দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্য চলে আসছে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সেখানে রাতারাতি এগুলোর সমাধান সম্ভব হবে না। কিন্তু আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, এই রাষ্ট্রকাঠামো বদলাতে হবে।

তিনি বলেছেন, ‘রাষ্ট্র কাঠামোর সংস্কারর চূড়ান্ত পর্যায়ে আমরা এখনো আসতে পরিনি। এমনকি নির্বাচন নিয়েও একই বিষয় আছে, যদিও জাতি এখন সেই দিকেই মনোনিবেশ করেছে। যে বিষয়গুলো নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন সংগ্রাম ও লড়াই করেছি, এটা মুহূর্তের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে— এমনটা মনে করার কোনো কারণ নেই।’

শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর প্রেসক্লাবে একটি সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘সামাজিক সুরক্ষা কতটুকু সু-রক্ষিত’ শিরোনামের এই সেমিনারের আয়োজন করে অর্পণ আলোক সংঘ নামের একটি সংগঠন।

এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন দৈনিক প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য রেহানা আক্তার রানু ও পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ড. এম মাসরুর রিয়াজ। সেমিনারটির সঞ্চালনা করেন অর্পণ আলোক সংঘের চেয়ারম্যান বীথিকা বিনতে হোসাইন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা এখন রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের কথা বলছি, একইসঙ্গে অর্থনৈতিক কাঠামোর কথাও বলছি। কিন্তু দীর্ঘদিনের সব অনাচার, অবিচার, নৈরাজ্য, দুর্নীতি ও স্বৈরাচার— সবকিছু কাটিয়ে একদিনে সুন্দর করে একটি রাষ্ট্র আমরা তৈরি করব, এটা মনে করার কোনো কারণ আছে বলে আমি মনে করি না।’

তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নতুন একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে। যে ৫২ বছরে একটা নিয়মিত ও শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিধান আমরা তৈরি করতে পারিনি, সেখানে আজ হঠাৎ করে মুহূর্তের মধ্যে আমরা সবকিছু ঠিক করতে পারব না। আমরা যারা রাজনীতি করছি, তারা চেষ্টা করছি। তবে বিচ্ছিন্নভাবে কিংবা জোড়াতালি দিয়ে কোনোকিছু করা যায় না। এর জন্য সুনির্দিষ্ট চিন্তাভাবনা ও লক্ষ্য প্রয়োজন। পাশাপাশি, রাজনৈতিক নেতাকর্মীদেরও আন্তরিকতা থাকতে হবে।’

এ সময়ে রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারের ওপর জোর দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এটা আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি। এই কাঠামো বদলাতে হবে। কারণ, বেগুন গাছ লাগিয়ে আমরা কমলালেবু আশা করতে পারি না। কাজেই আমাদের সামনে একটা সুযোগ এসেছে, সেটা যদি কাজে লাগাতে পারি, বৈষম্যহীন একটা সমাজব্যবস্থার কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারি, তাহলে হয়তো-বা অভ্যুত্থানের কিছুটা মূল্য আমরা পাব।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সবকিছু নির্ধারণ করে আমলারা। সেখান থেকে সবকিছু নেমে আসে। একজন স্কুলশিক্ষককেও নিজের সমস্যা সমাধান করতে ঢাকায় আসতে হয়, যেটার কোনো প্রয়োজন নেই। এর জন্য তো জেলা পরিষদই যথেষ্ট হওয়ার কথা।’

‘কিন্তু ওই যে সিস্টেম। কারণ, তারা যদি ঢাকায় না আসেন, তাহলে ঘুষ আসবে কোথা থেকে? এখন স্কুলশিক্ষক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক— সব নিয়োগ হয় ঘুষের বিনিময়ে। যেই রাষ্ট্রকাঠামোতে এমন বৈষম্য চলতে থাকে, সেখানে রাতারাতি কিছু করে ফেলতে পারব না।’

অনুষ্ঠানে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘মেহনিত মানুষের আন্দোলনের দাবি-দাওয়ার মঞ্চ হিসেবে আমরা নিজেদের গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। ২০১৫ সালে গণসংহতি আন্দোলনকে একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে ঘোষণা করি। এ সময়ে বাংলাদেশের মানুষের লড়াই-সংগ্রামে যুক্ত থাকার চেষ্টা করেছি।’

‘রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে জনগোষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধ রাখা; আমাদের লক্ষ্যও তাই।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে শ্রেণিগত পার্থক্য রয়েছে। সবচেয়ে বড় পার্থক্য ধনসম্পদে। গত ৫৪ বছরে যে দলগুলো ক্ষমতায় ছিল, তারা যে নীতি তৈরি করেছে, তাতে সংখ্যাগরিষ্ঠ খেটে খাওয়া মানুষ, নিপীড়িত জনগোষ্ঠী কিংবা লিঙ্গীয় পরিচয়ের মানুষ, তাদের জন্য সাম্য তো দূরের কথা, ন্যূনতম ভারসাম্যও তৈরি করতে পারেনি।’

‘এতে লুটপাট-নির্ভর একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখানে ধরে নেওয়া হয়, ক্ষমতা দিয়ে টাকা-পয়সা বানাবে।’

ববি হাজ্জাজ বলেন, ‘শেখ হাসিনার আমলে ব্যাংক লুট হয়ে সাফা হয়ে গেছে। কিন্তু গত পরশুদিন দেখলাম, ৯টি নন-ব্যাংকি ফিন্যানশিয়াল ইনস্টিটিউশন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এটা বিশাল ব্যাপার। কিন্তু হাসিনা চলে যাওয়ার পরও লুটপাট বন্ধ হয়ে যায়নি। গেল ১২ মাসে প্রায় একইভাবে ব্যাংকিং খাতে লুটপাট হয়েছে। এটি আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক অবক্ষয়, যেগুলো হাসিনার আমলে বেশি হয়েছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, এজন্য কোনো জবাবদিহিতা নেই।

তিনি আরও বলেন, ‘কোনো ব্যাংক থেকে একটি টাকা লুট হলেও বাংলাদেশের ব্যাংকের নজরদারি থাকে। লুট হবে, বাংলাদেশ ব্যাংক জানবে না— এটা হয় না। হাসিনার আমলে যে লুট হয়েছে, তা বাংলাদেশ ব্যাংক জানত। কিন্তু সেখানে যে কর্মকর্তাদের এই নজরদারি করার কথা ছিল, তাদের নামে কোনো নিউজ হয়নি, মামলা হয়নি। অর্থাৎ এই প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসা হয়নি।’

মন্তব্য

জাতীয়
If people want we will form the government Dr Taher

যদি জনগণ চায় তবে আমরাই সরকার গঠন করব: ডা. তাহের

যদি জনগণ চায় তবে আমরাই সরকার গঠন করব: ডা. তাহের

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, সাধারণ মানুষ ইসলামকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। আমি নির্বাচনের ব্যাপারে খুবই সিরিয়াস। যদি জনগণ চায় তবে আমরাই সরকার গঠন করব।

তিনি বলেছেন, ইসলামী সমমনাদের এক মঞ্চে আনার বিষয়ে সবাই একমত। বড় বড় রাজনৈতিক নেতারা অনেক সময় পিআর বুঝেন না, কিন্তু সাধারণ মানুষ বিষয়টি ভালোভাবেই বোঝে। কুমিল্লা বিভাগ বাস্তবায়ন ও বিমানবন্দর চালুর বিষয়ে ইতোমধ্যে অগ্রগতি হয়েছে। শিগগিরই সুখবর আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে দিনব্যাপী কুমিল্লা ফানটাউনে জামায়াতে ইসলামী কুমিল্লা মহানগরীর ‘নির্বাচনী দায়িত্বশীল সমাবেশ’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

ডা. তাহের বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনে পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতি চালুর জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত রয়েছে।

বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, প্রয়োজনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আমলে হ্যাঁ/না ভোটের মতো পদ্ধতিও গ্রহণ করা হতে পারে।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন- কুমিল্লা মহানগরীর আমির ও কুমিল্লা ৬ সংসদীয় আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী কাজী দ্বীন মোহাম্মদ।

কুমিল্লা মহানগরীর দুরবস্থার প্রসঙ্গ টেনে ড. তাহের বলেন, আমি কান্দিরপাড় থেকে ডুলিপাড়া ফানটাউনে আসতে ৪৫ মিনিট সময় নিয়েছি। যেখানে স্বাভাবিক সময়ে ৫ মিনিটের বেশি লাগার কথা নয়।

সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি আবারও জোর দিয়ে বলেন, নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি চালুর বিষয়ে জামায়াত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে আগ্রহী। প্রয়োজনে বিকল্প ফরম্যাটেও কাজ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, কোনো দল যদি মনে করে আগামী নির্বাচনে নিশ্চিত জয়ী হবে তাহলে বোঝা যায় জেতার জন্য তারা কোনো একটা মেকানিজম করছে। একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলাদেশকে সংকট থেকে বের করে আনতে পারবে। জনগণ যাকে চাইবে তারাই জয়ী হবে।

মহানগরীর সেক্রেটারি মাওলানা মাহবুবুর রহমান এবং সহকারী সেক্রেটারি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান সোহেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- মহানগরীর নায়েবে আমির অধ্যাপক এ কে এম এমদাদুল হক মামুন, যুব বিভাগের সভাপতি কাজী নজির আহমেদ, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের মহানগর সভাপতি অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট নাছির উদ্দিন মোল্লা, মোতাহার আলী দিলাল, ভিপি মুজিবুর রহমান, কুসিক ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন, অধ্যাপক এ জি এস শহিদুল্লাহ, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সবুজ প্রমুখ।

মন্তব্য

p
উপরে