× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

জাতীয়
ক্র্যাক থেকে ঢাকা কাঁপানো সেই দুর্ধর্ষ ক্র্যাক প্লাটুন
google_news print-icon

‘ক্র্যাক’ থেকে ঢাকা কাঁপানো সেই দুর্ধর্ষ ক্র্যাক প্লাটুন

ক্র্যাক-থেকে-ঢাকা-কাঁপানো-সেই-দুর্ধর্ষ-ক্র্যাক-প্লাটুন
“খালেদ মোশাররফ দেখি আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। ক্যাপ্টেন হায়দারকে তিনি বলছেন, ‘লুক হায়দার লুক।’ এদের আমরা বললাম, দূরে দূরে গ্রেনেড ফাটাতে। আর এরা ইন্টারকন্টিনেন্টালে ঢুকে ব্লাস্ট করে দিল। হাউ ডেয়ার! দে আর অল ক্র্যাক। ক্র্যাক না হলে কী আর এ রকম করতে পারে? এই যে বলল ক্র্যাক, এটা পরে পুরা ক্যাম্পেই ছড়িয়ে গেল।”

পাকিস্তান শাসনামলে পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী ঢাকার বুকে অভিজাত্যের প্রতীক ছিল হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল। একাত্তরে বাঙালির মুক্তিযুদ্ধকে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন হিসেবে বিশ্বের কাছে প্রচার করতে এই হোটেলকেই ব্যবহার করতে চেয়েছিল পাকিস্তানের জান্তা সরকার। বিভিন্ন দেশের একঝাঁক সাংবাদিককে ঢাকায় আমন্ত্রণ জানিয়ে রাখা হয়েছিল হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে।

এমনই অবস্থায় ঢাকার বুকে মুক্তিযোদ্ধাদের অস্তিত্ব জানান দিতে এই হোটেলে গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনা করেন অকুতোভয় একদল তরুণ যোদ্ধা। পরপর চারটি গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বিশ্বকে তারা বার্তা দিলেন বাঙালির মুক্তির সংগ্রামের। ক্র্যাক প্লাটুনের সদস্য হিসেবে তাদের চিনল সারা দেশ।

পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে কাঁপিয়ে দেয়া সেই ক্র্যাক প্লাটুনের অন্যতম সদস্য ছিলেন মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া (বীর বিক্রম)।

বিজয়ের ৪৯তম বার্ষিকীর প্রাক্কালে একাত্তরের স্মৃতিচারণ করেছেন মায়া। উঠে এসেছে জীবন বাজি রাখা গেরিলা যুদ্ধের নানান দিক। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন নিউজবাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক আশিক হোসেন।

শুরুতেই জানতে চাই, মুক্তিযুদ্ধে কেন জড়ালেন?

মুক্তিযুদ্ধে জড়ানোর কারণটি হলো দেশপ্রেম। আগে থেকেই অবশ্য পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্যাতন, অত্যাচার, নিপীড়নের প্রতিবাদে ছাত্র সমাজ, এ দেশের সাধারণ মানুষ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। সে আলোকেই আমরা অপেক্ষা করছিলাম, বঙ্গবন্ধুর শেষ নির্দেশনাটা কী আসে। সে দিনটি এলো ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ। ওইদিন রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু তার ঐতিহাসিক ভাষণে পরিষ্কার বললেন, এখন আর ঘরে বসে থাকার সময় নেই, আমাদের সংগ্রাম ও যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। এর মধ্যে দিয়েই আমরা বার্তা পেয়ে গেলাম, আমাদের আর বসে থাকার সময় নেই। যার যা কিছু আছে তাই নিয়েই যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।

আপনাদের যুদ্ধযাত্রা শুরু হলো কীভাবে? প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

আমরা কয়েকজন বন্ধু একত্রিত হয়ে মনোস্থির করলাম, আমরা ভারতে গিয়ে ট্রেনিং নিয়ে যুদ্ধে অংশ নেব। ট্রেনিং ছাড়া তো যুদ্ধ হয় না, এজন্য আমরা প্রথমে আগরতলায় গেলাম। আমাদের প্রথম যে ক্যাম্পটা হয়, সেটা ছিল সোনামুড়ায়। তো সোনামুড়ায় আমরা গিয়ে পৌঁছালাম। সেখান থেকেই আমাদের ট্রেনিং শুরু হয়। প্রথম ধাপে ছোট খাটো হাতিয়ার যেমন গ্রেনেড, থ্রি নট থ্রি রাইফেল, এসএলআর এসব চালানোর ট্রেনিং আমরা নিচ্ছিলাম। কীভাবে অস্ত্র খোলা যায়, জোড়া যায়। তারপর, গ্রেনেড কীভাবে থ্রো করা যায়, পিন কীভাবে খুলতে হবে, কতদূর পর্যন্ত এটার ডিসট্যান্স, কতদূর পর্যন্ত আঘাত করতে পারে এগুলো- এসব শিখছিলাম।

ঠিক সে মুহূর্তে একদিন রাতে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট থেকে আমাদের সোনামুড়ার ক্যাম্প লক্ষ্য করে পাকিস্তানিরা আর্টিলারি সেল নিক্ষেপ করে। তবে গোলাগুলো লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। আমাদের ক্যাম্প থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার, সোয়া কিলোমিটার দূরে এসে পড়তে থাকে, রেঞ্জে আসেনি। তারপর, ক্যাপ্টেন হায়দার, মেজর খালেদ মোশাররফ তারা পরিকল্পনা করলেন- এই জায়গাটায় ক্যাম্প আমাদের জন্য সুরক্ষিত না। পরের রাতেই আমাদের মেলাগড়ে সরিয়ে নেয়া হলো, এটাই ছিল আমাদের সবশেষ ক্যাম্প। এটা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট থেকে প্রায় ২৮ থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে হবে, পাকিস্তানিদের রেঞ্জের বাইরে। পরে শেষ পর্যন্ত এখানেই ক্যাম্পটা ছিল। সেখানে গিয়ে আমরা আবার ট্রেনিংয়ে যুক্ত হই।

এই ক্যাম্পে শুরু হলো এক্সপ্লোসিভ তৈরি, বিস্ফোরণ ঘটানোর প্রশিক্ষণ। এছাড়া ফিউজ কীভাবে লাগাতে হবে, ডেটোনেটর কীভাবে লাগাতে হবে, টাইম পেন্সিল কীভাবে ফিট করতে হবে, এ সব প্রশিক্ষণ শুরু হলো।

আপনাদের প্রথম অপারেশনটা তো ছিল হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে। সেই অপারেশনটা কীভাবে করলেন?

মেলাগড়ে ট্রেনিং চলার সময়ে একদিন ক্যাপ্টেন হায়দার সাহেব ম্যাসেজ দিয়ে বললেন, খালেদ মোশাররফ সাহেব আপনাদের সঙ্গে একটু কথা বলবেন, উনি আসছেন আপনারা একটু বসেন।

আমরা গাছতলায় সবাই বসে আছি, ট্রেনিং চলছে। উনি আসলেন। এসেই একটা বক্তব্য দিয়ে বললেন, শক্ত একটা অপারেশনে যেতে হবে, যেটাতে গেলে নির্ঘাত মৃত্যু ভেবেই যেতে হবে। যে যাবে হয়ত আর ফিরে আসবে না, এটা ভেবেই যেতে হবে। এখানে ঢাকার যারা তোমাদের মধ্যে থেকেই যেতে হবে, তোমরা যারা যেতে চাও হাত তোলো।

প্রথমে আমিসহ ৩ নম্বর প্লাটুনের ১৩ জন একসঙ্গে হাত তুললাম। এভাবে ওইখানে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ জন হাত উঠাল। তখন খালেদ মোশাররফ বললেন, ঠিক আছে যারা হাত তুলেছ তারা এখানে বসো। বাকি যারা আছ, যার যার তাবুতে চলে যাও। আর আমাদের বললেন, সন্ধ্যার সময় তার তাবুতে গিয়ে দেখা করতে।

যথারীতি নামটাম টুকে রাখল, সন্ধ্যার সময় একে একে সবাই গেলাম তার তাবুতে। সেখানে তিনি খুব বেশি লম্বা চওড়া কোনো কথা বললেন না। তিনটা প্রশ্ন তিনি করলেন। আমাকে যেটা করেছে সেটা হলো- সাঁতার জানি কিনা, মৃগী রোগ আছে কিনা আর মোটা পাওয়ারের চশমা কার কার আছে।

এই তিনটা যার আছে তাদের ডিসকোয়ালিফাইড ঘোষণা করা হলো। যারা টিকল তাদের তিনটা গ্রুপে ভাগ করা হলো। কাকে কী টাস্ক দিয়েছে সেটা জানি না। আমাদের যেটা বলল, জুন মাসের ৭, ৮ ও ৯ তারিখে ঢাকায় পাকিস্তানের ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাংবাদিক এবং ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের টিম আসবে। তারা আসবে ঢাকা শহর দেখার জন্য। দেখানো হবে ঢাকাসহ সারাদেশে যুদ্ধের কোনো লেশমাত্র নাই। পুরা ঢাকা শহর শান্ত। এখানে কোনো ঝামেলা নাই- প্রমাণ করাই পাকিস্তানিদের লক্ষ্য। আর ২৫ মার্চ রাতের কথা তারা বলতে চায়, আওয়ামী লীগের কিছু লোক আগুন টাগুন লাগিয়ে চলে গেছে, কিন্তু ঢাকা শান্ত।

তখন ফাইভস্টার হোটেল একটাই- হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল। সেখানেই তারা থাকবে। আমাদের মিশন নিয়ে খালেদ মোশাররফ বললেন, তোমাদের কাজ হবে ঢাকা থেকে দূরে, রাতে নিরাপদ জায়গায় থেকে ডেমরা, কমলাপুর, শ্যামপুর, সদরঘাট এসব এলাকায় থেকে রাত ৮টার পরে প্রতিদিন ২টা ৪টা করে সবাই ফুটাবা। রাতে যদি ধুমধাম করে গ্রেনেড ফাটে তাহলে ইন্টারকন্টিনেন্টালে আওয়াজটা যাবে। তারা যেন কানে আওয়াজটা পায় যে, ঢাকা শহরে বোমাবাজি হচ্ছে। তারা যেন বোঝে, ঢাকা শহর শান্ত না। এটাই ছিল আমাদের কাজ। এর জন্য আমরা প্রত্যেকে পেলাম ছয়টা করে গ্রেনেড।

আমাদের মধ্যে একটা গ্রুপ গেল আজিজের (ঢাকা কলেজের সাবেক ভিপি) নেতৃত্বে, আরেকটা গ্রুপ আসলো- নামটা এই মুহূর্তে ভুলে গেলাম আর আমাদের গ্রুপ। আমাদের গ্রুপে আমরা ছিলাম ১৭ জন। আমাদের ব্রিফ দেয়া হলো, রাতে কে কোথায় থাকবা অন্যকে বলবা না। তা না হলে একজন ধরা পড়লে আরেকজনের কথা বলে দিতে পারে। কিন্তু সবার দেখা করার একটা নির্দিষ্ট জায়গা থাকবে। নিরাপদে থাকতে হবে যেন ধরা না পড়ো।

আমরা ৪ জুন রাতে আগড়তলা থেকে রওনা হয়ে ঢাকা চলে আসলাম। ভাবলাম ১৭ জন যদি একসঙ্গে আসি তাহলে ধরা পড়ার সম্ভাবনা থাকবে। তাই তিনটা গ্রুপে ভাগ হয়ে গেলাম। ঠিক করলাম, যে যেখানেই থাকুক পরের দিন ৫ জুন সকালে একটা জায়গায় দেখা হবে।

সে সময় স্টেডিয়ামের পূর্ব দিকে বড় একটা হোটেল ছিল- আল ইসলামিয়া হোটেল। কথা ছিল সকাল ১১টায় সবাই ওই হোটেলে একত্রিত হব। আমরা চারজন একসঙ্গে আসলাম, একসঙ্গে থাকব আলমের (হাবিবুল আলম, বীরপ্রতীক) বাসায়। আমি, আলম, জিয়া আর আনু এই চারজন দিলু রোডে আলমের বাসায় উঠলাম। ওর বাসায়ও কেউ জানে না, গ্রেনেডের একটা ছোট পোটলা লুকিয়ে শুয়ে আছি। পরে আল ইসলামিয়ায় গিয়ে দেখি ১৭ জনের মধ্যে ১১ জন এসেছে। বাকি ছয় জন অনুপস্থিত, হয়ত তারা ভয়ে আর আসলো না। আমরা ১১ জন বসে পরিকল্পনা করলাম কীভাবে অপারেশনটা করতে চাই।

সিদ্ধান্ত নিলাম, দিলুরোড তো হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালের কাছেই, তাই হেঁটে এসেও অপারেশনটা করতে পারি। আমরা দূরে যাব কেন! ঠিক করলাম, ইন্টারকন্টিনেন্টালের আশেপাশেই বোমা ফোটাব, সেখান থেকে ফাটালে আওয়াজটাও বেশি কানে যাবে। চারজনে আলমের বাসায় বসে এ চিন্তাই করলাম। এক পর্যায়ে আলম বলল, চল হোটেলটা একটু রেকি করে আসি, দেখে আসি কী অবস্থা।

তখন কিন্তু এত চেকপোস্ট ছিল না, ঢাকা কিন্তু একদম নরমাল। কারণ তখন তো সবাই ট্রেনিংয়ে ব্যস্ত, তখনও পুরোপুরি যুদ্ধ শুরু হয়নি। আর ২৫ মার্চের পরে পাকিস্তানিরাও ঢাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে। আমরা তো তখন ছাত্র মানুষ, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে যাওয়ার তো প্রশ্নই ওঠে না। ওখানে যে খাওয়া দাওয়া সে রকম খাওয়া দাওয়াও আমাদের নাই।

যাহোক আলম বললো, চল না যাই ভেতরে গিয়ে, দেখি না কী রকম কী। তারপর আমরা গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকলাম, দেখি সব বিদেশি আর আর্মির লোকজনে ভর্তি। ভেতরে ঢুকে তিনটা কোক আর স্যান্ডউইচের অর্ডার করে বসে দেখছি কী হচ্ছে। পরে রেকি শেষে চলে আসার সময় আলমকে বললাম, আসলামই যখন আমার মনে হয় এখানেই গ্রেনেড ফুটিয়ে দেই, যা হয় হোক।

কিন্তু তাহলে তো দিলু রোড থেকে এসে হেঁটে গ্রেনেড মেরে পালাতে পারব না, একটা গাড়ি জোগাড়ের কথা মাথায় আসলো। আলম ছাড়া আমরা কেউই তখন গাড়ি চালাতে পারি না। আলমের বাবার একটা গাড়ি ছিল হিলম্যান, সে ওটা মাঝে মধ্যে চালাত। কিন্তু পুরোন গাড়ি হওয়ায় এটার গতি তিরিশের বেশি ওঠে না। এটা দিয়েও অপারেশন করা যাবে না।

তখন চিন্তা করলাম, গাড়ি হাইজ্যাক করব। ৭ জুন প্রথম গেলাম হাইজ্যাক করতে, গুলশান এক নম্বরে। আমাদের চিন্তা ছিল কোনো বাঙালির গাড়ি ছিনতাই করব না, আবার গাড়িতে ছোট বাচ্চা থাকলেও করব না। কারণ গুলি চালাতে হতে পারে। শুধু সিঙ্গেল কোনো গাড়ি হলো আমরা ধরব, কিন্তু এ রকম গাড়ি আর পেলাম না। অপেক্ষা করতে করতে রাত ৮টা বেজে গেল। পরে আর ওই দিন কাজ হলো না। মনটন খারাপ করে চলে আসলাম।

চিন্তা করলাম, ভালো গাড়ি কার পাওয়া যায়, কারণ মরা গাড়ি নিয়ে তো ধাওয়া করা যাচ্ছে না। এমন সময়, আমাদের আরেক বন্ধু ভাষণ বলল, তার এক মামা নতুন টয়োটা গাড়ি কিনেছেন। তিনি আবার তখনকার পিটিভিতে চিফ ক্যামেরাম্যান ছিলেন, বাদল সাহেব।

ভাষণের মামা মানে আমাদেরও মামা। বাদল মামা ছিলেন স্বাধীনতাকামী ও বঙ্গবন্ধুর ভক্ত। ভাষণ বলল, তাকে বললে সে রাজি হতে পারে। আমরা বললাম, তাহলে যা। সে তখনই মোটরসাইকেল নিয়ে রওনা হলো। কিছুক্ষণ পরে দেখি বাদল মামাকে পেছনে বসিয়ে নিয়ে ফিরেছে। সবার সঙ্গে পরিচয় হলো। তিনি বললেন, কোনো চিন্তা করো না ভাগনে, আমি গাড়ি নিয়ে চলে আসব।

আমরা বললাম, মাগরিবের নামাজের পরে রাস্তা একটু ফাঁকা থাকে, ওই সময়েই আক্রমণ করব। তাহলে পালাতে সহজ হবে। ঠিক হলো বাদল মামা ৫টার সময় গাড়ি নিয়ে চলে আসবেন। তার গাড়ি দিয়েই গাড়ি হাইজ্যাক করব। পরের দিন ৭ জুন, মামা তার হলুদ টয়োটা নিয়ে হাজির। এ গাড়িতে বাদল মামা, আমি, আনু, জিয়া আর আলম চলে আসলাম গুলশান ১ নম্বর। ওই দিন আর বেশি কষ্ট করতে হয়নি, মানে আল্লার ইচ্ছা আর কি! নীল রংয়ের একটা গাড়ি ধাওয়া করে ধরে ফেললাম। ড্রাইভারকে বন্দি করে বাদল মামা বসল সেই গাড়ির ড্রাইভিং সিটে, আর বাদল মামার ড্রাইভারকে দিয়ে তার টয়োটা পাঠিয়ে দেয়া হলো।

তারপর সোজা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল। তখন মিন্টো রোডে বড় বড় অনেক গাছ ছিল। ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনেও অনেকগুলো মোটামোটা কড়ই গাছ ছিল। আমরা গাড়িটা এনে ঠিক রাস্তার পাশ দাঁড় করালাম। আমাদের গাড়িটাও থামল, আর বিদেশিদের সাড়া শহর দেখিয়ে পাক আর্মির দলটিও হোটেল পৌঁছাল। তখন হোটেলের এন্ট্রিটা ছিল রিভলভিং। তো সবাই তখন ভেতরে ঢোকার জন্য ভিড় করেছে। আমি আর আলম দুজন চারটা গ্রেনেড নিয়ে দুটা গাছের আড়ালে দাঁড়িয়ে সঠিক সময়ের অপেক্ষা করছি। এর মধ্যে দুজনে দুটা প্রথমে পিন খুলে ছুড়ে মারলাম। একটা গিয়ে একজনের পায়ে লেগে থেমে গেল, আর একটা সোজা চলে গেল ভেতরে। ২-৩ সেকেন্ডের মধ্যে আরো দুটা ছুড়ে মারলাম। যাওয়ার পর যখন ধোয়া উড়তে শুরু করল, আতঙ্কে সবাই একসঙ্গে ভেতরে যাওয়ার চেষ্টা চালাল। কিন্তু দরজা তো রিভলভিং, তাই কেউই আর যেতে পারছে না।

এর মধ্যেই আমরা লাফ দিয়ে গাড়িতে উঠে পড়লাম। টান দিয়ে গোলচক্করটা খালি পার হয়েছি আর সঙ্গে সঙ্গে পরপর চারটা বিস্ফোরণ। সবার ছোটাছুটি আর চিৎকার শুনতে পেলাম। আমরা একটানে মগবাজার, সেখানে মুসলিম লীগের একটা মিটিং হচ্ছিল, সেখানে আরও দুটা গ্রেনেড মারলাম। সেখান থেকে গেলাম দৈনিক বাংলা, ওটা তখন পাকিস্তানের পত্রিকা অফিস। ওটার ভেতর মারলাম আরো দুটা। এরপর গাড়িটা শান্তিনগরের ভেতরে ফেলে দিয়ে হেঁটে আলমের বাসায়।

আমরা হাতমুখ ধুয়ে চা খাচ্ছি, এমন সময় আলমের বাবা এসে বলে, এই আলম দেখ হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে নাকি বিচ্ছুরা, নাকি মুক্তিবাহিনী বোমা মেরেছে। বিবিসি, ভয়েস অফ আমেরিকা বলছে, ৩০-৩৫ জন সিরিয়াস ইনজিউরড আর ৮-৯ জন মারা গেছে। আমরাই যে এ ঘটনা করে আসছি, এটা তো আর উনি জানেন না। আমরা বললাম, চাচা তাই নাকি। তো উনি আমাদের সাবধানে চলাফেরা করতে বলে চলে গেলেন। এ ঘটনার পর পুরা ইন্টারকন্টিনেন্টাল ফাঁকা হয়ে যায়। ওই রাতেই সবাই যার যার দেশে চলে যায়। এটাই ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রথম হিট অ্যান্ড রান অপারেশন। পরে এ রকম আরো ৬০-৭০ টা অপারেশন আমরা করেছি।

আপনাদের এই যোদ্ধা দলটিকে ক্র্যাক প্লাটুন নামে ডাকা হয়। এই নামটা কে দিল?

এটার একটা সুন্দর ঘটনা আছে। এই অপারেশনের পরের দিন ৯ জুন বাকি যে গ্রেনেডগুলা ছিল সেগুলোও বিভিন্ন জায়গার মারলাম। তো, এটা যে এত বড় অপারেশন হয়ে গেছে তা তো আর আমরা তখন জানি না। সারা বিশ্ব যে স্তব্ধ হয়ে গেছে, সেটাও আমরা জানি না। সবাই খুঁজছে কারা করেছে, কারা করেছে। এটা জানার জন্য সবাই উদগ্রিব। আমরা তো আরামে ব্যাগ ট্যাগ নিয়ে আবার আগরতলা গিয়েছি। ক্যম্পে যে আমাদের নিয়ে এত কথাবার্তা হচ্ছে, এটা আমাদের মাথাতেই নাই।

আমাদের ট্রেনিং দিতেন সুবেদার ইদ্রিস। ক্যাম্পে ঢুকতেই তিনি দৌড়ে এলেন। জড়িয়ে ধরে বললেন, মায়া, আলম ব্রেভো ব্রেভো। তোমরা অসাধারণ একটা অপারেশন করেছ। পুরো ক্যাম্পেই তখন হইচই অবস্থা। নিয়ম হলো, গ্রেনেড ফোটালে এটার পিন জমা দিতে হবে। জমা দিতে গেছি, দেখি সবাই বসা। আমাদের নিয়েই চর্চা হচ্ছে যে, ঢাকার অপারেশনটা ২ নম্বর সেক্টরের মুখ উজ্জ্বল করেছে।

এর মধ্যেই আমি ঢুকলাম, খালেদ মোশাররফ দেখি আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। ক্যাপ্টেন হায়দারকে তিনি বলছেন- লুক হায়দার লুক, এদের আমরা বললাম, দূরে দূরে গ্রেনেড ফাটাতে। আর এরা ইন্টারকন্টিনেন্টালে ঢুকে ব্লাস্ট করে দিলো! হাউ ডেয়ার, দে আর অল ক্র্যাক। ক্র্যাক না হলে কি আর এ রকম করতে পারে!এই যে বলল ক্র্যাক, এটা পরে পুরা ক্যাম্পেই ছড়িয়ে গেল। আমার প্লাটুন নম্বর হলো ৩ নম্বর। তখন পুরা ৩ নম্বর প্লাটুনই হয়ে গেল ক্র্যাক প্লাটুন।

আপনাদের বড় আর কী অপারেশন ছিল?

এ রকম আরও অনেক অপারেশন আমরা করেছি। তবে প্রত্যেকটার লক্ষ্য ছিল আলাদা। এর মধ্যে এই ইন্টারকন্টিনেন্টালেই আমরা আরেকটা অপারেশন করেছি, এটা ছিল সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অপারেশন। প্রথম অপারেশনের পরে হোটেলের সামনের সব গাছ কেটে ফেলা হয়। সামনের পুরো অংশ জুড়ে হাজার ওয়াটের বাল্ব লাগানো হলো, রাতের সব সময় দিনের মতো আলো থাকত। তিনটা চেকপোস্ট পার হয়ে হোটেলে ঢুকতে হতো। সেখানে তখন থাকতেন সব বিদেশি, বিভিন্ন দূতাবাসের মানুষ, পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আসা জেনারেলেরা। আগস্ট মাসে এই হোটেল আমরা উড়িয়ে দিলাম। তখনই প্রথম টাইম পেন্সিল বোম্ব ব্যবহার করা হলো। এ অপারেশনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বাকের (শহীদ বাকের, বীর বিক্রম)। তখন তো অনেক নিরাপত্তার কড়াকড়ি। আমরা একটা ইনোসেন্ট ছেলে খুঁজছিলাম, যাকে দেখলে সন্দেহ করবে না। বাকেরের বয়স তখন ১৬ কি ১৭। গোঁফও ঠিক মতো ওঠেনি। সে-ই ব্রিফকেস ভর্তি বিস্ফোরক হোটেলের ভেতরে নিয়ে যায়।

অপারেশনের জন্য আমরা একটা ব্রিফকেসের ভেতরে প্রায় ৩০ পাউন্ড বিস্ফোরক ভরলাম। ভেতরে টাইম পেন্সিল ব্যবহার করা হলো। এটা রাখা হলো বাথরুমে তোয়ালা রাখার বাক্সে। যখন বিস্ফোরণ হলো ভেতরে যত মানুষ ছিল সবাই প্রচণ্ড শব্দে আহত হয়। অনেকের চোখ কান নষ্ট হয়ে যায়। সবচেয়ে বেশি হতাহত হয় এই অপারেশনে। ভেতরে যারা ছিল প্রত্যেকে এফেক্টেড হয়েছে। লিফট ছিড়েও অনেকে মারা যায়।

আপনার সহযোদ্ধাদের অনেকেই তো যুদ্ধে জীবন দিয়েছেন, বিশেষ কোনো ঘটনা কী মনে পড়ে?

আমাদের ক্র্যাক প্লাটুনের সবচেয়ে বড় সৌভাগ্যও বলব, দুর্ভাগ্যও বলব। বাংলাদেশে একক নামে পরিচিতি রয়েছে তিনটি বাহিনীর। এক টাঙাইলের কাদেরিয়া বাহিনী, দুই হেমায়েত বাহিনী আর তিন মায়া বাহিনী। এর ভেতরে সবচেয়ে বেশি খেতাব কিন্তু পেয়েছে আমার ক্র্যাক প্লাটুন। ১১ জনই হলো খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা, এর মধ্যে চার জন হলেন শহীদ। এ রকম নজির আর নেই।

আমাদের বন্ধু ছিল জুয়েল (শহীদ জুয়েল)। সে থাকত গোপীবাগ, আমরা একসঙ্গেই ক্রিকেট খেলতাম। জুয়েল খেলত ফার্স্ট ডিভিশন লীগ। আমরা অত ভালো খেলতাম না, এমনি খেলতাম আর কি। মারা যাওয়ার দুই দিন আগে জুয়েলের হাতে গুলি লাগল।

হয়েছে কী- আমদের তখন নিয়মিত ধলশ্বরী নদী পার হয়ে এপারে আসতে হয়। প্রায়ই একটা গ্রুপ, আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের নাম ভাঙিয়ে নদীতে ডাকাতি করে। এতে একদিকে যেমন আমাদের নাম খারাপ হচ্ছিল, আবার পাকিস্তানি সেনাদের টহল বেড়ে যাওয়ায় একটি অসুবিধাও হচ্ছিল। তখন আমরা চিন্তা করলাম, এ গ্রুপটাকে ধরা দরকার। তো জুয়েলসহ চারজনকে পাঠালাম যে, তোরা চারজন নদীতে রাতে টহল দিবি, দেখ ধরা পড়ে কিনা।

আনফরচুনেটলি ডাকাতগুলো এদের নৌকা দেখে এদের থামতে বলেছে। ডাকাতদের নৌকাটা যখন কাছাকাছি আসে জুয়েল গুলি চালায়। এতে ওদের দুজন মারা যায়। ডাকাতরাও কাউন্টার করে, এ সময় জুয়েলের দুই আঙুলে গুলি লাগে। পরে অবশ্য, এরা ব্রাশফায়ার করে ডাকাতদের নৌকা ডুবিয়ে দেয়। পরে হাত গামছা দিয়ে বেঁধে ঢাকায় আনা হয়। এ রোগী তো কোথাও নেয়া যাবে না। অনেক খোঁজ করে এক ডাক্তার পাওয়া গেল, ডাক্তার আলম। উনি এসে ফার্স্ট এইড দিলেন। কিন্তু পরামর্শ দিলেন জুয়েলকে আগরতলায় ফিল্ড হাসপাতালে পাঠাতে, না হলে হাত পঁচে যাবে। আমরাও লোকজন ঠিক করেছিলাম যে, জুয়েলকে পাঠিয়ে দেব।

আমরা তখন আমাদের অস্ত্র বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখতাম। এতে যখন যে এলাকায় অপারেশন হতো কাছাকাছি পজিশন থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করে নিতাম। কিছু অস্ত্র রাখা ছিল জুয়েলের বাসায়। আমাদের একটা কম্বাইন্ড অপারেশন ছিল। এটি করতে গিয়ে সব অস্ত্র একসঙ্গে জড়ো করছিলাম। তো, জুয়েলের বাসা গোপীবাগে গেলাম অস্ত্র আনতে। জুয়েলের মা বলল, ভাত খেয়ে যাও। ভাত খাচ্ছি, এখন মায়ের মন তো, কি মনে হয়েছে চাচী বলছেন, মায়া-আলম, শুনলাম জুয়েলের নাকি গুলি লেগেছে, ও কি মরে গেছে? আমরা বললাম, না চাচী, ছোট একটু লেগেছে, ও ভালো আছে, আমরা ওকে আগরতলা পাঠিয়ে দেব।

চাচি বলে, না তোরা আমার কাছে লুকোচ্ছিস, ও মনে হয় আর বেঁচে নাই। এই বলে তিনি কান্না শুরু করে বললেন, যুদ্ধে গেছে, মারা গেলে যেতে পারে, কিন্তু তোরা আমাকে মিথ্যা কেন বলছিস? মারা গেলে লাশটা অন্তত আমাকে একবার দেখতে দে। অনেক বুঝালাম, মায়ের মন আর বোঝে না। তখন আমি বললাম, কাল দুপুরে জুয়েল আপনার সঙ্গে দেখা করতে আসবে, আপনার সঙ্গে দেখা করে ও আগড়তলা যাবে।

জুয়েল ছিল আলমের বাসায়। আমরা ওখানে এসে ওকে বললাম, ও রাজিও হলো। পরে ওকে নিয়ে আলমের গাড়িতে আমিসহ রওনা হলাম। মগবাজারের মুখে এসে জুয়েল বলে আমি একটি পরে যাব। আজাদের (শহীদ আজাদ) বাসায় কাজী ভাই আছে, তার সঙ্গে আমার একটু কথা আছে। কাজী আমাকে মায়ের ওখানে নামিয়ে দেবে। পরে তোরা আগরতলা পাঠিয়ে দিস।

ও যদি সেদিন ওর মায়ের ওখানে যেত তাহলে আর ধরা পড়ত না। আমরা এত বুঝালাম, শুনলো না। পরে ওকে আজাদের বাসায় নামায় দিলাম। কাজী ভাই বললো, জুয়েলকে নামিয়ে দেবে। ওই রাতেই কিন্তু সবাই ধরা পড়ল। প্রথমে বদি, তারপর সবার অবস্থান পাকিস্তানি সেনারা জেনে ফেলে, আজাদের বাসাতেই কিন্তু আজাদ-জুয়েল একসঙ্গে ধরা পড়ে। সেই রাতেই আমাদের চার সহযোদ্ধা শহীদ হলো। আলতাফ (সুরকার আলতাফ মাহমুদ) ভাই ধরা পড়ল, ওনার বাসায় আমাদের অস্ত্র ছিল। আর রুমী (শহীদ রুমী) ধরা পড়ল তার মার বাসা থেকে। রুমীর বাসাতেও একই অবস্থা। আমি আর আলম ওকে নামিয়ে দিতে গেলাম, তো বলল- না আমি আজ থাকি সকালে যাব।

আপনারা তো একটা লক্ষ্য সামনে রেখে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। সেই লক্ষ্য কতটা বাস্তবায়িত হয়েছে?

যে উদ্দেশ্য নিয়ে আমরা যুদ্ধ করেছি সেটা শতভাগ সফল হতো যদি বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড না হতো। এ চক্রান্ত স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়েও ছিল, ১৫ আগস্টও হয়েছে, ২১ আগস্টও হয়েছে, এখনো চলমান। তখনও মৌলবাদ ছিল, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ছিল, তারা কিন্তু এখনও বিরাজমান। এদের প্রতিহত করেই কিন্তু এগিয়ে যেতে হবে। একাত্তরের সংগ্রাম কিন্তু এদের বিরুদ্ধেই হয়েছে। এখনো কিন্তু তাদের প্রেতাত্মারা জীবিত। এদের যতদিন পর্যন্ত পুরো দাফন না দেয়া যাবে ততদিন আমাদের এ সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার লড়াই চলবে। যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি।

আরও পড়ুন:
চাঁদপুরে স্বাধীনতার পতাকা ওড়ে ৮ ডিসেম্বর
ক্যাপ্টেন আকরামের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শোক
লোহাগড়া মুক্তির স্বাদ পায় ৮ ডিসেম্বর
যে বাড়ি ছিল প্রতিরোধ যুদ্ধের আঁতুড়ঘর
বীর উত্তম ক্যাপ্টেন আকরাম আহমেদের মৃত্যু

মন্তব্য

আরও পড়ুন

জাতীয়
Teachers including KB Principal

আমরণ অনশনে কেবির অধ্যক্ষসহ শিক্ষকরা

আমরণ অনশনে কেবির অধ্যক্ষসহ শিক্ষকরা

ময়মনসিংহে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ক্যাম্পাসে অবস্থিত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (কেবি) কলেজের অধ্যক্ষ ড. মো. আতাউর রহমান আমরণ অনশন শুরু করেছেন। তার এই পদক্ষেপে সংহতি জানিয়ে কলেজের অন্যান্য শিক্ষকরা আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন। শনিবার কলেজ প্রাঙ্গণে অনশন করেন।

সরেজমিনে জানা গেছে, কেবি কলেজে বোমা হামলার হুমকি, শিক্ষকদের শারীরিক নির্যাতনের ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং প্রতিষ্ঠানটিকে ঘিরে অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক নানা ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে তারা এই আমরণ অনশন কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক বি. এম. আব্দুল্লাহ রনি জানান, দুপুর ১২টার দিকে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে অধ্যক্ষ ঘোষণা দেন, কলেজ ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে চলমান হুমকি এবং বহিরাগতদের অনুপ্রবেশের প্রতিবাদে তিনি আমরণ অনশনে বসবেন। তখন অন্যান্য শিক্ষকরা একসাথে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করুক। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হলে আমরা অনশন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেব।’

মন্তব্য

জাতীয়
Money arrested

টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত যুবক গ্রেপ্তার

টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত যুবক গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় দিনদুপুরে গ্রামীণ ব্যাংকের টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় নগদ ৬০ হাজার ৬০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত যুবকের নাম আরকান চৌধুরী (২৫)। তিনি কাঞ্চনা ইউনিয়নের মনুফকিরহাট জাফর চৌধুরীবাড়ি এলাকার মো. জাকির হোসেনের ছেলে। গত শুক্রবার রাতে উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের মনুফকিরহাট জাফর চৌধুরীবাড়ি এলাকায় এ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

থানার ওসি জাহেদুল ইসলাম জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আরকান চৌধুরী ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। শনিবার তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। গত ৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে কাঞ্চনা মনুফকিরহাট হাটের জলদাশপাড়া ব্রিজের ওপর গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকর্তা অভি চৌধুরীর কাছ থেকে নগদ ৩ লাখ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন ছিনতাইকারীরা। অভি কাঞ্চনা শাখার কেন্দ্র ব্যবস্থাপক। পরে এ ঘটনায় অজ্ঞাত পরিচয়ে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন ব্যাংক কর্মকর্তা।

মন্তব্য

জাতীয়
The babys body recovered after missing the speedboat upside down

স্পিডবোট উল্টে নিখোঁজের পর শিশুর লাশ উদ্ধার

স্পিডবোট উল্টে নিখোঁজের পর শিশুর লাশ উদ্ধার

নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলায় ধনু নদে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে স্পিডবোট উল্টে শিশুসহ ৪ জন নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের ২৪ ঘণ্টা পর উষা মনির (৪) তার লাশ উদ্ধার করে স্থানীয়রা। শনিবার ধনু নদের চরপাড়া এলাকায় ভাসমান অবস্থায় লাশ উদ্ধার করা হয়।

খালিয়াজুরী থানার ওসি মকবুল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। ময়মনসিংহ ফায়ার সার্ভিস ও ডুবুরি দল অন্যদের লাশ উদ্ধারের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। নিখোঁজ রয়েছেন, গাজীপুর ইউনিয়নের বয়রা গ্রামের নবাব মিয়ার মেয়ে শিরিন আক্তার (১৮), আন্ধাইর গ্রামের স্বপন মিয়ার মেয়ে লায়লা (৭) ও সামসু মিয়ার মেয়ে সামিয়া (১১)।

মন্তব্য

ভুলুয়া নদীর ভাঙনে নিঃস্ব কয়েক হাজার পরিবার, মানববন্ধন

ভুলুয়া নদীর ভাঙনে নিঃস্ব কয়েক হাজার পরিবার, মানববন্ধন

লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চররমিজ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মীর সমাজের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ভুলুয়া নদীর তীব্র ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে গেছে কয়েক হাজার পরিবারের ঘরবাড়ি ও কয়েক একর কৃষি জমি। ভাঙন রোদে ভূলুয়া নদীর তীরে বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার চররমিজ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মীর সমাজের ভূলুয়া নদীর পাড়ে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় বক্তব্য রাখেন- চররমিজ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার হুমায়ুন কবির, মীর সমাজ জামে মসজিদের সভাপতি মো. আব্দুল্লাহ, স্থানীয় বাসিন্দা জহির উদ্দীন, শিক্ষার্থী নাহিদুল ইসলাম, আজিমা বেগম, কুলছুম ও রাবেয়া বেগম প্রমুখ। বক্তারা বলেন, লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার সিমান্তের চররমিজ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মীর সমাজের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে ভূলুয়া নদী। নদীটির সুবর্ণচর অংশে চর জেগে ওঠায় রামগতির অংশে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে মীর সমাজের কয়েক হাজার পরিবার নদীভাঙনের মুখে পড়ে। ইতোমধ্যে অন্তত শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখনো ৪০টির মতো বসতবাড়ি হুমকির মুখে আছে। এছাড়া কয়েক একর কৃষি জমি ভূলুয়া নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। নদীর পাশেই রয়েছে, উত্তর চর আফজাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরআফজল মীর সমাজ নুরানী মাদ্রাসা, চরআফজল মীর সমাজ জামে মসজিদসহ অন্তত ১০ হাজার মানুষের বসবাস। এসব মানুষগুলো রয়েছে চরম উদ্বিগ্ন উৎকণ্ঠায়। বক্তারা আরও বলেন, ভুলুয়া নদীর ওই স্থানে দ্রুত ব্লক বাঁধ নির্মাণ না করলে অল্প সময়ের মধ্যে মীর সমাজটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। তাই তারা দ্রুত নদীর তীরে বাঁধ নির্মাণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ-উজ-জামান খান বলেন, সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে ওই স্থানে বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেবেন তিনি।

মন্তব্য

জাতীয়
Chhatra Shibir gave 2 lakh taka to the journalist Shiblis family

সাংবাদিক শিবলীর পরিবারকে ২ লাখ টাকা দিল ছাত্রশিবির

সাংবাদিক শিবলীর পরিবারকে ২ লাখ টাকা দিল ছাত্রশিবির

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের দিন সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে স্ট্রোক করে মারা যান চ্যানেল এস-এর সাংবাদিক তরিকুল ইসলাম শিবলী।

নবনির্বাচিত ডাকসু নেতা ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতারা গত শুক্রবার সন্ধ্যায় টঙ্গীর মধুমিতা রোডের শিবলীর বাসায় তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় তারা মৃতের পরিবারের খোঁজখবর নেন এবং তরিকুল শিবলীর পরিবারের হাতে নগদ দুই লাখ টাকা তুলে দেন।

ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, ডাকসুর নব-নির্বাচিত ভিপি ও শিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েম, ডাকসু জিএস এস এম ফরহাদ, পরিবহন সম্পাদক আসিফ আব্দুল্লাহ ও শিবিরের গাজীপুর মহানগর সভাপতিসহ অন্যান্য নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

গত শুক্রবার রাতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ডাকসুর নবনির্বাচিত জিএস ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ লেখেন, ‘ডাকসু নির্বাচনের দিন সংবাদ কাভার করতে গিয়ে ইন্তেকাল করেছেন তরিকুল শিবলী ভাই। তিনি রেখে গেছেন দুই সন্তান। বড় সন্তান আয়াতের বয়স চার বছর এবং ছোট সন্তান আজমীনের বয়স দেড় বছর।’

ফরহাদ আরও লেখেন, চার বছর বয়সী আয়াত দীর্ঘ আলাপের ফাঁকে আমাকে বলছে- ‘আমার বাবাকে আল্লাহ নিয়ে গেছেন এবং আল্লাহ বাবাকে সুন্দর একটা জায়গায় রেখেছেন। যেহেতু বাবা আসবেন না, তাই আমি ও আমার মা ছোট বোন আজমীনের খোঁজখবর রাখবো, আদর করবো।’ অবুঝ শিশুর মুখে এমন ভারি কথা!

তিনি জানান, আমরা পরিবারের সঙ্গে প্রাথমিক সাক্ষাতে ছোট্ট দুই শিশুর খরচের জন্য ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে আপাতত দুই লাখ টাকা পৌঁছে দিয়েছি। ইনশাআল্লাহ, আমরা সব প্রয়োজনে সাধ্যমতো পরিবারটির পাশে থাকবো। বাবা হারানো ছোট শিশুদের জন্য দোয়া চাই।

মন্তব্য

জাতীয়
Arrested in Mohammadpur in the capital

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে গ্রেপ্তার ১০

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে গ্রেপ্তার ১০

অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার বিভিন্ন অপরাধ প্রবণ এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।

শনিবার ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- মো. দুলাল মিয়া (২৭), গোলাম রাব্বি ওরফে বাপ্পি (১৯), মো. শাকিল হাওলাদার (২৫), মো. বাপ্পি (৩০), মো. হৃদয় হোসেন (৩০), মো. বিজয় (১৮), মো. ইজাজুল হোসেন (১৮), মো. কামাল হোসেন (৩২), মো. বাবু ওরফে ছোট বাবু (৩০) ও মো. সুমন (৩২)।

এতে বলা হয়, গত শুক্রবার দিনব্যাপী বিশেষ অভিযান চালিয়ে মোহাম্মদপুর থানার বিভিন্ন স্থান থেকে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের হেফাজত থাকা দুটি সামুরাই উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছে নিয়মিত মামলার আসামি, দস্যুতা মামলার আসামি, পরোয়ানাভুক্ত আসামি ও বিভিন্ন অপরাধে জড়িত অপরাধী।

গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

মন্তব্য

জাতীয়
Arrested with about 2 million taka stolen in Banani

বনানীতে চুরি যাওয়া প্রায় ২৫ লাখ টাকাসহ গ্রেপ্তার ১

বনানীতে চুরি যাওয়া প্রায় ২৫ লাখ টাকাসহ গ্রেপ্তার ১

রাজধানীর বনানীর একটি বাসা থেকে চুরি যাওয়া ২৪ লাখ সাড়ে ৮৪ হাজার টাকা, মোটরসাইকেল এবং দুইটি মোবাইল ফোনসহ মো. কাউছার আহমেদ (২২) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

গত শুক্রবার রাত পৌঁনে ১২টার দিকে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির বনানী থানা পুলিশ।

শনিবার ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, গত ৯ সেপ্টেম্বর ব্যবসায়ী মুস্তাজিরুল শোভন ইসলামের বনানীর বাসায় চুরি হয়। হ্যান্ড সুটকেসে থাকা ব্যবসায়িক কাজের জন্য রাখা ৩০ লাখ টাকা চোর চুরি করে নিয়ে যায়। পরে ১১ সেপ্টেম্বর ভিক্টিম মুস্তাজিরুল বাদী হয়ে বনানী থানায় একটি চুরির মামলা দায়ের করেন।

এতে আরও বলা হয়, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তদন্তকারী দল দ্রুত চুরির সাথে জড়িত ব্যক্তির পরিচয় ও অবস্থান শনাক্ত করে। পরবর্তীতে মানিকগঞ্জে অভিযান চালিয়ে কাউছারকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে চুরির ঘটনা স্বীকার করেছে।

গ্রেপ্তারকৃতের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পাশাপাশি মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

মন্তব্য

p
উপরে