‘খনন করার পর নদীতে পানির গভীরতা ও স্রোত বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু এখন আবার আগের মতো অবস্থা হয়ে গেছে। নদী খননের নামে কেবল টাকাটাই গচ্ছা গেল, কাজের কিছুই হলো না।’
কথাগুলো বলছিলেন ঠাকুরগাঁও সদরের বড়দেশ্বরী গ্রামের মকলেছুর রহমান মাস্টার।
ঠাকুরগাঁওয়ে চলছে টাঙ্গন, সুক, লাচ্ছি নদী ও যমুনা খালের খনন কাজ। খননের পর উত্তোলন করা বালু ফেলা হচ্ছে নদীর পার ঘেঁষেই। ফলে বৃষ্টি আর উজানের ঢলে সেসব বালু আবার ফিরে গেছে নদীতে ও আশেপাশের ফসলি জমিতে।
এতে খননের বরাদ্দ গচ্ছা যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া নদের পাশের ফসলি জমিতে বালু পড়ে পতিত হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।
এক বছর আগে শুরু হওয়া এই খনন কাজ শেষে নদীতে নাব্যতা ফেরানোর যে আশা ছিল, সেটা এরই মধ্যে ফিকে হয়ে গেছে। প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল আরও নয় মাস আগে। কিন্তু সেটা তো হয়ইনি, উল্টো নদী থেকে তোলা বালু নদীর পাশাপাশি পাশের কৃষি জমিতে পড়ায় দেখা দিয়েছে আরেক সমস্যা।
বিষয়টি স্বীকার করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও পানি উন্নয়ন বোর্ডও। তারা এখন বলছে, নদী থেকে তোলা বালু বিনা মূল্যে বিতরণ করা হবে।
সারা দেশে ছোট নদ-নদী, খাল ও জলাশয় খনন করে পানি সংরক্ষণের ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে ৬৪টি জেলায় ছোট নদী, খাল এবং জলাশয় পুনঃখনন (প্রথম পর্যায়) প্রকল্প হাতে নেয় সরকার।
২০১৮-১৯ অর্থবছরে নেয়া ওই প্রকল্পের আওতায় ঠাকুরগাঁওয়ের টাঙ্গন, সুক, লাচ্ছি নদী ও যমুনা খাল খননের উদ্যোগ নেয়া হয়। ২৪ কোটি ১৪ লাখ ৩৪ হাজার ৭০০ টাকার চুক্তি মূল্যে টাঙ্গন নদীর ৩৫ কিলোমিটার খনন করে এক লাখ পাঁচ হাজার বর্গ মিটার এলাকায় ঘাস লাগানো ও সাত হাজার গাছ রোপনের কাজটি পায় ঢাকার তাজুল-নিয়াজ জেভি নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
গত বছরের ৮ জানুয়ারি নদ খননের কাজটি উদ্বোধন করেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন। কার্যাদেশ অনুযায়ী গত ২২ এপ্রিল নদ খননের কাজটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও খননের কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি।
গত সেপ্টেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত যেটুকু খনন করা হয়েছে তার বালু আবার স্তুপ করে রাখা হয় নদের পার ঘেঁষে।
গত জুন ও সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিকে দুই দফা টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে টাঙ্গন নদের দুই পার তলিয়ে যায়। আর নদীর পারে রাখা বালুর অধিকাংশই স্রোতের টানে আবার ফিরে যায় নদীর গর্ভ ও আশেপাশের ফসলি জমিতে।
সদর উপজেলার উত্তর বঠিণা গ্রামের কৃষক সাদেকুল ইসলাম বলেন, ‘খননযন্ত্র দিয়া নদীর ধারে ধারে বালু ফেলায় রাখছিল। মেঘের পানিতে আবার বালুলা নদীত চলে গেইছে। সরকার এত টাকা খরচ করে কোনো লাভ হইলনি। হামার নদীখান আবার যেমন ছিল তেমনে আছে।’
বুড়িরবাধ এলাকার কুদ্দুস নামে এক কৃষক বলেন, ‘নদী খুড়িবার পর পাহাড়লাত ঘাস ও গাছ লাগাবে বলে। কিন্তু নদী তো খুঁড়া শেষ। কই এলাও পর্যন্ত গাছ তো দূরের কথা, ঘাসও লাগায়নি। নদীটা আগের মত হয়ে গেইছে।’
আকচা ইউনিয়নের কৃষক মকবুল বলেন, ‘নদীর ধারে তো আমার আবাদি জমি। বালু মেঘের (বৃষ্টির) পানিত ভাসে আমার জমিটাত পড়িছে। এই বালু সরাইতে আর মাটি ভালোভাবে আবাদি করতে তুলতে আরও দুই বছর লাগিবে। এইটা নিয়ে আমি একটু দুঃচিন্তায় আছি।
‘হামরা মনে করছি নদীটা খুড়ে হামার উপকার হবে। কই উপকার না হামার নদীর কাছত যার আবাদি জমি প্রায় সবার ক্ষতি হইছে।’
সদর উপজেলার ঢোলারহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সীমান্ত কুমার বর্মণ বলেন, ‘নদের পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা উপচে গিয়ে তীরবর্তী এলাকার জমিতে চলে যায়। পানির সঙ্গে খননের পর স্তুপ করে রাখা বালুও অর্ধশতাধিক কৃষকের ফসলি জমিতে চলে গেছে। এতে তাদের জমির উর্বরতা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।’
নদীটি খনন করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাজুল-নিয়াজ জেভি। এর অংশীদার তাজুল ইসলাম বলেন, ‘খনন করা বালু বৃষ্টির পানির সঙ্গে আবার নদীতে চলে গেছে এটা স্বীকার করছি। খনন প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী খননের পর উত্তোলিত বালু সরকারি, সামাজিক প্রতিষ্ঠানে নিলামে বা প্রকাশ্যে নিলামে বিক্রি করার নিয়ম রয়েছে। এটা যদি করা হয় তাহলে নদীতে আর বালু পড়বে না।’
ঠাকুরগাঁও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘টাঙ্গন নদী খননের বালু নিয়ে আমরা বিপাকে রয়েছি। ভারী বৃষ্টিপাত হলেই স্তুপ করে রাখা বালু পানির সঙ্গে চলে যাচ্ছে নদীতে ও আশপাশের ফসলি জমিতে। এতে নদীর খনন করা অংশের অনেক জায়গা ভরাট হয়ে গেছে। ভরাট হয়ে যাওয়া সেসব জায়গা আবার নতুন করে খনন করতে হবে। আর খননের পর উত্তোলন করা বালু দ্রুত সরিয়ে নিতে সরকারি প্রতিষ্ঠান বা সামাজিক প্রতিষ্ঠান অথবা প্রয়োজনে বিনা মূল্যে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন:পাসপোর্ট পেতে এখন থেকে আর পুলিশের ভেরিফিকেশন লাগবে না বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে রবিবার তিন দিনের ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকার নতুন নিয়ম চালু করেছে যে, এখন থেকে আর পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে না। পাসপোর্ট পাওয়া নাগরিকদের একটি অধিকার।
‘জন্মসনদ বা এনআইডির জন্য যদি পুলিশ ভেরিফিকেশনের দরকার না পড়ে, তাহলে পাসপোর্টের বেলায় সেটা লাগবে কেন?’
ওই সময় সরকারকে একটি টিম হিসেবে কাজ করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা টিমওয়ার্ক। পুরো টিমের সফলতাকে বাধাগ্রস্ত করে এমন কিছু আমাদের এড়িয়ে যাওয়া উচিত।’
ডিসিদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা মহাশক্তিধর একটি সমাবেশ। আমরা যা করি, যা চিন্তা করি, যা পরিকল্পনা করি, সেটাই সরকার; সেটাই সরকারের চিন্তা, সরকারের ভাবনা। সেটাই সরকারের কর্তব্য।
‘কাজেই এই মহাশক্তি নিয়ে আমরা কী কাজ করব, কী কাজের জন্য আমরা তৈরি, কী কাজে আমরা সফল, কী কাজে আমরা বিফল, সেগুলোই আজকের সমাবেশের আলোচ্য বিষয়।’
তিনি বলেন, ‘সেখানে কাউকে স্তুতি দিয়ে সময় নষ্ট করার কোনো সুযোগ নেই। এই স্তুতিবাক্য পরিহার করার আমরা একটা সিদ্ধান্ত নিলাম। সভা-সমিতিতে স্তুতিবাক্য খুব অগ্রহণযোগ্য জিনিস বলে আমরা চালু করব।’
সরকার পরিচালনাকে খেলার দলের সঙ্গে তুলনা করে ড. ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশে যা কিছু করণীয়, সেই করণীয়র দায়িত্বে আমরা সবাই আছি। এমনভাবে চিন্তা করুন, আমরা একটা খেলার, ক্রিকেট বা ফুটবল খেলার খেলোয়াড়।’
আরও পড়ুন:গ্যাস বা পেট্রলচালিত ফোর-স্ট্রোক থ্রি-হুইলার (সিএনজিচালিত) অটোরিকশার জন্য সরকার নির্ধারিত মিটারের ভাড়ার হারের অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগের বিষয়ে মামলা ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশনার চিঠি প্রত্যাহার করে নিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান রবিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, ফোর-স্ট্রোক থ্রি-হুইলার যান সম্পর্কিত বিআরটিএ কর্তৃক ইস্যুকৃত সাম্প্রতিক নির্দেশনাটি আজ বাতিল করা হয়েছে। বিআরটিএ থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা ডিএমপি কমিশনারের কাছে পাঠানো হয়েছে। ডিএমপি সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবরোধ প্রত্যাহার করে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করার আহ্বান জানিয়েছে।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি মিটারের নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি টাকা আদায় করলে চালকদের জরিমানা বা কারাদণ্ডের নির্দেশনা দেয় বিআরটিএ।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ৩ দিনের সফরে রবিবার কুয়েত গেছেন।
সফরকালে সেনাপ্রধান কুয়েত সরকারের সামরিক ও বেসামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং সামরিক বাহিনী সংশ্লিষ্ট দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা উন্নয়নের লক্ষ্যে মতবিনিময় করবেন।
এ সফরের মাধ্যমে কুয়েতে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনবল নিয়োগ এবং অপারেশন কুয়েত পুনর্গঠনে (ওকেপি) নিয়োজিত বাংলাদেশি সদস্যদের মনোবল বৃদ্ধিসহ কুয়েত সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন-২০২৫ উদ্বোধন করেছেন।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে রবিবার আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।
সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টা দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ডিসিদের সজাগ থাকার নির্দেশ দেন।
একই সঙ্গে তিনি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজারদর নিয়ন্ত্রণে রাখতে মাঠ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধাদের আত্মত্যাগকে সার্থক করতে ও তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সবাই মিলে সব রকম চেষ্টা করবেন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে শনিবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠকের প্রারম্ভিক বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
বেলা তিনটার দিকে এ বৈঠক শুরু হয়।
ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের ছয় মাসে প্রথম ইনিংস বা অধ্যায় শেষ হয়েছে। আজ রাজনৈতিক সংলাপের মাধ্যমে দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু হলো। আসুন প্রতিজ্ঞা করি, আমরা যেন গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধাদের আত্মত্যাগের প্রতি অসম্মান না জানাই।
‘যে কারণে তারা আত্মত্যাগ করেছিল, সেটা যেন পরবর্তী সব প্রজন্ম মনে রাখে, তাদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করে, তাদের আত্মত্যাগকে সার্থক করার জন্য আমরা সবাই মিলে সব রকম চেষ্টা করব তাদের সে স্বপ্ন যেন বাস্তবায়ন করতে পারি।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘তারা এ ত্যাগ না করলে অনেকের মনে প্রশ্ন থাকলেও জবাব খোঁজার আমাদের কোনো সুযোগ থাকত না। প্রশ্ন আমাদের মনে যতটুকু ছিল, বহু বছর ধরে ছিল, সুযোগ পাইনি। অসংখ্য ছাত্র-জনতা আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা সুযোগ পেয়েছি।’
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় পার্টির (জাফর) মোস্তফা জামাল হালদার, বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেম সেলিম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মোহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক, গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য সুব্রত চৌধুরীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
এ ছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বক্তব্য দেবেন।
এর আগে গত ১২ ফেব্রুয়ারি সাত সদস্যের জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার, যার সভাপতি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সহসভাপতি হিসেবে আছেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ।
আরও পড়ুন:নির্বাচন কবে হবে, সেটি জুলাই চার্টারের ওপর নির্ভর করবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমির সামনে শনিবার সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, ‘জুলাই চার্টারের ওপর নির্ভর করবে আমাদের নির্বাচনটা কবে হবে। কারণ এরই মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ডিসেম্বরে মধ্যে নির্বাচন হতে পারে। সে ক্ষেত্রে আমরা হয়তো কিছু সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে পারব। আর পরে যে রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসবে, তারা বাস্তবায়ন করবে।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ ছয় মাস উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ছয় সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা হবে। রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় ঐকমত্যের মাধ্যমে যে সিদ্ধান্তে পৌঁছাবে, আমাদের আশা থাকবে সব রাজনৈতিক দল এটাতে স্বাক্ষর করবে। সেটা হবে জুলাই চার্টার।’
সংস্কার কমিশনের অনেক সুপারিশ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই বাস্তবায়ন সম্ভব বলে মন্তব্য করেন প্রেস সচিব।
তিনি বলেন, ‘আর যেসব ক্ষেত্রে প্রধান ঐকমত্য প্রয়োজন, সেটার জন্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে।’
শফিকুল আলম বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশকে পুনর্গঠন এবং এরপরে আমরা যে রাজনৈতিক সমাধানে যাচ্ছি, কীভাবে আমাদের ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশনটা হবে, তার জন্য আজকে রাজনৈতিক সংলাপের সূচনা।’
আরও পড়ুন:তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন শুরু হচ্ছে রবিবার।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ সম্মেলন উদ্বোধন করবেন।
প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বাসসকে জানান, রবিবার সকাল ১০টায় প্রধান উপদেষ্টা তার কার্যালয়ের শাপলা হলে এ সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন।
ডিসি সম্মেলনে বিভিন্ন অধিবেশন, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ, দিকনির্দেশনা গ্রহণ এবং সমাপনী অনুষ্ঠানসহ ৩৪টি কার্য অধিবেশন থাকবে।
সরকারের নীতিনির্ধারক ও জেলা প্রশাসকদের মধ্যে সামনাসামনি মতবিনিময় এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য প্রতি বছর ডিসি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
মন্তব্য