× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

জাতীয়
ক্র্যাক থেকে ঢাকা কাঁপানো সেই দুর্ধর্ষ ক্র্যাক প্লাটুন
google_news print-icon

‘ক্র্যাক’ থেকে ঢাকা কাঁপানো সেই দুর্ধর্ষ ক্র্যাক প্লাটুন

ক্র্যাক-থেকে-ঢাকা-কাঁপানো-সেই-দুর্ধর্ষ-ক্র্যাক-প্লাটুন
“খালেদ মোশাররফ দেখি আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। ক্যাপ্টেন হায়দারকে তিনি বলছেন, ‘লুক হায়দার লুক।’ এদের আমরা বললাম, দূরে দূরে গ্রেনেড ফাটাতে। আর এরা ইন্টারকন্টিনেন্টালে ঢুকে ব্লাস্ট করে দিল। হাউ ডেয়ার! দে আর অল ক্র্যাক। ক্র্যাক না হলে কী আর এ রকম করতে পারে? এই যে বলল ক্র্যাক, এটা পরে পুরা ক্যাম্পেই ছড়িয়ে গেল।”

পাকিস্তান শাসনামলে পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী ঢাকার বুকে অভিজাত্যের প্রতীক ছিল হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল। একাত্তরে বাঙালির মুক্তিযুদ্ধকে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন হিসেবে বিশ্বের কাছে প্রচার করতে এই হোটেলকেই ব্যবহার করতে চেয়েছিল পাকিস্তানের জান্তা সরকার। বিভিন্ন দেশের একঝাঁক সাংবাদিককে ঢাকায় আমন্ত্রণ জানিয়ে রাখা হয়েছিল হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে।

এমনই অবস্থায় ঢাকার বুকে মুক্তিযোদ্ধাদের অস্তিত্ব জানান দিতে এই হোটেলে গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনা করেন অকুতোভয় একদল তরুণ যোদ্ধা। পরপর চারটি গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বিশ্বকে তারা বার্তা দিলেন বাঙালির মুক্তির সংগ্রামের। ক্র্যাক প্লাটুনের সদস্য হিসেবে তাদের চিনল সারা দেশ।

পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে কাঁপিয়ে দেয়া সেই ক্র্যাক প্লাটুনের অন্যতম সদস্য ছিলেন মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া (বীর বিক্রম)।

বিজয়ের ৪৯তম বার্ষিকীর প্রাক্কালে একাত্তরের স্মৃতিচারণ করেছেন মায়া। উঠে এসেছে জীবন বাজি রাখা গেরিলা যুদ্ধের নানান দিক। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন নিউজবাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক আশিক হোসেন।

শুরুতেই জানতে চাই, মুক্তিযুদ্ধে কেন জড়ালেন?

মুক্তিযুদ্ধে জড়ানোর কারণটি হলো দেশপ্রেম। আগে থেকেই অবশ্য পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্যাতন, অত্যাচার, নিপীড়নের প্রতিবাদে ছাত্র সমাজ, এ দেশের সাধারণ মানুষ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। সে আলোকেই আমরা অপেক্ষা করছিলাম, বঙ্গবন্ধুর শেষ নির্দেশনাটা কী আসে। সে দিনটি এলো ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ। ওইদিন রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু তার ঐতিহাসিক ভাষণে পরিষ্কার বললেন, এখন আর ঘরে বসে থাকার সময় নেই, আমাদের সংগ্রাম ও যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। এর মধ্যে দিয়েই আমরা বার্তা পেয়ে গেলাম, আমাদের আর বসে থাকার সময় নেই। যার যা কিছু আছে তাই নিয়েই যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।

আপনাদের যুদ্ধযাত্রা শুরু হলো কীভাবে? প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

আমরা কয়েকজন বন্ধু একত্রিত হয়ে মনোস্থির করলাম, আমরা ভারতে গিয়ে ট্রেনিং নিয়ে যুদ্ধে অংশ নেব। ট্রেনিং ছাড়া তো যুদ্ধ হয় না, এজন্য আমরা প্রথমে আগরতলায় গেলাম। আমাদের প্রথম যে ক্যাম্পটা হয়, সেটা ছিল সোনামুড়ায়। তো সোনামুড়ায় আমরা গিয়ে পৌঁছালাম। সেখান থেকেই আমাদের ট্রেনিং শুরু হয়। প্রথম ধাপে ছোট খাটো হাতিয়ার যেমন গ্রেনেড, থ্রি নট থ্রি রাইফেল, এসএলআর এসব চালানোর ট্রেনিং আমরা নিচ্ছিলাম। কীভাবে অস্ত্র খোলা যায়, জোড়া যায়। তারপর, গ্রেনেড কীভাবে থ্রো করা যায়, পিন কীভাবে খুলতে হবে, কতদূর পর্যন্ত এটার ডিসট্যান্স, কতদূর পর্যন্ত আঘাত করতে পারে এগুলো- এসব শিখছিলাম।

ঠিক সে মুহূর্তে একদিন রাতে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট থেকে আমাদের সোনামুড়ার ক্যাম্প লক্ষ্য করে পাকিস্তানিরা আর্টিলারি সেল নিক্ষেপ করে। তবে গোলাগুলো লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। আমাদের ক্যাম্প থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার, সোয়া কিলোমিটার দূরে এসে পড়তে থাকে, রেঞ্জে আসেনি। তারপর, ক্যাপ্টেন হায়দার, মেজর খালেদ মোশাররফ তারা পরিকল্পনা করলেন- এই জায়গাটায় ক্যাম্প আমাদের জন্য সুরক্ষিত না। পরের রাতেই আমাদের মেলাগড়ে সরিয়ে নেয়া হলো, এটাই ছিল আমাদের সবশেষ ক্যাম্প। এটা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট থেকে প্রায় ২৮ থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে হবে, পাকিস্তানিদের রেঞ্জের বাইরে। পরে শেষ পর্যন্ত এখানেই ক্যাম্পটা ছিল। সেখানে গিয়ে আমরা আবার ট্রেনিংয়ে যুক্ত হই।

এই ক্যাম্পে শুরু হলো এক্সপ্লোসিভ তৈরি, বিস্ফোরণ ঘটানোর প্রশিক্ষণ। এছাড়া ফিউজ কীভাবে লাগাতে হবে, ডেটোনেটর কীভাবে লাগাতে হবে, টাইম পেন্সিল কীভাবে ফিট করতে হবে, এ সব প্রশিক্ষণ শুরু হলো।

আপনাদের প্রথম অপারেশনটা তো ছিল হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে। সেই অপারেশনটা কীভাবে করলেন?

মেলাগড়ে ট্রেনিং চলার সময়ে একদিন ক্যাপ্টেন হায়দার সাহেব ম্যাসেজ দিয়ে বললেন, খালেদ মোশাররফ সাহেব আপনাদের সঙ্গে একটু কথা বলবেন, উনি আসছেন আপনারা একটু বসেন।

আমরা গাছতলায় সবাই বসে আছি, ট্রেনিং চলছে। উনি আসলেন। এসেই একটা বক্তব্য দিয়ে বললেন, শক্ত একটা অপারেশনে যেতে হবে, যেটাতে গেলে নির্ঘাত মৃত্যু ভেবেই যেতে হবে। যে যাবে হয়ত আর ফিরে আসবে না, এটা ভেবেই যেতে হবে। এখানে ঢাকার যারা তোমাদের মধ্যে থেকেই যেতে হবে, তোমরা যারা যেতে চাও হাত তোলো।

প্রথমে আমিসহ ৩ নম্বর প্লাটুনের ১৩ জন একসঙ্গে হাত তুললাম। এভাবে ওইখানে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ জন হাত উঠাল। তখন খালেদ মোশাররফ বললেন, ঠিক আছে যারা হাত তুলেছ তারা এখানে বসো। বাকি যারা আছ, যার যার তাবুতে চলে যাও। আর আমাদের বললেন, সন্ধ্যার সময় তার তাবুতে গিয়ে দেখা করতে।

যথারীতি নামটাম টুকে রাখল, সন্ধ্যার সময় একে একে সবাই গেলাম তার তাবুতে। সেখানে তিনি খুব বেশি লম্বা চওড়া কোনো কথা বললেন না। তিনটা প্রশ্ন তিনি করলেন। আমাকে যেটা করেছে সেটা হলো- সাঁতার জানি কিনা, মৃগী রোগ আছে কিনা আর মোটা পাওয়ারের চশমা কার কার আছে।

এই তিনটা যার আছে তাদের ডিসকোয়ালিফাইড ঘোষণা করা হলো। যারা টিকল তাদের তিনটা গ্রুপে ভাগ করা হলো। কাকে কী টাস্ক দিয়েছে সেটা জানি না। আমাদের যেটা বলল, জুন মাসের ৭, ৮ ও ৯ তারিখে ঢাকায় পাকিস্তানের ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাংবাদিক এবং ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের টিম আসবে। তারা আসবে ঢাকা শহর দেখার জন্য। দেখানো হবে ঢাকাসহ সারাদেশে যুদ্ধের কোনো লেশমাত্র নাই। পুরা ঢাকা শহর শান্ত। এখানে কোনো ঝামেলা নাই- প্রমাণ করাই পাকিস্তানিদের লক্ষ্য। আর ২৫ মার্চ রাতের কথা তারা বলতে চায়, আওয়ামী লীগের কিছু লোক আগুন টাগুন লাগিয়ে চলে গেছে, কিন্তু ঢাকা শান্ত।

তখন ফাইভস্টার হোটেল একটাই- হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল। সেখানেই তারা থাকবে। আমাদের মিশন নিয়ে খালেদ মোশাররফ বললেন, তোমাদের কাজ হবে ঢাকা থেকে দূরে, রাতে নিরাপদ জায়গায় থেকে ডেমরা, কমলাপুর, শ্যামপুর, সদরঘাট এসব এলাকায় থেকে রাত ৮টার পরে প্রতিদিন ২টা ৪টা করে সবাই ফুটাবা। রাতে যদি ধুমধাম করে গ্রেনেড ফাটে তাহলে ইন্টারকন্টিনেন্টালে আওয়াজটা যাবে। তারা যেন কানে আওয়াজটা পায় যে, ঢাকা শহরে বোমাবাজি হচ্ছে। তারা যেন বোঝে, ঢাকা শহর শান্ত না। এটাই ছিল আমাদের কাজ। এর জন্য আমরা প্রত্যেকে পেলাম ছয়টা করে গ্রেনেড।

আমাদের মধ্যে একটা গ্রুপ গেল আজিজের (ঢাকা কলেজের সাবেক ভিপি) নেতৃত্বে, আরেকটা গ্রুপ আসলো- নামটা এই মুহূর্তে ভুলে গেলাম আর আমাদের গ্রুপ। আমাদের গ্রুপে আমরা ছিলাম ১৭ জন। আমাদের ব্রিফ দেয়া হলো, রাতে কে কোথায় থাকবা অন্যকে বলবা না। তা না হলে একজন ধরা পড়লে আরেকজনের কথা বলে দিতে পারে। কিন্তু সবার দেখা করার একটা নির্দিষ্ট জায়গা থাকবে। নিরাপদে থাকতে হবে যেন ধরা না পড়ো।

আমরা ৪ জুন রাতে আগড়তলা থেকে রওনা হয়ে ঢাকা চলে আসলাম। ভাবলাম ১৭ জন যদি একসঙ্গে আসি তাহলে ধরা পড়ার সম্ভাবনা থাকবে। তাই তিনটা গ্রুপে ভাগ হয়ে গেলাম। ঠিক করলাম, যে যেখানেই থাকুক পরের দিন ৫ জুন সকালে একটা জায়গায় দেখা হবে।

সে সময় স্টেডিয়ামের পূর্ব দিকে বড় একটা হোটেল ছিল- আল ইসলামিয়া হোটেল। কথা ছিল সকাল ১১টায় সবাই ওই হোটেলে একত্রিত হব। আমরা চারজন একসঙ্গে আসলাম, একসঙ্গে থাকব আলমের (হাবিবুল আলম, বীরপ্রতীক) বাসায়। আমি, আলম, জিয়া আর আনু এই চারজন দিলু রোডে আলমের বাসায় উঠলাম। ওর বাসায়ও কেউ জানে না, গ্রেনেডের একটা ছোট পোটলা লুকিয়ে শুয়ে আছি। পরে আল ইসলামিয়ায় গিয়ে দেখি ১৭ জনের মধ্যে ১১ জন এসেছে। বাকি ছয় জন অনুপস্থিত, হয়ত তারা ভয়ে আর আসলো না। আমরা ১১ জন বসে পরিকল্পনা করলাম কীভাবে অপারেশনটা করতে চাই।

সিদ্ধান্ত নিলাম, দিলুরোড তো হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালের কাছেই, তাই হেঁটে এসেও অপারেশনটা করতে পারি। আমরা দূরে যাব কেন! ঠিক করলাম, ইন্টারকন্টিনেন্টালের আশেপাশেই বোমা ফোটাব, সেখান থেকে ফাটালে আওয়াজটাও বেশি কানে যাবে। চারজনে আলমের বাসায় বসে এ চিন্তাই করলাম। এক পর্যায়ে আলম বলল, চল হোটেলটা একটু রেকি করে আসি, দেখে আসি কী অবস্থা।

তখন কিন্তু এত চেকপোস্ট ছিল না, ঢাকা কিন্তু একদম নরমাল। কারণ তখন তো সবাই ট্রেনিংয়ে ব্যস্ত, তখনও পুরোপুরি যুদ্ধ শুরু হয়নি। আর ২৫ মার্চের পরে পাকিস্তানিরাও ঢাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে। আমরা তো তখন ছাত্র মানুষ, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে যাওয়ার তো প্রশ্নই ওঠে না। ওখানে যে খাওয়া দাওয়া সে রকম খাওয়া দাওয়াও আমাদের নাই।

যাহোক আলম বললো, চল না যাই ভেতরে গিয়ে, দেখি না কী রকম কী। তারপর আমরা গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকলাম, দেখি সব বিদেশি আর আর্মির লোকজনে ভর্তি। ভেতরে ঢুকে তিনটা কোক আর স্যান্ডউইচের অর্ডার করে বসে দেখছি কী হচ্ছে। পরে রেকি শেষে চলে আসার সময় আলমকে বললাম, আসলামই যখন আমার মনে হয় এখানেই গ্রেনেড ফুটিয়ে দেই, যা হয় হোক।

কিন্তু তাহলে তো দিলু রোড থেকে এসে হেঁটে গ্রেনেড মেরে পালাতে পারব না, একটা গাড়ি জোগাড়ের কথা মাথায় আসলো। আলম ছাড়া আমরা কেউই তখন গাড়ি চালাতে পারি না। আলমের বাবার একটা গাড়ি ছিল হিলম্যান, সে ওটা মাঝে মধ্যে চালাত। কিন্তু পুরোন গাড়ি হওয়ায় এটার গতি তিরিশের বেশি ওঠে না। এটা দিয়েও অপারেশন করা যাবে না।

তখন চিন্তা করলাম, গাড়ি হাইজ্যাক করব। ৭ জুন প্রথম গেলাম হাইজ্যাক করতে, গুলশান এক নম্বরে। আমাদের চিন্তা ছিল কোনো বাঙালির গাড়ি ছিনতাই করব না, আবার গাড়িতে ছোট বাচ্চা থাকলেও করব না। কারণ গুলি চালাতে হতে পারে। শুধু সিঙ্গেল কোনো গাড়ি হলো আমরা ধরব, কিন্তু এ রকম গাড়ি আর পেলাম না। অপেক্ষা করতে করতে রাত ৮টা বেজে গেল। পরে আর ওই দিন কাজ হলো না। মনটন খারাপ করে চলে আসলাম।

চিন্তা করলাম, ভালো গাড়ি কার পাওয়া যায়, কারণ মরা গাড়ি নিয়ে তো ধাওয়া করা যাচ্ছে না। এমন সময়, আমাদের আরেক বন্ধু ভাষণ বলল, তার এক মামা নতুন টয়োটা গাড়ি কিনেছেন। তিনি আবার তখনকার পিটিভিতে চিফ ক্যামেরাম্যান ছিলেন, বাদল সাহেব।

ভাষণের মামা মানে আমাদেরও মামা। বাদল মামা ছিলেন স্বাধীনতাকামী ও বঙ্গবন্ধুর ভক্ত। ভাষণ বলল, তাকে বললে সে রাজি হতে পারে। আমরা বললাম, তাহলে যা। সে তখনই মোটরসাইকেল নিয়ে রওনা হলো। কিছুক্ষণ পরে দেখি বাদল মামাকে পেছনে বসিয়ে নিয়ে ফিরেছে। সবার সঙ্গে পরিচয় হলো। তিনি বললেন, কোনো চিন্তা করো না ভাগনে, আমি গাড়ি নিয়ে চলে আসব।

আমরা বললাম, মাগরিবের নামাজের পরে রাস্তা একটু ফাঁকা থাকে, ওই সময়েই আক্রমণ করব। তাহলে পালাতে সহজ হবে। ঠিক হলো বাদল মামা ৫টার সময় গাড়ি নিয়ে চলে আসবেন। তার গাড়ি দিয়েই গাড়ি হাইজ্যাক করব। পরের দিন ৭ জুন, মামা তার হলুদ টয়োটা নিয়ে হাজির। এ গাড়িতে বাদল মামা, আমি, আনু, জিয়া আর আলম চলে আসলাম গুলশান ১ নম্বর। ওই দিন আর বেশি কষ্ট করতে হয়নি, মানে আল্লার ইচ্ছা আর কি! নীল রংয়ের একটা গাড়ি ধাওয়া করে ধরে ফেললাম। ড্রাইভারকে বন্দি করে বাদল মামা বসল সেই গাড়ির ড্রাইভিং সিটে, আর বাদল মামার ড্রাইভারকে দিয়ে তার টয়োটা পাঠিয়ে দেয়া হলো।

তারপর সোজা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল। তখন মিন্টো রোডে বড় বড় অনেক গাছ ছিল। ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনেও অনেকগুলো মোটামোটা কড়ই গাছ ছিল। আমরা গাড়িটা এনে ঠিক রাস্তার পাশ দাঁড় করালাম। আমাদের গাড়িটাও থামল, আর বিদেশিদের সাড়া শহর দেখিয়ে পাক আর্মির দলটিও হোটেল পৌঁছাল। তখন হোটেলের এন্ট্রিটা ছিল রিভলভিং। তো সবাই তখন ভেতরে ঢোকার জন্য ভিড় করেছে। আমি আর আলম দুজন চারটা গ্রেনেড নিয়ে দুটা গাছের আড়ালে দাঁড়িয়ে সঠিক সময়ের অপেক্ষা করছি। এর মধ্যে দুজনে দুটা প্রথমে পিন খুলে ছুড়ে মারলাম। একটা গিয়ে একজনের পায়ে লেগে থেমে গেল, আর একটা সোজা চলে গেল ভেতরে। ২-৩ সেকেন্ডের মধ্যে আরো দুটা ছুড়ে মারলাম। যাওয়ার পর যখন ধোয়া উড়তে শুরু করল, আতঙ্কে সবাই একসঙ্গে ভেতরে যাওয়ার চেষ্টা চালাল। কিন্তু দরজা তো রিভলভিং, তাই কেউই আর যেতে পারছে না।

এর মধ্যেই আমরা লাফ দিয়ে গাড়িতে উঠে পড়লাম। টান দিয়ে গোলচক্করটা খালি পার হয়েছি আর সঙ্গে সঙ্গে পরপর চারটা বিস্ফোরণ। সবার ছোটাছুটি আর চিৎকার শুনতে পেলাম। আমরা একটানে মগবাজার, সেখানে মুসলিম লীগের একটা মিটিং হচ্ছিল, সেখানে আরও দুটা গ্রেনেড মারলাম। সেখান থেকে গেলাম দৈনিক বাংলা, ওটা তখন পাকিস্তানের পত্রিকা অফিস। ওটার ভেতর মারলাম আরো দুটা। এরপর গাড়িটা শান্তিনগরের ভেতরে ফেলে দিয়ে হেঁটে আলমের বাসায়।

আমরা হাতমুখ ধুয়ে চা খাচ্ছি, এমন সময় আলমের বাবা এসে বলে, এই আলম দেখ হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে নাকি বিচ্ছুরা, নাকি মুক্তিবাহিনী বোমা মেরেছে। বিবিসি, ভয়েস অফ আমেরিকা বলছে, ৩০-৩৫ জন সিরিয়াস ইনজিউরড আর ৮-৯ জন মারা গেছে। আমরাই যে এ ঘটনা করে আসছি, এটা তো আর উনি জানেন না। আমরা বললাম, চাচা তাই নাকি। তো উনি আমাদের সাবধানে চলাফেরা করতে বলে চলে গেলেন। এ ঘটনার পর পুরা ইন্টারকন্টিনেন্টাল ফাঁকা হয়ে যায়। ওই রাতেই সবাই যার যার দেশে চলে যায়। এটাই ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রথম হিট অ্যান্ড রান অপারেশন। পরে এ রকম আরো ৬০-৭০ টা অপারেশন আমরা করেছি।

আপনাদের এই যোদ্ধা দলটিকে ক্র্যাক প্লাটুন নামে ডাকা হয়। এই নামটা কে দিল?

এটার একটা সুন্দর ঘটনা আছে। এই অপারেশনের পরের দিন ৯ জুন বাকি যে গ্রেনেডগুলা ছিল সেগুলোও বিভিন্ন জায়গার মারলাম। তো, এটা যে এত বড় অপারেশন হয়ে গেছে তা তো আর আমরা তখন জানি না। সারা বিশ্ব যে স্তব্ধ হয়ে গেছে, সেটাও আমরা জানি না। সবাই খুঁজছে কারা করেছে, কারা করেছে। এটা জানার জন্য সবাই উদগ্রিব। আমরা তো আরামে ব্যাগ ট্যাগ নিয়ে আবার আগরতলা গিয়েছি। ক্যম্পে যে আমাদের নিয়ে এত কথাবার্তা হচ্ছে, এটা আমাদের মাথাতেই নাই।

আমাদের ট্রেনিং দিতেন সুবেদার ইদ্রিস। ক্যাম্পে ঢুকতেই তিনি দৌড়ে এলেন। জড়িয়ে ধরে বললেন, মায়া, আলম ব্রেভো ব্রেভো। তোমরা অসাধারণ একটা অপারেশন করেছ। পুরো ক্যাম্পেই তখন হইচই অবস্থা। নিয়ম হলো, গ্রেনেড ফোটালে এটার পিন জমা দিতে হবে। জমা দিতে গেছি, দেখি সবাই বসা। আমাদের নিয়েই চর্চা হচ্ছে যে, ঢাকার অপারেশনটা ২ নম্বর সেক্টরের মুখ উজ্জ্বল করেছে।

এর মধ্যেই আমি ঢুকলাম, খালেদ মোশাররফ দেখি আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। ক্যাপ্টেন হায়দারকে তিনি বলছেন- লুক হায়দার লুক, এদের আমরা বললাম, দূরে দূরে গ্রেনেড ফাটাতে। আর এরা ইন্টারকন্টিনেন্টালে ঢুকে ব্লাস্ট করে দিলো! হাউ ডেয়ার, দে আর অল ক্র্যাক। ক্র্যাক না হলে কি আর এ রকম করতে পারে!এই যে বলল ক্র্যাক, এটা পরে পুরা ক্যাম্পেই ছড়িয়ে গেল। আমার প্লাটুন নম্বর হলো ৩ নম্বর। তখন পুরা ৩ নম্বর প্লাটুনই হয়ে গেল ক্র্যাক প্লাটুন।

আপনাদের বড় আর কী অপারেশন ছিল?

এ রকম আরও অনেক অপারেশন আমরা করেছি। তবে প্রত্যেকটার লক্ষ্য ছিল আলাদা। এর মধ্যে এই ইন্টারকন্টিনেন্টালেই আমরা আরেকটা অপারেশন করেছি, এটা ছিল সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অপারেশন। প্রথম অপারেশনের পরে হোটেলের সামনের সব গাছ কেটে ফেলা হয়। সামনের পুরো অংশ জুড়ে হাজার ওয়াটের বাল্ব লাগানো হলো, রাতের সব সময় দিনের মতো আলো থাকত। তিনটা চেকপোস্ট পার হয়ে হোটেলে ঢুকতে হতো। সেখানে তখন থাকতেন সব বিদেশি, বিভিন্ন দূতাবাসের মানুষ, পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আসা জেনারেলেরা। আগস্ট মাসে এই হোটেল আমরা উড়িয়ে দিলাম। তখনই প্রথম টাইম পেন্সিল বোম্ব ব্যবহার করা হলো। এ অপারেশনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বাকের (শহীদ বাকের, বীর বিক্রম)। তখন তো অনেক নিরাপত্তার কড়াকড়ি। আমরা একটা ইনোসেন্ট ছেলে খুঁজছিলাম, যাকে দেখলে সন্দেহ করবে না। বাকেরের বয়স তখন ১৬ কি ১৭। গোঁফও ঠিক মতো ওঠেনি। সে-ই ব্রিফকেস ভর্তি বিস্ফোরক হোটেলের ভেতরে নিয়ে যায়।

অপারেশনের জন্য আমরা একটা ব্রিফকেসের ভেতরে প্রায় ৩০ পাউন্ড বিস্ফোরক ভরলাম। ভেতরে টাইম পেন্সিল ব্যবহার করা হলো। এটা রাখা হলো বাথরুমে তোয়ালা রাখার বাক্সে। যখন বিস্ফোরণ হলো ভেতরে যত মানুষ ছিল সবাই প্রচণ্ড শব্দে আহত হয়। অনেকের চোখ কান নষ্ট হয়ে যায়। সবচেয়ে বেশি হতাহত হয় এই অপারেশনে। ভেতরে যারা ছিল প্রত্যেকে এফেক্টেড হয়েছে। লিফট ছিড়েও অনেকে মারা যায়।

আপনার সহযোদ্ধাদের অনেকেই তো যুদ্ধে জীবন দিয়েছেন, বিশেষ কোনো ঘটনা কী মনে পড়ে?

আমাদের ক্র্যাক প্লাটুনের সবচেয়ে বড় সৌভাগ্যও বলব, দুর্ভাগ্যও বলব। বাংলাদেশে একক নামে পরিচিতি রয়েছে তিনটি বাহিনীর। এক টাঙাইলের কাদেরিয়া বাহিনী, দুই হেমায়েত বাহিনী আর তিন মায়া বাহিনী। এর ভেতরে সবচেয়ে বেশি খেতাব কিন্তু পেয়েছে আমার ক্র্যাক প্লাটুন। ১১ জনই হলো খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা, এর মধ্যে চার জন হলেন শহীদ। এ রকম নজির আর নেই।

আমাদের বন্ধু ছিল জুয়েল (শহীদ জুয়েল)। সে থাকত গোপীবাগ, আমরা একসঙ্গেই ক্রিকেট খেলতাম। জুয়েল খেলত ফার্স্ট ডিভিশন লীগ। আমরা অত ভালো খেলতাম না, এমনি খেলতাম আর কি। মারা যাওয়ার দুই দিন আগে জুয়েলের হাতে গুলি লাগল।

হয়েছে কী- আমদের তখন নিয়মিত ধলশ্বরী নদী পার হয়ে এপারে আসতে হয়। প্রায়ই একটা গ্রুপ, আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের নাম ভাঙিয়ে নদীতে ডাকাতি করে। এতে একদিকে যেমন আমাদের নাম খারাপ হচ্ছিল, আবার পাকিস্তানি সেনাদের টহল বেড়ে যাওয়ায় একটি অসুবিধাও হচ্ছিল। তখন আমরা চিন্তা করলাম, এ গ্রুপটাকে ধরা দরকার। তো জুয়েলসহ চারজনকে পাঠালাম যে, তোরা চারজন নদীতে রাতে টহল দিবি, দেখ ধরা পড়ে কিনা।

আনফরচুনেটলি ডাকাতগুলো এদের নৌকা দেখে এদের থামতে বলেছে। ডাকাতদের নৌকাটা যখন কাছাকাছি আসে জুয়েল গুলি চালায়। এতে ওদের দুজন মারা যায়। ডাকাতরাও কাউন্টার করে, এ সময় জুয়েলের দুই আঙুলে গুলি লাগে। পরে অবশ্য, এরা ব্রাশফায়ার করে ডাকাতদের নৌকা ডুবিয়ে দেয়। পরে হাত গামছা দিয়ে বেঁধে ঢাকায় আনা হয়। এ রোগী তো কোথাও নেয়া যাবে না। অনেক খোঁজ করে এক ডাক্তার পাওয়া গেল, ডাক্তার আলম। উনি এসে ফার্স্ট এইড দিলেন। কিন্তু পরামর্শ দিলেন জুয়েলকে আগরতলায় ফিল্ড হাসপাতালে পাঠাতে, না হলে হাত পঁচে যাবে। আমরাও লোকজন ঠিক করেছিলাম যে, জুয়েলকে পাঠিয়ে দেব।

আমরা তখন আমাদের অস্ত্র বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখতাম। এতে যখন যে এলাকায় অপারেশন হতো কাছাকাছি পজিশন থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করে নিতাম। কিছু অস্ত্র রাখা ছিল জুয়েলের বাসায়। আমাদের একটা কম্বাইন্ড অপারেশন ছিল। এটি করতে গিয়ে সব অস্ত্র একসঙ্গে জড়ো করছিলাম। তো, জুয়েলের বাসা গোপীবাগে গেলাম অস্ত্র আনতে। জুয়েলের মা বলল, ভাত খেয়ে যাও। ভাত খাচ্ছি, এখন মায়ের মন তো, কি মনে হয়েছে চাচী বলছেন, মায়া-আলম, শুনলাম জুয়েলের নাকি গুলি লেগেছে, ও কি মরে গেছে? আমরা বললাম, না চাচী, ছোট একটু লেগেছে, ও ভালো আছে, আমরা ওকে আগরতলা পাঠিয়ে দেব।

চাচি বলে, না তোরা আমার কাছে লুকোচ্ছিস, ও মনে হয় আর বেঁচে নাই। এই বলে তিনি কান্না শুরু করে বললেন, যুদ্ধে গেছে, মারা গেলে যেতে পারে, কিন্তু তোরা আমাকে মিথ্যা কেন বলছিস? মারা গেলে লাশটা অন্তত আমাকে একবার দেখতে দে। অনেক বুঝালাম, মায়ের মন আর বোঝে না। তখন আমি বললাম, কাল দুপুরে জুয়েল আপনার সঙ্গে দেখা করতে আসবে, আপনার সঙ্গে দেখা করে ও আগড়তলা যাবে।

জুয়েল ছিল আলমের বাসায়। আমরা ওখানে এসে ওকে বললাম, ও রাজিও হলো। পরে ওকে নিয়ে আলমের গাড়িতে আমিসহ রওনা হলাম। মগবাজারের মুখে এসে জুয়েল বলে আমি একটি পরে যাব। আজাদের (শহীদ আজাদ) বাসায় কাজী ভাই আছে, তার সঙ্গে আমার একটু কথা আছে। কাজী আমাকে মায়ের ওখানে নামিয়ে দেবে। পরে তোরা আগরতলা পাঠিয়ে দিস।

ও যদি সেদিন ওর মায়ের ওখানে যেত তাহলে আর ধরা পড়ত না। আমরা এত বুঝালাম, শুনলো না। পরে ওকে আজাদের বাসায় নামায় দিলাম। কাজী ভাই বললো, জুয়েলকে নামিয়ে দেবে। ওই রাতেই কিন্তু সবাই ধরা পড়ল। প্রথমে বদি, তারপর সবার অবস্থান পাকিস্তানি সেনারা জেনে ফেলে, আজাদের বাসাতেই কিন্তু আজাদ-জুয়েল একসঙ্গে ধরা পড়ে। সেই রাতেই আমাদের চার সহযোদ্ধা শহীদ হলো। আলতাফ (সুরকার আলতাফ মাহমুদ) ভাই ধরা পড়ল, ওনার বাসায় আমাদের অস্ত্র ছিল। আর রুমী (শহীদ রুমী) ধরা পড়ল তার মার বাসা থেকে। রুমীর বাসাতেও একই অবস্থা। আমি আর আলম ওকে নামিয়ে দিতে গেলাম, তো বলল- না আমি আজ থাকি সকালে যাব।

আপনারা তো একটা লক্ষ্য সামনে রেখে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। সেই লক্ষ্য কতটা বাস্তবায়িত হয়েছে?

যে উদ্দেশ্য নিয়ে আমরা যুদ্ধ করেছি সেটা শতভাগ সফল হতো যদি বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড না হতো। এ চক্রান্ত স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়েও ছিল, ১৫ আগস্টও হয়েছে, ২১ আগস্টও হয়েছে, এখনো চলমান। তখনও মৌলবাদ ছিল, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ছিল, তারা কিন্তু এখনও বিরাজমান। এদের প্রতিহত করেই কিন্তু এগিয়ে যেতে হবে। একাত্তরের সংগ্রাম কিন্তু এদের বিরুদ্ধেই হয়েছে। এখনো কিন্তু তাদের প্রেতাত্মারা জীবিত। এদের যতদিন পর্যন্ত পুরো দাফন না দেয়া যাবে ততদিন আমাদের এ সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার লড়াই চলবে। যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি।

আরও পড়ুন:
চাঁদপুরে স্বাধীনতার পতাকা ওড়ে ৮ ডিসেম্বর
ক্যাপ্টেন আকরামের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শোক
লোহাগড়া মুক্তির স্বাদ পায় ৮ ডিসেম্বর
যে বাড়ি ছিল প্রতিরোধ যুদ্ধের আঁতুড়ঘর
বীর উত্তম ক্যাপ্টেন আকরাম আহমেদের মৃত্যু

মন্তব্য

আরও পড়ুন

জাতীয়
How many more days of rain will be the window weather office

বৃষ্টি আরও কত দিন থাকবে জানাল আবহাওয়া অফিস

বৃষ্টি আরও কত দিন থাকবে জানাল আবহাওয়া অফিস

মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় রয়েছে। বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাবে ঢাকাসহ সারাদেশে ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে। এই বৃষ্টি আরও এক সপ্তাহ থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা বলেন, মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকার কারণে সারা দেশে বৃষ্টি হচ্ছে। এই বৃষ্টি আগামী ১৯ তারিখ পর্যন্ত চলতে থাকতে পারে। এরপর আবহাওয়া স্বাভাবিক হতে থাকবে। তিনি আরও বলেন, এই সময়ে বৃষ্টিপাত কোথাও কমবে আবার বাড়তে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে সরে গিয়ে বর্তমানে তেলেঙ্গা ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ রাজস্থান, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারী অবস্থায় রয়েছে।

আজ রোববার সকাল ৯টায় আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।

সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ সময় রাজধানী ঢাকায় বাতাস দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।

আজ রোববার সন্ধ্যা ৬ টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৯০ শতাংশ। আজ ঢাকায় সূর্যাস্ত হবে সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিটে। আগামীকাল ঢাকায় সূর্যোদয় হবে ভোর ৫টা ৪৫ মিনিটে।

ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কবার্তায় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সক্রিয় দক্ষিণ বা পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে আজ রোববার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।

অতি ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধ্বসের সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সাথে ভারী বর্ষণজনিত কারণে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর কোথাও কোথাও অস্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা তৈরি হতে পারে।

সাধারণত ২৪ ঘণ্টায় ২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি ধরনের ভারি, ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে ভারি এবং ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি রেকর্ড হলে তাকে বলা হয়ে থাকে অতি ভারি বৃষ্টিপাত।

আজ রোববার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল পাবনার ইশ্বরদীতে; ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল সিলেটে; ২৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময়ে চট্টগ্রামে দেশের সর্বোচ্চ ১২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এছাড়া রাঙামাটিতে ৮৭, সন্দ্বীপে ৮০ এবং তেঁতুলিয়ায় ৬৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

মন্তব্য

জাতীয়
Shardi Durga Puja will be celebrated seamlessly Home Advisor

শারদীয় দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নেই উদযাপিত হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

শারদীয় দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নেই উদযাপিত হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, এ বছরও শারদীয় দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নেই উদযাপিত হবে।

তিনি আজ রোববার দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে এ কথা বলেন।

দুর্গাপূজা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এবারও ভালোভাবে ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে। সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। সবার সহযোগিতায় উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা উদযাপিত হবে।

তিনি আরও বলেন, ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো ছিলো। এটা নিয়ে কারো কোনো প্রশ্ন ছিলো না। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আমাদের প্রস্তুতি চলছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, কোর কমিটির সভায় দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দু-একটি নির্বাচন হয়ে গেল, এসব বিষয়েও একটু আলোচনা হয়েছে। পুলিশের প্রশিক্ষণ এবং আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে আমাদের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ছিনতাই, চুরি-ডাকাতিরোধসহ সীমান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে পূজা এবং ফরিদপুরের দুটি ইউনিয়ন নিয়ে যে সমস্যা, সে বিষয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে।

উপদেষ্টা আরও বলেন,সীমানা নির্ধারণ নিয়ে ফরিদপুরের দুই ইউনিয়নের কারণে বিভিন্ন জেলার মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। ফরিদপুরে দুটি ইউনিয়ন আগে যে সংসদীয় আসনে ছিল, সেখান থেকে অন্য আসনে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে আমাদের কোনো সিদ্ধান্ত নেই। এটা নির্বাচন কমিশনের বিষয়। এটা নির্বাচন কমিশন করেছে। যুক্তি-তর্কের সবকিছু শোনার পর তারা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা নিয়েই এলাকার লোকজনের মধ্যে একটা ক্ষোভ চলছে।

তিনি বলেন, এটা নিয়ে আসলেই যদি তাদের ক্ষোভ থাকে, তাহলে সেটা যথাযথ চ্যানেলে জানানো প্রয়োজন ছিল। কিন্তু এটাকে কেন্দ্র করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এই দুটি ইউনিয়নে কতজন লোক আর কতজন ভোটার? অথচ তারা লাখ লাখ লোককে জিম্মি করে রেখেছে। এটা কোনো অবস্থায় বরদাশত করা হবে না। তারা যদি আজকের মধ্যে এটা সমাধান না করে, তাহলে আমরা আইন প্রয়োগ করে সড়ক ক্লিয়ার করবো।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, কারাগারে কিছু সমস্যা আছে, এখানেও সংস্কার দরকার। বন্দিদের মধ্যে যাদের অনেক বয়স হয়ে গেছে, বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত, আমরা চাচ্ছিলাম লাইফটাইম সাজা তো ৩০ বছর, সেটা কমিয়ে কত করা যায়, যুক্তিযুক্ত একটা করে, যারা বয়স্ক হয়ে গেছে তাদের যাতে ছাড়ার ব্যবস্থা করা যায়।

বয়সটা কত নির্ধারণ করা হবে, এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত নির্ধারণ করিনি। আলোচনার ভিত্তিতে মেয়েদের ক্ষেত্রে হয়তো ২০ বছর করে দিতে চাচ্ছি। ছেলেদের ক্ষেত্রে হয়তো আরও একটু বেশি হতে পারে।

তিনি বলেন, আবার কতগুলো স্পেসিফিক আছে, তার বয়সটা কত। যে ১৮ বছরে অপকর্ম করেছে, ২০ বছর পর তাকে ছেড়ে দিলে তখন তো তার বয়স ৩৮ বছর হয়। সে হয়তো এসে আবার অপকর্ম করতে পারে। এ বিষয়গুলো দেখা হবে, তবে মেয়েদের ক্ষেত্রে আমরা একটু বেশি লিবারেল।

মন্তব্য

জাতীয়
The chief adviser is present at the meeting of the National consensus commission

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভায় উপস্থিত থাকছেন প্রধান উপদেষ্টা

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভায় উপস্থিত থাকছেন প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ কমিশনের সভায় উপস্থিত থাকবেন।

দুপুর তিনটায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে 'জুলাই জাতীয় সনদ, ২০২৫' বাস্তবায়নের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হবে।

কমিশনের পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আজ একথা জানানো হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা দুপুর ৩টায় রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে উপস্থিত হবেন।

সেখানে তাঁর বিকাল ৪টা পর্যন্ত অবস্থান করার কথা রয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা সভাকক্ষ ত্যাগ করার পর কমিশনের সাথে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।

আলোচনা শেষে কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ সাংবাদিকদের ব্রিফ করবেন। রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধি পরে ব্রিফ করবেন।

মন্তব্য

জাতীয়
Seminar of Bangladesh Press Council to prevent unprofessionalism in Srimangal

শ্রীমঙ্গলে অপসাংবাদিকতা প্রতিরোধে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সেমিনার

শ্রীমঙ্গলে অপসাংবাদিকতা প্রতিরোধে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সেমিনার

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল আয়োজিত “অপসাংবাদিকতা প্রতিরোধ, সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতা, আচরণবিধি প্রতিপালন ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন” শীর্ষক সেমিনার ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার সকালে শ্রীমঙ্গল পৌরসভা সভাকক্ষে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসলাম উদ্দিন। সেমিনারে প্রধান অতিথি ও মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যানও বিচারপতি এ কে এম আব্দুল হাকিম।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সাংবাদিকতার নীতি ও নৈতিকতা বিষয়ে আলোচনা করেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সচিব মো. আব্দুস সবুর।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রেস কাউন্সিলের সুপারিনটেনডেন্ট মো. সাখাওয়াত হোসেন।

সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, দৈনিক যুগান্তরের শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি সৈয়দ আবু জাফর সালাউদ্দিন, দৈনিক ইত্তেফাকের শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি সৈয়দ সাহেদ আহমেদ এবং দৈনিক খোলা কাগজের জেলা প্রতিনিধি এহসানুল হক।

সেমিনারে শ্রীমঙ্গলে কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার অর্ধশতাধিক সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন।

মন্তব্য

জাতীয়
The strike block is on the verge of demanding reinstatement of the Pabna 1 constituency

পাবনা-১ আসনের সীমানা পুনর্বহালের দাবিতে বেড়ায় হরতাল-অবরোধ চলছে

পাবনা-১ আসনের সীমানা পুনর্বহালের দাবিতে বেড়ায় হরতাল-অবরোধ চলছে

পাবনা-১ (বেড়া আংশিক-সাঁথিয়া) সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বহালের দাবিতে বেড়ায় হরতাল-অবরোধ চলছে। রোববার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই হরতাল চলবে বলে জানা গেছে। এর পাশাপাশি সড়ক ও নৌপথে অবরোধ চলছে।

হরতাল সমর্থনকারীরা পাবনা-ঢাকা মহাসড়কের বেড়া সিএন্ডবি মোড়ে রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে ও ট্টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেছেন। এদিকে রাস্তার বিভিন্ন মোড়ে হরতালের সমর্থনে মিছিল বের করা হয়।

রোববার সকাল থেকে কোনো বাস বা অন্য কোনো যান চলছে না সড়কে। বেড়া নগরবাড়ি ও কাজিরহাট নদী বন্দর বন্ধ করে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। এতে ভোগান্তিতে পড়ার কথা জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ।

এর আগে শনিবার এক সভায় এই ঘোষণা দেয় সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটি।। শনিবার সকালে বেড়া উপজেলা সদরের সান্যালপাড়া সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটির অস্থায়ী কার্যালয়ে আলহাজ ফজলুর রহমান ফকিরের সভাপতিত্বে পাবনা-১ নির্বাচনী এলাকা পুনর্বহালের দাবিতে সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় উপস্থিত ছিলেন, বেড়া পৌর বিএনপির সাধারন সম্পাদক সালাউদ্দিন ইকবাল, সাংগঠনিক সম্পাদক আকছেদ আলী, পৌর বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি সাজেদুল ইসলাম দিপু, বণিক সমিতির প্রতিনিধি নজরুল ইসলাম, রিকশা ভ্যান সমিতির সধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন খাজা, চতুহাট বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহীন মোল্লাসহ বিভিন্ন সংগঠণের প্রতিনিধি।

সভায় রোববার বেড়া উপজেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল, সড়ক ও নৌপথ অবরোধের ঘোষণা দেওয়া হয়।

গত ৪ আগস্ট ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য ৩০০ আসনে চূড়ান্ত সীমানার প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এতে সাঁথিয়া ও বেড়া উপজেলার একাংশ নিয়ে গঠিত পাবনা-১ আসন সংশোধন করে শুধু সাঁথিয়া উপজেলাকে নিয়ে পাবনা-১ আসন করা হয়েছে এবং পাবনা-২ আসনের (সুজানগর ও বেড়া উপজেলার একাংশ) সঙ্গে বেড়া উপজেলাকে পুরোপুরি সংযুক্ত করা হয়েছে।

এরপর থেকে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বেড়া উপজেলাবাসী। এর আগে একই দাবিতে গত ৭ সেপ্টেম্বর সকালে ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক দুই ঘণ্টা অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা।

আন্দোলনকারীরা বলছেন, সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে শুধু সাঁথিয়া উপজেলাকে নিয়ে পাবনা-১ আসন আলাদা করা হয়েছে। আর বেড়া উপজেলাকে পৃথক করে পাবনা-২ আসনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু বেড়া উপজেলার জনগণের ব্যবসা-বাণিজ্য সবকিছু সাঁথিয়া উপজেলার সঙ্গে যুক্ত।

মন্তব্য

জাতীয়
No one has the right to block the road Home Advisor

রাস্তা অবরোধ করার অধিকার কারো নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

রাস্তা অবরোধ করার অধিকার কারো নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ফরিদপুরের সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ ইস্যুকে কেন্দ্র করে রাস্তা অবরোধের ঘটনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, রাস্তা অবরোধ করার অধিকার কারো নেই। তারা লাখ লাখ মানুষকে জিম্মি করে রাখছে। এটা কোনো অবস্থায় বরদাশত করা হবে না। তারা যদি আজকের মধ্যে এটা সমাধান না করে, তাহলে আইন প্রয়োগ করতে বাধ্য হব।

রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ফরিদপুরের এই দুই ইউনিয়নের কারণে বিভিন্ন জেলার মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। ফরিদপুরে দুটি ইউনিয়ন আগে যে সংসদীয় আসনে ছিল, সেখান থেকে অন্য আসনে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে আমাদের কোনো সিদ্ধান্ত নেই।

এটা নির্বাচন কমিশনের বিষয়। এটা নির্বাচন কমিশন করেছে। যুক্তি-তর্কে সবকিছু শোনার পর তারা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা নিয়েই এলাকার লোকজনের মধ্যে একটা ক্ষোভ।

তিনি বলেন, এটা নিয়ে আসলেই যদি তাদের ক্ষোভ থাকে, তাহলে সেটা যথাযথ চ্যানেলে জানানো প্রয়োজন ছিল। কিন্তু এটাকে কেন্দ্র করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এই দুটি ইউনিয়নে কতজন লোক, আর কতজন ভোটার? অথচ তারা লাখ লাখ লোককে জিম্মি করে রাখছে। এটা কোনো অবস্থায় বরদাশত করা হবে না।

তিনি আরো বলেন, কোর কমিটির সভায় দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

দু-একটি নির্বাচন হয়ে গেল, এসব বিষয়েও একটু আলোচনা হয়েছে। পুলিশের প্রশিক্ষণ এবং আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে আমাদের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ছিনতাই, চুরি-ডাকাতিসহ সীমান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

মন্তব্য

জাতীয়
Half a million fines to remove sand illegally in Kulaura

কুলাউড়ায় অবৈধভাবে বালু অপসারণে অর্ধলক্ষ টাকা জরিমানা

কুলাউড়ায় অবৈধভাবে বালু অপসারণে অর্ধলক্ষ টাকা জরিমানা

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় অবৈধভাবে বালু অপসারণের অভিযোগে সজল পাল নামে এক ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার টিলাগাঁও ইউনিয়নের সালন এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আনিসুল ইসলাম।

তিনি জানান, সজল পাল সরকারি বালু অবৈধভাবে অপসারণ করেছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে বালুগুলো জব্দ করে পুনরায় পূর্বের স্থানে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এ সময় বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০-এর আওতায় তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে আদায় করা হয়।

মন্তব্য

p
উপরে