টানা চতুর্থ দিনের মতো আগের দিনের তুলনায় প্রায় ৫০ হাজার বেশি মানুষকে দেয়া হলো করোনার টিকা।
গণটিকা শুরুর পঞ্চম দিনে সারা দেশে টিকা নিয়েছেন ২ লাখের বেশি মানুষ।
রোববার প্রথম দিন ৩১ হাজার, দ্বিতীয় দিন ৪৬ হাজার মানুষ টিকা নিয়েছিলেন। এরপর প্রতি দিনই আগের দিনের চেয়ে ৫০ হাজার বা তার চেয়ে বেশি মানুষ টিকা নেন।
তৃতীয় দিনে টিকা নেন ১ লাখ ১০ হাজার ৮২ জন। চতুর্থ দিনে নেন ১ লাখ ৫৮ হাজারের কিছু বেশি মানুষ।
আর বৃহস্পতিবার ২৪ ঘণ্টায় ঢাকার ৪৭টিসহ সারা দেশে ১ হাজার দুইটি কেন্দ্রে টিকা নিয়েছেন ২ লাখ ৪ হাজার ৫৪০ জন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত টিকা নিতে সারা দেশে নিবন্ধন করেছেন রাত ৮টা পর্যন্ত ১২ লাখ ৪৮ হাজার মানুষ। টিকা প্রয়োগের মতো নিবন্ধনের পরিমাণও বাড়ছে।
টিকা নিবন্ধনের নীতিমালায় আবার পরিবর্তন এসেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন জানিয়েছেন, টিকা কেন্দ্রে গিয়ে সঙ্গে সঙ্গে নিবন্ধন করে টিকা দেয়ার সুযোগ আর থাকছে না। এই ব্যবস্থা করার পর টিকাদানে বিঘ্ন তৈরি হয়েছে।
এই সিদ্ধান্ত হওয়ায় টিকা নিতে আগ্রহীদের আগের মতোই অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে।
টিকা নিয়ে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার যে আশঙ্কা সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ঘুরে বেড়াচ্ছিল, তার তেমন কোনো নমুনা দেখা যায়নি। এ পর্যন্ত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে ৩৬৩ জনের।
প্রথম দিন ২১ জনের মধ্যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলেও দ্বিতীয় দিন দেখা দেয় ৭১ জনের মধ্যে। তৃতীয় দিন ৯৪ জন এবং চতুর্থ দিন দেখা দেয় ৭০ জনের শরীরে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের পরিচালক মিজানুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কারও কারও ক্ষেত্রে টিকা দেয়ার স্থান লাল হয়ে গেছে। সামান্য জ্বর এসেছে কারও। একটু ব্যথা করছে-এমন তথ্য এসেছে।’
প্রথম ধাপে প্রয়োগের জন্য সরকারের কাছে ৭০ লাখ টিকা রয়েছে। এগুলো শেষ হয়ে গেলেও টিকার স্বল্পতা দেখা দেয়ার আশঙ্কা নেই। কারণ ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে প্রতি মাসেই ৫০ লাখ করে টিকা আসবে। সেখান থেকে ৩ কোটি ৪০ লাখ টিকা কিনেছে বাংলাদেশ।
এর বাইরে সারা বিশ্বে ন্যায্যতার ভিত্তিতে টিকা বিতরণে গড়ে তোলা জোট কোভ্যাক্স থেকে পাওয়া যাবে আরও পৌনে ৬ কোটি টিকা, যার প্রথম চালান আসবে চলতি মাসেই।
কোথায় কত টিকা
আগের চার দিনের ধারাবাহিকতায় চতুর্থ দিনও জেলাওয়ারি সবচেয়ে বেশি টিকা দেয়া হয়েছে রাজধানী ঢাকায়। গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে কম দেয়া হয়েছে ঝালকাঠিতে।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগরে টিকা নিয়েছেন ২৪ হাজার ৪৫৩ জন। আর ঝালকাঠিতে নিয়েছেন ৫১৭ জন।
ঢাকা বিভাগে এখন পর্যন্ত টিকা নিয়েছেন ১ লাখ ১৯ হাজার ৯৮৯ জন। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরের ৬৮ হাজার ৯০১ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় এই বিভাগে টিকা নিয়েছে ৫১ হাজার ১৫৯ জন, তাদের মধ্যে পুরুষ ৩৪ হাজার ৪৪৬ জন আর নারী ১৬ হাজার ৭১৩ জন।
এদের মধ্যে ছয় জনের শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এদের তিন জন রাজধানী ঢাকার।
গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বিভাগে টিকা দেয়া হয়েছে ৫২ হাজার ৮৬৯ জনকে। এদের মধ্যে পুরুষ ৩৬ হাজার ৮৬৮ ও নারী ১৬ হাজার ১ জন।
এদের মধ্যে ৩০ জনের শরীরে দেখা দিয়েছে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
রাজশাহী বিভাগে টিকা নিয়েছেন ২৩ হাজার ১৮০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৫ হাজার ৭৩৬ ও নারী ৭ হাজার ৪৪৪ জন।
এদের মধ্যে ১০ জনের শরীরে দেখা দিয়েছে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
খুলনা বিভাগে ২৩ হাজার ৪৭৯ জনকে টিকা দেয়া হয়। এর মধ্যে ১৬ হাজার ৩৮৪ জন পুরুষ, নারী ৭ হাজার ৯৫ জন।
এই বিভাগে পাঁচ জনের মধ্যে দেখা দিয়েছে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
বরিশাল বিভাগে টিকা দেয়া হয়েছে ৯ হাজার ৩৯৭ জনকে। এর মধ্যে পুরুষ ৬ হাজার ৪৬৩, নারী ২ হাজার ৯৩৪ জন।
এই বিভাগে পাঁচ জনের মধ্যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে।
সিলেট বিভাগে টিকা দেয়া হয়েছে ১৫ হাজার ৭৩৯ জনকে। এর মধ্যে পুরুষ ১০ হাজার ২৫৬, নারী ৫ হাজার ৪৮৮।
এদের মধ্যে সাত জনের মধ্যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
ময়মনসিংহ বিভাগে টিকা দেয়া হয় ৯ হাজার ৩৩৭ জনকে। এর মধ্যে পুরুষ ৬ হাজার ৪৩১ ও নারী ২ হাজার ২০৯ জন।
এই বিভাগে চার জনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
রংপুর বিভাগে টিকা নিয়েছেন ১৯ হাজার ৩৮০ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ১৩ হাজার ৫৬৮ ও নারী ৫ হাজার ৮১২ জন।
এই বিভাগে ৯ জনের মধ্যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
গত ২৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টিকাদান উদ্বোধন করার পর ২৬ জন ও পরদিন যে ৫৪১ জনকে টিকা দেয়া হয়, তাদের মধ্যেও তেমন কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ বিমান বাহিনী মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রে (Central African Republic) নিয়োজিত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে (MINUSCA), Bangladesh Armed Military Utility Helicopter Unit-5 (BANAMUHU-5) কন্টিনজেন্ট এর মোট ১২৫ জন সদস্য প্রতিস্থাপন করতে যাচ্ছে। বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন, বিবিপি, ওএসপি, জিইউপি, এনএসডব্লিউসি, পিএসসি সোমবার (১৬-৬-২০২৫) বিমান বাহিনী সদর দপ্তর-এ মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রগামী কন্টিনজেন্ট (BANAMUHU-6) এর সদস্যদের উদ্দেশ্যে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করেন।
এসময় তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সততা, পেশাদারিত্ব ও আন্তরিকতার সাথে অর্পিত দায়িত্ব পালন করে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী তথা দেশের সুনাম বয়ে আনার জন্য কন্টিনজেন্ট সদস্যদের প্রতি আহবান জানান। পরিশেষে তিনি মিশনের সাফল্য কামনায় আয়োজিত এক বিশেষ মোনাজাতে অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মাঝে বিমান বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারগণ, ঢাকাস্থ বিমান ঘাঁটি দ্বয়ের এয়ার অধিনায়ক এবং বিমান সদর ও ঘাঁটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এখানে উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সমরাস্ত্র ব্যবহারে সক্ষম এবং নাইটভিশন প্রযুক্তি সমৃদ্ধ ০৩ টি এমআই-১৭১ হেলিকপ্টার ও বিভিন্ন গ্রাউন্ড সাপোর্ট ইকুইপমেন্ট মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রে MINUSCA জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিযুক্ত রয়েছে। BANAMUHU-6 কন্টিনজেন্টের নেতৃত্বে থাকবেন এয়ার কমডোর ইমরানুর রহমান, বিইউপি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, জিডি(পি)। আগামী ১৯ জুন ২০২৫ তারিখে কন্টিনজেন্ট এর সদস্যগণ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর, ঢাকা হতে মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন।
দ্বিতীয় মেয়াদে গত জানুয়ারিতে শপথ নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি ‘সব যুদ্ধ বন্ধের’ পক্ষে থাকবেন এবং একজন ‘শান্তির দূত ও ঐক্য প্রতিষ্ঠাকারী’ হিসেবে নিজের উত্তরাধিকার রেখে যাবেন।
কিন্তু মাত্র ছয় মাসের মাথায় মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ছোড়া শুরু হয়েছে ক্ষেপণাস্ত্র। গত শুক্রবার ভোরে ইরানে ইসরায়েলি হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে—এমন এক সর্বাত্মক যুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। আর শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রকেও এটি সংঘাতে টেনে নিতে পারে।
ইসরায়েলের ওই হামলাকে ট্রাম্প প্রায় প্রকাশ্যেই সমর্থন জানিয়েছেন। ফলে নিজেকে শান্তির দূত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার তার প্রতিশ্রুতিই এখন সবচেয়ে বড় পরীক্ষার সম্মুখীন।
ট্রাম্পের এ সমর্থন তার অনুগত রাজনৈতিক গোষ্ঠীকে, যাদের অনেকে ডানপিন্থি রাজনীতিক ও ভাষ্যকার, বিভক্ত করে ফেলেছে। তারা মনে করছেন, ইসরায়েলকে বিনা প্রশ্নে সমর্থন দেওয়া প্রকৃতপক্ষে ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির পরিপন্থি। অথচ ট্রাম্পের মূল নির্বাচনী স্লোগান ছিল এটি।
আন্তর্জাতিক কূটনীতিবিষয়ক মার্কিন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান কুইন্সি ইনস্টিটিউটের নির্বাহী সহসভাপতি ত্রিতা পারসি বলেন, ‘আমেরিকা ফার্স্ট ঘাঁটির (এ নীতির সমর্থক গোষ্ঠী) অনেক অংশে এখন প্রবল ক্ষোভ ও বিশ্বাসঘাতকতার অনুভূতি বিরাজ করছে। কারণ, তারা সত্যিকার অর্থেই যুক্তরাষ্ট্রকে আর কোনো যুদ্ধে জড়িয় পড়া বা তাতে সমর্থন দেওয়ার বিষয়টি দেখতে চায় না।’
ত্রিতা পারসি আরও বলেন, ‘তারা (এ গোষ্ঠী) এখন ইসরায়েল নিয়ে ব্যাপক সংশয়ের মধ্যে পড়েছে। তারা মনে করে, এ ধরনের যুদ্ধই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টদের ব্যর্থ ও তাদের দেশের অভ্যন্তরীণ অগ্রাধিকারগুলো ক্ষুণ্ন করেছে।’
ইরানে গত শুক্রবার ইসরায়েলি হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন রক্ষণশীল নেতাও এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র যেন এমন কোনো যুদ্ধে না জড়ায়, যা তার স্বার্থ রক্ষা করবে না।
ট্রাম্পের ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ (এমএজিএ) আন্দোলনের বড় মুখ ও প্রভাবশালী রক্ষণশীল ভাষ্যকার টাকার কার্লসন বলেন, ইসরায়েলের বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ‘যুদ্ধপিপাসু সরকার’কে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন দেওয়া উচিত নয়।
‘ইসরায়েল চাইলে যুদ্ধ করতেই পারে। ওটা স্বাধীন রাষ্ট্র। তারা যা খুশি করতে পারে। কিন্তু সেটা যেন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নিয়ে না হয়,’ গত শুক্রবার ‘টাকার কার্লসন নেটওয়ার্ক’–এর সকালের নিউজলেটারে লেখা হয়।
নিউজলেটারে আরও বলা হয়, ইরানের সঙ্গে (যুক্তরাষ্ট্রের) যুদ্ধ হলে তা ‘পরবর্তী প্রজন্মের সন্ত্রাসবাদের জন্ম দিতে পারে’ কিংবা একটি বিদেশি এজেন্ডার নামে হাজার হাজার মার্কিনের মৃত্যু ডেকে আনতে পারে।
‘এ কথা বলাই বাহুল্য যে এ ধরনের কোনো সম্ভাবনাই যুক্তরাষ্ট্রের জন্য লাভজনক হবে না। কিন্তু অন্য একটি পথও আছে: ইসরায়েলকে বাদ দাও। ওরা নিজেরা যুদ্ধ করুক,’ লেখা হয় নিউজলেটারে।
রিপাবলিকান সিনেটর র্যান্ড পলও ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়ানো নিয়ে সতর্ক করেছেন এবং ওয়াশিংটনের যুদ্ধ–সমর্থক রক্ষণশীলদের কঠোর সমালোচনা করেছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে র্যান্ড পল লিখেছেন, ‘মার্কিন জনগণ যে যুদ্ধের শেষ নেই, তার ঘোরবিরোধী এবং ২০২৪ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দিয়ে তাঁরা সেটাই দেখিয়েছেন।’
‘আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে অনুরোধ করব যেন তিনি তার অবস্থানে অটল থাকেন, যুক্তরাষ্ট্রকে অগ্রাধিকার দেন এবং অন্য দেশের মধ্যে চলা কোনো যুদ্ধে জড়িত না হন,’ বলেন র্যান্ড পল।
ডানপন্থী কংগ্রেস সদস্য মারজোরি টেলর গ্রিনও একটি বার্তায় ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তিনি হামলার পক্ষে নন। এর আগেও তিনি ট্রাম্পকে সতর্ক করেছিলেন, তেহরান পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হচ্ছে—এমন ইসরায়েলি অভিযোগের ভিত্তিতে যেন ইরানে হামলা চালানো না হয়।
মারজোরি টেলর এক্সে লেখেন, ‘আমি শান্তির জন্য প্রার্থনা করছি। শান্তি। এটাই আমার আনুষ্ঠানিক অবস্থান।’
যদিও ইসরায়েলের সমর্থকেরা ইরানের সম্ভাব্য পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির হুমকির কথা উল্লেখ করে দেশটিতে হামলাকে যৌক্তিক বলে দাবি করছেন; তেহরান বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। এমনকি ট্রাম্পের গোয়েন্দাপ্রধান তুলসী গ্যাবার্ডও গত মার্চে এক সাক্ষ্যে বলেছেন, ‘আমাদের মূল্যায়ন অনুযায়ী, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র বানাচ্ছে না।’
ইসরায়েলের একনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে পরিচিত রিপাবলিকান কর্মী ও ভাষ্যকার চার্লি কার্কও ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়ানো নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
নিজ পডকাস্টে কার্ক বলেন, ‘আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, আমাদের ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ ঘাঁটি কোনো যুদ্ধই চায় না। তারা যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা চায় না (ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে)। তারা চায় না যুক্তরাষ্ট্র এতে জড়িয়ে পড়ুক।’
গত শুক্রবার ইসরায়েল যখন ইরানের সামরিক ঘাঁটি, পারমাণবিক স্থাপনা ও আবাসিক এলাকায় বোমাবর্ষণ শুরু করে, তার কয়েক ঘণ্টা আগেই ট্রাম্প বলেছিলেন, তেহরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সমঝোতায় পৌঁছাতে তিনি আগ্রহী।
গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, ‘বিষয়টা খুবই সহজ। জটিল কিছু না। ইরান পারমাণবিক অস্ত্র রাখতে পারে না—এই একটাই কথা। তার বাইরে আমি চাই, তারা সফল হোক। আমরা সাহায্য করব।’
গতকাল রোববার ওমানে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ে ষষ্ঠ দফা আলোচনা হওয়ার কথা ছিল।
তবে শুক্রবার ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, তিনি আগেই ইসরায়েলের হামলার ব্যাপারে জানতেন। অবশ্য তিনি হামলা চালাতে ইসরায়েলকে নিষেধ করেছিলেন কি না, তা বলেননি। যদিও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ইসরায়েলের হামলাকে ‘একতরফা’ বলেই উল্লেখ করেছেন।
অথচ ট্রাম্প ইরানের ওপর হামলার দায় চাপিয়ে বলেন, দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য তার আহ্বানে ইরানের কর্মকর্তাদের সাড়া দেওয়া উচিত ছিল।
ট্রাম্প পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, ‘আমি আগেই বলেছিলাম, তাদের জন্য এটা হবে এমন কিছু, যা তারা কল্পনাও করতে পারেননি। যুক্তরাষ্ট্র তৈরি করে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ও জীবনঘাতী সামরিক সরঞ্জাম—অনেক অনেক বেশি। আর ইসরায়েলের কাছে এর অনেক কিছুই আছে, আরও আসছে।’
ত্রিতা পারসি বলেন, শুরুতে ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে সমঝোতা চেয়েছিলেন, কিন্তু তার চরম শর্ত—ইরানকে সম্পূর্ণভাবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করতে হবে—আলোচনায় অচলাবস্থা তৈরি করে।
‘এটা অনুমেয় ছিল যে এ চূড়ান্ত দাবির ফলে আলোচনা ব্যর্থ হবে। ইসরায়েল সেই ব্যর্থতাকে কাজে লাগিয়ে ট্রাম্পকে সামরিক পথ বেছে নিতে বাধ্য করেছে,’ বলেন ত্রিতা পারসি।
পারসি আরও বলেন, ‘গত সপ্তাহজুড়ে ট্রাম্প কূটনৈতিক উদ্যোগের পক্ষে কথা বললেও, তিনি জানতেন ইসরায়েলের হামলা আসন্ন। এভাবে তিনি সবাইকে ভুল বার্তা দিয়েছেন যে হামলা হবে আলোচনার পরে। অথচ সেটা আগেই হয়েছে।’
ইসরায়েলের হামলার পর কংগ্রেসে কিছুটা সমালোচনা হলেও বহু রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট এই হামলার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। কিন্তু ট্রাম্পের ঘাঁটির একটি বড় অংশ, বিশেষ করে তরুণ ডানপনন্থিরা, ইসরায়েলকে অন্ধ সমর্থনের বিষয়ে প্রশ্ন তুলছেন।
গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ক্যাটো ইনস্টিটিউটের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক বিশ্লেষক জন হফম্যান বলেন, ‘তারা (ডানপন্থিরা) রিপাবলিকান পার্টির একটি উল্লেখযোগ্য অংশের প্রতিনিধিত্ব করে, বিশেষত তরুণদের মধ্যে।’
হফম্যান আরও বলেন, ‘পিউ রিসার্চ সেন্টারের এক জরিপ বলছে, ৫০ বছরের নিচের অর্ধেক রিপাবলিকানই এখন ইসরায়েল সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ এই নিরন্তর যুদ্ধক্লান্তির মধ্যে হাঁপিয়ে উঠেছেন।’
বিশ্লেষকদের মতে, ইরানে ইসরায়েলি হামলার প্রতি ট্রাম্পের নমনীয় অবস্থান তাঁকে আবারও এমন একটি সংকটের মুখে ফেলেছে, যেটা একসময় বুশ প্রশাসনকে ফেলেছিল।
হফম্যান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং রিপাবলিকান পার্টির অভ্যন্তরে দীর্ঘদিন ধরে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কামনা করা প্রভাবশালীদের উপস্থিতি, যেমন লিন্ডসে গ্রাহাম—এসবই বড় ঝুঁকির সৃষ্টি করছে।’
‘এ পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলার আশঙ্কা অনেক বেশি,’ বলেন হফম্যান।
সূত্র: আল জাজিরা
নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার চারটি গ্রামের পাঁচ যুবকের অপহরণের এক যুগ পেরিয়ে গেলেও এখনো তাদের সন্ধান মেলেনি। অপহৃতদের কেউ বেঁচে আছেন কিনা, নাকি তাঁরা চিরতরে হারিয়ে গেছেন—সে প্রশ্নের উত্তর মেলেনি পরিবার, প্রশাসন কিংবা গোয়েন্দা সংস্থার কাছেও।
২০১৩ সালের ১৯ মে রাতে বড়াইগ্রামের গুরুমশৈল গ্রামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে অস্ত্রধারী ১০-১২ জনের একটি দল মাইক্রোবাসে এসে কৃষক কামাল হোসেনকে বাড়ির পাশ থেকে তুলে নেয়। একই রাতে একই কায়দায় অপহরণ করা হয় ওই গ্রামের দিনমজুর ইব্রাহিম তালুকদার এবং পার্শ্ববর্তী মহিষভাঙ্গা গ্রামের ভুটভুটি চালক তৈয়ব আলীকে।
অপহরণের সময় অস্ত্রধারীরা এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি করে এবং অপহৃতদের মারধর করে তুলে নিয়ে যায়। এর ঠিক দুদিন আগে একই উপজেলার কালিকাপুর গ্রাম থেকে নিখোঁজ হন বিজিবি সদস্য রাসেল গাজী ও তার বন্ধু কাটাশকুল গ্রামের সেন্টু হোসেন। ছুটিতে বাড়ি এসে রাসেল তার বন্ধুর ফোন পেয়ে বের হওয়ার পর থেকেই নিখোঁজ হন দুজনই।
স্বজনরা জানান, অপহরণের পরপরই তারা থানায় জিডি ও মামলার পাশাপাশি প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন। কিন্তু তৎকালীন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো দৃশ্যমান তৎপরতা দেখা যায়নি। গুরুমশৈল গ্রামের কামালের মা আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘এক যুগ হয়ে গেল, আমার ছেলের ছবি বুকে নিয়ে কাঁদি। কে নিল, কেন নিল, কোনো উত্তর নেই।’
নিখোঁজ ইব্রাহিম তালুকদারের মা বলেন, ‘ছেলেকে হারিয়ে আমরা পথে বসেছি। কোনো দিন কেউ খোঁজও নেয়নি।’ রাসেল গাজীর বাবা বলেন, ‘বিজিবির মতো চাকরিতে থেকেও যদি অপহৃত হয়, তবে সাধারণ মানুষের কী হবে?’
নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন বলেন, ‘এই ঘটনার বিষয়ে আমরা নতুন করে তদন্ত শুরু করেছি। ইতোমধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও হাতে এসেছে। আশা করছি, দ্রুতই রহস্য উদঘাটন এবং দায়ীদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।’
অপহৃতদের স্বজনরা বলছেন, ‘বর্তমান সরকারের কাছে তারা আকুতি জানাচ্ছেন—তাদের প্রিয়জনেরা জীবিত না থাকলেও অন্তত কী ঘটেছে, কোথায় গেল তারা—সে রহস্য তো উন্মোচিত হোক।’
গৃহস্থদের কাছ থেকে ৭০০-৮০০ টাকায় ৪৫ কেজিতে এক মণ নাক ফজলি আম কিনছেন পাইকারি দোকানিরা। তারা সেই আম ১ হাজার ২০০ টাকায় ৪০ কেজিতে এক মণ বিক্রি করছেন। প্রতি মণ আমে নিচ্ছেন ৫ কেজি ধলতা। এতে গৃহস্থরা ওজনে আর খুচরা আম ক্রেতারা দামে ঠকছেন। পাইকারি বিক্রেতারা প্রতি মণে অর্ধেকেরও বেশি টাকা লাভ করছেন। জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পৌর শহরে রেলগেট এলাকায় এভাবেই সিন্ডিকেট করে আম বেচাকেনা হচ্ছে। খুচরা ক্রেতারা ও গৃহস্থরা আম ক্রয়-বিক্রয়ে প্রশাসনের নজরদারির দাবি জানিয়েছেন।
নওগাঁর বদলগাছি উপজেলায় প্রচুর নাক ফজলি আমের উৎপাদন। বদলগাছির এই নাক ফজলি আম অনান্য এলাকার চেয়ে সুস্বাদুও। প্রতি বছর আমের মৌসুমে আক্কেলপুর পৌর শহরের কিশোর মোড় থেকে রেলগেট পর্যন্ত সড়কে আমের পাইকারি বাজার বসে। এবারও আমের পাইকারি বাজার বসছে। প্রতিদিন ভোর ৫টা থেকে ৭টা পর্যন্ত আম বেচাকেনা হয়। বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন ও পাইকারিরা এসে আম কিনেন।
গৃহস্থ ও খুচরা আম ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের আগে নাক ফজলি আম ১ হাজার ৪০০ টাকা মণ বিক্রি হয়েছে। ঈদের পর নাক ফজলি আমের আমদানি বেড়েছে। এ কারণে আমের মণে ৬০০ থেকে ৪০০ টাকা দাম কমেছে। ৪০ কেজিতে মণ হলেও পাইকারিরা গৃহস্থদের কাছে ৪৫ কেজি মণে আম কিনছেন। পাইকারিরা দোকানে সেই আম ১ হাজার ২০০ টাকায় ৪০ কেজিতে মণ বিক্রি করছেন।
বদলগাছির ভাণ্ডারপুর গ্রামের গৃহস্থ মনোয়ার হোসেন বলেন, আক্কেলপুর বাজারে ৮০০ টাকা দরে তিন মণ আম বিক্রি করেছি। তিন মণ আমে আমাকে ১৫ কেজি আম বেশি দিতে হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তাদের কাছে ৪৫ কেজিতে পাইকারিরা আম কিনছেন। এটি চরম অন্যায়। আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
খুচরা বিক্রেতা বেলাল হোসেন বলেন, রেলগেট এলাকার দোকান থেকে এক মণ নাক ফজলি আম ১ হাজার ২০০ টাকায় কিনলাম। দোকানিরা প্রতি মণে ৪০০-৫০০ টাকা লাভ করছে। আবার গৃহস্থদের কাছে নেওয়া ওজন দিচ্ছেন না। মৌসুমি আম বিক্রেতা হারুন বলেন, ৪৫ কেজিতে আম বিক্রি হয়। আমরা দূরে নিয়ে গিয়ে আম বিক্রি করি। তবে রেলগেট এলাকার দোকানিরা একটু বেশি দামে বিক্রি করছেন।
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে মামুন জমাদ্দার (৪০) নামে এক জেলের জালে ২৩ কেজি ওজনের বিশাল একটি সামুদ্রিক কোরাল মাছ ধরা পড়েছে। পরে মাছটি ২৪ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়।
গতকাল রোববার সকালে কুয়াকাটা মাছ বাজারের মনি ফিস নামে মৎস্য আড়তে মাছটি বিক্রি করার জন্য আনা হয়। ডাকের মাধ্যমে ১ হাজার ৫০ টাকা কেজি দরে ২৪ হাজার ১৫০ টাকায় মাছটি কিনে নেন কুয়াকাটা মাছ বাজারের ব্যবসায়ী মো. মোস্তাফিজ।
জানা গেছে, পটুয়াখালীর মহিপুর সদর ইউনিয়নের নিজামপুর গ্রামের জেলে মামুন জমাদ্দার ১২ জুন রাতে সমুদ্রে জাল ফেলেন এবং ১৪ জুন রাতে জাল তুললে তিনি তার জালে এই বিশাল আকৃতির সামুদ্রিক কোরাল মাছটি পান।
জেলে মামুন জমাদ্দার বলেন, এত বড় মাছ পাব সেটা ভাবতেও পারিনি। প্রায় দুই মাস মাছ ধরতে পারিনি। কারণ মাছ ধরায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা ছিল। এই অবরোধের পর মাছটি পেয়ে ভালো দামে বিক্রি করতে পেরে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়েছি। মাছটির ক্রেতা কুয়াকাটা মাছ বাজারের ব্যবসায়ী মো. মোস্তাফিজ বলেন, আমাদের এলাকায় বড় বড় হোটেলগুলোতে সামুদ্রিক বড় কোরাল মাছের চাহিদা রয়েছে। আশা করছি মাছটি বিক্রি করে ভালো টাকা লাভ করতে পারব। তবে এলাকায় বিক্রি না হলে ঢাকায় পাঠিয়ে দেব।
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা সমুদ্রে মাছ ধরতে নেমেছে। খুব স্বাভাবিকভাবেই জেলেদের জালে বড় মাছ ধরা পড়বে। জেলেরা সঠিকভাবে নিষেধাজ্ঞা পালন করেছে বিধায় সামনের দিনগুলোতে তাদের জালে ভালো সংখ্যক মাছ ধরা পড়বে।
দুর্ভোগের আরেক নাম সুন্দরবন সংলগ্ন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী গাবুরা খেয়াঘাটটি। দীর্ঘদিন ধরে চরম দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে প্রতিদিন শতশত মানুষ ঝুকি নিয়ে খোলপেটুয়া নদীটি পার হচ্ছে। সংস্কারের অভাবে শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালিনী-গাবুরা খেয়াঘাটের বেহাল দশার সৃষ্টি হয়েছে। এতে স্থানীয়দের দুর্ভোগ দিনে দিনে চরম আকার ধারণ করছে। যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটকে পারে, এমন টি জানিয়েছে ভুক্তভোগী মহল।
খোলপেটুয়া নদীর এই ঘাট দুটি বুড়িগোয়ালিনী ও গাবুরা ইউনিয়নে পারাপারের একমাত্র মাধ্যম।
স্থানীয়রা জানান, খেয়াঘাটের খুব খারাপ অবস্থা। প্রবীণ নারী-পুরুষ, গর্ভবতী নারী বা অসুস্থ রোগী ও শিক্ষার্থীদের পারাপারে খুব দুর্ভোগ পোহাতে হয়। অনেক সময় দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। বর্ষাকালে তাদের দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়।
বোট মাঝি আলামিন বলেন, এই ঘাটে আমাদের বোট ধরতে (ঘাটে ভিড়াতে) বেশ সমস্যায় মধ্যে পড়তে হয়। ধরার জন্য ভালো কোন জায়গা নেই। বিশেষ করে ঝড় আর তুফানের সময় বেশ বেগ পেতে হয়। মোটরসাইকেল তোলা খুব কষ্টকর হয়ে যায়। ভুক্তভোগী আনোয়ারা বেগম বলেন, নারীদের নৌকায় উঠতে বেশ সমস্যা হয়। কারো সাহায্য ছাড়া ওঠা সম্ভব নয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ রবিউল ইসলাম বলেন, বুড়িগোয়ালিনী পাড়ের খেয়াঘাটটি সম্পুর্ন ভাবে চলাচলে অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এঘাট দিয়ে ওঠা নামা করার সময় প্রায় সাধারন মানুষ দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। ওই এলাকার শতশত ভুক্তভোগী মহল বুড়িগোয়ালিনী-গাবুরা খেয়াঘাট সংস্কারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে পরিত্যক্ত অবস্থায় দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয় অস্ত্রের বিচ্ছিন্ন অংশ উদ্ধার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার (১৬ জুন) ভোর রাতে এই অভিযান চালানো হয়েছে বলে জানাগেছে। দৌলতপুর থানার ডিউটি অফিসার এস আই পলাশ প্রতিবেদককে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
আস আই আরও বলেন, উপজেলার হোগলবাড়ীয়া ইউনিয়নের সোনাইকুন্ডি গ্রামে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব রেজাউল হক চৌধুরীর ছোট ভাই মিন্টু চৌধুরীর বাড়ির এরিয়ায় রবিবার দিবাগত ভোর ৪ টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথ অভিযান পরিচালনা করেন।
পরিচালিত এ অভিযানে পরিত্যক্ত অবস্থায় এক নলয়ালা বন্দুকের ১টি বাট ও ১টি পাইপ, ৪০টি গুলির ঠোশ, ৬টি ফালা (বল্লভ), ৬টি রামদা, ১টি চাকু ও ১টি বন্দুকের পাইপ পরিষ্কার করার ব্রাশ উদ্ধার করা হয়। পরিচালিত অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। উদ্ধারকৃত অবৈধ দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয় অস্ত্রের বিচ্ছিন্ন অংশ দৌলতপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ ঘটনায় দৌলতপুর থানার ডিউটি অফিসার এস আই পলাশ বলেন, পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধারকৃত অবৈধ দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয় অস্ত্রের বিচ্ছিন্ন অংশ দৌলতপুর থানায় জব্দ আছে এবং আইনি প্রক্রিয়ায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
মন্তব্য