নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের দাবিতে ৪২ নাগরিক চিঠি দেয়ার ১২ দিনে কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ নেই বঙ্গভবনের।
রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপতি এই চিঠি পেয়েছেন। তবে তিনি কোনো নির্দেশনা দেননি।
সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি এই সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে স্বাধীন নন। তাকে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ মেনে চলতে হবে।
সংবিধানের ৪৮(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতি নিয়োগ ছাড়া অন্য সব দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্রপতিকে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে চলতে হয়।
২০১৭ সালে নির্বাচন কমিশন গঠনের আগে প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতিকে ‘যেরূপ উপযুক্ত বিবেচনা করবেন’ সেভাবে ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ নেন। পরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানান রাষ্ট্রপতি। এটা তিনি করতে পেরেছেন, কারণ প্রধানমন্ত্রী তাকে সে সুযোগ করে দিয়েছেন।
তবে এখন সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতিকে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ মেনে চলতে হবে।
বঙ্গভবনের ওই কর্মকর্তা জানান, ওই চিঠির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রাষ্ট্রপতি কথা বলেছেন কি না, সেটি তারা জানেন না।
রাষ্ট্রপতি কী সিদ্ধান্ত নিলেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতি চিঠিটি দেখেছেন। তবে এ বিষয়ে অফিসিয়ালি কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।’
যারা চিঠি দিয়েছেন, তাদের একজন এনজিও কর্মী বদিউল আলম মজুমদার। সুশাসনের জন্য নাগরিক, সুজনের সভাপতি জানান, বঙ্গভবন থেকে তাদের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ করা হয়নি। তবে তারা এখনও আশা করে আছেন তাদের দাবি মেনে রাষ্ট্রপতি পদক্ষেপ নেবেন।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমরা যেসব অভিযোগ তুলেছি, সেগুলো গুরুতর। এগুলোর তদন্ত হওয়া দরকার। নির্বাচন কমিশনকে দায়বদ্ধতার আওতায় আনা দরকার। যদি তা হয় তাহলেই ভবিষ্যতে বিভিন্ন সাংবিধানিক ও বিধিবদ্ধ সংস্থা অন্যায় করা থেকে বিরত থাকবে, যেটা আমাদের দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার পথকে সুগম করবে।’
চিঠির পর ভোটার ফিরল কেন্দ্রে
দুই বছর আগের একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর যতগুলো উপনির্বাচন বা স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়েছে, সেগুলাতে ভোটার খরা নিয়ে আলোচনা হয়েছে তুমুল।
চলতি বছর ঢাকার তিনটি উপনির্বাচনে ৫ শতাংশ পর্যন্ত ভোট পড়তে দেখা গেছে, যদিও সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী ছিল।
গত ১৮ এপ্রিল ঢাকা-১০ আসনের ওই উপনির্বাচনে ভোট পড়ে ৫ দশমিক ২৮ শতাংশ।
১৮ অক্টোবর ঢাকা-৫ আসনে ভোট পড়ে ১০ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
১৩ নভেম্বর ঢাকা-১৮ আসনে ভোট পড়ে ১৪.১৮ শতাংশ।
৪২ নাগরিকের অভিযোগ ছিল, নির্বাচনের প্রতি আস্থাহীনতার কারণে ভোটাররা কেন্দ্রে যান না।
অবশ্য এই চিঠি দেয়ার নয় দিন পর ২৪টি পৌরসভা নির্বাচনে ব্যাপক ভোটার উপস্থিতি দেখা গেছে। সার্বিকভাবে ভোট প্রদানের হার ছিল ৬৫ শতাংশ। এর মধ্যে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড পৌরসভায় সর্বনিম্ন ৪০ এবং পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় ৮৫ শতাংশের বেশি ভোট পড়ে।
২৮ ডিসেম্বরের ওই নির্বাচনে কোথাও ভোটারদের বাধা দেয়া হয়েছে, এমন খবর আসেনি গণমাধ্যমে। তবে সরকারি দলের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির তিন জন প্রার্থী অনিয়মের অভিযোগ ভোট বর্জন করেন। আর একজন ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেন।
এই নির্বাচনে দুটি পৌরসভায় বিএনপির প্রার্থী জিতেছেন, যার একটি হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।
সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল আছে কি নেই
৪২ নাগরিক যে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন, সেটি আসলে আছে কি না, এ নিয় আইনি বিতর্কও আছে।
চিঠিতে সই করা বদিউল আলম মজুমদারের দাবি, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর মামলার রায়ে আদালত সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনঃস্থাপন (রি-স্টোর) করেছে। রায় রিভিয়ের আবেদন করা হলেও আগের রায়ে আদালতের স্থগিতাদেশ নেই।
তবে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনের মতে, এই ব্যাখ্যা সঠিক নয়। তিনি বলেন ‘এখন তো সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল নাই।
‘সরকার সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে ভিন্ন ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছিল। সুপ্রিম কোর্ট একটা রায়ের মাধ্যমে সেই সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। তবে ওই রায়ের রিভিউ এখন বিচারাধীন।’
‘এখন কোনো অভিযোগ এলে রিভিউ শুনানি শেষ করার পর সিদ্ধান্ত হবে কোন প্রক্রিয়ায় তদন্ত হবে।’
উচ্চ আদালতের বিচারক অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাস হয়। তবে এ সংশোধনীকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিমকোর্টের নয় আইনজীবী রিট করেন। এরপর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয় হাইকোর্ট। এ রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করলে আপিল বিভাগও হাইকোর্টের রায় বহাল রাখে। এরপর রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। সেই আবেদন এখনও নিষ্পত্তির অপেক্ষায়।
রাষ্ট্রপতিকে দেয়া চিঠিতে সই করা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনি লড়াই করা সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্না পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল বলবৎ নাই, এটা কোথায় আছে? রিভিউ শুনানির জন্য আছে। এর মানে তো এটা নয় যে, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল স্থগিত।’
রাষ্ট্রপতি সাড়া না দিলে সবার মতামতের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে বলেও জানান জেড আই খান পান্না।
অভিযোগ ও ইসির জবাব
১৯ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতিকে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেন দেশের ৪২ নাগরিক।
চিঠিতে আর্থিক অসদাচরণ, কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম, নিয়মবহির্ভূত বিলাসবহুল গাড়ির ব্যবহার, ইভিএম ক্রয়ে অনিয়ম, অংশীজনের মতামত উপেক্ষা, নির্বাচনি অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়া, রিটার্নিং কর্মকর্তা সাক্ষরিত ফলাফলের সঙ্গে কেন্দ্রের ফলাফলের অমিলসহ নানা অভিযোগ আনা হয়।
চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচন কমিশনের বর্তমান সদস্যরা দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই বিভিন্ন গুরুতর অসদাচরণে লিপ্ত। তারা একদিকে গুরুতর আর্থিক দুর্নীতি ও অনিয়মে যুক্ত হয়েছেন, যা অভিশংসনযোগ্য অপরাধ। তারা বিভিন্নভাবে আইন ও বিধিবিধানের লঙ্ঘন করে গুরুতর অসদাচরণ করে চলেছেন।
নাগরিকদের মধ্যে রয়েছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খান, আকবর আলি খান ও সুলতানা কামাল, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, কামাল হোসেনের স্ত্রী হামিদা হোসেন, কামাল হোসেনের মেয়ে সারা হোসেন, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ, অর্থনীতিবিদ মইনুল ইসলাম ও আহসান এইচ মনসুর, এনজিও কর্মী বদিউল আলম মজুমদার, রাশেদা কে চৌধুরী, খুশী কবীর, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, আইনজীবী শাদহীন মালিক, বামপন্থি রাজনীতিক আনু মুহাম্মদ, আইনজীবী জেড আই খান পান্না, আলোকচিত্রি শহীদুল আলম।
এই চিঠি দেয়ার পরদিন নির্বাচন কমিশনার শাদাহাৎ হোসেন চৌধুরী বলেন, ৪২ নাগরিকের কেউ কেউ নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে ব্যবসা করতে চেয়েছিলেন। তারা সে সুযোগ না পেয়ে নানা অভিযোগ তুলেছেন।
২৪ ডিসেম্বর নির্বাচন ভবনে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা। তিনি তাদের বিরুদ্ধে নানা সব অভিযোগকে উড়িয়ে দেন।
সিইসি তার বক্তব্যে সবগুলো অভিযোগ খণ্ডন করে বলেন, প্রশিক্ষণ ব্যয়ে আর্থিক অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই। একাদশ সংসদ নির্বাচন ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে ১৫ বিশেষ বক্তার জন্য দুই কোটি টাকা বরাদ্দই ছিল না। সম্পূর্ণ অসত্য তথ্যের ভিত্তিতে অভিযোগ আনা হয়েছে।
নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিলাসবহুল গাড়ি ব্যবহারের অভিযোগের জবাবে নুরুল হুদা বলেন, তারা যে গাড়ি ব্যবহার করেন, সেটা একেবারেই সাধারণ মানের।
ইভিএম কেনায় অস্বচ্ছতার অভিযোগের জবাব দিয়ে সিইসি বলেন, ইভিএম কেনায় সরাসরি নির্বাচন কমিশন যুক্ত নয়। সেনাবাহিনীর মাধ্যমে এই যন্ত্র আমদানি করা হয়। টাকা সরাসরি সরকারি কোষাগার থেকে সেনাবাহিনীকে পরিশোধ করা হয়।
জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে অসদাচরণের যে অভিযোগ আনা হয়েছে তাকেও অসত্য বলেন সিইসি। তার দাবি, নির্বাচন নিয়ে পর্যবেক্ষক বা গণমাধ্যম কোনো অভিযোগ তোলেনি।
৪২ নাগরিকের এই চিঠি বিএনপির ড্রাফট করে দেয়া বলে মন্তব্য করেছেন সরকারের মুখপাত্র তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
অন্যদিকে এই চিঠি দেয়ায় নাগরিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আরও পড়ুন:ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রোল ও অকটেনের দাম কমিয়েছে সরকার। সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম লিটারে এক টাকা কমিয়ে আজ বুধবার (৩০ এপ্রিল) জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। নতুন এ দাম বুধবার দিনগত মধ্যরাত থেকে কার্যকর হবে।
নতুন মূল্য অনুযায়ী, ডিজেলের বিক্রয়মূল্য প্রতি লিটার ১০৫ টাকা থেকে এক টাকা কমে ১০৪ টাকা, কেরোসিন ১০৫ টাকা থেকে এক টাকা কমে ১০৪ টাকা এবং অকটেন ১২৬ টাকা থেকে এক টাকা কমে ১২৫ টাকা, পেট্রোল ১২২ টাকা থেকে এক টাকা কমে ১২১ টাকায় পুনঃনির্ধারণ/সমন্বয় করা হয়েছে। যা ১ মে ২০২৫ থেকে কার্যকর হবে।
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমা-বাড়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে দেশে ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি মাসে জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণ করা হয়।
এ জন্য ‘জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ নির্দেশিকা’র আলোকে মে মাসের জন্য তুলনামূলক সাশ্রয়ী মূল্যে জ্বালানি তেল সরবরাহ নিশ্চিতে জ্বালানি তেলের দাম কমানো হয়েছে বলে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে।
সর্বশেষ গত ১ ফেব্রুয়ারি সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম লিটারে এক টাকা বাড়িয়ে বর্তমান দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল। এ মূল্য মার্চ ও এপ্রিল মাসেও বহাল ছিল।
বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে একটি সিম্পোজিয়াম আয়োজন করছে বাংলাদেশি জার্নালিস্ট ইন ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়া (বিজেআইএম)। এতে অংশ নেবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলমসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় সাংবাদিক ও গবেষকরা। আগামী শনিবার (৩ মে) বিকাল ৩টায় ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকার অডিটরিয়ামে এই সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিজেআইএমের আহ্বায়ক স্যাম জাহান ও সদস্য সচিব মোহাম্মদ আলী মাজেদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ আফটার দ্য মনসুন আপরাইজিং : দ্য মিডিয়া ল্যান্ডস্ক্যাপ’ শীর্ষক এই সিম্পোজিয়ামটি তিনটি সেশনে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম সেশনে বিজেআইএম প্রতিষ্ঠার পর থেকে এর অর্জনের একটি সারসংক্ষেপ ও পরিকল্পনার রূপরেখা উপস্থাপন করা হবে।
দ্বিতীয় সেশনে বিজেআইএমের একজন সদস্যের পরিচালনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলমের সঙ্গে একটি উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হবে। এতে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, রাজনীতি, কূটনীতি, ভবিষ্যৎ, আমলাতন্ত্র ইত্যাদি বিষয়ে যে কোনো প্রশ্ন করা যাবে।
তৃতীয় সেশনে দেশের নেতৃত্বস্থানীয় সাংবাদিক, গবেষক ও অ্যাক্টিভিস্টদের নিয়ে একটি প্যানেল আলোচনা হবে। এতে অংশ নেবেন- প্রথম আলোর ইংরেজি বিভাগের প্রধান আয়েশা কবির, রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ)-এর প্রতিনিধি সেলিম সামাদ, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের প্রধান প্রতিবেদক আব্বাস উদ্দিন, ইরাবতী ইংরেজির প্রতিবেদক মুক্তাদির রশিদ, ডেইলি স্টারের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জাইমা ইসলাম, বাংলাদেশ সরকার গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান গবেষক এম আবুল কালাম আজাদ ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ওমর ফারুক।
সিম্পোজিয়ামে সাংবাদিক, গবেষক, শিক্ষার্থী, রাজনীতিবিদ, কূটনীতিকসহ সর্বসাধারণ মানুষের যে কেউ অংশ নিতে পারবে। তবে আসন সংখ্যা সীমিত হওয়ায় আগ্রহীদের দ্রুত নাম, বয়স, পেশা ও যোগাযোগ নম্বরসহ [email protected]এ প্রাক-নিবন্ধন করতে হবে।
‘মানবিক করিডর’ নিয়ে জাতিসংঘ বা অন্য কোনো সংস্থার সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে কক্সবাজার হয়ে জাতিসংঘের ‘মানবিক করিডর’-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি গতকাল মঙ্গলবার বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, সরকার তথাকথিত মানবিক করিডর নিয়ে জাতিসংঘ বা অন্য কোনো সংস্থার সঙ্গে কোনো আলোচনা করেনি।”
শফিকুল আলম বলেন, ‘আমাদের অবস্থান হলো, জাতিসংঘের নেতৃত্বে রাখাইনে যদি মানবিক সহায়তা প্রদান করা হয়, তবে বাংলাদেশ লজিস্টিক সহায়তা দিতে আগ্রহী থাকবে।’
তিনি জানান, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) তথ্য অনুযায়ী রাখাইন রাজ্যে তীব্র মানবিক সংকট চলছে।
দুর্যোগকালীন সময়ে বিভিন্ন দেশকে সহায়তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যার সাম্প্রতিক উদাহরণ ভূমিকম্প-পরবর্তী সময়ে মিয়ানমারকে সহায়তা প্রদান করা।
প্রেস সচিব সতর্ক করে বলেন, ‘এছাড়াও, আমরা উদ্বিগ্ন যে এ ধরনের মানবিক সংকট দীর্ঘ হলে রাখাইন থেকে আরও মানুষের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে, যা আমরা সামাল দিতে পারব না।’
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিশ্বাস করে যে জাতিসংঘ-সমর্থিত মানবিক সহায়তা রাখাইনকে স্থিতিশীল করতে এবং শরণার্থীদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় রাখাইনে সহায়তা পাঠানোর বাস্তবসম্মত একমাত্র পথ হলো বাংলাদেশ।
শফিকুল আলম বলেন, এই রুট ব্যবহার করে সহায়তা পৌঁছানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ নীতিগতভাবে লজিস্টিক সহায়তা প্রদানে সম্মত রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘তবে, রাখাইনে সহায়তা প্রদানের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। যথাসময়ে আমরা বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে পরামর্শ করব।’
বাংলাদেশের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বিশ্বের বড় কোনো শক্তি এই করিডরের সঙ্গে জড়িত রয়েছে বলে যে প্রতিবেদন করা হয়েছে, সেগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও প্রপাগান্ডা বলে তিনি দাবি করেন।
প্রেস সচিব বলেন, ‘বিগত কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশকে লক্ষ্য করে একের পর এক বিদ্বেষপূর্ণ বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াতে আমরা দেখেছি, যা এখনো চলছে। এ ধরণের প্রচারণাও তার ব্যতিক্রম নয়।’
আমরা এমন এক বিশ্বে বাস করি যেখানে যুদ্ধের প্রস্তুতি না রাখাটা আত্মঘাতী। এ মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর কুর্মিটোলায় বিমান বাহিনীর বীর উত্তম এ কে খন্দকার ঘাঁটিতে ছিল বার্ষিক মহড়া। ‘আকাশ বিজয়’ নামে হয় এ বছরের বাৎসরিক মহড়া। সেখানে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমি যুদ্ধবিরোধী মানুষ। পৃথিবীতে যুদ্ধ হোক এটা আমরা কামনা করি না। যুদ্ধ প্রস্তুতি অনেক সময় যুদ্ধের দিকে নিয়ে যায়। কাজেই যুদ্ধ প্রস্তুতি নিয়েও একটা ঘোরতর আপত্তি। কিন্তু এমন বিশ্বে আমরা বাস করি, প্রতিনিয়ত যুদ্ধের হুমকি আমাদের ঘিরে থাকে। তো সেখানে প্রস্তুতি না নিয়ে থাকা এটা অসম্ভব হয়ে পড়ে।
‘কাজেই এই পরিস্থিতির মধ্যে যুদ্ধের প্রস্তুতি না নেয়াটা আত্মঘাতী। প্রস্তুতি নিতে হলে আধা-আধি প্রস্তুতির কোনো জায়গা নাই।’ বলেন তিনি।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলছে বিমান বাহিনী। সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তৎপর থাকতে হবে। দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে আত্মনির্ভরতার প্রমাণ দিয়েছে বিমান বাহিনী। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির জন্য সরকার সহযোগিতা করছে বাহিনীটিকে। পেশাগত কারিগরি সক্ষমতা বজায় রাখতে হবে।
দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য যুগোপযোগী বিমান বাহিনী গড়ে তুলতে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
এর আগে, সকালে প্রধান উপদেষ্টার তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে ঘরের চাবি তুলে দেয়া এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দেন প্রধান উপদেষ্টা। চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লার বন্যাকবলিত পরিবারের মাঝে পুনর্বাসনকৃত ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়।
লন্ডনে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তাকে আনতে বিএনপির অনুরোধে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেন। গতকাল মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে লন্ডন থেকে ঢাকায় ফেরত আনতে বিএনপির পক্ষ থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছিল।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই অনুরোধ নিয়ে কাজ করছে। এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত করা হচ্ছে। জানা যায়, খালেদা জিয়াকে লন্ডন থেকে দেশে ফেরাতে কাতারের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের আয়োজন করতে গত সপ্তাহে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনকে চিঠি লিখেছেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য বর্তমানে লন্ডনে রয়েছেন। তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল, তবে ‘আশঙ্কামুক্ত’ নয়। তথাপি তিনি এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে দেশে ফিরতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় চিকিৎসক বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে দেশে ফেরাতে পরামর্শ দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বিএনপির মহাসচিবের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার লন্ডন ও দোহার বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে দেশে ফেরাতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
বিএনপির চেয়ারপাসন খালেদা জিয়া ২০১৮ সালে একটি দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন। কভিড-১৯ মহামারির সময় বিগত সরকার তাকে বিশেষ বিবেচনায় কারামুক্তি দেয়।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দীনের এক আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পান। এরপর দুর্নীতির যে দুটি মামলায় তিনি কারাবন্দি ছিলেন, সেগুলোর রায় বাতিল করেন আদালত।
গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হয়। টানা ১৭ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর লন্ডন ক্লিনিক থেকে গত ২৫ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে তারেক রহমানের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। অর্ধযুগের বেশি সময় পর এবার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ উদ্যাপন করেছেন খালেদা জিয়া। তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কারাবন্দি অবস্থায় চারটি ঈদ কেটেছে কারাগারে ও বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে।
বর্তমানে তারেক রহমানের বাসায় চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষা চলছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ শারীরিক নানা অসুস্থতায় ভুগছেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কাশ্মীরের পেহেলগামে প্রাণঘাতী হামলার পর সামরিক জবাবদিহির বিষয়ে সেনাবাহিনীকে ‘পদ্ধতি, লক্ষ্য ও সময় নির্ধারণে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর বরাত দিয়ে এনডিটিভি গতকাল মঙ্গলবার রাতে এ তথ্য জানিয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল ও প্রতিরক্ষাপ্রধান জেনারেল অনিল চৌহানের সঙ্গে বৈঠকে এই বার্তা দিয়েছেন মোদি।
প্রধানমন্ত্রী মোদি আবারও বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ধ্বংসাত্মক জবাব দেওয়াই আমাদের জাতীয় সংকল্প’ এবং তিনি ভারতের সেনাবাহিনীর প্রতি ‘সম্পূর্ণ বিশ্বাস ও আস্থা’ রাখেন।
এই বৈঠকের কিছুক্ষণের মধ্যেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও ভারতীয় জনতা পার্টির আদর্শিক অভিভাবক রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) প্রধান মোহন ভগবত প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে পৌঁছন।
সূত্রের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর এই বার্তা পেহেলগামে হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর জড়িতদের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের সবুজ সংকেত দিয়েছে। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুলওয়ামা হামলার পর এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা। তখন ভারত পাকিস্তানের বালাকোটে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ পরিচালিত প্রশিক্ষণশিবিরে নিখুঁত বিমান হামলা চালিয়েছিল।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সহায়তায় পরিচালিত সেই শিবিরগুলোকেই লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল।
ছয় বছর পর এই হামলার সঙ্গে আবারও পাকিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধ সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার সম্পৃক্ততার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। তাদেরই ছায়া সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) এই হামলার দায় স্বীকার করেছে বলে এনডিটিভি জানিয়েছে।
এদিকে ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোও বলেছে, প্রাপ্ত প্রমাণ আবারও পাকিস্তানকেই ইঙ্গিত করছে।
এই প্রমাণ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের, যেমন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, জাপান ও কয়েকটি ইউরোপীয় দেশের প্রতিনিধিদের দেখানো হয়েছে।
ভারত ইতোমধ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক কূটনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। প্রথম ধাপে নয়াদিল্লি পাকিস্তানিদের জন্য জারি করা ভিসা বাতিল করে দিয়েছে। তবে পাকিস্তানি হিন্দু ও দীর্ঘমেয়াদি অনুমোদনপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রে এ সিদ্ধান্ত প্রযোজ্য নয়। চিকিৎসার উদ্দেশ্যে দেওয়া ভিসাও বাতিল করা হয়েছে।
গত রোববার সব কার্যকর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর সীমান্ত পয়েন্টগুলোতে, বিশেষ করে বিখ্যাত আটারি-ওয়াঘা চেকপয়েন্টে পাকিস্তানি নাগরিকদের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়। সেদিন থেকে প্রায় এক হাজার পাকিস্তানি নাগরিক ভারত ছেড়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ব্যক্তিগতভাবে রাজ্যগুলোর মুখ্যমন্ত্রীদের এই সিদ্ধান্ত কঠোরভাবে বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আরও কূটনৈতিক ব্যবস্থা হিসেবে ভারত ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত ইন্দাস পানি চুক্তিও স্থগিত করেছে। এই পানি বণ্টন চুক্তির অধীনে পাকিস্তান তার প্রাপ্য মোট পানির প্রায় ৮৫ শতাংশ পেত। এই চুক্তি স্থগিত করাকে ‘যুদ্ধ ঘোষণার শামিল’ বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে পাকিস্তান। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসলামাবাদ ভারতের সব ভিসা বাতিল করেছে ও শত শত ভারতীয়কে বহিষ্কার করেছে। পাকিস্তান আরও কিছু দ্বিপক্ষীয় চুক্তি, যেমন ১৯৭২ সালের শিমলা চুক্তিও স্থগিত রেখেছে।
এরই মধ্যে পাকিস্তানের এক শীর্ষ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সম্ভাবনার বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজকে দেওয়া এক মন্তব্যে প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ বলেন, আগামী কয়েক দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পেহেলগামে হামলা নিয়ে নিজের প্রথম প্রকাশ্য মন্তব্যে প্রধানমন্ত্রী মোদি প্রতিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, তার সরকার সন্ত্রাসবাদের ভয়াবহ পরিকল্পনাকে সফল হতে দেবে না।
তিনি আরও বলেন, ‘এবার সময় এসেছে সন্ত্রাসের আখ্যানের শেষ চিহ্নও মুছে ফেলার। ১৪০ কোটি মানুষের ইচ্ছাশক্তি সন্ত্রাসের প্রভুদের মেরুদণ্ড ভেঙে দেবে।’
এরপর তিনি একাধিক শক্ত বার্তা দিয়েছেন, যাতে তিনি বলেন, ভারত সন্ত্রাসকে ভয় পায় না এবং এই ভয়াবহ হামলার পরিকল্পনাকারীসহ প্রত্যেক জড়িত ব্যক্তিকে খুঁজে বের করে জবাবদিহির আওতায় আনা হবে।
সূত্র: এনডিটিভি
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ দেশের চারটি জেলার বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে ঘর বিতরণ করেছেন।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিশেষ আবাসন প্রকল্পে নির্মিত মোট তিনশটি ঘর ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জেলায় বিতরণ করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টার পক্ষে সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসকরা সুবিধাভোগীদের মাঝে ঘরের চাবি হস্তান্তর করেন।
অধ্যাপক ইউনূস ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে ভার্চুয়ালি চারটি জেলায় অনুষ্ঠিত ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
ফেনীতে ১১০টি, নোয়াখালীতে ৯০টি, কুমিল্লায় ৭০টি এবং চট্টগ্রামে ৩০টি ঘর সুবিধাভোগীদের মাঝে বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে সুবিধাভোগীরা তাদের প্রতিক্রিয়া জানান।
প্রধান উপদেষ্টা তার বক্তব্যে, বরাদ্দকৃত টাকার অর্ধেক দিয়েই সুষ্ঠু ভাবে প্রকল্প শেষ করায় প্রকল্পের সাথে যুক্ত সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, বীর প্রতীক এবং সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে জ্যেষ্ঠ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এই বিশেষ গৃহায়ন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে।
মন্তব্য