চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি। পাবনার আটঘরিয়ার বাক প্রতিবন্ধী মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে মধ্য বয়সী দুই জনের বিরুদ্ধে।
ঘটনার পরদিন মামলা হয়, গ্রেপ্তার হন আব্দুল করিম ও বিল্লাল হোসেন। এর মধ্যে কেটে গেছে প্রায় ১১ মাস। পুলিশ এখনও শেষ করতে পারেনি তদন্ত।
এরই মধ্যে দুই আসামির একজন জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
এমনও না যে, আসামিরা প্রভাবশালী আর ঘটনা নিয়ে জটিলতা আছে। ঘটনার পর পরই আসামি গ্রেপ্তার, চাক্ষুষ প্রমাণও আছে।
তদন্তে এত দেরি কেন?
পুলিশ বলছে, ডিএনএ পরীক্ষার ফল পেতে দেরি হওয়ায় অভিযোগপত্র তৈরি করা যায়নি। তদন্ত কর্মকর্তার দাবি, মামলার সত্যতা প্রমাণে অভিযুক্ত ও ভুক্তভোগীর ডিএনএ পরীক্ষার ফল প্রয়োজন।
তবে ভুক্তভোগীর পরিবার অভিযোগ করছে, ডিএনএ টেস্টের কথা বলে তাদের কাছ থেকে টাকা নেয়া হয়েছে।
ছোট্ট একটা মাটির ঘরে থাকেন ভুক্তভোগী তরুণী ও তার মা। জন্মের দেড় মাসের মাথায় বাবা ছেড়ে চলে যায় তাদের। তারপর থেকে লাপাত্তা। এখন পর্যন্ত স্বামীর খোঁজ জানেন না মেয়েটির মা।
এখনও মুখে কথা ফোটেনি, বয়স যদিও ১৮। মুখ দিয়ে ঝরছে লালা। বাড়ির উঠোনে কজন মানুষ দেখতে খুব বিরক্তি লাগছিল তার। মাঝে মধ্যে চিৎকারও করে উঠছিল।
মেয়েটির মা নিউজবাংলাকে জানান, ঘটনার দিন সকালে ভাইয়ের মেয়েকে পোলিও টিকা দেয়ার জন্য বাড়ির বাইরে যান তিনি। তখন আব্দুল করিম ও বিল্লাল হোসেন তার মেয়েকে ঘরের রশি দিয়ে বেধে ধর্ষণ করেন।
ফিরে এসে দেখেন, করিম দৌড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন। মেয়ে তার আহাজারি করছে। ঘরে ঢুকে মেয়ের হাতের বাঁধন খোলার সময়, বিল্লাল দৌড়ে পালিয়ে যান।
‘মেয়ে আমার কথা বলতি পারে না। খালি চিৎকার করে, আর চোখ দিয়ে পানি পড়ি যাই। আমি এসে দেখি করিম দৌড় দিয়ে চলি গেছে। আমার মেয়েডা ছটফট করতিছিল। কথা বলতি পারে না। শরীলডাতে মারের দাগ। এত জোরে ছটফট করিছে যে ঘরের মধ্যে মাটি উঠে গেছে’- বলতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন মেয়ের মা।
করিমকে ওই সময় ধরা যায়নি। তবে মায়ের চিৎকারে আশেপাশের সবাই বিল্লালকে আটক করে। তিনি ধর্ষণের কথা অস্বীকার করেন।
কোনো নির্দিষ্ট কাজ করেন না করিম ও বেলাল। গ্রামের চুরির অভিযোগও আছে তাদের বিরুদ্ধে। অনেকেই দাবি, দুস্থ ও অবহেলিত একাধিক মেয়েকেই ধর্ষণের অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। তবে মামলা না হওয়ায় বেঁচে যান সব সময়। অভিযোগ উঠলেই পালিয়ে গিয়ে পরে সুযোগ বুঝে ফিরে এসেছেন।
মেয়েটির মামা নিউজবাংলাকে বলেন, পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা কনক কুমার সরকার মামলার পর করিম ও বেলালকে আটক করে। ওইদিন তার ভাগ্নিকে মেডিক্যাল পরীক্ষা করাতে পাবনা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
তিনি বলেন, ‘পুলিশ আমাদেরকে বলে যেহেতু এটা ধর্ষণ মামলা তাই ঢাকাতে মেডিক্যাল টেস্ট করাতে হবে আসামিদের। এর জন্য মেয়েটির পাজামা নিয়ে যাওয়া হবে। এরপর আসামিদেরকেও ঢাকাতে নিয়ে যাওয়া হবে। তবে এই যাতায়াত ভাড়ার জন্য তাদেরকে ১০ হাজার টাকা দিতে হবে।’
মেয়েটির মা বলেন, ‘আমার কাছে ১০ হাজার টাকা চাইলে আমি প্রথমে দিতে রাজি হইনি। তবে এই টাকা নাকি প্রমাণের জন্য লাগবে। এটা জানার পর আমি থানায় আলাদা একটা রুমে তদন্ত কর্মকর্তা কনক কুমারকে ধারদেনা করে নয় হাজার টাকা দিই।
‘মামলার ১৫-২০ দিন পর আমাকে বলা হয় আসামি আর আপনার মেয়ের জামা ডিএনএ টেস্টের জন্য ঢাকা পাঠানো হবে। এর জন্য আমাদের মাইক্রো ভাড়া লাগবে। আমি আমার ফুফাতো ভাইয়ের সাথে কথা বলি। সে আমাকে জানায় টাকা লাগে না। কিন্তু পুলিশ তো টাকা ছাড়া নড়বে না তাই টাকা দিতে হবে।’
যদিও টাকা নেয়ার অভিযোগকে স্বীকার করতে চান না সাবেক তদন্ত কর্মকর্তা কনক কুমার সরকার। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘এটা কখনই সম্ভব না। ভিকটিমের পারিবারিক অবস্থা এত খারাপ যে আমার অনেকবার মনে হয়েছে তাদেরকে টাকা দিই। হয়ত এক আসামি জামিন পেয়েছে। এটা জানার পর তাদের সব ক্ষোভ আমার ওপর পড়েছে।’
কনক বলেন, ‘আমি ওই সময় নিজ খরচে আসামি ও ভুক্তভোগীর কাপড় ঢাকায় এনেছি। এমনকি মেডিক্যাল টেস্ট করার জন্য যে সরকারি খরচ লাগে সেটিও আমি বহন করেছি।
‘মামলার করার সঙ্গে সঙ্গে আমি দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে উপস্থিত করি। আদালতের নির্দেশের সাপেক্ষে অভিযুক্তদের সঙ্গে ভিকিটিমের ডিএনএ মিল আছে কিনা এটা পরীক্ষা করার জন্য ঢাকায় নিয়ে আসি। করোনা ভাইরাসের জন্য ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) এর পরীক্ষাগার দুইমাস বন্ধ ছিল। দুই মাস পর আবার চালু হয়। আমি বারবার তাগাদা দিলে তারা আমাকে অফিসিয়ালি জানায় টেকনিক্যাল ত্রুটির জন্য দেরি হচ্ছে। সেটিও আমি মামলাতে উল্লেখ করি।’
কনক আরও বলেন, ‘আমি যতদিন ওই থানায় ছিলাম ততদিন পর্যন্ত এই মামলার কার্যক্রম যেন দ্রুত শেষ হয় তার সব চেষ্টা করেছি। কোন ধরনের ত্রুটি রাখিনি।’
এই ১১ মাসে বদলে গেছে অনেক কিছু। আটঘরিয়া থানায় তদন্ত কর্মকর্তাসহ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বদলি হয়েছে। নতুন করে তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন এসআই মোজাম্মেল হোসেন।
এতদিনেও এ ঘটনার কোনো সাড়া শব্দ নেই গ্রামটিতে। পুলিশের কর্মকর্তারা প্রথমে দুই একদিন আসলেও এখন আর কেউ তেমন খোঁজ নিতে আসে না।
নতুন তদন্ত কর্মকর্তা একদিন এসেছিলেন জানিয়ে মেয়েটির মা বলেন, ‘একদিন মোজাম্মেল এসেছিলেন। কিছু সময় দেখা করেন। পরে জামিনে থাকা আসামি বিল্লালের বাড়িতে যান। সেখান যাওয়ার সময় আমাকে সঙ্গে যেতে মানা করেন।’
তিনি বলেন, ‘মেয়ে আমার রাতে ঘুমায় না। চিৎকার করে কান্নাকাটি করে। খিঁচুনি দিয়ে বাথরুম করে ফেলে। এখন তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন।’
এ বছরের নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে জামিনে মুক্ত হন বিল্লাল হোসেন। তিনি গ্রামে ভিক্ষা করেন।
মেয়েটির মার অভিযোগ, বিল্লালের পরিবারের পক্ষ থেকে তাদেরকে সমঝোতা করতে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। কথা না শুনলে ভালো হবে না বলেও হুমকি দেয়া হয়েছে।
আটঘরিয়া থানার বর্তমান ওসি আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা এই মাসে (ডিসেম্বরে) ডিএনএ টেস্টের রিপোর্ট হাতে পেয়েছি। আশা করি খুব শিগগিরই আমরা অভিযোগপত্র দিয়ে দিতে পারব।’
প্রতিবেদনে কী এসেছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘টেস্টে করিমের ডিএনএ ম্যাচ করেছে। আমরা করিম ও বিল্লালকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট জমা দেবো। বিল্লাল ধর্ষণ কাজে সহযোগিতা করেছে এই মর্মে তাকে আসামি করা হবে।’
টাকা নেয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা আমার থানাতে কখনও সম্ভব নয়। আমাদেরকে প্রতিটা মামলার তদন্তের জন্য আলাদা খরচ দিয়ে দেয়া হয়।’
মেয়েটির মা জানান, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে সংগঠন ‘আমরাই পারি’ থেকে তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করা হয়।
মামলা পরিচালনা ও মেডিক্যালের বিষয়ে ভুক্তভোগীর পরিবারেক সার্বিক সহায়তা করেন এই সংগঠনের স্থানীয় কর্মী আজমেরী হুমায়ুন রনি।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে পাঁচটি চুক্তি এবং পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
সফররত কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মঙ্গলবার এসব চুক্তি ও সমঝোতা স্বাক্ষর হয়।
পাঁচ চুক্তির মধ্যে রয়েছে- উভয় দেশের পারস্পরিক বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা সংক্রান্ত চুক্তি, দ্বৈতকর পরিহার ও কর ফাঁকি সংক্রান্ত চুক্তি, আইনগত বিষয়ে সহযোগিতা সংক্রান্ত চুক্তি, সাগরপথে পরিবহন সংক্রান্ত চুক্তি এবং দু দেশের ব্যবসা সংগঠনের মধ্যে যৌথ ব্যবসা পরিষদ গঠন সংক্রান্ত চুক্তি।
পাঁচ সমঝোতা স্মারকের মধ্যে রয়েছে- কূটনৈতিক প্রশিক্ষণে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, উচ্চশিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, যুব ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, শ্রমশক্তির বিষয়ে সমঝোতা স্মারক এবং বন্দর ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক।
চুক্তিগুলোর মধ্যে প্রথমটিতে কাতারের পক্ষে বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন হামাদ আল থানি ও বাংলাদেশের পক্ষে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, দ্বিতীয়টিতে কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি ও বাংলাদেশের অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, তৃতীয়টিতে কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি ও বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, চতুর্থটিতে কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি ও বাংলাদেশের নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং পঞ্চমটিতে কাতার চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির চেয়ারম্যান শেখ খলিফা বিন জসিম আল থানি ও বাংলাদেশের ফেডারেশন অব চেম্বার্স অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম সই করেন।
সমঝোতা স্মারকগুলোর মধ্যে সব কটিতে কাতারের পক্ষে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি এবং বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা সই করেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শিমুল হলে একান্ত বৈঠক হয় শেখ হাসিনা ও শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির।
প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে পৌঁছালে মঙ্গলবার সকালে কাতারের আমিরকে ফুল দিয়ে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কদিন ধরেই দাবদাহে পুড়ছে জনজীবন। গরমে অতিষ্ঠ মানুষ। দিনভর তীব্র তাপপ্রবাহ, তবে রাতে কিছুটা স্বস্তি মিলছে। এই অবস্থা থেকে আপাতত মুক্তি মিলছে না।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে তাপপ্রবাহ যেভাবে বয়ে যাচ্ছে, আরও কটা দিন এভাবেই তা চলবে। কোথাও কোথাও সামান্য বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। তবে এতে গরম তেমন একটা কমবে না।
মঙ্গলবার সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহী, পাবনা, খুলনা, বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার ও রাঙ্গামাটি জেলাসহ ঢাকা, রংপুর ও বরিশাল বিভাগ এবং রাজশাহী ও খুলনা বিভাগে অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
এতে বলা হয়, সিলেট বিভাগে দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
অধিদপ্তর বলছে, সারা দেশের দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বিরাজ করতে পারে।
আবহাওয়ার সার্বিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংম পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
পরবর্তী পাঁচ দিনের আবহাওয়াও প্রায় একই থাকতে পারে জানিয়েছে অধিদপ্তর।
এর আগে সোমবার চলমান তাপপ্রবাহের পরিপ্রেক্ষিতে ৭২ ঘণ্টার জন্য দেশজুড়ের রেড অ্যালার্ট জারি করে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তার আগেও গত ১৯ এপ্রিল তিন দিনের হিট অ্যালার্ট দেয়া হয়। অ্যালার্ট থাকবে ২৫ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত।
টানা কদিন দেশের বিভিন্ন এলাকায় তাপমাত্রা বেড়েছে। বিশেষ করে চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া রাজশাহী, পাবনা, বরিশালেও প্রচণ্ড গরম। সোমবার খুলনা, যশোর ও চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাব অনুসারে, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মৃদু তাপপ্রবাহ, ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মাঝারি তাপপ্রবাহ, ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি হলে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ।
দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড হয়েছে সোমবার।
এদিন রাত ৯টায় ১৬ হাজার ২৩৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় ফেসবুকের ভেরিফায়েড পেজে পোস্টে এ কথা জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড হয়েছে সোমবার রাত ৯টায়। এ সময় ১৬ হাজার ২৩৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে।
পোস্টে জানানো হয়, বর্তমানে দেশব্যাপী চলছে তীব্র তাপদাহ। এই মুহূর্তে বিদ্যুৎ বিভাগ আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে জনজীবনে স্বস্তি বজায় রাখতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদনে।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এর আগে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড ছিল রোববার ১৫ হাজার ৬৬৬ মেগাওয়াট।
দেশজুড়ে চলমান তাপপ্রবাহে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় চাহিদার তুলনায় উৎপাদন ঘাটতির কারণে দেশে বিদ্যুতের প্রায় এক হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়েছে। সূত্র: ইউএনবি
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অফ বাংলাদেশের (পিজিসিবি) ন্যাশনাল লোড ডিসপ্যাচ সেন্টারের (এনএলডিসি) তথ্য অনুযায়ী, সোমবার বিকেল ৩টায় দেশে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৫ হাজার ২২০ মেগাওয়াট। সে সময় দেশ জুড়ে বিদ্যুতের লোডশেডিং ছিল ৯৯৬ মেগাওয়াট।
এদিন সন্ধ্যায় বিদ্যুতের চাহিদার পূর্বাভাস ছিল ১৫ হাজার ৬৬৬ মেগাওয়াট এবং সরবরাহের পূর্বাভাস ছিল ১৬ হাজার ২০০ মেগাওয়াট।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকা ও অন্যান্য বড় শহরে বিদ্যুৎ বিভ্রাট এড়াতে গিয়ে গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ বেড়ে গেছে।
তীব্র গরমের মধ্যে বিদ্যুৎহীনতায় গ্রামের মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। শেষ মুহূর্তের সেচ কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে মারাত্মকভাবে।
বিভিন্ন এলাকা থেকে পাওয়া সংবাদে জানা যায়, এই গ্রীষ্মে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে লোডশেডিংয়ের মাত্রা গ্রামীণ মানুষের দুর্দশা আরও বাড়িয়ে তুলছে।
এদিকে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলার তথ্যে দেখা যায়, দৈনিক তিন হাজার ৭৬০ মেগাওয়াট ঘনফুট চাহিদার বিপরীতে দেশে এই সময়কালে গ্যাস উৎপাদন হয়েছে তিন হাজার ৪৬ মিলিয়ন ঘনফুট।
এ অবস্থায় বেশ কিছু বিদ্যুৎ কেন্দ্র, বিশেষ করে যেগুলো প্রাথমিক জ্বালানি হিসেবে গ্যাস ব্যবহার করে থাকে, সেগুলোতে গ্যাস সংকটের কারণে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো দু’হাজার ৩১৬ দশমিক ৯ এমএমসিএফডি চাহিদার বিপরীতে এক হাজার ৩৪৯ দশমিক ৯ এমএমসিএফডি গ্যাস সরবরাহ পেয়েছে।
আরও পড়ুন:ট্রেনে ভ্রমণের ভাড়া বাড়ছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে রেয়াত সুবিধা তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই ভাড়া বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভাড়া বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে ৪ মে থেকে। ২৪ এপ্রিল থেকে বর্ধিত ভাড়ায় আগাম টিকিট বিক্রি করা হবে। তবে পণ্য পরিবহনে ভাড়া বাড়ছে না।
বর্তমানে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার বাদে অন্যান্য রুটের যাত্রীরা ১০০ কিলোমিটারের বেশি ভ্রমণে ভাড়ায় ২০ শতাংশ রেয়াত পান। ২৫১ থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরত্বে রেয়াত পান ২৫ শতাংশ। আর ৪০০ কিলোমিটারের বেশি ভ্রমণে ৩০ শতাংশ রেয়াত পান। রেলওয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, দূরত্বভিত্তিক এই রেয়াত সুবিধা আর থাকছে না।
রেল ভ্রমণে রেয়াত প্রত্যাহারের প্রস্তাব গত মাসে অনুমোদন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে সময় ট্রেনের ভাড়া বাড়ছে- এমন খবর প্রচার হয়। অবশ্য সে সময়ে রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম ভাড়া বৃদ্ধির সেই খবরকে গুজব বলে দাবি করেন।
রেল সূত্র জানিয়েছে, ঈদযাত্রার কারণে এতদিন ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়নি। ২৪ এপ্রিল থেকে বর্ধিত ভাড়ায় টিকিট বিক্রি করা হবে। আর ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে ৪ মে থেকে।
যাত্রীর আবেদনে সংযোজন করা অতিরিক্ত বগির ভাড়াও বাড়বে। সংযোজিত বগির শোভন শ্রেণিতে ২০ শতাংশ এবং শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (স্নিগ্ধা) ও অন্যান্য উচ্চ শ্রেণিতে ৩০ শতাংশ রিজার্ভেশন সার্ভিস চার্জ যোগ করা হবে ভাড়ার সঙ্গে।
ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের দূরত্ব ৩২১ কিলোমিটার। ১০০ কিলোমিটারের পর ২০ শতাংশ এবং ২৫০ কিলোমিটারের পর ২৫ শতাংশ ছাড় পান যাত্রীরা। এই রুটে শোভন চেয়ারের ভাড়া ৩৪৫ টাকা। বিরতিহীন সোনার বাংলা ট্রেনে এই শ্রেণিতে ভাড়া ৪০৫ টাকা। কিন্তু রেয়াত সুবিধাবিহীন এবং বিরতিহীন পর্যটক এক্সপ্রেসে ভাড়া ৪৫০ টাকা। রেয়াত সুবিধা উঠে গেলে সাধারণ ট্রেনেও শোভন চেয়ার শ্রেণিতে ভাড়া হবে ৪০৫ টাকা।
লোকসান কমাতে এমন সিদ্ধান্ত
বাংলাদেশ রেলওয়ে ১৯৯২ সালে ট্রেনের ভাড়ায় রেয়াত সুবিধা দেয়া শুরু করে। এবার লোকসান কমাতে সেই রেয়াত সুবিধা বাতিল করছে রেলওয়ে। আয় বাড়াতে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রেলকে বাড়তি গুরুত্ব দেয়। রাষ্ট্রায়ত্ত এই পরিবহন সংস্থার উন্নয়নে এক লাখ ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয় করা হয়েছে। এর মধ্যে পরিচালন ব্যয় ৪০ হাজার কোটি টাকার মতো। বিপরীতে রেল আয় করেছে ১৬ হাজার কোটি টাকা। ১ টাকা আয় করতে ২ টাকা ৭৮ পয়সা খরচ করছে রেলওয়ে। আয়-ব্যয়ের এই ব্যবধান কমিয়ে আনতেই ভাড়া বাড়াতে যাচ্ছে রেল কর্তৃপক্ষ।
সবশেষ ২০১২ ও ২০১৬ সালে ট্রেনের ভাড়া বাড়িয়েছিল রেল। ২০১৬ সালে ভাড়া বাড়ানো হয় ৭ থেকে ৯ শতাংশ। নতুন নির্মিত পদ্মা সেতু রেল সংযোগ এবং চট্টগ্রামের দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথে পন্টেজ চার্জ যোগ করে ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন রেল সেতুর প্রতি কিলোমিটারকে ২৫ কিলোমিটার এবং ভায়াডাক্ট বা রেল ফ্লাইওভারের প্রতি কিলোমিটারকে পাঁচ কিলোমিটার হিসাব করে বাণিজ্যিক দূরত্ব নির্ধারণ করা হয়। এতে বাণিজ্যিক দূরত্ব বেড়েছে। রেয়াত সুবিধা না থাকায় বাণিজ্যিক দূরত্বের কারণে ভাড়া বাড়বে।
পণ্য পরিবহনে ভাড়া বাড়ছে না
যাত্রী ভাড়ায় রেয়াত সুবিধা বাতিল হলেও পণ্য পরিবহনে তা অব্যাহত থাকবে। কারণ পরিবহন করার মতো পণ্যের সংকট রয়েছে। তাই ব্যবসায়ীদের আগ্রহ ধরে রাখতে পণ্য পরিবহনে বিদ্যমান সুবিধা বহাল রাখা হবে।
কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-সানিকে ঢাকায় লালগালিচা অভ্যর্থনা জানানো হয়েছে। দু’দিনের সরকারি সফরে সোমবার বিকেলে ঢাকায় পৌঁছার পর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
আমির ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী কাতার এয়ারওয়েজের একটি বিশেষ বিমান বিকেল ৫ টার দিকে ঢাকায় বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এ সময় ২১ বার তোপধ্বনি করা হয়।
এরপর আমিরকে অস্থায়ী অভিবাদন মঞ্চে নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মানের অংশ হিসেবে গার্ড অফ অনার দেয়া হয়। এ সময় দু’দেশের জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হয়। কাতারের আমির প্যারেড পরিদর্শন করেন। সূত্র: বাসস
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন কাতারের আমিরকে প্রেজেন্টেশন লাইনে অপেক্ষমাণ ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। এ সময় আমিরও তার প্রতিনিধিদের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মো. নসরুল হামিদ বিপু, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সচিবগণ এবং ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ আমন্ত্রণে ঢাকায় এসেছেন কাতারের আমির।
বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে কাতারের আমির তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে অবস্থান করবেন।
মঙ্গলবার সকালে কাতারের আমিরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এরপর সকাল সোয়া ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শিমুল হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তিনি বৈঠক করবেন।
পরবর্তীতে এই সফরে দু’দেশের মধ্যে ছয়টি চুক্তি এবং পাঁচটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
চুক্তিগুলো হলো- দ্বৈত কর ও কর ফাঁকি পরিহার, আইনি বিষয়ে সহযোগিতা, সমুদ্র পরিবহন, পারস্পরিক বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা, দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের স্থানান্তর এবং একটি যৌথ ব্যবসায়িক পরিষদ প্রতিষ্ঠা।
এর বাইরে শ্রমশক্তি, উচ্চশিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং কূটনৈতিক প্রশিক্ষণে সহযোগিতাসহ পাঁচটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
দুপুরে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বঙ্গভবনের দরবার হলে কাতারের আমিরের সম্মানে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করবেন।
সন্ধ্যায় বিশেষ বিমানে করে আমির কাতারের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করার কথা রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ তাকে বিমানবন্দরে বিদায় জানাবেন।
আরও পড়ুন:দেশের যে কোনো কারখানায়ই এখন থেকে শ্রমিক ইউনিয়ন গঠন করা যাবে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক।
সোমবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি। সূত্র: ইউএনবি
বৈঠক প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে শ্রমিক আইন সংশোধনের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা মূলত বাংলাদেশের শ্রম আইন, শ্রমিকদের অধিকার এবং তা নিয়ে আমরা কী কাজ করছি সে বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
‘এছাড়া ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে শ্রমিকদের সম্মতির হার অর্থাৎ ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করার জন্য কত শতাংশ শ্রমিক প্রয়োজন তা জানতে চেয়েছেন প্রতিনিধিরা।
আনিসুল হক বলেন, ‘ট্রেড ইউনিয়নে গঠনের ক্ষেত্রে ২০১৬ সালের দিকে শ্রমিকদের সম্মতির হার ছিল ৩০ শতাংশ। ২০১৭ সালে যখন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সম্মেলনে যাই, তখন এই হার ২০ শতাংশে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এই হার আরও কমানো হবে, তবে সেটি ধীরে ধীরে।
‘এবার যখন সংশোধনী হয়, তখন প্রথম প্রস্তাব ছিল- এটাকে ২০ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশে নিয়ে আসব। কিন্তু সেখানে একটা ক্যাভিয়েট (শর্ত) ছিল, এটা শুধু যেসব কারখানায় তিন হাজার বা তার চেয়ে বেশি শ্রমিক কর্মরত, তাদের জন্য প্রযোজ্য হবে। সেই সীমাও উঠিয়ে দেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘শ্রম আইন নিয়ে সমস্যা যখন হয়েছিল, রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে ফেরত আনা হয়েছিল, তার পরের আলোচনায় সিদ্ধান্ত নিয়েছি- আমরা এটা সবার জন্য করবো, কোনো ক্যাপ (সীমা) থাকবে না। সেটাও আমরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের জানিয়েছি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ শ্রমিক আইন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ যেটা হচ্ছে, সেখানে প্রযোজ্য হবে। আগে বাংলাদেশ এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন লেবার অ্যাক্টে প্রযোজ্য হওয়ার কথা ছিল। সেই সংশোধনী আমরা করেছি। যে ১১টি বিষয় তারা জানতে চেয়েছিলেন তাতে এগুলো ছিল।’
যেসব বিষয়ে কাজ শেষ হয়েছে সেসব প্রতিনিধি দলকে জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
আনিসুল হক বলেন, ‘প্রতিনিধিরা শ্রমিক অধিকার নিয়ে জানতে চেয়েছিলেন। এটা চলমান কাজ। শ্রমিকদের অধিকার দিন দিন বাড়বে, কমবে না।’
বাংলাদেশের শ্রম আইন ও অধিকারের বিষয়ে শোনার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে জানান তিনি।
আনিসুল হক আরও বলেন, ‘সবসময় শ্রমিকদের অধিকার যা আছে, তার থেকে বেশি যাতে তারা পায় এবং অধিকার বাস্তবায়ন করা, তারা যাতে সেটা ভোগ করতে পারে, সেটা সরকার নিশ্চিত করবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য