ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে করোনার টিকা কেনা নিয়ে সমালোচকরা যেসব প্রশ্ন তুলছেন, তার সবগুলোর জবাব দিল সিরামের বাংলাদেশের এজেন্ট বেক্সিমকো ফার্মা।
সরকারের কেনা তিন কোটি টিকার মধ্যে প্রথম ধাপে ৫০ লাখ টিকা দেশে আসার আগের বিকালে ধানমন্ডিতে সংবাদ মাধ্যমের সামনে আসেন বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান পাপন।
সিরাম থেকে টিকা কেনায় কেন বেক্সিমকো ফার্মার অন্তর্ভুক্তি, বাংলাদেশ ভারত থেকে বেশি দামে টিকা কিনছে কি না, প্রতি টিকায় কেন বেক্সিমকোকে এক ডলার করে দেয়া হচ্ছে, এই টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কেমন- তার সব প্রশ্নের জবাব দেন পাপন।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নানা কোম্পানির টিকা প্রয়োগ শুরু হলেও বাংলাদেশ অপেক্ষা করেছে অক্সফোর্ড উদ্ভাবিত টিকার জন্য। এই অঞ্চলে এটা তৈরি করছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান সিরাম ইনস্টিটিউট। এই প্রতিষ্ঠান থেকে তিন কোটি টিকা কিনছে সরকার। আর এই চুক্তিতে বেক্সিমকোও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
গত ২১ জানুয়ারি সিরামের ২০ লাখ টিকা বাংলাদেশ ভারত থেকে উপহার হিসেবে পেয়েছে। চার দিন পর বাংলাদেশের কেনা টিকার ৫০ লাখ আসছে।
তার আগের দিন রোববার বিকালে বেক্সিমকো ফার্মার হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন প্রতিষ্ঠানটির এমডি নাজমুল হাসান পাপন।
তিনি জানান, সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে টিকা পৌঁছবে ঢাকায়। বিমানবন্দর থেকে সেগুলো নেয়া হবে টঙ্গীতে বেক্সিমকো ফার্মার গুদামে। সেই টিকার নমুনা পরীক্ষা করে ঔষধ প্রশাসন অনুমতি দিলে তা ৬৪ জেলায় পৌঁছে দেবে বেক্সিমকো।
সিরাম-বাংলাদেশের চুক্তির পর সমালোচকরা প্রশ্ন তোলেন এখানে বেক্সিমকো কেন এল।
চুক্তির পর জানানো হয়, বাংলাদেশ টিকা কিনবে চার ডলারে। বেক্সিমকো পাবে এক ডলার করে।
তবে সিরাম ভারতকে আরও কমে টিকা দিচ্ছে বলে সংবাদ প্রকাশ হয়। প্রশ্ন উঠে ভারত কমে পেলেও বাংলাদেশকে কেন বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।
আবার অক্সফোর্ডের টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ভারতে বেশ কয়েকজনের শারীরিক সমস্যার বিষয়টিও সামনে এসেছে।
এর সবগুলো প্রশ্নের জবাব দেন পাপন।
চুক্তিতে বেক্সিমকো ফার্মা কেন?
পাপন জানান, আন্তর্জাতিকভাবে ওষুধ কিনতে হলে যেসব শর্ত পূরণ করতে হয়, তার কারণেই বেক্সিমকো ফার্মা সিরাম-বাংলাদেশ চুক্তির অংশ হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘কোনো দেশে যদি ওষুধ এক্সপোর্ট করতে চায়… তাহলে সে দেশে হয় সেই কোম্পানির অফিস থাকতে হবে অথবা লোকাল এজেন্ট বা ডিস্ট্রিবিউটর থাকতে হবে।
‘আমরা বিশ্বের ৬০টি দেশে এক্সপোর্ট করি। প্রতিটি দেশে আইদার উই হ্যাভ ডিস্ট্রিবিউটর অর লোকাল এজেন্ট। কারণ, ওখানে যদি কিছু হয়, কোনো প্রবলেম হয়, তাহলে ওদের সরকার ওই লোকাল কোম্পানিটাকে ধরতে পারে।
‘আমাদের সরকার সরাসরি সিরামের সঙ্গে একটা এগ্রিমেন্ট করেছি। আমরা ওদের লোকাল এজেন্ট, আমরা এখানে একটা পার্টি ছিলাম এজ এ ডিস্ট্রিবিউটর অথবা লোকাল এজেন্ট। কিন্তু তার সঙ্গে সরকার আমাদেরকে এডিশনাল কিছু দায়িত্ব দিয়েছে যেটা আমরা এর আগে কখনও শুনিনি।’
বাংলাদেশ কি ভারতের কাছ থেকে বেশি দামে টিকা নিচ্ছে?
পাপন জানিয়ে দেন, যে চুক্তি হয়েছে, তাতে এর কোনো সুযোগ নেই। ভারত যে দামে কিনবে, বাংলাদেশ তার চেয়ে কমে পাবে, কিন্তু বেশি দাম নেয়া অসম্ভব।
বেক্সিমকো ফার্মার এমডি জানান, তারা সিরামের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন নিজেরা ১০ লাখ টিকা আনবেন বলে। চুক্তি হয়েছে আট ডলার করে।
এর মধ্যেই তারা সিরামের সঙ্গে কথা বলেন বাংলাদেশকে তারা দিতে চায় কি না। তখন সিরাম বলে তিন কোটি দিতে পারবে। এরপর বেক্সিমকো সরকারকে জানায়।
পাপন জানান, দাম ঠিক করার সময় তারাই সরকারকে পরামর্শ দেন, ভারত যে দামে কিনবে, বাংলাদেশ যেন সেই দামে পায়।
পাপন বলেন, ‘যেহেতু সে দেশে উৎপাদন হচ্ছে আমরা ধারণা করেছিলাম ভারত সরকার কিছুটা কমে পাবে টিকা। এই ধারণাবশত আমরা একটা কন্ডিশন লাগাই যে, ভারত সরকারকে যে দামে দেবে, আমাদেরকেও সে দামে দিতে হবে।’
তাহলে চার ডলারের প্রসঙ্গ কেন এল- তারও ব্যাখ্যা দেন পাপন। বলেন, ‘ওরা এগ্রি করল। তখন কথা হলো আমরা যে টাকা পাঠাব, কী দাম ধরে পাঠাব? তখন দাম ধরা হলো চার ডলার।’
বেক্সিমকো এমডি জানান, চুক্তিটা এমন, ভারত যদি চার ডলারের বেশিতে টিকা কেনে, তাহলে বাংলাদেশকে চার ডলারেই দিতে হবে, আর ভারত যদি চার ডলারের কমে নেয়, তাহলে বাংলাদেশকে সে দামেই দিতে হবে।
পাপন বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে না, আমি পৃথিবীর কোথাও এমন কোনো এগ্রিমেন্ট দেখিনি। চার ডলারে বুক করব, টাকা পাঠিয়ে দেব। কিন্তু ভারত সরকার বেশিতে নিলে বেশি দেব না, আমার কমে নিলে আমাকে কমে দিতে হবে।’
ভারত সরকার কমে টিকা পেলে বাংলাদেশের ভালো
ভারত কম দামে টিকা পাচ্ছে বলে যে বিভিন্ন আলোচনায় যে কথা উঠেছে, সেটা বাংলাদেশের জন্য খুশির খবর বলে মনে করেন পাপন।
তিনি বলেন, ‘একদিন শুনি আড়াইশ, একদিন শুনি দুইশ। লাস্ট শুনলাম দুইশ রুপিতে দিচ্ছে ভারত সরকারকে। এটা নিয়ে এত হুলস্থুল লেগে গেল?
‘আমি তো বলি এটা খুশির খবর। ওরা যদি ৫০ রুপিতে নেয়, আমি আরও খুশি। আমাদের গভর্নমেন্ট আরও কমে পাবে। এই খুশির খবর একটা পজেটিভ নিউজ, কীভাবে এটা আমাদের এখানে নেগেটিভ হয় আমি সেটা বুঝতে পারছি না। এতে তো সবার খুশি হওয়ার কথা। বেক্সিমকোকে কনগ্রেচুলেট করার কথা।’
পাপন জানান, থাইল্যান্ড ৭.৭ ডলারে টিকা কেনার চুক্তি করেছে, তাও সেটা এখন পাবে না। ভারত ছাড়া একমাত্র বাংলাদেশই সিরাম থেকে টিকা পেতে যাচ্ছে।
বেক্সিমকো ফার্মা এমডি জানান, ফিলিপাইন থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়াসহ একশটির বেশি দেশ সিরাম থেকে টিকা নিতে চাইছে। সবাই পাবে জুনের পরে।
তিনি বলেন, ‘ব্রাজিল সরকার প্লেন পাঠিয়ে দিতে চাইছিল ভারতে সরকারের কাছ থেকে নেয়ার জন্য। কিনতে তো পারছে না।’
বেক্সিমকো কি সিরাম থেকে কমিশন পাচ্ছে?
পাপন জানান, একটি টিভি টকশোতে একজনের এমন বক্তব্য শুনে তিনি অনুষ্ঠানের পর তাকে কল দেন।
তাকে তিনি বলেন, ‘ইন্ডিয়ার গভর্নমেন্ট যে প্রাইসে কিনছে, আপনি সেখানে আমাকে একটা কমিশন ফিক্সড করে দেন। …ইন্ডিয়ান গভর্নমেন্ট কিনবে ৬০ কোটি ডোজ। …তো ওখানে কি একটা কমিশন ধরা আছে? বেক্সিমকো ঢাকা? তাহলে আমাকে ওখানে দেন, তিন কোটি ফ্রি দিয়ে দিচ্ছি বাংলাদেশ গভর্নমেন্টকে।’
অক্সফোর্ডের টিকা ছাড়া উপায় ছিল না
পাপন জানান, তারা বেসরকারি পর্যায়ে টিকা আনতে কেবল সিরাম নয়, কথা বলেছেন মডার্না, ফাইজার, অ্যাস্ট্রাজেনকার সঙ্গে। তারা কথা বলেছেন জনসন অ্যান্ড জনসন, ডোবারভেকের সঙ্গেও।
তিনি বলেন, ‘আমরা যে কোনোটাই হয়ত নিতে পারতাম। আমরা প্রথমে চিন্তা করে দেখেছি মাস ভ্যাকসিনেশনের জন্য। আপনি যদি ১০ লক্ষ লোককে দিতে চান, এক জিনিস। সেটা যে কোনো ভ্যাকসিনই দেয়া সম্ভব বাংলাদেশে।
‘কিন্তু আপনি যদি ১৪ কোটি মানুষকে বা ১০ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে চান, তাহলে মডার্না ও ফাইজার দ্বারা দেয়া সম্ভব না। অনলি অপশন আমাদের কাছে ছিল অক্সফোর্ড।’
অক্সফোর্ডের টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কী
পাপন জানান, ফাইজার ও মডার্নার টিকার কার্যকারিতা ৯০ শতাংশের বেশি। আর অক্সফোর্ডের টিকার ক্ষেত্রে এটা ৬২ থেকে ৭০ শতাংশ।
কিন্তু সেই দুই টিকা বেশি ঝুঁকি তৈরি করে।
তিনি বলেন, ফাইজার ও মডার্না দুইটাই হচ্ছে এমারেনা ভ্যাকসিন। এটা পৃথিবীতে এর আগে কখনও আসেনি। অন্যদিকে অক্সফোর্ডের টিকা যে প্রযুক্তির, সেটা বাংলাদেশে আগে থেকেই ব্যবহার হয়।
পাপন বলেন, ‘এটার কী সাইডইফেক্ট হতে পারে, আমরা কিন্তু জানি। কিন্তু এমারেনা ভ্যাকসিন, যদিও এটা হাইলি এফেকটিভ, আমি কিন্তু বলছি না এটা খারাপ, এটা খুবই ভালো। মাস্ট বি গুড। বলছি, এটার সাইডইফেক্ট কিছু নতুন নতুন ধরা পড়ছে, যেটা আমার আছে অজানা।’
তিনি বলেন, ‘ওরা (অক্সফোর্ড) যা বলছে, তাতে করে এখন পর্যন্ত কাউকে হসপিটালে যেতে হয়েছে এমন খবর আসেনি।’
এই টিকা নিয়ে যদি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়, তাহলে দায় কার?
এমন প্রশ্নে পাপন বলেন, ‘মডার্না, ফাইজার সবাই, তারা যেটা করেছে, সেটা হলো কোম্পানিকে কেউ দায়ী করতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার বরং বলেছে, এটা নিয়ে যদি কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়, তাহলে সেটাও সরকার দেখবে।’
বেক্সিমকো এক ডলার কেন?
চুক্তি অনুযায়ী সিরামের টিকা দেশে নিয়ে আসাসহ নানা কাজ করে বেক্সিমকো টিকা প্রতি এক ডলার করে পাবে।
পাপন জানান, তাদেরকে এই অর্থের বিনিময়ে যে শর্ত দেয়া হয়েছে, আগে জানলে এই কাজ নিতেন না।
তিনি জানান, টিকা আনার পরে তা পরীক্ষা করা, গুদামজাত করা, ড্রাগটেস্টিং ল্যাবরেটরি থেকে ছাড়পত্র নেয়া, ৬৪ জেলায় পৌঁছে দেয়ার দায়িত্ব পালন করতে হবে বেক্সিমকোকেই।
তিনি বলেন, ‘থ্রোআউট দ্য মোমেন্ট আমাদেরকে কোল্ড চেইন মেইনটেইন করতে হবে। এবং ওখানে গিয়ে প্রমাণ করে দিতে হবে প্রত্যেকটা ধাপে কোথাও কোল্ডচেইন ব্রেক হয়নি। এই কাজটা এত সহজ না।
‘ধরেন, একটা শিপিং কার্টুন, বাইরে থেকে ঠিক আছে, ভেতরে যখন খোলা হলো, দেখা গেল যে এটার মধ্যে দুটো বা তিনটা ভাঙা। এমন তো হতেও পারে। কতগুলো ড্যামেজ থাকতে পারে, কোনো বাক্সের মধ্যে দেখা গেল কোল্ডচেইন ব্রেক করা হয়েছে। তখন কী হবে?
‘সাধারণত সরকার যখন কিনে, তখন একটা ওভারেজ ধরা হয়। যে ঠিক আছে, এত পার্সেন্ট পর্যন্ত হতে পারে। আমাদের ক্ষেত্রে কিন্তু কোনো ওভারেজ নেই। সরকার একেবারে তিন কোটি ডোজ ভালো নিয়ম অনুযায়ী আমাদের কাছে চাইবে।‘
পাপন জানান, কোথাও টিকা খোয়া গেলে বা দুর্ঘটনা হলেও সমস্ত দায় দায়িত্ব বেক্সিমকোকে নিতে হবে। আর তখন টিকা তাদেরকে আট ডলার করে কিনে দিতে হবে।
কোনো কোম্পানি চাইলে দিয়ে দেব
পাপন বলেন, তারা যে শর্তে চুক্তি করেছেন, এমন শর্তে বাংলাদেশে কোনো কোম্পানি রাজি হতো না।
তিনি বলেন, ‘আমি তো অনেককার বলেছি, সরকার আমাকে যা দিচ্ছে, আমি এটা কাউকে দিয়ে দিতে চাই। কেউ যদি রাজি হয়, অনেক কোম্পানি তো আছে বাংলাদেশে। আজ পর্যন্ত কেউ কি আসছে?’
পাপন বলেন, ‘না নিক, সরকারকে একটা অফার তো দিতে পারে। কেউ একটা অফার দিয়েছে এখন সরকারের কাছে? কোত্থেকে দেবে? একটা ডোজও তো কেউ নিতে পারবে না, কিনতে পারবে না।’
তাহলে বেক্সিমকো কি সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে এই কাজ নিয়েছে?- এমন প্রশ্নে পাপন বলেন, ‘ইনিশিয়ালি আমরা যখন এটা করেছিলাম তখন আমাদের ধারণা ছিল এটাতে আমাদের কিছু প্রফিট তো থাকবেই। এটাতে তো কোনো সন্দেহ নাই।
‘স্ট্যান্ডার্ড প্রকোটল অনুযায়ী আমাদের দেশে যে ওষুধ আসে, যে ইমপোর্ট করে অ্যারাউন্ড ২০ পারসেন্ট পায়। এটাই তার লাভ।
‘আমরা তাহলে ৮০ সেন্টের মতো এমনি পেয়ে যাব। এবং কোনো দায় দায়িত্ব নেই, কোনো কাজ নেই। সেখানে আমরা এক ডলার পেয়েছিলাম সেফগার্ড হিসেবে।
‘কিন্তু সরকার এটা মেনে নিয়ে যে শর্ত দিয়েছে, এইগুলা যদি জানতাম, তাহলে আমরা এর মধ্যে যেতাম না।’
পাপন বলেন, ‘এই শর্ত মেনে এক ডলারে কেউ রিক্স নেবে বলে আমার মনে হয় না। এমন বোকা কেউ আছে ব্যবসায়ী কেউ আছে বলে আমার মনে হয় না।’
তার পরেও লাভ হতে পারে, কিন্তু ঝুঁকিটা অনেক বেশি বলে মনে করেন পাপন।
পাপন অক্সফোর্ডের টিকাই নেবেন
পাপন এক প্রশ্নের জবাবে জানান, ফাইজারের নয়, তিনি অক্সফোর্ডের টিকাই নেবেন।
তার ইচ্ছা ছিল, বেসরকারি পর্যায়ে তারা যে টিকা দেবেন, তার প্রথম টিকা তিনিই নেবেন। তবে তার কিছু ওষুধে র্যাশ হয়। এ কারণে চার-পাঁচ দিন পরে নেবেন।
অন্য এক প্রশ্নে পাপন জানান, প্রথম টিকা থেকে দ্বিতীয় টিকার পার্থক্য ২৮ দিন থেকে তিন মাস হতে পারে। যত বেশি বিলম্ব, তত বেশি কার্যকারিতা বাড়বে।
ভারত ঠিক করেছে প্রথম টিকা থেকে দ্বিতীয় টিকার পার্থক্য হবে ছয় সপ্তাহ, বাংলাদেশ ঠিক করেছে আট সপ্তাহ।
অন্য এক প্রশ্নে বেক্সিমকো এমডি জানান, তারা নিজেরাও দেশে টিকা উৎপাদন শুরু করতে চান। তবে সে জন্য আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতে চান।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ধারণা সামনে আরও দুটো ভ্যাকসিন আসবে। এগুলোও ভালো ভ্যাকসিন। একটা আসছে জনসন। এটা সিঙ্গেল ডোজ। এটার দাম হয়ত বেশি হবে, তার পরেও এটা ভালো। নোভাজেক্সও চলে আসবে বাই মে। এটা দিতে দিতেই জুন চলে যাবে। এটা দেখে আমরা ঠিক করব কোনটা উৎপাদন করব।’
বেসরকারি পর্যায়ে টিকা বাইরে বিক্রির জন্য নয়
বেক্সিমকো বেসরকারি পর্যায়ে যে ১০ লাখ টিকা আনতে যাচ্ছে, সেটা ওষুধ শিল্পের কর্মীদের বাইরে বিক্রি করা হবে না বলেও জানান পাপন।
তিনি বলেন, করোনা আসার পর থেকে ওষুধ শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা সব সময় কাজ করছেন। এ কারণে তাদের মধ্যে আক্রান্তের হার বেশি। তাই তারা কেবল এই শিল্পের কর্মীদের জন্য টিকা আনছেন।
এর বাইরে বিজিএমইএসহ কিছু সংগঠন টিকা চাইছে, কিন্তু সেটা তারা দিতে পারছেন না এই মুহূর্তে।
আরও পড়ুন:সরকার দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনীত করেছে। বৃহস্পতিবার তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব খাদিজা তাহের ববির সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘প্রেস কাউন্সিলের ৫ নম্বর ক্রমিকের প্রতিনিধি নিউএজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবীর পদত্যাগ করায় তার পরিবর্তে সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার সম্পাদক সমিতির প্রতিনিধি হিসেবে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনয়ন প্রদান করা হলো।’
বর্তমান কাউন্সিলের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য এ মনোনয়ন কার্যকর থাকবে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
প্রেস কাউন্সিলের বর্তমান চেয়ারম্যান বিচারপতি একেএম আব্দুল হাকিম, সচিব (উপসচিব) মো. আব্দুস সবুর।
এছাড়া ১২ জন সদস্য হচ্ছেন—১. বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, ২. ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি মিস দৌলত আকতার মালা, ৩. ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, ৪. ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনাম, ৫. দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, ৬. দৈনিক বণিক বার্তার প্রকাশক ও সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ৭. দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, ৮. দৈনিক পূর্বকোণের সম্পাদক ডা. রমিজ উদ্দিন চৌধুরী, ৯. নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়ার) উপদেষ্টা আখতার হোসেন খান, ১০. বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, ১১. বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলাম এবং ১২. বার কাউন্সিলের ভাইস-চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন।
অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মিয়া শাহবাজ শরিফের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। পাকিস্তানের ইসলামাবাদে পিএম হাউসে উভয়ের এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
বৃহস্পতিবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ধর্ম উপদেষ্টা ও তার প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং সখ্যের বন্ধনে আবদ্ধ। এ সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও জোরদার হবে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্ক ও কায়রোতে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকের কথা উল্লেখ করে দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে তার অবদানের প্রশংসা করেন। এছাড়া তিনি পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সম্পর্ককে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার আকাঙ্ক্ষাকে সাধুবাদ জানান।
এদিকে ধর্ম উপদেষ্টা বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি পত্র পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।
পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এ পত্রে প্রধান উপদেষ্টা পাকিস্তানে নজিরবিহীন বন্যায় সে দেশের সরকার ও জনগণের প্রতি গভীর সহমর্মিতা ও আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং ভয়াবহ এ দুর্যোগে নিহতদের পরিবার ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
এ পত্রে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, কঠিন এ সময়ে বাংলাদেশের জনগণ পাকিস্তানের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের পাশে রয়েছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আপনার সুদক্ষ নেতৃত্বে পাকিস্তানের জনগণ তাদের অসাধারণ ধৈর্য ও সহনশীলতার মাধ্যমে এ চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করবে। প্রয়োজনে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে বাংলাদেশ সর্বাত্মক সহযোগিতা ও সহায়তা প্রদানে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
সাক্ষাৎকালে ঢাকা ও করাচীর মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল দ্রুত পুনঃস্থাপনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়া কৃষি, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ধর্মতত্ত্ব ও চিকিৎসা বিষয়ে উভয়দেশের শিক্ষার্থী বিনিময়ে বৃত্তি প্রদানের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার, প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ, ধর্মবিষয়ক ও আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি মন্ত্রী সরদার ইউসুফ খান, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী আতা তারার, ইসলামাবাদে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. ইকবাল হোসেন খান, উপদেষ্টার একান্ত সচিব ছাদেক আহমদ ও শরীফ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রভাষক মুফতি জাহিদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশের একটি স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন।
পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশের একটি স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠন করা হবে, যাতে কোনো রাজনৈতিক বা অন্য কোনো প্রভাব ছাড়াই তদন্ত সম্পন্ন করা যায়।’ এর পাশাপাশি পুলিশের ভেতরে অভ্যন্তরীণ অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য একটি কমিশন গঠনের বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ‘এই দুই সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য আইন মন্ত্রণালয় কাজ করবে। এ কাজে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, আদিলুর রহমান খান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখশ চৌধুরী যুক্ত থাকবেন।’
সভায় স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রেস সচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বারবার জোর দিয়েছেন যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও ক্ষমতায়িত করতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন যেন নিজস্ব তহবিল সংগ্রহ ও স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করতে পারে সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
স্বাস্থ্য খাত নিয়েও সভায় আলোচনা হয়। শফিকুল আলম জানান, ‘কিছু মেডিকেল কলেজে যোগ্য শিক্ষকের সংকট রয়েছে। তাই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পরামর্শক বা অন্যভাবে সম্পৃক্ত করে শিক্ষা কার্যক্রমের মান উন্নত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের বিষয়েও সভায় আলোকপাত করা হয়। প্রেস সচিব বলেন, ‘নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা ভালো আছেন, দূতাবাস তাদের দেখভাল করছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বিশেষ ফ্লাইটে জাতীয় ফুটবল দলকে দেশে আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
এ বৈঠক প্রসঙ্গে শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘আজকের বৈঠকের প্রতিটি সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের অর্থনীতি, শাসনব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে।’
ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
ক্যাডার কর্মকর্তাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের মেয়াদ ছয় মাস থেকে কমিয়ে চার মাস করা হয়েছে। এর মধ্যে তিন মাস প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে এবং এক মাস মাঠপর্যায়ে ওরিয়েন্টেশন ও গ্রাম সংযুক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় প্রশিক্ষণ কাউন্সিলের নবম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান উপস্থিত ছিলেন।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, কর্মকর্তাদের মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে ভর্তির সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৪৭ বছর করা হবে। পিএইচডি কোর্সে অধ্যয়নকালে প্রতি বছর তত্ত্বাবধায়কের অগ্রগতিমূলক প্রত্যয়ন মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে, অন্যথায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বেতন বন্ধ রাখা হবে।
সভায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারি যত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে সেগুলোর ওপর মূল্যায়ন করতে হবে। কী ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, প্রশিক্ষণের ধরন-মান ইত্যাদির মানদণ্ড নির্ধারণ করে ক্যাটাগরিভিত্তিক প্রতিটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে র্যাংকিং করতে হবে এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি স্বাধীন ইউনিট গঠন করতে হবে। তারা সমস্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ওপর পদ্ধতিগতভাবে, স্বাধীনভাবে মূল্যায়ন করবে। গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সামগ্রিক দর্শন জানতে হবে। সেগুলো সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে কি না দেখতে হবে। সরকারি কর্মকর্তারা যারা বিদেশ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন তাদের তথ্য সেখানে থাকবে।’
সভায় সঞ্জীবনী প্রশিক্ষণের নাম পরিবর্তন করে ‘দক্ষতা নবায়ন প্রশিক্ষণ’ করার সিদ্ধান্ত হয়। এ প্রশিক্ষণ হালনাগাদকৃত কারিক্যুলামে মাঠপর্যায়ে সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আয়োজন করা হবে। এছাড়া উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা আংশিক বৃত্তিপ্রাপ্ত হলেও প্রেষণ অনুমোদন করা যাবে।
কর্মচারীদের সততা ও নৈতিকতা বিকাশ এবং দুর্নীতি বিরোধী মনোভাব তৈরিতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সে সদ্গুণ, নৈতিকতা, আচরণবিজ্ঞান ও আচরণবিধি অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক মূল্যায়ন এবং প্রশিক্ষণ বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে গবেষণা, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি করে একটি নির্বাহী কমিটি (ইসিএনটিসি) গঠন করা হয়।
জাতীয় লেখক ফোরাম আয়োজিত সাপ্তাহিক সাহিত্য আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানীর ধানমন্ডিতে হওয়া এ সাহিত্য আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠেনর সভাপতি ড. দেওয়ান আযাদ রহমান, মহাসচিব কবি-কথাসাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন এবং উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য মো. আবদুল মান্নানসহ বাংলাদেশের খ্যাতিমান লেখকরা। অনুষ্ঠানটি একটি সাধারণ প্রাণবন্ত আড্ডার মধ্যেই শুরু হয়। অনুষ্ঠানটি ৩টি পর্বে সাজানো হয়েছে। প্রতি পর্বে চারজন কবিকে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তারা তাদের গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য এবং কবিতা পাঠ করেছেন। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছেন কবি-কথা সাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন।
শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধের জন্য সরকার প্রদত্ত সুদমুক্ত ঋণ যথাসময়ে ফেরত না দিলে সংশ্লিষ্ট শিল্প কারখানার মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বুধবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি, বিজিএমইএ-এর সভাপতি এবং সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতা কারখানার মালিকদের নিয়ে এ সভার আয়োজন করা হয়।
ড. এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকরা শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় শ্রম অসন্তোষ নিরসনের লক্ষ্যে সরকার বার্ডস গ্রুপ, টিএনজেড গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, ডার্ড গ্রুপ, নায়াগ্রা টেক্সটাইলস লিমিটেড, রোয়ার ফ্যাশন লিমিটেড, মাহমুদ জিন্স লিমিটেড, স্টাইল ক্রাফট লিমিটেড এবং গোল্ডস্টার গার্মেন্টস লিমিটেডকে অর্থ বিভাগ এবং কেন্দ্রীয় তহবিল, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে সুদমুক্ত ঋণ প্রদান করে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ চুক্তির আওতায় উক্ত অর্থ পরিশোধ করছেন না।
তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে যাবে। তাদের পাসপোর্ট জব্দের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ইতোমধ্যে কয়েকজন পলাতক মালিকের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি পলাতক মালিক ও প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাসপোর্ট স্থগিত রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা দেন।
উপদেষ্টা বলেন, "এই ঋণের টাকা শ্রমিকের টাকা এবং জনগণের ট্যাক্সের টাকা। এ টাকা আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।"
তিনি বলেন, এই ক্ষেত্রে কোনোরকম ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি সংশ্লিষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক ও প্রতিনিধিদের সংশ্লিষ্ট লিয়েন ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিষ্ঠানের জমি, কারখানা, যন্ত্রপাতি বিক্রি করে হলেও ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ঋণের সকল টাকা পরিশোধ করতে বলেন।
এ বিষয়ে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ-কে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি, ইসরাইলের নৃশংসতার জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং ওই অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন।
বাংলাদেশে সফররত ফিলিস্তিনের প্রধান বিচারপতি ড. মাহমুদ সিদকি আল-হাব্বাশের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় গতকাল মঙ্গলবার এক বৈঠকে উপদেষ্টা এ মন্তব্য করেন। আজ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে জানানো হয়।
বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি বাংলাদেশের অবিচল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন এবং ১৯৬৭ সালের আগের সীমানা অনুযায়ী দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের প্রতি সমর্থন জানান।
ফিলিস্তিনের প্রধান বিচারপতি ড. আল-হাব্বাশ বাংলাদেশের নেতৃত্ব ও জনগণের স্থায়ী সমর্থনের জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি মুসলিম উম্মাহর মধ্যে ঐক্য আরও সুদৃঢ় করার গুরুত্বের ওপরও জোর দেন।
ফিলিস্তিনিদের নিরন্তর সমর্থনের জন্য দেশটির প্রধান বিচারপতি বাংলাদেশের নেতৃত্ব ও জনগণের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি এ বিষয়ে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে বৃহত্তর ঐক্যের ওপরও জোর দেন।
বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির আমন্ত্রণে ড. আল-হাব্বাশ তিন দিনের সরকারি সফরে বাংলাদেশে এসেছেন।
মন্তব্য