× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

জাতীয়
একাত্তরের যীশু
google_news print-icon

একাত্তরের যীশু

একাত্তরের-যীশু
আজমিরীগঞ্জ বাজারের মাঝে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে তার মরদেহ এমনভাবে রাখা হয় যাতে তার ভয়ংকর পরিণতি সবাই দেখতে পারে। বাঁধা অবস্থাতেই অস্ত্র দিয়ে খোঁচানো হয় নিথর দেহ। জগৎজ্যোতির গাঁয়ে থু থু ফেলে রাজাকাররা।

১৯৭১ সালের ১৬ নভেম্বর দুপুর। হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বদলপুরে যুদ্ধ শুরু হয়েছে পাকিস্তানি বাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর মধ্যে। হঠাৎ একটি গুলি লাগল ইলিয়াস চৌধুরীর বুকে। মাথার গামছা খুলে সহযোদ্ধার বুক বেঁধে দিয়ে দাস বাহিনীর কমান্ডার জগৎজ্যোতি বললেন, ‘বাঁচবি?’ তরুণ ইলিয়াসের জবাব, ‘বাঁচতে পারি।’ এবার জগৎজ্যোতির নির্দেশ, ‘তাহলে যুদ্ধ কর।’

এই যুদ্ধে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান ইলিয়াস চৌধুরী; শহীদ হন জগৎজ্যোতি দাস।

সেই ইলিয়াস নিউজবাংলাকে শুনিয়েছেন জগৎজ্যোতি ও তার দলের বীরত্বের কাহিনী।

তিনি জানান, যুদ্ধে জগৎজ্যোতির নামে ‘দাস পার্টি’ নামে আলাদা বাহিনী গঠিত হয়। অসীম সাহসী ও বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তরুণদের এ বাহিনী বিস্তীর্ণ হাওর অঞ্চলে শত্রুদের কাছে ছিল আতঙ্কের নাম। যুদ্ধের সময় উত্তরপূর্ব রণাঙ্গণের মুক্তি সেনাদের কাছে কিংবদন্তিতে পরিণত হয়েছিলেন জগৎজ্যোতি ও তার দাস পার্টি।

১৬ নভেম্বর সন্ধ্যার আগে আগে নিজ গ্রাম জলসুখার পাশেই শহিদ হন দাস পার্টির তরুণ কমান্ডার জগৎজ্যোতি দাস। এর অনেক আগেই ‘টেরর দাস’-এর মাথার দাম ঘোষণা করেছিল হানাদাররা। কাকতালীয়ভাবে মাথায়ই গুলি লাগে তার। ‘আমি যাইগ্যা’ বলে সহযোদ্ধাদের কাছ থেকে বিদায় নেন তিনি।

বিলের কাদাপানিতে কমান্ডারের মরদেহ ঢেকে রেখে সেদিন কোনোমতে প্রাণ নিয়ে ফিরেছিলেন ইলিয়াস।

তিনি জানান, কিন্তু পরদিন বৃষ্টি হয়, বিলে ভেসে ওঠে জগৎজ্যোতির মরদেহ। সেই মরদেহ নিয়ে এলাকায় ঘুরে বেড়ায় পাকিস্তানি হানাদাররা। তার বাবা-মাকে ঘর থেকে টেনে এনে ছেলের মরদেহ দেখানো হয়। পরে পুড়িয়ে দেয়া হয় তাদের বসতঘর।

এরপর আজমিরীগঞ্জ বাজারের মাঝে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে তার মরদেহ এমনভাবে রাখা হয় যাতে তার ভয়ংকর পরিণতি সবাই দেখতে পারে। এ ঘটনার একটি ছবি পাওয়া যায়।

শহর থেকে ফটোগ্রাফার ভাড়া করে পাকিস্তানি সেনারাই ছবিটি তুলিয়েছিল। এই ছবি দেখলে জগৎজ্যোতিকে যীশু খ্রিষ্টের মতো মনে হয়। যীশুর মতোই খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয় তার মরদেহ। বাঁধা অবস্থায়ই অস্ত্র দিয়ে খোঁচানো হয় নিথর দেহ। জগৎজ্যোতির গাঁয়ে থু থু ফেলে রাজাকাররা। পরবর্তী সময়ে মরদেহটি ভাসিয়ে দেয়া হয় ভেড়ামোহনার পানিতে।

এ ঘটনার ঠিক এক মাস পর বাংলাদেশ পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত হয়।

জগৎজ্যোতিকে সর্বোচ্চ সম্মাননা দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছিল স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে। কিন্তু স্বাধীনতার পর তার ভাগ্যে সর্বোচ্চ সম্মান মেলেনি, মিলেছে ‘বীর উত্তম’ খেতাব।

জগৎজ্যোতি যেখানে শহিদ হয়েছেন, সেখানে নেই কোনো স্মৃতিস্তম্ভ। তার গ্রামেও নেই এই বীর মুক্তিযোদ্ধার কোনো স্মৃতিচিহ্ন। তার পরিবারও পায়নি কোনো রাষ্ট্রীয় সুবিধা। এক খণ্ড জমির আশ্বাস দেয়া হলেও তা আশ্বাসই রয়ে গেছে। বেঁচে থাকা জগৎজ্যোতির একমাত্র ভাতৃবধূ থাকেন নিজের মেয়ের বাড়িতে।

‘ভাটির বীরশ্রেষ্ঠ’

হবিগঞ্জের হাওরবেষ্টিত আজমিরীগঞ্জ উপজেলার জলসুখা গ্রামে ১৯৪৯ সালের ২৬ এপ্রিল জন্ম নেন জগৎজ্যোতি দাস। বাবা জীতেন্দ্র চন্দ্র দাস ও মা হরিমতি দাসের ছোট সন্তান তিনি। তার বাবা ও বড় ভাই রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন।

১৯৬৮ সালে দ্বিতীয় বিভাগে মেট্রিক পাস করেন জগৎজ্যোতি। এরপর উচ্চ শিক্ষার জন্য ভারতের অসমে কাকার বাড়ি যান। এর আগে স্থানীয় বীরচরণ হাইস্কুলে পড়ার সময়ই ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত হন তিনি, জড়িয়ে পড়েন বামধারার রাজনীতিতে।

একাত্তরের যীশু

অসমে জগৎজ্যোতির উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পর মারা যান তার কাকা ননীগোপাল দাস। হুমকিতে পড়ে তার শিক্ষাজীবন। চাচাতো ভাই তাকে ভর্তি করিয়ে দেন সেখানকার সেনাবাহিনীতে। প্রশিক্ষণ শেষে চাকরিতে ঢোকার দুদিন আগে বাংলাদেশে ফিরে আসেন জ্যোতি।

এরপর নিজ গ্রাম জলসুখার কৃষ্ণগোবিন্দ পাবলিক হাইস্কুলে ৭৫ টাকা বেতনের শিক্ষকতার চাকরি নেন। পরে চাকরি ছেড়ে সুনামগঞ্জ কলেজে গিয়ে স্নাতকে ভর্তি হন।

১৯৭১ সালে জগৎজ্যোতি ছিলেন সুনামগঞ্জ ছাত্র ইউনিয়নের প্রথম সারির কর্মী। যুদ্ধের শুরুতে সুনামগঞ্জ সীমান্তের ওপারে মেঘালয় রাজ্যের বালাটে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেন তিনি। সেখানেই পরিচয় ইলিয়াস চৌধুরীর সঙ্গে।

ইলিয়াস বলেন, ‘শরণার্থী শিবিরে স্থানীয় কিছু খাসিয়া অনেক জ্বালাতন করত। মারধর করে টাকা-পয়সা নিয়ে যেত। জগৎজ্যোতি এসবের প্রতিবাদ করেন। শরণার্থী কয়েকজন তরুণকে নিয়ে একটা দল গঠন করেন। একদিন খাসিয়ারা আক্রমণ করতে এলে পাল্টা আক্রমণ করে জগৎজ্যোতির দল।’

এ ঘটনার পর থেকে ইলিয়াস ছিলেন ‘প্রিয় দাদার’ দোসর। টেকেরঘাটের আরেকটি ঘটনা শুনিয়েছেন ইলিয়াস চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘‘টেকেরঘাট শরণার্থী শিবিরে আয়োজন করা হয়েছিল দুর্গাপূজার। সেখানে মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতীয় জওয়ানরা অংশ নিয়েছিলেন। পূজামণ্ডপে হিন্দিভাষী এক জওয়ান বাঙালি এক মেয়েকে উত্ত্যক্ত করায় জ্যোতিদা তার মাথা ফাটিয়ে দেন। এ ঘটনায় জ্যোতি ও তার দলের কয়েক জনকে আটক করে নেয়া হয় মেজর ভাটের দপ্তরে।

“সেখানে জ্যোতি বলেন, ‘পাকিস্তান আর্মির যে আচরণের জন্য আমরা অস্ত্র হাতে নিয়েছি, সেই আচরণ ভারতীয় বাহিনীর কাছ থেকে পেয়েছি বলেই আঘাত করতে বাধ্য হয়েছি। আমাদের গুলি করতে হলে করুন, কিন্তু হাত বাঁধা অবস্থায় না। আমরা মুক্তিযোদ্ধা, ক্রিমিনাল না।’ জ্যোতির এমন সাহসী উচ্চারণে মন গলে ভারতীয় মেজরের। কয়েকটা বাংকার খোড়ানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে তাদের শাস্তি।’’

বালাটের শরণার্থী শিবির থেকে যুদ্ধে অংশ নেয়ার জন্য সদলবলে শিলংয়ে ট্রেনিংয়ে যান জ্যোতি। নেতৃত্বগুণ, সাহসিকতা, কঠোর পরিশ্রম এবং ইংরেজি ও হিন্দি ভাষার দক্ষতার জন্য সহজেই সবার দৃষ্টি কাড়েন তিনি। জ্যোতির নেতৃত্বেই গড়ে ওঠে ‘দাস পার্টি’।

মুক্তিযুদ্ধে টেকেরঘাট সাব-সেক্টরের ভাটি অঞ্চল শত্রুমুক্ত রাখার দায়িত্ব পড়ে দাস পার্টির ওপর। দিরাই, শাল্লা, ছাতক, আজমিরীগঞ্জ, বানিয়াচং, জামালগঞ্জ, তাহিরপুর, কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোণার নৌপথ পাকিস্তানি দখলমুক্ত রাখতে যুদ্ধ করে তারা। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর রসদবাহী জাহাজ ডোবানো, অস্ত্রবাহী লঞ্চ দখল, রাজাকারদের নৌকা উড়িয়ে দেয়ার কাজ সাফল্যের সঙ্গে করতে থাকে এ বাহিনী।

দাস পার্টির আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পাকিস্তান সরকার রেডিওতে ঘোষণা দেয়, ওই নৌপথ দিয়ে চলাচলকারীদের জানমালের দায়িত্ব সরকার নেবে না।

বানিয়াচংয়ে হানাদারদের প্রায় ২৫০ সদস্য ও তাদের দোসরদের পিছু হটতে বাধ্য করেন জ্যোতি। এ যুদ্ধে শত্রুপক্ষের ৩৫ জন মারা যায়। ১৭ আগস্ট পাহাড়পুড়ে তার বুদ্ধি ও বীরত্বে রক্ষা পায় অসংখ্য বাঙালির প্রাণ। এ যুদ্ধে মারা যায় শতাধিক রাজাকার। ভেড়ামাড়ায় শত্রুদের কার্গো কনভয় ধ্বংস করে দেয়া হয়। জগন্নাথপুরের রানীগঞ্জে রাজাকারদের ঘাঁটি গুড়িয়ে দেয় দাস পার্টি। মার্কুলিতে দুই শতাধিক রাজাকারের আস্তানা দখল করা হয়। সদরপুর ব্রিজ উড়িয়ে ঠেকিয়ে দেয়া হয় পাকিস্তানিদের।

জামালগঞ্জ থানা ভবন দখলের মধ্য দিয়ে জামালগঞ্জ মুক্ত করার যুদ্ধ শুরু। এ যুদ্ধে শহিদ হন দাস পার্টির সিরাজুল ইসলাম। পরবর্তী সময়ে সিরাজুলকে বীর বিক্রম খেতাব দেয়া হয়। এরপর শ্রীপুর শত্রুমুক্ত করেন জগৎজ্যোতি।

আগস্ট মাসে দিরাই-শাল্লায় অভিযান চালিয়ে কোনো গুলি ব্যয় না করেই কৌশলে আটক করা হয় ১০ জন রাজাকারের একটি দলকে। রানীগঞ্জ ও কাদিরীগঞ্জে অভিযান চালিয়েও দাস পার্টি আটক করে রাজাকারদের।

‘চক্রব্যুহে অভিমন্যু’

১৬ নভেম্বর ভোরে দাস পার্টির ৪২ জনকে নিয়ে নৌকায় হবিগঞ্জের বাহুবলের দিকে রওনা দেন জগৎজ্যোতি। পথে বদলপুর ইউনিয়ন অফিসের সামনে রাজাকারদের পাতা ফাঁদে পড়ে যান তারা। তিন-চার জন রাজাকার ব্যবসায়ীদের নৌকা আটকে চাঁদা আদায় করছিল। ক্ষুব্ধ জ্যোতি রাজাকারদের ধরে আনার নির্দেশ দেন। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের দেখেই পিছু হঠতে থাকে রাজাকাররা।

১০-১২ জন মুক্তিযোদ্ধা সামান্য গোলাবারুদ নিয়ে তাড়া করেন রাজাকারদের। এদিকে পাকিস্তানি সেনারা বিশাল বহর আর প্রচুর গোলাবারুদ নিয়ে দুই দিকে ঘাপটি মেরে ছিল। সেই চক্রব্যুহে ঢুকে পড়ে দাস পার্টি। শুরু হয় যুদ্ধ। ফুরিয়ে আসতে থাকে গোলাবরুদ। হতাহত হন অনেকে।

বিকেল পৌনে ৫টা। জ্যোতির অস্ত্রভান্ডার প্রায় শূন্য। সহযোদ্ধা বলতে কেবল গুলিবিদ্ধ ইলিয়াস। তবু পিছু ফিরছেন না তিনি। আচমকা একটা বুলেট এসে লাগে জ্যোতির মাথায়। জগৎজ্যোতি শেষবারের মতো চিৎকার করে বলেন ‘আমি যাইগ্যা’।

বঞ্চনার শুরু যুদ্ধের পরই

জগৎজ্যোতি দাসকে নিয়ে ‘সিলেটের যুদ্ধকথা’ বইয়ে তাজুল মোহাম্মদ লিখেছেন, ‘সে সময় (শহিদ হওয়ার পর) স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে ঘোষণা দেয়া হয় যে, জগৎজ্যোতি দাসকে সর্বোচ্চ খেতাব প্রদান করা হবে। কিন্তু স্বাধীনতার পর তার বাস্তবায়ন হয়নি।’

মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক সালেহ চৌধুরী ‘একাত্তরের দিরাই-শাল্লা’ প্রবন্ধে লিখেছেন, ‘জগৎজ্যোতির প্রতি বাংলাদেশ সরকার তার প্রতিশ্রুতি রাখেনি। ... সর্বোচ্চ খেতাব মুক্তিযুদ্ধের একটি বিশেষ অংশের জন্য সীমাবদ্ধ রয়ে গেল। সরাসরি সশস্ত্র বাহিনীর না হলে সর্বোচ্চ খেতাব দেয়া যাবে না। অতএব জগৎজ্যোতিও বাদ। ওতে কিছু যায় আসেনি। জ্যোতিরও কোনো ক্ষতি হয়নি। স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গকারী জগৎজ্যোতিরা অমর। তাদের কীর্তি অক্ষয় অবিস্মরণীয়।’

মুক্তিযুদ্ধের ৪ নম্বর সেক্টরের সাব কমান্ডার মাহবুবুর রব সাদীকে ১৯৭২ সালে ‘বীর প্রতীক’ খেতাব প্রদান করা হলে তিনি তা বর্জন করেন। ২৩তম স্বাধীনতা দিবসের আগে আবার তা দিতে চাইলে আবারও বর্জন করেন সাদী।

এ প্রসঙ্গে দৈনিক আজকের কাগজে এক সাক্ষাৎকারে সাদী বলেন, ‘আমি নিজে অন্তত তিন জনকে জানি, যাদের বীরশ্রেষ্ঠ খেতাব পাওয়া উচিত ছিল। এদের এক জন জগৎজ্যোতি। মুক্তিযুদ্ধে অসীম সাহসী বীরত্ব প্রদর্শন করেও যারা যথাযথ মূল্যায়ন ও খেতাব পাননি তাদের আত্মার প্রতি সম্মান দেখাতেই আমি খেতাব ও সম্মান বর্জন করেছি।’

একাত্তরের যীশু

স্বাধীনতার পর আজমিরীগঞ্জ উপজেলার নাম জগৎজ্যোতিগঞ্জ করার প্রস্তাব দেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। পরবর্তী সময়ে স্বাধীনতাবিরোধীদের বিরোধিতায় তা সম্ভব হয়নি।

সুনামগঞ্জের পৌর পাঠাগারের নাম রাখা হয় জগৎজ্যোতি পৌর পাঠাগার নামে। তবে জগৎজ্যোতির নিজ জেলা হবিগঞ্জে জগৎজ্যোতির স্মৃতিরক্ষায় নেই তেমন কোনো উদ্যোগ।

দেশ মিলেছে, দিন ফেরেনি

জলসুখা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশীদ জগৎজ্যোতির বাল্যবন্ধু। তিনি নিজেও দাস পার্টির সদস্য ছিলেন।

তিনি জানান, গ্রামেও জগৎজ্যোতির কোনো স্মৃতিস্তম্ভ বা স্মৃতিরক্ষার কোনো উদ্যোগ নেই।

জগৎজ্যোতিদের প্রাণের বিনিময়ে মানচিত্র আর লাল সবুজের পতাকার মালিকানা মিললেও দিন ফিরেনি তাদের পরিবারের। এখনও দরিদ্র্যই সঙ্গী তাদের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জগৎজ্যোতির বাবা, মা ও ভাই অনেক আগেই মারা গেছেন। আছেন বৌদি, বোন ও ভাতিজা। বৌদি ফনিবালা দাস নবীগঞ্জের ইনাতগঞ্জে মেয়ের বাড়িতে থাকেন। তার ছেলে দুলালচন্দ্র দাস হবিগঞ্জে এক দোকানে চাকরি করেন। আর জ্যোতির বোন থাকেন দিরাইয়ে স্বামীর বাড়িতে।

জগৎজ্যোতির ভাতিজা দুলালচন্দ্র দাস জানান, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত হবিগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের জন্য বরাদ্দকৃত জায়গায় তাদের পরিবারের বসবাসের জন্য এক খণ্ড জমি দেয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন।

‘কিন্তু আজও সে জায়গা আমরা পাইনি’, আক্ষেপের সুরে বলেন জগৎজ্যোতির ভাতিজা।

জ্যোতির সহযোদ্ধা ইলিয়াস চৌধুরী বলেন, ‘জগৎজ্যোতিকে যে স্থানে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছিল সেখানে একটি স্মৃতিসৌধ করার চেষ্টা করছি। কিন্তু আমি একা চাইলে তো হবে না। সবাই মিলে চাইলে সম্ভব হবে।’

তিনি বলেন, ‘তার (জগৎজ্যোতি) পরিবারের কেউ মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পান কি না, আমার জানা নেই।’

আজমিরীগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা উত্তম কুমার দাস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জগৎজ্যোতির পরিবার এখানে থাকেন না। তারা কোথায় আছেন, তাও জানি না। তার পরিবারের কেউ মুক্তিযোদ্ধা ভাতাও নেন না।’

তিনি জানান, জগৎজ্যোতির স্মৃতিরক্ষায় ভেড়ামোহনা নদীর পারে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হচ্ছে। আজমিরীগঞ্জে ‘বীর উত্তম জগৎজ্যোতি দাস’ নামে একটি সড়কের নামকরণ করা হয়েছে।

তথ্যসূত্র: হাসান মোরশেদের দাস পার্টির খোঁজে এবং অপূর্ব শর্মার অনন্য মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি

মন্তব্য

আরও পড়ুন

জাতীয়
Arafat arrived in Thimphu with the King of Bhutan

ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন আরাফাত

ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন আরাফাত পারো বিমানবন্দরে ভুটানের রাজা ও মোহাম্মদ আলী আরাফাতকে স্বাগত জানান দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে ও ভুটানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শিবনাথ রায়। ছবি: পিআইডি
বাংলাদেশ সফর শেষে বৃহস্পতিবার বিকেলে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে সড়কপথে দেশে ফেরেন ভুটানের রাজা। রাজার আমন্ত্রণে তার সফরসঙ্গী হয়ে ভারত হয়ে ভুটানে যান তথ্য প্রতিমন্ত্রী।

রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুকের আমন্ত্রণে ভুটান সফরে গেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। শুক্রবার ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তিনি।

বাংলাদেশ সফর শেষে বৃহস্পতিবার বিকেলে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে সড়কপথে দেশে ফেরেন ভুটানের রাজা। রাজার আমন্ত্রণে তার সফরসঙ্গী হয়ে ভারত হয়ে ভুটানে যান তথ্য প্রতিমন্ত্রী। সূত্র: বাসস

এদিন ভুটানের দক্ষিণাঞ্চলীয় গেলেফু সিটিতে অবস্থান করেন ভুটানের রাজা ও বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী। সেখানে অবস্থানকালে ভুটানের রাজা বেশকিছু সময় ধরে তথ্য প্রতিমন্ত্রীকে নিয়ে গেলেফু সিটি ঘুরে দেখেন এবং সেখানে শান্তিপূর্ণ, পরিবেশবান্ধব, পরিচ্ছন্ন ও সৌন্দর্যমণ্ডিত আইকনিক সিটি গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথা জানান।

গেলেফু সিটি থেকে ভুটানের রাজার সঙ্গে বিমানযোগে পারো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তথ্য প্রতিমন্ত্রী। বিমানবন্দরে ভুটানের রাজা ও মোহাম্মদ আলী আরাফাতকে স্বাগত জানান ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে ও ভুটানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শিবনাথ রায়। পরে পারো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে যান রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুক এবং প্রতিমন্ত্রী আলী আরাফাত।

ভুটান সফর শেষে রোববার দুপুরে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

আরও পড়ুন:
‘বিএনপি নির্বাচন বানচালে সফল হলে দেশে অগণতান্ত্রিক শক্তির উত্থান হতো’
তথ্য সংগ্রহে সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
৭ মার্চের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এগিয়ে যেতে হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
শুধু নিবন্ধিত অনলাইন পোর্টাল চালানোর অনুমতি দেয়া হবে: আরাফাত
চলচ্চিত্র নির্মাণে অনুদানে আরও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী

মন্তব্য

জাতীয়
Pirates are bringing food to sailors from outside

জিম্মি নাবিকদের বাইরে থেকে খাবার এনে দিচ্ছে জলদস্যুরা

জিম্মি নাবিকদের বাইরে থেকে খাবার এনে দিচ্ছে জলদস্যুরা ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘জাহাজ জিম্মি করলে জলদস্যুরা সাধারণত খাবার সরবরাহ করে। তবে সুপেয় পানি নিয়ে সমস্যা হয়। সেক্ষেত্রে রেশনিং করে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়।’

সোমালি জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ থাকা খাবার কমে আসছে। এ কারণে জলদস্যুরা বাইরে থেকে জাহাজে খাবার নিয়ে আসা শুরু করেছে। ফলে খাবার নিয়ে তেমন সমস্যা না হলেও বিশুদ্ধ পানির সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কেএসআরএম সূত্র জানিয়েছে, দস্যুদের সঙ্গে সমঝোতার বিষয়টিও এগিয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ২৩ নাবিক ও জাহাজ উদ্ধারে করণীয় সবকিছুই করা হচ্ছে বলে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘সাধারণত জাহাজে দুই ধরনের খাবার থাকে। এগুলো হচ্ছে, হিমায়িত খাবার ও শুকনো খাবার। যাত্রাপথের সময় অনুযায়ী জাহাজে খাবার মজুত রাখা হয়। তবে শুকনো খাবার অনেক দিনের জন্য মজুত থাকে।’

তিনি বলেন, ‘জাহাজ জিম্মি করলে জলদস্যুরা সাধারণত খাবার সরবরাহ করে। তবে সুপেয় পানি নিয়ে সমস্যা হয়। সেক্ষেত্রে রেশনিং করে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়।’

তিনি আরও জানান, জলদস্যুরা সম্প্রতি জাহাজের বাইরে থেকে খাবার আনছে- এরকম খবর তারা পেয়েছেন।

জাহাজের মালিক প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘খাবার এখনও শেষ হয়নি, তবে কমে আসছে। জলদস্যুরা তাদের নিজেদের জন্য বাইরে থেকে খাবার এনেছে বলে আমরা জেনেছি।’

তিনি বলেন, ‘আটক জাহাজ এবং জিম্মি ২৩ নাবিককে দ্রুত উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।

‘এমভি আবদুল্লাহকে জিম্মি করার সময় জাহাজটিতে নাবিকদের জন্য ২৫ দিনের খাবার ও ২০০ টন বিশুদ্ধ পানি ছিল। এই পানি দিয়ে এক মাস পর্যন্ত চালানো যাবে বলে তখন নাবিকরা জানিয়েছিলেন। তারা বলেছিলেন, তবে রেশনিং করলে অনেক দিন চালানো যাবে। পানি বাঁচাতে এখন শুধু রান্না ও খাবারের জন্য বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করছেন তারা।’

১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহকে জিম্মি করে সোমালি দস্যুরা। পরে তারা জাহাজটিকে সোমালিয়া উপকূলের কাছে নিয়ে যায়। চট্টগ্রামের কবির গ্রুপের মালিকানাধীন জাহাজটি বর্তমানে সোমালিয়ার গদভজিরান জেলার জিফল উপকূল থেকে দেড় নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করে আছে।

প্রায় ১৩ বছর আগে ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর এমভি জাহান মণি নামের একই গ্রুপের মালিকানাধীন একটি জাহাজ জিম্মি করেছিল সোমালি জলদস্যুরা। জাহাজটি ১০০ দিন পর সব নাবিকসহ উদ্ধার করা হয়েছিল।

অপরদিকে, জলদস্যুদের কবল থেকে জিম্মি ২৩ নাবিককে উদ্ধার ও জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ফেরত আনার বিষয়ে আলোচনা অনেকদূর এগিয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদও।

বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যোগাযোগের মধ্যে আছি। আমাদের উদ্দেশ্য হলো, নাবিকদের অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা। একইসঙ্গে জিম্মি জাহাজটি উদ্ধার করাও আমাদের উদ্দেশ্য। শুধু এতটুকু বলতে চাই, আমরা অনেক দূর এগিয়েছি।’

জাহাজে খাবার সংকটের বিষয়ে এক প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘অতীতে যখন জাহাজ অপহরণ হয়েছে, কখনও খাবারের সংকট হয়নি। তিন বছর ছিল, তখনও হয়নি; ১০০ দিন ছিল, তখনও হয়নি। আশা করি, এক্ষেত্রেও হবে না।’

আরও পড়ুন:
জিম্মি নাবিকদের সঙ্গে স্বজনের যোগাযোগ, আলোচনা চলছে
এমভি আবদুল্লাহর কাছাকাছি ইইউর যুদ্ধজাহাজ, অভিযানে ‘না’ মালিকপক্ষের
সোমালি দস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে জাহাজের মালিকপক্ষের
জিম্মি এমভি আব্দুল্লাহতে যেকোনো সময় বিস্ফোরণের শঙ্কা
জলদস্যুদের নতুন দল ‘এমভি আব্দুল্লাহ’র নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে

মন্তব্য

জাতীয়
Thunderstorm may occur in four divisions including Dhaka

বজ্রবৃষ্টি হতে পারে ঢাকাসহ চার বিভাগে

বজ্রবৃষ্টি হতে পারে ঢাকাসহ চার বিভাগে বৃষ্টিস্নাত সড়কে রিকশাচালক ও এক পথচারী। ফাইল ছবি
বৃষ্টিপাত নিয়ে বলা হয়, ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

দেশের চারটি বিভাগে বৃষ্টির আভাস দিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, অন্য অঞ্চলগুলোতে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দিয়েছে।

পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

বৃষ্টিপাত নিয়ে বলা হয়, ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

এ ছাড়া দেশের অন্যান্য জায়গায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

আজকের তাপমাত্রা নিয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।

আরও পড়ুন:
বজ্রবৃষ্টি হতে পারে আট বিভাগে
বৃষ্টি নামতে পারে
মৃদু দাবদাহ অব্যাহত থাকতে পারে দুই জেলায়
তিন জেলায় মৃদু দাবদাহ
দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে চার বিভাগে

মন্তব্য

জাতীয়
Take effective steps to get maximum benefits post LDC PM

এলডিসি-পরবর্তী সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ নিন: প্রধানমন্ত্রী

এলডিসি-পরবর্তী সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ নিন: প্রধানমন্ত্রী রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে এনইসি ভবনে বৃহস্পতিবার একনেক সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: বাসস
একনেক বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সত্যজিৎ কর্মকার বলেন, ‘এলডিসি থেকে উত্তরণে সম্ভাবনার পাশাপাশি কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের বিষয়ে সরকারের তরফ থেকে সমন্বয়ে কোনো সমস্যা নেই। এটি কোনো নির্দিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নয়, বরং এটি সার্বিক সমস্যা।’

স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে ২০২৬ সালে উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও উত্তরণ-পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে কৌশল প্রণয়ন করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সূত্র: বাসস

রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সভাপতিত্বকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সত্যজিৎ কর্মকার সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

তিনি বলেন, ‘এলডিসি থেকে উত্তরণে সম্ভাবনার পাশাপাশি কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের বিষয়ে সরকারের তরফ থেকে সমন্বয়ের কোনো সমস্যা নেই। এটি কোনো নির্দিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নয়, বরং এটি একটি সার্বিক সমস্যা।’

ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) মো. আব্দুস সালাম ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শহীদুজ্জামান সরকার বক্তব্য দেন। এ সময় পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ও সংশ্লিষ্ট সচিবগণ উপস্থিত ছিলেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, বৈঠকে মোট ৮ হাজার ৪২৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা ব্যয়সাপেক্ষ মোট ১১টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। মোট প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে ৭ হাজার ৯৩৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা সরকার দেবে এবং বাকি ৪৮৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা প্রকল্প সহায়তা হিসেবে আসবে।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর কিছু নির্দেশনা প্রকাশ করে পরিকল্পনা সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী মিসরের কায়রোতে বাংলাদেশ চ্যান্সারি কমপ্লেক্স ও আবাসিক ভবন নির্মাণের জন্য ১৬৬ কোটি টাকার প্রকল্পের অনুমোদন দেয়ার সময় প্রয়োজনীয় বিশ্রাম কক্ষ রাখা এবং প্রবাসী বাংলাদেশিরা যেন স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে পরিষেবা পান সেজন্য পর্যাপ্তসংখ্যক বুথ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের জেলাগুলোতে গ্রামীণ অবকাঠামোগত উন্নয়নে আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদনের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী কুড়িগ্রামে নদীভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং রাস্তা ও সেতু নির্মাণের সময় বন্যার বিষয়টি বিবেচনা করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

সারা দেশে ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স (তৃতীয় পর্যায়) নির্মাণের জন্য ৩ হাজার ৫৯ কোটি টাকার প্রকল্প সম্পর্কে সত্যজিৎ বলেন, প্রধানমন্ত্রী সারা দেশে বাকি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সগুলোর নির্মাণ দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে তিনি উপকূলীয় এলাকার ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের পাশাপাশি সোলার সিস্টেম রাখার জন্য একটি ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেন।

পরিকল্পনা সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেসব প্রকল্প সমাপ্তির পথে সেগুলোর সবশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে সংশ্লিষ্ট উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসেছেন।

প্রধানমন্ত্রী পরিকল্পনা কমিশনকে এসব প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ নিশ্চিত করতে বলেন, যাতে করে এগুলো দ্রুত সম্পন্ন করা যায়।

মিরপুরে বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠার জন্য ১১৫ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সেখানে নারীদের প্রশিক্ষণের বিষয়টি অগ্রাধিকার দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।

এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সরকার প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব করতে না চাইলেও মাঝে মাঝে জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত জটিলতা ও ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে বিলম্ব হয়।

তিনি বলেন, ‘উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন দেয়া হচ্ছে।

সভায় অনুমোদিত অন্যান্য প্রকল্পগুলো হল- অতিরিক্ত ২৮৮ কোটি ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০টি মিটার গেজ ডিজেল ইলেক্ট্রিক লোকোমোটিভ এবং ১৫০টি মিটার গেজ যাত্রীবাহী ক্যারেজ সংগ্রহ (প্রথম সংশোধিত); ৪৮১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা ব্যয়ে কাশিনাথপুর-দাশুরিয়া-নাটোর-রাজশাহী-নবাবগঞ্জ-কানসাট-সোনামসজিদ-বালিয়াদিঘি সীমান্ত জাতীয় মহাসড়কের যথাযথ মান উন্নয়ন; ৩৭১ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে সরকারি মৎস্য খামারের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্প (প্রথম পর্যায়); ২৩২ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ে কক্সবাজার জেলায় বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের ফিশ ল্যান্ডিং সেন্টারের উন্নয়ন; অতিরিক্ত ১৬৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ে অবকাঠামো, উন্নত দক্ষতা ও তথ্যের প্রবেশাধিকারের মাধ্যমে দুর্বল জনগোষ্ঠীর জন্য টিকে থাকার সামর্থ বৃদ্ধি এবং অতিরিক্ত ১ হাজার ৪৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে আটটি বিভাগীয় শহরে পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার, হার্ট ও কিডনি রোগের চিকিৎসা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা (প্রথম সংশোধিত)।

আরও পড়ুন:
পরাজিত শক্তি দেশের অভিযাত্রা স্তব্ধ করতে ওত পেতে আছে: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে ৩ সমঝোতা স্মারক সই
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর স্বাধীনতাবিরোধীরা রাজত্ব করে: প্রধানমন্ত্রী
স্বাধীনতা পুরস্কার তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন রাতে

মন্তব্য

জাতীয়
Will not corrupt nor condone BSMMU Vice Chancellor

দুর্নীতি করব না, প্রশ্রয়ও দেব না: বিএসএমএমইউ উপাচার্য

দুর্নীতি করব না, প্রশ্রয়ও দেব না: বিএসএমএমইউ উপাচার্য ছবি: সংগৃহীত
নবনিযুক্ত উপাচার্য বলেছেন, ‘আমি কোনো দুর্নীতি করব না। কোনো দুর্নীতি প্রশ্রয়ও দেব না। আমি মানুষ হিসেবে ভুল করতেই পারি, তবে ভুল হলে ধরিয়ে দেবেন। আমার কাজের গতি যেন ত্বরান্বিত হয়, সে ব্যাপারে সহযোগিতা করবেন।’

কোনো ধরনের দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবেন না বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ।

তিনি বলেছেন, ‘আমি কোনো দুর্নীতি করব না। কোনো দুর্নীতি প্রশ্রয়ও দেব না। আমি মানুষ হিসেবে ভুল করতেই পারি, তবে ভুল হলে ধরিয়ে দেবেন। আমার কাজের গতি যেন ত্বরান্বিত হয়, সে ব্যাপারে সহযোগিতা করবেন।’

বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডা. মিল্টন হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে দুপুর ১২টার দিকে উপাচার্যের কার্যালয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন নতুন উপাচার্য।

দায়িত্ব নিয়েই সবার প্রতি সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে উপাচার্য বলেন, ‘আমি আপনাদেরই লোক, আমি বঙ্গবন্ধুর লোক, আমি প্রধানমন্ত্রীর লোক। আমাকে সবাই সহযোগিতা করবেন, ভুল হয়ে ধরিয়ে দেবেন। তবে কেউ আমাকে পিছু টানবেন না।’

তিনি বলেন, ‘আমি কারও অন্যায় আবদার শুনব না। সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে চাই। প্রশাসনিক ক্ষমতা দেখাতে নয়, আমি আপনাদের বন্ধু হয়ে কাজ করতে চাই। আমি আপনাদের পাশে থেকে সব সমস্যা সমাধান করব।’

চিকিৎসকদের উদ্দেশে নতুন উপাচার্য বলেন, ‘আপনাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করলেই আমি সবচেয়ে খুশি হব। অন্যকিছু দিয়ে আমাকে খুশি করা যাবে না। কেউ দায়িত্ব পালন করতে না পারলে দায়িত্ব থেকে সরে যেতে হবে। যিনি চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করতে পারবেন, তিনিই দায়িত্ব নেবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ আমার বন্ধু। তিনি আমাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে বিদায় নিয়েছেন। আমি শারফুদ্দিন আহমেদকে শুভেচ্ছা জানাই।’

ডা. দীন মোহাম্মদ বলেন, ‘আমি সুনির্দিষ্ট কোনো গ্রুপের লোক নই। আমি কোনো ধরনের গ্রুপে যেতে চাই না। এ বয়সে আমার কোনো গ্রুপিংয়ের প্রয়োজন নেই। আমাকে যে আস্থা এবং বিশ্বাস নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখানে পাঠিয়েছেন, আমি সেটাকে মূল্যায়ন করতে চাই।’

উদ্বোধনের দীর্ঘদিন পরও সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল চালু না হওয়া প্রসঙ্গে নতুন উপাচার্য বলেন, ‘সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল চালু করা একটা বড় চ্যালেঞ্জ।’ এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও সচিবের সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানান তিনি।

উপাচার্য বলেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আমার দায়বদ্ধতা আছে। আমি বিদেশ থেকে অভিজ্ঞ চিকিৎসক-ট্রেইনারদের নিয়ে এসে আমাদের চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করব। আশা করি, সেবায় প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের অন্যতম জায়গায় অবস্থান করবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়টিকে বিশ্বের অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা উপাচার্য হিসেবে তার একমাত্র অ্যাজেন্ডা বলে উল্লেখ করেন তিনি।

মন্তব্য

জাতীয়
What the Yunus Center said about the Tree of Peace award

‘ট্রি অফ পিস’ পুরস্কার নিয়ে যা বলল ইউনূস সেন্টার

‘ট্রি অফ পিস’ পুরস্কার নিয়ে যা বলল ইউনূস সেন্টার ছবি: সংগৃহীত
ইউনূস সেন্টার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইউনেস্কোর পুরস্কারের বিষয়টি উল্লেখ করে। অধ্যাপক ইউনূসকে প্রদত্ত ‘ট্রি অফ পিস’ ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত পদকের একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য।

নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ইউনেস্কো ‘ট্রি অফ পিস’ পুরস্কার প্রদান করেনি বলে শিক্ষামন্ত্রীর দাবির একদিন পর এ বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছে ইউনূস সেন্টার।

বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে ইউনূস সেন্টার জানিয়েছে, ২০২৪ সালের ১৪-১৬ মার্চ প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে আজারবাইজানের বাকুতে অনুষ্ঠিত বাকু ফোরাম একাদশে বিশিষ্ট বক্তা হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, নিজামি গানজাভি ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার থেকে অধ্যাপক ইউনূসকে পাঠানো বাকু ফোরামের অফিশিয়াল অনুষ্ঠানসূচিতেও অধ্যাপক ইউনূস ইউনেস্কোর পুরস্কার গ্রহণ করবেন বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। অধ্যাপক ইউনূসকে বাকু ফোরামের সমাপনী নৈশভোজে যোগদানের বিষয়টি বিশেষভাবে মনে করিয়ে দেওয়া হয়, যাতে তিনি ‘ট্রি অফ পিস’ পুরস্কারটি গ্রহণের জন্য মঞ্চে সশরীর উপস্থিত থাকেন।

ইউনূস সেন্টার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইউনেস্কোর পুরস্কারের বিষয়টি উল্লেখ করে। অধ্যাপক ইউনূসকে প্রদত্ত ‘ট্রি অফ পিস’ ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত পদকের একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এর আগে ২০২৩ সালের জুনে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ইউনেস্কোর প্রধান কার্যালয় পরিদর্শনের সময় ইউনেস্কো এবং অধ্যাপক ইউনূস প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সংগঠন ইউনূস স্পোর্টস হাবের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার উদ্দেশ্য ছিল ইউনেস্কোর ফিট ফর লাইফ ফ্ল্যাগশিপের অধীন টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে উভয় প্রতিষ্ঠানের একসঙ্গে কাজ করে যাওয়া।

এর আগে বুধবার শিক্ষামন্ত্রী ও বাংলাদেশ ইউনেস্কো কমিশনের চেয়ারম্যান মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, “নোবেল বিজয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে ইউনেস্কো ‘ট্রি অফ পিস’ পুরস্কার দেয়নি।”

তিনি বলেন, “আজারবাইজানের গঞ্জাভি ফাউন্ডেশনের আমন্ত্রণে ড. ইউনূসকে ইসরাইলের একজন ভাস্কর ‘ট্রি অফ পিস’ পুরস্কারে ভূষিত করেন।”

ইউনেস্কো থেকে পুরস্কার পেয়েছেন বলে ড. ইউনূস যে দাবি করেছেন তা অসত্য বলে দাবি করেন মন্ত্রী।

আরও পড়ুন:
ইউনেস্কো পুরস্কার নিয়ে ইউনূস সেন্টারের তথ্য বিভ্রান্তিকর: শিক্ষামন্ত্রী
ইউনেস্কোর ‘ট্রি অফ পিস’ পুরস্কার পেলেন ড. ইউনূস

মন্তব্য

জাতীয়
Dr Yunus favors genocide with Israeli reward Foreign Minister

ড. ইউনূস ইসরায়েলির পুরস্কার নিয়ে গণহত্যার পক্ষ নিয়েছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ড. ইউনূস ইসরায়েলির পুরস্কার নিয়ে গণহত্যার পক্ষ নিয়েছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৃহস্পতিবার মতবিনিময় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ছবি: নিউজবাংলা
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ড. ইউনূস শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। ওদিকে গাজায় আজ নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ চলছে, নারী ও শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে। এ নিয়ে তিনি একটি শব্দ‌ও উচ্চারণ করেননি। ‘বরং এই সময়ে তিনি একজন ইসরায়েলির কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেছেন। এর অর্থ কি এটাই নয় যে ড. ইউনূস প্রকারান্তরে গণহত্যায় সমর্থন দিয়েছেন?’

শান্তিতে নোবেলজয়ী হয়েও ড. ইউনূস ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার পক্ষ নিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, হত্যাযজ্ঞে নিশ্চুপ থেকে এবং একজন ইসরায়েলির দেয়া পুরস্কার নিয়ে ড. ইউনূস প্রকারান্তরে গণহত্যায় সমর্থন দিয়েছেন। আর ইউনূস সেন্টার এটিকে ইউনেস্কোর পুরস্কার উল্লেখ করে মিথ্যাচার করছে, যা খুবই দুঃখজনক।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৃহস্পতিবার মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘ইউনূস সেন্টারের মিথ্যাচারে আমি বিষ্মিত, হতবাক। সম্প্রতি আজারবাইজানের বাকুতে একটি সম্মেলনে মিজ হেদভা সের নামে একজন ইসরায়েলি ভাস্বর ড. ইউনুসকে একটি পুরস্কার দিয়েছেন। এ সম্মেলনে ইউনেস্কো কোনোভাবে জড়িত ছিল না।

‘এই পুরস্কার ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে তো নয়ই, একজন ব্যক্তির পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে। আর ইউনূস সেন্টার সেটিকে ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে বলে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার করেছে। তবে এটিই প্রথম নয়, এর আগেও এ ধরনের মিথ্যাচার ইউনূস সেন্টারের পক্ষ থেকে করা হয়েছে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ড. ইউনূস শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। ওদিকে গাজায় আজ নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ চলছে, নারী ও শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে। এ নিয়ে তিনি একটি শব্দ‌ও উচ্চারণ করেননি, প্রতিবাদ করেননি।

‘বরং এই সময়ে তিনি একজন ইসরায়েলির কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেছেন। এর অর্থ কি এটাই নয় যে ড. ইউনূস প্রকারান্তরে গণহত্যায় সমর্থন দিয়েছেন? এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।’

সীমান্ত হত্যায় বিজিবি’র মাধ্যমে প্রতিবাদ

মতবিনিময় অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২৫ মার্চ মধ্যরাতে লালমনিরহাট ও ২৬ মার্চ ভোরে নওগাঁ সীমান্তে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হওয়ার ঘটনায় বিজিবি’র মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানো এবং সীমান্তে পতাকা বৈঠকও হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা অনেকদিন ধরেই ভারতের সঙ্গে আলোচনা করে আসছি। সম্প্রতি ভারত সফরেও এ নিয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকগুলোতে গুরুত্বসহ আলোচনা করেছি। সেই প্রেক্ষিতে সীমান্তে এখন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নন-লেথাল বা প্রাণঘাতী নয় এমন অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। রাবার বুলেটে অনেকে আহত হন; কিন্তু প্রাণহানি কমে এসেছে। তবে আমাদের লক্ষ্য প্রাণহানিকে শূন্যের কোটায় নিয়ে আসা।’

নাবিক ও জাহাজ উদ্ধারে নানামুখী তৎপরতা চলছে

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সোমালি জলদস্যুদের কবল থেকে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর নাবিকদের নিরাপদে উদ্ধার ও জাহাজটিকে মুক্ত করাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য।’

তিনি বলেন, ‘জাহাজ সম্পর্কে শুধু এটুকু বলতে চাই, নাবিকদের মুক্ত করার জন্য আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগে আছি। আমরা নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছি। আমরা অনেকদূর এগিয়েছি।’

জাহাজে খাদ্য সংকট নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, জাহাজটিতে খাদ্য সংকট নেই। এর আগে তিন মাস ধরে জলদস্যুদের কবলে থাকা অন্য জাহাজেও খাদ্য সংকট ছিল না।

আরও পড়ুন:
ইউনেস্কো পুরস্কার নিয়ে ইউনূস সেন্টারের তথ্য বিভ্রান্তিকর: শিক্ষামন্ত্রী
বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করে পুরস্কার আনেন ড. ইউনূস: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

মন্তব্য

p
উপরে