গাজীপুরের শ্রীপুরের সারাহ রিসোর্টে বিষাক্ত মদ সরবরাহ ও মদ্যপানে তিনজন মারা যাওয়ার ঘটনায় মো. জাহিদ মৃধা নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে রাজধানী ঢাকার নিকুঞ্জ এলাকার এক বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে গাজীপুরের পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার এ কে এম জহিরুল ইসলাম এ সব তথ্য জানান।
এ সময় গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম, জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ওসি নিতাই চন্দ্র সরকারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞাপনী সংস্থা এশিয়াটিকের পিআর প্রতিষ্ঠান ফোরথটপিআরের ৪৩ জন কর্মী গত ২৮ জানুয়ারি অবকাশ যাপনের জন্য গিয়েছিলেন গাজীপুরের সারাহ রিসোর্টে। দুই রাত সেখানে অবস্থানের পর শনিবার তারা ঢাকা ফেরেন।
এর মধ্যে ঢাকায় ফিরে অসুস্থ হয়ে মারা যান তিনজন। এ ছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন অন্তত আট জন।
তবে এতজন কর্মীর অবকাশ যাপনে যাওয়া, তিন জনের অসুস্থ হয়ে মৃত্যু ও বাকিদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়া নিয়ে এশিয়াটিকের পক্ষ থেকে দায়িত্বশীল কেউ কথা বলেননি।
পুলিশের সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ৪২ বছর বয়সী জাহিদ রিসোর্টে কোমল পানীয়ের পাশাপাশি এলকোহল সরবরাহ করতেন। নিকুঞ্জ এলাকার আত্মীয়ের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার জহিরুল জানান, গত ২৮ জানুয়ারি এশিয়াটিক মার্কেটিং কোম্পানি লিমিটেডের আওতাধীন ফোরথটপিআর নামক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের ৪৩ জনের একটি দল বেড়াতে আসে সারাহ রিসোর্টে। তারা ৩০ জানুয়ারি দুপুরে ঢাকা ফেরার পথে অন্তত ১৬ জন শারীরিকভাবে অসুস্থতা বোধ করলে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হন।
তাদের মধ্যে ওই রাতেই কাউছার আহম্মেদ, পরদিন ৩১ জানুয়ারি সকালে সিহাব জহির এবং ১ ফেব্রুয়ারি সকালে এ কে এম শরিফ জামান ভূঁইয়া মৃত্যুবরণ করেন। এ বিষয়ে সারাহ রিসোর্ট এবং এশিয়াটিক কর্তৃপক্ষের নীরবতা বা গোপনীয় মনোভাবের কারণে গাজীপুর জেলা পুলিশের তদন্ত নামতে কিছুটা বিলম্ব হয়।
অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তিদের সুরতহাল ও ময়নাতদন্তে বিষাক্ত মদ্যপানের বিষটি প্রাথমিকভাবে স্পষ্ট হয়। অন্যরাও মদ্যপানে অসুস্থ হওয়ার বিষয়টি পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন। এ বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে শ্রীপুর থানায় অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে একটি মামলা করা হয়। পরে মামলাটি ডিবিতে স্থানান্তর হলে তদন্ত গতি পায়। গোপন সংবাদে ভিত্তিতে গাজীপুর জেলা পুলিশের ডিবির ওসি নিতাই চন্দ্র সরকারের নেতৃত্বে একটি দল অভিযান চালিয়ে ঢাকার নিকুঞ্জ এলাকা থেকে জাহিদ মৃধাকে গ্রেপ্তার করে।
ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার জহিরুল জানান, গ্রেপ্তার জাহিদ মৃধা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অ্যালকোহল সরবরাহের বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
সারাহ রিসোর্টের ম্যানেজার রনি নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, জাহিদ মৃধা রিসোর্টের কেউ না। তার সঙ্গে সারাহ রিসোর্টের কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি কীভাবে অ্যালকোহল সরবরাহ করেছিলেন তাও জানা নেই তাদের।
সারাহ রিসোর্টে যাওয়া ফোরথটপিআর একাধিক কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে সেখানে বারবিকিউ পার্টি হয়। অনেকেই সেখানে মদ্যপান করেন। রাতের পার্টি ভালোভাবে শেষ হলেও শনিবার দুপুরে ঢাকায় ফেরার পর তিন জন বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তারা হলেন শিহাব জহির, মীর কাউছার ও শরীফ জামান।
সারাহ রিসোর্টের খাবারে কোনো সমস্যা হয়নি বলে দাবি করেছে ওই প্রতিষ্ঠানটির জনসংযোগ কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন। গত ১ ফেব্রুয়ারি সোমবার তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শুক্রবার রাতে আমাদের এখানে প্রায় দুইশ জন খাবার খেয়েছে। আমাদের রিসোর্টে আরও অনেকগুলো গ্রুপ ছিল। এশিয়াটিকের দুই প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন বাদে আর কেউ অসুস্থ হওয়ার খবর আমরা পাইনি। আমাদের খাবার খেয়ে অসুস্থ হলে একই খাবারে অন্যেরাও অসুস্থ হতেন।’
রিসোর্টে মদের লাইসেন্স নেই বলে জানিয়েছেন ইসমাইল হোসেন। এ কারণে তাদের রিসোর্ট ম্যানেজমেন্ট থেকে মদের কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি বলে জানান তিনি।
এশিয়াটিকের অফিস ম্যানেজমেন্ট থেকে মদের ব্যবস্থা করা হয়েছিল বলে ১ ফেব্রুয়ারি জানিয়েছিলেন অবকাশ যাপনে যাওয়া কর্মীদের একজন। তবে এই মদ কোথা থেকে আনা হয়, তা জানাতে পারেননি তিনি।
ওই কর্মী জানান, যারা ওই রাতে মদ্যপান করেছিলেন, তাদের অধিকাংশই অসুস্থ হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। কয়েকজনের অবস্থা সংকটাপন্ন। দুজন আইসিইউতে ভর্তি আছেন।
অবকাশ যাপনে যাওয়া কর্মীদের ধারণা, মদের মধ্যে হয়ত ভেজাল ছিল। যে কারণে যারা মদ পান করেছে, তারা প্রায় সবাই অসুস্থ হয়েছেন।
গাজীপুরের সারাহ রিসোর্টে কী ঘটেছিল, এ সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ খোলেননি এশিয়াটিক ও তার অঙ্গ প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা।
প্রতিষ্ঠানটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর ইরেশ যাকেরের ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার কল ও মেসেজ পাঠানো হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান এর আগে নিউজবাংলাকে জানিয়েছিলেন, সারাহ রিসোর্টে বারের কোনো লাইসেন্স নেই। ফলে অতিথিদের মদ সরবরাহ করা হলে সেটা খতিয়ে দেখা হবে। আর যদি বাইরে কোনো বার থেকে মদ আনা হয়ে থাকে, তাহলে লাইসেন্সধারী ব্যক্তি ছাড়া কীভাবে তারা তা বিক্রি করেছে, সে ব্যাপারে তদন্ত হবে।
মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা গেলে মদের মধ্যে ভেজাল ছিল কিনা, অনুসন্ধানে তা বেরিয়ে আসবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, ‘সবার আগে জানতে হবে এই মদ তারা কোথা থেকে নিয়েছে।’
দেশে অ্যালকোহলের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ নেই বলে জানা গেছে।
রাজধানীর একাধিক বারগুলোর সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, সম্প্রতি এই সংকট দেখা দিয়েছে। এর কারণ হিসেবে বিদেশি অ্যালকোহল আমদানিতে শুল্কের কড়াকড়িকে দায়ি করছেন তারা।
রাজধানীর গ্রিনরোডের ডিপিএল রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড বারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অন্তত তিন সপ্তাহ ধরে তাদের পার্সেল সেবা বন্ধ রয়েছে। সরবরাহ সংকটের কারণে শুধু বারের ভিতরে অ্যালকোহল পরিবেশন করা হচ্ছে।
কদিন ধরেই তীব্র গরম। দেশের কোথাও মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হচ্ছে, তবে গরম অবশ্য কমছে না। আবহাওয়া আপাতত এমনই থাকবে।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এ তথ্য দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কুমিল্লা ও কিশোরগঞ্জ অঞ্চলসহ ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এতে বলা হয়, একই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
অধিদপ্তর বলছে, রাজশাহী, পাবনা ও টাঙ্গাইল জেলাসহ খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং চাঁদপুর ও মৌলভীবাজার জেলাসহ ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশ ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।
আবহাওয়ার সার্বিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
আগামী পাঁচ দিনের পূর্বভাসে বলা হয়েছে, তাপপ্রবাহ প্রায় একই রকম থাকতে পারে। আবহাওয়ায় তেমন পরিবতর্তন আসবে না।
দেশে চলমান দাবদাহ শুক্রবার থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শুক্রবার তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তায় এ কথা জানায়।
আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক স্বাক্ষরিত সতর্কবার্তায় বলা হয়, ‘দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ আজ (১৯ এপ্রিল, ২০২৪) হতে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে এবং তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
‘জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।’
৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাস
আবহাওয়া অধিদপ্তর শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলেছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে রয়েছে।
তাপপ্রবাহ বা দাবদাহের বিষয়ে বলা হয়, বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে দিনাজপুর, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা, বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলা এবং ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এটি অব্যাহত থাকতে পারে।
আরও পড়ুন:প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে মোট বৈধ প্রার্থী দাঁড়িয়েছে এক হাজর ৭৮৬ জন। মাঠ পর্যায় থেকে পাঠনো তথ্য একীভূত করার পর এ তথ্য জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।
তিনি জানান, প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন এক হাজার ৮৯০ জন। এদের মধ্যে বাছাইয়ে ১০৪ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল, আর বৈধতা পেয়েছে এক হাজার ৭৮৬ প্রার্থীর।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ১৮ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত আপিল করা যাবে। আপিল নিষ্পত্তি ২১ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। এরপর প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল এবং ১৫০ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে আগামী ৮ মে।
অপপ্রচার রোধে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হলে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে প্রতিমন্ত্রীর নিজ দপ্তরে ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মার সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
আরাফাত বলেন, ‘অপপ্রচার রোধে ভারতের কিছু প্রতিষ্ঠান কাজ করে। তারা কীভাবে কাজ করে, তাদের অভিজ্ঞতা এবং প্রক্রিয়া-পদ্ধতি বিনিময় জানা-বোঝার চেষ্টা করব। এক্ষেত্রে কোনো প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হলে আমরা তাদের কাছ থেকে সহায়তা নেব।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে যেসব কো-অপারেশন আছে, সেসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে বিটিভিতে দুই ঘণ্টার একটি চাংক নিয়ে আমরা আন্তর্জাতিক সংবাদ বিশ্লেষণ, চলমান ঘটনাপ্রবাহ এবং সংবাদ উপস্থাপনা শুরু করতে যাচ্ছি। সেক্ষেত্রে ভারতের যে সংবাদ সংস্থাগুলো আছে, বিশেষ করে এএনআইয়ের সঙ্গে কোলাবরেশন করা যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
‘যেহেতু বিটিভি ইন্ডিয়াতে দেখানো হয়, সেহেতু দুই ঘণ্টার এ চাংক আমরা ধীরে ধীরে দুই, তিন, চার ঘণ্টা পর্যন্ত বাড়াব। আমরা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী করতে চাচ্ছি, যেখানে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের খবর থাকবে। এর বাইরেও বিভিন্ন দেশের খবর থাকবে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করব ভারতীয় দর্শকদের আকৃষ্ট করতে। এ ছাড়া ইন্ডিয়ান ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন নিয়ে ইনস্টিটিউশন আছে, তাদের সঙ্গে কোলাবরেশন করা, বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রাম ও ট্রেনিং করা।’
‘সম্প্রতি মুজিব শিরোনামের যে সিনেমাটি সহ-প্রযোজনা হয়েছে, এমন অন্য কোনো সিনেমায় সহ-প্রযোজনার সুযোগ আছে কি না তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে’- যোগ করেন প্রতিমন্ত্রী।
ভারতের সিনেমা যেহেতু বাংলাদেশের বাজারে চলে সেহেতু বাংলাদেশেরও ভালো মানের সিনেমা ভারতে চালানোর বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দর্শককে জোর করে কিছু দেখানো যায় না। বাজারে কোনো জিনিসের চাহিদা থাকলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই যাবে-আসবে। সিনেমা যেহেতু প্রোডাক্ট, সেহেতু ভারতের বাজারে দর্শক থাকলে অবশ্যই যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের আরও কো-অপারেশনের সুযোগ আছে, সেসব নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আমি মনে করি- বাংলাদেশ এ বিষয়ে বেশি লাভবান হবে। কারণ ভারতের ফিল্মে, টেলিভিশনে বা অন্যান্য জায়গায় যে অভিজ্ঞতা আছে, তা আমরা যত বেশি নেয়ার চেষ্টা করা যায়। দেশের উন্নয়নের জন্য এসব জরুরি।’
আরও পড়ুন:সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি অর্জনে অবদান রাখতে এবং দেশকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করায় অবদান রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সবকিছু করছে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে ‘ডিফেন্স ডিপ্লোমেসি: স্ট্র্যাটেজি ফর বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সূত্র: ইউএনবি
সেনাপ্রধান বলেন, ‘মাতৃভূমিকে রক্ষা করা, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য এবং আমরা তার জন্য প্রস্তুত আছি। আমরা সবকিছুই করছি।’
বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্র নীতির বাণী ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নে আমরা সবকিছু করছি।’
জাতীয় নিরাপত্তা বজায় রেখে টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে সেনাপ্রধান বলেন, ‘কূটনীতি যেকোনো ধরনের জাতীয় স্বার্থ অর্জনের প্রচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়।’
বেসামরিক শক্তির সহায়তায় সেনাবাহিনী কীভাবে দেশে গঠনমূলক কর্মকাণ্ড, দেশ-বিদেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে সে কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
সেনাপ্রধান বলেন, ‘যেখানেই সুযোগ আছে, তা প্রত্যক্ষ হোক বা পরোক্ষ, আমরা সুযোগ গ্রহণ করি এবং বাংলাদেশের স্বার্থে সবকিছু করি।’
সামরিক কূটনীতির কথা বলতে গিয়ে জেনারেল শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আরও সম্পদ ও বাজেট বরাদ্দ করে তাদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। আমরা জানি কীভাবে এটা করতে হয়। কিন্তু আমাদের এটা করার সামর্থ্য থাকা উচিত।’
মিয়ানমার ইস্যু প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেন, ‘মিয়ানমারের সামরিক নেতাদের কেউ কেউ আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হচ্ছেন এবং এখানে নিজেদের সমস্যায় ফেলার ঝুঁকি রয়েছে।
‘এক বন্ধুকে খুশি করার জন্য আমরা আরেক বন্ধুর বিরোধিতা করতে পারি না। বেশকিছু বিষয় রয়েছে যা আমাদের খেয়াল করতে হবে। এসব ঘটনার প্রভাবও বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি এবং আমরা সঠিক পথেই রয়েছি।’
জেনারেল শফিউদ্দিন বলেন, দূর থেকে চালানো যায় এমন কিছু যানবাহন দেশেই তৈরি হচ্ছে যা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জন্য বেশ উপকারে আসবে। আগে এসব যন্ত্রপাতি আমদানি করতে হতো। তাই এখন আমাদের প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে।’
সেনাপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কেবল যুদ্ধে লড়াই করাই শেখে না, বরং জাতীয় স্বার্থে কীভাবে যুদ্ধ প্রতিরোধ বা এড়াতে হয় তা-ও জানে। আমরা সঠিক পথেই আছি এবং আমরা আমাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হবো না।’
একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা সামরিক বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব। এটি তারা কখনও ভুলে যায় না এবং এ কাজে সবসময় তাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।
‘উদ্দেশ্য রাতারাতি পরিবর্তন হতে পারে। কিন্তু সক্ষমতা রাতারাতি পরিবর্তন হয় না। আজ আপনি আমার বন্ধু, আগামীকাল বন্ধু না-ও হতে পারেন। কিন্তু জাতীয় স্বার্থ, মাতৃভূমি রক্ষায় আমাদের সক্ষমতা থাকতে হবে- পররাষ্ট্রনীতির এই আদেশ আমাদের সবার জন্য সমান।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিআইআইএসএস চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত এ এফ এম গওসোল আযম সরকার ও মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. আবু বকর সিদ্দিক খান।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
বিজিবি মহাপরিচালক বৃহস্পতিবার সকালে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ১১ বিজিবি ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরের কোয়ার্টার গার্ড পরিদর্শন শেষে বিজিবি কার্যালয় পরিদর্শন করেন। দুপুরে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা বর্ডার গার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয়া প্রতিবেশী দেশটির জান্তা বাহিনীর সদস্যদের খোঁজখবর নেন তিনি।
পরে তিনি ১১ বিজিবির অধীন চাকঢালা বিওপি (বর্ডার অবজারবেশন পোস্ট) পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি মিয়ানমার থেকে জান্তা বাহিনীর সদস্যদের পালিয়ে আসার স্পটগুলো সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। সীমান্তে বিজিবিকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেন।
পরিদর্শনকালে বিজিবি মহাপরিচালকের সঙ্গে ছিলেন কক্সবাজার রিজিয়ন কমন্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মোরশেদ আলমসহ বিজিবি রামুর সেক্টর ও অধীনস্ত বিজিবি ব্যাটালিয়নে নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবি’র জোন কমন্ডার ও অধিনায়ক লে. কর্নেল সাহল আহমদ এসিসহ বিজিবির কর্মকর্তারা।
বান্দরবানে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া ৫৩জনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। রুমা থানার দুটি মামলায় বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেয়া হয়। পাশাপাশি এক নারীকে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদসহ মামলায় ৫৭জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
বান্দরবান সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ নাজমুল হোছাইন বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলার শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
আদালতে আসামি পক্ষে একাধিক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। আইনজীবীরা জানান, রুমা থানার জিআর মামলা নং- ৪ ও ৭ মামলায় পুলিশ আসামিদের আদালতে হাজির করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে। আদালত উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ৫৩জনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। এর মধ্যে ৫২জনকে দু’দিন করে রিমান্ড এবং একজনকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয়া হয়।
এর আগে বান্দরবান জেলা কারাগার থেকে কঠোর নিরাপত্তায় ১৮জন নারী ও ৩৯জন পুরুষ বন্দিকে দুটি গাড়িতে করে আদালতে হাজির করা হয়। সম্প্রতি বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকে লুটের ঘটনায় তাদেরকে রুমা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে বান্দরবানে চলমান যৌথ অভিযানে সন্দেহভাজন আরও একজনকে আটক করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৬৬জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য