ভারতের ভূমি ব্যবহার করে নেপাল ও ভুটানে পণ্য আনা নেওয়া করতে চায় বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ট্রাক যেন আগরতলায় যেতে পারে, সেই সুযোগও চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতের ভূমি ব্যবহার করে বিদ্যুৎও বিক্রি করতে চায় ঢাকা।
বৃহস্পতিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে এসব বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে দুই পক্ষ থেকে।
দুই দেশের যৌথ বিবৃতির পাশাপাশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের ব্রিফিংয়ে এই বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
ভারত বরাবরই বাংলাদেশের জমি ব্যবহার করে তার পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্যে পণ্য পাঠানোর সুযোগ পেতে আগ্রহী। শর্তসাপেক্ষে নৌ ট্রানজিট দেয়া হলেও স্থলপথে ট্রানজিটের সিদ্ধান্ত এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এর মধ্যে বাংলাদেশ এবার পাল্টা এই সুযোগ চাইল।
ট্রানজিট নিয়ে বাংলাদেশ-ভারতের আলোচনা শুরু হয় ২০১২ সালে। চার বছর পর ২০১৬ সালের ১৬ জুন নৌ প্রটোকলের মাধ্যমে কলকাতা থেকে আশুগঞ্জ পর্যন্ত নৌপথে, আর আশুগঞ্জ থেকে আখাউড়া হয়ে আগরতলা পর্যন্ত সড়কপথে নির্দিষ্ট মাশুল দিয়ে পণ্য আনা নেয়ার সুযোগ পায় ভারত। তবে সড়ক পথে সরাসরি ট্রানজিট সুবিধা এখনও দেয়া হয়নি, যেটা নিয়ে ভারতের আগ্রহ বেশি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বিবিআইএন নিয়ে ভারতকে উদ্যোগী হতে আহ্বান জানিয়েছি। আমাদের ট্রাক যেন ভারত হয়ে নেপাল ও ভুটানে যেতে পারে, সে বিষয়ে তাদের সহায়তা চেয়েছি।’
বিবিআইএন হলো ‘বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল সংযুক্তি’, যেটি ১৯৯৭ সালের ১৪ মে গড়ে ওঠে। পরের বছর বাংলাদেশ সরকার বিবিআইএন মোটর ভেহিক্যাল এগ্রিমেন্ট এর খসড়া তৈরি করে। ভুটানের এর রাজধানী থিম্পুতে এই খসড়ার অনুমদন দেয়া হয়। এই চুক্তি অনুযায়ী চারটি দেশের যাত্রী ও পণ্যবাহী ও ব্যক্তিগত গাড়ি নির্দিষ্ট রুটে চলাচল করতে পারবে এবং সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করতে পারবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ফেনী নদী পার হয়েও যেন আমাদের ট্রাক ওপারে আগরতলায় যেতে পারে, আমরা সে দাবিও তুলেছি। তারাও এ বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে।’
ভারতের ভূমি ব্যবহার করে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ বিক্রি করতে চায় বলেও ব্রিফিংয়ে জানান মন্ত্রী। বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে তাদের (ভারত) বিদ্যুৎ গ্রিড নিয়ে নতুন চিন্তা করার কথা বলেছেন। আমরা সে দেশ থেকে অনেক বিদ্যুৎ কিনে থাকি। এখন আমরা নিজেরাও অনেক বিদ্যুৎ উৎপাদন করছি।
‘আমাদের উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ যাতে নেপাল বা ভুটানে রপ্তানি করতে পারি, সেজন্য তিন দেশের যৌথ গ্রিড স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। যাতে সবাই যার যার প্রয়োজনে যে কোনো দেশ থেকে বিদ্যুৎ নিতে পারি।’
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ভারত, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডের মধ্যে চলমান ত্রিদেশীয় হাইওয়ে প্রকল্পে যুক্ত হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে বাংলাদেশের উপর দিয়ে ভারতের কলকাতা থেকে মেঘালয় পর্যন্ত কানেক্টিভিটি তৈরি করতে শেখ হাসিনাকে অনুরোধ জানিয়েছেন মোদি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত মিয়ানমারের ভেতর দিয়ে থাইল্যান্ড পর্যন্ত সড়ক তৈরি করছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আমলে তার কাছে প্রস্তাব এসেছিল ভারত হয়ে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে মিয়ানমারে এই সড়ক যাবে। কিন্তু তিনি তা বাতিল করেছিলেন।
‘তারা এখন অনেক ঘুরে সেই সড়ক তৈরি করছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী দেশের ব্যবসা বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও কানেকটিভিটি বাড়াতে এই সড়কে বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছে। নরেন্দ্র মোদি এ বিষয়ে উদ্যোগ নেবেন বলে জানিয়েছেন।’
ভারত কোনো পণ্য রপ্তানি বন্ধ করলে সেটা আগেভাগে বাংলাদেশকে জানাতে অনুরোধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি মোদিকে জানান, ভারত হঠাৎ রপ্তানি বন্ধ করলে দেশের বাজারে অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়। বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন মোদি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ভারতে বাংলাদেশি কিছু পণ্য আমদানিতে এন্টি ডাম্পিং ট্যাক্স নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এ বিষয়ে একটি নীতিমালা থাকা দরকার।
দুই সরকার প্রধানের আলোচনায় রোহিঙ্গা প্রসঙ্গও গুরুত্বের সঙ্গে উঠে এসেছে বলে জানানো হয়েছে যৌথ বিবৃতিতে। এতে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, দ্রুত ও টেকসই প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের সঙ্গে একমত হয়েছে ভারত।
বলা হয়, মিয়ানমারের ১১ লাখ মানুষকে আশ্রয় দেয়ার বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান মোদি। অন্যদিকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় ভারতের সহযোগিতা চান শেখ হাসিনা।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হওয়া ভারতকে অভিনন্দনও জানান শেখ হাসিনা। আর এই ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান মোদি।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, অভিবাসীদের অধিকার সংরক্ষণে একযোগে কাজ করতেও দুই সরকার প্রধান একমত হন।
আলোচনায় ৫৫ বছর বন্ধ থাকা চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথে ফের ট্রেন চলাচল উদ্বোধন হয়। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর রেললিংকটি বন্ধ হয়ে যায়।
এ দিন দুই দেশের মধ্যে সাতটি সমঝোতা স্মারকও সই হয়। আর ৩৭টি বিষয়ে দুই দেশ একমত হয়েছে।
দুই দেশের মধ্যে অমীমাংসিত দুই সমস্যা অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন ও সীমান্ত হত্যা নিয়েও কথা হয়েছে দুই পক্ষে।
ভারত জানিয়েছে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি করার বিষয়ে ভারত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সে দেশের সিদ্ধান্ত হয়ে আছে।
আর সীমান্তে ভারতীয় বাহিনী আর প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার করবে না বলে আশ্বাস দেন মোদি।
আরও পড়ুন:মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান এবং তার স্ত্রী উম্মে আহমেদ শিশিরের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে। দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) বুধবার দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়ে তাদের ব্যাংক হিসাবের যাবতীয় তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে।
বিএফআইইউর সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ব্যাংক হিসাবে লেনদেনের তথ্য তলব করার এই নির্দেশের ক্ষেত্রে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা-সংশ্লিষ্ট ধারা প্রযোজ্য হবে বলে বিএফআইইউর চিঠিতে বলা হয়েছে। চিঠিতে তলব করা ব্যক্তির নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্টের তথ্য দেয়া হয়েছে।
বিএফআইইউর নির্দেশনায় বলা হয়েছে, হিসাব তলব করা ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্ট তথ্য বা দলিল যেমন হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি ও লেনদেন বিবরণী চিঠি দেয়ার তারিখ থেকে ৫ কার্যদিবসের মধ্যে বিএফআইইউতে পাঠানোর জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, পুঁজিবাজারে কারসাজির দায়ে গত ২৪ সেপ্টেস্বর তারকা এই ক্রিকেটারকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করে নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
আরও পড়ুন:তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম বাড়ানো হয়েছে। ১২ কেজির সিলিন্ডারে দাম বেড়েছে ৩৫ টাকা। একইসঙ্গে লিটার প্রতি অটো গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে প্রায় দেড় টাকা।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ বুধবার সংবাদ সম্মেলনে দাম বৃদ্ধির এই ঘোষণা দেন।
দাম বৃদ্ধির কারণে এখন থেকে ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম হবে এক হাজার ৪৫৬ টাকা। আর অটোগ্যাস লিটার প্রতি ৬৬ টাকা ৮৪ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন দর আজ বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকেই কার্যকর হচ্ছে।
আমদানিনির্ভর এলপিজির আন্তর্জাতিক বাজার বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশেও দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছে বিইআরসি।
গত সেপ্টেম্বর মাসে ১২ কেজি এলপি গ্যাসের দাম ছিল এক হাজার ৪২১ টাকা। অন্যদিকে অটোগ্যাস লিটার প্রতি দাম ছিল ৬৫ টাকা ২৬ পয়সা। আগের মাস আগস্টে ১২ কেজি এলপি গ্যাসের দাম ছিল এক হাজার ৩৭৭ টাকা।
২০২১ সালের ১২ এপ্রিলের আগে পর্যন্ত এলপিজির দর ছিল কোম্পানিগুলোর ইচ্ছাধীন। ১২ এপ্রিল বিইআরসি কর্তৃক দর ঘোষণার সময় বলা হয়, আমদানিনির্ভর এই জ্বালানির দাম নির্ধারণে সৌদি রাষ্ট্রীয় কোম্পানি আরামকো ঘোষিত দরকে ভিত্তি মূল্য হিসেবে ধরা হবে।
আরামকো নির্ধারিত দর উঠা-ওঠা-নামা করলে ভিত্তিমূল্য উঠা-নামা করবে। অন্যান্য কমিশন অপরিবর্তিত থাকবে। ঘোষণার পর থেকে প্রতি মাসে এলপিজির দর ঘোষণা করে আসছে বিইআরসি। টানা তিন মাস ধরে আন্তর্জাতিক বাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকায় বাংলাদেশেও এলপিজির দাম বাড়ছে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে বৈদেশিক ঋণপ্রাপ্তির চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি ঋণ পরিশোধ করেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)।
সোমবার এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইআরডি। তাতে বলা হয়েছে, জুলাই থেকে আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশ ৪৫৮ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণ পেয়েছে। তবে একই সময়ে দেশটিকে ঋণের কিস্তি বাবদ ৫৮৯ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হয়েছে। এতে ঘাটতি ছিল ১৩১ মিলিয়ন ডলার।
ঋণ পরিশোধের হিসাব বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মূলধনের ৪১৫ দশমকি ৬ মিলিয়ন ডলার এবং সুদ বাবদ ১৭৩ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হয়েছে। এটি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সুদ পরিশোধে ব্যয় বৃদ্ধি হয়েছে ১৯ মিলিয়ন ডলার।
এই মাসগুলোতে দেশটির বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রুতি ব্যাপক কমায় এই চ্যালেঞ্জকে আরও জটিল করে তুলেছে। কেননা নতুন প্রতিশ্রুতির রেকর্ড মাত্র ২ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি লিমিটেডের (বেক্সিমকো) শেয়ার কারসাজির দায়ে নয় বিনিয়োগকারীকে ৪২৮ কোটি ৫২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
মঙ্গলবার বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় এই জরিমানা আরোপের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের শেয়ারবাজারের ইতিহাসে কোনো কোম্পানির শেয়ার কারসাজির দায়ে এতো বড় অঙ্কের অর্থ জরিমানা এর আগে আর করা হয়নি।
উল্লিখিত বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মারজানা রহমানকে ৩০ কোটি, ট্রেড নেক্সট ইন্টারন্যাশনালকে চার কোটি এক লাখ, মুশফিকুর রহমানকে ১২৫ কোটি, মমতাজুর রহমানকে ৫৮ কোটি, জুপিটার ব্যবসাকে ২২ কোটি ৫০ লাখ, অ্যাপোলো ট্রেডিংকে ১৫ কোটি ১০ লাখ, এআরটি ইন্টারন্যাশনালকে ৭০ কোটি, আবদুর রউফকে ৩১ কোটি এবং ক্রিসেন্ট লিমিটেডকে ৭৩ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়।
এছাড়াও কমিশন সভায় নয়টি কোম্পানির আইপিও/আরপিওর তহবিলের ব্যবহার পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত হয়।
কোম্পানিগুলো হলো- বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, বেস্ট হোল্ডিং, ইনডেক্স এগ্রো, জেএমআই হসপিটাল রিক্যুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং, লুব-রেফ (বাংলাদেশ) লিমিটেড, নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস, রিং শাইন টেক্সটাইল, সিকদার ইন্স্যুরেন্স ও সিলভা ফার্মাসিউটিক্যালস।
আরও পড়ুন:সদ্যসমাপ্ত সেপ্টেম্বর মাসে দেশে ব্যাংকিং চ্যানেলে ২৪০ কোটি ৪৮ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। রেমিট্যান্স প্রবাহে গত চার বছরের মধ্যে একক মাসে প্রবাসী আয়ের দিক থেকে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে জুনে ব্যাংকিং চ্যানেলে ২৫৪ কোটি ডলার এবং তার আগে ২০২০ সালের জুলাইয়ে ২৫৯ কোটি ৮২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।
মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিপোর্ট বলছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ২ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার। এটা আগের অর্থবছরের একই মাসে ছিল মাত্র ১ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার।
এছাড়া আগের মাস আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স বেড়েছে ১৮০ মিলিয়ন ডলার। আগস্টে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ছিল ২ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, সেপ্টেম্বরে প্রতিদিন গড়ে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে আট কোটি ডলার। গত বছরের সেপ্টেম্বরে এই অংকটা ছেল চার কোটি ৪৫ লাখ ডলার। সে হিসাবে রেমিট্যান্স প্রবাহ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
একক মাস হিসেবে গত বছরের তুলনায় এ বছরের সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে ৮০.২ শতাংশ। গত বছরের সেপ্টেম্বরের রেমিট্যান্স এসেছিল ১৩৩ কোটি ডলার। তার আগে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে এসেছিল ১৫৪ কোটি ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, সেপ্টেম্বরে দেশে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে তার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৬৩ কোটি ৮৩ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ কোটি ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৬৫ কোটি ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৬২ লাখ ডলার।
আলোচিত সময়ে সরকারি বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল), রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, পুলিশের কমিউনিটি ব্যাংক, বিদেশি হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান ও স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মাধ্যমে কোনো রেমিটেন্স আসেনি।
শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে ব্যাপক রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসীরা আগের বছরের একই মাসের তুলনায় ১.০৭ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স বেশি পাঠিয়েছেন, এ হিসাবে প্রবৃদ্ধি ৮০ দশমিক ২২ শতাংশ।
ব্যাংকাররা বলেন, নতুন সরকারের শুরু থেকে প্রবাসীরা হুন্ডিতে রেমিট্যান্স পাঠানো কমিয়ে দিয়েছেন। এখন তারা লাইনে দাঁড়িয়ে হলেও ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। সে সুবাদে দেশের প্রবাসী আয় ব্যাপক পরিমাণে বাড়ছে।
আরও পড়ুন:সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে টানা চার দিন আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তবে এ সময়ে বেনাপোল শুল্ক ভবন ও বন্দরে পণ্য উঠানামা, খালাস এবং বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক থাকবে।
ভারতের পেট্রাপোল বন্দর ক্লিয়ারিং এজেন্টস স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্ত্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘শারদীয় দূর্গাপূজার সরকারি ছুটির কারণে ৯ অক্টোবর বুধবার থেকে ১২ অক্টোবর শনিবার পর্যন্ত পেট্রাপোল বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তাই এ সময় বেনাপোল বন্দরের সঙ্গে সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে। তবে ইলিশের চালান গ্রহণ করা হবে। ১৩ অক্টোবর রোববার সকাল থেকে আবারও আমদানি-রপ্তানি চালু হবে।’
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা বলেন, ‘দুর্গাপূজার ছুটির কারণে চারদিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে বলে ওপারের ক্লিয়ারিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন পত্র দিয়ে আমাদেরকে অবহিত করেছে।’
বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) রাশেদুল সজীব নাজির বলেন, ‘দুর্গাপূজার ছুটির বিষয়টি ওপারের কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন। তবে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও এপারের বন্দরে পণ্য উঠানামা, খালাস ও পণ্যের শুল্কায়ন কাজকর্ম স্বাভাবিক নিয়মে চলবে। বেনাপোল বন্দরে পণ্য খালাসের পর ভারতীয় ট্রাক দেশে ফিরে যেতে পারবে।’
বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ওসি ইমতিয়াজ ভুইয়া বলেন, ‘পূজার ছুটিতে দুদেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও এ সময় দুদেশের মধ্যে যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক থাকবে।’
বিশ্বব্যাংক ও ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) তিন খাতের সংস্কারে সহায়তা করবে। খাতগুলো হলো- জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), জ্বালানি ও ব্যাংক।
রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। এর আগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিশ্বব্যাংক ও আইএফসির প্রতিনিধিরা।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আজ (রোববার) বিশ্বব্যাংক ও ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশনের প্রতিনিধিরা এসেছিলেন। বিশ্বব্যাংক কী কী কাজে সহায়তা দেবে তা নিয়ে এর আগেও আমরা আলোচনা করেছি। আমাদের আর্থিক খাত ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সংস্কারের বিষয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।’
আইএফসির বিনিয়োগ নিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা কীভাবে সরকারি ও বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ করবে এসব বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা করেছি। কারিগরি ও আর্থিক সহায়তার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। আগামী অক্টোবরে আমি যখন তাদের সভায় যাব তখন এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।
‘মোট কথা তারা আমাদের সব বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন। তবে আমাদের কিছু কাজ করতে হবে। কিছু শর্ত আছে সেগুলো পালন করতে হবে।’
কোন কোন খাতে তারা সহায়তা দেবে সে বিষয়ে কিছু জানিয়েছে কী না- এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘ব্যাংক খাত ও এনবিআর সংস্কারের ক্ষেত্রে তারা আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দেবে। এছাড়া এনার্জি (জ্বালানি) খাতেও কিছু আছে। সার্বিকভাবে আমাদের আর্থিক ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে তারা সহায়তা করবে।’
সহায়তার পরিমাণ সম্পর্কে জানতে চাইলে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘অ্যামাউন্টের বিষয়ে এখন বলব না। প্রতিটি ডোনার কী দেবে সেটা জেনে পরে আপনাদের জানানো হবে। যথাসময়ে জানাব যে কোন ডোনার কী দিয়েছে, তবে এখন নয়।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য