সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান পাপন। ছবি: নিউজবাংলা
সিরাম-বাংলাদেশের চুক্তির পর সমালোচকরা প্রশ্ন তোলেন এখানে বেক্সিমকো কেন এল। সিরাম ভারতকে আরও কমে টিকা দিচ্ছে বলে সংবাদ প্রকাশ হয়। প্রশ্ন উঠে ভারত কমে পেলেও বাংলাদেশকে কেন বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। আবার অক্সফোর্ডের টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়েও কথা হচ্ছে। সবগুলো প্রশ্নের জবাব দেন নাজমুল হাসান পাপন।
ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে করোনার টিকা কেনা নিয়ে সমালোচকরা যেসব প্রশ্ন তুলছেন, তার সবগুলোর জবাব দিল সিরামের বাংলাদেশের এজেন্ট বেক্সিমকো ফার্মা।
সরকারের কেনা তিন কোটি টিকার মধ্যে প্রথম ধাপে ৫০ লাখ টিকা দেশে আসার আগের বিকালে ধানমন্ডিতে সংবাদ মাধ্যমের সামনে আসেন বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান পাপন।
সিরাম থেকে টিকা কেনায় কেন বেক্সিমকো ফার্মার অন্তর্ভুক্তি, বাংলাদেশ ভারত থেকে বেশি দামে টিকা কিনছে কি না, প্রতি টিকায় কেন বেক্সিমকোকে এক ডলার করে দেয়া হচ্ছে, এই টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কেমন- তার সব প্রশ্নের জবাব দেন পাপন।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নানা কোম্পানির টিকা প্রয়োগ শুরু হলেও বাংলাদেশ অপেক্ষা করেছে অক্সফোর্ড উদ্ভাবিত টিকার জন্য। এই অঞ্চলে এটা তৈরি করছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান সিরাম ইনস্টিটিউট। এই প্রতিষ্ঠান থেকে তিন কোটি টিকা কিনছে সরকার। আর এই চুক্তিতে বেক্সিমকোও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
গত ২১ জানুয়ারি সিরামের ২০ লাখ টিকা বাংলাদেশ ভারত থেকে উপহার হিসেবে পেয়েছে। চার দিন পর বাংলাদেশের কেনা টিকার ৫০ লাখ আসছে।
তার আগের দিন রোববার বিকালে বেক্সিমকো ফার্মার হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন প্রতিষ্ঠানটির এমডি নাজমুল হাসান পাপন।
তিনি জানান, সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে টিকা পৌঁছবে ঢাকায়। বিমানবন্দর থেকে সেগুলো নেয়া হবে টঙ্গীতে বেক্সিমকো ফার্মার গুদামে। সেই টিকার নমুনা পরীক্ষা করে ঔষধ প্রশাসন অনুমতি দিলে তা ৬৪ জেলায় পৌঁছে দেবে বেক্সিমকো।
সিরাম-বাংলাদেশের চুক্তির পর সমালোচকরা প্রশ্ন তোলেন এখানে বেক্সিমকো কেন এল।
চুক্তির পর জানানো হয়, বাংলাদেশ টিকা কিনবে চার ডলারে। বেক্সিমকো পাবে এক ডলার করে।
তবে সিরাম ভারতকে আরও কমে টিকা দিচ্ছে বলে সংবাদ প্রকাশ হয়। প্রশ্ন উঠে ভারত কমে পেলেও বাংলাদেশকে কেন বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।
আবার অক্সফোর্ডের টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ভারতে বেশ কয়েকজনের শারীরিক সমস্যার বিষয়টিও সামনে এসেছে।
এর সবগুলো প্রশ্নের জবাব দেন পাপন।
চুক্তিতে বেক্সিমকো ফার্মা কেন?
পাপন জানান, আন্তর্জাতিকভাবে ওষুধ কিনতে হলে যেসব শর্ত পূরণ করতে হয়, তার কারণেই বেক্সিমকো ফার্মা সিরাম-বাংলাদেশ চুক্তির অংশ হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘কোনো দেশে যদি ওষুধ এক্সপোর্ট করতে চায়… তাহলে সে দেশে হয় সেই কোম্পানির অফিস থাকতে হবে অথবা লোকাল এজেন্ট বা ডিস্ট্রিবিউটর থাকতে হবে।
‘আমরা বিশ্বের ৬০টি দেশে এক্সপোর্ট করি। প্রতিটি দেশে আইদার উই হ্যাভ ডিস্ট্রিবিউটর অর লোকাল এজেন্ট। কারণ, ওখানে যদি কিছু হয়, কোনো প্রবলেম হয়, তাহলে ওদের সরকার ওই লোকাল কোম্পানিটাকে ধরতে পারে।
‘আমাদের সরকার সরাসরি সিরামের সঙ্গে একটা এগ্রিমেন্ট করেছি। আমরা ওদের লোকাল এজেন্ট, আমরা এখানে একটা পার্টি ছিলাম এজ এ ডিস্ট্রিবিউটর অথবা লোকাল এজেন্ট। কিন্তু তার সঙ্গে সরকার আমাদেরকে এডিশনাল কিছু দায়িত্ব দিয়েছে যেটা আমরা এর আগে কখনও শুনিনি।’
বাংলাদেশ কি ভারতের কাছ থেকে বেশি দামে টিকা নিচ্ছে?
পাপন জানিয়ে দেন, যে চুক্তি হয়েছে, তাতে এর কোনো সুযোগ নেই। ভারত যে দামে কিনবে, বাংলাদেশ তার চেয়ে কমে পাবে, কিন্তু বেশি দাম নেয়া অসম্ভব।
বেক্সিমকো ফার্মার এমডি জানান, তারা সিরামের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন নিজেরা ১০ লাখ টিকা আনবেন বলে। চুক্তি হয়েছে আট ডলার করে।
এর মধ্যেই তারা সিরামের সঙ্গে কথা বলেন বাংলাদেশকে তারা দিতে চায় কি না। তখন সিরাম বলে তিন কোটি দিতে পারবে। এরপর বেক্সিমকো সরকারকে জানায়।
পাপন জানান, দাম ঠিক করার সময় তারাই সরকারকে পরামর্শ দেন, ভারত যে দামে কিনবে, বাংলাদেশ যেন সেই দামে পায়।
পাপন বলেন, ‘যেহেতু সে দেশে উৎপাদন হচ্ছে আমরা ধারণা করেছিলাম ভারত সরকার কিছুটা কমে পাবে টিকা। এই ধারণাবশত আমরা একটা কন্ডিশন লাগাই যে, ভারত সরকারকে যে দামে দেবে, আমাদেরকেও সে দামে দিতে হবে।’
তাহলে চার ডলারের প্রসঙ্গ কেন এল- তারও ব্যাখ্যা দেন পাপন। বলেন, ‘ওরা এগ্রি করল। তখন কথা হলো আমরা যে টাকা পাঠাব, কী দাম ধরে পাঠাব? তখন দাম ধরা হলো চার ডলার।’
বেক্সিমকো এমডি জানান, চুক্তিটা এমন, ভারত যদি চার ডলারের বেশিতে টিকা কেনে, তাহলে বাংলাদেশকে চার ডলারেই দিতে হবে, আর ভারত যদি চার ডলারের কমে নেয়, তাহলে বাংলাদেশকে সে দামেই দিতে হবে।
পাপন বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে না, আমি পৃথিবীর কোথাও এমন কোনো এগ্রিমেন্ট দেখিনি। চার ডলারে বুক করব, টাকা পাঠিয়ে দেব। কিন্তু ভারত সরকার বেশিতে নিলে বেশি দেব না, আমার কমে নিলে আমাকে কমে দিতে হবে।’
ভারত সরকার কমে টিকা পেলে বাংলাদেশের ভালো
ভারত কম দামে টিকা পাচ্ছে বলে যে বিভিন্ন আলোচনায় যে কথা উঠেছে, সেটা বাংলাদেশের জন্য খুশির খবর বলে মনে করেন পাপন।
তিনি বলেন, ‘একদিন শুনি আড়াইশ, একদিন শুনি দুইশ। লাস্ট শুনলাম দুইশ রুপিতে দিচ্ছে ভারত সরকারকে। এটা নিয়ে এত হুলস্থুল লেগে গেল?
‘আমি তো বলি এটা খুশির খবর। ওরা যদি ৫০ রুপিতে নেয়, আমি আরও খুশি। আমাদের গভর্নমেন্ট আরও কমে পাবে। এই খুশির খবর একটা পজেটিভ নিউজ, কীভাবে এটা আমাদের এখানে নেগেটিভ হয় আমি সেটা বুঝতে পারছি না। এতে তো সবার খুশি হওয়ার কথা। বেক্সিমকোকে কনগ্রেচুলেট করার কথা।’
পাপন জানান, থাইল্যান্ড ৭.৭ ডলারে টিকা কেনার চুক্তি করেছে, তাও সেটা এখন পাবে না। ভারত ছাড়া একমাত্র বাংলাদেশই সিরাম থেকে টিকা পেতে যাচ্ছে।
বেক্সিমকো ফার্মা এমডি জানান, ফিলিপাইন থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়াসহ একশটির বেশি দেশ সিরাম থেকে টিকা নিতে চাইছে। সবাই পাবে জুনের পরে।
তিনি বলেন, ‘ব্রাজিল সরকার প্লেন পাঠিয়ে দিতে চাইছিল ভারতে সরকারের কাছ থেকে নেয়ার জন্য। কিনতে তো পারছে না।’
বেক্সিমকো কি সিরাম থেকে কমিশন পাচ্ছে?
পাপন জানান, একটি টিভি টকশোতে একজনের এমন বক্তব্য শুনে তিনি অনুষ্ঠানের পর তাকে কল দেন।
তাকে তিনি বলেন, ‘ইন্ডিয়ার গভর্নমেন্ট যে প্রাইসে কিনছে, আপনি সেখানে আমাকে একটা কমিশন ফিক্সড করে দেন। …ইন্ডিয়ান গভর্নমেন্ট কিনবে ৬০ কোটি ডোজ। …তো ওখানে কি একটা কমিশন ধরা আছে? বেক্সিমকো ঢাকা? তাহলে আমাকে ওখানে দেন, তিন কোটি ফ্রি দিয়ে দিচ্ছি বাংলাদেশ গভর্নমেন্টকে।’
অক্সফোর্ডের টিকা ছাড়া উপায় ছিল না
পাপন জানান, তারা বেসরকারি পর্যায়ে টিকা আনতে কেবল সিরাম নয়, কথা বলেছেন মডার্না, ফাইজার, অ্যাস্ট্রাজেনকার সঙ্গে। তারা কথা বলেছেন জনসন অ্যান্ড জনসন, ডোবারভেকের সঙ্গেও।
তিনি বলেন, ‘আমরা যে কোনোটাই হয়ত নিতে পারতাম। আমরা প্রথমে চিন্তা করে দেখেছি মাস ভ্যাকসিনেশনের জন্য। আপনি যদি ১০ লক্ষ লোককে দিতে চান, এক জিনিস। সেটা যে কোনো ভ্যাকসিনই দেয়া সম্ভব বাংলাদেশে।
‘কিন্তু আপনি যদি ১৪ কোটি মানুষকে বা ১০ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে চান, তাহলে মডার্না ও ফাইজার দ্বারা দেয়া সম্ভব না। অনলি অপশন আমাদের কাছে ছিল অক্সফোর্ড।’
অক্সফোর্ডের টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কী
পাপন জানান, ফাইজার ও মডার্নার টিকার কার্যকারিতা ৯০ শতাংশের বেশি। আর অক্সফোর্ডের টিকার ক্ষেত্রে এটা ৬২ থেকে ৭০ শতাংশ।
কিন্তু সেই দুই টিকা বেশি ঝুঁকি তৈরি করে।
তিনি বলেন, ফাইজার ও মডার্না দুইটাই হচ্ছে এমারেনা ভ্যাকসিন। এটা পৃথিবীতে এর আগে কখনও আসেনি। অন্যদিকে অক্সফোর্ডের টিকা যে প্রযুক্তির, সেটা বাংলাদেশে আগে থেকেই ব্যবহার হয়।
পাপন বলেন, ‘এটার কী সাইডইফেক্ট হতে পারে, আমরা কিন্তু জানি। কিন্তু এমারেনা ভ্যাকসিন, যদিও এটা হাইলি এফেকটিভ, আমি কিন্তু বলছি না এটা খারাপ, এটা খুবই ভালো। মাস্ট বি গুড। বলছি, এটার সাইডইফেক্ট কিছু নতুন নতুন ধরা পড়ছে, যেটা আমার আছে অজানা।’
তিনি বলেন, ‘ওরা (অক্সফোর্ড) যা বলছে, তাতে করে এখন পর্যন্ত কাউকে হসপিটালে যেতে হয়েছে এমন খবর আসেনি।’
এই টিকা নিয়ে যদি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়, তাহলে দায় কার?
এমন প্রশ্নে পাপন বলেন, ‘মডার্না, ফাইজার সবাই, তারা যেটা করেছে, সেটা হলো কোম্পানিকে কেউ দায়ী করতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার বরং বলেছে, এটা নিয়ে যদি কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়, তাহলে সেটাও সরকার দেখবে।’
বেক্সিমকো এক ডলার কেন?
চুক্তি অনুযায়ী সিরামের টিকা দেশে নিয়ে আসাসহ নানা কাজ করে বেক্সিমকো টিকা প্রতি এক ডলার করে পাবে।
পাপন জানান, তাদেরকে এই অর্থের বিনিময়ে যে শর্ত দেয়া হয়েছে, আগে জানলে এই কাজ নিতেন না।
তিনি জানান, টিকা আনার পরে তা পরীক্ষা করা, গুদামজাত করা, ড্রাগটেস্টিং ল্যাবরেটরি থেকে ছাড়পত্র নেয়া, ৬৪ জেলায় পৌঁছে দেয়ার দায়িত্ব পালন করতে হবে বেক্সিমকোকেই।
তিনি বলেন, ‘থ্রোআউট দ্য মোমেন্ট আমাদেরকে কোল্ড চেইন মেইনটেইন করতে হবে। এবং ওখানে গিয়ে প্রমাণ করে দিতে হবে প্রত্যেকটা ধাপে কোথাও কোল্ডচেইন ব্রেক হয়নি। এই কাজটা এত সহজ না।
‘ধরেন, একটা শিপিং কার্টুন, বাইরে থেকে ঠিক আছে, ভেতরে যখন খোলা হলো, দেখা গেল যে এটার মধ্যে দুটো বা তিনটা ভাঙা। এমন তো হতেও পারে। কতগুলো ড্যামেজ থাকতে পারে, কোনো বাক্সের মধ্যে দেখা গেল কোল্ডচেইন ব্রেক করা হয়েছে। তখন কী হবে?
‘সাধারণত সরকার যখন কিনে, তখন একটা ওভারেজ ধরা হয়। যে ঠিক আছে, এত পার্সেন্ট পর্যন্ত হতে পারে। আমাদের ক্ষেত্রে কিন্তু কোনো ওভারেজ নেই। সরকার একেবারে তিন কোটি ডোজ ভালো নিয়ম অনুযায়ী আমাদের কাছে চাইবে।‘
পাপন জানান, কোথাও টিকা খোয়া গেলে বা দুর্ঘটনা হলেও সমস্ত দায় দায়িত্ব বেক্সিমকোকে নিতে হবে। আর তখন টিকা তাদেরকে আট ডলার করে কিনে দিতে হবে।
কোনো কোম্পানি চাইলে দিয়ে দেব
পাপন বলেন, তারা যে শর্তে চুক্তি করেছেন, এমন শর্তে বাংলাদেশে কোনো কোম্পানি রাজি হতো না।
তিনি বলেন, ‘আমি তো অনেককার বলেছি, সরকার আমাকে যা দিচ্ছে, আমি এটা কাউকে দিয়ে দিতে চাই। কেউ যদি রাজি হয়, অনেক কোম্পানি তো আছে বাংলাদেশে। আজ পর্যন্ত কেউ কি আসছে?’
পাপন বলেন, ‘না নিক, সরকারকে একটা অফার তো দিতে পারে। কেউ একটা অফার দিয়েছে এখন সরকারের কাছে? কোত্থেকে দেবে? একটা ডোজও তো কেউ নিতে পারবে না, কিনতে পারবে না।’
তাহলে বেক্সিমকো কি সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে এই কাজ নিয়েছে?- এমন প্রশ্নে পাপন বলেন, ‘ইনিশিয়ালি আমরা যখন এটা করেছিলাম তখন আমাদের ধারণা ছিল এটাতে আমাদের কিছু প্রফিট তো থাকবেই। এটাতে তো কোনো সন্দেহ নাই।
‘স্ট্যান্ডার্ড প্রকোটল অনুযায়ী আমাদের দেশে যে ওষুধ আসে, যে ইমপোর্ট করে অ্যারাউন্ড ২০ পারসেন্ট পায়। এটাই তার লাভ।
‘আমরা তাহলে ৮০ সেন্টের মতো এমনি পেয়ে যাব। এবং কোনো দায় দায়িত্ব নেই, কোনো কাজ নেই। সেখানে আমরা এক ডলার পেয়েছিলাম সেফগার্ড হিসেবে।
‘কিন্তু সরকার এটা মেনে নিয়ে যে শর্ত দিয়েছে, এইগুলা যদি জানতাম, তাহলে আমরা এর মধ্যে যেতাম না।’
পাপন বলেন, ‘এই শর্ত মেনে এক ডলারে কেউ রিক্স নেবে বলে আমার মনে হয় না। এমন বোকা কেউ আছে ব্যবসায়ী কেউ আছে বলে আমার মনে হয় না।’
তার পরেও লাভ হতে পারে, কিন্তু ঝুঁকিটা অনেক বেশি বলে মনে করেন পাপন।
পাপন অক্সফোর্ডের টিকাই নেবেন
পাপন এক প্রশ্নের জবাবে জানান, ফাইজারের নয়, তিনি অক্সফোর্ডের টিকাই নেবেন।
তার ইচ্ছা ছিল, বেসরকারি পর্যায়ে তারা যে টিকা দেবেন, তার প্রথম টিকা তিনিই নেবেন। তবে তার কিছু ওষুধে র্যাশ হয়। এ কারণে চার-পাঁচ দিন পরে নেবেন।
অন্য এক প্রশ্নে পাপন জানান, প্রথম টিকা থেকে দ্বিতীয় টিকার পার্থক্য ২৮ দিন থেকে তিন মাস হতে পারে। যত বেশি বিলম্ব, তত বেশি কার্যকারিতা বাড়বে।
ভারত ঠিক করেছে প্রথম টিকা থেকে দ্বিতীয় টিকার পার্থক্য হবে ছয় সপ্তাহ, বাংলাদেশ ঠিক করেছে আট সপ্তাহ।
অন্য এক প্রশ্নে বেক্সিমকো এমডি জানান, তারা নিজেরাও দেশে টিকা উৎপাদন শুরু করতে চান। তবে সে জন্য আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতে চান।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ধারণা সামনে আরও দুটো ভ্যাকসিন আসবে। এগুলোও ভালো ভ্যাকসিন। একটা আসছে জনসন। এটা সিঙ্গেল ডোজ। এটার দাম হয়ত বেশি হবে, তার পরেও এটা ভালো। নোভাজেক্সও চলে আসবে বাই মে। এটা দিতে দিতেই জুন চলে যাবে। এটা দেখে আমরা ঠিক করব কোনটা উৎপাদন করব।’
বেসরকারি পর্যায়ে টিকা বাইরে বিক্রির জন্য নয়
বেক্সিমকো বেসরকারি পর্যায়ে যে ১০ লাখ টিকা আনতে যাচ্ছে, সেটা ওষুধ শিল্পের কর্মীদের বাইরে বিক্রি করা হবে না বলেও জানান পাপন।
তিনি বলেন, করোনা আসার পর থেকে ওষুধ শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা সব সময় কাজ করছেন। এ কারণে তাদের মধ্যে আক্রান্তের হার বেশি। তাই তারা কেবল এই শিল্পের কর্মীদের জন্য টিকা আনছেন।
এর বাইরে বিজিএমইএসহ কিছু সংগঠন টিকা চাইছে, কিন্তু সেটা তারা দিতে পারছেন না এই মুহূর্তে।
ছবিটি আশরাফুল আলম খোকনের ফেসবুক থেকে নেয়া
এ বিষয়ে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে খোকন জানান, গত বছরের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের হফস্ট্রা ইউনিভার্সিটিতে স্কলারশিপ পেয়েছেন তিনি। সেই সুযোগ কাজে লাগাতেই ছাড়ছেন প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সচিবের চাকরি।
সাংবাদিকতার ওপর উচ্চতর পড়াশোনা করতে প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সচিবের চাকরি ছাড়ার জন্য আবেদন করেছেন আশরাফুল আলম খোকন।
রোববার দুপুরে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে খোকন জানান, গত বছরের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের হফস্ট্রা ইউনিভার্সিটিতে স্কলারশিপ পেয়েছেন তিনি। সেই সুযোগ কাজে লাগাতেই ছাড়ছেন প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সচিবের চাকরি।
আশরাফুল আলমের স্ট্যাটাসটি এখানে তুলে ধরা হলো-
যাত্রাটা শুরু হয়েছিল ১৮ আগস্ট ২০১৩। বর্তমান সরকারের প্রথম মেয়াদের মাত্র পাঁচ মাস বাকি তখন। যুক্তরাষ্ট্রের আয়েশি জীবন ছেড়ে অনিশ্চয়তার পথে এসে হেঁটে ছিলাম। কারণ, তখন সবেমাত্র আওয়ামী লীগ পাঁচটা সিটি করপোরেশনে লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে হেরেছে। হেফাজত, বিএনপি, জামায়াতের বাঁশেরকেল্লা বাহিনীর অপপ্রচারে ত্রাহি অবস্থা। ওই সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে সুযোগ দিয়েছেন তার উপ প্রেস সচিব হিসেবে কাজ করার। সরকারের কাজের প্রচার-প্রচারণা, গুজব প্রতিরোধ ও মিডিয়া সেক্টর নিয়ে কাজ করেছি। তবে তখনও সরকারের ব্যাপক উন্নয়নের সুনাম ছিল। আর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তি ইমেজ ছিল এখনকার মতোই প্রতিদ্বন্দ্বীহীন।
ছোট সময় থেকে এই দলটির সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার কারণে এই দায়িত্ব ছিল আমার জন্য বিশাল প্রাপ্তি ও সম্মানের। একে তো দেশের প্রধানমন্ত্রী আবার তিনি যদি হন বঙ্গবন্ধুকন্যা। পরপর তিন তিনবার নিয়োগ পাবার মতো ভাগ্যবান একজন আমি। ১৭ কোটি মানুষের দেশে এই সৌভাগ্য কয়জনের হয়। আমি সেই ভাগ্যবানদের একজন। অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি। আমৃত্যু এই ঋণ শোধ হবে না। জীবনে যখন যেখানে যেভাবে থাকব শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও দল ও নেত্রীর জন্য কাজ করে যাব।
অতঃপর, সুখবর হচ্ছে, আমি সাংবাদিকতার ওপর আরও পড়াশোনা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের Hofstra University-তে একটি স্কলারশিপ পেয়েছি। গত সেপ্টেম্বরেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিশ্চিত করা হয়। সুযোগটা আমি হাতছাড়া করতে চাইনি। কারণ, আমি মিডিয়াতে কাজ করা মানুষ। এই সেক্টরেই কাজ করে যেতে চাই। আর উচ্চশিক্ষার প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দুর্বলতা সবাই জানেন। তাদের পরিবারের সবাইকেই তিনি উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমাকেও তিনি সেই সুযোগটি দিয়েছেন। কৃতজ্ঞতা নেত্রীর প্রতি।
আজ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১, আমি আমার পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার জন্য আবেদনপত্র দিয়েছি। কারণ চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে শিক্ষাছুটির কোনো বিধান নাই। খারাপ সময়ে যোগদান করে ভালো সময়ে এসে সাড়ে সাত বছরের জার্নি আপাতত শেষ করতে যাচ্ছি। হয়তো আবার দেখা হবে। এই দীর্ঘ যাত্রাপথে যাদের সহযোগিতা পেয়েছি তাদের অসংখ্য ধন্যবাদ। বিশেষ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, ব্যক্তিগত অনুবিভাগ, দলের নেতা-কর্মী এবং সর্বোপরি দেশের সব মিডিয়ার আলোকিত মানুষেরা। যাদের সহযোগিতা পাইনি, ক্রমাগত বিরোধিতা ও প্রতিবন্ধকতা পেয়েছি তাদের প্রতিও অনেক কৃতজ্ঞতা। কারণ, তাদের কারণে আমি এই বয়সেই অনেক কিছু শিখেছি, যা বাকি জীবন পথ চলতে অনেক সহায়ক হবে। সবাই ভালো থাকবেন। জয় বাংলা...
যাত্রাটা শুরু হয়েছিল ১৮ আগস্ট ২০১৩। বর্তমান সরকারের প্রথম মেয়াদের মাত্র ৫ মাস বাকি তখন। যুক্তরাষ্ট্রের আয়েশি জীবন ছেড়ে...
Posted by Ashraful Alam Khokan on Saturday, 27 February 2021
পুলিশ কর্মকর্তা সোহেল রানা জানান, গত বুধবার বাংলাদেশ পুলিশের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজের ইনবক্সে সহায়তা চেয়ে বার্তা পাঠান ওই ছাত্রী। পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিষয়টি সমাধানের নির্দেশনা দেয়। থানা উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান দেয়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী নগরীর মতিহার এলাকায় এক ব্যক্তির সন্তানকে পড়াতেন। এ বিষয়ে মৌখিক চুক্তি হয়। পড়ানো শেষ হলে চুক্তি অনুযায়ী মেয়েটিকে তার পাওনা টাকা দিতে গড়িমসি শুরু করে শিক্ষার্থীর পরিবার।
কোনোভাবে টাকা আদায় করতে না পেরে ওই ছাত্রী পুলিশের শরণাপন্ন হন। ইনবক্সে যোগাযোগ করেন বাংলাদেশ পুলিশের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে। আর এতেই আসে সমাধান।
রোববার সকালে প্রেস নোটে এ তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) সোহেল রানা।
তিনি জানান, পড়ানো শেষে টাকা চাইতে গেলে পরিবারটি ছাত্রীকে প্রাপ্য টাকার অর্ধেকেরও কম নিতে প্রস্তাব করে। ছাত্রীটি তা নিতে অস্বীকার করে সম্পূর্ণ পাওনা দাবি করেন। পাওনা না পেয়ে হোস্টেলে ফিরে যান তিনি। পরিবারটি প্রভাবশালী হওয়ায় ওই ছাত্রী উচ্চবাচ্য করার সাহস পাননি।
পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, গত বুধবার বাংলাদেশ পুলিশের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজের ইনবক্সে সহায়তা চেয়ে বার্তা পাঠান ওই ছাত্রী। পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিষয়টি সমাধানের নির্দেশনা দেয়। থানা উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীটি বুঝে পান তার প্রাপ্য।
সোহেল রানা বলেন, ‘আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের অনেকেই টিউশনি করে নিজেদের পড়ালেখার খরচ চালিয়ে থাকেন। তাদের সহযোগিতা করা উচিত এবং তাদের যেকোনো সৎ চেষ্টা ও উদ্যমকে সবারই সমর্থন জানানো উচিত বলে মনে করে বাংলাদেশ পুলিশ।’
ঐতিহাসিক আগরতলা মামলার অন্যতম অভিযুক্ত ফ্লাইট সার্জেন্ট আব্দুল জলিল বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য ছিল পূর্ব পাকিস্তানে হঠাৎ আক্রমণ করে অস্ত্রাগারগুলি দখল করে স্বাধীনতা ঘোষণা করব।’
আগরতলা মামলার প্রেক্ষাপটে সে সময়কার বাঙালি সশস্ত্র সেনারা দেশ স্বাধীন করার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। পরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা দিলে এই প্রস্তুতিই কাজে লেগেছে। দ্রুত প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করা গেছে, যা থেকে সফলতা এসেছে।
এ কথা বললেন ঐতিহাসিক আগরতলা মামলার অন্যতম অভিযুক্ত ফ্লাইট সার্জেন্ট আব্দুল জলিল (অব.)।
শনিবার বিকেলে ‘বঙ্গবন্ধুর সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি ও ঐতিহাসিক আগরতলা মামলা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ঢাকা সেনানিবাসে অবস্থিত ‘বিজয় কেতন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে’ এটির আয়োজন করে শিশু-কিশোর সংগঠন ‘ঘাসফুল’। আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন ঘাসফুলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হাসান আব্দুল্লাহ বিপ্লব।
তৎকালীন পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ৩৫ বিশিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করেছিল। মামলার পূর্ণ নাম ছিল ‘রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিবুর রহমান এবং অন্যান্য’। ১৯৬৮ সালের প্রথম ভাগে দায়ের করা এই মামলায় অভিযোগ করা হয়, শেখ মুজিব ও অন্যান্যেরা ভারতের সঙ্গে মিলে পাকিস্তানের অখণ্ডতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছেন।
এ মামলার অভিযুক্ত ফ্লাইট সার্জেন্ট আব্দুল জলিল (অব.) মুক্তিযুদ্ধের আগে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর একজন কর্মকর্তা ছিলেন।
তিনি জানান, তৎকালীন পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনীর বাঙালি অফিসার ও জোয়ানদের মধ্যে স্বাধীনতার বীজ রোপিত হয়েছিল আগরতলা মামলার অনেক আগেই।
ঐতিহাসিক আগরতলা মামলার প্রেক্ষাপট ও দেশ স্বাধীন করার প্রস্তুতি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘১৯৬২ সালে করাচিতে স্টুয়ার্ড মুজিব, সুলতান উদ্দিন আহমেদ, নূর মোহাম্মদ, লে. কমান্ডার মোয়াজ্জেম হোসেন (আগরতলা মামলার আসামি) বসে চিন্তা করেন, “এই যে আমরা এমন ট্রেনিং পেয়েছি, তা যদি পাকিস্তানিদের জন্য কাজে না লাগিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য লাগাতে পারতাম।” তখন একটি ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন করা হয়। বাইরে ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন নাম হলেও ভেতরে তা ছিল বাংলাদেশ স্বাধীনতা করার জন্য।’
আগরতলা মামলার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘১৯৬৪ সালে বঙ্গবন্ধু করাচি গেলে তিনি বেগম আকতার সোলেমানের বাসায় (হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মেয়ে) ছিলেন। লে. কমান্ডার মোয়াজ্জেম হোসেনসহ অন্যারা সেই বাসায় একটি বিপ্লবী বৈঠক ডাকেন।’
আব্দুল জলিল বলেন, ‘এর আগে অনেক নেতার কাছে আমরা প্রস্তাব নিয়ে গেছি, তারা ভয়ে দৌড় মেরেছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুই একমাত্র নেতা যিনি বললেন, “বয়েজ, গো অ্যাহেড।” এরপর আমাদের সদস্য সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পেতে লাগল। তখন তাদের প্রশিক্ষণকেন্দ্র খোলা দরকার। যে জন্য আমার বাসায় প্রশিক্ষণকেন্দ্র খোলা হয়।’
তিনি প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য তুলে ধরে বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য ছিল পূর্ব পাকিস্তানে হঠাৎ আক্রমণ করে অস্ত্রাগারগুলি দখল করে স্বাধীনতা ঘোষণা করব। এ জন্য প্রশিক্ষণকেন্দ্র খোলা হয়। আমাদের যে পরিকল্পনা ছিল, হঠাৎ আক্রমণ করে আমরা পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন করে ফেলব।’
তিনি বলেন, ‘ওই যে আমরা যে গ্রাউন্ডওয়ার্ক করেছিলাম, সেই গ্রাউন্ডওয়ার্কের ফলেই বঙ্গববন্ধু যখন স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন, সাথে সাথে পাকিস্তান আর্মি, নৌ ও বিমানবাহিনীর সব বাঙালি কর্মকর্তারা মুক্তিবাহিনীর পক্ষে যুদ্ধে নেমে পড়ল। এই ওয়ার্কটা আমরা আগে করেছিলাম বলেই আমরা পরে সফলতা পেয়েছিলাম।’
দেশ স্বাধীন করার এ তৎপরতার তথ্য সশস্ত্র বাহিনীর বাঙালি কর্মকর্তাদের কেউ কেউ পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে জানিয়ে দিয়েছিল বলে জানান আব্দুল জলিল। তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে দু-একজন ছিল, যারা বিট্রে করেছে। তারা আর্মির কাছে খবর পৌঁছে দিয়েছিল।’
ঐতিহাসিক ওই মামলার (বৈরী) সাক্ষী আবুল হোসেন অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আসলে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা ষড়যন্ত্র ছিল না। ওই মামলায় বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে সাক্ষী দিতে আমাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকেরা।’
সে সময়ের দুঃসহ স্মৃতি মনে করে তিনি বলেন, ‘প্রথমে আমি বলেছি, “শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে আমি কোনো সাক্ষী দেব না।” এরপর আমার ওপর চলে অমানবিক অত্যাচার, জুলুম। এরপর আমি নিজে নিজে একটা পরিকল্পনা করলাম। আমি এখানেই একটা সেলে থাকতাম। তখন আমি স্বীকার করি যে, শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে আমি সাক্ষী দেব। তখন আমাকে ভাল খাওয়া দেওয়া শুরু করল। আমার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা শুরু করল। তখন আমাকে নিয়ে আসল কাঠগড়ায়। যখন আমাকে সাক্ষী দিতে বলল, আমাকে বলল, “বলো, শেখ মুজিবুর হ্যায়”, আমি তখন তাদের ঢাকাইয়া ভাষায় বললাম, “আমি শেখ সাহেবকে চিনি না। আমি উনাকে কোনো দিন দেখি নাই।”’
আবুল হোসেন বলেন, ‘এরপর আমাকে আবার সেলে নিয়ে গিয়ে অমানবিক নির্যাতন শুরু করল, যা সহ্য করার মতো না। আমাকে আবার বলা হলো, “তুই আবার বলবি, আমি আগে যা সাক্ষী দিয়েছি, তা সব মিথ্যা।” আমি বললাম, “আমি যা বলছি, সেটাই সত্য।” এরপর আবার শুরু হলো টর্চার। সে টর্চারের কথা মনে হলে এখনও আমি শিউরে উঠি। এরপর সার্জেট জহুরুল হককে গুলি করে মেরে ফেলল। বাইরে আন্দোলন হলো। আন্দোলনের মাথায় আমরা সবাই মুক্তি পেয়ে গেলাম। আন্দোলন না হলে আমরাও মুক্তি পেতাম না। কাউকে ফাঁসি দিত, কাউকি যাবজ্জীবন দিত।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. গওহর রিজভী বলেন, ‘৬২ সালে বঙ্গবন্ধু ত্রিপুরায় গিয়েছিলেন। তিনি প্রথমবার ত্রিপুরায় ভারতীয় সরকারের সাহায্য নিতে যাননি, যে আমাদের অস্ত্র দাও আমি যুদ্ধ করব। উনি (বঙ্গবন্ধু) বললেন, “আমি সংবিধানিক যোদ্ধা, গণতান্ত্রিক যোদ্ধা। আমি আন্দোলন করে দেশ স্বাধীন করবো।”’
গওহর রিজভী বলেন, ‘জলিল সাহেব যে বললেন, ওনাদের সংগ্রামের কথা, এটা ভেরি ট্রু, ভেরি কারেক্ট। উনি (বঙ্গবন্ধু) সোহরাওয়ার্দী সাহেবের মেয়ের বাসায় ছিলেন। ভেরি কারেক্ট। যখন কমান্ডার মোয়াজ্জেম বঙ্গবন্ধুকে এ পরিকল্পনার কথা বললেন, তখন তিনি বলেন, “তোমরা নিজেদের সংগ্রাম করো। আমি গণতান্ত্রিক। আমি রাজনৈতিকভাবে সংগ্রাম করব। কিন্তু তোমাদের সঙ্গে আছি।”’
গওহর রিজভী বলেন, ‘যখন আগরতলা মামলা শুরু হলো, তখন পাকিস্তানিরা কিন্তু জানত না, বঙ্গবন্ধু ৬২ সালে ভারতে গিয়েছিলেন। তাদের কাছে কোনো তথ্য ছিল না।’
অনুষ্ঠানে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় শিশু-কিশোরদের তুলির আঁচড়ে উঠে আসে বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস। এছাড়া আবাহমান বাংলার প্রকৃতি তুলে ধরে শিশুরা।
এছাড়া সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে ঐতিহাসিক আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার ইতিহাস বর্ণনা করেন ঘাসফুলের ক্ষুদে শিল্পীরা।
গত বছরের ১২ আগস্ট বেসরকারি থেকে সরকারি হওয়া প্রাথমিক শিক্ষকদের ‘টাইম স্কেল’ সুবিধা ফেরত দেয়ার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় একটি পরিপত্র জারি করে। ওই পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সংক্ষুব্ধ শিক্ষকরা রিট করেন।
২০১৩-২০১৪ সালে বেসরকারি থেকে সরকারি হওয়া প্রাথমিক শিক্ষকদের ‘টাইম স্কেল’ সুবিধা ফেরত দেয়ার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র নিয়ে জারি করা রুলটি খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার এ রায় দেয়।
আদালত বলেছে, তারা (শিক্ষক) চাইলে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে যেতে পারেন। কেননা ওটাই তাদের ফোরাম।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মোকছেদুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. মোরশেদ।
ব্যারিস্টার মোকছেদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, আদালত এ সংক্রান্ত রুলটি খারিজ করে দিয়েছে। এখন রিটকারীদের সঙ্গে পরামর্শ করে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।
তিনি জানান, জাতীয়করণ করা ৪৮ হাজার ৭২০ শিক্ষককে টাইম স্কেলের এ সুবিধা দেয়া হয়েছিল।
ব্যারিস্টার মোকছেদুল ইসলাম বলেন, গত বছরের ১২ আগস্ট বেসরকারি থেকে সরকারি হওয়া প্রাথমিক শিক্ষকদের ‘টাইম স্কেল’ সুবিধা ফেরত দেয়ার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় একটি পরিপত্র জারি করে। ওই পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সংক্ষুব্ধ শিক্ষকরা রিট করেন।
তখন হাইকোর্ট বিভাগ পরিপত্র স্থগিত করে রুল জারি করে। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে।
১৩ সেপ্টেম্বর চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে। পরে স্থগিতাদেশ তুলে দিতে শিক্ষকরা আপিল বিভাগে আবেদন করে।
গত ১৩ জানুয়ারি আপিল বিভাগ তিন সপ্তাহের মধ্যে হাইকোর্ট বিভাগে রিট মামলাটি নিষ্পত্তি করতে বলে। সে অনুযায়ী বৃহস্পতিবার ওই বেঞ্চে এ রুলের ওপর শুনানি শেষ হয়। শুনানি শেষে রায়ের জন্য রোববার দিন ঠিক করা হয়।
কারওয়ান বাজারের হাসিনা মার্কেটে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে ফায়ার সার্ভিস। ছবি: সাইফুল ইসলাম
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা মাহফুজ রিবেন নিউজবাংলাকে জানান, তাদের আটটি ইউনিটের চেষ্টায় রাত ১০টা ১০ মিনিটে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের হাসিনা মার্কেটে শনিবার রাত ৯টার দিকে লাগা আগুন ফায়ার সার্ভিসের এক ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
ফায়ার সার্ভিসের অপারেশন প্রধান জিল্লুর রহমান জানিয়েছেন, সব মিলিয়ে ১১টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে। রাত ১০টার দিকে আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসে।
তিনি জানান, এ ঘটনায় হতাহত হননি।
জিল্লুর রহমান বলেন, ‘সামনের দোকানগুলো বাঁশ-কাঠ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি দিয়ে তৈরি। এ ধরনের দোকানে আগুন লাগলে খুব দ্রুত পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।’
আগুনের কারণ অনুসন্ধানে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হবে বলেও জানান তিনি।
কারওয়ান বাজারের এই মার্কেটটিতে মসলা, খাবার হোটেল, মুদি দোকান, চায়ের দোকান, সেলুন, কাঁচামালের আড়ত, পানির হাউস, ফ্লেক্সিলোডসহ ইত্যাদির দোকান রয়েছে।
মার্কেটের এক ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘আড়তে আমি কাঁচামালের ব্যবসা করি। আমরা মার্কেটের দোতলায় ঘুমাইয়া ছিলাম। একজন কইছে আগুন লাগছে আমরা দৌড়াইয়া আসছি বাইরে।’
ব্যবসায়ী হানিফ বলেন, ‘দুই দিন ধইরা ব্যাংক বন্ধ। এইহানে আমার গদি আছিলো। ক্যাশপাতি সব এইহানে আছিলো। টাকাপয়সা যা আছিলো সব পুইড়া ছাপা হইয়া গেছে। আমার ৪-৫ লাখ টাকা আছিলো। আর হিসাবের খাতা। সব পুইড়া গেছে। ওহনো দোকানে ঢুকতে পারতাছি না।’
ভ্যান চালক শাওন বলেন, ‘আমরা ভ্যান চালাই। মারকেটের দোতালায় ভাড়া থাহি। আমি বাইরে থেইকা আইসা দেহি আগুন। পরে কিচ্ছু বাইর করতে পারি নাই। সব বাদ দিয়া পরে আগুন নিভাইতে শুরু করছি। রুমে যে ট্যাহা পয়সা কাপড়চোপড় আছিলো সব পুইড়া গেছে।’
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার হওয়ার পর কারাবন্দি অবস্থায় মারা যাওয়া লেখক মুশতাক আহমেদ। ফাইল ছবি
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ৫৩ বছর বয়সী মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে আহ্বায়ক করা হয়েছে সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. তরুণ কান্তি শিকদারকে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারাবন্দি লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে কমিটি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কমিটিতে চার কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
শনিবার বিকেলে মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের কারা-১ শাখার উপসচিব মো. মনিরুজ্জামানের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আলোচিত এ ঘটনা তদন্তে গাজীপুর জেলা প্রশাসনও একটি কমিটি করেছে।
আরও পড়ুন: মুশতাকের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ৫৩ বছর বয়সী মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. তরুণ কান্তি শিকদারকে।
কমিটিতে সদস্য করা হয়েছে গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জুনাব আবুল কালাম, ময়মনসিংহের কারা উপমহাপরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির ও গাজীপুর জেলা কারাগার সহকারী সার্জন ডা. কামরুন নাহারকে। সদস্য সচিব করা হয়েছে সুরক্ষা সেবা বিভাগ উপসচিব আরিফ আহমদকে।
বিজ্ঞপ্তিতে কমিটির কাজের পরিধি সম্পর্কেও উল্লেখ করা হয়েছে। এতে তদন্ত কমিটি যে বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করবে সেগুলো হলো, মুশতাক আহমেদের মৃত্যুতে কারা কর্তৃপক্ষের কোনো গাফিলতি ছিল কিনা? যদি থাকে তবে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা।
পাশাপাশি মুশতাক কারাগারে আসার পর তার কোনো স্বাস্থ্যগত সমস্যা নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষ জানত কি না? যদি জানে, সে বিষয়ে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে কিনা? যদি না হয়ে থাকে তবে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এক মামলায় গত বছরের মে মাসে গ্রেপ্তারের পর থেকে কারাবন্দি ছিলেন লেখক মুশতাক। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে তার মৃত্যু হয়।
ঠিক কী কারণে মুশতাকের মৃত্যু হয়েছে তা জানতে মৃতদেহের ময়না তদন্ত হয়েছে।
তার মৃত্যুর কারণ জানতে প্রয়োজনে তদন্ত কমিটি করা হবে বলে জানিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
যুক্তরাষ্ট্রের থিংক ট্যাঙ্ক ‘নিউ লাইনস ইনস্টিটিউট অন স্ট্রাটেজি অ্যান্ড পলিসি’ আয়োজিত অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। ছবি: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আশা করি, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে নিরাপদে ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে দেশটির ওপর আরও রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেবে বাইডেন প্রশাসন।’
রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে মিয়ানমারের ওপর আরও কঠোর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
নিউইয়র্কে শুক্রবার জাতিসংঘ, ওআইসি এবং যুক্তরাষ্ট্রের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে নিরাপদে ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে দেশটির ওপর আরও রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেবে বাইডেন প্রশাসন।’
অনুষ্ঠানে রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রকে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক কূটনীতিতে নেতৃত্ব দেয়ার আহ্বানও জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ আঞ্চলিক সমস্যার একমাত্র সমাধান যে কেবল সুষ্ঠু প্রত্যাবাসনেই সম্ভব তাও মনে করিয়ে দেন তিনি।
শনিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের থিংক ট্যাঙ্ক ‘নিউ লাইনস ইনস্টিটিউট অন স্ট্রাটেজি অ্যান্ড পলিসি’ এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান পরিচালক ড. আজীম ইব্রাহীম এ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। ইউটিউবে অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
মোমেন বলেন, বাংলাদেশে অস্থায়ীভাবে বসবাসরত ১১ লাখ রোহিঙ্গার টেকসই ও নিরাপদ প্রত্যাবাসনই আঞ্চলিক নিরাপত্তা ঝুঁকি নিরসন করতে পারে।
প্রশ্নোত্তর পর্বে মোমেন কোভিড-১৯ মহামারির এমন সময়ে বাংলাদেশ সরকার কীভাবে রোহিঙ্গাদের কল্যাণে কাজ করছে সে সম্পর্কে ব্রিফ করেন।
তিনি বলেন, সরকারের যথাযথ উদ্যোগের কারণেই এই মহামারিতে একজন রোহিঙ্গাও করোনায় মারা যায়নি। এ সময় তিনি রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের প্রসঙ্গেও কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে মিয়ানমারের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরও রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের এবং রোহিঙ্গা সঙ্কটের টেকসই সমাধানে বিশেষ দূত নিয়োগে আবারও যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
মোমেন বলেন, ‘আমাদের এই প্রস্তাব এ জন্যই যে, এই দূত এই সংকট বিষয়ে গভীর মনোনিবেশের মাধ্যমে মার্কিন সরকারের কংক্রিট পদক্ষেপ ও অগ্রণী ভূমিকা রাখবেন। বাইডেন প্রশাসনের কাছে আমাদের প্রত্যাশা রয়েছে এবং এ বিষয়ে মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করছি আমরা।’
পরে কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্স (সিএফআর) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং রোহিঙ্গা ইস্যু’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আয়োজনে অংশ নেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে মোমেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তার সাম্প্রতিক আলোচনার কথা উল্লেখ করে দুদেশের দ্বিপক্ষীয় অংশীদারত্বের বিষয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
মন্তব্য