১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া গণফোরাম ছেড়ে দিলেও রাজনীতিতে থাকতে চান। তবে তিনি কী করতে যাচ্ছেন, সেটা স্পষ্ট নয়।
নিউজবাংলাকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, বিএনপির প্রতি তার সহানুভূতি আছে। তবে এই দলটির অবস্থানও সুনির্দিষ্ট নয় বলে মনে করেন। আর এ কারণে এই দলে যোগ দেবেন না।
বিএনপি শাসনামলে গ্রেনেড হামলায় বাবাকে হত্যার পর ওই সরকারের শাসনামলে যা যা হয়েছে, সেগুলো নয়, রেজার ক্ষোভ আওয়ামী লীগের প্রতি। কেন এত দিনেও বিচার হবে না, সে প্রশ্ন তুলেছেন। এই মামলার আসামিদের একটি বড় অংশ বিএনপি নেতা, সেটা নিয়ে ভাবছেন না। রেজার ধারণা, তদন্ত ঠিকমতো হয়নি। এই হামলার পেছনে কারা, সেটি বের হয়নি।
গণফোরাম ছাড়লেন। রাজনীতি থেকে সরে গেলেন কি?
রাজনীতি থেকে সরে আসার কোনো পরিকল্পনা নেই। গণফোরামের পলিটিক্সে একটা জটিলতা হয়েছিল, সেখানে আমি চাচ্ছিলাম না যে ব্যক্তিগত কোনো কারণে ব্যক্তিভিত্তিক মনোমালিন্যের জন্য দলের ক্ষতি হোক। কয়েকটা নীতিগত সমস্যা ছিল।
কী সেই সমস্যা?
এটা শুরু হয় ২০১৮ ডিসেম্বরে নির্বাচনের আগে থেকেই। ওই সময় যে নির্বাচনটা হয়েছিল, সেটাকে আসলে নির্বাচন বলা কঠিন। কিন্তু তারপরে কর্মসূচি নিয়ে আমি খুব হতাশ ছিলাম। কিন্তু তখন আমি কথা বলার মতো পজিশনে ছিলাম না। পরে আমি প্রেসিডিয়াম মেম্বার হলাম।
তখন একটা বড় সমস্যা হয়ে গেল। আমাদের এমপি সাহেবের (মোকাব্বির খান) সংসদে যাওয়া নিয়ে। আমরা সেটাকে বিবেচনা করে একটা ইতিবাচক অবস্থানে চলে এসেছিলাম অনেক আলোচনা তর্কবিতর্ক করে। আর তখন বেশির ভাগ লোকে বলেছে সংসদে যাওয়া উচিত। সেখানে আমার যুক্তি ছিল, এখন তো বিরোধিতা করার জন্য একটা রাস্তা লাগবে। সেটা এক ফুট জায়গা হোক না কেন।
নির্বাচনের ফলাফল বর্জন করার একটা গ্রুপও ছিল। তবে বর্জন করে তো বসে থেকে লাভ নেই। যদি আন্দোলন করত তবে আমি অবশ্যই বলতাম যে বর্জন করা হোক। কিন্তু আমি কিছুই দেখি না। তিন মাস পরেও আন্দালনের কোনো লক্ষণ নেই। তখন মন্দের ভালো যে ওনাকে সংসদে পাঠানো হোক।
এটা নিয়ে কয়েকজন খুব বেশি অসন্তুষ্ট ছিল। তারা তখন একটা সেন্ট্রাল কমিটির মিটিং হলো। বলা হলো কেন ওনাকে (মোকাব্বির খান) বহিষ্কার করা হবে না।
তখন ওনাকে শোকজ দেয়া হয় আর উনি সেটার উত্তরও দেন, উত্তরে আমরা সন্তুষ্ট ছিলাম। তাই তাকে বহিষ্কার করা হয়নি। কিন্তু এটা কয়েকজন সিনিয়র নেতা মেনে নিতে পারেননি, তাই তারা কাউন্সিলে আসেননি।
আমাকে সাধারণ সম্পাদক করা হলো। মনোমালিন্যের শুরু হয়েছে ওখান থেকে। কারণ, আমি সংসদে যাওয়ার পক্ষে ছিলাম। এখন দলের মধ্যে একজন সিনিয়র নেতা আরেকজনকে নিয়ে খারাপ মন্তব্য করবেন, এটা আমি নিতে পারিনি। আর সেটা বাইরের মানুষের কাছে গিয়ে বলবে ‘সে রাইটিং প্যাড চুরি করেছে’ এমন আরও খারাপ কথা।
গণফোরাম থকে বেরিয়ে আসা কি আপনার নিজের সিদ্ধান্ত?
জ্বি, এটা আমার নিজের সিদ্ধান্ত। আমি এ ব্যাপারে স্যারের সঙ্গে (ড. কামাল হোসেন) আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার থেকে দলের কারও দায়ভার বহন করতে হবে না। আমার পরিবারের কথা তো ভাবতে হয়। আমি যখন ২০১৮ সালে দেশে চলে আসি, তখন তো তাদের সেক্রিফাইস করতে হয়েছে। আমি তো বেতনে চলি। দেশে এসে কাজ করার ইচ্ছা আমার সব সময় আছে। এটা বাবা-মা চাইতেন। সেই ইচ্ছা পূরণ করার সঙ্গে আমার নিজের ইচ্ছাও ছিল।
আপনার বাবা তো আওয়ামী লীগ করতেন। কিন্তু আপনি দলটি নিয়ে এখন হতাশ।
আমি ওই আওয়ামী লীগ নিয়ে একটুও হতাশ না। আমার বাবা যে আওয়ামী লীগ করতেন সেই আওয়ামী লীগ তো এখন আর নেই। ওই আওয়ামী লীগ এই পৃথিবী থেকে চলে গেছে।
ওই আওয়ামী লীগ এবং এখনকার আওয়ামী লীগের মধ্যে পার্থক্য কোথায়?
আমি আব্বার কথা দিয়েই বলি। প্রথমে দুই বছর বিএনপির সময় নিল আব্বার হত্যার তদন্ত ও বিচার ঠিকমতো হয়নি। চার্জশিট দেয়নি ঠিকমতো। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকার আরও দুই বছর সময় নিল। আর আওয়ামী লীগ ১২ বছর।
একটা সুষ্ঠু তদন্ত করার মতো তাদের ইচ্ছা ছিল না, বা ক্ষমতা ছিল না? যেটাই হোক তাদের ব্যর্থতা। তা ছাড়া আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমার নীতিগত ব্যাপারে মিল নেই। আদর্শের মিল নেই। আদর্শহীন একটা দল। তারা যে গণতন্ত্রের কথা মুখে বলে আর যে কাজটা করে সেটা ঠিক না। বিরোধী দলের কোনো কথা তারা সহ্য করে না। হত্যা, মানুষকে তুলে নেয়া, মিথ্যা মামলা। এ ছাড়া ইকোনমিক পলিসিতে আমি তাদের সঙ্গে একমত না। একটা গ্রুপের জন্য তারা কাজ করে। যেটা পাকিস্তানে হয়।
এই সরকারের আমলেই তো বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সূচকে পাকিস্তানকে ছাড়িয়েছে, ভারতকেও বহু সূচকে ছাড়িয়ে যাওয়ার পথে। সেটা কি বিবেচনায় আনবেন না?
হিসাবের কিছু ব্যাপার আছে। বাংলাদেশে খুব বেশি লোক জিডিপির হিসাব জানে না। আমি এটা করেছি। আমি ৩৫ বছর ধরে এগুলো করছি। জিডিপির বিষয় নিয়ে খুব বেশি লাফালাফি করা উচিত না। আর একটা হিসাবে সেটা হলো পিপিপির হিসাবে আমরা ভারত থেকে ১০০০ ডলার পিছিয়ে। আর একটা হলো একচুয়্যাল এক্সচেঞ্জ রেট হিসেবে। আমি এই টেকনিক্যাল আলোচনাতে যাব না।
হ্যাঁ, আমি মনে করি এটা খুব সুখবর। কিন্তু আমাদের দেশে যে সাত কোটি মানুষের পরিবারে তারা ঠিকমতো খেতে পারে না, এটা খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তানে বলা হতো, ২২টা ফ্যামিলি পুরো সম্পদের ৬০ ভাগ দখল করে রেখেছিল। এখন তো আরও কম পরিবার সেটার মালিক দেশে।
আমি মনে করি, এটা পুরোনো আওয়ামী লীগের আদর্শের বিপক্ষে। আমার বাবা যেটা করেছিলেন, সে সময় বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, তার সঙ্গে বেকারত্ব দূর করা ও ভূমিহীনদের জন্য কাজ করা, সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা রক্ষা করা, লোন ইনফ্লেশন দিয়ে কাজ করা। আব্বুর সময় দেড় শতাংশ মুদ্রাস্ফীতি ছিল। যেটা খুব কম। কিন্তু এখন এই প্রবৃদ্ধির কথা শুনে যে না খেয়ে আছে তাকে বিদ্রূপ করা।
আর একটা হলো, ভোটের অধিকার। সেটা এখন হাসাহাসি বিদ্রূপের অবস্থায় চলে গেছে। যার জন্য দেশে বিদেশে লজ্জা লাগে।
দল থেকে পদত্যাগের বিবৃতিতে বলেছেন, ‘বাংলাদেশে যারা গণতন্ত্র, সামাজিক ন্যায়বিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে, আমি তাদের সঙ্গে কাজ করে যাব’। এটি অস্পষ্ট। আসলে আপনি কী করতে যাচ্ছেন?
এদেশে আমি কখনও কাজ করতে পারব কি না, সেটা জানি না। আমি জাস্ট এসেছি যদি একটু সুযোগ পাই তবে করব। ওই পর্যন্ত হয়নি বাট আল্লাহর যদি ইচ্ছা হয় তো করব। এই ইচ্ছা নিয়ে আসা। গণতন্ত্রের জন্য কাজ করব।
ড. কামালকে যত দিন দেখলেন, সাধারণ মানুষের সঙ্গে যত দিন মিশলেন, তাতে গণফোরামের দল হিসেবে বিকশিত হতে না পারার কারণ কী মনে হয়েছে?
সত্যি কথা বলতে যে গণফোরামে আসার আগে বুঝিনি। আমি ওনার দিকে তাকিয়ে এসেছি। ওনার মেধা, বুদ্ধি, বিবেক এগুলা। আমি ওনাকে অনেক বছর ধরে চিনি। সবকিছু মিলে আমি ওনাকে দেখে এসেছি। কিন্তু দলের মধ্যে আমার মনে হয় না ওনাকে যাচাই করার মতো, মূল্যায়ন করার মতো ক্ষমতা খুব বেশি লোকের নাই। তাই উনি কীভাবে কাজ করতে পারবেন দলের জন্যে সেটা জানা নেই।
ড. কামালকে কি কখনও গণমানুষের মনে হয়েছে?
উনি চেষ্টা করেন রিচ করতে। কিন্তু সবার পক্ষে গ্রামে গিয়ে ভোট চাওয়া, ভোটের জন্য কাজ করা এটা সম্ভব না। সবাই তো ওই পলিটিক্সের জন্যে না। কিছু মানুষকে পলিসি করতে হবে, কিছু মানুষকে নীতিনির্ধারক হতে হবে। ওই বয়সে গিয়ে ক্যাম্পেইনিং করা আসলে ওনার পক্ষে সম্ভব না।
আর দলের মধ্যে কেন অগ্রসর হতে পারেনি এটা ওনাকে কেউ যাচাই করতে পারেনি। ওনাদের কথাবার্তা আমি যা শুনেছি, তাতে মনে হয়েছে ড. কামাল হোসেনকে তারা মফস্বলের অ্যাডভোকেট থেকে একটু ভালো মনে করে।
তবে কিছু লোক আছে, যারা ২৬ বছর ধরে ওনার সঙ্গে থেকেছে। কিন্তু কিছু আছে, যারা দলের পজিশন নিয়ে লোভ করে। আব্বা ২০০৫ সালে মারা যাওয়ার পর তো আওয়ামী লীগ চেয়েছিল আমাকে নমিনেশন দিতে। তখন তো আমি সিমপ্যাথিতে জিতে যেতে পারতাম।
তাহলে আপনার আব্বার হত্যার বিচারের দীর্ঘসূত্রতা নিয়ে আপনার মধ্যে একটা বড় ধরনের ক্ষোভ আছে...
হ্যাঁ, অভিয়াসলি এটা আমার মাইন্ডে আছে। তার চেয়ে বড় কথা, দেশের জন্য কাজ করা। শুধু রাজনীতি করব বাবার হত্যার বিচার করার জন্য, তা নয়। আমাকে অনেকেই বলেছে যে আপনি আওয়ামী লীগের মন্ত্রী বা এমপি হন তখন আপনি বিচার করতে পারবেন। কিন্তু দেশের কত মানুষ এমন হত্যার শিকার হয়েছে আর সেটার বিচারের জন্য কি এমপি-মন্ত্রী হতে হবে? এ কারণে আমি রাজনীতি করি, তা নয়।
আপনার বাবার হত্যা মামলাতেও তো বিএনপির তিন জন নেতা আসামি। যাদের একজন বিএনপি সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। একজন সিলেট সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র। একজন হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র।
কিন্তু কারও দলীয় পরিচয় নিয়ে মাথা ঘামাই না। কারা আসল হত্যাকারী ছিল তাদের চিহ্নিত করেন সেটা যে দলেরই হোক না কেন। আই ডোন্ট কেয়ার। আর বিএনপির যে কয়েকজনের নাম তারা দিয়েছে কিন্তু আমি তো সব সময় বলছি আপনাদেরকে যে এই তদন্তে আমার মা আসমা কিবিরিয়া ১০ বছরে ৮৩ বার রাস্তায় দাঁড়িয়েছেন।
আপনার মা শান্তির জন্য নীলিমা কর্মসূচি দিয়েছিলেন তখন
হ্যাঁ, এটার নাম দিয়েছিলেন শামসুর রাহমান। আর রক্তের অক্ষরে শপথের সঙ্গে স্বাক্ষর এটা শামসুল হক সাহেব দিয়েছিলেন। আম্মা করেছেন। কিন্তু আমাদের দুটি দাবি আমি সব সময় বলেছি।
একটা হলো, গ্রেনেডের উৎস কী? আর দুই নম্বরটা হলো, মদতদাতা কে? যে গ্রেনেড ছুড়ে মেরেছে, যে ট্রাক চালিয়েছে, যে লাইট অফ করেছে এটা তারা টাকা পেয়েছে একজন থেকে আর তারা কাজটা করেছে। আসল মদতদাতাদের দিকে যেতে তদন্তকারীরা চায় না। আমি বিশ্বাস করি, একটা মিথ্যা তদন্তের ওপর সুষ্ঠু বিচার হতে পারে আমার মনে হয় না। তাই কোনো চার্জশিট আমরা মানি না।
তিনটা চার্জশিট দেয়া হয়েছে। একটার সঙ্গে আরেকটার কোনো মিল নাই। ওই সময় একজন এমপি আছেন যিনি আমার মাকে পর্যন্ত ধমক দিয়েছে এ ব্যাপারে। এটা আপনাকে মানতে হবে। মানবেন না মানে? সরকার এটা চায়।
এমপি কে ছিলেন?
তার নাম মজিদ খান। বানিয়াচংয়ের সংসদ সদস্য। তিনি বাদী ছিলেন। তার অনেক ব্যাপার আছে। মানুষ বুঝতে পারছে যে ওরা একটা রাজনৈতিক শত্রুর বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে।
পেশাগত জীবনে বহুকাল দেশের বাইরে ছিলেন। দেশের রাজনীতিতে অভিজ্ঞতা এক বছরের মতো। পশ্চিমা দুনিয়ার সঙ্গে আমাদের রাজনীতির মৌলিক পার্থক্য কোথায়?
সবখানেই সমস্যা আছে। গণতন্ত্র পারফেক্ট না। সবগুলোর চেয়ে ভালো কিন্তু তা-ও সমস্যা থাকে। ইউরোপীয় ডেমোক্র্যাসির জবাবদিহি আছে। স্ট্রং মিডিয়া, স্ট্রং প্রেস। জার্নালিস্ট যদি সাহস করে কিছু বলে তাদের কেউ ফোন করে বলে না যে, পা ভেঙে দেব, আক্রমণ করব, মিথ্যা মামলা দেব।
এটা বাংলাদেশে নেই। আর আপনার ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও তো আপনি ভয়ে কোনো কিছু লিখবেন না। আমার ইন্টারভিউয়ের কথাই আপনি পুরোপুরি দিতে পারবেন না। আর এতে কী হয়েছে, বাইরের জার্নালিস্টরা যাদের এ ধরনের সমস্যা নেই তারা আমাদের দেশের জার্নালিজমের যে ঘাটতি তা তারা মেকআপ করছে। আমরা এখানে থেকে জাস্টিফাই করে যাচ্ছি।
আপনি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলেছেন। আপনি কি কোনো কথা বলতে গিয়ে কখনও বাধার মুখে পড়েছেন? বা এমন কিছু জানেন, যেটা নিজের মধ্যে না বলে ভয়ে চেপে রেখেছেন?
দলের মধ্যে তো একটা প্রেশার আছে। যখন আমি দলের মধ্যে কথা বলেছি, তখন তো একটা ব্যালান্স নিয়ে কথা বলেছি। সবাই তো একমতের না।
এটা তো দলের বিষয়। বাইরে?
হ্যাঁ, আমি তো আপনাকে বলছি কিন্তু আপনি তো লিখতে পারবেন না। এই যে আমি আপনাকে বলছি, এই অত্যাচারী, অদক্ষ, অসৎ এবং স্বৈরাচারী সরকারের মোটামুটি একটা কন্ট্রোল আছে দেশের সব সেক্টরে। সবার ওপর। তারা যে মানুষকে ক্ষতি করতে পারে সেটা তারা প্রমাণ করেছে। তারা বারবার প্রমাণ করে।
তাদের সবচেয়ে বেশি ক্ষোভ বিএনপির ওপরে। আমার এলাকায় যে মানুষকে অত্যাচার করেছে, সেটা আমি দেখেছি। একজন মানুষকে পায়নি। তার ১৫ বছরের ছেলেকে তুলে নিয়ে গেছে। একটা স্বাধীন মুক্ত দেশে এটা হতে পারে না।
এটা মিডিয়ার অনেক লোক বলেছে, এটা নিয়ে বেশি বলাবলি করা যাবে না। আমি একটা লোকের বাসায় গিয়েছি, আমার এলাকায়। তাকে রাত তিনটার সময় পুলিশ এসে ধরে নিয়ে গেছে। তার অপরাধ সে আমার কিছু পোস্টার লাগিয়েছে। কত সিরিয়াস অপরাধ! এভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে সম্মান পাওয়া যায় না।
আওয়ামী লীগের একটা কিছু কি মনে হয়েছে, যে প্রশংসা করা যাবে?
না, ছোটখাটো দুই-একটা ব্যাপার থাকতে পারে। কিন্তু তারা যে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করে দিচ্ছে, গরিব মানুষদের অবস্থা আরও খারাপ করে দিচ্ছে, ব্যাংক লুট করেছে, বাজেটে ১০০ কোটি টাকার প্রজেক্ট ৫০০ কোটি টাকা করে নিয়েছে। খুব বেশি প্রশংসনীয় কিছু থাকে না। যেগুলো করেছে সেগুলো জঘন্য।
গুঞ্জন আছে, নিজেই দল করতে যাচ্ছেন। এমনও কথা শোনা যাচ্ছে, একটি বড় দলের বেশ কিছু নেতা আপনার সঙ্গে আছেন। এগুলো কি শুধুই গুঞ্জন নাকি বাস্তবতাও কিছু আছে?
অনেক দলের সঙ্গে আমার যোগাযোগ আছে। আমি নিজে কোনো দল প্রতিষ্ঠা করব এই ধরনের খবর আমি এখনও পাইনি।
জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা বিএনপিকে নিয়ে জোট গঠনে গণফোরামের ভেতরে আপত্তি ছিল। সমঝোতাটা তাহলে পরে কীভাবে হলো?
আমি একটু সিঙ্গেল মাইন্ডেড এ ব্যাপারে। এই অত্যাচারী সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরানো দরকার। আর এ ক্ষেত্রে দেশের যেকোনো রাজনৈতিক দল একমত থাকে, আমি তাদের সঙ্গে কাজ করতে রাজি আছি।
আওয়ামী লীগের একটা ভালো কাজ পেলাম যে, হ্যাঁ তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছে। তবে সেখানেও আমি বলতে চাই, বিচারটা সুষ্ঠুভাবে করুন। সবার কথা শুনুন। প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে সেটাও তো রং (ভুল)।
তার মানে আপনি বলতে চাচ্ছেন, এই সরকারকে হটানোর জন্য আপনার সঙ্গে যে কেউ যুক্ত হলে আপনি তাদের স্বাগত জানাবেন?
জামায়াতে ইসলামী বলে কোনো দলের এখন নিবন্ধন নেই। আমি তৃতীয় শক্তি, চতুর্থ শক্তি, পঞ্চম শক্তি, সবগুলোকে ওয়েলকাম করি। মানুষ বিবেচনা করবে। এখানে প্রতিযোগিতা লাগবে।
৫০ বছর আগে কী করছেন তা নিয়ে গর্ব করে তো কিছু হবে না। আমাদের নতুন প্রজন্ম যারা বেকার তাদের তো কিছু দিতে হবে। এখন যে বিরোধী দল (জাতীয় পার্টি) আছে তাদের তো কোনো ভূমিকা নেই। তারা সরকারের ভেতরে থেকে কাজ করলে কিছু করতে পারবে না।
আপনার কি মনে হয় বিএনপি কি এই সরকারের বিপক্ষে শক্ত কোনো অবস্থান নিতে পারবে?
খুব কঠিন। তাদের জন্য আমার সিমপ্যাথি আছে। এতগুলো কেস (মামলা) থাকা সত্ত্বেও তারা এই সরকারের বিপক্ষে নামছে।
তারা বড় কোনো পরিবর্তন আনতে পারবে?
দেখা যাক কী হয়। আমি ওদের ব্যাপারে কোনো ক্রিটিসাইজ করতে চাই না। আমি বলতে চাই, আওয়ামী লীগ একটা জনমুখী দল ছিল। তাদের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা ছিল মানুষের মধ্যে। তারা যে এমন ঘৃণিত হয়ে যাবে, তা আমি আশা করিনি। এই ১২ বছরের জন্য দেশে পরিবর্তন আসবে।
বিএনপি নিয়ে কোনো পরিকল্পনা?
সে রকম কোনো পরিকল্পনা আমি করিনি। বিএনপি নিয়ে ক্লিয়ার না আমি। আমি কী করতে চাই, তা আমি আগেই বলেছি। বিএনপিকে আমি ঠিক বুঝতে পারছি না যে, তাদের কতটুকু অ্যাম্বিশন। তাদের যদি অ্যাম্বিশন হয় সেটা এখনি বলুক। তারা যদি ক্ষমতায় এসে বলে আমরা আওয়ামী লীগ থেকে ১০ ভাগ ভালো হব, এটা যদি অ্যাম্বিশন হয় তাহলে আমি তাদের প্রতি আকৃষ্ট না। একটা কমপ্লিট চেঞ্জ দরকার রাজনীতিতে। বিএনপি তেমন যদি কোনো নীতি দেখায় তাইলে পসিবল।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘পিআর পদ্ধতির আন্দোলনের লক্ষ্যই হচ্ছে নির্বাচনকে বিলম্বিত করা, এটা জনগণ গ্রহণ করবে না।’
তিনি বলেন, ‘কয়েকটি রাজনৈতিক দল পিআর পদ্ধতি নিয়ে কথা বলছে এবং আপনারা দেখেছেন এটার জন্য তারা আন্দোলনও করছে। এর একটাই লক্ষ্য তা হচ্ছে, নির্বাচনকে বিলম্বিত করা। জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার যে প্রক্রিয়া সেই প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করা।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পিআর পদ্ধতি এই দেশের মানুষ গ্রহণ করবে না। আমাদের দলের পক্ষ থেকে তো আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, এখনো বলছি, জনগণই এই পদ্ধতি গ্রহণ করবে না, চাপিয়ে দেওয়া কোনো কিছু এদেশের মানুষ গ্রহণ করবে না।’
গতকাল রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ের মিলনায়তনে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির উদ্যোগে ডেমোক্র্যাটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনির দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব এই শঙ্কা প্রকাশ করেন।
বিএনপি মহাসচিব আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কমিটমেন্ট হলো ২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই এই নির্বাচন হবে। আমরা সেটাই দেখতে চাই। জনগণ নির্বাচন দেখতে চায় এবং সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যেতে চায় এবং গণতন্ত্রের মধ্য দিয়েই জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষাগুলো পূরণ করতে চায়।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা জানি যে নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে যেকোন দল জয়ী হতে পারে জনগণের ইচ্ছার উপর দিয়ে। কিন্তু সেই দলকেই জনগণ বেছে নেবে, যে দল পরীক্ষিত অতীতে যারা পরীক্ষা দিয়েছে অর্থাৎ সরকারে ছিল কাজ করেছে। যেই দল মানুষকে আশার আলো দেখিয়েছে, যেই দল অন্ধকার থেকে আলোতে টেনে নিয়ে এসেছে।’
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানই এই দেশে প্রথম সংবিধানে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম সংযোজন করেছিলেন, তিনিই প্রথম এই দেশের সংবিধানে আল্লাহর উপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস কথাটি রেখেছিলেন।
এখন কিছু দল সেগুলোকে বিকৃত করে বিভিন্নভাবে এই বিএনপিকে চিত্রায়িত করার চেষ্টা করছে।’
তিনি বলেন, ‘যারা বয়স কম তারা জানে না, যাদের বয়স একটু বেশি তারা দেখেছেন ১৯৭৫ সাল নভেম্বর কী অবস্থার প্রেক্ষিতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে এই দেশের মানুষ সেই ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে বেরিয়ে এসে সম্পূর্ণভাবে নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য নতুন করে তখন স্বনির্ভর বাংলাদেশ তৈরি করার কাজে ঝাপিয়ে পড়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঠিক একইভাবে আজকে আবার আমরা সবাই এক হয়েছি আমাদের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে। আমরা অবশ্যই বাংলাদেশকে আবার একটা স্বনির্ভর, আত্মমর্যাদা সম্পন্ন দেশ হিসেবে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড় করাব, এমন বাংলাদেশই নির্মাণ করতে চাই।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অনেক ষড়যন্ত্র আছে, চক্রান্ত আছে। সমস্ত ষড়যন্ত্র চক্রান্তকে পরাজিত করবার শক্তি বাংলাদেশের মানুষের আছে।’
সামনে কঠিন পরীক্ষা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সামনে কঠিন পরীক্ষা অপেক্ষা করছে। প্রতিদিন আপনাদের এই ইউটিউব, টেলিভিশন, সোশ্যাল মিডিয়া এগুলোতে বিভিন্ন রকম মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’ আমার বিশ্বাস আপনারা এখান থেকে সঠিক তথ্যটি বেছে নিতে পারবেন। এই দেশের মানুষ কখনো ভুল করে না, সবসময় সঠিক পথে এগিয়ে যায়। শান্তিপূর্ণভাবে আমরা সেই প্রক্রিয়ার মধ্যে যেতে চাই।
যেখানে একটি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণ তার আস্থা প্রকাশ করবে এবং তাদের একটা পার্লামেন্ট ও তাদের সরকার বেছে নেবে। আপনাদের আবার অনুরোধ করব যে, সুযোগ আমরা পেয়েছি বাংলাদেশকে নতুন করে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলবার সেই সুযোগ যেন আমরা না হারাই।’
একাত্তর মুছে ফেলা যাবে না উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কিছু সংখ্যক মানুষ চেষ্টা করে আমাদের ১৯৭১ সালের ইতিহাসকে ভুলিয়ে দিতে। এটাও সবসময় মাথায় রাখতে হবে যে, একাত্তরে যুদ্ধ হয়েছিল বলেই আমরা স্বাধীন হয়েছিলাম, স্বাধীন হয়েছিলাম বলেই আজকে আমরা নতুন রাষ্ট্রের নতুন চিন্তা করতে পারছি, স্বাধীন হয়েছিলাম বলেই কিন্তু আমরা আজকে এই বাংলাদেশকে বাংলাদেশের মানুষের অবস্থার পরিবর্তন করবার যে সংগ্রাম সেই সংগ্রামে অংশ নিতে পারছি।’
তিনি বলেন, ‘তখন আমরা যুবক ছিলাম, লড়াই করেছি, যুদ্ধ করেছি। আমাদের মধ্যে এখানে অনেকে আছেন যারা সেই যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন, পরবর্তীকালে গণতান্ত্রিক আন্দোলনগুলোতে অংশ নিয়েছেন, এই চব্বিশের আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন, আমরা সবাই এই যুদ্ধগুলোতে অংশ নিয়েছি। শুধু একটা লক্ষ্য আমরা বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থেই একটি গণতান্ত্রিক সমৃদ্ধ একটা বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সেই কথাটি মাথায় রেখে সকলে যেন সামনের দিকে এগিয়ে যাই।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বয়স এক বছর পার হয়েছে, এই ১৪ মাসে রাতারাতি আলাদিনের চেরাগের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে একটা খুব সুন্দর বানিয়ে ফেলবে এই আশা জনগণ করে না এই সরকারের কাছ থেকে। কিন্তু প্রক্রিয়ার শুরুটা চায়... চায় যে সেই প্রক্রিয়া শুরু হোক যে প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ দেখতে পাব।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা ইতোমধ্যে দেখেছেন, যে তারেক রহমান একটা সাক্ষাৎকার দিয়েছে বিবিসিতে।
সেখানে তিনি এই প্রশ্নগুলো তুলে ধরেছেন এবং কিভাবে তিনি দেশের সমস্যার সমাধান করতে চান সেই সমস্যাগুলো তিনি তুলে ধরেছেন। ফিন্যাশনাল টাইমসেও তিনি একইভাবে কথাগুলো বলেছেন।’
বেকার সমস্যাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে বিএনপি ইতোমধ্যে কমিটি গঠন করে কাজ শুরু করেছে এবং ‘অনেক কাজ সম্পন্ন’ করে রাখা হয়েছে বলেও জানান বিএনপি মহাসচিব।
ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় জাগপার খন্দকার লুফুর রহমান, গণদলের এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, সাম্যবাদী সৈয়দ নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ন্যাপের এমএন শাওন সাদিকী বক্তব্য রাখেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পিআর পদ্ধতি এ দেশের মানুষ গ্রহণ করবে না। চাপিয়ে দেয়া কোনকিছু এদেশের মানুষ গ্রহণ করে না।
রোববার দুপুর ১২টার দিকে ডিআরইউ মিলনায়তনে এক 'স্মরণসভা'য় তিনি এসব কথা বলেন। ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মনির দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ স্মরণসভা আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট।
তিনি বলেন, বিএনপি বিরুদ্ধে অপ্রচার চলছে, বিএনপি নাকি সংস্কার চায় না। বিএনপি সংস্কারের পক্ষে। আপনারা অপ্রচারে কান দিবেন না।
মির্জা ফখরুল বলেন, পিআর পদ্ধতির বিষয়ে জনগণ বোঝে না, সেই পদ্ধতি নিয়ে কয়েকটি দল আন্দোলন করছে। এর কারণ হচ্ছে নির্বাচন বিলম্বিত করা, জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করা।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য আলহাজ শাহজাহান চৌধুরী বলেছেন, রাজনীতির নামে বিভাজন সৃষ্টি করে ইসলামী আন্দোলনের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করার অপচেষ্টা আজও চলছে। তিনি আরো বলেন, যারা রাজনীতির নামে বিভাজন তৈরি করতে চায়, তারা দেশ ও জাতির শত্রু, সর্বোপরি তারা ইসলামের শত্রু। মুসলিম উম্মাহর ঐক্যই ইসলামের শক্তি—এই সত্যকে হৃদয়ে ধারণ করে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। কোনো ষড়যন্ত্রে কর্ণপাত না করে ইসলামী শক্তিকে ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সবাইকে আত্মনিয়োগ করতে হবে। শনিবার দুপুরে পুটিবিলা ইউনিয়ন জামায়াতের উদ্যোগে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন তিনি।
ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর মো. নাজিম উদ্দীনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা আইয়ুব সাবেরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সেন্টার দায়িত্বশীলদের সুধী সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমীর আনোয়ারুল আলম চৌধুরী।
সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, লোহাগাড়া উপজেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আসাদুল্লাহ ইসলামাবাদী, বটতলী শহর জামায়াতের আমীর অধ্যাপক জালাল আহমদ, কলাউজান ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা মো. ইদ্রিস, লোহাগাড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল আফসার, সাবেক ছাত্রনেতা বজলুর রহমান, অ্যাডভোকেট আবুল মোজাফফর আহমদ, মাওলানা রফিক আহমদ ও মো. শাহজাহান মুন্সী।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে আনোয়ারুল আলম চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি একটি নিয়মতান্ত্রিক ইসলামী সংগঠন। এ সংগঠনের কর্মীরা শৃঙ্খলা, ত্যাগ ও আদর্শের প্রতীক। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতের কর্মীরা সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে ইসলামী শক্তিকে ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ চালিয়ে যাবে—এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার জন্য একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। গণতন্ত্র ফেরানোর একমাত্র পথ সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন। গণতন্ত্রের জন্য আর বিকল্প কোনো পথ নেই। কয়েকজন মিলে আইন করলে গণতন্ত্র হয় না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউটে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, যতই সংস্কার করি, বুদ্ধিজীবী মিলে কৌশল আবিষ্কার করার চেষ্টা করি কিন্তু নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা না করা পর্যন্ত গণতন্ত্রে ফিরে যেতে পারবো না।
স্বৈরাচারবিরোধী গণআন্দোলনে শহীদ নাজিরউদ্দিন জেহাদের শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আলোচনা সভায় ফখরুল আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষই গণতন্ত্রকামী, স্বাধীনতাকামী। তারা বারবার লড়াই করেছে, সংগ্রাম করেছে, রক্ত দিয়েছে স্বাধীনতার জন্য। দুর্ভাগ্য হচ্ছে সেই লড়াইয়ে মানুষ বারবার হোঁচট খেয়েছে। যতবার হোঁচট খেয়েছে ততবার উঠে দাঁড়িয়েছে এবং আন্দোলন ও সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে বিজয় অর্জন করেছে।
হাসিনাকে শুধু ‘হাসিনা’ বললে একটু সম্মান দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, মনস্টার হাসিনা দেশের সব কিছুকে তছনছ করে দিয়েছে। দেশের বিচার ব্যবস্থা, প্রশাসন, নির্বাচন ব্যবস্থা, আমাদের অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ব্যবস্থা সব জায়গায় সে তছনছ করে দিয়েছে।
ফখরুল বলেন, কিছু কিছু মানুষ বা সংগঠন জুলাই আন্দোলনকে নিজেদের আন্দোলন বলে দাবি করেন। গণতন্ত্রের জন্য বিএনপি সমগ্র সময় ধরে লড়াই করেছে।
সভাপতির বক্তব্যে শহীদ জেহাদ স্মৃতি পরিষদের সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান ৯০–এর গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি স্মরণ করে বলেন, জিয়া পরিবার তখনও জনগণের পাশে ছিল, এখনো আছে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তারেক রহমান সোচ্চার ছিলেন, আছেন। যারা ‘পিআর’ পদ্ধতির কথা বলে, তারা আসলে নির্বাচন চায় না, গণতন্ত্রও চায় না। তিনি বলেন, আমাদের আগে বাংলাদেশ, না দিল্লি, না পিন্ডি; সবার আগে বাংলাদেশ।
সভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনসহ দলের বিভিন্ন স্তরের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় নির্বাচনের আগে এখন পর্যন্ত ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ)’ নিশ্চিত হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। এ জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদেরও দায়ি করেছেন তিনি।
গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর ঢাকায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে গণমিছিলের আগে এক সমাবেশে বক্তব্যে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন গোলাম পরওয়ার। পাঁচ দফা দাবি আদায়ে এ কর্মসূচির আয়োজন করে জামায়াতের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা।
গোলাম পরওয়ার বলেন, কোনো বিশেষ দলের প্রতি দুর্বল হয়ে, কারও চাপে মাথা নত করে প্রশাসনে কোনো দলের পছন্দের লোককে বেছে বেছে পদায়ন করে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা অব্যাহত আছে। ওসি, ডিসি, ইউএনও, আমলা, এমনকি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে অনেকের ভূমিকা এখনো জাতির সামনে প্রশ্নবিদ্ধ।
উপদেষ্টাদের মধ্যে কাদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ, সে নাম প্রকাশ করেননি মিয়া গোলাম পরওয়ার।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের আগে ছোট-বড় সব দল যেন সমান সুযোগ পায়, তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল।
সংখ্যানুপাতিক বা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘এখন জনগণ পিআর পদ্ধতির পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। এই পদ্ধতি সম্পর্কে ভিন্নমত পোষণ করার অধিকার আছে। কিন্তু দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দলের ঘোষিত কর্মসূচি সম্পর্কে, এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করার অধিকার কারও নেই।’
১৫ অক্টোবর জুলাই সনদে স্বাক্ষরের আগে পিআর পদ্ধতির বিষয়টি চূড়ান্ত করতে অন্তর্বর্তী সরকার ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান পরওয়ার।
যেসব সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে, সেগুলো জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্তির পাশাপাশি গণভোটের মধ্যে পিআর প্রস্তাবও যুক্ত রাখার দাবি জানান তিনি।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, জনগণ যদি পিআর পদ্ধতির পক্ষে মতামত দেয়, সব দলকে সেটা মানতে হবে। জনগণ বিপক্ষে মত দিলে জামায়াত পিআরের দাবি থেকে সরে আসবে।
জাতীয় ঐক্য তৈরির স্বার্থে জামায়াত ‘বেশ কিছু’ সংস্কার প্রস্তাবে ছাড় দিয়েছে দাবি করে পরওয়ার বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের স্বপ্ন পূরণে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। কোনো ব্যক্তি বা দলীয় স্বার্থে যেন ঐক্যের প্রচেষ্টায় বিঘ্ন না ঘটে।’
বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘জুলাই সনদকে ইতিবাচকভাবে দেখছে বিএনপি।’
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সমাধিতে এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (অ্যাব) নবগঠিত কমিটির পক্ষ থেকে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আগামী ১৫ অক্টোবর স্বাক্ষরিত হতে যাওয়া জুলাই সনদকে বিএনপি ইতিবাচকভাবে দেখছে। রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ের আগেই এই সনদের বিষয়ে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রে বিশ্বাস করলে আলোচনার মাধ্যমে একটি যৌক্তিক সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব। আমরা আশাবাদী, জুলাই সনদ নিয়ে একটি ইতিবাচক রাজনৈতিক সমঝোতা হবে।’
এ সময় তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে দেয়া বক্তব্য নিয়েও কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘তারেক রহমান দীর্ঘ ১৭ বছর পর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বক্তব্য রেখেছেন। তার কথার মধ্যে কোনো দলীয় পক্ষপাত ছিল না। তিনি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ধ্বংস চাননি, বরং ঐক্যের বার্তা দিয়েছেন। যেসব ব্যক্তি অপরাধ করেছেন বা নির্যাতন চালিয়েছেন; আইনসঙ্গত উপায়ে তাদের বিচারের কথা বলেছেন তিনি।’
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, তারেক রহমানের বক্তব্য বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, সেখানে জাতীয় ঐক্যের আহ্বানই মুখ্য। দেশের সিভিল সোসাইটি, অভিজাত সমাজ ও সাধারণ মানুষের মধ্যে তার এই বক্তব্য ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে।
কৃষি খাতের প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফার মধ্যে কৃষি কাজের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। দেশের কৃষকরা আজ তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। এ বিষয়ে এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশকে (এ্যাব) কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।
তিনি জানান, অ্যাব এমন একটি নীতিমালা প্রণয়ন করবে, যাতে কৃষকদের স্বার্থরক্ষা হয় এবং দেশের জনগণ উপকৃত হয়। ‘এই দিকনির্দেশনা ও প্রেরণা আমাদের দলীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছ থেকেই এসেছে’, যোগ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নবগঠিত এ্যাবের আহ্বায়ক কৃষিবিদ কামরুজ্জামান এবং সদস্য সচিব কৃষিবিদ শাহাদাৎ হোসেন বিপ্লব।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে মাহমুদুর রহমান মান্না, জোনায়েদ সাকি, হাসনাত কাইয়ূম, সাইফুল হকসহ ১২০ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে বাম ও প্রগতিশীল ঘরানার ছয়টি রাজনৈতিক দলের মোর্চা ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন মঞ্চের সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম। পর্যায়ক্রমে ৩০০ আসনের বাকি আসনগুলোতেও প্রার্থীদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে জানান তিনি।
গণতন্ত্র মঞ্চের ছয়টি দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বগুড়া-২ আসনে, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম কিশোরগঞ্জ-৫ আসনে, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক ঢাকা-৮ আসনে, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি তানিয়া রব লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে, সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন ফেনী-৩ আসনে এবং ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুকে জামালপুর-৫ আসনের জন্য মনোনীত করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম। স্বাগত বক্তব্যে তিনি বলেন, গণতন্ত্র মঞ্চের ছয় দলের এ পর্যন্ত চার শতাধিক প্রার্থীর আবেদন জমা পড়েছে। আরও অনেকে আগ্রহ জানিয়েছেন। প্রার্থিতা বাছাই ও সমন্বয় কমিটি আবেদনগুলো পর্যালোচনা ও সমন্বয়ের কাজ করছে। একই আসনে একাধিক প্রার্থীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ধারাবাহিকভাবে দলগুলোর মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে সমন্বয়কাজ চলমান রয়েছে।
আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে হাসনাত কাইয়ূম বলেন, গণতন্ত্র মঞ্চ এর আগে এককভাবে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছিল। এর পাশাপাশি মঞ্চ সম্প্রসারণের আলাপ চলমান রয়েছে। এমনকি অন্য কোনো জোটের সঙ্গে ঐক্য বা নির্বাচনী সমঝোতার সম্ভাবনাও রয়েছে। দেশকে ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত করে জনগণের মালিকানা ও জনগণের কাছে জবাবদিহির রাষ্ট্রকাঠামো গড়তে যাঁরা সর্বোচ্চ সচেতন হবেন, তাদের সঙ্গে গণতন্ত্র মঞ্চের ঐক্য হবে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন মাহমুদুর রহমান মান্না, সাইফুল হক, জোনায়েদ সাকি, ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, তানিয়া রব, শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ৮ আগস্ট জেএসডি, নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, ভাসানী অনুসারী পরিষদ, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন ও গণঅধিকার পরিষদ মিলে ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ নামে জোট গঠন করে। পরে গণঅধিকার পরিষদ এই জোট থেকে বেরিয়ে যায়।
মন্তব্য