দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছাড়া কোনটিতেই নেই বৈরী আবহাওয়ায় উড়োজাহাজ ওঠানামার প্রযুক্তি ইনস্ট্রুমেন্ট ল্যান্ডিং সিস্টেম বা আইএলএস। যে তিনটি বিমানবন্দরে এ প্রযুক্তি আছে তাও পুরোনো। ফলে ঘন কুয়াশা কিংবা ঝড়-বৃষ্টির কারণে দৃষ্টিসীমা কমে এলেই বিঘ্নিত হয় উড়োজাহাজ চলাচল।
এমন বাস্তবতায় বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় বলছে, আগামী বছরের মধ্যেই যেকোনো পরিস্থিতিতে ২৪ ঘণ্টা ফ্লাইট ওঠানামার সক্ষমতা অর্জনের প্রযুক্তি সংযুক্ত হবে দেশের সব বিমানবন্দর।
সাধারণত বৈরী আবহাওয়া কিংবা ঘন কুয়াশার কারণে পাইলট খালি চোখে রানওয়ে দেখতে না পারলে নিরাপদ অবতরণের জন্য বিমানবন্দরগুলোতে আইএলএস প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। এ পদ্ধতিতে প্রযুক্তির মাধ্যমে পাইলটকে এক ধরনের বেতার তরঙ্গ পাঠানো হয়। এর মাধ্যমে সহজেই রানওয়ের অবস্থান শনাক্ত করতে পারেন পাইলট।
ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যে আইএলএস আছে, তার দৃষ্টিসীমা ৬০০ মিটার। শীতকালে ঘন কুয়াশায় প্রায়ই বিমানবন্দরের রানওয়েতে দৃষ্টিসীমা নেমে আসে ৫০ থেকে শূন্য মিটার পর্যন্ত। ফলে পুরোনো আইএলএস দিয়ে ফ্লাইট ওঠানামা করানোয় বিঘ্ন ঘটছে।
কখনো কখনো উড়োজাহাজগুলোকে নিরাপদ অবতরণে পাঠানো হচ্ছে বিকল্প বিমানবন্দরে। এতে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছে এয়ারলাইন্সগুলো।
বেসরকারি ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের মার্কেটিং ও পিআর বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঘন কুয়াশার জন্য কখনো কখনো ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এতে যাত্রীরা যেমন ভোগান্তিতে পড়ছেন, একইভাবে এয়ারলাইন্সও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
‘শীতকালে সকালে প্রায়ই দেখা যাচ্ছে, পাঁচ থেকে ছয়টি ফ্লাইট সময়মতো ছাড়া যাচ্ছে না। এর প্রভাব কিন্তু পরবর্তী সারাদিনই বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। একটি ফ্লাইট বিলম্বে ছাড়লে অন্যগুলোতেই কিন্তু এর প্রভাব পড়ছে।’
করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট কমে যাওয়ায় বিদেশগামীদের ক্ষেত্রে সমস্যা কম হলেও বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন অভ্যন্তরীণ গন্তব্যের যাত্রীরা।
‘অনেকেই ব্যবসায়িক নানা প্রয়োজনে আকাশপথে ভ্রমণ করে থাকেন। সময়মতো পৌঁছাতে না পারলে তিনি কিন্তু ব্যবসায়িকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আবার সময়মতো ফ্লাইট ছাড়তে না পারায় এয়ারলাইন্সেরও কিন্তু বদনাম হচ্ছে’, বলেন কামরুল।
‘অনেক সময় দেখা যাচ্ছে ঢাকায় কুয়াশা নেই, ফ্লাইট সময়মতোই ছাড়া হলো। কিন্তু সৈয়দপুরে ঘন কুয়াশা। সেখানে নামা যাচ্ছে না। ফলে কিন্তু সেই ফ্লাইটটি আবার ঢাকায় ফিরে আসছে। এতে করে এয়ারলাইন্সের ওপর একটি খরচের বোঝা চাপল’, যোগ করেন তিনি।
কামরুল জানান, অনেক সময় আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলোকেও ঘনকুয়াশার কারণে দেশের ভেতর অথবা বাইরে বিকল্প বিমানবন্দরে নামতে বলা হয়। এতে সেই ফ্লাইটের যাত্রীদেরও পোহাতে হয় ভোগান্তি।
আইএলএস প্রযুক্তির মানোন্নয়ন না হওয়ায় ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে বলে মনে করছেন এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ এটিএম নজরুল ইসলাম।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আইএলএসের সাথে থাকতে হবে অ্যাপ্রোচ লাইটিং সিস্টেম। এ দুটো নিশ্চিত করা গেলে যেকোনো পরিস্থিতিতে উড়োজাহাজ ওঠানামা করতে পারবে।
‘তিন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যে আইএলএস প্রযুক্তি রয়েছে তা ক্যাটাগরি এক। এটি ৬০০ মিটার পর্যন্ত উড়োজাহাজ ওঠানামায় সহযোগিতা করতে পারে। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা যেকোনো পরিস্থিতিতে উড়োজাহাজ ওঠানামা করাতে হলে আইএলএস তিন ক্যাটাগরি লাগবে।’
তিনি বলেন, ‘আকাশপথের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত ক্যাটাগরি-৩ আইএলএস প্রতিটি বিমানবন্দরে স্থাপন করা প্রয়োজন। শূন্য দৃষ্টিসীমা থাকলেও এর সাহায্যে উড়োজাহাজ ওঠানামা স্বাভাবিক রাখা যায়।’
বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় বলছে, এরই মধ্যে দেশের সব বিমানবন্দরে আইএলএস স্থাপন করতে দরপত্র আহ্বান করেছে তারা।
মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মহিবুল হক নিউজবাংলাকে জানান, ২০২১ সালের মধ্যে সব বিমানবন্দরেই বসছে আইএলএস।
তিনি বলেন, ‘আমরা ফ্রান্সের থ্যালাসের কাছ থেকে যে নতুন রাডার নিচ্ছি, সেটার সাথে তারা শাহজালাল বিমানবন্দরের জন্য আইএলএস প্রযুক্তি স্থাপন করে দেবে।
‘প্রধানমন্ত্রীও নির্দেশ দিয়েছেন, শুধু আন্তর্জাতিক নয় বাংলাদেশের প্রত্যেক বিমানবন্দরে যেন এই সিস্টেমটা থাকে। অন্য বিমানবন্দরগুলোতে এটা করার জন্য আমরা এরই মধ্যে দরপত্র দিয়েছি। আশা করছি ২০২১ সালের মধ্যে এগুলো সম্পূর্ণ হয়ে যাবে।’
এগুলো স্থাপন হয়ে গেলে আগামী বছরই দেশের সব বিমানবন্দর ২৪ ঘণ্টা উড়োজাহাজ চলাচলের সক্ষমতা অর্জন করবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:বায়ুদূষণ কমাতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআরটিএ) ২০ বছরের বেশি পুরনো বাস-মিনিবাস এবং ২৫ বছরের বেশি পুরনো ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান সড়ক-মহাসড়ক থেকে প্রত্যাহার করতে চিঠি দিয়েছে পরিবেশ মন্ত্রণালয়।
রোববার দেয়া চিঠিতে পুরনো ডিজেলচালিত বাস ও ট্রাকের ফিটনেস সার্টিফিকেট দেয়ার সময় বাধ্যতামূলকভাবে নিঃসরণ পরীক্ষা চালু করতেও বলা হয়েছে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের নেতৃত্বে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে বায়ুদূষণ রোধে ইকোনমিক লাইফ অতিক্রান্ত যানবাহন প্রত্যাহার এবং ডিজেলচালিত পুরনো যানবাহনের নিঃসরণ পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করার জন্য বিআরটিএকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে জাতীয় কমিটির প্রথম ও দ্বিতীয় বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুসারে ফিটনেসবিহীন ও ইকোনমিক লাইফ অতিক্রান্ত হয়েছে এমন যানবাহনকে রাস্তা থেকে প্রত্যাহারের জন্য বিআরটিএ কর্তৃক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ঢাকায় পুরনো ডিজেলচালিত বাস ও ট্রাকের ফিটনেস পরীক্ষার সময় নিঃসরণ পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হবে।
প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানে পর্যটকদের আপাতত ভ্রমণ না করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। আগামী ৮ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ২৪ দিন এই দুটি জেলা ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন রোববার বিকেল ৪টায় জানান, অনিবার্য কারণবশত ৮ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ভ্রমণপ্রত্যাশী পর্যটকদের বান্দরবান পার্বত্য জেলায় ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
এর আগে দুপুরে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন থেকে জারি করা এক নির্দেশনায়ও ৮ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতে ভ্রমণ না করার অনুরোধ জানানো হয়।
রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান জানান, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
অন্যদিকে রাঙ্গামাটির সাজেক ভ্যালিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করেছে জেলা প্রশাসন।
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আগামী সাতদিনের মধ্যে ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। একইসঙ্গে তিনি বর্তমান সরকারের কাছে আরও সাতটি দাবি তুলে ধরেছেন।
রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব দাবি জানান তিনি।
মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘অনতিবিলম্বে বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ ও বেআইনি সংগঠন ঘোষণা করতে হবে। গত ১৬ বছরে দেশের সব সন্ত্রাসী কার্যক্রমের জন্য একমাত্র ছাত্রলীগ দায়ী। ছাত্র-জনতার বিপ্লবে সারাদেশে যত শিক্ষার্থীকে হত্যা করা হয়েছে, সব করেছে পুলিশ ও ছাত্রলীগের বাহিনী।’
মতবিনিময় সভায় সরকারের প্রতি বিভিন্ন দাবি তুলে ধরে মাহমুদুর রহমান বলেন- ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য স্বাস্থ্য উপদেষ্টা, অর্থ উপদেষ্টা, শিল্প ও গণপূর্ত উপদেষ্টা এবং প্রধান উপদেষ্টার রাজনৈতিক সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করতে হবে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে এক সপ্তাহের মধ্যে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করতে হবে। যমুনা সেতুকে শহীদ আবু সাঈদের নামে নামকরণ করতে হবে, যাতে মানুষ সেখান দিয়ে পার হওয়ার সময় শতাব্দীর পর শতাব্দী আবু সাঈদকে দেখতে পায়।’
তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালের পর থেকে ভারতের সঙ্গে যতগুলো চুক্তি হয়েছে তার প্রতিটির ধারা-উপধারা জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে। জনগণকে জানাতে হবে ভারতের সঙ্গে কী কী চুক্তি হয়েছে এবং সেগুলো পুনর্বিবেচনার জন্য একটি কমিটি গঠন করতে হবে, যেখানে ভারতের ও ফ্যাসিবাদের দোসর থাকতে পারবে না।’
আমার দেশ সম্পাদক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু এভিনিউকে শহীদ আবরারের নামে নামকরণ করতে হবে। কারণ শহীদ আবরার এই ফ্যাসিবাদ আন্দোলনের প্রথম শহীদ।
‘মনে রাখতে হবে শেখ মুজিব বাংলাদেশের প্রথম স্বৈরাচারী নেতা। আর শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদের আইকন হচ্ছেন শেখ মুজিব।’
দাবি তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে ফ্যাসিস্ট হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নমিনেশন অনতিবিলম্বে বাতিল করতে হবে। কেননা পুতুলকে নমিনেশন দেয়া হয়েছিল জালিয়াতির মাধ্যমে।
‘আপিল বিভাগের একজন বিচারপতির নেতৃত্বে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে কারাগারে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম ও বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন পিন্টুর হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করতে হবে।’
আরও পড়ুন:বর্তমান সময় পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে ১০৫টি শিশু নিহত হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে নিহত প্রতিটি শিশুর পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা করে দেয়া হবে।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ রোববার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় এক কোটি ২০ লাখ বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন। তাদের ৪৩ ভাগই ভাতা পাওয়ার যোগ্য নয় বলে ইউনিসেফ একটি পরিসংখ্যান দিয়েছে। বিশ্বব্যাংকও বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে। এজন্য তালিকাটি যাচাই-বাছাই করা হবে।’
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সংস্কারের পর নির্বাচন হবে। নির্বাচন নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলছে।
সমাজসেবা কার্যালয় ও উপজেলা রোগী কল্যাণ সমিতির মাধ্যমে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের মোট ৮২ লাখ ৭০ হাজার ৮৯৮ টাকার সেবা দেয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন উপদেষ্টা।
বাংলাদেশ পুলিশের দেড়শ’ বছরের পুরনো আইন সংস্কারসহ এটিকে জনবান্ধব বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে যা যা করা দরকার সেসব নিয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সুপারিশ জমা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান সফর রাজ হোসেন।
রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।
সফর রাজ হোসেন বলেন, ‘পুলিশকে জনগণের আস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে। বেঁধে দেয়া সময় তিন মাসের মধ্যে সব পর্যায়ের মানুষের মতামত নেয়া হবে। প্রয়োজনে ওয়েবসাইট তৈরি করে সাধারণ মানুষের মতামত চাওয়া হবে।’
এ সময় সেখানে উপস্থিত স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘কমিশনকে কারিগরি সহায়তা দেয়া হবে। তিন মাস পর সুপারিশ পেলেই শুরু হবে পুলিশ বাহিনী পুনর্গঠন ও সংস্কারের কাজ।’
এর আগে গত ৩ অক্টোবর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে পুলিশ সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ কমিটির গেজেট প্রকাশ করা হয়।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সাবেক অতিরিক্ত সচিব ও সাবেক মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইকবাল, সাবেক বিভাগীয় কমিশনার ও যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ হারুন চৌধুরী, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক শেখ সাজ্জাদ আলী, ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ মো. গোলাম রসুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শাহনাজ হুদা এবং মানবাধিকার কর্মী এ এস এম নাসিরউদ্দিন এলান। এছাড়া কমিশনে আরও থাকবেন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি।
আরও পড়ুন:মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর স্টেডিয়ামে রোববার সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিশিষ্ট চিকিৎসক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সকাল ১০টার দিকে এ জানাজায় উপস্থিত হন হাজারো মানুষ।
জানাজায় উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা অংশ নেন।
তৃতীয় জানাজা শেষে সাবেক রাষ্ট্রপতির মরদেহবাহী কফিন বহনকারী গাড়ি রওনা হয় তার গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে।
জোহরের নামাজের পর গ্রামের বাড়ি মজিদপুর দয়হাটায় চতুর্থ জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে।
সৎ, নীতিবান ও নেতৃত্বের অন্যান্য গুণাবলীসম্পন্ন সেনা কর্মকর্তারা উচ্চতর পদোন্নতির দাবিদার বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি পদোন্নতির জন্য কর্মকর্তাদের পেশাগত দক্ষতা, নেতৃত্বের গুণাবলী, শৃঙ্খলার মান, সততা, বিশ্বস্ততা ও আনুগত্য এবং সর্বোপরি নিযুক্তিগত উপযুক্ততার ওপর গুরুত্বারোপ করতে নির্বাচনি পর্ষদের সদস্যদের নির্দেশনা দেন।
সেনাবাহিনী সদরদপ্তরে রোববার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ‘সেনাসদর নির্বাচনী পর্ষদ-২০২৪’-এর উদ্বোধনকালে এ নির্দেশনা দেন।
প্রথম পর্বের এ পদোন্নতি পর্ষদে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্নেল ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদবির যোগ্য কর্মকর্তারা পরবর্তী পদোন্নতির জন্য বিবেচিত হবেন।
পদোন্নতি পর্ষদের উদ্বোধন অনুষ্ঠানের বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক মতাদর্শের ঊর্ধ্বে থেকে যেসব কর্মকর্তা সামরিক জীবনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে যোগ্য নেতৃত্ব প্রদানে সফল হয়েছেন, সেসব কর্মকর্তাকে পদোন্নতির জন্য নির্বাচন করার নির্দেশনা দেন।
তিনি বলেন, ‘দেশের ক্রান্তিলগ্নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এবং একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে দেশকে এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির হাত থেকে রক্ষা করেছে।’
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আবারও দেশের মানুষের কাছে আস্থার প্রতীক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ছাত্র-জনতার বিপ্লবে নিহতদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে প্রধান উপদেষ্টাকে স্বাগত জানান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়নবিষয়ক বিশেষ সহকারী, চিফ অব জেনারেল স্টাফ এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার।
অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের পাশাপাশি প্রতিরক্ষা সচিব উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান শেষে প্রধান উপদেষ্টা সেনাবাহিনীর উপস্থিত কর্মকর্তাদের সঙ্গে ফটোসেশনে অংশ নেয়ার পাশাপাশি পরিদর্শন বইয়ে মন্তব্য লিপিবদ্ধ করেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য