কাতারের আল জাজিরা চ্যানেলে সম্প্রচারিত বাংলাদেশ সম্পর্কিত ‘অল দ্যা প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ নামের তথ্যচিত্রটির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে দেশের সম্পাদকদের একটি সংগঠন এডিটরস গিল্ড। তারা একে ‘মন্দ’ বা খারাপ সাংবাদিকতা বলছে।
তারা বলছে, সাংবাদিকতার নীতিনৈতিকতা না মেনে, বিশেষ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই তথ্যচিত্রটি সম্প্রচার করা হয়েছে।
এডিটরস গিল্ডের মত, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কোনো কিছু প্রচার করা হলে তা গণতন্ত্র ও সাংবাদিকতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
রোববার সংগঠনটির সভাপতি মোজাম্মেল বাবুর পাঠানো এক বিবৃতিতে এ সব কথা বলা হয়।
এতে বলা হয়েছে, ‘পুরো বিষয়টি একটি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে, অথচ শিরোনাম করা হয়েছে “অল দ্যা প্রাইম মিনিস্টারস মেন।” বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারিত বিশেষ কিছু অভিযোগের বয়ান দিতে গিয়ে প্রমাণহীনভাবে “প্রাইম মিনিস্টারস মেন” টার্মটা ব্যবহার করা মন্দ সাংবাদিকতা বলে দাবি করছে এডিটরস গিল্ড।’
রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নির্মিত ও পক্ষপাতদুষ্ট একটি তথ্যচিত্র কোনোভাবে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার দৃষ্টান্ত হতে পারে না বলেও দাবি করেছে এডিটরস গিল্ড।
একজন মানুষের কিছু অনানুষ্ঠানিক ও আড্ডার আলাপকে পুরো তথ্যচিত্রের মূল ভিত্তি হিসেবে দেখানো হয়েছে দাবি করে বিবৃতিতে বলা হয়, এর কোনো গ্রহণযোগ্য প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি।
এতে বলা হয়, হাঙ্গেরি ও ফ্রান্সে মিলিয়ন মিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগের কথা বলা হয়েছে। এর উৎস দেখানো হয়নি। কেবল মুখের কথাতেই বলা হয়েছে সরকারের কাজ পাইয়ে দেয়ার বিনিময়ে বিরাট অর্থ লেনদেনের কথা। এ সব অভিযোগের সমর্থনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কিংবা সংশ্লিষ্ট দেশসমূহের কোনো প্রশাসনিক বক্তব্যও আল জাজিরা দেয়নি।
এডিটরস গিল্ডের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সামিকে জীবননাশের হুমকি দেয়া ইমেইলের অরিজিনাল পেইজ ছিল না। ফলে এর সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। হাঙ্গেরি, ফ্রান্স বা মালয়েশিয়ায় বিচরণকারী হিসেবে যাদের দেখানো হয়েছে এবং তাদের পাসপোর্ট জালিয়াতি, অর্থপাচার, ইত্যাদি নানা অপরাধের যে বর্ণনা রয়েছে এসব বিষয়ে সেই সব দেশের সরকারের দিক থেকে কারও কোনো বক্তব্য না থাকায় এডিটরস গিল্ড এই তথ্যচিত্রের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।
তথ্যচিত্রের পুরোটা সময় গোপন ক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিও দেখানো হয়েছে উল্লেখ করে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে দাবি করা হয়, এটি একটি মানসম্পন্ন সংবাদমাধ্যম করতে পারে না, যাদের বিরুদ্ধে এত কিছু, তাদের বক্তব্য না থাকায় এটি সম্পূর্ণ সাংবাদিকতা পরিপন্থী কাজ হয়েছে।
দীর্ঘ দুই বছরের অনুসন্ধানের পর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি- বলাটা অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করছে এডিটরস গিল্ড।
স্পাই ওয়্যার কেনার বিষয়টি সরকারের নিজস্ব নীতি এবং সেটি ইসরায়েলি কোম্পানি থেকে কেনা হয়েছে তার কোনো প্রমাণ তথ্যচিত্রে নেই বলেও উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলে এক প্রকার সাংবাদিকতার মতোই এখানে দুজন ইসরায়েলি কর্মকর্তার কথা বলে তাদের ছবি ঢেকে দেয়া হয়েছে। এগুলো নিছক চাতুর্য ছাড়া আর কিছু নয়।
এক ঘণ্টার তথ্যচিত্রের অন্যতম সাক্ষাৎকারদাতা বাংলাদেশের আদালতে দণ্ডিত বলেও উল্লেখ করে এডিটরস গিল্ড। সংগঠনটি বলছে, যৌক্তিক প্রমাণ দিয়ে সাংবাদিকতার স্বার্থে যে কোনো সংবাদ বা আনুষ্ঠানকে স্বাগত জানায় তারা।
কিন্তু উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কোনো কিছু প্রচারিত হলে তা প্রকারান্তরে গণতন্ত্র ও সাংবাদিকতা উভয়কেই ক্ষতিগ্রস্ত করে।
আরও পড়ুন:মাদকের গডফাদারদের ধরে আইনের আওতায় আনার জন্য মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘যেভাবেই হোক মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।’
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মঙ্গলবার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় ওই নির্দেশনা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
তিনি আরও বলেন, ‘শুধু বাহক নয়, মাদকের সঙ্গে জড়িত বড় বড় গডফাদারদের ধরতে হবে। চলমান যৌথ অভিযানে এ কার্যক্রম জোরদার করতে হবে এবং দৈনিক অগ্রগতির রিপোর্ট প্রদান করতে হবে।’
এ বিষয়ে সাফল্যের ওপর নির্ভর করে অধিদপ্তরের পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করা হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, দুর্নীতি না কমাতে পারলে এ সরকারের সাফল্য আসবে না।
তিনি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঘুষ, দুর্নীতি থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানান।
উপদেষ্টা বলেন, ‘মাদক ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংসের মাধ্যমে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনে। তাই মাদক নির্মূলে অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানসিকতার পরিবর্তন করে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। যেভাবেই হোক মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।’
তিনি বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের অস্ত্র দেয়ার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
যেসব অভিযান পরিচালনার সময় হামলার আশঙ্কা রযেছে, সেখানে পুলিশসহ অভিযান পরিচালনার জন্য তিনি পরামর্শ দেন।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মশিউর রহমান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (গ্রেড-১) খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমানসহ সংশ্লিষ্টরা।
আরও পড়ুন:নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনে সহযোগিতা করতে জার্মানি আগামী ১০ বছরে বাংলাদেশকে ১ বিলিয়ন (১০০ কোটি) ইউরো দেবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
উপদেষ্টা জানান, চলতি বছর ১৫ মিলিয়ন (দেড় কোটি) ইউরো পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন তিনি।
বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত আচিম ট্রস্টারের সঙ্গে মঙ্গলবার বৈঠক শেষে উপদেষ্টা এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘এ খাতে উভয় দেশই বেসরকারি খাত, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, অ্যাকাডেমিয়া ও সুশীল সমাজের মতো নন স্টেট অ্যাক্টরদের সঙ্গে জ্ঞান বিনিময় এবং সহযোগিতার প্রচার করবে।’
সচিবালয়ে পরিবেশ উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘এ সহযোগিতায় ক্ষুদ্র জাতিগত সংখ্যালঘু, নারী এবং যুবকদেরও সম্পৃক্ত করা হবে, যা বহু স্টেকহোল্ডার পদ্ধতিকে উৎসাহিত করবে।’
উপদেষ্টা পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ে জার্মানির অব্যাহত সহায়তার জন্য রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বিশ্বব্যাপী জলবায়ু চ্যালেঞ্জ এবং টেকসই বন ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
রাষ্ট্রদূত ট্রস্টার জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশের সমর্থনে জার্মানির প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন এবং পরিবেশ রক্ষায় সরকারের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।
তিনি নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে জার্মানির দক্ষতার কথাও তুলে ধরেন এবং বাংলাদেশের সবুজ জ্বালানি উদ্যোগকে সমর্থন করার জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তার প্রস্তাব দেন।
বৈঠকে উভয় পক্ষ নদী পরিষ্কার, পরিবেশ সুরক্ষা এবং জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমনে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় টেকসই উন্নয়ন প্রকল্প, সবুজ প্রযুক্তি গ্রহণ, পরিবেশ ও জলবায়ু সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সম্ভাব্য সহযোগিতা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
বৈঠকে প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং পরিবেশগত স্থায়িত্ব প্রকল্পে সহযোগিতার জন্য আরও উপায় অন্বেষণ করার জন্য একটি চুক্তি হয়।
আরও পড়ুন:জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আজমল হোসেন খাদেমের মৃত্যু হয়েছে।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাবেক সভাপতি সোমবার রাত পৌনে একটার দিকে প্রাণ হারান।
রাজধানীর বনানী মসজিদ প্রাঙ্গণে মঙ্গলবার জোহরের নামাজের পর জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে তার দাফন হওয়ার কথা রয়েছে।
আজমল হোসেন খাদেমের মৃত্যুতে ডিআরইউ কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষ থেকে সংগঠনের সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী শুভ এবং সাধারণ সম্পাদক মহি উদ্দিন গভীর শোক প্রকাশ করেন।
বিভিন্ন মহল থেকে দেশে যে সাংবিধানিক শূন্যতার কথা বলা হচ্ছে তা ভুয়া বলে মন্তব্য করেছেন কবি ও সাহিত্যিক ফরহাদ মজহার। তিনি বলেছেন, দেশের সংকট সাংবিধানিক নয়; রাজনৈতিক।
সোমবার মহাখালীতে ‘সংস্কার ও নির্বাচন: নাগরিক ও রাজনৈতিক ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় ফরহাদ মজহার এমনটা দাবি করেন। এই সভার আয়োজন করে ‘সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ ও নৈতিক সমাজ’।
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘আমরা সবাই অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে। আপনারা সাংবিধানিক শূন্যতার যে ধুয়া দিচ্ছেন তা ভুয়া। আমাদের দেশের সংকট সাংবিধানিক নয়। আমাদের সংকট রাজনৈতিক। আমরা রাষ্ট্র গঠন করতে পারিনি। এজন্য এই দুরবস্থা। এর মধ্যে সংবিধানের কোনো ব্যাপার নেই।’
তিনি বলেন, ‘১৯৭২ সালে ইন্ডিয়ার প্রভাবে আমাদের রাষ্ট্র গঠনই করতে দেয়া হয়নি। আমাদের সামনে ৬ দফা ছিলো। কিন্তু সেখান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা, বাঙালি জাতীয়তাবাদ ঢুকিয়ে দেয়া হলো। সেগুলো তো ছয় দফায় ছিলো না।
‘ধর্মীয় নিরপেক্ষতার প্রবেশ মানেই ইসলামবিরোধী রাজনীতি। গণতন্ত্র মানেই ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি। তাহলে ধর্মীয় নিরপেক্ষতা বলার দরকার নেই।’
নৈতিক সমাজের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) আ ম স আ আমিন বলেন, ‘নির্বাচনের আগেই সংস্কার। তার মধ্যে রাজনীতি সংস্কারও আমরা ধরেছি। কোনো সরকারই সব সংস্কার করে যেতে পারবে না। কিন্তু আমরা চাই তারা যেন ভিত্তিটা তৈরি করে দিয়ে যায়।
‘এই সংস্কারের সঙ্গে আপামর জনগণকে আমাদের ঐকমত্যে নিয়ে আসতে হবে, যেন ১০-১৫ বছর সময় লাগলেও ফলপ্রসূ হয় এই আত্মত্যাগ।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, ‘১৯৭২-১৯৭৫ এর সরকারের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ ছিলো দুর্নীতি। জিয়াউর রহমান আসার পর দুর্নীতি নিয়ে এমনভাবে প্রচার করা হলো যেখানে মসজিদের ইমাম থেকে শুরু করে সবাই খারাপ, শুধু জিয়াউর রহমান ভাল।’
তিনি বিশেষ পরিস্থিতিতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল করে অতি অল্প সময়ের মধ্যে বিচারের ব্যবস্থা করার আহ্বান জানান।
সুপ্রিম কোর্টের সাবেক রেজিস্ট্রার ইকতেদার আহমেদ বলেন, ‘সংবিধান নতুনভাবে প্রণয়ন করতে চাইলে গণপরিষদ গঠন করতে হবে। কাদের সমন্বয়ে গঠন হবে খোলাসা করতে না পারলে এ সমস্যা নিরোধ হবে না। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে আলোচনা করে এ সমস্যার সমাধান করুন।’
সাবেক সচিব কাসেম মাসুম বলেন, ‘আমাদের স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। সেজন্য আমাদের আগে সংস্কার করে পরে নির্বাচন করতে হবে।’
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, ‘অনেকেই বলছেন যে পুরনোরা বাদ, আমরা নতুন নেতৃত্ব পেয়ে গেছি। এভাবে রাষ্ট্র সংস্কার সম্ভব? যাদের ওপর জনগণ আস্থা রেখেছিল তারা তো ইতোমধ্যে বিতর্কিত হয়ে গেছে।’
বিদ্যুৎ খাতে ‘ইনডেমনিটি’ দিয়ে সম্পাদিত চুক্তিগুলোর বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে এ সংক্রান্ত বিষয়সমূহ পর্যালোচনার লক্ষ্যে গঠিত জাতীয় কমিটি।
ঢাকা ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) বোর্ড রুমে সোমবার কমিটির আহ্বায়ক বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী এ তথ্য জানান। এর আগে এই কমিটির সদস্যরা প্রথমবারের মতো বৈঠক করেন।
মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বিদ্যুৎ খাত সম্পর্কিত প্রতিটি বিষয়েই তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে সেগুলো যাচাই-বাছাই ও বিচার-বিশ্লেষণ করা হবে। পরে এই কমিটি সরকারের কাছে করণীয় বা সুপারিশ জমা দেবে। তবে এখন পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহের বিষয়টিই প্রথম কাজ হিসেবে হাতে নেয়া হয়েছে। বিশেষ বিধানের আওতায় চুক্তিবদ্ধ দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে তথ্য দিতে হবে। এক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় ও পিডিবির কাছে থাকা তথ্য আগামী সাত দিনের মধ্যে জাতীয় কমিটির কাছে জমা দিতে হবে।
কমিটির পরবর্তী বৈঠক আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি।
বৈঠকে কমিটির সদস্য বুয়েটের ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক আবদুল হাসিব চৌধুরী, কেপিএমজি বাংলাদেশের সাবেক সিওও আলী আশফাক, ফেলো চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট (এফসিএ), বিশ্বব্যাংকের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন ও ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডনের ফ্যাকাল্টি অব ল’ অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সের অর্থনীতির অধ্যাপক মোশতাক হোসেন খান উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ (সংশোধিত ২০২১)-এর অধীন সম্পাদিত চুক্তিসমূহ পর্যালোচনার লক্ষ্যে ৫ সেপ্টেম্বর পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়।
প্রতিবেশী দেশগুলোতে ইলিশ ও সার চোরাচালানের ঝুঁকির রয়েছে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)। আর এই চোরাচালান রোধে কোস্টগার্ডকে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার রাজধানীর আগারগাঁও প্রশাসনিক এলাকায় বাংলাদেশ কোস্টগার্ড সদর দপ্তরে বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও নাবিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এই আহ্বান জানান।
উপদেষ্টা বলেন, ‘নিজস্ব চাহিদা বিবেচনায় সরকার এ বছর ভারতে ইলিশ রপ্তানি করছে না। তাছাড়া বিদ্যমান ডলার সংকটের মধ্যেও সরকার পর্যাপ্ত পরিমাণ সার আমদানির মাধ্যমে জোগান অব্যাহত রেখেছে।
‘এই প্রেক্ষাপটে প্রতিবেশী দেশগুলোতে ইলিশ ও সার চোরাচালানের ঝুঁকি রয়েছে। তাই কোস্টগার্ডের মূল দায়িত্বের অংশ হিসেবে সমুদ্র ও নৌ-পথে ইলিশ, সারসহ বিভিন্ন পণ্যের চোরাচালান বন্ধ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে নৈতিকতার ক্ষেত্রে স্খলন দেখা দিলেও কেবল কোস্টগার্ড নৈতিকতা বিচ্যুত হয়নি এবং অর্পিত দায়িত্বের ক্ষেত্রে ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়েছে।’
কোস্টগার্ড সদস্যদেরকে দুর্নীতিবিরোধী অবস্থানে তাদের অতীত ঐতিহ্য ও সম্মান সমুন্নত রেখে অস্ত্রসহ বিভিন্ন ক্রয় ও সংগ্রহের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখার আহ্বান জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
তিনি এ সময় কোস্টগার্ডের আবাসন, জনবল, অস্ত্র এবং টহল ও উদ্ধারকারী নৌ-যান ক্রয় ও সংগ্রহসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন, বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের মহাপরিচালক রিয়ার এডমিরাল মীর এরশাদ আলী প্রমুখ।
আরও পড়ুন:আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট পর্যন্ত চাকরিকালীন পদোন্নতিবঞ্চিত আড়াই হাজার অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাদের সুযোগ সুবিধা ফিরে পেতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন।
সোমবার সচিবালয়ে এক বিফ্রিংয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘১৬ বছর যারা বঞ্চিত ছিলেন, নিপীড়িত ছিলেন, তাদের ব্যাপারে সরকার একটি কমিটি করেছে। সাবেক অর্থ সচিব জাকির আহমেদ খানকে কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন সচিব বলেন, গত ১৬ বছর তারা পারিবারিক-আর্থিক ও সামাজিকভাবে বঞ্চিত হয়েছেন৷ ১৬ বছরে তারা কোনও পদোন্নতি পাননি।
এই সরকার মাত্র ১৩ দিনে তিনটি পদে পদোন্নতি দিয়েছে। তাদের আবেদনের পর কর্মচারীদের পদায়নে বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে রিপোর্ট নেয়া হচ্ছে। সেই রিপোর্ট নেগেটিভ না হলে যাদের চাকরির মেয়াদ বেশি আছে তাদের পর্যায়ক্রমে সচিব করা যেতে পারে। যাদের সময় কম আছে তাদের এই সরকারের এক্সটেনশন অনেক পদে দেয়া যেতে পারে।
মোখলেস উর রহমান জানান, কমিটি যেদিন থেকে কাজ শুরু করবে সেদিন থেকে তিন মাসের জন্য কমিটির মেয়াদ শুরু হবে। তিন মাসের মধ্যে সরকারের কাছে সুপারিশমালা এবং কেস টু কেস, তারা কে কোন পদ পাবেন তা জানাবে কমিটি।
তিনি বলেন, ‘আড়াই হাজার আবেদন এসেছে। আবেদনকারীরা দুই থেকে তিনটি দাবি করেছেন। তারা বলেছেন- আমি চাকরিতে থাকলে এই পদে যেতে পারতাম; আমি এতোদিনে এই পদে ফাইন্যান্সিয়াল বেনিফিট পেতাম; আমি পেনশনে চলে গেছি, পিআরএল এমাউন্ট যেটা ছিল সেটা বেড়ে যেত।’
মন্তব্য