রাজধানীর মালিবাগে বাসা ফাঁকা পেয়ে এক বৃদ্ধাকে গৃহকর্মীর নির্মম পিটুনির ভিডিও প্রকাশের পর নিন্দার পাশাপাশি ঝুঁকি নিয়েও আলোচনা কম নয়।
এর আগে নানা সময় ফাঁকা বাসায় শিশু গৃহকর্মীদের নির্যাতনের ভিডিও এসেছে সামনে। গৃহকর্মীকে নির্মমভাবে পিটুনি এমনকি হত্যার ঘটনা ঘটেছে নানা সময়। এ জন্য গৃহকর্ত্রী বা গৃহকর্তা গ্রেপ্তার হয়েছেন, সাজাও হয়েছে।
অর্থাৎ নিরাপত্তাহীনতা দুই পক্ষ থেকেই হতে পারে। তবে সবার বাসায় সিসিটিভি ক্যামেরা থাকে না বলে পুরো চিত্র পাওয়া কঠিন।
তবে ঝুঁকি কমানো সম্ভব পুলিশের একটি নির্দেশনা মেনে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে স্থানীয় থানায় ভাড়াটেদের তথ্য দিতে যে ফরম ছাড়া হয়েছে, নানা ঘটনার পর সেখানে এখন গৃহকর্মীর তথ্য দেয়ারও নিয়ম করা হয়েছে। তবে এই তথ্য দেয়ার প্রবণতা একেবারেই কম।
গৃহকর্মীর হাতে রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষের হত্যার মামলার রায়েও বিচারক গৃহশ্রমিকদের ছবি, পরিচয়পত্র, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা থানায় জমা দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু এর পরেও অভিজ্ঞতা সুখকর নয়।
মোহাম্মদপুরে এক বাড়িওলা বলেন, ‘থানা থেকে ওভাবে প্রেশার দেয়া হয় না। আমরা ফরম দিয়ে দেই ভাড়াটিয়াদের। তারা গৃহকর্মীদের তথ্য না দিলে আমরা কী করতে পারি? নিজের ভালো কেউ না বুঝলে তাকে কে বোঝাবে?’
মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক মো. মোরশেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রতিটি বাসার বাড়িওলাদের কাছে নিবন্ধন ফরম দেয়া আছে। নতুন ভাড়াটিয়া আসলে এই ফর্ম পূরণ করে আমাদের কাছে দিয়ে যান। এই ফর্মে গৃহকর্মী ও ড্রাইভারের পরিচয়ের জন্য দুটি যায়গা আছে। যারা স্থায়ী গৃহকর্মী ও ড্রাইভার রাখেন তারা ফরমের ওই ঘরগুলো পূরণ করে দেয়ার কথা। তবে তারা এটা পূরণ করে দিচ্ছে কি না এটা আমরা জানি না।’
তিনি বলেন, ‘গৃহকর্মী রাখার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য আমার কাছে নাই। শুধু কাজের মহিলা রাখছে এ রকম তথ্য কেউ আমাদের দিচ্ছে না। তথ্য যদি কেউ আমাদের না দেয়, তবে আমাদের কী করার আছে?’
শের-ই-বাংলা থানার উপপরিদর্শক জহিরুল ফিরোজ বলেন, ‘স্থায়ী গৃহকর্মীর পরিচয়পত্র ও ছবি থানায় জমা দেয়ার নিয়ম। সে যদি কোনো বাজে ঘটনা ঘটায় তখন তাকে খুঁজতে সহায়তা করে এই পরিচয়পত্র। যারা সচেতন তারা দিয়ে যান, বাকিরা দেন না। অস্থায়ী গৃহকর্মীদের কোনো তথ্যই থানায় দেয়া হয় না।’
ইডেন মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মাহফুজা চৌধুরী পারভীন হত্যার রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘সম্প্রতি রাজধানীতে গৃহকর্মী সেজে প্রতারণার ঘটনা প্রায় ঘটেছে। তারা বিভিন্ন বাসা-মেসে কাজ করার নামে সুযোগ বুঝে কৌশলে টাকা-পয়সা, মোবাইল, স্বর্ণালংকার ইত্যাদি চুরি এবং পরিবারের সদস্যদের অজ্ঞান ও হত্যা করে মালামাল নিয়ে যায়।’
রায়ে আদালত কয়েকটি বিষয়ে সতর্ক করে দেয়। এর মধ্যে আছে, ১. নিয়োগের তারিখ থেকে ৯০ দিন সতর্ক থাকা; ২. গৃহকর্মীদের জাতীয় পরিচয়পত্র, ছবি ও জীবনবৃত্তান্ত থানায় জমা দেয়া; ৩. বাসার ফটকে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন; ৪. কোনও গৃহকর্মী যদি অন্য কোনও গৃহকর্মীকে কাজ দেন তাহলে দুই জনেরই জীবনবৃত্তান্ত, ছবি সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দেয়া; ৫. গৃহকর্মী দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর লাইসেন্স থাকা।
২০১৯ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি নিজ বাড়িতে খুন হন ইডেন কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মাহফুজা চৌধুরী। গত ৪ অক্টোবর এই মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে অধ্যক্ষের বাসার দুই গৃহপরিচারিকা রেশমা আক্তার ওরফে রুমা ও রীতা আক্তার ওরফে স্বপ্নার মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয় আদালত।
রায়ে বলা হয়, ২০১৯ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি মাহফুজাকে খুন করে জিনিসপত্র লুটের পরিকল্পনা করে আসামিরা। পরের দিন টাকা, সোনার অলঙ্কার ও মোবাইল ফোন সেট নিয়ে পালিয়ে যান তারা।
শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও অধিকার নিয়ে আইনি কাঠামো তৈরির দাবি উঠেছে বিভিন্ন সময়। ছবি: সংগ্রহীত
উল্টোচিত্রও আছে। ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ১১ বছর বয়সী গৃহকর্মীকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ উঠে গৃহকর্ত্রী ও গৃহকর্তার বিরুদ্ধে। ঘটনার চার মাস পর দুই জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
২০২০ সালের জুলাইয়ে ১২ বছর বয়সী এক গৃহকর্মীকে ব্যাপক মারধর করার অভিযোগে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সহযোগী অধ্যাপক ও তার স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গৃহশ্রমিককে হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতনের বিষয়টি প্রায়শই আসে গণমাধ্যমে। এমনও দেখা যায়, ঘটনার অনেক পরে তা অভিভাবকরা জানতে পারে।
মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র দুই বছর আগের এক প্রতিবেদনে মন্তব্য করেছে, গৃহশ্রমিক নির্যাতনের ঘটনায় অর্থ ও চাপের মুখে সমঝোতা করা হয়৷ গৃহকর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা দরিদ্র হওয়ায় তারা মামলা মোকদ্দমায় যেতে চান না বা যেতে সাহস পান না৷
এমনকি হত্যা মামলা টাকায় মীমাংসার ঘটনাও ঘটেছে।
ধুঁকছে গৃহকর্মী নিয়োগ দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলো
এখন পর্যন্ত গৃহশ্রমিক নিয়োগের পদ্ধতিতে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতেই আছে। পরিচিত গৃহশ্রমিক বা ঘরের দারোয়ানের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে কাউকে নিয়োগ করা হয়।
তবে সম্প্রতি বিভিন্ন সংস্থার অ্যাপে নিবন্ধন করে গৃহশ্রমিক ভাড়া নেয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। তবে এসব সংস্থাও থানায় তথ্য দেয় না।
অনেক কোম্পানি আবার বন্ধ করে দিয়েছেন তাদের এই সেবা। কারণ হিসেবে তারা বলছে, কাজে গিয়ে নানা অপকর্মের কারণে তাদের দুর্নাম হয়, কিন্তু তারা ব্যবস্থা নিতে পারেন না।
‘হ্যালো টাস্ক’ নামে একটি গৃহকর্মী সরবরাহের অ্যাপ আছে। তারা বাসায় অস্থায়ী গৃহকর্মী সেবা দিয়ে থাকেন। কল সেন্টারের মাধ্যমে তারা তথ্য দিয়ে থাকে।
তাদের কল সেন্টারে কথা বললে সেখান থেকে একজন বলেন, সকাল আটটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত এই সেবা দেয়া হয়। এই সেবায় গৃহকর্মীরা কাজ করে চলে আসবেন। তারা স্থায়ীভাবে বাসায় থাকবেন না।
তিনি বলেন, এই গৃহকর্মীদের জাতীয় পরিচয়পত্র, ছবিসহ সব তথ্য সংস্থার কাছে জমা থাকে। কোনো গৃহকর্মী যদি কোনো অনৈতিক কাজ করে থাকেন, তবে এর সকল দায়ভার নেবে সংস্থাটি।
তবে সংস্থাটি তাদের সেবাগ্রহীতাদেরকে বলে দেন যে, গৃহকর্মী গৃহে প্রবেশ ও ত্যাগের আগে তাদের চেক করতে হবে।
‘সহকারী ডট কম’ নামে আরেকটি উদ্যোগের অপারেশন এক্সিকিউটিভ ম্যানেজার নিপুঞ্জ রোজারিও বলেন, গৃহকর্মীদের সকল তথ্য কোম্পানির কাছে থাকে। চাইলে কোম্পানি দেবে। তবে তারা গৃহকর্মীদের তথ্য থানায় জমা দেন না।
ধানমন্ডি থানার উপপরিদর্শক পলাশ বিশ্বাস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমি দেখি নাই কোনো সংস্থাকে থানায় এসে জমা দিতে।’
গৃহকর্মী সরবরাহের উদ্যোগ নিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন মো. সোহেল নামে একজন। কারণ হিসেবে জানান, গৃহকর্মীরা বাসাবাড়ি থেকে চুরি করে চলে যাওয়ার কারণে তাকে বিপাকে পড়তে হয়েছে। তাই এই কাজ ছেড়ে দিয়েছেন।
নানা ঝামেলার কারণে এই সেবা চালু করে বন্ধ করে দিয়েছেন কাজী মাসুদ নামে আরও একজন। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘ঘরের সেবা নামে আমাদের সার্ভিস ছিল। আমরা স্থায়ী গৃহকর্মী দিতাম। কিন্তু এই সব গৃহকর্মীদের মধ্যে অনেকে নানা ধরনের কুসংস্কারাচ্ছন্ন। তাছাড়া ক্লায়েন্টদের বিরক্ত করত। অনেক সময় গ্রাহকদের কথা শুনত না।
‘এক মুরুব্বি মহিলাকে গৃহকর্মী হিসেবে একটা পরিবারের কাছে দিয়েছিলাম। ওই বাসার গৃহকর্তী ছিলেন সন্তান সম্ভাবা। চন্দ্রগ্রহণের সময় গৃহকর্তীকে তিনি বলতেন, এ সময় শুয়ে থাকলে মরা বাচ্চা হবে। তাকে কিছু বললে বলতেন, তার ১২ হাজার টাকা বেতনে চাকরি হয়েছে। তিনি সেখানে থাকবেন না।’
এমনও সংস্থা আছে যারা একবার গৃহকর্মী বুঝিয়ে দিয়ে আর খোঁজ নেয় না।
এমনই একটি প্রতিষ্ঠান ‘বন্ধন সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ’। তাদের কাছ থেকে সেবা নিয়ে বিপদে পড়া একজন লিপি রানি সাহা।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘তাদের কাছ থেকে আমি একজন স্থায়ী গৃহকর্মী নেই। ছয় মাসের চুক্তিতে সংস্থাটি আমার কাছ থেকে ছয় হাজার টাকা অগ্রিম নেয়। আর গৃহকর্মীকে দেয়া লাগত মাসে ছয় হাজার টাকা।
‘আমার বাচ্চা হওয়ার দেড় মাস আগে তিনি আমার বাসায় আসেন। কিন্তু বাচ্চা হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যেই তিনি চলে যান। সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা আমার অগ্রিম টাকা ফেরত দেয়নি এবং টাকা চাওয়ার কারণে খারাপ ব্যবহার করে।
‘গৃহকর্মী কিছু জিনিস চুরি করেন। এই বিষয়টা আমি সংস্থাকে জানালে তারা এরও কোনো ব্যাবস্থা নেয়নি।’
আরও পড়ুন:তিতাস গ্যাস কর্তৃক গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার শনাক্তকরণ এবং উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে গত ১১আগস্ট (সোমবার) ২০২৫ তারিখে জনাব মনিজা খাতুন, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ-এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি-এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ -সোনারগাঁও, জোবিঅ-সোনারগাঁও আওতাধীন নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার মিরেরটেক, হাতুরাপাড়া এবং নয়াপুর এলাকার ০৪ টি স্পটে অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, আনুমানিক ২.৫ কি.মি. এলাকার প্রায় ৯০০ টি অবৈধ আবাসিক বার্নার ও ০১ টি অবৈধ চুনা ভাট্টির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময়, ২" ডায়া বিশিষ্ট ১০০ ফিট, ১" ডায়া বিশিষ্ট ৪০ ফিট এমএস পাইপ অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। এছাড়াও প্লাস্টিক পাইপ উৎসস্থলে বিনষ্ট করা হয়েছে। প্রতিটি অবৈধ বিতরণ লাইন উৎস পয়েন্ট হতে কিলিং/ ক্যাপিং করা হয়েছে।
একই দিনে, বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনাব ওমর ফারুক মুন্সিগঞ্জ -এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি-এর জোবিঅ -মেঘনাঘাট আওতাধীন ভাটের চর (নতুন রাস্তা), বালুয়াকান্দি, গজারিয়া, মুন্সিগঞ্জ এলাকায় অবৈধ চুন কারখানা ও হোটেল রেস্টুরেন্ট এ অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, ২টি চুন কারখানা (মোট ৮টি ভাট্টি বিশিষ্ট) ও ভাটের চর নতুন রাস্তায় অবৈধ গ্যাস ব্যবহার করায় চা'য়ের দোকানের মালিককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং একটি রেস্টুরেন্ট এর মালিক না থাকায় রেস্টুরেন্ট সীল করা হয়েছে। এ সময়, এমএস পাইপ ২" ব্যাসের ২০ ফুট (আনুমানিক)। স্টার বার্ণার ৫ টি অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। ভাট্টির মালিক/জমির মালিকের বিরুদ্ধে এতদবিষয়ে গজারিয়া থানায় এফআইআর (FIR) দায়ের করা হবে। অবৈধ চুন কারখানার গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে এক্সক্যাভেটর মেশিনের মাধ্যমে স্থাপনা ভেঙ্গে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স গজারিয়া এর সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, উক্ত অভিযানে অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদের বিপরীতে ১৬,০০০ ঘনফুট/ঘন্টা গ্যাস সাশ্রয় হয়েছে এবং সাশ্রয়কৃত গ্যাসের আনুমানিক মূল্য ২,৬০,৯০০/- টাকা (দৈনিক ভিত্তিক)।
এছাড়া, জনাব জনাব মিল্টন রায়, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ-এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি-এর মেট্রো ঢাকা বিক্রয় বিভাগ -৪ আওতাধীন গুলশান ও বনানী বিক্রয় শাখা, কড়াইল বস্তি এলাকার ০৬ টি স্পটে অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, আনুমানিক ১০৫০ টি অবৈধ আবাসিক ডাবল বার্নারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময়, প্রায় ৫৬০ ফুট পাইপ অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। এছাড়াও, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক রাজস্ব শাখা - ভালুকা ও জোবিঅ- ভালুকা কর্তৃক বিশেষ অভিযানে বকেয়ার জন্য ০১টি আবাসিকের ০২ টি ডাবল চুলা ও অবৈধ/অনুমোদন অতিরিক্ত স্থাপনায় গ্যাস ব্যবহার করায় ০৪ টি আবাসিকের ৬টি ডাবল চুলাসহ মোট ৫টি আবাসিকের ৮টি ডাবল চুলার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময়, ৬৭৩২০.০০ টাকা তাৎক্ষণিক বকেয়া আদায় করা হয়েছে।
এছাড়াও, জনাব সিমন সরকার, বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ-এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি-এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ -চন্দ্রা, জোনাল বিক্রয় অফিস-চন্দ্রা আওতাধীন সুরাবাড়ি, কাশিমপুর এবং দেওয়ান মার্কেট, কাশিমপুর, গাজীপুর এলাকার ০৩ টি স্পটে অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, আনুমানিক ১৬০ টি বাড়ির ৪২০ টি ডাবল চুলার গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময়, ৩/৪ ইঞ্চি ব্যাসের পাইপ ২১০ ফুট, ১ ইঞ্চি ব্যাসের পাইপ ২৫০ ফুট, প্লাষ্টিক ৩/৪ ইঞ্চি ব্যাসের থ্রেট পাইপ ১৫০ ফুট ও ১২ টি সম্পুর্ন অবৈধ রেগুলেটর অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বর, ২০২৪ হতে গত ১১ আগস্ট, ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে ২৯৬টি শিল্প, ৩২৫টি বাণিজ্যিক ও ৬৩,৯৬৫টি আবাসিকসহ মোট ৬৪,৫৮৬টি অবৈধ গ্যাস সংযোগ ও ১,২২,৯৯৩টি বার্নার বিচ্ছিন্ন সহ উক্ত অভিযানসমূহে ২৪১.৫ কিলোমিটার পাইপলাইন অপসারণ করা হয়েছে।
"প্রযুক্তি নির্ভর যুবশক্তি' বহু পাক্ষিক অংশীদারিত্বে অগ্রগতি" এই প্রতিপাদ্য নিয়ে মাগুরায় নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যুব দিবস ২০২৫ পালিত হয়েছে।
মঙ্গলবার যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কার্যালয় থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। র্যালি শেষে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বেলুন এবং কবুতর উড়িয়ে দিবসটির সূচনা করা হয়। পরে যুব উন্নয়নের সম্মেলন কক্ষে শপথ পাঠের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আলোচনা সভা। সভা শেষে, যুব ঋণের চেক, প্রশিক্ষণের সনদপত্র ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ ইলিয়াসুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আব্দুল কাদের, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সিভিল সার্জন ডাক্তার মোঃ শামীম কবির, মাগুরা জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির এমবি বাকের, মাগুরা প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যাপক সাইদুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন মাগুরা জেলা সভাপতি মুফতি মোস্তফা কামাল প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, আজকের তারুণ্য মানেই আগামী দিনের ভরসা। তারা শুধু ভবিষ্যতের জন্য নয়, এখনই সমাজে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের নেতৃত্ব দিচ্ছে। প্রযুক্তি, শিক্ষায় উদ্ভাবন, সামাজিক সচেতনতা কিংবা পরিবেশ রক্ষা—সব ক্ষেত্রেই তরুণদের অবদান এখন চোখে পড়ার মতো। তবে তাদের পথটা সব সময় মসৃণ নয়। অনেক তরুণ বেকার, কেউ পাচ্ছে না মানসম্মত শিক্ষা, আবার কেউ মানসিক চাপ বা সামাজিক বৈষম্যের মুখোমুখি। তবুও তারা থেমে নেই। নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে, পরিবার ও সমাজকে কিছু দিতে তারা প্রতিদিন সংগ্রাম করে যাচ্ছে।
এই তরুণদের সম্মান জানাতেই প্রতি বছর পালিত হয় আন্তর্জাতিক যুব দিবস।
এসময় বক্তারা আরো বলেন, তরুণদের কথা শোনার এবং তাদের পাশে থেকে সহায়তা করার সময় এখনি। যুব সমাজকে ক্ষমতায়ন করে আমরা একটি শান্তিপূর্ণ ও টেকসই ভবিষ্যতের ভিত্তি গড়ে তুলতে পারি। তাদের চিন্তা, নেতৃত্ব ও কর্মক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, দেশের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সমুদ্রসম্পদ একটি বড় অবদান রাখতে পারে। দেশের হাওর-বাওড়, খাল-বিল ও নদী থেকে প্রয়োজনীয় মাছের প্রায় ৫০ শতাংশ আহরণ করা হলেও সমুদ্র থেকে আহরণ হয় মাত্র ৩০ শতাংশ, যা সমুদ্রে বিপুল সম্ভাবনার তুলনায় অনেক কম। অথচ সমুদ্রের বিপুল সম্পদ এখনো অনাবিষ্কৃত, যা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে দেশের অর্থনীতি ও পুষ্টি নিরাপত্তায় বড় ধরনের অবদান রাখা সম্ভব।
উপদেষ্টা আজ লেকশোর হোটেলে জাতিসংঘ গ্লোবাল কমপ্যাক্ট নেটওয়ার্ক বাংলাদেশের উদ্যোগে “ওশান সেন্টারস, বাংলাদেশ”-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, সমুদ্রসম্পদকে কাজে লাগিয়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অগ্রগতি এবং রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের লক্ষ্যে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। আমাদের দেশের বিশাল সমুদ্রাঞ্চলে বিপুল পরিমাণ অনাবিষ্কৃত সম্পদ রয়েছে, যা সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারলে জাতীয় অর্থনীতিকে আরও সমৃদ্ধ ও গতিশীল করা সম্ভব।
তিনি বলেন, পুষ্টি পূরণে সামুদ্রিক মাছ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে প্রচার-প্রচারণার অভাব, সহজলভ্যতার সীমাবদ্ধতা এবং অভ্যাসগত কারণে এর প্রতি মানুষের আগ্রহ তুলনামূলকভাবে কম। সামুদ্রিক শুঁটকির প্রতি যেমন আগ্রহ দেখা যায়, তাজা সামুদ্রিক মাছের ক্ষেত্রে তা ততটা নয়। ইলিশ মাছের প্রতি ব্যাপক আগ্রহ থাকলেও অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের ব্যবহার এখনো তেমন জনপ্রিয় হয়নি।
গ্লোবাল কমপ্যাক্ট নেটওয়ার্ক বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক শাহামিন এস. জামানের সভাপতিত্বে আরো বক্তৃতা করেন লয়েডস রেজিস্টার ফাউন্ডেশনের হেরিটেজ ও এডুকেশন সেন্টারের পরিচালক অ্যালেক্স স্টিট, ওশান সেন্টারস বাংলাদেশের কান্ট্রি লিড কমোডর (অব.) মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক এবং জাতিসংঘ গ্লোবাল কমপ্যাক্টের শীর্ষ কর্মকর্তারা। বাংলাদেশের ব্লু ইকোনমির প্রবৃদ্ধির প্রতিবন্ধকতা ও সম্ভাবনা বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মোহাম্মদ খুরশেদ আলম। প্রযুক্তি ও মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং ভবিষ্যৎ মৎস্যশিল্পের সম্ভাবনা নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রিয়ার অ্যাডমিরাল ড. খন্দকার আখতার হোসেন এবং বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এনাম চৌধুরী।
আলোচনায় অংশগ্রহণকারী বিশেষজ্ঞরা সমুদ্রসম্পদ সংরক্ষণ, ব্লু ইকোনমি উন্নয়ন, টেকসই মৎস্যশিল্প এবং সামুদ্রিক সম্পদ আহরণের নতুন দিগন্ত নিয়ে মতবিনিময় করেন। তাদের মতে, সমুদ্রসম্পদের সঠিক ব্যবহার ও সংরক্ষণ কেবল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিই নয়, বরং পরিবেশ সুরক্ষা ও দীর্ঘমেয়াদি খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
জোয়ারের পানিতে তলিয়ে জলাবদ্ধতার সৃস্টি হয় ও ভাটায় জেগে ওঠে। দীর্ঘদিন ধরে মন অবস্থা আসছে
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার ১০০ বছরের পুরানো পেড়লী বাজার । এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন এই বাজারের ব্যবসায়ী,স্কুলের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ জনগণ। সমস্যা সমাধানে নদীর তীরে বেড়িবাধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকার মানুষ ।
মঙ্গলবার (১২ আগষ্ট) সরেজমিন দেখা যায়,চিত্রা ও নবগঙ্গা নদীর সংযোগস্থল ত্রিমোহনী এলাকায় গড়ে উঠেছে পেড়লী বাজার । ১০০ বছরের পুরানো এ বাজারে শতাধিক ব্যবসায়ী ব্যবসা করছেন। সম্প্রতি নদীর পানি বেড়ে যা্ওয়ায় জোয়ারের সময় বাজার এলাকায় হাটুপানি জমে থাকে । ফলে ক্রেতারা প্রয়োজনীয় পণ্য কেনাকাটা করতে বাজারে আসতে পারে না । এ পানি পাশের স্কুল ও খেলার মাঠেও প্রবেশ করছে ।
বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন,সারাদিন বাজার ও আশপাশের এলাকায় হাটুপানি থাকে। সন্ধ্যায় ভাটার সময় পানি নেমে যায়। কিন্তু তারপরও পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত পানি থাকে। এ পানি মাড়িয়ে সব সময় তাদের আসা-যা্ওয়া করতে হয়।
স্থানীয় প্রবীন সাংবাদিক গোলাম মোর্শেদ বলেন,এক সময় এই নদী দিয়ে বড় বড় ষ্টিমার,লঞ্চ,কার্গো চলাচল করত। ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী এই বাজার হয়ে বড়দিয়া নৌবন্দরে ব্যবসা করেছে। তখন নদী গভীর থাকায় বাজারে জোয়ারের পানি প্রবেশ করতে পারেনি। এখন নদীর তলদেশ পলি জমে ভরাট হ্ওয়ার কারণে পানি বাজারে প্রবেশ করছে। তিনি বাজারের ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমাতে নদী তীরে রিংবাধ নির্মাণের দাবি করেন।
স্থানীয় ফাজিল আহম্মেদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনি মোহন রায় বলেন,জোয়ারের পানি বাজারে প্রবেশ করা শুরু করলে আগে স্কুল ছুটি দিয়ে দিতে হত। তবে স্কুলের ভেতর এবং নিচ তলার প্রতিটি কক্ষে পানি প্রবেশ করেছে। খেলার মাঠ তলিয়ে যা্ওয়ায় ছেলেরা খেলাধূলা করতে পারছে না।
কালিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. ওয়াহিদুজ্জামান মিলু বলেন, পেড়লী বাজার ভাঙনের কবল থেকে রক্ষার জন্য ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলীকে অনুরোধ করা হয়েছে। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্মন করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পাউবোর নড়াইল কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জল কুমার সেন বলেন,বাজার সংলগ্ন এলাকায় বাধ নির্মাণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।অনুমতি পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবসা নেওয়া হবে।
'প্রযুক্তি নির্ভর যুবশক্তি, বহুপাক্ষীক অংশীদারিত্বের অগ্রগতি'-কে প্রতিপাদ্য নিয়ে উদযাপিত হচ্ছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যুব দিবস ২০২৫। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যুব দিবস ২০২৫ উপলক্ষে সফল আত্মকর্মী ক্যাটাগরিতে ১২জন ও যুব সংগঠক ক্যাটাগরিতে ৪জন মোট ১৬ জনকে প্রদান করা হয় জাতীয় যুব পুরস্কার ২০২৫। আজ হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যুব দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, সাম্য, নাগরিক মর্যাদা, ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র ও সমৃদ্ধির নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ আমাদের সামনে এসেছে, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে সবচেয়ে বড় অবদান রাখবে দেশের তরুণ প্রজন্ম। সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে প্রযুক্তি হবে মূল চালিকা শক্তি। তিনি বলেন, প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। সেমিকন্ডাকটর শিল্পের সম্ভাবনা যাচাই ও উন্নয়ন, ইন্টারনেট খরচ কমানো, আধুনিক আইসিটি অবকাঠামো নির্মাণ, স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম তৈরি সহ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও অন্যান্য আধুনিক প্রযুক্তি খাতে বিশেষ মনোযোগ দিচ্ছে সরকার। সম্প্রতি ই-স্পোর্টসকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে এবং দেশের ই-স্পোর্টস খাতের বিকাশে প্রয়োজনীয় আইনি কাঠামো তৈরির কাজও দ্রুত এগিয়ে চলছে।
উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬৩ শতাংশই ৩৫ বছরের নিচে। এই তরুণ শক্তিই আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ ও শক্তি। সরকার এই বাস্তবতা উপলব্ধি করে যুব উন্নয়নে প্রশিক্ষণ, ঋণ ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধির নানা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। অধিদপ্তর সৃষ্টির পর থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত ৬৪টি জেলা কার্যালয়, ৭০টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং ৫০১টি উপজেলায় মোট ৮৩টি ট্রেডে প্রায় ৭৪ লক্ষ যুবক-যুবতী প্রশিক্ষণ লাভ করেছে। বিভিন্ন ঋণ কর্মসূচির আওতায় এ পর্যন্ত প্রায় ১১ লক্ষ যুবক ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ পেয়েছে।
এছাড়া, যুব সমাজের স্বার্থে সরকার বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য-বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট স্থাপনের প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত ইমপ্যাক্ট প্রকল্প, ভ্রাম্যমাণ আইসিটি প্রশিক্ষণ, ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ প্রকল্প, যানবাহন চালনা বিষয়ক প্রশিক্ষণ, ইত্যাদি। এছাড়াও, EARN (Economic Acceleration and Resilience for NEET - Non-education, Employment, or Training) প্রকল্পের আওতায় ৯ লক্ষ যুবক ও যুব নারীকে দক্ষতা উন্নয়নের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। একই সঙ্গে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও অটোমেশন বিষয়ক দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত এবং শহিদ পরিবারের সদস্যদের জন্য প্রশিক্ষণভিত্তিক আত্মকর্মসংস্থান প্রকল্প দ্রুত চালু হতে যাচ্ছে।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সচিব মো. মাহবুব-উল-আলমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়) ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় ও রেলপথ মন্ত্রণালয়) শেখ মইনউদ্দিন, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর মহাপরিচালক ডা. গাজী সাইফুজ্জামান।
দেশের মৎস্যসম্পদের সম্প্রসারণ, সংরক্ষণ, উন্নয়ন এবং টেকসই ব্যবহারে জনসচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ‘অভয়াশ্রম গড়ে তুলি, দেশি মাছে দেশ ভরি’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আগামী ১৮ থেকে ২৪ আগস্ট জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ দেশব্যাপী উদ্যাপিত হতে যাচ্ছে।
জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের উদ্বোধন অনুষ্ঠান ১৮ আগস্ট সকাল ১০টায় বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এতে সভাপতিত্ব করবেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মৎস্যখাতে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৬ জন ব্যক্তি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় মৎস্য পদক ২০২৫ প্রদান করা হবে। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জের পদক বিতরণ করা হবে।
আর ২০২৫ সালের মৎস্য সপ্তাহের কর্মসূচিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। কেন্দ্রীয়ভাবে সারাদেশে সপ্তাহব্যাপী র্যালি, সেমিনার, প্রযুক্তি প্রদর্শন, আলোচনা সভা, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, মতবিনিময় সভা, সমাপনী এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে।
সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, ১৮ আগস্ট সকাল ১০টায় বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের আনু্ষ্ঠানিক শুভ উদ্বোধন ও মৎস্য পদক বিতরণ অনুষ্ঠান। ১৯ আগস্ট সকাল সাড়ে ৮ টায় মানিক মিয়া এভিনিউ-এ সড়ক র্যালি, সকাল ১০টায় বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে প্রযুক্তি প্রদর্শন ও ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আলোচনা সভা। ২০ আগস্ট সকাল ১০টায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি)-এ মৎস্য অভয়াশ্রমের গুরুত্ব ও ভবিষ্যৎ করণীয় বিষয়ক সেমিনার। ২১ আগস্ট সকাল ১০টায় কারওয়ান বাজার মৎস্য আড়তে মৎস্য বিষয়ক আলোচনা সভা ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন। ২২ আগস্ট সকাল ১০টায় চট্টগ্রামে মৎস্য ও মৎস্যপন্য রপ্তানি বৃদ্ধিতে সম্ভাবনা ও করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভা। ২৩ আগস্ট সকাল ১০টায় মৎস্যভবনে মৎস্যজীবী, মৎস্যচাষী, জেলে এবং আড়ৎদারদের সাথে মতবিনিময় সভা ও ভ্রাম্যমাণ প্রচার প্রচারণা। ২৪ আগস্ট বিকাল ৪টায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি)-এ জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৫ এর মূল্যায়ন, সমাপনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনের মাধ্যমে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৫ এর সমাপ্তি হবে।
জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মসূচি হিসেবে থাকছে: প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় র্যালি, উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, সফল মৎস্য উদ্যোক্তাদের পুরস্কার প্রদান, পোনা অবমুক্তকরণ, মতবিনিময় সভা, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, নিরাপদ মাছ চাষ ক্যাম্পেইন, তরুণদের অংশগ্রহণে কর্মশালা, কুইজ ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা এবং মৎস্যজীবীদের নিয়ে ক্রীড়া আয়োজনসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সপ্তাহের শেষ দিনে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৫ এর মূল্যায়ন, সমাপনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনের মাধ্যমে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৫ এর সমাপ্তি হবে।
জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৫ সফলভাবে উদ্যাপনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সকল সংগঠন, মৎস্যজীবী, উদ্যোক্তা ও জনগণের সহযোগিতা কামনা করছে।
উল্লেখ্য, রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে সংঘটিত মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনার কারণে ২২ জুলাই জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৫-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানসহ সকল কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। এ ঘটনায় নিহতদের প্রতি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় গভীর শোক ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছে।
মালয়েশিয়ার ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার দেশকে ব্যবসাবান্ধব করতে নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘অতীতে বাংলাদেশে ব্যবসা আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী এগোয়নি। তবে নতুন বাংলাদেশে অনেক কিছুই নতুনভাবে গড়ে উঠছে, যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ব্যবসার সম্ভাবনা।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সম্ভাব্য সব উপায়ে ব্যবসাবান্ধব হতে চেষ্টা করছে। আমি পরিবর্তিত বাংলাদেশে অসীম সম্ভাবনা খুঁজে পেয়েছি।’
অধ্যাপক ইউনূস আজ মঙ্গলবার কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ সুযোগ নিয়ে আয়োজিত এক ব্যবসায়িক ফোরামে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে রয়েছে তরুণ ও সৃষ্টিশীল জনগোষ্ঠী। তিনি বিনিয়োগকারীদের বিশ্বজুড়ে বসবাসরত তরুণ বাংলাদেশি প্রবাসীদের সম্ভাবনা কাজে লাগানোর আহ্বান জানান।
বিদেশে থাকা তরুণ বাংলাদেশিদের প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তাদের মধ্যে সবসময় বাংলাদেশের জন্য কিছু করার তীব্র আকাঙ্ক্ষা রয়েছে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন অনুষ্ঠানের শুরুতে বক্তব্য প্রদান করেন। এতে তিনি বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা এবং শুল্ক ও অশুল্ক বাধা অপসারণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন।
সেলুলার অপারেটর রবি’র প্রধান শেয়ারহোল্ডার, আজিয়াটা গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিবেক সুদও বক্তব্য দেন। এতে তিনি বাংলাদেশে আজিয়াটার ২৮ বছরে ব্যবসা সম্প্রসারণ, অংশীদারিত্ব ও যৌথ সাফল্যের কথা তুলে ধরেন।
এ সময় পেট্রোলিয়াম ন্যাশনাল বেরহাদ (পেট্রোনাস)-এর প্রেসিডেন্ট ও গ্রুপ সিইও তেংকু মুহাম্মদ তৌফিক, সার্বভৌম সম্পদ তহবিল খাজানাহ ন্যাশনাল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিরুল ফেইসাল ওয়ান জাহির, পাম অয়েল কোম্পানি সাইম ডার্বি প্লান্টেশনস, কুয়ালালামপুর কেপং বেরহাদ (কেএলকে), আইওআই কর্পোরেশন এবং ফেলদা গ্লোবাল ভেঞ্চারস (এফজেভি)-এর শীর্ষ কর্মকর্তা, প্রোটন হোল্ডিংস বেরহাদের (প্রোটন) চেয়ারম্যান সৈয়দ ফয়সাল আলবার এবং গ্লোভ প্রস্তুতকারক টপ গ্লাভ কর্পোরেশনের নির্বাহী চেয়ারম্যান লিম উই চাই প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন ।
ব্যবসায়িক এই সমাবেশের আগে মঙ্গলবার পুত্রজায়ায় মালয়েশিয়ার ন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এবং ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি -এর মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
মন্তব্য