সাময়িক বরখাস্ত এ কারা উপ-মহাপরিদর্শকের বাসা থেকে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধার হয়। দুর্নীতি মামলা শুরু হয়েছে ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে।
মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে বিচারিক আদালতের খারিজ আদেশের পর এবার হাইকোর্টে আবেদন করেছেন দুর্নীতির মামলায় সিলেটের সাময়িক বরখাস্ত কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি-প্রিজন্স) পার্থ গোপাল বণিক।
তার বিরুদ্ধে গত বছরের ৪ নভেম্বর অভিযোগ গঠন করে আদেশ দেয় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০। একই দিন পার্থ গোপাল বণিকের অব্যাহতি চেয়ে করা আবেদন খারিজ করে দেয় ওই আদালত।
এ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন পার্থ গোপাল বণিক।
রোববার এ তথ্য জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে একটি আবেদনের কপি রোববার রাষ্ট্রপক্ষকে দেয়া হয়েছে। সোমবার আদালতে শুনানির জন্য আসতে পারে।’
রাজধানীর নর্থ রোডের (ভূতের গলি) ফ্ল্যাট থেকে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধারের দুর্নীতি মামলায় গত বছরের ২৪ আগস্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন ডিআইজি প্রিজন পার্থের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। অভিযোগপত্রে মোট ১৪ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, পার্থ গোপালের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ৮০ লাখ টাকার কোনো বৈধ উৎস তিনি দেখাতে পারেননি। অর্থাৎ তিনি সরকারি দায়িত্ব পালনকালে ৮০ লাখ টাকা বিভিন্ন অনিয়ম, ঘুষ, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে উপার্জন করে অর্থপাচারের উদ্দেশ্যে নিজ বাসায় লুকিয়ে রেখেছেন।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, ২০১৪ সালে তিনি ৩১ হাজার ২৫০ টাকা বেতন স্কেলে কারা উপমহাপরিদর্শক পদে পদোন্নতি লাভ করেন। তার এই বেতন স্কেলের সঙ্গে এতো টাকা অর্থ উপার্জন অসামঞ্জস্যপূর্ণ। তিনি তার কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে তা উত্তোলন করেননি বা তিনি কখনও এই অর্থ আয়কর বিবরণীতেও প্রদর্শন করেননি।
২০১৯ সালের ২৮ জুলাই দুদকের প্রধান কার্যালয়ে কমিশনের পরিচালক মুহাম্মদ ইউছুফের নেতৃত্বে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় পার্থ গোপাল বণিককে। ঘুষ ও দুর্নীতির কয়েক লাখ নগদ টাকা তার বাসায় রয়েছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে এদিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পার্থ গোপাল বণিকের বাসায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ৮০ লাখ টাকা জব্দ করা হয় এবং সে সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ কর্মকর্তা সোহেল রানা জানান, গত বুধবার বাংলাদেশ পুলিশের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজের ইনবক্সে সহায়তা চেয়ে বার্তা পাঠান ওই ছাত্রী। পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিষয়টি সমাধানের নির্দেশনা দেয়। থানা উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান দেয়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী নগরীর মতিহার এলাকায় এক ব্যক্তির সন্তানকে পড়াতেন। এ বিষয়ে মৌখিক চুক্তি হয়। পড়ানো শেষ হলে চুক্তি অনুযায়ী মেয়েটিকে তার পাওনা টাকা দিতে গড়িমসি শুরু করে শিক্ষার্থীর পরিবার।
কোনোভাবে টাকা আদায় করতে না পেরে ওই ছাত্রী পুলিশের শরণাপন্ন হন। ইনবক্সে যোগাযোগ করেন বাংলাদেশ পুলিশের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে। আর এতেই আসে সমাধান।
রোববার সকালে প্রেস নোটে এ তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) সোহেল রানা।
তিনি জানান, পড়ানো শেষে টাকা চাইতে গেলে পরিবারটি ছাত্রীকে প্রাপ্য টাকার অর্ধেকেরও কম নিতে প্রস্তাব করে। ছাত্রীটি তা নিতে অস্বীকার করে সম্পূর্ণ পাওনা দাবি করেন। পাওনা না পেয়ে হোস্টেলে ফিরে যান তিনি। পরিবারটি প্রভাবশালী হওয়ায় ওই ছাত্রী উচ্চবাচ্য করার সাহস পাননি।
পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, গত বুধবার বাংলাদেশ পুলিশের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজের ইনবক্সে সহায়তা চেয়ে বার্তা পাঠান ওই ছাত্রী। পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিষয়টি সমাধানের নির্দেশনা দেয়। থানা উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীটি বুঝে পান তার প্রাপ্য।
সোহেল রানা বলেন, ‘আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের অনেকেই টিউশনি করে নিজেদের পড়ালেখার খরচ চালিয়ে থাকেন। তাদের সহযোগিতা করা উচিত এবং তাদের যেকোনো সৎ চেষ্টা ও উদ্যমকে সবারই সমর্থন জানানো উচিত বলে মনে করে বাংলাদেশ পুলিশ।’
ঐতিহাসিক আগরতলা মামলার অন্যতম অভিযুক্ত ফ্লাইট সার্জেন্ট আব্দুল জলিল বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য ছিল পূর্ব পাকিস্তানে হঠাৎ আক্রমণ করে অস্ত্রাগারগুলি দখল করে স্বাধীনতা ঘোষণা করব।’
আগরতলা মামলার প্রেক্ষাপটে সে সময়কার বাঙালি সশস্ত্র সেনারা দেশ স্বাধীন করার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। পরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা দিলে এই প্রস্তুতিই কাজে লেগেছে। দ্রুত প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করা গেছে, যা থেকে সফলতা এসেছে।
এ কথা বললেন ঐতিহাসিক আগরতলা মামলার অন্যতম অভিযুক্ত ফ্লাইট সার্জেন্ট আব্দুল জলিল (অব.)।
শনিবার বিকেলে ‘বঙ্গবন্ধুর সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি ও ঐতিহাসিক আগরতলা মামলা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ঢাকা সেনানিবাসে অবস্থিত ‘বিজয় কেতন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে’ এটির আয়োজন করে শিশু-কিশোর সংগঠন ‘ঘাসফুল’। আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন ঘাসফুলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হাসান আব্দুল্লাহ বিপ্লব।
তৎকালীন পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ৩৫ বিশিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করেছিল। মামলার পূর্ণ নাম ছিল ‘রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিবুর রহমান এবং অন্যান্য’। ১৯৬৮ সালের প্রথম ভাগে দায়ের করা এই মামলায় অভিযোগ করা হয়, শেখ মুজিব ও অন্যান্যেরা ভারতের সঙ্গে মিলে পাকিস্তানের অখণ্ডতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছেন।
এ মামলার অভিযুক্ত ফ্লাইট সার্জেন্ট আব্দুল জলিল (অব.) মুক্তিযুদ্ধের আগে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর একজন কর্মকর্তা ছিলেন।
তিনি জানান, তৎকালীন পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনীর বাঙালি অফিসার ও জোয়ানদের মধ্যে স্বাধীনতার বীজ রোপিত হয়েছিল আগরতলা মামলার অনেক আগেই।
ঐতিহাসিক আগরতলা মামলার প্রেক্ষাপট ও দেশ স্বাধীন করার প্রস্তুতি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘১৯৬২ সালে করাচিতে স্টুয়ার্ড মুজিব, সুলতান উদ্দিন আহমেদ, নূর মোহাম্মদ, লে. কমান্ডার মোয়াজ্জেম হোসেন (আগরতলা মামলার আসামি) বসে চিন্তা করেন, “এই যে আমরা এমন ট্রেনিং পেয়েছি, তা যদি পাকিস্তানিদের জন্য কাজে না লাগিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য লাগাতে পারতাম।” তখন একটি ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন করা হয়। বাইরে ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন নাম হলেও ভেতরে তা ছিল বাংলাদেশ স্বাধীনতা করার জন্য।’
আগরতলা মামলার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘১৯৬৪ সালে বঙ্গবন্ধু করাচি গেলে তিনি বেগম আকতার সোলেমানের বাসায় (হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মেয়ে) ছিলেন। লে. কমান্ডার মোয়াজ্জেম হোসেনসহ অন্যারা সেই বাসায় একটি বিপ্লবী বৈঠক ডাকেন।’
আব্দুল জলিল বলেন, ‘এর আগে অনেক নেতার কাছে আমরা প্রস্তাব নিয়ে গেছি, তারা ভয়ে দৌড় মেরেছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুই একমাত্র নেতা যিনি বললেন, “বয়েজ, গো অ্যাহেড।” এরপর আমাদের সদস্য সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পেতে লাগল। তখন তাদের প্রশিক্ষণকেন্দ্র খোলা দরকার। যে জন্য আমার বাসায় প্রশিক্ষণকেন্দ্র খোলা হয়।’
তিনি প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য তুলে ধরে বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য ছিল পূর্ব পাকিস্তানে হঠাৎ আক্রমণ করে অস্ত্রাগারগুলি দখল করে স্বাধীনতা ঘোষণা করব। এ জন্য প্রশিক্ষণকেন্দ্র খোলা হয়। আমাদের যে পরিকল্পনা ছিল, হঠাৎ আক্রমণ করে আমরা পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন করে ফেলব।’
তিনি বলেন, ‘ওই যে আমরা যে গ্রাউন্ডওয়ার্ক করেছিলাম, সেই গ্রাউন্ডওয়ার্কের ফলেই বঙ্গববন্ধু যখন স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন, সাথে সাথে পাকিস্তান আর্মি, নৌ ও বিমানবাহিনীর সব বাঙালি কর্মকর্তারা মুক্তিবাহিনীর পক্ষে যুদ্ধে নেমে পড়ল। এই ওয়ার্কটা আমরা আগে করেছিলাম বলেই আমরা পরে সফলতা পেয়েছিলাম।’
দেশ স্বাধীন করার এ তৎপরতার তথ্য সশস্ত্র বাহিনীর বাঙালি কর্মকর্তাদের কেউ কেউ পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে জানিয়ে দিয়েছিল বলে জানান আব্দুল জলিল। তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে দু-একজন ছিল, যারা বিট্রে করেছে। তারা আর্মির কাছে খবর পৌঁছে দিয়েছিল।’
ঐতিহাসিক ওই মামলার (বৈরী) সাক্ষী আবুল হোসেন অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আসলে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা ষড়যন্ত্র ছিল না। ওই মামলায় বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে সাক্ষী দিতে আমাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকেরা।’
সে সময়ের দুঃসহ স্মৃতি মনে করে তিনি বলেন, ‘প্রথমে আমি বলেছি, “শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে আমি কোনো সাক্ষী দেব না।” এরপর আমার ওপর চলে অমানবিক অত্যাচার, জুলুম। এরপর আমি নিজে নিজে একটা পরিকল্পনা করলাম। আমি এখানেই একটা সেলে থাকতাম। তখন আমি স্বীকার করি যে, শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে আমি সাক্ষী দেব। তখন আমাকে ভাল খাওয়া দেওয়া শুরু করল। আমার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা শুরু করল। তখন আমাকে নিয়ে আসল কাঠগড়ায়। যখন আমাকে সাক্ষী দিতে বলল, আমাকে বলল, “বলো, শেখ মুজিবুর হ্যায়”, আমি তখন তাদের ঢাকাইয়া ভাষায় বললাম, “আমি শেখ সাহেবকে চিনি না। আমি উনাকে কোনো দিন দেখি নাই।”’
আবুল হোসেন বলেন, ‘এরপর আমাকে আবার সেলে নিয়ে গিয়ে অমানবিক নির্যাতন শুরু করল, যা সহ্য করার মতো না। আমাকে আবার বলা হলো, “তুই আবার বলবি, আমি আগে যা সাক্ষী দিয়েছি, তা সব মিথ্যা।” আমি বললাম, “আমি যা বলছি, সেটাই সত্য।” এরপর আবার শুরু হলো টর্চার। সে টর্চারের কথা মনে হলে এখনও আমি শিউরে উঠি। এরপর সার্জেট জহুরুল হককে গুলি করে মেরে ফেলল। বাইরে আন্দোলন হলো। আন্দোলনের মাথায় আমরা সবাই মুক্তি পেয়ে গেলাম। আন্দোলন না হলে আমরাও মুক্তি পেতাম না। কাউকে ফাঁসি দিত, কাউকি যাবজ্জীবন দিত।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. গওহর রিজভী বলেন, ‘৬২ সালে বঙ্গবন্ধু ত্রিপুরায় গিয়েছিলেন। তিনি প্রথমবার ত্রিপুরায় ভারতীয় সরকারের সাহায্য নিতে যাননি, যে আমাদের অস্ত্র দাও আমি যুদ্ধ করব। উনি (বঙ্গবন্ধু) বললেন, “আমি সংবিধানিক যোদ্ধা, গণতান্ত্রিক যোদ্ধা। আমি আন্দোলন করে দেশ স্বাধীন করবো।”’
গওহর রিজভী বলেন, ‘জলিল সাহেব যে বললেন, ওনাদের সংগ্রামের কথা, এটা ভেরি ট্রু, ভেরি কারেক্ট। উনি (বঙ্গবন্ধু) সোহরাওয়ার্দী সাহেবের মেয়ের বাসায় ছিলেন। ভেরি কারেক্ট। যখন কমান্ডার মোয়াজ্জেম বঙ্গবন্ধুকে এ পরিকল্পনার কথা বললেন, তখন তিনি বলেন, “তোমরা নিজেদের সংগ্রাম করো। আমি গণতান্ত্রিক। আমি রাজনৈতিকভাবে সংগ্রাম করব। কিন্তু তোমাদের সঙ্গে আছি।”’
গওহর রিজভী বলেন, ‘যখন আগরতলা মামলা শুরু হলো, তখন পাকিস্তানিরা কিন্তু জানত না, বঙ্গবন্ধু ৬২ সালে ভারতে গিয়েছিলেন। তাদের কাছে কোনো তথ্য ছিল না।’
অনুষ্ঠানে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় শিশু-কিশোরদের তুলির আঁচড়ে উঠে আসে বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস। এছাড়া আবাহমান বাংলার প্রকৃতি তুলে ধরে শিশুরা।
এছাড়া সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে ঐতিহাসিক আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার ইতিহাস বর্ণনা করেন ঘাসফুলের ক্ষুদে শিল্পীরা।
গত বছরের ১২ আগস্ট বেসরকারি থেকে সরকারি হওয়া প্রাথমিক শিক্ষকদের ‘টাইম স্কেল’ সুবিধা ফেরত দেয়ার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় একটি পরিপত্র জারি করে। ওই পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সংক্ষুব্ধ শিক্ষকরা রিট করেন।
২০১৩-২০১৪ সালে বেসরকারি থেকে সরকারি হওয়া প্রাথমিক শিক্ষকদের ‘টাইম স্কেল’ সুবিধা ফেরত দেয়ার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র নিয়ে জারি করা রুলটি খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার এ রায় দেয়।
আদালত বলেছে, তারা (শিক্ষক) চাইলে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে যেতে পারেন। কেননা ওটাই তাদের ফোরাম।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মোকছেদুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. মোরশেদ।
ব্যারিস্টার মোকছেদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, আদালত এ সংক্রান্ত রুলটি খারিজ করে দিয়েছে। এখন রিটকারীদের সঙ্গে পরামর্শ করে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।
তিনি জানান, জাতীয়করণ করা ৪৮ হাজার ৭২০ শিক্ষককে টাইম স্কেলের এ সুবিধা দেয়া হয়েছিল।
ব্যারিস্টার মোকছেদুল ইসলাম বলেন, গত বছরের ১২ আগস্ট বেসরকারি থেকে সরকারি হওয়া প্রাথমিক শিক্ষকদের ‘টাইম স্কেল’ সুবিধা ফেরত দেয়ার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় একটি পরিপত্র জারি করে। ওই পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সংক্ষুব্ধ শিক্ষকরা রিট করেন।
তখন হাইকোর্ট বিভাগ পরিপত্র স্থগিত করে রুল জারি করে। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে।
১৩ সেপ্টেম্বর চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে। পরে স্থগিতাদেশ তুলে দিতে শিক্ষকরা আপিল বিভাগে আবেদন করে।
গত ১৩ জানুয়ারি আপিল বিভাগ তিন সপ্তাহের মধ্যে হাইকোর্ট বিভাগে রিট মামলাটি নিষ্পত্তি করতে বলে। সে অনুযায়ী বৃহস্পতিবার ওই বেঞ্চে এ রুলের ওপর শুনানি শেষ হয়। শুনানি শেষে রায়ের জন্য রোববার দিন ঠিক করা হয়।
কারওয়ান বাজারের হাসিনা মার্কেটে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে ফায়ার সার্ভিস। ছবি: সাইফুল ইসলাম
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা মাহফুজ রিবেন নিউজবাংলাকে জানান, তাদের আটটি ইউনিটের চেষ্টায় রাত ১০টা ১০ মিনিটে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের হাসিনা মার্কেটে শনিবার রাত ৯টার দিকে লাগা আগুন ফায়ার সার্ভিসের এক ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
ফায়ার সার্ভিসের অপারেশন প্রধান জিল্লুর রহমান জানিয়েছেন, সব মিলিয়ে ১১টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে। রাত ১০টার দিকে আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসে।
তিনি জানান, এ ঘটনায় হতাহত হননি।
জিল্লুর রহমান বলেন, ‘সামনের দোকানগুলো বাঁশ-কাঠ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি দিয়ে তৈরি। এ ধরনের দোকানে আগুন লাগলে খুব দ্রুত পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।’
আগুনের কারণ অনুসন্ধানে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হবে বলেও জানান তিনি।
কারওয়ান বাজারের এই মার্কেটটিতে মসলা, খাবার হোটেল, মুদি দোকান, চায়ের দোকান, সেলুন, কাঁচামালের আড়ত, পানির হাউস, ফ্লেক্সিলোডসহ ইত্যাদির দোকান রয়েছে।
মার্কেটের এক ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘আড়তে আমি কাঁচামালের ব্যবসা করি। আমরা মার্কেটের দোতলায় ঘুমাইয়া ছিলাম। একজন কইছে আগুন লাগছে আমরা দৌড়াইয়া আসছি বাইরে।’
ব্যবসায়ী হানিফ বলেন, ‘দুই দিন ধইরা ব্যাংক বন্ধ। এইহানে আমার গদি আছিলো। ক্যাশপাতি সব এইহানে আছিলো। টাকাপয়সা যা আছিলো সব পুইড়া ছাপা হইয়া গেছে। আমার ৪-৫ লাখ টাকা আছিলো। আর হিসাবের খাতা। সব পুইড়া গেছে। ওহনো দোকানে ঢুকতে পারতাছি না।’
ভ্যান চালক শাওন বলেন, ‘আমরা ভ্যান চালাই। মারকেটের দোতালায় ভাড়া থাহি। আমি বাইরে থেইকা আইসা দেহি আগুন। পরে কিচ্ছু বাইর করতে পারি নাই। সব বাদ দিয়া পরে আগুন নিভাইতে শুরু করছি। রুমে যে ট্যাহা পয়সা কাপড়চোপড় আছিলো সব পুইড়া গেছে।’
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার হওয়ার পর কারাবন্দি অবস্থায় মারা যাওয়া লেখক মুশতাক আহমেদ। ফাইল ছবি
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ৫৩ বছর বয়সী মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে আহ্বায়ক করা হয়েছে সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. তরুণ কান্তি শিকদারকে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারাবন্দি লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে কমিটি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কমিটিতে চার কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
শনিবার বিকেলে মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের কারা-১ শাখার উপসচিব মো. মনিরুজ্জামানের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আলোচিত এ ঘটনা তদন্তে গাজীপুর জেলা প্রশাসনও একটি কমিটি করেছে।
আরও পড়ুন: মুশতাকের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ৫৩ বছর বয়সী মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. তরুণ কান্তি শিকদারকে।
কমিটিতে সদস্য করা হয়েছে গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জুনাব আবুল কালাম, ময়মনসিংহের কারা উপমহাপরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির ও গাজীপুর জেলা কারাগার সহকারী সার্জন ডা. কামরুন নাহারকে। সদস্য সচিব করা হয়েছে সুরক্ষা সেবা বিভাগ উপসচিব আরিফ আহমদকে।
বিজ্ঞপ্তিতে কমিটির কাজের পরিধি সম্পর্কেও উল্লেখ করা হয়েছে। এতে তদন্ত কমিটি যে বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করবে সেগুলো হলো, মুশতাক আহমেদের মৃত্যুতে কারা কর্তৃপক্ষের কোনো গাফিলতি ছিল কিনা? যদি থাকে তবে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা।
পাশাপাশি মুশতাক কারাগারে আসার পর তার কোনো স্বাস্থ্যগত সমস্যা নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষ জানত কি না? যদি জানে, সে বিষয়ে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে কিনা? যদি না হয়ে থাকে তবে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এক মামলায় গত বছরের মে মাসে গ্রেপ্তারের পর থেকে কারাবন্দি ছিলেন লেখক মুশতাক। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে তার মৃত্যু হয়।
ঠিক কী কারণে মুশতাকের মৃত্যু হয়েছে তা জানতে মৃতদেহের ময়না তদন্ত হয়েছে।
তার মৃত্যুর কারণ জানতে প্রয়োজনে তদন্ত কমিটি করা হবে বলে জানিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
যুক্তরাষ্ট্রের থিংক ট্যাঙ্ক ‘নিউ লাইনস ইনস্টিটিউট অন স্ট্রাটেজি অ্যান্ড পলিসি’ আয়োজিত অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। ছবি: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আশা করি, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে নিরাপদে ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে দেশটির ওপর আরও রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেবে বাইডেন প্রশাসন।’
রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে মিয়ানমারের ওপর আরও কঠোর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
নিউইয়র্কে শুক্রবার জাতিসংঘ, ওআইসি এবং যুক্তরাষ্ট্রের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে নিরাপদে ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে দেশটির ওপর আরও রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেবে বাইডেন প্রশাসন।’
অনুষ্ঠানে রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রকে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক কূটনীতিতে নেতৃত্ব দেয়ার আহ্বানও জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ আঞ্চলিক সমস্যার একমাত্র সমাধান যে কেবল সুষ্ঠু প্রত্যাবাসনেই সম্ভব তাও মনে করিয়ে দেন তিনি।
শনিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের থিংক ট্যাঙ্ক ‘নিউ লাইনস ইনস্টিটিউট অন স্ট্রাটেজি অ্যান্ড পলিসি’ এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান পরিচালক ড. আজীম ইব্রাহীম এ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। ইউটিউবে অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
মোমেন বলেন, বাংলাদেশে অস্থায়ীভাবে বসবাসরত ১১ লাখ রোহিঙ্গার টেকসই ও নিরাপদ প্রত্যাবাসনই আঞ্চলিক নিরাপত্তা ঝুঁকি নিরসন করতে পারে।
প্রশ্নোত্তর পর্বে মোমেন কোভিড-১৯ মহামারির এমন সময়ে বাংলাদেশ সরকার কীভাবে রোহিঙ্গাদের কল্যাণে কাজ করছে সে সম্পর্কে ব্রিফ করেন।
তিনি বলেন, সরকারের যথাযথ উদ্যোগের কারণেই এই মহামারিতে একজন রোহিঙ্গাও করোনায় মারা যায়নি। এ সময় তিনি রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের প্রসঙ্গেও কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে মিয়ানমারের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরও রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের এবং রোহিঙ্গা সঙ্কটের টেকসই সমাধানে বিশেষ দূত নিয়োগে আবারও যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
মোমেন বলেন, ‘আমাদের এই প্রস্তাব এ জন্যই যে, এই দূত এই সংকট বিষয়ে গভীর মনোনিবেশের মাধ্যমে মার্কিন সরকারের কংক্রিট পদক্ষেপ ও অগ্রণী ভূমিকা রাখবেন। বাইডেন প্রশাসনের কাছে আমাদের প্রত্যাশা রয়েছে এবং এ বিষয়ে মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করছি আমরা।’
পরে কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্স (সিএফআর) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং রোহিঙ্গা ইস্যু’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আয়োজনে অংশ নেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে মোমেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তার সাম্প্রতিক আলোচনার কথা উল্লেখ করে দুদেশের দ্বিপক্ষীয় অংশীদারত্বের বিষয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
ছবি: নিউজবাংলা
সরকার করোনাভাইরাস প্রতিরোধী আরও তিন কোটি টিকা কিনছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানালেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘আরও তিন কোটি ডোজ কেনার ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি, যেন একটি মানুষও বাদ না যায়।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, অবশ্যই করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা নেবেন তিনি। তবে তা দেশবাসীকে টিকা দেয়ার লক্ষ্য পূরণ হওয়ার পর।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর আগেই স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশে তালিকাভুক্ত হওয়া উপলক্ষে শনিবার সংবাদ সম্মেলনে এসে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
‘আগে কত পারসেন্টকে দিতে পারলাম, সেটা আগে দেখতে চাই। অবশ্যই টিকা নেব। আমাদের একটা টার্গেট ঠিক করা আছে, সেটা পূরণ হওয়ার পরে যদি টিকা থাকে, তাহলে দেব।’
গত ২৭ জানুয়ারি দেশে করোনার টিকা কার্যক্রম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১০ দিন পর ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয় গণটিকা কার্যক্রম। সংবাদ সম্মেলনে সরকারপ্রধান জানান, গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশে ২৮ লাখের বেশি মানুষ টিকা নিয়েছে।
গত বুধবার টিকা নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা। সংবাদ সম্মেলনে তিনিও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর পাশে।
ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে তিন কোটি ডোজ কোভিশিল্ড টিকা কিনেছে বাংলাদেশ। দুই চালান আর ভারত সরকারের দেয়া ২০ লাখ ডোজ উপহার মিলে এখন পর্যন্ত দেশে টিকা এসেছে ৯০ লাখের বেশি।
করোনা টিকাদান হারে অনেক দেশ থেকে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। সরকারের আরও টিকা কেনার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানালেন প্রধানমন্ত্রী।
‘আরও তিন কোটি ডোজ কেনার ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি, যেন একটি মানুষও বাদ না যায়। কোনো দেশ উৎপাদন করতে না পারলে, আমাদের এখানে উৎপাদন করা যায় কি না, সে জন্য দেশের ফার্মাসিউটিক্যালসগুলোকে বলা হয়েছে প্রস্তুত থাকতে।
‘মানুষকে সেবা দেয়া আমার কর্তব্য। শুধু প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয় জাতির পিতার কন্যা হিসেবে এটা কর্তব্য।’
‘করোনা মোকাবিলায় ম্যাজিক নেই’
বাংলাদেশ করোনা মোকাবিলায় অনেকটাই সফল। দেশে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে আট হাজার ৪০০ জনের। আর আক্রান্ত পাঁচ লাখ ৪৫ হাজার ৮৩১ জন।
দেশে এক মাসের বেশি সময় ধরে করোনার শনাক্তের হার পাঁচ শতাংশের নিচে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিধি অনুযায়ী, কোনো দেশে টানা দুই সপ্তাহ পাঁচ শতাংশের নিচে হলে করোনা নিয়ন্ত্রণে বলা যায়। অবশ্য নীতিমালায় এও বলা আছে যে, দিনে পরীক্ষা হতে হবে ২০ হাজারের বেশি। কিন্তু দেশে এত বেশি নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে না।
এই কম নমুনা পরীক্ষার পেছনে অবশ্য সরকারের কোনো দায় নেই। শুরুর দিকে কিটসহ অবকাঠামোগত সমস্যায় পরীক্ষা করতে বাধা পেলেও এখন আর সে পরিস্থিতি নেই। দেশের ২০৬টি ল্যাবে এখন পরীক্ষা করা যায়, সেই সঙ্গে শুরুর হয়েছে অ্যান্টিজেন টেস্টও। জনগণই পরীক্ষা করতে কম যাচ্ছে।
করোনা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের সাফল্যের প্রশংসা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও (ডব্লিউএইচও)। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলেই করোনা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানালেন প্রধানমন্ত্রী।
‘এটা কোনো ম্যাজিকের কিছু না। যখন যেভাবে বলেছি, সবাই মেনে চলেছে। সবাই সম্মিলিতভাবে কাজ করায় এটা হয়েছে। এটা বাংলাদেশের মানুষের সম্মিলিত ম্যাজিক।
‘করোনা সারাবিশ্বকে স্থবির করে দিয়েছিল। জনগণের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ যে, আমরা যখন যেভাবে বলেছি, সবাই মেনে চলেছে। আমরা সময়োচিত যেসব পদক্ষেপ নিয়েছি, বিশেষ করে অর্থনীতির ক্ষেত্রে। মানুষের যেন কষ্ট না হয় সেটা দেখেছি। আর্থিক প্রণোদনা দিয়েছি। সব শ্রেণির মানুষ সহায়তা পেয়েছে। তখনও গবেষণা চলছে, আগাম অর্থ দিয়ে করোনার টিকা কেনার ব্যবস্থা নিয়েছি।’
নিজের কর্তব্য থেকেই এসব কাজ করেছেন বলে জানালেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘সরকারের সব সদস্য, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আমার দলের নেতাকর্মী, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগসহ সহযোগী সংগঠনের সদস্য প্রত্যেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছে। যাকে যখন যে কাজ করতে বলেছি, করেছে। সহযোগিতা-ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছে।
‘আমার কোনো ম্যাজিক নয়, এটা বাংলাদেশের মানুষের ম্যাজিক। আমার বাবা মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য নিজের জীবন দিয়ে গেছেন। কাজেই এটা আমার দায়িত্ব। আন্তরিকতা, দায়িত্ববোধটাই আসল।’
মন্তব্য