পদ্মা সেতু প্রকল্পের শুরু যার হাত ধরে তিনি সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন। শুরুতেই বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতির অভিযোগের মুখে পড়ে পদ্মা সেতু প্রকল্প। আর সেই সঙ্গে অভিযোগের মুখে মন্ত্রিসভা থেকে সরে যান সৈয়দ আবুল হোসেন। পরে অবশ্য কানাডার আদালতে দুর্নীতির সব অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণ হয়। পদ্মা সেতু প্রকল্পে নিজের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ও সেতু নিয়ে অনুভূতি নিউজবাংলাকে প্রকাশ করেছেন সাবেক এ যোগাযোগমন্ত্রী।
পদ্মা সেতুর শেষ স্প্যান বসানোর সময় থাকতে পারলে কি ভালো লাগত?
পদ্মা সেতুর শেষ স্প্যান বসানো একটি সুসংবাদ। বাংলাদেশের মানুষের জন্য একটি আনন্দের, খুশির খবর। শেষ স্প্যান বসানোর ফলে ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু দৃশ্যমান হবে। এটা দেশের জনগণের স্বপ্নের পদ্মা সেতুর বাস্তবায়নের অগ্রযাত্রার নিয়ামক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সফলতা ও নেতৃত্বের ফসল। এই সেতুর নির্মাণ প্রক্রিয়ায় আমি সম্পৃক্ত ছিলাম এবং দ্রুত বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করেছি। এটা আমার গর্ব।
আপনার মনের কোণে কি কোনো কষ্ট আছে? সেতুটি আপনার হাত দিয়েই শেষ হতে পারত।
না, আমার মনে কোনো কষ্ট নেই। কারণ আমি পদ্মা সেতু নির্মাণ শুরু করেছিলাম। দুই বছরে ভূমি অধিগ্রহণ, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন, পরামর্শক নিয়োগে দরপত্র আহ্বান, মূল সেতুর দরপত্র আহ্বান এবং সেতুর অর্থায়নে বিশ্বব্যাংক, জাপানের জাইকা, ইসলামী উন্নয়ন সংস্থা এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের সাথে ঋণচুক্তি স্বাক্ষর করি। ক্ষতিগ্রস্থদের পুনর্বাসনকাজ শেষ পর্যায়ে নিয়ে আসি। প্রাকযোগ্য দরদাতা নির্বাচন প্রক্রিয়াও শেষ করি। যেখানে বঙ্গবন্ধু সেতুর প্রস্তুতি কাজ করতে ১০ বছর লেগেছে, সে ক্ষেত্রে আমি পদ্মা সেতুর প্রস্তুতি কাজ দুই বছরে শেষ করি। কাজেই এটা আমার সাফল্য। পদ্মা সেতু নির্মাণে আমার অবদান কি কোন অংশে কম। কেউ কি বা ইতিহাস কি আমার অবদান অস্বীকার করতে পারবে? যারা পদ্মা সেতু নিয়ে ষড়যন্ত্র করেছে, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছে, তাদের অভিযোগ যে অসত্য তা কানাডার আদালত ও দুদকের তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। যেকোনো কাজের সফলতা রিলে রেসের মতো। পদ্মা সেতুর কাজ আমি শুরু করেছি, আমি এগিয়ে নিয়েছি। অন্য হাতে শেষ হবে- এটাই স্বাভাবিক। আমি কষ্ট নয়, আমি আনন্দিত। আমি গর্বিত।
একটি বায়বীয় অভিযোগে মন্ত্রিত্ব হারাতে হয়েছে। নির্বাচনেও মনোনয়ন পাননি। এটা কি অবিচার হিসেবে দেখেন?
আমি মন্ত্রী না থাকা বা এমপি নির্বাচনে মনোনয়ন না নেয়া অথবা নির্বাচন না করা অবিচার হিসেবে দেখি না। আমি মন্ত্রিত্ব হারাইনি। দেশের স্বার্থ বিবেচনায় আমি মন্ত্রিত্ব ছেড়ে এসেছি, পদত্যাগ করেছি। আমি পরপর চারবার বিপুল ভোটে জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছি। এতে আমার প্রতি কোনো অবিচার নয়, আমার মর্যাদা বেড়েছে। বিশ্বব্যাংকের কাছে আমার মর্যাদা, আমার সততা ও সুনাম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সরকারের কাছে আমার গ্রহণযোগ্যতা ও সম্মান বেড়েছে। জনগণের মধ্যে, এলাকার জনগণের মধ্যে আমার সম্মান ও গ্রহণযোগ্যতা বহু গুণ বেড়েছে। পদ্মা সেতুতে আমি যে অনিয়ম করিনি, তা প্রমাণিত হওয়ায় সর্বমহলে আমার সুনাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
অর্থায়ন নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে জটিলতার শুরুটা কীভাবে হয়েছিল?
পদ্মা সেতুতে সব ডোনার এজেন্সির কো-অর্ডিনেটরের ভূমিকায় ছিল বিশ্বব্যাংক। তাই বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুর প্রস্তুতি কাজের প্রত্যেক পর্যায় অবলোকন ও অনুমোদন করে। পরামর্শক ও ঠিকাদার নিয়োগের প্রতিটি পর্যায় তাদের অনুমোদনে অগ্রসর হয়। অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বে কারিগরি কমিটি ঠিকাদার নিয়োগ ও কনসালট্যান্ট নিয়োগের কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছিল। কিন্তু ঠিকাদার নিয়োগের একপর্যায়ে বিশ্বব্যাংক, কারিগরি কমিটিকে একটি কোয়ালিফাইড ঠিকাদারকে, বিশ্বব্যাংকের কালো তালিকাভুক্ত থাকার কারণে বাদ দিতে বলে এবং একটি আনকোয়ালিফাইড ঠিকাদারকে কোয়ালিফাইড করতে বলে। কারিগরি কমিটি কোয়ালিফাইড দরদাতাকে বিশ্বব্যাংকের কালো তালিকাভুক্তির কারণে বাদ দেয়। কিন্তু আনকোয়ালিফাইড দরদাতাকে অভিজ্ঞতার জাল সার্টিফিকের দেয়ায় কোয়ালিফাইড করতে অস্বীকৃতি জানায়। কিন্তু বিশ্বব্যাংক আনকোয়ালিফাইড দরদাতা প্রতিষ্ঠানকে কোয়ালিফাইড করতে তার অনুকুলে বারবার কোয়ারি করে। আনকোয়ালিফাইড দরদাতাকে কোয়ালিফাইড করতে কারিগরি কমিটিকে নমনীয় করতে বিশ্বব্যাংক ব্যর্থ হয়। এরপরই তারা পদ্মা সেতুর কার্যক্রমে বাধা দিতে থাকে; নানা কর্নার দিয়ে মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করে। উদ্দেশ্য পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন বিলম্বিত করা। তারা সোজা পথে তাদের উদ্দেশ্য সফল করতে না পেরে ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেয়।
আপনাদের সঙ্গে যখন বিশ্বব্যাংকের বৈঠক হতো, তখন তাদের কর্মকর্তারা কী বলতেন? আপনাকে কেন তারা টার্গেট করেছে?
বিশ্বব্যাংক যখন তাদের সমর্থিত অযোগ্য ঠিকাদারকে নিয়োগ দিতে ব্যর্থ হয়, তখনই তারা ষড়যন্ত্র শুরু করে। তারা তাদের এই অবৈধ কার্যক্রমকে আড়াল করার জন্য আমার বিরুদ্ধে সমর্থিত ঠিকাদারের স্থানীয় এজেন্ট দিয়ে ভুয়া বেনামি অভিযোগপত্র দেয়া শুরু করে এবং এসব ভুয়া সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশে প্রভাব বিস্তার করে। অনেক নামীদামি পত্রিকাও বিশ্বব্যাংকের এ ষড়যন্ত্র বুঝে হোক, আর না বুঝে হোক, তাতে হাত মিলায়। এমন একটা পরিবেশ সৃষ্টি করে যেন পদ্মা সেতু নির্মাণ কার্যক্রম বিলম্বিত হয়। এ সময় বিশ্বব্যাংক তাদের ষড়যন্ত্রকে কাজে লাগানোর জন্য পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত জনৈক বিহারিকে পদ্মা সেতু নির্মাণের কো-অর্ডিনেটর নিয়োগ করে। ফলে আমার বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, পদ্মা সেতু দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের কবলে পড়েছে। তাই একপর্যায়ে যখন ঠিকাদার নিয়োগে কোনো ত্রুটি বা অনিয়ম প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়ে বিশ্বব্যাংক আমাকে টার্গেট করে এবং আমি সরে গেলেই বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন করবে, সেতুর কাজ চালিয়ে যাবে, এমন কথা বলতে থাকে। অযোগ্য ঠিকাদার নিয়োগে ব্যর্থ হয়ে বিশ্বব্যাংক আমাকে টার্গেট করে যাতে পদ্মা সেতু নির্মাণ বিলম্বিত হয়। এ সময় তৎকালীন ঢাকাস্থ বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি মিস গোল্ড স্টেইন আমাকে এক ডিনারে বলেছিলেন, ‘মিস্টার হোসেন, ডোন্ট গো ফাস্ট। ডোন্ট কমপ্লিট দ্য ব্রিজ ডিউরিং দ্য টেনর অফ দিজ গভর্নমেন্ট।’ এ বিষয়টি আমি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেছিলাম। তাদের ষড়যন্ত্রের কারণে পদ্মা সেতু নির্মাণের স্বার্থে আমি মন্ত্রিসভা থেকে একপর্যায়ে পদত্যাগ করি। এরপরও বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন কার্যক্রম শুরু করেনি। এটা ছিল দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র।
দুর্নীতিচেষ্টার এই অভিযোগ তোলার পেছনে আসলে কী কারণ থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন?
বিশ্বব্যাংক প্রথমে অভিযোগ করে পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হয়েছে। পরে বলে দুর্নীতির চেষ্টা হয়েছে। এরপর বলে দুর্নীতির আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। অথচ তখন পর্যন্ত কোনো অর্থ বরাদ্দ হয়নি, অর্থছাড় করেনি। তাদের অর্থায়নে কোনো ঠিকাদার নিয়োগ হয়নি। তাহলে দুর্নীতির চেষ্টার অভিযোগ আসে কীভাবে? দুর্নীতির অভিযোগের আসল কারণ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র। আমি পদ্মা সেতুর প্রস্তুতি কাজ এমনভাবে দ্রুত এগিয়ে নিয়েছিলাম যে, ২০১৩ সালের ডিসেম্বরেই পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হবে। পদ্মা সেতুর কাজ এ সময়ে দ্রুত শেষ হবে এটা রাজনৈতিকভাবে দেশের কতিপয় স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি যেমন চাননি, তেমনি পছন্দের ঠিকাদারকে নির্বাচিত করতে ব্যর্থ হয়ে বিশ্বব্যাংক ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেয়। সেতুর কাজকে ধীরগতি করার জন্য বিশ্বব্যাংক ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেয়।
দুদক যখন বারবার বলছিল তারা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পায়নি। তখন বলা হচ্ছিল তারা সরকারকে বাঁচাতে চাইছে। কানাডার আদালতের মামলায় তো দুর্নীতির অভিযোগকে গালগপ্প বলা হলো। এরপর বিশ্বব্যাংক সরকারকে কী বলেছে?
স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের সরকার এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা ও জবাবদিহিতাকে দাতা সংস্থা সবসময় খাটো করে দেখে। তাই দুদক যখন বিশ্বব্যাংকের অভিযোগের ভিত্তি ও সত্যতা খুঁজে পায়নি, তখন তা বিশ্বব্যাংক জানিয়ে দিলে তাদের চিরায়ত বিশ্বাসে বলীয়ান হয়ে তারা এ তদন্তকে সরকারকে বাঁচানোর ক্ষেত্র হিসেবে দেখে। কিন্তু কানাডার আদালতের রায় তাদেরকে বোকা করে দেয়। এরপর তারা নিশ্চুপ হয়ে যায়। পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন বন্ধ করা ছিল বিশ্বব্যাংকের একটি ভুল সিদ্ধান্ত। এই ভুল সিদ্ধান্তের কারণে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুর মতো একটি বড় প্রকল্পে অর্থায়নের সুযোগ হারাল। পরে শুনেছি বিশ্বব্যাংকের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রবার্ট জোয়েলিক প্রভাবিত হয়ে বিশ্বব্যাংকের বোর্ড সভায় আলোচনা না করে এবং অনুমোদন না নিয়েই নিজ উদ্যোগে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন স্থগিত করেছেন। বিশ্বব্যাংকের অধিকাংশ কর্মকর্তাই অর্থায়ন স্থগিতের বিষয় সমর্থন করেননি। বিশ্বব্যাংকের তৎকালীন প্রেসিডেন্টের সাথে চায়নায় বোয়া ফোরামে এক অনুষ্ঠানে আমার সাক্ষাৎ হয়, পরিচয় হয়। তখন তিনি পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বাতিল করার বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন। রবার্ট জোয়েলিকের মতো বিশ্বব্যাংকের হাতে গোনা কতিপয় কর্মকর্তার ষড়যন্ত্রের কারণে পদ্মা সেতু অর্থায়ন না করার দায় বিশ্বব্যাংকের নিতে হলো। আমি মনে করি, বিশ্বব্যাংক সৃষ্টির পর থেকে আরও ১০০ বছরেও পদ্মা সেতুর মতো মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে আর বিশ্বব্যাংক সুযোগ পাবে না। উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাংকের সেই রবার্ট জোয়েলিক এখন কোথায়? মিস গোল্ড স্টেইন এখন কোথায়? সেই লুইস ওকাম্পো কোথায়? তাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। এ খবর দেশ-বিদেশের পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। অথচ তারা বাংলাদেশে এসে সততার নাটক করেছে। এখন বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তাদের সাথে দেখা হলে পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন করতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেন, লজ্জিত হন। আমাকে সমীহ করেন। আমি সম্মানিত হই।
আপনি সম্ভবত একটি বা দুটি গণমাধ্যমকে আইনি নোটিশ দিয়ে আপনার বিরুদ্ধে নানা কথা লেখার জন্য ক্ষমা চাইতে বলেছিলেন। তারা কি কোনো জবাব দিয়েছিল?
আমি পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে নানা অসত্য কথা প্রকাশের জন্য আমি কোনো পত্রিকাকে কোনো আইনি নোটিশ প্রদান করিনি। তবে অসত্য প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য প্রতিবাদ জানিয়ে চিঠি লিখেছি। আমার লেখা এ চিঠিগুলো ‘আমার খোলা চিঠি’ বইতে আপনারা শিগগিরই দেখতে পারবেন। এ চিঠির তারা কোনো জবাব দেয়নি।
বিশ্বব্যাংকের এই অভিযোগ কি শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য শাপে বর হলো? এত বড় প্রকল্প যদি নিজ অর্থে করা যায়, তাহলে আরও ছোট প্রকল্প তো অবলীলায় করা যাবে।
আমি বিষয়টা এভাবে দেখি না। বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুতে যে অভিযোগ এনেছিল, তা ছিল বায়বীয়। এ বায়বীয় অভিযোগ উত্থাপন করে কোনো প্রকল্পের ঋণদান স্থগিত করা যায় না। বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের পদ্মা সেতুর অর্থায়ন ঋণচুক্তি হয়েছে পদ্মা নদীতে। সুবিশাল জাহাজে। বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন স্থগিত করে পদ্মা নদীতে ডুবে গেছে। আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে আমাদের সক্ষমতা দেখিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নের নেত্রী হিসেবে অভিষিক্ত হয়েছেন। বিশ্বব্যাংক নিজেদের ভুল সিদ্ধান্তে পদ্মা সেতুর মতো একটি প্রকল্পে অর্থায়নের সুযোগ হারাল। বিশ্বব্যাংক কোনো দিন এ ধরনের একটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির নিয়ামক প্রকল্পে অবদান রাখতে পারবে বলে মনে হয় না। হ্যাঁ একটি সুযোগ তাদের আছে। যদি তার কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের কঙ্গো নদীতে সেতু নির্মাণে অর্থায়ন করতে পারে। কঙ্গো নদীর প্যাটার্নও পদ্মা নদীর মতো।
অর্থায়নের আলোচনায় দাতা সংস্থার সঙ্গে যে অবস্থান এতদিন ছিল, পদ্মা সেতু কি তা পুরোটাই পাল্টে দিল?
হ্যাঁ, অনেকটা পাল্টিয়ে দিয়েছে। আমাদের সততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা সম্পর্কে তাদের নেতিবাচক ধারণার পরিবর্তন হয়েছে। পদ্মা সেতুতে বায়বীয় অভিযোগ এনে তারা ভেবেছিল, আমরা তাদের শর্ত বা ঠিকাদার নিয়োগে তাদের পছন্দের অযোগ্য ঠিকাদারকে নির্বাচন করতে এগিয়ে যাব। তাদের ডিক্টেশন আমরা শুনব। কিন্তু বাস্তবতা তাদের সঠিক পথে টেনে এনেছে বলে প্রতীয়মান হয়। এখন নানা প্রকল্পে অর্থায়ন করার জন্য বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের পিছনে ঘুরছে। বাংলাদেশের সাথে নমনীয়ভাবে, সতর্কভাবে কথা বলছে। পদ্মা সেতুর কার্যক্রমের জন্য লজ্জিত হচ্ছে।
‘চিক্ চিক্ করে বালি, কোথা নাই কাদা, একধারে কাশবন ফুলে ফুলে সাদা’ কাশবনে গেলেই কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই কবিতাটি মনে পড়ে যায়। শরতের বিকেলের স্নিগ্ধতা যেন বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে এই কাশবন। কাশফুলের মাঝে ছবি তোলার হিড়িক পড়ে যায় তরুণ-তরুণীদের। এলোমেলো বাতাসের সাথে খোলা রাস্তায় হেঁটে বেড়ানো, দুইধারে সাদা মেঘের মতন ফুলের মেলা যেন পাগল করে তোলে এখানে ঘুরতে আসা মানুষের।
শরতের এতো রূপ. এতো রঙধনুর রং, এতো নীল আকাশের নীলা, এতো ছায়াপথের আলোছায়া, এতো সূর্য্যাস্তের রক্তরাগ, এতো ভোরের শিশির, এতো কাঁশ ফুলের হেলা দোলা, আর এই বাংলা মা ছাড়া কোথায় পাবো? চোখ জুড়িয়ে যায়, মন জুড়িয়ে যায়, জীবন জুড়িয়ে যায়, সব পেয়েছি আমার এই দেশের সোনার বাংলায়।
আকাশে নরম তুলার মতো শুভ্র মেঘের ভেসে বেড়ানো আর দিগন্তজোড়া প্রান্তরে কাশফুলের মনোরম দৃশ্য দেখে বুঝতে হবে শরতের আবির্ভাব ঘটেছে। এ সময়ে নদীর ধার, জলাভূমি, চরাঞ্চল কিংবা গ্রামের কোনো উঁচু জায়গায় কাশের ঝাড় বেড়ে ওঠে প্রকৃতিকে দেয় এক অপরূপ ভিন্ন সৌন্দর্য। এভাবেই রূপগঞ্জ উপজেলার বালু ও শীতলক্ষ্যা নদীর তীরের কাশফুলের শুভ্রতা নজর কাড়ছে পথচারীদের। সিনথিয়া নামের এক পথচারী জানান, শহর থেকে নদী পথে যাওয়ার সময় হঠাৎ কাশফুলের এমন চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্য দেখে না থেমে পারলাম না।
আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে সাদা মেঘের ভেলা। নীল আকাশজুড়ে অলস মেঘের অবাধ বিচরণ। খণ্ড খণ্ড মেঘের নিরুদ্দেশ যাত্রা। রোদের ঝলকানির পাশেই মেঘের ছায়া। মেঘ আর রোদের কানামাছি খেলার মাঝে বৃষ্টিও অংশ নিচ্ছে। এমন দিনে রূপগঞ্জে আপনাকে স্বাগত জানাতে কাশফুল ‘সাদা ডালি’ সাজিয়ে বসে থাকে। ফাঁকা জমিতে শরতের সৌন্দর্যের ডালি সাজিয়ে বসে আছে এ কাশফুল।
সৌন্দর্যে ঐশ্বর্যে প্রকৃতির রূপ লাবণ্যে শরৎরাণীর রূপ বর্ণনায় শ্যামল ছায়া বাংলাদেশের মাঠ-ঘাট, নদী-নালা ও বিলের পাড়ে বালুচরে নীল আকাশে রূপালী তারায় ভরে উঠেছে সাদা কাশবন। মেঘ মুছে যাওয়া বর্ষণ শেষের আকাশে হাজার হাজার তারা ঝিকিমিকি করে জ্বলছে। রোদে ঝল মল করছে চারিদিক। দেখা যাচ্ছে নীল আকাশ স্বচ্ছ সাদা মেঘ। আর সাদা মেঘের ভেলায় ভাসছে কাশফুলের ছোঁয়া। দৃষ্টিনন্দন এ কাশফুলের স্বর্গ রাজ্য এখন রূপগঞ্জের নদীর তীরে ও পূর্বাচলের বালুময় বিস্তৃর্ণ এলাকা। আর এ কাশফুলের ছোঁয়া নিতে সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই ছুটে আসছে দর্শনার্থীরা।
বালুর মধ্যে গুচ্ছ গুচ্ছ কাশফুল দেখে মনে হবে, প্রকৃতি আপনার মনের প্রশান্তির জন্য এ রূপে সেজেছে। শেষ প্রান্তের দুদিকে সাজানো কাশফুল দেখে মনে হবে, যেন আপনি দাঁড়িয়ে আছেন কাশফুলের রাজ্যে। যত দূর চোখ যায়, তত দূর কাশ ফুলের শুভ্রতা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কাশবনে এ সৌন্দর্য দেখতে রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের জেলার ভ্রমণ প্রেমীরাও ভিড় করেছে। অনেকে দলবেধে নৌকা বা ট্রলার নিয়েও বেড়াতে যান এ কাশফুলের রাজ্যে। কাঁশফুল কাছে পেলেই ছবি তোলার হিড়িক পড়ে যায়। কেউ সেলফি তুলছেন আবার কেউবা ভিডিও করছেন। সূর্যাস্তের সময় নদীতে গোধূলির লাল, একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকার মতো। যে কেউই এর অপার সৌর্ন্দযে নীরব সাক্ষী হতে চাইবে।
কথা হলো কাশফুল দেখতে আসা কয়েকজন দর্শনার্থীর সাথে। রিতা মিতা বিথী জুয়েল তারা তাৎক্ষণিক অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, ‘কাশফুলের কাছে এসে খুবই আনন্দ পাচ্ছি। মনকে পরিষ্কারের জন্য আমরা এখানে আসি। কাশফুলের সান্নিধ্য পাওয়াটা একটু বাড়তি বিনোদন। অবসর সময়টা কাটানোর ভিন্ন একটা স্থান কাশফুলে জেগে এ প্রকৃতি। আরেকটা বিষয় আমাদের খুব ভালো লাগে। সেটা হচ্ছে, এই যে নদী তার পাশে কাশফুলের এ রাজ্য। বিষয়টা দেখতেও বেশ রোমাঞ্চকর।
আজ ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিঃ তারিখে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং ল্যাবএইড গ্রুপ, ল্যাবএইড ক্যানসার হাসপাতাল ও ল্যাবএইড সুপার স্পেশালিটি সেন্টারের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বাহিনীর সদর দপ্তরে আয়োজিত এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন বাহিনীর অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফিদা মাহমুদ এবং ল্যাবএইড মেডিক্যাল সার্ভিসেসের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আলীম।
এই চুক্তির আওতায় আনসার ব্যাটালিয়ন, অঙ্গীভূত সাধারণ আনসার, ভিডিপি সদস্য এবং তাঁদের পরিবারবর্গ ল্যাবএইড মেডিক্যাল সার্ভিসেসের সারাদেশব্যাপী ৩২টি শাখায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের সুযোগ পাবেন। এর মধ্যে রয়েছে ডোপ টেস্ট, সিটি স্ক্যান, এমআরআই, ইসিজি, আল্ট্রাসনোগ্রাম, ইকো, ইটিটি সহ অত্যাধুনিক চিকিৎসা পরীক্ষা-নিরীক্ষা। পাশাপাশি, হাসপাতালে ভর্তি ও বহির্বিভাগীয় চিকিৎসা সেবায় বিশেষ ছাড়ের সুবিধাও ভোগ করবেন তাঁরা।
বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি ইতোমধ্যেই গ্রামীণ ডিজিটাল হেলথ কেয়ারের সাথে চুক্তির মাধ্যমে সদস্যদের স্বাস্থ্যসেবায় এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। ‘সুখী’ অ্যাপের মাধ্যমে দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে সহজে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের এই প্রক্রিয়া সদস্যদের মধ্যে সাড়া জাগিয়েছে। ল্যাবএইডের সাথে নতুন এ সহযোগিতা সদস্যদের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাহিনীর অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফিদা মাহমুদ বলেন- “ল্যাবএইডের সাথে এ চুক্তি বাহিনীর চিকিৎসা কার্যক্রমের একটি মাইলফলক। এটি কেবল শুরু, ভবিষ্যতে এ কার্যক্রম আরও সম্প্রসারিত করা হবে।”
অন্যদিকে ল্যাবএইড মেডিক্যাল সার্ভিসেসের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আলীম বলেন- "শিগগিরই সারাদেশে ল্যাবএইডের প্রতিটি শাখায় আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের জন্য বিশেষায়িত চিকিৎসা কার্যক্রম চালু করা হবে।”
উভয় পক্ষই ভবিষ্যতে যৌথভাবে স্বাস্থ্যসচেতনতা বৃদ্ধি, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং উন্নত চিকিৎসা কর্মসূচি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা ব্যক্ত করেন। আশা করা হচ্ছে, এর ফলে আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের স্বাস্থ্যঝুঁকি হ্রাস পাবে, চিকিৎসা গ্রহণ হবে আরও সহজলভ্য এবং বাহিনীর সামগ্রিক কর্মদক্ষতা বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাহিনীর উপমহাপরিচালক (অপারেশন্স) মোঃ সাইফুল্লাহ রাসেল, উপমহাপরিচালক (প্রশিক্ষণ) মোঃ রফিকুল ইসলামসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
'সেবার ব্রতে চাকরি' এই শ্লোগানে ঝালকাঠিতে বাংলাদেশ পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে মেধা, যোগ্যতা ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে জুন-২০২৫ এর নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল ঘোষনা করা হয়েছে। নিয়োগ বোর্ডের সদস্যসহ ঝালকাঠি জেলা পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের পুলিশ সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার (১০সেপ্টেম্বর) রাতে পরীকায় উত্তীর্ণদের মাঝে পুলিশ লাইনস্ এর ড্রিল শেডে আনুষ্ঠানিক ভাবে চুরান্ত ফলাফল ঘোষনা করেছেন ঝালকাঠির পুলিশ সুপার উজ্জল কুমার রায়। ফলাফল ঘোষনার সময় উত্তীর্ণদের ফুল দিয়ে বরণ করে মিষ্টি খাইয়ে দেয়া হয়। এবারের নিয়োগে শুণ্য পদ অনুযায়ী উত্তীর্ণ ৯ জন ও অপেক্ষমান তালিকার ২ জন প্রার্থীর নাম ঘোষনা করা হয়।
এসময় অভিভাবকরা আবেগপ্রবণ হয়ে তাৎক্ষণিক অনুভূতি ব্যক্ত করেন যে, তারা কৃষক, দিনমজুর, অটোচালক বিভিন্ন পেশার সাথে জড়িত। যদি বাংলাদেশ পুলিশ স্বচ্ছতা, যোগ্যতা এবং মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ না দিতেন তাহলে আজ তাদের সন্তানেরা বাংলাদেশ পুলিশের মত গর্বিত বাহিনীতে চাকরি করার সুযোগ পেত না। মেধা, যোগ্যতা ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে তাদের সন্তানদের বাংলাদেশ পুলিশে নিয়োগ দেওয়ায় পুলিশ সুপারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন অভিভাবকরা।
পুলিশ সুপার ফলাফল ঘোষনার পর তার বক্তব্যে উত্তীর্ণদের উদ্দেশ্যে বলেন 'কয়েটি ধাপের পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে যারা উত্তীর্ণ হয়েছে প্রত্যেককে অভিনন্দন জানাই। সেইসাথে সততা, নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সাথে দেশসেবার মনোভাব নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে কাজ করার আহবান জানাই।'
প্রশিক্ষণকালীন বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে সদ্য চাকুরীপ্রাপ্তদেরকে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা প্রদান করেন পুলিশ সুপার।
আলিবাবা.কম, বিশ্বের বৃহত্তম বি-টু-বি ই-কমার্সের শীর্ষস্থানীয় প্ল্যাটফর্ম আগামী ১০ থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর, ২৪তম টেক্সটেক বাংলাদেশ ইন্টারন্যশনাল এক্সপো ২০২৫ ঢাকায় হল-বি: স্টল নং: বিটি১৭ই ও বিটি১৭এফ এ উপস্থিত থাকবে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সহায়তা করার লক্ষ্যে আলিবাবা.কম বাংলাদেশের এসএমই ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশেষ করে টেক্সটাইল, পাট ও হস্তশিল্প খাতের উদ্যোক্তাদের, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্য বিক্রির সুযোগ দেখতে তাদের স্টলে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত আলিবাবা.কম বিশ্বব্যাপী ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে এবং পণ্য সংগ্রহ, সরবরাহকারী যাচাই, অনলাইন অর্ডার, পেমেন্ট, ডেলিভারি এবং বিক্রয়োত্তর সহায়তার জন্য এআই নির্ভর সমাধান প্রদান করে। এই এক্সপোতে আলিবাবা.কম স্থানীয় এসএমই ব্যবসায়ীদের রপ্তানির জন্য প্রস্তুত করতে সাহায্য করবে, বিশেষ করে ওয়েস্টার্ন হলিডে’র আগে যা আন্তর্জাতিক ব্যবসার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়।
"বিশ্ব টেক্সটাইল ও হস্তশিল্প বাজারে বাংলাদেশি এসএমইগুলোর বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে," বলেছেন ফনসেল ল্যান, আলিবাবা.কম-এর হেড অফ গ্লোবাল পটেনশিয়াল কান্ট্রিজ। “এই এক্সপোর মাধ্যমে আমাদের লক্ষ্য স্থানীয় বিক্রেতাদেরকে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের সঙ্গে সংযুক্ত করা এবং তাদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করা, যাতে তারা ব্যবসা বৃদ্ধি করতে পারে এবং সফলভাবে রপ্তানি করতে পারে।
টেক্সটেক বাংলাদেশ ইন্টারন্যশনাল এক্সপো ২০২৫ বাংলাদেশের বৃহত্তম এবং দীর্ঘস্থায়ী প্ল্যাটফর্ম যেখানে সুতা, কাপড়, ট্রিম এবং আনুষাঙ্গিক পণ্যের উদ্ভাবন প্রদর্শন করা হয়। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে এটি টেক্সটাইল খাতে নেটওয়ার্কিং, পণ্য সংগ্রহ এবং ব্যবসায়িক উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।
এই এক্সপোতে আলিবাবা.কম- এর স্টলে, এআই নির্ভর পণ্য অপ্টিমাইজেশন এবং বিপণন কৌশল সম্পর্কে পরামর্শ দেবে, যা বাংলাদেশী এসএমই ব্যবসায়ীদের আত্মবিশ্বাসের সাথে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করতে সাহায্য করবে।
খাগড়াছড়ি পানছড়ি উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি এলাকার পানি সংকট নিরসনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধানের উপহার সুপেয় পানির সুবিধা পাচ্ছে রেজা মনিপাড়া ও কারিগর পাড়ার ২টি গ্রামের মোট ১১৭ টি পরিবার। বৃহস্পতিবার সকালে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ বাস্তবায়ন প্রকল্পের উদ্বোধন খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাছান মাহমুদ।
এসময় তিনি বলেন, সেনাপ্রধান গত ২৯ মার্চ ২০২৫ তারিখে খাগড়াছড়ি জোনের আওতাধীন রেজামনিপাড়া আর্মি ক্যাম্প পরিদর্শন করেন যেখানে তিনি পূর্বে ক্যাম্প কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পরিদর্শনকালীন সময়ে এলাকার প্রাক্তন মেম্বার ও কার্বারীদের সাথে মতবিনিময় করেন এবং এলাকার বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে আলোচনা করেন । এ সময় সম্মানিত সেনাপ্রধান উক্ত এলাকায় বসবাসকারী স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহের প্রকল্প বাস্তবায়নের আশ্বাস প্রদান করেন। তার-ই প্রেক্ষিতে আজ রেজামনিপাড়া এবং কারিগরপাড়া এলাকার সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ করা এবং আগামীতেও পাহাড়ে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি সেনাবাহিনীর এধরণের উন্নয়ন কাজের ধারা অব্যহত থাকবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান মাহমুদ, এইচডিএমএস, এএফডব্লিউসি, পিএসসি। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি জোন কমান্ডার লে. কর্নেল মোঃ খাদেমুল ইসলাম, পিএসসি, জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার, পুলিশ সুপার মোঃ আরেফিন জুয়েল ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে বসত বাড়ির যাতায়াতের পথ পাকা করাকে কেন্দ্র করে বহিরাগত সন্ত্রাসী দিয়ে একই পরিবারের মহিলাসহ ৭ জনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
১১ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) সকাল ১০ টার দিকে উপজেলার বারগাঁও গ্রামের রফিক মাস্টারের পুরাতন বাড়িতে এই ঘটনাটি ঘটে।
এ নিয়ে উপজেলার বারগাঁও গ্রামের মৃত লোকমান মিয়ার পুত্র ব্যবসায়ী তাজুল ইসলাম (৬১) বাদী হয়ে সোনাইমুড়ী থানায় বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার উল্লেখ করা হয়েছে, ভুক্তভোগী তাজুল ইসলামের মালিকানা সম্পত্তির উপর দিয়ে একই বাড়ির আব্দুল কাদেরের পুত্র গিয়াস উদ্দিন (৪০) ও তার সহযোগীরা জোরপূর্বক ঢালাই দিয়ে যাতায়াতের পথ নির্মাণ করছিল।এসময় বাধা দিলে তাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে। ১১ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) সকাল ১০ টার গিয়াস উদ্দিন, তার সহযোগী আব্দুল মালেক ও আব্দুল লতিফ বহিরাগত সন্ত্রাসী এনে তাজুল ইসলামদের উপর হামলা চালায়। এ সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তাজুল ইসলাম (৬১),তার ছেলে বেলাল হোসেন জিসান( ২৩),তার স্ত্রী ফরিদা আক্তার (৫১),তার মেয়ে উম্মে হানি নিশি (১৮),ভাতিজা খোরশেদ আলম (৩৬),বড় ভাই মোস্তফা (৭০) ও বড় ভাইয়ের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৫৫) গুরুতর আহত হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে স্থানীয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সোনাইমুড়ী থানার ওসি মোরশেদ আলম জানান, বাড়ির যাতায়াতের পথে ঢালাই দেওয়াকে কেন্দ্র করে হামলা হয়েছে। একই পরিবারের সাতজন গুরুতর আহত হয়েছে। থানায় মামলা হয়েছে।হামলাকারীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
আইনের আশ্রয় নিতে গিয়েছিলেন স্ত্রী। কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর আগেই স্বামীর নির্মমতার শিকার হয়ে প্রাণ গেল জুথি খাতুন (২৩) নামের এক তরুণ গৃহবধূর। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নওগাঁ সদর উপজেলার কাঠাতলী এলাকায় এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
নিহত জুথি সদর উপজেলার আনন্দনগর মৃধাপাড়া গ্রামের ঝুন্টু প্রামানিকের মেয়ে। প্রেম করে বিয়ে করলেও, ভালোবাসার সেই সম্পর্ক রূপ নেয় বিভীষিকায় শেষ পর্যন্ত প্রাণটাই গেল তরুণীটির।
জুথির বাবা ঝুন্টু প্রামানিক কাঁদতে কাঁদতে বলেন, প্রায় এক বছর আগে প্রেম করে গাজীপুরের তানভীর নামের এক ছেলেকে বিয়ে করেছিল আমার মেয়ে। প্রথম দিকে সব ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে জুথি জানতে পারে, তানভীরের আগে থেকেই আরেকজন স্ত্রী রয়েছে। এ নিয়ে শুরু হয় কলহ। মেয়েটা অনেক সহ্য করেছে। শেষে অন্যায় মেনে না নিয়ে নিজ গ্রামে ফিরে আসে এবং আদালতের দ্বারস্থ হয়।
বৃহস্পতিবার ছিল সেই মামলার শুনানির তারিখ। সকালে আদালতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয় জুথি। কিন্তু তার আর আদালত পর্যন্ত যাওয়া হলো না। কাঠাতলী মোড়ে পৌঁছাতেই ওঁত পেতে থাকা তানভীর আচমকা ছুরি হাতে জুথির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। একের পর এক ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় সে। আশপাশের লোকজন দ্রুত জুথিকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার বর্ণনায় চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি প্রত্যক্ষদর্শীরাও। সকালের ব্যস্ত সড়ক হঠাৎই থমকে যায় রক্তাক্ত দৃশ্যের সামনে। “মেয়েটা রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎ এক ছেলেকে দৌড়ে এসে ছুরি চালাতে দেখি। আমাদের চোখের সামনে সব হয়ে গেল বলেন এক প্রত্যক্ষদর্শী।
এ বিষয়ে নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয় ঘটনা। তদন্ত চলছে। ঘাতককে দ্রুত গ্রেফতারের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় সচেতন মহল বলছেন, এই ঘটনায় শুধু এক তরুণীর জীবনই নিভে গেল না, প্রশ্ন উঠেছে সমাজব্যবস্থার প্রতিও। যেখানে একজন নারী নিজেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাহস করে আইনের দ্বারস্থ হয়েছিল, সেখানেও নিরাপদ থাকলেন না তিনি। মানুষের মুখে মুখে এখন একটাই কথা, জুথির কী দোষ ছিল? শুধু একজন ভালোবাসা চাওয়া, সম্মান চাওয়া নারী তার জন্যই কি জীবন দিতে হলো।
মন্তব্য