স্বাধীনতাবিরোধীর নাম পাল্টে মুক্তিযুদ্ধের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে করা স্কুলের নাম আবার পাকিস্তানের দালালের নামে হয়েছে। ৪৫ বছর আগে এই ঘটনা ঘটলেও কেউ স্কুলের নামে হাত দেয়নি।
ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলায়। সেখানে মুক্তিযুদ্ধ চালাকালে পাকিস্তানি বাহিনীর দালাল শান্তি কমিটির নেতা মুনছুর আলীর নামে চলছে একটি স্কুল। নাম ‘সাফদারপুর মুনছুর আলী অ্যাকাডেমি’।
মুক্তিযুদ্ধের পর এই স্বাধীনতাবিরোধীর নাম মুছে দিয়ে স্কুলের নাম করা হয় বঙ্গবন্ধু দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয় (সাফদারপুর)। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর আবার পাকিস্তানি দালালের নামে করা হয় স্কুলটি।
মুনছুর আলী ওই এলাকার বাসিন্দাও নন। চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার মানুষ তিনি। ছিলেন পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য ও মুসলিম লীগের (আইয়ুব খান) অনুসারী।
কোটচাঁদপুরের সাফদারপুর গ্রামে ১৯৬০ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। নাম ছিল সাফদারপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়। মুনছুর আলী সে সময় স্কুলটিতে কিছু অর্থ সহায়তা করলে তার নামে রাখা হয় স্কুলটি।
বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে দিয়ে স্বাধীনতাবিরোধীর নামে স্থাপনা দেখে ক্ষুব্ধ মুক্তিযোদ্ধারা।
কোটচাঁদপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার তাজুল ইসলাম বলেন, ‘মুনছুর আলী একজন কুখ্যাত ব্যক্তি ছিলেন। এখনও তার নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলছে। এর পরিবর্তনের উদ্যোগ নেই। এটা দুঃখজনক।’
বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহম্মেদ বলেন, ‘মুনছুর আলী একজন তালিকাভুক্ত রাজাকার। জাতির জনকের নাম মুছে দিয়ে তার নামে স্কুল চলবে যখন মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেয়া দল ক্ষমতায়। এটা কীভাবে মানি বলেন?’
জেলার আরেক উপজেলা শৈলকুপায় সরকারি একটি স্থাপনাই পরিচিত শান্তি কমিটির আরেক সদস্যের নামে। ত্রিবেনী ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের পোস্ট অফিসটি স্থানীয়ভাবে পরিচিত ‘শফিপুর পোস্ট অফিস’ হিসেবে।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে শফিউদ্দিন শান্তি কমিটির যশোর জেলার সভাপতি ছিলেন।
ঝিনাইদহ জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার মকবুল হোসেন বলেন, ‘শফিউদ্দিন ছিলেন স্বাধীনতাবিরোধী। তার নামে এখনও প্রতিষ্ঠান থাকা মানে স্বাধীন দেশের অপমান করা।’
ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি। সত্যতা পেয়েছি। বিস্তারিত তথ্য প্রমাণ হাতে পেলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের নিদের্শনা দেওয়া হবে।’
রিট করে মুছতে হয়েছে স্বাধীনতাবিরোধীর নাম
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় কলেজ থেকে রাজাকারের সংগঠকের নাম মুছতে উচ্চ আদালত পর্যন্ত যেতে হয়েছে।
ওই স্বাধীনতাবিরোধীর নাম এ এন এম ইউসুফ ছিলেন। মুসলিম লীগের এই নেতা স্বাধীনতাকামীদের বিরুদ্ধে রাজাকার বাহিনী গঠনে এলাকায় রাখেন ভূমিকা।
উপজেলার ব্রাক্ষণবাজার ইউনিয়নের দাউদপুর গ্রামের এই নেতা অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগের একজন সক্রিয় নেতা ছিলেন।
১৯৯৫ সালে নিজ এলাকায় ইউসুফ-গণি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। এই নামকরণ নিয়ে সোচ্চার হন মুক্তিযোদ্ধারা।
ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুনসহ কয়েকজন হাইকোর্টে একটি রিট করেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালে শিক্ষা অধিদপ্তর একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে রাজাকারদের নাম বাদ দিতে বলে। তখন কলেজের নাম পাল্টানো হয়।
কলেজের অধ্যক্ষ শাহ্ আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠাকার সময়ে কলেজটির নাম ছিল ইউসুফ-গনি কলেজ। শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশে সেটার নামকরণ করা হয়েছে এম এ গনি আদর্শ কলেজ।’
স্বাধীনতাবিরোধী ইউসুফের বাবা ছিলেন গনি। তিনি স্বাধীনতার আগেই মারা যান। এই জায়গাটি তার নামেই ছিল।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ চৌধুরী ঝুনু মিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ইউসুফ মোক্তার রাজাকারদের সংগঠিত করেছেন, তাদের ভরণ-পোষণ করেছেন। তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন যুক্তিযুক্ত।’
কুলাউড়া উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা সহকারী কমান্ডার মাসুক মিয়া বলেন, ‘সারা বাংলাদেশে যেখানেই মুক্তিযোদ্ধের বিরোধীদের নামে প্রতিষ্ঠান রয়েছে, সেগুলো চিহিৃত করে নাম পরিবর্তন করতে হবে।’
কুলাউড়া উপজেলা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনোয়ার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তিনি (ইউসুফ) মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় তার নামটা বাদ দেয়া হয়েছে। এটির পাশাপাশি কুলাউড়া মাহতাব-ছায়েরা নাম পরিবর্তন করে কুলাউড়া মডেল স্কুল নাম দেয়া হয়েছে।’
বহু স্থাপনায় এখনও স্বাধীনতাবিরোধীর নাম
স্বাধীনতাবিরোধীর নামে স্থাপনার বিষয়ে উষ্মা জানিয়েছে খোদ হাইকোর্ট। এসব নাম পাল্টাতে আট বছর আগে দেয়া হয়েছে নির্দেশ। কিন্তু এর বাস্তবায়ন হয়নি।
দুই দফায় সময় বাড়িয়েও আদালত আদেশ বাস্তবায়ন না হওয়ায় বিষয়টিকে ‘অত্যন্ত দুঃখজনক’ বলছেন রিটকারীরা।
স্থাপনা ও সড়ক থেকে রাজাকার ও আলবদরদের নাম মুছে ফেলার নির্দেশনা চেয়ে ২০১২ সালে হাইকোর্টে রিট করেন অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন ও শাহরিয়ার কবির।
ওই বছরের ১৪ মে স্থাপনা থেকে দুই স্বাধীনতাবিরোধী নেতা খান এ সবুর ও শাহ আজিজুর রহমানের নাম বাদ দেয়ার নির্দেশ আসে। ২০১৫ সালে এই নির্দেশ বাস্তবায়ন হয়।
সে সময় একটি রুলও জারি করে আদালত। এতে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীদের নামের স্থাপনা কেন মুক্তিযোদ্ধাদের নামে করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
কিন্তু আদেশের বাস্তবায়ন না হওয়ায় ২০১৯ সালে স্বাধীনতাবিরোধীদের নামসহ একটি তালিকা করে হাইকোর্টে সম্পূরক আবেদন করা হয়। এতে ২০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম দেয়া হয়, যেগুলো এখনও স্বাধীনতাবিরোধীর নামে রয়েছে।
রিটকারীর আইনজীবী একে রাশিদুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দুই দফায় সময় বাড়িয়ে আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন না হওয়া দুঃখজনক। বিষয়টি আবার আদালতে নজরে আনব।’
মুনতাসির মামুন বলেন, ‘আদেশ বাস্তবায়ন হয় কি না সে সম্পর্কে হাইকোর্টের কোনো মনিটরিং কমিটি নাই। আমরাও পারি না। এটা দেখবে মন্ত্রণালয়।’
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘কোর্টের মনিটরিং করার কোনো সুযোগ নাই। বাদীপক্ষকেই সবসময় দায়িত্বটা নিতে হয়। আদেশ বাস্তবায়ন না হলে উনারা কোর্টের নজরে আনতে পারেন, সরকারকেও বলতে পারেন।’
আরেক রিটকারী শাহরিয়ার কবির নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা সরকারের মর্যাদার প্রশ্নও বটে। কীভাবে স্বাধীনতাবিরোধীর নামে এখানে এখনও স্কুল থাকে?’
আরও পড়ুন:সৌদি আরব এক সপ্তাহব্যাপী অভিযান চালিয়ে ২২ হাজার বিদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আবাসিক, সীমান্ত ও শ্রম আইন লঙ্ঘন করায় ২১ হাজার ৯৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। গালফ নিউজ জানিয়েছে, যৌথ অভিযানের লক্ষ্য ছিল অবৈধ বাসিন্দা এবং তাদের সহায়তাকারীদের ধরা।
সৌদির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ১৩ হাজার ৪৩৪ জন আবাসিক আইন লঙ্ঘন করেছেন, ৪ হাজার ৬৯৭ জন সীমান্ত নিরাপত্তা বিধি লঙ্ঘন করেছেন এবং ৩ হাজার ৮৬৬ জন শ্রম আইন ভঙ্গ করেছেন। সেই সঙ্গে অবৈধভাবে দেশে প্রবেশের চেষ্টা করার সময় ১ হাজার ৭৮৭ জনকে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, তাদের মধ্যে ৩৫ শতাংশ ইয়েমেনি, ৬৪ শতাংশ ইথিওপিয়ান এবং ১ শতাংশ অন্যান্য দেশের নাগরিক। অবৈধভাবে সৌদি আরব ত্যাগ করার চেষ্টা করার সময় আরও ২৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারের পাশাপাশি অন্তত ১৮ হাজার ১৪৯ জন আইন লঙ্ঘনকারীকে ভ্রমণ নথিপত্র সংগ্রহের জন্য তাদের কূটনৈতিক মিশনে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১২ হাজার ৮৬১ জনকে দেশ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অবৈধ বাসিন্দাদের পরিবহন, আশ্রয়দান বা নিয়োগের অভিযোগে আরও ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
সৌদি কর্তৃপক্ষ জানায়, বর্তমানে ২৫ হাজার ৪৩৯ জন প্রবাসী - যার মধ্যে ২২ হাজার ৮৩৭ জন পুরুষ এবং ২ হাজার ৬০২ জন নারী রয়েছেন, তাদের বহিষ্কার বা নিয়মিতকরণের জন্য আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সতর্ক করে দিয়েছে, অবৈধ প্রবেশে সহায়তা, পরিবহন, আবাসন বা অন্যান্য সহায়তা প্রদানকারী যে কোনো আইন লঙ্ঘনকারীর ১৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ রিয়াল জরিমানা হতে পারে। এই ধরনের কার্যকলাপে ব্যবহৃত যানবাহন এবং সম্পত্তিও বাজেয়াপ্ত করা হবে।
বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগের ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তিতে শূন্যপদ ছিল ১ লাখ ৮২২টি। এর বিপরীতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আবেদন জমা পড়েছে ৫৭ হাজারের কিছু বেশি। অর্থাৎ প্রায় ৪৩ হাজার পথ শূন্য থাকবে। চাহিদা দিয়েও শিক্ষক পাবে না অনেক প্রতিষ্ঠান। ক্লাস থেকে বঞ্চিত হবে শিক্ষার্থীরা! এ ব্যাপারে কেউ কেউ বলার চেষ্টা করছেন যে, আবেদনকালে প্রার্থীদের বয়স ৩৫ এর বেশি এবং নিবন্ধন সনদের মেয়াদ ৩ বছরের বেশি গ্রহণ না করার কারণে আবেদন কম পড়েছে। অর্থাৎ আরো কিছু ছাড় দেওয়া হলে আরো কিছু বেশি প্রার্থী আবেদন করতে পারত। বয়সে ও যোগ্যতায় বারবার ছাড় দিয়ে আবেদনের সুযোগ দিয়ে বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ করা কোনো উত্তম সমাধান নয়। ছাড় দিয়ে শিক্ষক নিয়োগ করা মানেই দীর্ঘ মেয়াদে দেশ ও জাতির অপূরণীয় ক্ষতি করা। একজন কম যোগ্য শিক্ষক তার শিক্ষকতা জীবনে তৈরি করেন অগণিত কম যোগ্য নাগরিক-কর্মী। তুলনামূলক কম যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে অধিক যোগ্য নাগরিক-কর্মী তৈরির প্রত্যাশা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক, অবাস্তব!
শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীদের তৃতীয় বিভাগ বা শ্রেণি এখন আর গ্রহণযোগ্য থাকা উচিত নয়। সরকারি এমনকি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বা কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রেও এখন আর তৃতীয় বিভাগ বা শ্রেণিধারী প্রার্থীদের আবেদন করার সুযোগ থাকে না। নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা, বয়স সীমা ও বাছাই প্রক্রিয়া অন্যদের তুলনায় বেসরকারি শিক্ষকদের শিথিল করা হলে এর অর্থ এমন দাঁড়ায় না যে বেসরকারি শিক্ষক তুলনামূলক কম যোগ্য হলেও চলে? এতে কি তাদের মান ও মর্যাদা হ্রাস পায় না? দেশের ৯৫ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থীদের পাঠদানকারী বেসরকারি শিক্ষকদের অধিক যোগ্য হওয়া কি অধিক গুরুত্বপূর্ণ নয়? তারা তো আমাদের সন্তানদেরই শিক্ষক হন। তারা অধিক যোগ্য হলেই তো আমাদের সন্তানরা অধিক যোগ্য হবার সম্ভাবনা অধিক থাকে। অর্থাৎ বয়সে, যোগ্যতায়, পরীক্ষায় ছাড় দিয়ে তুলনামূলক কম যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে নয়; বরং দ্রুত আর্থিক সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করে অধিক যোগ্যদের আকৃষ্ট করে শিক্ষক পদে নিয়োগ দেয়াই অধিক মঙ্গলজনক।
সার্বিক বিবেচনায় বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থাটিকে অতীতের ধারাবাহিকতায় আরও উন্নত করা আবশ্যক। সদিচ্ছা ও আন্তরিকতা থাকলে তা সহজেই সম্ভব। সে লক্ষ্যে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নিয়োগের অনুরূপ শিক্ষাগত যোগ্যতা, বয়স সীমা ও বাছাই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বেসরকারি শিক্ষকদের নিয়োগ দেওয়া উচিত। অর্থাৎ শূন্য পদের বিপরীতে সরাসরি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে উত্তম বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উত্তম প্রার্থী বাছাই করে বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন। নিবন্ধনধারী সবাইকেই যদি নিয়োগ দিতে হয় তাহলে এটিকে নিবন্ধন পরীক্ষা না বলে নিয়োগ পরীক্ষা বলা ও কার্যকর করা অধিক যুক্তিযুক্ত নয় কি? তুলনামূলক কম নম্বর প্রাপ্ত নিবন্ধন ধারীরাও নিয়োগের দাবিদার হয়, নিয়োগের জন্য সোচ্চার হয়, বয়সের শিথিলতা দাবি করে, অশান্তি তৈরি করে। এমনকি অকৃতকার্যরাও আন্দোলন করে! অথচ সরাসরি নিয়োগ পরীক্ষায়/ প্রক্রিয়ায় কম নম্বর পেয়ে বাদ পড়ে যাওয়ারা আর নিয়োগের দাবিদার হতে পারে না, বয়সের শিথিলতা দাবি করতে পারে না, অশান্তি তৈরি করতে পারে না। অপরদিকে একবার নিবন্ধন পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া, আবেদন নেওয়া, পরীক্ষা নেওয়া, তালিকা করা, সনদ দেওয়া এবং পরবর্তীতে আবার নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া, বাছাই করা, তালিকা করা, নিয়োগ করা ইত্যাদি নিয়োগ কর্তৃপক্ষ ও নিয়োগ প্রার্থী উভয়ের জন্যই দ্বিগুণ কষ্টসাধ্য ও সময় সাপেক্ষ। তদুপরি নিয়োগ প্রার্থীর জন্য দ্বিগুণ ব্যয় সাপেক্ষ। অধিক সংখ্যক শূন্য পদে নিয়োগ প্রার্থীদের বাছাই কেন্দ্রীয়ভাবে দ্রুত সম্পন্ন করা সম্ভব না হলে জেলা প্রশাসকগণের দায়িত্বে ঐ জেলার সরকারি স্কুল-কলেজের সুযোগ্য শিক্ষকগণের সহযোগিতা নিয়ে সারাদেশে একই প্রশ্নে ও প্রক্রিয়ায় বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগের বাছাই দ্রুত সম্পাদন করা সম্ভব হয় কিনা তা ভেবে দেখা যেতে পারে। যেমন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর করে থেকে।
অন্যান্য চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে নির্ধারিত বয়স ও যোগ্যতার চেয়ে অধিক বয়স্কদের ও কম যোগ্যদের শিক্ষকতায় প্রবেশের সুযোগ দেওয়া মোটেও উচিত নয়। কিছুদিন পরপর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ করতে চাইলে বারবার অধিকতর যোগ্য ফ্রেশ ক্যান্ডিডেট পাওয়া যাবে। একজন ইয়ং এনার্জিটিক মেধাবী শিক্ষক প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেকে তৈরি করতে ও পূর্ণ উদ্যমে দীর্ঘদিন পাঠদান করতে যতটা সক্ষম একজন বয়স্ক লোক ততটা সক্ষম না হওয়াই স্বাভাবিক। ব্যতিক্রম নগণ্য। একজন নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকের প্রকৃত সফল শিক্ষক হয়ে উঠতে অনেক সময়, শ্রম, মেধা, চর্চা, উদ্যম, প্রশিক্ষণ, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা লাগে। কেউ শিক্ষক হয়ে উঠতেই যদি বৃদ্ধ হয়ে পড়েন তো সফল পাঠদানে নিরলস থাকবেন কীভাবে, কতদিন?
আলোচিত বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে অধিক যুক্তিযুক্ত উন্নত নীতিমালা প্রণয়ন করে ঢেলে সাজানো উচিত সকল শিক্ষক নিয়োগের বাছাই প্রক্রিয়া। মূল্যায়নে বিবেচনা করা উচিত প্রার্থীর শিক্ষা জীবনের কর্মকাণ্ড ও ডেমো ক্লাসের মান। দ্রুত দূর করা উচিত একই দায়িত্ব-কর্তব্যে নিয়োজিত সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, বয়স সীমা, বাছাই প্রক্রিয়া এবং আর্থিক সুযোগ-সুবিধা সংক্রান্ত সকল বৈষম্য। অর্থাৎ বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগের জন্য আর নিবন্ধন পরীক্ষা নয়, নিতে হবে সরাসরি নিয়োগ পরীক্ষা। সেই সঙ্গে বৃদ্ধি করতে হবে আর্থিক সুযোগ-সুবিধা। শিক্ষকতায় আকৃষ্ট করতে হবে সর্বাধিক যোগ্যদের।
লেখক: অধ্যক্ষ, শিক্ষাবিদ ও কলামিস্ট
কৃষি ও কৃষকের ভাগ্যোন্নয়নে অচল খাল সচল এবং জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে রাজবাড়ীতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ কৃষক সমিতি। রবিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়ন শাখার উদ্যোগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। পরে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি স্বারকলিপিও প্রদান করা হয়।
এর আগে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়ন কৃষক সমিতির সভাপতি আলাউদ্দিন তালুকদার। বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট মানিক মজুমদার, আব্দুস সামাদ মিঞা, নূর আব্দুল্লাহ সাইদ, জাহানারা বেগম ও মঞ্জুয়ারা বেগম।
বক্তারা অভিযোগ করেন, সুলতানপুর ইউনিয়নের খলিশা রামকান্তপুর এলাকায় প্রভাবশালীরা খালের মুখ বন্ধ করে দেওয়ায় প্রায় ১০০ একর জমি জলাবদ্ধতায় নিমজ্জিত রয়েছে। এতে ধান রোপণ ও ফসল উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। দ্রুত খাল সচল করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করার জোর দাবি জানান তারা।
ফরিদপুর সদর উপজেলার চর মাধবদিয়া ইউনিয়নের মমিন খারঁ হাট বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ-সম্পাদক ও ফরিদপুর জেলা জাতীয়তাবাদী প্রবাসী দলের সভাপতি মির্জা প্রিন্স আলির আয়োজনে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার বিকাল ৪টায় মমিন খারঁ হাট মাধবদিয়া ময়েজউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে উদ্বোধনী খেলায় সাবেক ইউপি ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মির্জা সাইফুল ইসলাম আজমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দল কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর মহিলাদলের আহবায়ক চৌধুরী নায়াব ইউসুফ।
এ সময় ফরিদপুর কোতয়ালী থানা বিএনপির সেক্রেটারি চৌধুরী নাজমুল হাসান রঞ্জন, ফরিদপুর কোতয়ালী থানা বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম মোস্তফা মিরাজ, ফরিদপুর সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও যুবদল নেতা বেনজির আহমেদ তাবরিজ, ফরিদপুর জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন পিয়াল, ডিগ্রীরচর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোঃ মজিবর রহমান মাতুব্বর, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক আব্দুর রাজ্জাক শেখ, আমেরিকা প্রবাসী ও বিশিষ্ট সমাজ সেবক মোঃ আক্তারুজ্জামান খান, মমিন খাঁর হাট বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি রেজাউল করিম বেপারী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ রেজাউল করিম মোল্লা, মোহন মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সায়েম মোল্লা, ঢাকা জর্জ কোর্টের অ্যাডভোকেট মোঃ বশির আহমেদ সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে খেলার উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দল কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফ। উদ্বোধনী খেলায় অংশগ্রহণ করে আশিক স্মৃতি স্পোর্টিং ক্লাব- অম্বিকাপুর বনাম লালখান বাজার ফুটবল একাদশ। টুর্নামেন্টের আয়োজক মমিন খারঁ হাট বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ-সম্পাদক ও ফরিদপুর জেলা জাতীয়তাবাদী প্রবাসী দলের সভাপতি মির্জা প্রিন্স আলির আমন্ত্রণে মাঠে হাজার হাজার ফুটবল প্রিয় দর্শকের আগমন ঘটে, যা ছিল চোখে পড়ার মতো। খেলা পরিচালনার অন্যতম দায়িত্ব পালন করেন ক্রীড়া অনুরাগী জনি মির্জা ও অন্যান্যরা। খেলায় ২-১ গোলের ব্যবধানে আশিক স্মৃতি স্পোটিং ক্লাব অম্বিকাপুর, লালখান বাজার ফুটবল একাদশকে পরাজিত করে।
কুমিল্লার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড চৌরাস্তায় সড়ক দুর্ঘটনায় তিশা ট্রান্সপোর্টের এক সুপারভাইজার গাড়ি চাপায় নিহত হয়েছেন। রবিবার (১৭ আগস্ট) সকাল ৬টায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
বিষয়টা নিশ্চিত করেছেন ময়নামতি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা ইকবাল বাহার।
নিহত সোহেল রানা (৪৫) কুমিল্লা বাঙ্গরাবাজার খামারগ্রামের মৃত কবির আহম্মেদের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে ডান পাশে তিশা প্লাস পরিবহন দাঁড়িয়ে ছিল। এসময় বাম দিক থেকে এশিয়া ট্রান্সপোর্ট বেপরোয়া গতিতে কাউন্টার ত্যাগ করার সময় তিশা ট্রান্সপোর্টের সুপারভাইজার অসাবধানতাবশত চাকার নিচে পড়ে যান। মুহূর্তের মধ্যেই তিনি ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান।
কুমিল্লা ময়নামতি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা ইকবাল বাহার বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
স্থানীয়রা জানান, পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড চৌরাস্তায় প্রতিদিনই বাস ও ট্রান্সপোর্ট কাউন্টারের বেপরোয়া গাড়ি চলাচলের কারণে দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। কিন্তু কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় এ ধরনের প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা রোধ করা যাচ্ছে না।
ঝালকাঠি পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের কলাবাগান এলাকায় পৌর পানি সরবরাহের সমস্যা গত দু'বছর ধরে। সাবেক মেয়র, বর্তমান প্রশাসক সবার কাছে বহুবার ধন্না ধরেও কোনো লাভ হয়নি। ঐ এলাকার বিকল পাম্প গুলো মেরামতের নেই কোনো উদ্দোগ। এসব কথা জানিয়েছেন সেখানকান (কলাবাগান) বাসিন্দারা।
রোববার ১৭ আগষ্ট সকালে পানির দাবীতে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছে ৯নং ওয়ার্ডের সর্বস্তরের মানুষ। মিছিল ও মানববন্ধন করেছে তারা। বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে। স্মারক লিপিও দিয়েছে জেলা প্রশাসক বরাবরে।
আন্দোলনরতো ঝালকাঠি পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের কলাবাগানবাসী ডিসি বরাবর লিখিত পত্রে উল্লেখ করেছেন, "দীর্ঘ ২ বছর যাবৎ কলাবাগান এলাকায় পানি সরবরাহের তীব্র সমস্যা থাকায় উক্ত এলাকার
জনগন সংশ্লিষ্ট পৌর কর্তৃপক্ষকে বার বার অবহিত করলেও ইহাতে তারা কোন কর্নপাত করেনাই। বর্তমানে পানির সমস্যার কারনে এলাকাবাসী নিরুপায় হয়ে নদীর পানি ব্যবহার করার কারনে বিভিন্ন ধরনের পানিবাহীত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।"
এলাকাসীর এই আন্দোলনের মুখপাত্র ৯নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মুরাদ হোসেন বলেন, 'নিয়মিত পৌর পানির বিল পরিশোধ করলেও কি কারনে বছরের পর বছর পানির পাম্প অকার্যকর থাকে সে বিষয়ে আমরা বোধগম্য নই। দ্রুত সময়ের মধ্যে পানির সমস্যা সামাধান করা এখন বাসিন্দাদের দাবী।'
এ সমস্যা কেনো এবং সমাধান কি? এ প্রশ্নের জবাবে পৌর প্রশাসক কাওছার হোসেন মুঠো ফোনে দৈনিক বাংলাকে জানান, 'পৌসভার ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডে ৪টি পাম্প থেকে পানি সরবরাহ করা হতো। কিন্তু পানির লেয়ার নিচে নেমে যাওয়ায় ২টি পাম্পে পানি উঠছেনা এবং ১ টি পাম্প থেকে লবনাক্ত পানি ওঠে তাই এই তিনটি পাম্প বন্ধ রয়েছে। ফলে ৯ নং ওয়ার্ডে পানির সংকট বিরাজ করছে। ঝালকাঠি পৌরসভা ৭ জেলা পানি সরবরাহ প্রকল্প ও ২৫ জেলা পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্পে ঐ বিষয়ে প্রকল্প প্রেরণ করা হয়েছে। শীঘ্রই এ প্রকল্প শুরু হলে ঝালকাঠি বাসী এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাবে বলে আশা করছি।'
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেয়ার নামে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছী এলাকার জোতকার্তিক বি এন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে নিয়োগ বোর্ড না করেই টাকার বিনিময়ে চারটি পদে নিয়োগ দিয়ে এমপিও’র আবেদন করেছে ঐ শিক্ষক। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের ঘনিষ্ঠ প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন’র সীমাহীন দুর্নীতির বিচার এবং এমপিও আবেদন বাতিলের বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর রাজশাহী অঞ্চলের উপ-পরিচালক বরাবর আবেদন করেছে সাবেক ইউপি সদস্য মো. মকবুল হোসেন। তিনি নন্দনগাছীর কালাবীপাড়া এলাকার মৃত ছবির উদ্দিনের ছেলে।
আবেদনে তিনি উল্লেখ করেছেন, প্রধান শিক্ষক মারফত জানতে পারেন যে, আইসিটি ল্যাব সহকারী পদে একজন লোক নিয়োগ করা হবে। তার কথা শুনে আমার ছেলের বৌকে নিয়োগ দেয়ার কথা বললে প্রধান শিক্ষক ১০ লক্ষ টাকা দাবি করে। তিনি তার কথায় রাজি হয়ে ২০১৯ সাল থেকে ২০ সালের বিভিন্ন সময় মোট ৯ লক্ষ টাকা তার নিজ বাসায় নিজ হাতে গ্রহণ করেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমার ছেলের বৌকে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ না দিয়ে নানা রকম তালবাহানা করছে। মকবুল হোসেন আবেদনে আরো উল্লেখ করেন, বর্তমানে একান্ত সূত্রে জানতে পারেন, আইসিটি পদসহ মোট ৪টি পদে প্রায় অর্ধ কোটি নিয়োগ বাণিজ্য করে ব্যাক ডেটে বাস্তবে নিয়োগ বোর্ড না করেই অবৈধ ভাবে নিয়োগ দিয়েছে। এই আবেদন বাতিলের আবেদন জানিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে অভিযোগকারী সাবেক ইউপি সদস্য মকবুল হোসেনের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা শিকার করে বলেন, প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন আমার ছেলের বৌকে তার প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেয়ার কথা বলে ৯ লক্ষ টাকা নিয়েছে। কিন্তু তাকে চাকরি না দিয়ে বেশী টাকার বিনিময়ে অন্যজনকে অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়েছে এবং স্কুলটি এমপিও’র জন্য আবেদন করেছে। আমি এই এমপিও আবেদন বাতিলের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর রাজশাহী অঞ্চলের উপ-পরিচালক বরাবর আবেদন করেছি।
তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের ঘনিষ্ঠ ছিলেন এই প্রধান শিক্ষক মো. জাকির হোসেন। মন্ত্রীর পরিচয়ে নানাভাবে প্রভাব খাটিয়ে সীমাহীন দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা করেছেন এই শিক্ষক। অভিযোগ বিষয়ে কথা বলতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রাজশাহী অঞ্চলের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহা. আবদুর রশিদ জানান, এ ধরনের অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। একজন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে দিয়ে বিষয়টি তদন্ত করানো হবে। টাকা লেনদেনের বিষয়টিও গুরুত্ব সহকারে ক্ষতিয়ে দেখা হবে। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দেন তিনি।
মন্তব্য