মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য কঙ্কাল প্রাপ্তি একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইউরোপে প্লাস্টিকের কঙ্কাল ব্যবহার হলেও এই অঞ্চলে মানবদেহের কঙ্কালের ব্যবহার মূলত দাম কম- এ কারণে।
কিন্তু এই কঙ্কাল প্রাপ্তির কোনো সুনির্দিষ্ট জায়গা নেই। আর এ কারণে দাম বাড়ছে।
চোরাই মার্কেটে কঙ্কালেরও একটি বাজার তৈরি হয়েছে। এই ব্যবসায় যারা জড়িত তারা মরদেহ চুরি করে জ্বাল দিয়ে মাংস গলিয়ে বের করে কঙ্কাল।
বাংলাদেশে সরকারি বেসরকারি হিসেবে ১১২টি মেডিক্যাল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় আছে। ছাত্র সংখ্যা কমসে কম ৫২ হাজার। এর মধ্যে প্রথম বর্ষ থেকেই কঙ্কাল লাগে। আর প্রথম বর্ষে প্রতি বছর ভর্তি হয় সাড়ে ১০ হাজারের বেশি।
মেডিক্যালে ছাত্র সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। তবে কঙ্কাল প্রাপ্তির কোনো স্থান বা নীতিমালা এখনও ঠিক হয়নি। ফলে এক দিকে যেমন শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে অন্য দিকে অবৈধভাবে মরদেহ থেকে কঙ্কাল আলাদা করে তা দিয়ে ব্যবসা হচ্ছে।
বৈধভাবে কঙ্কাল প্রাপ্তির একমাত্র উপায় হচ্ছে যদি কোনো ব্যক্তি মৃত্যুর আগে তার দেহ দান করেন তাহলে পরবর্তী সময়ে তা থেকে কঙ্কাল পাওয়া যাবে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সেটি খুবই নগণ্য বলা যায়। এত শিক্ষার্থীর কঙ্কাল প্রাপ্তির বৈধ উপায় বা ক্ষেত্র সম্পর্কে কেউ জানে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পুরনো কঙ্কাল দিয়ে কাজ সারলেও অনেক শিক্ষার্থী তাদের মেডিক্যাল কলেজ ও বাইরের একটি মাধ্যম থেকে নতুন কঙ্কাল কিনে থাকেন।
কোথায় পাওয়া যায়?
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের (ঢামেক) ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সোহেল মাহমুদ নিউজবাংলাকে বলেন, সাধারণত তিনটি সোর্স থেকে কঙ্কাল পাওয়া যায়।
প্রথমত, যদি কেউ দেহ দান করেন। সাধারণত তাদের উদ্দেশ্য থাকে তাদের দেহ থেকে পরবর্তীতে মেডিক্যাল শিক্ষার্থীরা যেন কিছু জানতে পারে। তবে এটা খুবই নগণ্য।
দ্বিতীয়ত, যিনি পাস করে বের হয়ে যান, তিনি তার ব্যবহৃত কঙ্কালটি জুনিয়রদের দিয়ে যান। এটাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হয়ে থাকে।
তৃতীয়ত, হচ্ছে যাদের এই দুইটার কোনো মাধ্যম নেই তারা বাইরে থেকে কিনে নিয়ে আসেন। ওটাকে ইন্ডিয়ান বোনস বলা হয়।
‘আমরা জানি ওটা ইন্ডিয়া থেকেই আসে। আসলে এটা যে কোথা থেকে আসে সেটা আমরাও জানি না। তবে লেটেস্ট একটা সোর্স আছে সেটা হচ্ছে, কিছু প্লাস্টিকের বোনস এখন পাওয়া যায়। এখন সেটা ব্যবহার করে অনেকেই।’
বাংলাদেশে মানুষের কঙ্কাল সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয় মেডিক্যাল শিক্ষার ক্ষেত্রে। এ ছাড়া নার্সিং বা হোমিওপ্যাথি বিষয়ক পড়াশোনার জন্যও কঙ্কাল ব্যবহার করা হয়।
সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের চাহিদার তুলনায় কম আছে। তবে সেটা ম্যানেজ হয়ে যাচ্ছে। দেখা যায় অনেকেই একই রুমে থাকে তারা দুইজন মিলে একটা নিয়ে পড়াশোনা করে।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অ্যানাটমি বিভাগের একজন অধ্যাপক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এক সময় শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম থাকার কারণে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের অ্যানাটমি বিভাগ থেকে ডোমের মাধ্যমে সংগ্রহ করা কঙ্কাল বণ্টন করা হতো। এখন শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেকেই অনৈতিকভাবে কবর থেকে মৃতদেহ সংগ্রহ করে বাসায় বিভিন্ন কেমিক্যাল ব্যবহার করে মাংস পচিয়ে তা থেকে হাড় বা কঙ্কাল সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করে।’
গত ১৫ নভেম্বর ময়মনসিংহে ১২টি মানুষের মাথার খুলি ও শরীরের নানা অংশের দুই বস্তা হাড়গোড় উদ্ধার করা হয়।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ তালুকদার জানান, প্রাথমিকভাবে তারা ধারণা করছেন, এসব খুলি ও হাড়গোড় ভারত ও নেপালে পাচার করা হতো। সাধারণত মেডিক্যাল কলেজগুলোতে এসব হাড় শিক্ষার কাজে ব্যবহার করা হয়।
২০১৮ সালে ময়মনসিংহে একটি চক্র ধরা পড়ে একই উপজেলায়। সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্যরা কবর থেকে অবৈধভাবে মরদেহ উত্তোলন এবং হাসপাতালের বেওয়ারিশ লাশগুলো অবৈধ উপায়ে খালাস করার মাধ্যমে কঙ্কাল সংগ্রহ করে।
অ্যানাটমি বিভাগের অধ্যাপক বলেন, ‘এই ব্যবসা বন্ধে আমাদের পরিকল্পনা আছে। আমরা আগামীতে ভিডিও টিউটোরিয়ালের মাধ্যমে শিক্ষণ পদ্ধতি চালিয়ে নেব যাতে করে আর কঙ্কালের প্রয়োজন হবে না। সে ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কঙ্কালের চাহিদা কমে যাবে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম শাখার পরিচালক হাবিবুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আসলে কঙ্কাল প্রাপ্তির কোনো বৈধ নিয়ম এখন পর্যন্ত নেই। তবে আমার জানা মতে অ্যানাটমি বিভাগে যারা ডোম হিসেবে কাজ করে তারা কোন বডি কাটাছেড়া করার পর প্রসেসিং করে থাকে।’
‘সাধারণত হাড় তো নষ্ট হয় না সহজে, যার ফলে তারা এটা সংগ্রহ করে ও পরে মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের কাছে বিক্রি করে দেয়। এটার মেইন উৎস হচ্ছে ওই বিভাগে যেসব বেওয়ারিশ লাশ থাকে তাদের শরীর নষ্ট হওয়ার পর এটা সংগ্রহ করা হয়। যেহেতু বাইরের বাজার অবৈধ তাই শিক্ষার্থীরা সাধারণত ডোমদের কাছ থেকেই সংগ্রহ করে থাকে।’
মরণোত্তর দেহ দান কতটা হয়েছে
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অ্যানাটমি বিভাগে ১৯৯৮ সাল থেকে মরণোত্তর দেহদান শুরু হয়। এ পর্যন্ত মরণোত্তর দেহদানের আবেদন পড়েছে ৬৫টি। হাসপাতালে ১২টি দেহ আছে। মরণোত্তর দেহ সবচেয়ে বেশি ১৫টি সংরক্ষিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে।
বেসরকারি মেডিক্যালে কী অবস্থা
বাংলাদেশ মেডিক্যালের সহকারী রেজিস্ট্রার সুদেষ্ণা চক্রবর্তী পুর্বা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা যখন ফার্স্ট ইয়ারে ছিলাম তখন আমরা এটা আমাদের সিনিয়রের কাছ থেকে কিনে নিতাম। আমারটা ব্যবহার করা কঙ্কাল ছিল। নতুন আমরা পেতাম না। দেখা যেত যে খুলনা অথবা চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র ভাইদের সঙ্গে যাদের লিংক আপ থাকত, তারা এটা ম্যানেজ করে নিত।’
‘আমি কিনেছিলাম ২৮ হাজার টাকা দিয়ে আমার সময়ে। আমাদের কলেজের ক্যাফেটেরিয়াতে একটা বিজ্ঞাপন দেখে আমি ওই আপুর সঙ্গে যোগাযোগ করি। ওই আপু তার ঢাকা মেডিক্যালের এক বন্ধুর কাছ থেকে কিনে নিয়েছিল। পরে আমি যখন থার্ড ইয়ারে উঠি, সেটা ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছিলাম। সাধারণত আমাদের কলেজে সবাই এমনভাবেই এটা সংগ্রহ করত।’
পুর্বা বলেন, ‘আসলে এটা যে কোথা থেকে আনা হয় এটা নিয়ে আমার তখন তেমন আগ্রহ কাজ করেনি। তবে এটা ঠিক যে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলোর শিক্ষার্থীদের জন্য এটা সবাইকেই কিনতে হয়। সবাই একটা সেট করে কিনে থাকে। তবে অনেকেই শেয়ার করে কিনে থাকে। তবে সেক্ষেত্রে যারা একই রুমে বা হোস্টেলে থাকা তারা এটা করে থাকে।’
পুর্বা আরও বলেন, ‘আমাদের ব্যাচে ১১৫ জনের প্রায় সবার কাছেই কঙ্কাল ছিল। ফুল সেট কঙ্কালে ভাটিব্রা তো একটা করেই থাকে, মাথা একটাই থাকবে এটা তো ডিভাইডেড করা সম্ভব হবে না তাই এটা শেয়ার করে পড়া সম্ভব না। সেক্ষেত্রে রুমমেট বা স্টাডি পার্টনার না হলে সেটা সম্ভব হবে না।
মেডিক্যালের সূত্র থেকে জানা যায়, দেশে কঙ্কালের চাহিদা অনেক। আর এ জন্য এটার দাম বেশি। তবে যারা মেডিক্যাল কলেজে প্রথম বর্ষে পড়াশোনা করেন তারা কঙ্কালের প্রাপ্তিস্থান সম্পর্কে কখনও জানতে পারেন না। একটা সময় এটার দাম পাঁচ থেকে ১০ হাজার টাকা ছিল। তবে শিক্ষার্থী বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানে সাধারণত মানবদেহের কঙ্কাল ব্যবহার করা হয়। ইউরোপিয়ান দেশগুলোতে প্লাস্টিকের কঙ্কাল পাওয়া যায় তবে সেটা অনেক বেশি দামি হওয়ায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে ব্যবহার করা হয় না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মেডিক্যাল শিক্ষার্থী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি ফেসবুকে এমন একটা পেজের মাধ্যমে জানতে পারি। সাধারণত মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র ভাইয়েরা মেইনটেইন করে থাকে। সেখানে কঙ্কাল বিক্রির জন্য পোস্ট দেয়া হয়। ওখানে ৩৫-৪০ হাজার টাকার মধ্যে বিক্রি হতো।’
কঙ্কালের আয়ুষ্কাল
সাধারণত একটি কঙ্কাল সঠিক উপায়ে পরিচর্যা করলে তা ৪০-৫০ বছর পর্যন্ত ঠিক থাকে।
সুদেষ্ণা চক্রবর্তী পুর্বা বলেন, ‘পাউডার দিলে হাড়গুলো ঠিক থাকে। কঙ্কালের জন্য তেলাপোকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর যার জন্য এমন স্থানে রাখতে হবে যাতে তেলাপোকা হাড়গুলো নষ্ট করতে না পারে।
‘কলেজে ব্যবহারের উপর নির্ভর করে যে কতদিন আপনি আপনার ব্যবহৃত কঙ্কাল ঠিক রাখতে পারবেন। আমি যেটি ব্যবহার করেছিলাম সেটা আমার কাছে যখন আসে তার আগে আরও তিন জন ব্যবহার করেছে। যেহেতু একটা নির্দিষ্ট সময় পর এটার কোন কাজ থাকে না তাই অনেকেই একটি কঙ্কাল দিয়ে মেডিক্যাল জীবন পার করে দিতে পারবে।’
আরও পড়ুন:ঈদকে সামনে রেখে পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে শপিং মলগুলোতে কোনো অনিয়ম হলে মার্কেট কমিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের টিসিবি ভবনে অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে এক মতবিনিময় সভায় এমন হুঁশিয়ারি দেন মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এ.এইচ.এম. সফিকুজ্জামান।
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের তৈরি পোশাক/কাপড় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন নিয়ে এ মতবিনিময় সভা হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। এতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, ডিজিএফআইয়ের প্রতিনিধি, এনএসআইয়ের প্রতিনিধি, টিসিবির প্রতিনিধি, আড়ং, আর্টিসান, অঞ্জনস, টপ টেন, লুবনান, নগরদোলা, রং বাংলাদেশের মতো ব্র্যান্ডের প্রতিনিধিরা।
স্বাগত বক্তব্যে অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের কাপড়ের গুণগত মান যেন ভালো থাকে এবং বিদেশি যারা আসেন, তারা যেন কাপড়ের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলতে না পারেন। কাপড়ের প্রাইস ট্যাগ যেন ফ্যাক্টরিতে লাগানো হয়; শোরুম পর্যায়ে যেন প্রাইস ট্যাগ লাগানো না হয়। এর ব্যত্যয় হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সভায় ঈদ উপলক্ষে একই পোশাকের দাম অন্যান্য সময়ের তুলনায় বাড়িয়ে দেয়া, একটি পোশাকে বিভিন্ন দামের প্রাইস ট্যাগ লাগানো, সিট কাপড়ের ক্ষেত্রে মিটারের পরিবর্তে গজের ব্যবহার, মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করা, আসল বলে নকল কাপড় বিক্রি করা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
রেডিমেড গার্মেন্টসের ক্ষেত্রে মোড়কের গায়ে এমআরপি না লেখা, এমআরপি ঘোষামাজা/কাটাকাটি করে বেশি মূল্য নির্ধারণ, পুরাতন মূল্যের ওপর নতুন স্টিকার লাগিয়ে বেশি মূল্য নেয়া, ১০০ শতাংশ কটন ঘোষণা দিয়ে শতভাগ কটন না দেয়া, কাটা-ফাটা পোশাক বিক্রি এবং সময়মতো এক্সচেঞ্জ করে না দেয়া, ভোক্তাদের পেমেন্টের ক্ষেত্রে লম্বা লাইনে অপেক্ষমাণ না রাখার মতো বিষয়েও আলোচনা করা হয়।
বিভিন্ন কাপড়ের ব্র্যান্ডের প্রতিষ্ঠান থেকে আগত প্রতিনিধিরা সভার আলোচনা থেকে প্রাপ্ত নির্দেশনা অনুসরণ করে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন।
সভায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, বিদেশি পোশাক ও কসমেটিকসের ক্ষেত্রে আমদানিকারকের নাম ও সিল থাকতে হবে এবং এমআরপি আমদানিকারক প্রদত্ত হতে হবে।
নকল পণ্যের বিষয়েও তিনি ব্যবসায়ীদের সতর্ক করেন এবং এ ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দেন।
এ.এইচ.এম. সফিকুজ্জামান আলোচনায় বলেন, ‘অনেক সময় দেখা যায় পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে কিছু বিক্রয়কারী আমাদের দেশে এসে বাসা ভাড়া নিয়ে ভিতরে ভিতরে টার্গেট কাস্টমারের কাছে বিদেশি কাপড় বিক্রয় করছে। এই ধরনের কার্যক্রম দেশীয় ফ্যাশন হাউজগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এ ক্ষেত্রে তথ্যগুলো আমাদের কাছে দেয়া হলে আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
‘আমরা চাই সবাই আইন মেনে ব্যবসা করুক এবং ভোক্তাগণ যেন ন্যায্যমূল্যে পণ্য পান। শপিং মলগুলোতে অনিয়ম পেলে মার্কেট কমিটিকে দায়ী করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে কাপড়ের ব্যবসায়ীরা মূল্য ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে ভোক্তাদের স্বস্তি দেবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
আরও পড়ুন:দেশের আটটি বিভাগে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টির আভাস দিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, কোথাও কোথাও হতে পারে মাঝারি ধরনের ভারি বর্ষণ।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দেয়া হয়েছে।
এতে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে রয়েছে।
দিনভর আবহাওয়া কেমন থাকবে, তা নিয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গা এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি বর্ষণ হতে পারে।
তাপমাত্রার বিষয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
ঢাকায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা ১৩ মিনিটে সূর্য অস্ত যাবে জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, শুক্রবার ঢাকায় সূর্যোদয় হবে ৫টা ৫২ মিনিটে।
পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার অবস্থা নিয়ে বলা হয়, বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৩৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে ফেনীতে। বুধবার দেশের সর্বোচ্চ ৩৫ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে। বৃহস্পতিবার দেশের সর্বনিম্ন ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় রাঙ্গামাটিতে।
আরও পড়ুন:প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামসকে গ্রেপ্তারসহ সাংবাদিকদের ওপর সহিংসতার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে বৈশ্বিক জোট মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশন (এমএফসি), বালাদেশ।
ঢাকায় জোটটির কার্যালয় থেকে এক বিবৃতি দিয়ে এই উদ্বেগ জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ‘মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশনের সদস্য দেশগুলো সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর বিষয়ে উদ্বিগ্ন।
‘এর মধ্যে রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহকারী সাংবাদিকদের ওপর সহিংসতা, আল জাজিরার সাংবাদিকের ভাইয়ের ওপর হামলা, ঢাকা ট্রিবিউনের আলোকচিত্র সাংবাদিকের ওপর হামলা এবং সম্প্রতি প্রথম আলোর সাংবাদিক আটকের খবর।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকে এর প্রতিটি ঘটনার দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের অনুরোধ জানাচ্ছি।’
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমকর্মীদের সুরক্ষা নিয়ে কাজ করা জোটটির বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো হলো অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র।
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মানুষের সেবা করে যাওয়াটাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। এই লক্ষ্যে ভূমি সেবা ডিজিটালাইজেশনের পাশাপাশি ভূমি ব্যবস্থাপনাকে আধুনিকায়ন করা হয়েছে, যাতে সব অনিয়ম দূর হয় এবং জমি নিয়ে হানাহানি বন্ধ হয়।’
বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘জাতীয় ভূমি সম্মেলন-২০২৩ ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাতটি প্রকল্প উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘বিএনপি ৬টি ভূমি অফিস আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছিল। রেকর্ড পুড়িয়ে দেয়া হয়। ফলে ভূমি অফিসের দুরবস্থা সবার নজরে এসেছে। তারই ধারাবাহিকতায় সরকার চারশ’ আধুনিক ভূমি অফিস করে দিয়েছে।
‘একদিক থেকে ভালো হয়েছে যে, ওদের আগুন লাগানোর ফলে নতুন ও আধুনিক ভূমি অফিসের ব্যবস্থা হয়েছে। আর এও প্রমাণ হয়েছে- ওরা ধ্বংস করে আর আওয়ামী লীগ সৃষ্টি করে মানুষের কল্যাণে। মানুষের সেবা করে যাওয়াটাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা চাই বাংলাদেশ থেকে সব ধরনের অনিয়ম দূর হোক। আমরা আজ ৭টি উদ্যোগ উদ্বোধন করলাম। প্রতিটি উপজেলায় উন্নত ভূমি অফিস ও রেকর্ড সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসবের সুবাদে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন সহজ হবে।’
সম্পদ বণ্টন নিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘আমরা দেখি- বোনকে বঞ্চিত করে ভাই। আবার বোনও ভাইকে বঞ্চিত করে। বোন বোনকে বঞ্চিত করে এমন ঘটনাও আছে। বণ্টন ব্যবস্থাটা ডিজিটালাইজড করলে এই সমস্যা হবে না।
‘অধিকাংশ পারিবারিক সমস্যা এই বণ্টনের কারণে হয়। খুন-খারাবিও হয়। এর মধ্য দিয়ে অনেক পারিবারিক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। মানুষ শান্তি পাবে। মানুষের জীবনের শান্তি ও সমৃদ্ধি আমাদের কামনা।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী পহেলা বৈশাখ থেকে ভূমি উন্নয়ন কর শতভাগ অনলাইনে আদায় করা হবে। দেশের সাধারণ জনগণের পাশাপাশি ১৯২টি দেশ থেকে কল সেন্টারে বা ভূমি সেবা পোর্টালে আবেদন করলে প্রবাসীদের ঠিকানায়ও খতিয়ান পাঠানো হবে। ইতোমধ্যে অনলাইনে ৭৭০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। সে হিসাবে দিনে গড়ে রাজস্ব আদায় ৫ কোটি টাকার বেশি।’
প্রধানমন্ত্রী জানান, ভূমি সেবা ডিজিটালাইজেশনের পাশাপাশি ভূমি ব্যবস্থাপনাকে আধুনিকায়ন করা হয়েছে। ১৬১২২ নম্বরে ফোন করে কিংবা ঘরে বসে পোর্টাল থেকে নামজারি, খতিয়ান নেয়া এবং ভূমি কর দেয়া যাচ্ছে।
ভূমি সংক্রান্ত অপরাধ ঠেকাতেও নেয়া হয়েছে ব্যবস্থা। ভূমিতে নতুন নিয়োগ বিধিমালার মাধ্যমে নিয়োগের সমস্যারও সমাধান করা হয়েছে। সামনে আর জনবল সংকট থাকবে না। সব উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিয়োগ করা হয়েছে। তাদের যানবাহনও দেয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার এবং ভূমি সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন:উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উপজেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হবেন এবং তিনি পরিষদকে সাচিবিক সহায়তা দেবেন, এমন আইনের ৩৩ ধারাটি বাতিল ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট।
এ সংক্রান্ত এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বুধবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেয়।
হাইকোর্টের রায়ের ফলে উপজেলা চেয়ারম্যানদের ওপর ইউএনওদের একচ্ছত্র কর্তৃত্ব থাকল না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। এখন থেকে উপজেলা পরিষদে ইউএনওরা সাচিবিক সহায়তা দেবেন।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি, ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরী।
আইনের ৩৩ (১) ধারায় বলা হয়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হবেন এবং তিনি পরিষদকে সাচিবিক সহায়তা দেবেন। ৩৩ (২) ধারায় বলা হয়, পরিষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন, আর্থিক শৃঙ্খলা প্রতিপালন এবং বিধি মাধ্যমে নির্ধারিত অন্যান্য কার্যাবলী পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা সম্পাদন করবেন।
রায়ের পরে আইনজীবী হাসান এম এস আজিম বলেন, ‘উপজেলা পরিষদে একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি থাকা সত্ত্বেও একজন নির্বাহী কর্মকর্তাকে বেশি ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। এটা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ কারণে ৩৩ ধারা বাতিল চেয়ে রিট করা হয়েছিল। সেই রিটের দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত আজকে রায় ঘোষণা করেছেন। রায়ে ৩৩ ধারা বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।’
উপজেলা পরিষদ আইন ১৯৯৮ এর ১৩ (ক) ১৩ (খ) ও ১৩ (গ) ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক উল্লেখ করে এগুলো চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালের ১৫ জুন রিট করা হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে ওই বছরের ১৬ অক্টোবর রুল জারি করা হয়।
রুলে উপজেলা পরিষদে ইউএনওদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদসংক্রান্ত আইনের ৩৩ ধারা কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আব্দুল আজিজসহ তিনজন উপজেলা চেয়ারম্যান এ রিট করেন।
আরও পড়ুন:স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে রেললাইন স্থাপন কাজে সবশেষ স্লিপারটিও বসে গেছে। একইসঙ্গে শেষে হয়েছে অবশিষ্ট থাকা ৭ মিটার অংশের ঢালাই কাজ। এর মধ্য দিয়ে বুধবার বিকেলে ইফতারের আগ মুহূর্তে স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে রেললাইনের কাজ শেষ হয়েছে। এবার পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলের অপেক্ষা।
সবশেষ স্লিপার ও ঢালাই কাজের মধ্য দিয়ে সেতুর দু’পাশের ভায়াডাক্ট ৬ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার রেললাইনের কাজ সম্পন্ন হয়। এ কাজ সম্পন্নের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ব্যবস্থাপক-১ ব্রিগেডিয়ার সাঈদ আহমেদ।
প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, ৪ এপ্রিল পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলের কথা রয়েছে।
রাজধানী থেকে যশোর পর্যন্ত রেলসংযোগ প্রকল্পের মধ্যে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের বড় চ্যালেঞ্জ ছিলো যানবাহন চালু রেখে সেতুর নিচতলায় পাথরবিহীন রেললাইন নির্মাণ। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বুধবার কাজ শেষ হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীরা।
ব্রিগেডিয়ার সাঈদ আহমেদ জানান, সবশেষ স্লিপারটি বসানোর পর ৭ মিটারের কংক্রিটিং করা হয়েছে। তা শক্ত হতে ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা সময় লাগে। এরপরই সেতুর রেললাইন ট্রেন চলাচলের উপযোগী হয়ে যাবে। এর মধ্য দিয়ে দ্রুতগতিতে ট্রেন চলার উপযোগী রেললাইন স্থাপনের কাজ শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে।
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আবজাল হোসেন বলেন, ‘সেতু উদ্বোধনের পর কিছুটা জটিলতা তৈরি হয়। সব নকশা চূড়ান্ত করে গত বছরের নভেম্বরে মূল সেতুতে রেললাইনের কাজ শুরু হয়। ৪ মাসের মধ্যে কাজ শেষ হলো।
‘ঢাকা থেকে মাওয়া অংশের কাজের অগ্রগতি ৭৪ ভাগ, মাওয়া থেকে ভাঙা অংশের অগ্রগতি ৯২ ভাগ এবং ভাঙা থেকে যশোর পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি ৬৮ ভাগ। সার্বিক অগ্রগতি ৭৫ ভাগ। আমরা আশাবাদী, প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে প্রকল্পের যে মেয়াদ আছে ২০২৪ সালের জুন মাসের মধ্যে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে যাবে।’
প্রকৌশলীরা জানান, ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার মূল সেতু ও দু’পাশের ভায়াডাক্ট সেতু মিলিয়ে পদ্মা রেল সেতুর দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার। মূল সেতুতে ১১ হাজার ১৪০টি স্লিপার স্থাপিত হয়েছে। মুভমেন্ট জয়েন্টের ইস্পাতের ৮টি স্লিপার ছাড়া বাকি সবই কংক্রিটের তৈরি।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কনস্ট্রাকশন সুপারভিশন কনসালটেন্টের (সিএসসি) তত্ত্বাবধানে চলছে পদ্মা সেতুর এই রেলসংযোগ প্রকল্পের কাজ। পদ্মা সেতু ছাড়াও প্রকল্পের মোট ১৭২ কিলোমিটার লেভেল ক্রসিংবিহীন রেলপথে ৩২টি রেল কালভার্ট, ৩৭টি আন্ডারপাস ও ১৩টি রেলসেতুর কাজ শেষ হয়েছে। সেতুর দু’পাশের স্টেশন নির্মাণও চূড়ান্ত পর্যায়ে।
আরও পড়ুন:দেশের আটটি বিভাগে বর্ষণের আভাস দিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি বাড়তে পারে শুক্রবার পর্যন্ত।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির বুধবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দেয়া হয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে রয়েছে।
দিনভর আবহাওয়া কেমন থাকবে, তা নিয়ে বলা হয়, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গা এবং রংপুর, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি বর্ষণ হতে পারে।
তাপমাত্রা নিয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
ঢাকায় বুধবার সন্ধ্যা ৬টা ১৩ মিনিটে সূর্য অস্ত যাবে জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, বৃহস্পতিবার ঢাকায় সূর্যোদয় হবে ভোর ৫টা ৫৩ মিনিটে।
পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার অবস্থা নিয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি বাড়তে পারে।
অধিদপ্তর জানায়, বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৫১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয় সিলেটে। মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে। বুধবার দেশের সর্বনিম্ন ১৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য