সাম্প্রতিক কিছু উপনির্বাচন আর স্থানীয় সরকার নির্বাচনের তুলনায় পৌরসভা নির্বাচনে ভোটারের উপস্থিতি অনেক বেশি।
প্রথম দফায় ২৪টি পৌরসভায় যে ৩১৯টি কেন্দ্রে ভোট চলছে, তার সিংহভাগ কেন্দ্রেই সকাল থেকে ভোটারের লাইন দেখা গেছে। ঢাকার বাইরে তীব্র শীতেও দলে দলে কেন্দ্রে এসেছে মানুষ।
নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিব আসাদুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সারা দেশ থেকে আসা তথ্য অনুযায়ী ভোট খুব ভালো হচ্ছে। দুই একটি জায়গায় বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলেও সামগ্রিকভাবে পরিবেশ ভালো আছে। বিপুল সংখ্যক ভোটারের উপস্থিতির তথ্য এসেছে আমাদের কাছে। ভোট শেষ হলে বলতে পারব কত শতাংশ পড়েছে। তবে আমাদের ধারণা ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ভোট পড়বে।
হবিগঞ্জে ভোট হচ্ছে শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার নয়টি কেন্দ্রে।
এর মধ্যে শায়েস্তাগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, বড়চর বিদ্যালয়, সুদিয়াখলা কেন্দ্র ঘুরে দেখেছেন নিউজবাংলার প্রতিনিধি কাজল সরকার।
সুদিয়াখলা কেন্দ্রের ভোটার আফজল মিয়া বলেন, ‘উপজেলার বুটে (ভোট) মানুষ বুট দিতে আইছে না। এই বুটে মানুষে ভইরা গেছেগা। আটটা থাকাইকা বুট আরম্ব অইছে। কিন্তু মানুষ আইছে সাতটার থাইকাঅই। ইবিএম (ইভিএম) নিয়া আমরা টেনশন করছিলাম। কিন্তু দেখলাম ইবিএম দিয়া বুট দেওয়ন আরও সুজা।’
শায়েস্তাগঞ্জ রেল জংশন এলাকার ব্যবসায়ী মো. সুলতান মিয়া বলেন, ‘বিগত সময়ে দেখেছি ভোটকেন্দ্রে গরু-ছাগল ঘুমাতে। কিন্তু এই পৌরসভা নির্বাচনে গরু-ছাগল ঘুমাবে দূরের কথা ভোটারেরই জায়গা হচ্ছে না।’
শায়েস্তাগঞ্জ বালিকা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে আসা সামছুন্নাহার বলেন, ‘বাড়িত অনেক কাম আছে। এল্লাইগা সকাল সকাল বুট দিতাম আইছি। ভোট দিয়া গিয়া রান্না-বান্না করমু।’
একই কেন্দ্রে আসা ফিরোজা বেগম বলেন, ‘বুট দিতাম না কেরে? পাঁচ বছরে একবার বোট দিতাম পারি, সব কাম পালাইয়া হইলেও বুট দিমু। কত বেইট্টাইন বুট দিত আইছে। লাইনে খাড়াইয়া বুট দেওয়নের একটা মজা আছে।’
স্থানীয় নির্বাচন হওয়ার কারণে ভোটার উপস্থিত বেড়েছে বলে মনে করেছেন নাগরিক কমিটি শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দিন রুমি। তিনি বলেন, ‘পৌরসভা নির্বাচন এবং জাতীয় বা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে একটা বিশাল ব্যবধান আছে। এই নির্বাচনে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে আসতে না চাইলে কাউন্সিলর প্রার্থী ও তাদের কর্মীরা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট কেন্দ্রে নিয়ে আসে।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি ওয়ার্ডে একাধিক প্রার্থী থাকার কারণে প্রতিটি ভোটারেরও কিন্তু নির্বাচনে নিজস্ব প্রার্থী রয়েছে। যে কারণে অন্য নির্বাচনের চেয়ে ভোট উপস্থিতি বেড়েছে।’
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাদেকুল ইসলাম বলেন, ‘ভোটার উপস্থিতি খুবই ভালো। দুপুরের মধ্যে প্রতিটি কেন্দ্রেই ৫০ শতাংশ ভোট পড়ে। এছাড়া এখন পর্যন্ত কোনো কেন্দ্রে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।’
কুষ্টিয়ার খোকসা পৌরসভার কাদিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে মোট ভোটার এক হাজার ৬০১ জন। এর মধ্যে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত ৮৯৪ জন ভোটার তাদের রায় দেন।
এই পৌরসভায় মোট কেন্দ্র নয়টি। নিউজবাংলার কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জাহিদুজ্জামান গেছেন ছয়টি কেন্দ্রে। তিনি বলেন, ‘যদি বাইরের লাইন দেখে বিবেচনা করি, তাহলে বলতে হবে অভাবনীয় ভোটার উপস্থিতি। নিকট অতীতে আমরা সংবাদকর্মীরা এমনটি দেখিনি।’
বরিশালের বাকেরগঞ্জ পৌরসভার জে এস ইউ ভোট কেন্দ্রে ভোটার এক হাজার ৯১৭ জন। বেলা দুইটা পর্যন্ত ভোট পড়ে ৮৩৪টি।
তবে এই কেন্দ্রে ইভিএমে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এক ঘণ্টা ভোটগ্রহণ বন্ধ ছিল। নইলে আরও ভোট পড়ত।
পৌরসভায় মোট কেন্দ্র নয়টি। নিউজবাংলার বরিশাল প্রতিনিধি তন্ময় তপু গেছেন তিনটি কেন্দ্রে। তিনি বলেন, ‘সকালে ভোটার উপস্থিতি তেমন ছিল না। ১১টার পর ধীরে ধীরে ভোটার আসতে শুরু করে। আমরা ভোটারদের সঙ্গে কথা বলেছি। একাধিক ব্যক্তি আমাদের বলেছেন, ইভিএমে ভোটে স্বচ্ছতা আছে বলে তাদের ধারণা। এ কারণে তারা কেন্দ্রে ফিরেছেন।’
মানিকগঞ্জে ভোট হচ্ছে ২৫টি কেন্দ্রে। নিউজবাংলার মানিকগঞ্জে প্রতিনিধি আজিজুল হাকিম গেছেন আটটি কেন্দ্রে।
তিনি বলেন, ‘সকালে কেন্দ্রগুলোতে ভোটারের লাইন ছিল। তবে পুরুষের তুলনায় নারী ভোটার দেখেছি দ্বিগুণ। এই লাইন থাকে বেলা ১২টা পর্যন্ত। এরপর কেন্দ্রগুলোতে আর লাইন দেখা যায়নি।’
তিনি বলেন, ‘বিগত কয়েক বছরের মধ্যে এত ভোটার উপস্থিতি মানিকগঞ্জে কেউ দেখেনি। ’
ভোটের সামগ্রিক পরিবেশ কেমন ছিল-জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কয়েকটি কেন্দ্রের একাধিক ভোটার বলেছেন, ইভিএমে কোথায় কোথায় ভোট দিতে হবে, সেটা দেখিয়ে দেয়ার নামে নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা নিজেরাই ভোট দিয়ে দিয়েছেন। তবে বাকি কেন্দ্রগুলোকে অভিযোগ পাওয়া যায়নি।’
তিনি বলেন, খান বাহাদূর আওলাদ হোসেন কেন্দ্রে কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া হয়েছে। এর বাইরে তেমন কোনো গেলযোগ নেই কোথাও।
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর ১০টা কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি আরও বেশি।
নিউজবাংলার জেলা প্রতিনিধি কুরবার আলী গেছেন ছয়টি কেন্দ্রে। তিনি বলেন, ‘সকাল ১০টা পর্যন্ত পুরুষদের উপস্থিত ছিল বেশি। ১০টার পর থেকে নারীদের উপস্থিতি বাড়ে। দুপুর আড়াইটার পর এত বড় লাইন হয় যে একেকটিতে ৬০ থেকে ৭০ জনের বেশি মানুষ দাঁড়িয়ে থাকে ভোট দিতে। আমার ধারণা, উপস্থিতি যে পরিমাণ, তাতে চারটার মধ্যে ভোট শেষ করা নাও যেতে পারে।’
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শাহীনুর রহমান প্রামাণিক নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, বেলা দেড়টা পর্যন্ত ৫৫ থেকে ৬০ শতাংশ ভোট পড়েছে।
অভিযোগও আছে
দুপুরের মধ্যে ঢাকার ধামরাই, পাবনার চাটমোহর ও খুলনার চালনায় কারচুপির অভিযোগ এনে তিন জন প্রার্থী অবশ্য ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। অন্য এলাকাগুলোতে প্রার্থীরা বড় ধরনের কোনো অভিযোগ তোলেননি।
২৪টি পৌরসভায় মোট ভোটার ছয় লাখ ২৪ হাজার ৮০৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ তিন লাখ ৭ হাজার ৩৭ জন এবং নারী তিন লাখ ১৭ হাজার ৭৭০ জন।
চলতি বছর বেশ কয়েকটি সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনে ভোটের নিম্নহার নিয়ে তুমুল আলোচনা চলছে।
গত ১৮ এপ্রিল ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচনে ভোট পড়ে ৫ দশমিক ২৮ শতাংশ।
১৮ অক্টোবর ঢাকা-৫ আসনে ভোট পড়ে ১০ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
১৩ নভেম্বর ঢাকা-১৮ আসনে ভোট পড়ে ১৪.১৮ শতাংশ।
নির্বাচন নিয়ে বিরোধী দলগুলোর নানা অভিযোগের পাশাপাশি ভোটার উপস্থিতির নিম্নহার নিয়েও সমালোচনার মুখে পড়ে নির্বাচন কমিশন। আর এবার পৌরসভা নির্বাচনের আগে ৪২ জন নাগরিকের এক যৌথ বিবৃতিতে কমিশনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের পাশাপাশি ভোটার উপস্থিতি কম থাকার বিষয়টিও উঠে আসে।
নাগরিকরা নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করতেও রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে পৌরসভা নির্বাচনে কী হয়, তা নিয়ে দৃষ্টি ছিল রাজনৈতিক মহলে।
এই পৌর নির্বাচনে প্রায় সব এলাকাতেই প্রচার চলেছে ব্যাপক। কিছু কিছু এলাকায় কয়েক জন প্রার্থী প্রচারে নিষ্ক্রিয় থাকলেও সিংহভাগ এলাকায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা ভোটারের দুয়ারে দুয়ারে গেছেন।
মেয়রদের পাশাপাশি কাউন্সিলর প্রার্থীরাও সকাল থেকে রাত অবধি চালিয়েছেন গণসংযোগ।
৯৩ জন মেয়র প্রার্থীসহ মোট এক হাজার ১৬০ জন প্রার্থী ও তার সমর্থকরা কেন্দ্রে যেতে আহ্বান জানিয়েছেন ভোটারদের।
আরও পড়ুন:স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, বাহিরের ইন্ধনে দুষ্কৃতকারীরা পূজাকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করেছিল। তারা সফল হতে পারেনি।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের ইছাপুরায় শ্রী শ্রী সার্বজনীন দুর্গাপূজা মণ্ডপ পরিদর্শনকালে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, পূজার শুরুতে ধর্ষণের ঘটনা প্রচার করে পূজাকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হয়েছে। এ কাজে বাহিরের ইন্ধন ছিল কিন্তু দুষ্কৃতকারীরা সফল হতে পারেনি।
এবার বাংলাদেশের সব জায়গায় ভালোভাবে উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে পূজা সম্পন্ন হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে অস্থিতিশীল বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, দুর্গাপূজা ও বৌদ্ধদের বিজু উৎসব যাতে ভালোভাবে হতে না পারে তার জন্য পার্শ্ববর্তী দেশের সহযোগিতায় কিছু সন্ত্রাসী এ ধরনের কাজ করেছে।
তিনি বলেন, স্থানীয় প্রশাসন এবং বিশেষ করে পূজা কমিটির সহযোগিতায় এ বছর শান্তিপূর্ণভাবে পূজা সম্পন্ন হয়েছে। এ জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা আক্তার, সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল ) মো. ইব্রাহিম, পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি বাদর পাল। সূত্র : বাসস
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা দ্রুত প্রত্যাহার হবে এমন কোন সম্ভাবনা নেই।
বরিশাল নগরীর শংকর মঠ পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আজ এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, যখন একটা দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়, স্থায়ী কি অস্থায়ী এ ধরনের প্রশ্ন থাকে। আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের উপর দেয়া নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়া হবে এরকম কোনো সম্ভাবনা আমি দেখছি না।
বিদেশি গণমাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা বলেন, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অশান্ত পাহাড় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পাহাড়কে যারা অশান্ত করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে সরকার।
তিনি আজ দুপুরে বরিশাল সার্কিট হাউজে পৌঁছে নগরীর নতুন বাজার সংলগ্ন শংকর মঠ পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের সাঙ্গে সাক্ষাৎ ও কুশল বিনিময় করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- বরিশাল জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন, পুলিশ সুপার মো. শরীফ উদ্দীন, শংকর মঠ পূজা মণ্ডপ কমিটির সভাপতি কানু লাল সাহা ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক তম্ময় তপু প্রমুখ।
বিদেশে পাচার হয়ে যাওয়া অর্থের একটি অংশ আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আশাবাদী অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি মঙ্গলবার এ কথা বলেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মাধ্যমে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার প্রক্রিয়া ক্রমান্বয়ে এগোচ্ছে। এটি সময়সাপেক্ষ বিষয়, একদিনে সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, যারা বিদেশে টাকা পাচার করে তারা সাধারণত খুব কৌশলী ও প্রযুক্তিগতভাবে দক্ষ হয়। ফলে ফেরত আনার কাজ দীর্ঘমেয়াদি ও জটিল হয়ে পড়ে।
ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ‘অর্থ ফেরত আনা মানে সুইস ব্যাংকে ফোন দিয়ে টাকা নিয়ে আসা নয়। আন্তর্জাতিক আইনি ও আর্থিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই এটি করতে হয়। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে কিছু অগ্রগতি হয়েছে এবং বেশ কিছু বিখ্যাত আইনি সংস্থার সঙ্গে আলোচনা চলছে। কিছু নির্দিষ্ট বিচার ব্যবস্থার সঙ্গেও আলোচনা এগোচ্ছে। আমরা আশা করি ফেব্রুয়ারির মধ্যে কিছু ফল পাওয়া যাবে।’
অর্থ উপদেষ্টা জানান, সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ইতোমধ্যে ১১-১২ টি মানিলন্ডারিং মামলা চিহ্নিত করেছে এবং সংশ্লিষ্ট সম্পদের তদন্ত অব্যাহত আছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক সম্পদ জব্দ করেছে, বিদেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট শনাক্ত করেছে এবং সংশ্লিষ্টদের পাসপোর্ট ও বসবাসের তথ্য সংগ্রহ করেছে। এসব মামলা আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই এগোচ্ছে।’
আগামী নির্বাচনের পর নতুন সরকার আপনাদের ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে কি না-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘বাধ্য হয়ে তাদের চালিয়ে যেতে হবে। কারণ আমরা প্রক্রিয়াগুলো চালু করে গেলাম, সেটা অব্যাহত না থাকলে তো টাকা ফেরত আনতে পারবে না। তারা বসে থাকলে টাকা ফেরত আসবে না। আর যদি আনতে হয় এই প্রক্রিয়াগুলো মানতে হবে। এটা তো ইন্টারন্যাশনাল প্র্যাকটিস। আমরা যে প্রক্রিয়া শুরু করেছি তা বজায় রাখতে হবে।’
খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘পর্যাপ্ত মজুত থাকা সত্ত্বেও সরকার সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে চাল আমদানির অনুমোদন দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা আতপ চালের একটি বাফার মজুত রাখি। অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটলে যাতে সংকট না হয় সে জন্য নীতিগতভাবে আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, সার বিশেষ করে-ডিএপি ও ইউরিয়া আমদানিতে সরকার অগ্রাধিকার দিচ্ছে। সুখবর হচ্ছে-আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম কিছুটা কমেছে। আমরা বাজার স্থিতিশীল রাখতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করছি, পাশাপাশি যথেষ্ট চাল ও সারের মজুদও রাখছি।
সাম্প্রতিক বিবিএস প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, সরকার শিশু ও মাতৃকল্যাণ বিষয়ে সতর্ক। তাই ভিজিএফ কর্মসূচি এবং উপকূলীয় ও হাওর অঞ্চলের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ বরাদ্দ বাড়ানো হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, আসন্ন মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞাকালে জেলেদের প্রতিটি পরিবারকে ২০ কেজি চাল দেওয়া হবে।’
বর্তমান বাজার পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মজুত ভালো থাকায় চালের দাম সম্প্রতি কমেছে। তবে শাকসবজি ও অন্যান্য দ্রুত নষ্ট হওয়া পণ্যের দাম মৌসুমি কারণে ওঠানামা করে। পাইকারি ও খুচরা বাজারে এক শ্রেণির ব্যবসায়ীর কারসাজি এখনো অব্যাহত রয়েছে। ‘ এ কারণেই আমরা এখনো পূর্ণ সাফল্য দাবি করতে পারছিনা,’ স্বীকার করেন তিনি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন সিটি লেভেল কো-অর্ডিনেশন কমিটি (সিএলসিসি) এর প্রথম সভা আজ নগর ভবন অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ডিএসসিসি প্রশাসক জনাব মোঃ শাহজাহান মিয়া এঁর সভাপতিত্বে স্থানীয় সরকার বিভাগের "সিটি কর্পোরেশন নাগরিক সম্পৃক্ততকরণ নির্দেশিকা" এর আলোকে গঠিত সিএলসিসির ৭১ জন সদস্য উপর্যুক্ত সভায় অংশগ্রহণ করেন।
সিটি লেভেল কো-অর্ডিনেশন কমিটি (সিএলসিসি) সভায় আলোচনাপূর্বক উন্নয়ন ও সেবামূলক কর্মপরিকল্পনা সুপারিশ করতে পারে। এ সভায় সিটি কর্পোরেশনের বার্ষিক বাজেট ও উন্নয়ন পরিকল্পনা, আর্থিক বিবরণীসহ বার্ষিক অর্জন সম্পর্কিত প্রতিবেদন, নাগরিক জরিপ, সামাজিক সমস্যাবলি সমাধানের জন্য গৃহীত পদক্ষেপ, সিটি কর্পোরেশনের সেবাসমূহের মান উন্নয়ন, উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন ও নাগরিকদের যথাযথভাবে সেবা প্রদানে চ্যালেঞ্জসমূহ আলোচিত হতে পারে।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে ডিএসসিসি প্রশাসক বলেন, "জুলাই পরবর্তী নাগরিক প্রত্যাশা পূরণে সিএলসিসি কমিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কেননা তাদের মাধ্যমে সরাসরি নাগরিকদের মতামতের প্রতিফলন হয়।" এ সময় প্রশাসক ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ ও জলাবদ্ধতা নিরসনে ডিএসসিসির গৃহীত পদক্ষেপসমূহ তুলে ধরে জনগণকে এ বিষয়ে আরও সচেতন ও সম্পৃক্ত করতে সিটি লেভেল কো-অর্ডিনেশন কমিটির সদস্যদের সহযোগিতা কামনা করেন।
সভায় সদস্যবৃন্দ ডিএসসিসির সার্বিক কার্যক্রম সম্পর্কে আলোচনা ও সুপারিশ প্রদান করেন এবং সিটি কর্পোরেশন নাগরিক জরিপে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে ডিএসসিসি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মোঃ জহিরুল ইসলাম, সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, সকল বিভাগীয় প্রধান এবং মিস নাউকু আনজাই, টিম লিডার, সিফরসি২ উপস্থিত ছিলেন।
তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত নারী শ্রমিকদের মধ্যে বাল্যবিয়ে ও কিশোরী অবস্থায় গর্ভধারণের প্রবণতা উদ্বেগজনক আকারে বেড়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, এই শ্রমিকদের দুই-তৃতীয়াংশের বেশি (৬৬ শতাংশ) ১৮ বছরের আগেই বিয়ে হয়েছে। তাদের অধিকাংশই অপ্রাপ্ত বয়সে প্রথমবারের মতো গর্ভধারণ করেছেন। একই সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ ও গর্ভপাতের হারও এ জনগোষ্ঠীর মধ্যে তুলনামূলক বেশি।
গতকাল সোমবার রাজধানীর মহাখালীতে আইসিডিডিআরবি মিলনায়তনে ‘তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত নারী শ্রমিকদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার’ শীর্ষক সেমিনারে এসব তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়।
গবেষণা বলছে, প্রায় এক-তৃতীয়াংশ নারী শ্রমিক অন্তত একবার অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন এবং প্রতি চারজনের একজন গর্ভপাত বা মেনস্ট্রুয়াল রেগুলেশন করেছেন।
জানা গেছে, গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডার সহায়তায় আইসিডিডিআরবি প্রায় ২৪ মাসব্যাপী এই গবেষণা পরিচালনা করে, যা বাংলাদেশে পরিচালিত প্রথম এমন কোনো গবেষণা। ২০২২ সালের আগস্ট থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত গবেষণাটি কড়াইল ও মিরপুর বস্তি এবং গাজীপুরের টঙ্গী বস্তিতে আইসিডিডিআরবির আর্বান হেলথ অ্যান্ড ডেমোগ্রাফিক সার্ভেইলেন্সের আওতাধীন এলাকায় পরিচালিত হয়। ১৫-২৭ বছর বয়সি মোট ৭৭৮ জন বিবাহিত নারী গার্মেন্ট শ্রমিককে এই গবেষণাটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং প্রতি ছয় মাস অন্তর অন্তর এদের ওপর জরিপ পরিচালনা করা হয়।
সেমিনারে গবেষণার ফলাফল তুলে ধরে জানানো হয়, গার্মেন্টস কর্মীদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি সম্পর্কে সচেতন ছিলেন ৪৯ শতাংশ শ্রমিক, যা দুই বছর শেষে বেড়ে দাঁড়ায় ৭০ শতাংশে। জরুরি গর্ভনিরোধক বড়ি সম্পর্কে জ্ঞান ছিল মাত্র ১৫ শতাংশ নারীর; গবেষণা শেষে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৯ শতাংশে। একই সময়ে পরিবার পরিকল্পনায় লিঙ্গ সমতার প্রতি ইতিবাচক মনোভাব ৫৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭১ শতাংশে পৌঁছেছে।
গবেষণায় দেখা যায়, নারী শ্রমিকরা ঘর ও কর্মস্থল দুই জায়গাতেই সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। গত ১২ মাসে স্বামীর সহিংসতার হার ছিল উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। যৌন সহিংসতা ছাড়া অন্য সব ধরনের সহিংসতা গত দুই বছরে বেড়েছে। কর্মক্ষেত্রেও সহিংসতার প্রবণতা উল্টোদিকে গেছে— গবেষণার শুরুতে যেখানে প্রায় ৪৮ শতাংশ শ্রমিক কর্মক্ষেত্রে মানসিক সহিংসতার শিকার হয়েছিলেন, গবেষণার শেষ দিকে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫৫ শতাংশে।
তবে সহিংসতার শিকার হওয়ার পরও খুব কম সংখ্যক নারী আনুষ্ঠানিকভাবে সাহায্য চাইছেন। গবেষণার শুরুতে যেখানে ৩৫ শতাংশ নারী অনানুষ্ঠানিকভাবে (পরিবার বা বন্ধুদের কাছে) সাহায্য চাইতেন, গবেষণার শেষ দিকে তা কমে দাঁড়ায় মাত্র ২১ শতাংশে। কর্মক্ষেত্রের সহিংসতার ঘটনাতেও মাত্র এক-পঞ্চমাংশ নারী কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন, এবং দুই বছর পরেও এ হার অপরিবর্তিত থাকে।
তরুণ বয়সে গর্ভধারণের ঝুঁকি কমাতে কিছু নিয়ামকও চিহ্নিত হয়েছে গবেষণায়। দেখা গেছে, যারা সন্তান ধারণের আগেই গর্ভনিরোধক ব্যবহার শুরু করেছিলেন, তাদের কিশোরী অবস্থায় গর্ভধারণের ঝুঁকি ৪৭ শতাংশ কম। এছাড়া যারা প্রথম গর্ভধারণের আগে গার্মেন্ট খাতে কাজ শুরু করেছিলেন, তাদের ঝুঁকি আরও কম।
অন্যদিকে, স্বামী কর্তৃক সহিংসতার অভিজ্ঞতা থাকলে কিশোরী অবস্থায় গর্ভধারণের ঝুঁকি ২৬ শতাংশ বেড়ে যায় বলেও গবেষণায় উঠে এসেছে।
গবেষণার উপাত্ত বিশ্লেষণে আরও দেখা যায়, নারীর ক্ষমতায়নের বিভিন্ন মাত্রা স্বামীর সহিংসতাকে নানাভাবে প্রভাবিত করে। যেমন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা বেশি থাকলে মানসিক ও যৌন সহিংসতা থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়। মতামত প্রকাশের ক্ষমতা থাকলে যৌন সহিংসতা কমে। আবার চলাচলে স্বাধীনতা থাকলে শারীরিক সহিংসতার ঝুঁকিও কমে যায়।
ঢাকার মহাখালীতে আইসিডিডিআরবি ক্যাম্পাসে আয়োজিত সেমিনারে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (পরিকল্পনা ও গবেষণা) সহকারী পরিচালক ডা. সেকেন্দার আলী মোল্লা, পপুলেশন কাউন্সিল বাংলাদেশের সাবেক পরিচালক ডা. উবাইদুর রব, বিকেএমইএর যুগ্ম সচিব ফারজানা শারমিন এবং মেরী স্টোপস বাংলাদেশের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও স্বতন্ত্র গবেষক ইয়াসমিন এইচ আহমেদ।
বিকেএমইএর যুগ্ম সচিব ফারজানা শারমিন বলেন, গার্মেন্টস কারখানাগুলোতে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ে পরামর্শমূলক সেবা বৃদ্ধির কাজ চলছে। তবে আরও কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।
এই গবেষণার প্রধান গবেষক ছিলেন আইসিডিডিআরবির ইমেরিটাস সায়েন্টিস্ট ড. রুচিরা তাবাসসুম নভেদ। তিনি বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি পেলে তারা শুধু পরিবারে নয়, কর্মক্ষেত্রেও সহিংসতা থেকে সুরক্ষিত হতে পারেন। গার্মেন্ট শ্রমিক নারীদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, খাগড়াছড়ির বর্তমান পরিস্থিতি সন্তোষজনক অবস্থায় রয়েছে।
তিনি বলেন, খাগড়াছড়িতে স্থিতিশীল পরিস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
সোমবার রাজধানীর রমনায় ডিএমপি’র পাঁচটি থানার ভবন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, খাগড়াছড়িতে কেউ যাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, খাগড়াছড়িতে স্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সেখানে আছেন। তিনি বিষয়টি দেখাশোনা করছেন এবং স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলছেন।
খাগড়াছড়িতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিতে প্রতিবেশী একটি দেশের অর্থ ও অস্ত্র সহায়তা সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি কোনো দেশের নাম উল্লেখ করতে চাই না, তবে পতিত ফ্যাসিস্টদের দল খাগড়াছড়িতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছে।’
তিনি আরো বলেন, ফ্যাসিস্ট দলটি সারা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। যাতে চলমান দুর্গাপূজা উৎসবমুখর ও বাধাহীনভাবে উদযাপন করা না যায়।
দুর্গাপূজা নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, গতকাল থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বড় ধর্মীয় উৎসব শুরু হয়েছে। কেউ যেন কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করে ও পূজা নির্বিঘ্নে আয়োজিত হয়, সেজন্য সবাইকে সহায়তা করতে হবে।
পাহাড়ে আটকে পড়া পর্যটকদের বিষয়ে তিনি বলেন, আটকে পড়া পর্যটকদের অধিকাংশকেই নিরাপদভাবে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, ডিএমপিতে ৫০টি থানা রয়েছে, যার অর্ধেক ভাড়া করা ভবনে আছে। আমরা সমস্ত থানাকে তাদের নিজস্ব ভবনে স্থানান্তর করার জন্য কাজ করছি।
খাগড়াছড়িতে সাম্প্রতিক অস্থিরতায় তিনজন নিহত এবং পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর সদস্যসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে খাদ্য অপচয় ও ক্ষতি রোধ করতে হবে। তিনি বলেন, একদিকে অনেক মানুষ খাদ্যের অভাবে অনাহারে থাকছে, অন্যদিকে উৎপাদিত বিপুল খাদ্যের একটি বড় অংশ অপচয় হচ্ছে- যা দুঃখজনক।
উপদেষ্টা আজ সকালে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত “Towards Zero Food Waste and Loss: Building a Sustainable Food Value Chain in Bangladesh” -শীর্ষক জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, বিশ্ব খাদ্য সংস্থা ১৯৯৬ সাল থেকে খাদ্যের নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলেছে। তখন খাদ্য প্রাপ্ততা বড় বিষয় ছিল। এখন খাদ্য নিরাপত্তার সঙ্গে পুষ্টিও যুক্ত হয়েছে। দেশে বর্তমানে মাছের উৎপাদন সম্পর্কে তিনি বলেন, আগে যেখানে প্রাকৃতিক উৎস থেকে ৬০ শতাংশ ও চাষ থেকে ৪০ শতাংশ আসতো বর্তমানে চাষ থেকে আসছে ৬০ শতাংশ ও প্রাকৃতিক উৎস থেকে ৪০ শতাংশ। আর তাই প্রাকৃতিক মাছ নষ্ট হওয়া প্রতিরোধে কাজ করতে হবে।
উপদেষ্টা বলেন, কৃষি, প্রাণিসম্পদ ও মৎস্য খাতের পণ্য পচনশীল হওয়ায় সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণে অবকাঠামোগত দুর্বলতা এবং ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত না হওয়ায় কৃষকরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ছেন। ফলে দুধ, ডিম, মাছ ও মাংসসহ নানা খাদ্যপণ্য অপচয়ের শিকার হচ্ছে।
মৎস্য উপদেষ্টা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সামুদ্রিক মৎস্য খাতে অনিয়ন্ত্রিত ও অবৈধ জাল ব্যবহার, লক্ষ্যভিত্তিক মাছ ধরা এবং অপ্রচলিত প্রজাতি বাজারজাতের অভাবে বিপুল পরিমাণ মাছ ফেলে দিতে হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, মাছের বৈচিত্র্য হারিয়ে যাচ্ছে; একসময় ২৬৭ প্রজাতির দেশীয় মাছ পাওয়া যেত, এখন তা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। এটি দীর্ঘমেয়াদে খাদ্য নিরাপত্তায় মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।
উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করে বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে খাদ্য অপচয় ও ক্ষতি উল্লেখযোগ্য হারে কমাতে পারলে খাদ্য নিরাপত্তা, পুষ্টি সুরক্ষা ও জনগণের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন করেন বাংলাদেশে ডেনমার্ক দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মি. অ্যান্ডায়ার্স কার্লসেন ( Mr. Anders Karlsen), খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)-এর ডেপুটি প্রতিনিধি মি. দিয়া সানু ( Mr. Dia Sanou), ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি)-এর ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর মি. জেসে উড ( Mr. Jsse Wood) । অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ইয়াসিন।
মন্তব্য